শিক্ষার্থীগণ! সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি মুখস্থনির্ভর নয়, পাঠ্যবইনির্ভর মৌলিক বিদ্যা। তাই অনুশীলন অংশ শুরু করার পূর্বে গল্পটির শিখন ফল, পাঠ পরিচিতি, লেখক পরিচিতি, উৎস পরিচিতি, বস্তুসংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা ও বানান সতর্কতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা একান্ত আবশ্যক।
সৃজনশীল পদ্ধতি মুখস্থনির্ভর বিদ্যা নয়, পাঠ্যবই নির্ভর মৌলিক বিদ্যা। তাই অনুশীলন অংশ শুরু করার আগে গল্প/কবিতার শিখন ফল, পাঠ পরিচিতি, লেখক পরিচিতি, উৎস পরিচিতি, বস্তুসংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা ও বানান সতর্কতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব বিষয়গুলো জেনে নিলে এ অধ্যায়ের যেকোনো সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’। তিন অংশে বিভক্ত এই গ্রন্থটিতে যে কটি প্রবন্ধ আছে, তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রচনা ‘বিড়াল’। একদিন কমলাকান্ত নেশায় বুঁদ হয়ে ওয়াটারলু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন। এমন সময় একটা বিড়াল এসে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলে। ঘটনাটা বোঝার পর তিনি লাঠি দিয়ে বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হন। তখন কমলাকান্ত ও বিড়ালটির মধ্যে কাল্পনিক কথোপকথন চলতে থাকে। এর প্রথম অংশ নিখাদ হাস্যরসাত্মক , পরের অংশ গূঢ়ার্থে সন্নিহিত।
বিড়ালের কণ্ঠে পৃথিবীর সকল বঞ্চিত, নিষ্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনা যুক্তিগ্রাহ্য সাম্যতাত্ত্বিক সৌকর্যে উচ্চারিত হতে থাকে, “আমি চোর বটে, কিন্তু আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি? খাইতে পাইলে কে চোর হয়? দেখ, যাঁহারা বড় বড় সাধু, চোরের নামে শিহরিয়া উঠেন, তাঁহারা অনেকে চোর অপেক্ষাও অধার্মিক।” মাছের কাঁটা, পাতের ভাত – যা দিয়ে ইচ্ছে করলেই বিড়ালের ক্ষিধে দূর করা যায়, লোকজন তা না করে সেই উচ্ছিষ্ট খাবার নর্দমায় ফেলে দেয়, … যে ক্ষুধার্ত নয়, তাকেই বেশি করে খাওয়াতে চায়, ক্ষুধাকাতর-শ্রীহীনদের প্রতি ফিরেও তাকায় না, এমন ঘোরতর অভিযোগ আনে বিড়ালটি।
বিড়ালের ‘সোশিয়ালিস্টিক’, ‘সুবিচারিক’, ‘সুতার্কিক’ কথা শুনে বিস্মিত ও যুক্তিতে পর্যুদস্ত কমলাকান্তের মনে পড়ে আত্মরক্ষামূলক শ্লেষাত্মক বাণী – “বিজ্ঞ লোকের মত এই যে, যখন বিচারে পরাস্ত হইবে, তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করিবে”- এবং তিনি সে-রকম কৌশলের আশ্রয় নেন। সাম্যবাদবিমুখ, ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষের একজন সরকারি কমকর্তা হয়েও, বঙ্কিমচন্দ্র একটা বিড়ালের মুখ দিয়ে শোষক-শোষিত, ধনী-দরিদ্র, সাধু-চোরের অধিকারবিষয়ক সংগ্রামের কথা কী শ্লেষাত্মক , যুক্তিনিষ্ঠ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন তা এ প্রবন্ধ পাঠ করে উপলব্ধি করা যায়।
নাম | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। |
জন্ম ও পরিচয় | জন্মতারিখ : ২৬ জুন, ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : কাঁঠালপাড়া, চব্বিশ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ। |
পিতৃ-পরিচয় | পিতার নাম : যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পেশা : ডেপুটি কালেক্টর। |
শিক্ষাজীবন | মাধ্যমিক : এন্ট্রান্স (১৮৫৭), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চতর : বিএ (১৮৫৮), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়; বিএল (১৮৬৯), প্রেসিডেন্সি কলেজ। |
কর্মজীবন ও পেশা | পদবি : ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট (১৮৫৮-১৮৯১ খ্রি.)। কর্মস্থল : যশোর, খুলনা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, মেদিনীপুর, বারাসাত, হাওড়া, আলীপুর প্রভৃতি। |
সাহিত্য সাধনা | উপন্যাস : দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী, বিষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল, রজনী, আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরাণী, সীতারাম প্রভৃতি। প্রবন্ধ : লোকরহস্য, বিজ্ঞানরহস্য, কমলাকান্তের দপ্তর, সাম্য, কৃষ্ণচরিত্র, ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন প্রভৃতি। |
কৃতিত্ব | তাঁর রচিত ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫) বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত। |
উপাধি ও সম্মাননা | ‘সাহিত্য সম্রাট’- সাহিত্যের রসবোদ্ধাদের কাছ থেকে উপাধিপ্রাপ্ত। ‘ঋষি’- হিন্দু ধর্মানুরাগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত খেতাব। |
মৃত্যু মৃত্যু তারিখ : | ৮ এপ্রিল, ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ। |
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’। তিন অংশে বিভক্ত এ গ্রন্থটিতে যে ক’টি প্রবন্ধ আছে, তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রচনা ‘বিড়াল’।
‘বিড়াল’ প্রবন্ধটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত রম্যব্যঙ্গ রচনা সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর অন্তর্গত। বাংলা সাহিত্যে এক ধরনের হাস্যরসাত্মক রঙ্গব্যঙ্গমূলক রচনার ভিতর দিয়ে তিনি পরিহাসের মাধ্যমে সমকালীন সমাজ, ধর্ম, সভ্যতা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ‘বিড়াল’ নকশা জাতীয় ব্যঙ্গ রচনা। এতে লেখক একটি ক্ষুধার্ত বিড়াল আফিংখোর কমলাকান্তের জন্য রেখে দেয়া দুধ চুরি করে খেয়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য এবং সমাজের নানা অসঙ্গতিকে ইঙ্গিত করেছেন। দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচার, ধনীর ধনে গরিবের অধিকার, ক্ষুধার্ত অবস্থায় মানুষের আচরণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক উপস্থাপন করে লেখক সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন। বিড়ালকে প্রহার করার জন্য উদ্যত হয়ে কমলাকান্ত নিজেই দুর্বল ক্ষুধার্ত বিড়ালের পক্ষ অবলম্বন করে যুক্তিতর্ক দাঁড় করেছেন। খাবার মাত্রেই ক্ষুধার্তের অধিকার আছে। তা ধনীর কি দরিদ্রের সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। যদি ধনীর হয় তবে তা স্বেচ্ছায় না দিলে ক্ষুধার্ত তা যেকোনো উপায়ে সংগ্রহ করবে, প্রয়োজনে চুরি করে খাবে, তাতে বিশেষ কোনো দোষ নেই। বিড়ালের এই যুক্তিকে শেষ পর্যন্ত কমলাকান্ত অস্বীকার করতে পারেন নি। বিড়াল তাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় যে, এ সংসারে ক্ষীর, সর, দুগ্ধ, দধি, মৎস্য, মাংস সবকিছুতেই তাদের অধিকার আছে। এ কথায় পৃথিবীজুড়ে যত ধন-সম্পদ আছে তাতে দরিদ্র মানুষের অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। বিড়াল সাধ করে চোর হয় নি। তার জিজ্ঞাসা খেতে পেলে কে চোর হয়? বড় বড় সাধু চোর অপেক্ষা যে অধার্মিক সে বিষয়ে বিড়াল তার যুক্তি তুলে ধরেছে। বিড়ালের স্পষ্ট উচ্চারণ- অধর্ম চোরের নয়, চোরে যে চুরি করে সে অধর্ম কৃপণ ধনীর। কমলাকান্ত নিজেই নিজের মনে বিড়ালের পক্ষে এবং নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। বিড়ালের কথাগুলো সোশিয়ালিস্টিক, সমাজ বিশৃঙ্খলার মূল। এভাবে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে দুই পক্ষের মাধ্যমে সমন্বয় সাধনের প্রধান অন্তরায়গুলো আমাদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন বঙ্কিমচন্দ্র। তিনি সমাজে নিম্নশ্রেণির উপর উচ্চশ্রেণির অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও দোষ চাপানোর বিষয়টিকে ব্যঙ্গ করেছেন ‘বিড়াল’ রচনায়। এই রচনায় বিড়াল নিম্নশ্রেণির দরিদ্র ভুখা মানুষের প্রতিনিধি আর কমলাকান্ত যতক্ষণ পর্যন্ত ধনীর ধনবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দেখান ততক্ষণ পর্যন্ত মনুষ্য সমাজের অন্যায়কারী ধনী চরিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে চিিহ্নত। ‘বিড়াল’ রচনায় লেখক ‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’, ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া’ প্রভৃতি প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করে শ্রমিকরা কীভাবে ফল ভোগ থেকে বঞ্চিত হয় সে দিকে ইঙ্গিত করেছেন। মূলত জগৎসংসারে ধর্মের দোহাই দিয়ে, অন্যায়-প্রতিকারের বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ সাধন সম্ভব নয়। জগতের মানুষের কল্যাণ করতে হলে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের অবসান করে মানবকল্যাণে আত্মনিবেদন করতে হবে। এই বিশেষ আবেদনই ‘বিড়াল’ রচনায় হাস্যরসের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
নামকরণ : ‘বিড়াল’ গল্পটির নামকরণ করা হয়েছে গল্পের মূল চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে। গল্পের মূল চরিত্র ‘বিড়াল’। বঙ্কিমচন্দ্রের এ গল্পটি প্রতীকধর্মী নকশা জাতীয় রম্যরচনা ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর অন্তর্গত। বিড়ালের প্রতীকে লেখক এখানে নিম্নশ্রেণির গরিব মানুষের ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’ এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। এখানে হাস্যরসের মধ্যদিয়ে চোরের চুরি করার মূল কারণ এবং তা সমাধানের জন্য পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দেখানো হয়েছে। আফিমের নেশায় বুঁদ হয়ে কমলাকান্ত যখন ওয়াটারলুর যুদ্ধে ব্যূহ রচনায় ব্যস্ত তখন তার জন্য রাখা দুধ বিড়াল খেয়ে ফেলে। বিড়ালের এ কাজটি ন্যায়সঙ্গত কি না তা নিয়েই এ রচনার কাহিনী। নিজের জন্য রাখা দুধ বিড়াল এসে খেয়ে ফেলেছে, সে ক্ষোভে কমলাকান্ত শাস্তি দিতে চান বিড়ালটিকে। মারতে গিয়েও কমলাকান্ত পারেন নি। কারণ দুধে তার যে অধিকার, বিড়ালেরও তাই। কেননা, দুধ মঙ্গলা গাভীর, খাওয়ার জন্যই সেখানে রাখা ছিল। যার প্রয়োজন সে খেলেই হলো তাছাড়া বিড়ালের ক্ষুধা-তৃষ্ণা এবং তারও খাওয়ার অধিকার সম্পর্কে কমলাকান্ত ভাবে। বিড়াল যদি সে অধিকারে দুধ খেয়ে থাকে তাহলে সমাজের দৃষ্টিতে তা চুরি। কারণ সে কাউকে জানিয়ে দুধ খায় নি। ক্ষুধার্ত বলে সে ক্ষুধা নিবারণের দিকটিই বিবেচনা করেছে; চুরি, অন্যায় অপরাধের দিক বিবেচনা করে নি। লেখক এখানে ক্ষুধায় অন্ন পায় না বলে গরিবের অন্যায়ভাবে ক্ষুধা নিবারণের দিকটি বুঝাতে চেয়েছেন। বিড়াল এখানে অভাবী মানুষের প্রতীক। ধনীরা তাকে সাহায্য করলে তো সে চুরি করত না। তারা যে খাদ্য নষ্ট করে বা ফেলে দেয় তা যদি তারা বিড়াল-এর মতো ক্ষুধার্ত অভাবীদের দিয়ে দিত তাহলে তাদের চুরি করতে হতো না। অথচ তারা তা দেয় না, উল্টো চুরি করতে বাধ্য হলে শাস্তি দেয়। এ কারণে বিড়াল যুক্তি দেখায় যে, চোর দোষী হলে কৃপণ ধনী তারচেয়ে বেশি দোষী। সে ক্ষেত্রে কৃপণ ধনীরও কার্পণ্যের দণ্ড হওয়া উচিত বলে সে মনে করে। কিন্তু তারা তা না করে কীভাবে তেলা মাথা তেল ঢালে যাদের খাদ্যের অভাব নেই তাদের জন্য ভোজের আয়োজন করে। এখানে অসাম্য ও অমানবিক দিকটি ‘বিড়াল’ গল্পে কমলাকান্তকে দেখিয়ে দেয়। কারণ কমলাকান্ত ধনীদের প্রতীক; আফিমখোর হলেও সত্যবাদী। চোর কেন চুরি করে সেটা তারা অনুভব করতে চায় না। ধনীর জন্য আয়োজিত খাদ্যের উচ্ছিষ্টটুকু দরিদ্রদের দিলেই তারা বেঁচে যায়। এ কারণে বিড়াল প্রস্তাব দেয়_ “যে বিচারক চোরকে সাজা দিবেন। তিনি আগে তিন দিবস উপবাস করিবেন। তাহাতে যদি তাহার চুরি করিয়া খাইতে ইচ্ছা না করে, তবে তিনি স্বচ্ছন্দে চোরকে ফাঁসি দিবেন।” এ যুক্তির পর কমলাকান্ত বিজ্ঞের মতো তাকে ধর্মোপদেশ দেয় এবং ছানার সমান ভাগ দেয়ার লোভ দেখায়। কিন্তু কথায় না ভুলে সে নিজের যুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। গল্পের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিড়ালের দুধ চুরির অপরাধ খণ্ডনের বিষয়ের প্রাধান্য থাকায় এর নামকরণ ‘বিড়াল’ যথার্থ হয়েছে।
সার্থকতা : ‘বিড়াল’ গল্পের মূল চরিত্র হচ্ছে ‘বিড়াল’। তাকে কেন্দ্র করেই গল্পের মূল বিষয় আবর্তিত হয়েছে এবং পরিণতি পেয়েছে। ‘বিড়াল’ নিম্নশ্রেণির অভাবী মানুষের প্রতীক যারা ক্ষুধা নিবারণে চুরি করতে বাধ্য হয়। হাস্যরসের মধ্যদিয়ে চোর আত¥পক্ষ সমর্থন করে এতে তার যুক্তি তুলে ধরেছে। মারাত¥ক ক্ষুধার জ্বালায় সে অন্য কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে চুরি করে। তাকে চোর বানিয়েছে কৃপণ ধনীরা, তারা তাকে কোনো রকম সাহায্য করে না। অথচ তেলা মাথায় তেল দেয়, দরিদ্রদের দিকে তাকায় না। কাজেই চোরের শাস্তি হলে, কৃপণ ধনীদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। কমলাকান্ত তাকে ধর্মের কথা শুনিয়ে পাপ থেকে দূরে থাকতে উপদেশ দিয়েছে। বিড়াল তাকে উল্টো শুনিয়েছে, যে বিচারক চোরের বিচার করবেন তাকে তিন দিন উপবাস থেকে তারপর রায় দিতে হবে। এসব দিক বিবেচনায় গল্পের নামকরণ ‘বিড়াল’ রাখা সার্থক হয়েছে।
চারপায় – টুল বা চৌকি।
প্রেতবৎ – প্রেতের মতো।
নেপোলিয়ন – ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) প্রায় সমগ্র ইউরোপে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছিলেন। ১৮১৫ খ্রিষ্টাব্দে ওয়াটারলু যুদ্ধে ওয়েলিংটনের ডিউকের হাতে পরাজিত হয়ে তিনি সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত হন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।
ওয়েলিংটন -বীর যোদ্ধা। তিনি ডিউক অফ ওয়েলিংটন নামে পরিচিত (১৭৬৯-১৮৫৪)।
ওয়াটারলু যুদ্ধে তাঁর হাতে নেপোলিয়ন পরাজিত হন।
ডিউক – ইউরোপীয় সমাজের বনেদি বা অভিজাত ব্যক্তি।
মার্জার – বিড়াল।
ব্যূহ রচনা – প্রতিরোধ বেষ্টনী তৈরি করা, যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজানো।
প্রকটিত – তীব্রভাবে প্রকাশিত।
ষষ্টি – লাঠি।
দিব্যকর্ণ – ঐশ্বরিকভাবে শ্রবণ করা।
ঠেঙ্গালাঠি – প্রহার করার লাঠি।
শিরোমণি – সমাজপতি, সমাজের প্রধান ব্যক্তি।
ন্যায়ালংকার – ন্যায়শাস্ত্রে পণ্ডিত।
ভার্যা – স্ত্রী, বউ।
সতরঞ্চ খেলা – নিচে (মাটিতে) বিছিয়ে যে খেলা খেলতে হয়; পাশা খেলা, দাবা খেলা।
লাঙ্গুল – লেজ, পুচ্ছ।
সোশিয়ালিস্টিক – সমাজতান্ত্রিক, সমাজের সবাই সমান – এমন একটি রাজনৈতিক মতবাদ।
নৈয়ায়িক – ন্যায়শাস্ত্রে পণ্ডিত ব্যক্তি।
কস্মিনকালে – কোনো সময়ে।
মার্জারী মহাশয়া – স্ত্রী বিড়াল।
জলযোগ – হালকা খাবার, টিফিন।
সরিয়া ভোর – ক্ষুদ্র অর্থে (উপমা) স্বল্প পরিমাণ।
পতিত আত্মা – বিপদগ্রস্ত বা দুর্দশাগ্রস্ত আত্মা এখানে বিড়ালকে বোঝানো হয়েছে।
চঞ্চল, প্রেতব্য, ব্যূহ, পাষাণবৎ, মনুষ্যকুল, স্বরূপ, বাঞ্ছনীয়, ক্ষুৎপিপাসা, শয্যাশায়ী, মূলীভূত, পণ্ডিত, ক্ষুধা, দরিদ্র, ভার্যা, মূর্খা, কুশ, অস্থি, মৎস্য, কৃষ্ণ, শুষ্ক, ক্ষীণ, কার্পণ্য, দূরদর্শী, সঞ্চয়, নির্বিঘ্ন, নৈয়ায়িক, কস্মিনকাল, স্বচ্ছন্দ, দুশ্চিন্তা, ধর্মাচরণ।
১। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
নাজমার বড় সংসার। স্বামী অকর্মণ্য। তাই সে বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে। এ স্বল্প আয়ে সংসার চলে না বলে বাধ্য হয়ে তাকে বিভিন্ন বাড়ি থেকে মশলা, তৈল, তরকারি চুরি করে সংসারের চাহিদা পূরণ করতে হয়। চুরি করার কারণে এখন আর কেউ তাকে কাজে নেয় না। তাই পরিবারের প্রয়োজন কীভাবে পূরণ হবে এ চিন্তায় সে আকুল হয়ে ওঠে।
ক. মার্জারের মতে, সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ কী?
খ. ‘তোমার কথাগুলি ভারি সোশিয়ালিস্টিক’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ‘নাজমা ও বিড়ালের জীবন কোন দিক থেকে বিপন্ন’?_‘বিড়াল’ রচনার আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘নাজমার কাজ নীতিবিরুদ্ধ ও ধর্মাচারবিরোধী’_ ‘বিড়াল’ রচনা অবলম্বনে মূল্যায়ন কর।
( ক )
সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ হচ্ছে ধনীর ধনবৃদ্ধি।
( খ )
২। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
কঞ্জুস ধনী রূপলাল সেনের বাড়িতে দুপুরে একজন সুবেশী ও স্বাস্থ্যবান অতিথি এলে তিনি যথেষ্ট আপ্যায়ন করেন। অতিথি তৃপ্তমনে বাড়ি ফেরেন। কদিন পরে জনৈক ভিখারি দুপুরে রূপলাল সেনের বাড়িতে এসে খাবার চাইলে তিনি তাকে তিরষ্কার করেন এবং তাড়িয়ে দেন। রূপলাল সেন ধনী অতিথিকে আপ্যায়ন করেন আর গরিব ভিখারিকে ভর্ৎসনা করেন।
ক. কমলাকান্ত কীসের উপর ঝিমাচ্ছিল?
খ. চোরকে সাজা দেওয়ার আগে বিচারককে তিনদিন উপবাস করার কথা বলা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘রূপলাল সেন আর কমলাকান্ত একই মেরুর মানুষ’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
( ক )কমলাকান্ত চারপায়ীর উপর ঝিমাচ্ছিল।
( খ) পেটের ক্ষুধার কারণেই যে মানুষ ন্যায়নীতি বিসর্জন দিয়ে চুরি করে সেটি বোঝানোর জন্যই উক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
বিচারকের কাজ সর্বদা ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং নিরপেক্ষভাবে অপরাধের কারণ বের করে অপরাধীকে শাস্তি দেয়া। ক্ষুধা না লাগলে কেউ চুরি করে না। তাই চোরের বিচার করার আগে বিচারক যদি তিনদিন উপবাস করেন তবেই তিনি বুঝতে পারবেন ক্ষুধার জ্বালা কেমন এবং চোরের চুরির কারণ কী? বিষয়টি বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
( গ) উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনায় ধনীদের তোষণ ও দরিদ্রকে অবহেলা করার মানসিকতার দিকটি ফুটে উঠেছে।
৩। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
নাই অধিকার সঞ্চয়ের!
ওগো সঞ্চয়ী, উদ্বৃত্ত যা করিবে দান,
ক্ষুধার অন্ন হোক তোমার!
ভোগের পেয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে
তৃষ্ণাতুরের হিস্সা আছে ও পিয়ালাতে
দিয়া ভোগ কর, বীর, দেদার॥
ক. কমলাকান্ত কী হাতে নিয়ে ঝিমাচ্ছিল? ১
খ. ‘দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া, প্রেতবৎ নাচিতেছে’থকথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকটির সাথে ‘বিড়াল’ রচনার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটির মূলবক্তব্যে ‘বিড়াল’ রচনার বিড়ালের মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
৩ নং প্রশ্নরে উত্তর
(ক) কমলাকান্ত হুঁকা হাতে নিয়ে ঝিমাচ্ছিল।
(খ) প্রশ্নোক্ত কথাটি দ্বারা শোবার ঘরে ছোট বাতি তেল-স্বল্পতার কারণে মৃদুভাবে জ্বলতে থাকায় ঘরের দেয়ালের ওপর আলো ছায়ার যে নাচন সৃষ্টি হয়, সেটিকে বোঝানো হয়েছে।
রাতে কমলাকান্ত একা শোবার ঘরে বিছানার ওপর বসে হুঁকা হাতে নিয়ে ঝিমাচ্ছিল। পাশেই একটি ক্ষুদ্র প্রদীপ মিটমিট করে জ্বলছিল। প্রদীপটির আলো ঘরের দেয়ালের ওপর পড়ে ওর চঞ্চল ছায়াটি প্রেতের মতো নাচানাচি করছিল। আলোর দেহহীন ছায়াটি অশরীরী আত্মা বা প্রেতের মতো নাচছিল। বিষয়টিকে বোঝাতেই একথা বলা হয়েছে।
(গ) সম্পদ সমবণ্টনের ধারণাগত দিক থেকে উদ্দীপকের সাথে ‘বিড়াল’ গল্পের সাদৃশ্য রয়েছে।
‘বিড়াল’ রচনায় কথকের কল্পনার আবহে সৃষ্ট বিড়ালের স্বগতোক্তির মধ্য দিয়ে লেখক তার নিজস্ব বোধ ও ধারণাকে মূর্ত করে তুলেছেন।
উদ্দীপকে উদ্বৃত্ত সম্পদ সমতার ভিত্তিতে অভাবগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। খাদ্য ও পানীয়সহ সকল ভোগ্য বস্তুতে সব মানুষের অধিকার আছে বলে এখানে স্বীকার করা হয়েছে। এরূপ দর্শনের ধারার প্রতিফলন ঘটেছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায়। সেখানে কথক গৃহস্থের দুধের পেয়ালায়, মাছের কাঁটা ও খাদ্যদ্রব্যে তুচ্ছ প্রাণী বিড়ালেরও হিস্সা আছে বলে মনে করেন। এ পৃথিবীর মাছ, মাংসে বিড়ালের অধিকার আছে। সহজে তা না পেলে বিড়াল চুরি করে খাবে- এতো সহজ কথা। কেননা, অনাহারে মরে যাবার জন্য এ পৃথিবীতে কেউ আসেনি। আলোচ্য রচনায় বিড়ালের মুখ দিয়ে বলা এরূপ যৌক্তিক কথাগুলো উদ্দীপকের মূলবক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
(ঘ) ‘উদ্দীপকটির মূলবক্তব্যে বিড়ালের মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে।’-মন্তব্যটি সঠিক।
সাম্যের দৃষ্টিতে পৃথিবীর সম্পদ এবং ভোগ্য বস্তুতে সকলের সমঅধিকার আছে। ‘বিড়াল’ রচনায় এ সত্যকেই তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্দীপকে ধনীদের উদ্বৃত্ত সম্পদ অভাবগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যার্থে প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ক্ষুধার অন্ন সবার হোক, পানীয়ের পেয়ালায় সকলের হিস্সা প্রতিষ্ঠিত হোক- এ সাম্যবাদী ধারণার প্রতিফলন ঘটেছে সেখানে। তেমনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায় দুধ খেয়ে ফেলার অপরাধে লাঠি দিয়ে বিড়ালকে তাড়া করার বিষয়টিকে ধিক্কার জানানো হয়েছে।
বিড়াল’ রচনায় খেতে না পেয়ে বিড়ালের পেট ও শরীর কৃশ, এমনকি জিহ্বা ঝুলে পড়েছে। অথচ গৃহস্থ বাড়িতে কত আহার নর্দমায় ফেলে দেয়া হয়। বিড়ালকে অভুক্ত রেখে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট করা অনৈতিক এবং এই খাদ্যে বিড়ালের হিস্সা থাকার কথা আলোচ্য রচনায় প্রতিফলিত হয়েছে- যা উল্লিখিত উদ্দীপকটির মূলবক্তব্য। সকলকে সাথে নিয়ে, সকল অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দেয়ার মানসিকতারও প্রতিফলন ঘটেছে আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ গল্পটিতে। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।
৪। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
খোদা বলিবেন, হে আদম সন্তান,
আমি চেয়েছিনু ক্ষুধার অন্ন, তুমি কর নাই দান।
মানুষ বলিবে, তুমি জগতের প্রভু,
আমরা তোমারে কেমনে খাওয়াবো, সে কাজ কী হয় কভু?
বলিবেন খোদা-ক্ষুধিত বান্দা গিয়েছিল তব দ্বারে,
মোর কাছে তুমি ফিরে পেতে তাহা যদি খাওয়াইতে তারে।
ক. কে দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল?
খ. ‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটির মূলবক্তব্য কোন দিক দিয়ে ‘বিড়াল’ রচনাটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার মূলভাব ফুটে উঠেছে।”_ বিশ্লেষণ কর।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) প্রসন্ন দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল।
(খ) ‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’ বলতে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ বিড়াল খেয়ে ফেলার দিকটিকে বোঝানো হয়েছে।
প্রসন্ন কমলাকান্তের খাওয়ার জন্য কিছুটা দুধ বাটিতে করে রেখে যায়। কিন্তু সে অন্যমনস্ক হওয়ার সুযোগে বিড়াল তার দুধটুকু খেয়ে নেয়। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ কথাটিই বোঝানো হয়েছে।
(গ) উদ্দীপকটির মূলবক্তব্য পরোপকারের সেবার আদর্শের দিক দিয়ে ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
(ঘ) “উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার মূলভাব ফুটে উঠেছে।”_ মন্তব্যটি সঠিক।
৫। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সবার সুখে হাসবো আমি/ কাঁদবো সবার দুখে
নিজের খাবার বিলিয়ে দেবো/ অনাহারীর মুখে।
ক. কে কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে?
খ. কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো কেন?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্যের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপক এবং কমলাকান্তের ‘বিড়াল’ রচনার বাস্তবতা অভিন্ন।”_মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) প্রসন্ন কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে।
(খ) চিরায়ত প্রথার কারণে কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো।
কমলাকান্তের মতে চিরায়ত প্রথা অনুসারে বিড়াল দুধ খেলে তাকে তাড়িয়ে মারতে হয়। নইলে মানবসমাজে তাকে কুলাঙ্গার ভাবা হয়। তাছাড়া বিড়ালটি কমলাকান্তকে কাপুরুষও ভাবতে পারে। এজন্যই কমলাকান্ত বিড়ালের প্রতি ধাবমান হয়।
(গ) সাম্যবাদী মানসিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।‘বিড়াল’ রচনায় দরিদ্রের দরিদ্রতার কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে ধনীদের কার্পণ্যকে। যারা অভুক্তকেও অন্ন দিতে চায় না।উদ্দীপকের কবিতাংশে সাম্যবাদী ধারণা ব্যক্ত হয়েছে। যেখানে কবি সবার সুখে হাসতে চান। সবার দুঃখে দুখী হন। এমনকি অনাহারীর মুখে নিজের খাবার তুলে দিয়ে তৃপ্ত হন তিনি। কিন্তু ‘বিড়াল’ রচনায় এর বিপরীত দিকটি উন্মোচিত হয়েছে। সেখানে বিড়ালের অনুযোগের মধ্য দিয়ে ধনীদের তোষণের দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে, যারা সমাজে ধনী-দরিদ্র বৈষম্যের জন্য দায়ী। এটি উদ্দীপকের ভাবনার বিপরীত।
(ঘ) “উদ্দীপক এবং কমলাকান্তের ‘বিড়াল’ রচনার বাস্তবতা অভিন্ন।”_মন্তব্যটি যথার্থ।‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তের আচরণে সমদর্শনের দিকটি উঠে এসেছে। উদ্দীপকের কবিতাংশের বর্ণনায় কবির সাম্যবাদী মানসিকতা রূপ লাভ করেছে। তাই সকলের বেদনায় কবি সমব্যথী হতে চান। সকলের সুখে হতে চান সুখী। এমনকি অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দেয়ার আনন্দে তৃপ্ত হতে চান তিনি, যা তার উদার সাম্যবাদী মনোভাবকে তুলে ধরে।‘বিড়াল’ রচনায় লেখক কমলাকান্ত চরিত্রের মধ্য দিয়ে তার সমদর্শনের চেতনাকে মূর্ত করে তুলেছেন। সেখানে কমলাকান্ত তাকে জলযোগের সময় আসার আমন্ত্রণ জানায়, যা উদ্দীপকের কবিতাংশে উঠে আসা কবির সাম্যবাদী মনোভাবেরই প্রতিফলন। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযবস্তুত উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনার মাঝে বিপন্ন মানবতার প্রতি একটি সহমর্মিতার অনুরাগ আলোকিত হয়েছে। তাই বলা যায় মন্তব্যটি যথার্থ।
৬। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
হাজি মুহম্মদ মুহসীন এক রাতে তাঁর শয়নকক্ষে জনৈক চোরকে কিছু মালসহ ধরে ফেলেন। তিনি চোরটিকে শাস্তি না দিয়ে তার চুরির কারণ জিজ্ঞেস করেন। চোরটি অকপটে তার অভাব-অভিযোগ তুলে ধরে। ঘটনা শুনে মুহসীনের দয়া হয়। তিনি চোরকে নগদ অর্থ ও কিছু খাবার দিয়ে বিদায় করেন। চোরটি দণ্ডের বদলে উপহার পেয়ে খুশি মনে ধন্য ধন্য বলে বিদায় হয়।
ক. প্রসন্ন কর্তৃক দোহনকৃত দুধ কার?
খ. চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার যে দিকটি প্রাসঙ্গিক_তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “যারা প্রয়োজনাতীত ধন থাকতেও চোরের প্রতি মুখ তুলে চান না, তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ মুহসীন।”_‘বিড়াল’ রচনার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) প্রসন্ন কর্তৃক দোহনকৃত দুধ মঙ্গলার।
(খ) চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে বিড়াল দুধ চুরি করে খেলে তাকে তাড়িয়ে না দেয়ার বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে।
লোক-সমাজে চিরাচরিত একটি প্রথা প্রচলিত হয়েছে, তা হলো বিড়াল দুধ চুরি করে খেয়ে ফেললে, তার দিকে তেড়ে যেতে হয়। নইলে মনুষ্যকুলে কুলাঙ্গাররূপে চিিহ্নত হতে হয়। কেননা, বিড়াল অন্যায় করলে তাকে লাঠিপেটা করা উচিত। কমলাকান্ত দুধ খাওয়ার অপরাধে বিড়ালটিকে না মারার জন্য যে সিদ্ধান্ত প্রথমে নিয়েছিল, চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে তাকেই বোঝানো হয়েছে।
উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনায় উঠে আসা বিড়ালের চুরির অন্তর্নিহিত কারণের দিকটি প্রাসঙ্গিক।
(ঘ) “যাদের প্রয়োজনাতীত ধন থাকতেও চোরের প্রতি মুখ তুলে চান না, তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ মুহসীন।”_বক্তব্যটি যথার্থ।
৭।নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দণ্ডিতের সাথে
দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।
ক. কে বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না?
খ. “পুরুষের ন্যায় আচরণ করাই বিধেয়।”_কী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের কোন ভাবটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”_উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে মূল্যায়ন কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) বিড়াল বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত বিড়াল মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না।
(খ) দুধ চুরির অপরাধে বিড়ালকে লাঠিপেটা করাকে পুরুষের ন্যায় আচরণ করা বলে বোঝানো হয়েছে।
কমলাকান্ত তার শয়নকক্ষে বিবিধ বিষয়ে চিন্তায় অন্যমনস্ক থাকলে বিড়াল এসে তার জন্য রাখা দুধটুকু সাবাড় করে ফেলে। দুধের ওপর বিড়ালের অধিকার বিবেচনায় প্রথমদিকে কমলাকান্ত নীরব থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ মনোভাব ধরে রাখতে পারেন নি। তাই অনেক অনুসন্ধান করে একখানা লাঠি নিয়ে বিড়ালকে তাড়া করে পুরুষোচিত মনোভাবের পরিচয় দেন। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এ কথাটিই বোঝানো হয়েছে।
(গ) উদ্দীপকের আসামির প্রতি সহানুভূতির দিকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
(ঘ) “অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”_উক্তিটি ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে সঠিক। ‘বিড়াল’ রচনায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত বিড়ালের বিচার করতে গিয়ে তার প্রতি লেখকের সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে।
‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের কল্পিত ভাষ্যে কমলাকান্তকে তিনদিন অভুক্ত থাকতে বলার মধ্য দিয়ে অপরাধের কারণ বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। কমলাকান্তও বিষয়টিকে আমলে নিয়ে বিড়ালের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাকে পরবর্তী দিনের জলযোগে আমন্ত্রণ জানায়। আলোচ্য উদ্দীপকেও অপরাধীর প্রতি তেমনি সহানুভূতির কথাই বলা হয়েছে।
বস্তুত উদ্দীপক ও বিড়াল রচনায় সমাজের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি মানবিকতা ও সহানুভূতি মূর্ত হয়ে উঠেছে। এ দিক থেকে বিচার করলে আলোচ্য মন্তব্যটি যথার্থ।
৮। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ১৫২ ট্রিলিয়ন বা ১৫২ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। বিবিসি বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার দেশসমূহের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এর ফলে এই অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়েছে।
ক. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে কী বুঝতে পারা যাবে?
খ. ‘সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বিড়াল’ গল্পের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রতিফলিত হয় নি। _মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে আফিমের অসীম মহিমা বুঝতে পারা যাবে।
(খ) কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, সমাজের ধনবৃদ্ধি ঘটলেও তা মূলত ধনীর হাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।
অর্থনৈতিকভাবে সমাজের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন নির্ভর করে সমাজের সম্পদের গতিশীলতার ওপর। কারণ সম্পদের যত হাত-বদল হয় সমাজস্থ মানুষের জীবনযাপনের মানও তত বৃদ্ধি পায়। সে সম্পদ যখন গুটিকয়েক ধনীর হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে, তখন আশেপাশের নির্ধন গরিব মানুষের জীবনযাপনের মান অনেক বেশি নিচে নেমে যায়। অথচ সমাজের উন্নতির প্রয়োজনে সমাজের ধনবৃদ্ধির নামে মূলত ধনীরই ধনবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলে।
(গ) ‘বিড়াল’ গল্পের পর্যায়ক্রমিকভাবে ধনীর ধনবৃদ্ধির দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।
প্রতিটি অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ অপরিহার্য। সব মানুষকে উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য থাকা প্রয়োজন সম্পদের সুষম বণ্টন। তা না হলে দ্রুত বেড়ে ওঠা একটা বটগাছের নিচে অবস্থিত অন্য গাছগুলো যেমন স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, ঠিক তেমনি সমাজের একটা অংশও থেকে যাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ ধনী ব্যক্তি আরও বেশি ধনী হয়েছে। আর বিবিসির ভাষ্যমতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাজে লাগিয়ে এশিয়ার দেশসমূহে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। অর্থাৎ সম্পদ নির্দিষ্ট কিছু মানুষের কুক্ষিগত হওয়াতে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যরা। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পেও উঠে এসেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন পাঁচশ লোকের আহার করছে। এই আহার হরণকারী একজন ধনীর মতো অন্য ধনীরাও ধনবৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সামাজিক উন্নয়নের ধারণাকে। এজন্য বলা যায়, উদ্দীপকের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধি আর ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর ধনবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাদৃশ্য বিদ্যমান।
(ঘ) উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয় নি_মন্তব্যটি যথার্থ।
মানুষের চাওয়ার কোনো শেষ নেই। যত পায় তত চায়। সে ভাবতে চায় না হয়তো তার দ্বিতীয় চাওয়ার কারণে অন্যজন বঞ্চিত হচ্ছে নির্দিষ্ট প্রাপ্তিটুকু থেকে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, একদিকে একজনের অধীনে সম্পদের বিশাল পাহাড়, অন্যদিকে নিরন্ন মানুষের হাহাকার, বুকফাটা আর্তনাদ।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে এশিয়ার দেশগুলো এগিয়ে গেছে বহুমাত্রায়। বিবিসির তথ্যানুসারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হাত ধরে এশিয়া অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ঘটেছে অর্থাৎ সম্পদ কিছু মানুষের হাতে আটকে থাকছে। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পে কমলাকান্তের সাথে কথা প্রসঙ্গে মার্জারী বলেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন সে পাঁচশ লোকের আহারের পুরোটাই সংগ্রহ করছে সামাজিক উন্নয়নের নামে। কিন্তু নিজে খাওয়ার পর যতটুকু থাকে তা অন্যকে খাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। মার্জারী তাই সে খাবার নিরন্নকে কেড়ে বা চুরি করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে চায়। মার্জারী গরিবকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ারও কথা ব্যক্ত করেছে।
উদ্দীপকে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ও তার কৌশলকে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর সম্পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মার্জারী তার বক্তব্যে গরিবের প্রাপ্য অধিকার বোধকে তুলে এনেছে। এ বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।
৯ । নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আমরা পরের উপকার করিব মনে করিলেই উপকার করিতে পারি না। উপকার করিবার অধিকার থাকা চাই। যে বড়ো সে ছোটোর অপকার অতি সহজে করিতে পারে, কিন্তু ছোটর উপকার করিতে হইলে কেবল বড়ো হইলে চলিবে না, ছোট হইতে হইবে, ছোটর সমান হইতে হইবে। মানুষ কোনোদিন কোনো যথার্থ হিতকে ভিক্ষারূপে গ্রহণ করিবে না, ঋণরূপেও না, কেবলমাত্র প্রাপ্ত বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে।
ক. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাসের নাম কী?
খ. “একটি পতিত আত্মা কে অন্ধকার হইতে আলোকে আনিয়াছি, ভাবিয়া কমলাকান্তের বড় আনন্দ হইল!” ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাবে দরিদ্র মানুষের যে অধিকার চেতনাটি প্রকাশ পেয়েছে তা ‘বিড়াল রচনায় প্রতিফলিত অধিকার চেতনার সাথে একসূত্রে গাঁথা। বিশ্লেষণ কর।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাসের নাম দুর্গেশনন্দিনী।
(খ) বাক্যটির মাধ্যমে কথক কমলাকান্তের মানসিক উন্নতি ও পরোপকারী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিড়াল’ রচনায় ক্ষুধার্ত এক বিড়াল কমলাকান্ত নামক এক ব্যক্তির জন্য রাখা দুধ খেয়ে ফেলে। বিড়ালের এই দুধ খাওয়া উচিত হয়েছে কিনা তা নিয়ে কমলাকান্ত এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন। তাতে একটি সমাজের নানা অসঙ্গতি, চুরির কারণ, ক্ষুধার্তের ক্ষুধার জ্বালা, সামাজিক উন্নতির জন্য ধন সঞ্চয় যে অভাবীদের কোনো উপকার করে না প্রভৃতি বিষয় ফুটে উঠেছে। এতে করে আফিমে নেশাগ্রস্ত কমলাকান্ত সত্যিকার অর্থেই আলোর সন্ধান লাভ করেছে।
(গ) উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত পরোপকারী মনোভাব এবং দুর্বলের অধিকার সচেতনতাবোধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যুগযুগ ধরে দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচারের তুলনায় দুর্বলের প্রতি সবলের আশীর্বাদ তেমন দেখা যায় না। অনেক সময় দুর্বলকে সাহায্যের নামে সবলেরা এক ধরনের শোষণ চালায়, যা প্রাথমিক অবস্থায় সহজ-সরল নিরীহ মানুষেরা বুঝতে পারে না। মূলত দুর্বলের প্রতি সবলেরা যে সহানুভূতি দেখায় তা স্বার্থহীন নয়।
উদ্দীপকে ছোটর প্রতি বড়র উপকারী মনোভাব এবং তা প্রদর্শনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অহংকারী মনোভাব নিয়ে নিরীহদের উপকার করতে গেলে তা হবে ভিক্ষার নামান্তর। আর ভিক্ষারূপে পরোপকার বা হিতসাধন করা প্রকৃত উপকার নয়। কাজেই ছোটর উপকার করতে হলে, ছোটর কষ্ট-যন্ত্রণাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করেই করতে হবে। ছোটর প্রাপ্যকে ভিক্ষারূপে নয়, ঋণরূপে নয়, সহানুভূতিশীল হৃদয়ের ভালোবাসার দান হিসেবে দিতে হবে।
উদ্দীপকের এই মূল বক্তব্যের সাথে ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের প্রতি কথক কমলাকান্তের সহানুভূতি সাদৃশ্যপূর্ণ। সেখানে বিড়ালকে প্রহার না করে তার প্রাপ্য হিসেবে তা গ্রহণ করাকে কমলাকান্ত মেনে নিয়েছেন।
(ঘ) উদ্দীপকের মূলভাবে মানুষের যে অধিকার চেতনাটি প্রকাশ পেয়েছে তা ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত অধিকার চেতনার সাথে একসূত্রে গাঁথা_মন্তব্যটি যথার্থ।
অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়। জগতের নিয়ম যাই হোক, এভাবেই চলছে। যারা সবল তারা শক্তি প্রয়োগ করে তার অধিকার আদায় করে নেয়। যারা দুর্বল অথচ ঐক্যবদ্ধ তারা সংগ্রামের পথ বেছে নেয়। আর যারা দুর্বল, ক্ষুদ্র, ঐক্যহীন তারাও তাদের অধিকারের প্রশ্নে মত প্রকাশ করে।
উদ্দীপকে দুর্বলকে সবলের উপকার, ভিক্ষা নয়, নাকি ঋণশোধ_এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সে ব্যাখ্যায় দুর্বলের অধিকার সচেতনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, যা ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। রচনায় বিড়াল তার শরীরের করুণ বর্ণনা শেষে বলেছে_“এ পৃথিবীতে মৎস্য, মাংসে আমাদের কিছু অধিকার আছে। খাইতে দাও, নইলে চুরি করিব। দরিদ্রের আহার সংগ্রহের দণ্ড আছে, ধনীর কার্পণ্যের দণ্ড নাই কেন?” এই বক্তব্যে ছোটর অধিকার সচেতনতার এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ বিষয়টি উদ্দীপকের “কেবলমাত্র প্রাপ্ত বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে” উক্তিটির সাথে ঐক্য স্থাপন করে।
‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল ন্যায়সঙ্গত যুক্তি প্রদর্শন করেছে। কমলাকান্তের দুধে যে তার অধিকার রয়েছে সে দিকটি বিড়ালের যুক্তি-তর্কে প্রতিফলিত হয়েছে। ধনীর ধন-সম্পদে যে অভাবীদের অধিকার আছে, এ বিষয়টি এখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এসব দিক বিবেচনা করে তাই বলা হয়েছে যে, উদ্দীপকের মূলভাবে দরিদ্র মানুষের অধিকার চেতনাটি ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত অধিকার সচেতনতার সাথে একসূত্রে গাঁথা।
১০। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
নাফিজ সাহেবের কাজের লোক রুবেল। প্রতিদিন সে বাজার থেকে বড় বড় মাছ, মুরগি, গরু ও খাসির মাংসসহ অনেক জিনিস কিনে আনে। নাফিজ সাহেবের বাড়িতে প্রতিদিনই পোলাও-কোরমা, মাছ-মাংস রান্না করা হয়। তারা অতি তৃপ্তিসহকারে সেসব খাবার খায়। আর কাজের লোকদের জন্য আলাদাভাবে কেবল ডাল, ভাত আর সবজির ব্যবস্থা করা হয়। রুবেল একদিন নিজেই রান্নাঘর থেকে পোলাও আর মাংস খেয়ে নেয়। এ ঘটনা আরেক কাজের মহিলা দেখে ফেললে রুবেল বলে, “বড়লোকদের খাবার থেকে এভাবেই নিজের অধিকার নিয়ে নিতে হয়।”
ক. নির্জল দুগ্ধপানে কে পরিতৃপ্ত হয়েছিল?
খ. “চোর যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীর।”_ব্যাখ্যা কর।
গ. রান্নাঘর থেকে রুবেলের পোলাও ও মাংস চুরি করে খাওয়ার ঘটনাটি ‘বিড়াল’ গল্পের কোন বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নাফিজের মতো কৃপণ ধনী মানুষরাই আমাদের সমাজে চুরি নামক অপকর্মের অন্যতম প্রধান কারণ।”_মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) নির্জল দুগ্ধপানে মার্জার সুন্দরী পরিতৃপ্ত হয়েছিল।
(খ) মূলত কৃপণ ধনী সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে বলেই চোর চুরি করে।
কৃপণ ধনী সমাজের অসহায় বঞ্চিতের সম্পদ আর শ্রম শোষণ করে ধনের পাহাড় গড়ে তোলে। কিন্তু যাদের কারণে তার এই ধনসম্পদ তাদের প্রতি তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। এতে বৈষম্যপীড়িত হয়ে ক্ষুব্ধ একশ্রেণির মানুষ তাদের ধনই চুরি করে। তাই বলা হয়েছে_“চোর যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীর।”
(গ) রান্নাঘর থেকে রুবেলের পোলাও ও মাংস চুরি করে খাওয়ার ঘটনাটি ‘বিড়াল’ গল্পে মার্জারীর দুধ চুরি করে খাওয়ার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
পৃথিবীতে কোনো মানুষই চোর বা অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট অথবা সামাজিক বৈষম্যের কারণেই মানুষ অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
উদ্দীপকের নাফিজ সহেবের বাড়িতে রুবেল কাজ করে। প্রতিদিন নাফিজ বাড়ির জন্য মাছ-মাংস কিনে আনে। সেই পরিবার প্রতিদিনই ভালো ভালো খাবার খেলেও কাজের মানুষদের জন্য নিম্নমানের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। তাই রুবেল একদিন রান্নাঘর থেকেই চুরি করে পোলাও-মাংস খেয়ে নেয়। ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারী ক্ষুধার্ত। বিভিন্ন বাড়ির প্রাচীরে প্রাচীরে ঘুরে বেড়ালেও মানুষ তাকে মাছের কাঁটা পর্যন্ত খেতে দেয় না। এজন্য সে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ চুরি করে খেয়ে পরিতৃপ্তি লাভ করে। তাই বলা যায়, মার্জারীর এই দুধ চুরি করে খাওয়ার ঘটনাটি রুবেল চুরি করে পোলাও ও মাংস খাওয়ার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
(ঘ‘) নাফিজ চৌধুরীর মতো কৃপণ ধনী মানুষরাই আমাদের সমাজে চুরি নামক অপকর্মের অন্যতম প্রধান কারণ।”_মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রতিটি অপরাধের পেছনে কিছু কারণ থাকে। তবে সূক্ষ্মভাবে দৃষ্টি দিলে প্রতিটি অপরাধের পেছনেই সামাজিক বৈষম্যের বিষয়টি লক্ষণীয়।
উদ্দীপকের নাফিজ ধনী ব্যক্তি হলেও তার মনটা অনেক ছোট। প্রতিদিন তার পরিবারের জন্য অনেক ভালো খাবার রান্না করা হলেও তিনি বাড়ির কাজের লোকদের জন্য নিম্নমানের খাবারের ব্যবস্থা করেন। তার আচরণের কারণেই রুবেল চুরি করে খেতে বাধ্য হয়েছে। ‘বিড়াল’ গল্পেও দেখা যায় মার্জারী খাবারের জন্য প্রাচীরে প্রাচীরে ঘুরে বেড়ায়। কেউ তাকে মাছের কাঁটা পর্যন্ত খেতে দেয় না। এ জন্যই সে চুরি করে খেয়েছে।
আমাদের সমাজের একশ্রেণির উচ্চবিত্ত মানুষের জন্য সমাজে অপরাধ জন্ম নেয়। তারা নিজেরা ধন কুক্ষিগত করার জন্য অন্যকে শোষণ করে থাকে। নাফিজ এমনই এক কৃপণ উচ্চবিত্ত ধনী ব্যক্তি এবং পরোক্ষভাবে তাদের জন্যই সমাজে এতটা বিশৃঙ্খলা। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
১১। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
লিটন সাহেব এলাকার শ্রেষ্ঠ ধনী হলেও এলাকার গরিবদের প্রতি তার কোনো খেয়াল নেই। অতি দরিদ্র মানুষগুলো কখনো কখনো না খেয়ে থাকে। এসব মানুষদের প্রতি ঈদের দিনেও লিটন সাহেবের মায়া-মমতা জাগে না। কোনোদিনই সে তাদের কোনো উপকার করে না। অথচ এলাকার এমপি সাহেব সামান্য অসুস্থ হলেই লিটন সাহেবের আর হুঁশ থাকে না। সে তার জন্য ডাক্তার ডাকে, ওষুধ আনে; হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
ক.মার্জারীর ভাষায় কে দুধ খেলে কমলাকান্ত ঠেঙ্গা লইয়া মারিতে যাইত না?
খ‘তবে আমার বেলা লাঠি কেন?’_মার্জারী এ কথা কেন বলেছিল?
গ.উদ্দীপকের লিটন সাহেবের তোষামোদির ঘটনাটি ‘বিড়াল’ গল্পের কোন ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ.“উদ্দীপকের লিটন সাহেবের আচরণ ‘বিড়াল’ গল্পের কমলাকান্তের আচরণের বিপরীত।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
(ক) মার্জারীর ভাষায় কোনো শিরোমণি বা ন্যায়ালংকার দুধ খেলে কমলাকান্ত ঠেঙ্গা লইয়া মারিতে যাইত না।
(খ) শিরোমণি ন্যায়ালংকার দুধ খেলে জোড়হাত করে মানুষ বলে ‘আরও একটু এনে দেই?’ কিন্তু বিড়ালের বেলায় তার উল্টো ঘটে বলে বিড়াল এ প্রশ্নটি করেছে।
সমাজে যারা ছোট, তাদের কেউই ভালোবাসে না। কমলাকান্ত তার দুধ খেয়েছে বলে বিড়ালকে লাঠি দিয়ে মারতে যায়। অথচ এই দুধ যদি কোনো ন্যায়ালংকার বা শিরোমণি খেত তবে সে আরও দেয়ার জন্য হাতজোড় করত। তাই বিড়ালের প্রতি এই বৈষম্য চলে বলে সে বলেছে_তবে আমার বেলা লাঠি কেন?
(গ) উদ্দীপকের ঘটনাটিকে ‘বিড়াল’ গল্পের আলোকে তেলা মাথায় তেল দেওয়া বিষয়টির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
তেলা মাথায় তেল দেওয়া হলো একটি প্রবাদ বাক্য। এর অর্থ হলো যার ধন-সম্পদ আছে তাকেই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে, যারা গরিব মানুষদের বিপদে এগিয়ে আসে না। অথচ ধনীদের কিছু না হতেই তারা ছুটে যায়।
তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মতো একজন চরিত্র হলো উদ্দীপকের লিটন সাহেব। তার এলাকারও অনেক মানুষ খেতে পায় না। এমনকি ঈদের দিনেও সে তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেয় না। অথচ এলাকার এমপির সামান্য অসুখে চিন্তার শেষ নেই। ‘বিড়াল’ গল্পে মার্জারী ও কমলাকান্ত এ বিষয়টি বলেছে। মার্জারী বলে সে সামান্য একটু দুধ খেয়েছে বলে কমলাকান্ত তাকে মারতে এসেছে। মার্জারীর ভাষায় এটিই হলো তেলা মাথায় তেল দেয়া, যা লিটন সাহেবের তোষামোদির মধ্যে পাওয়া যায়। তাই বলা যায় যে, লিটন সাহেবের তোষামোদি ‘বিড়াল’ গল্পের আলোকে তেলা মাথায় তেল দেয়া বলা যেতে পারে।
“উদ্দীপকের লিটন সাহেবের আচরণ ‘বিড়াল’ গল্পের কমলাকান্তের আচরণের বিপরীত।” মন্তব্যটি যথার্থ।
(ঘ) আমাদের সমাজে আমরা প্রতিনিয়তই কিছু বৈষম্য দেখতে পাই। এসব বৈষম্যের অন্যতম প্রধান কারণ, আমরা তাকেই বেশি ভালোবাসি যার অনেক আছে।
লিটন সাহেব তার এলাকার অন্যতম সম্পদশালী ব্যক্তি। তার অনেক থাকা সত্ত্বেও তিনি গরিবদের সাহায্য করেন না। অথচ এমপি সাহেবের সামান্য অসুখেই সর্বস্ব নিয়ে ছুটে যান। কমলাকান্তের প্রতি এমনই ইঙ্গিত করেছে মার্জারী। সে সমাজের সবাইকে উদ্দেশ্য করেই বলেছে, যাদের কিছু নেই তাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। অথচ যাদের অনেক কিছু রয়েছে, তাদের দেওয়ার কোনো শেষ নেই।
মার্জারীর ভাষায় একে তেলা মাথায় তেল দেয়া বলা চলে এবং এটি অবশ্যই একটি রোগ। এটি থেকে উদ্ভূত হতাশা সমাজে বিভিন্ন বিশৃঙ্খলার জন্ম দিতে পারে। লিটন সাহেব যে কাজটি করেছে সেটিও ‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তের আচরণের বিপরীত। কারণ কমলাকান্ত বিড়ালের সাথে সেই রকম আচরণ করেনি। তার সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।
WordsMeaningsSynonyms antonymsouterবাইরেরoutmostinnerproletarianদরিদ্র/সর্বহারাWorking-classmorallaunchশুরু করাIntroductionwithdrawpreparingপ্রস্তুতিGet-readydoubtfaultlesslyনির্দোষভাবেabsolutelyfaultynauseaবমিবমিভাবvomitingheadachediscomfortঅসস্তিupsetcomfortmaintainedবজায় করাsustainuselessLaterকরেnextearlierdynamicগতিশীলAggressivestaticplanপরিকল্পনাproposaldisorderaimলক্ষGoalaimlessdirectionনিদ্ধেশনাInstructionnoticeprofessionপেশাJobjoblesssuitsআকারFormnothingaptitudeযোগ্যতাAttitudedislikevaryপরিবর্তীতVariousfixeducatedশিক্ষিতLearneduneducatedcitizenনাগরিকnativeforeignervirtueপূর্ণgoodnessevilA lotঅনেকhugelittlecourteousবিনয়ীpoliterudediscourtesyঅবিনয়ীrudenesscourteouswinজয় করাgainloseenemyশত্রুfoefriendensureনিশ্চিত করাconfirmcancelangerরাগtempercalmnessremoveঅপসারণcancelputcordialityসোহার্দrudenessdiscordialitydifferentভিন্নDissimilarsameseeksঅনুসন্ধানPursuefindeagerআগ্রহীinterestdisinterestedobservationপর্যবেক্ষণExaminationneglectmereএকমাত্রImmenseabnormalalertসতর্কWatchfulunawarelatentসুপ্তOpenrealizedinstructorsপ্রশিকক্ষকteacherstudentguideগাইডmentormisguidewayপথ/উপায়Pathpartfascinatingচমৎকারexcellentunattractiveinterestআগ্রহীeagerdisregardimpatientঅধৈয্যIntolerancepatientillogicalঅযোক্তিকunethicalLogicalindifferentউদাসীনUninteresteddifferentethicallyনৈথিকভাবেlawfullyUnethicalGood-lookingচমৎকারAttractiveUnattractiveDarkঅন্ধকারBlackbrightFlawlessস্থিরperfectflawedShinyউজ্জল্যbrightdarkSlenderসরুthinfatGracefulকরুনাময়elegantungracefulStylishlyআড়ম্বরপূর্ণভাবেattractivesimplyAppreciatesপ্রশংসা করেpriesCriticizeNoticeলক্ষ করেadvertisementoverlookAmbitionউচ্ছাকাঙকাAim/desirelazinessRequireপ্রয়োজনneedanswerProficiencyদক্ষতাskilledincompetenceWonderআশ্চয্যSurprisedisinterestTestedপরীক্ষীতverifiednewEquallyসমানভাবেsimilarlyUnequallyDisappointingহতাশাজনকInceptingappointingPresumablyসম্ভবতdoubtlesslyimprobableQualifyযোগ্যতাcertifyDisqualifywrongভুলmistakewriteIdealআদর্শModelbadMasterদক্ষTeacherStudentMakesতৈরীcreateBreak/destroyMethodপদ্ধতিSystemdifferenceConvincingবিশ্বাসীsatisfactoryUnconvincingPraisesপ্রশাংসা করেhurrahCriticizeMistakeভুলErrorsagacityAngryরাগevilcalmSimpleসাধারণgeneralComplexmoralনৈতিকethicalamoralAcceptedগৃহিতreceivedrejectedSincerityআন্তরিকতাGood-willinsincerityResponsibilityদায়িত্বdutiesdepartureComplexityজটিলতাcomplicationSimplicityEnvyহিংসাlastedpraiseVicesমন্দevilVirtueImpactsপ্রভাবeffectfailsAwarenessসতর্কতাalertnessunawarenessOut-comeবাহিরের দিকresultcauseimportanceগুর্ত্বপূর্ণsignificanceinsignificanceFriendবন্দুenemyfoeNeedপ্রয়োজনcommitment/necessaryavoidSympathyসহানুভুতিkindnessrudenessProveপ্রমানconfirmdisproveFalseমিথ্যাwrongtrueHarmক্ষতিকরlosshelpLaughহাসাburstcryPleasureআনন্দhappinesssadnessBringআনাcarryleaveideaধারণাconceptnothingAllowঅনুমতিpermitdenyFreedomস্বাধীনতাindependencebondageOpinionমতামতviewawarenessFairমেলাcleanunfairEqualসমানbalancedunequalDivisionবিভাগdistributionunionElectনির্বাচন করাvoterefuseSystemনিয়ম-নীতিprocesspartTreatmentচিকিৎশা করাcuringhurtFacilityসুবিধাadvantagepainNeverকখন নয়NotingAlwaysWeakerদুর্বলrottenstrongerDiscourageনিরুৎসাহিতdroopEncourageFrustratingহতাশাজনকBuffaloingsatisfyingInterestআগ্রহীeagernessdiscourageAbilityসক্ষমতাCapabilityinabilityDreamস্বপ্নfancyfactBestসবচেয়ে ভালfinestworstSuccessসফলতাachievementfailureachieveঅর্জন…
আপনি যদি ইন্টারনেটে চাকরির সন্ধান করছেন এবং আপনি এটি সম্পর্কে জানতে চান তবে আপনি সঠিক…
Model Question 1 Part-I : Marks 60 1. Read the passage and answer the questions…
পঞ্চম অধ্যায় দেবদেবী ও পূজা এ অধ্যায়ে আমরা পূজা, পুরোহিতের ধারণা ও যোগ্যতা, দেবী দুর্গা,…
চতুর্থ অধ্যার হিন্দুধর্মে সংস্কার আমাদের এই পার্থিব জীবনকে সুন্দর ও কল্যাণময় করে গড়ে তোলার লড়্গ্েয…
তৃতীয় অধ্যায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আমাদের জীবনকে সুন্দর ও কল্যাণময় করার জন্য যেসব আচার-আচরণ চর্চিত হয়…
This website uses cookies.