পঞ্চম শ্রেণী বিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় জীবনের জন্য পানি

জীবনের জন্য পানি

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান

১.   সঠিক উত্তরে টিক চি‎হ্ন দাও। 

      ১)   উদ্ভিদের পুষ্টি শোষণের জন্য কোনটি প্রয়োজন?

            ক. পানি  খ. মাটি

            গ. আলো  ঘ. বায়ু

      ২)   কোনটি পানি দূষণের কারণ?

            ক. ধোঁয়া  খ. উচ্চ শব্দ

            গ. হর্ন বাজানো  ঘ. নর্দমার বর্জ্য

      ৩)   পানিতে মিশে থাকা বালি, কাদা ইত্যাদি সরানোর প্রক্রিয়াকে কী বলে?

            ক. ছাঁকন  খ. থিতানো

            গ. ফুটানো ঘ. ঘনীভবন

২.   সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :

      প্রশ্ন ॥ ১ ॥ পানিচক্র কী?

      উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাকে পানিচক্র বলে।

      প্রশ্ন ॥ ২ ॥ পানি দূষণ প্রতিরোধের ৩টি উদাহরণ দাও।

      উত্তর :  পানি দূষণ প্রতিরোধের ৩টি উদাহরণ নিম্নরূপ :

      ১.   কৃষিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে,

      ২.   রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় ও টয়লেটে রাসায়নিক বর্জ্য এবং তেল না ফেলে,

      ৩.   সমুদ্র সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা এবং হ্রদ কিংবা নদীতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে আমরা পানি দূষণ প্রতিরোধ করতে পারি।

      প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ অনিরাপদ পানি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়ার চারটি উপায় লেখ।

      উত্তর : অনিরাপদ পানি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়ার চারটি উপায় নিম্নরূপ :

      র. ছাঁকন, রর. থিতানো, ররর. ফুটানো, রা. রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ। 

      প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ বৃষ্টির পর মাটিতে পানি জমা হয়। কিছুক্ষণ পর সেই পানি অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই পানি কোথায় যায়?

      উত্তর : বৃষ্টির পর মাটিতে জমা পানি কিছুক্ষণ পর অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই পানি মূলত মাটিতে শোষিত হয় অথবা নদীতে গড়িয়ে পড়ে। কিছু অংশ সূর্যের তাপে বাষ্পীভূত হয়ে যায় বায়ুতে ফিরে যায়।

      প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ পানির তিনটি অবস্থা কী কী?

      উত্তর : পানির তিনটি অবস্থা হলো : কঠিন, তরল ও বায়বীয়।

৩.   বর্ণনামূলক প্রশ্ন :

প্রশ্ন ॥ ১ ॥ বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশ কেন ভিজে যায় তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘণীভূত হয়ে জমা হয় বলে সে অংশ ভিজে যায়।

ঘণীভবন বাষ্পীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় বাষ্পীভূত পানি তাপ হারিয়ে তরল পানিতে পরিণত হয়। বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশ স্বাভাবিকভাবেই ঠা-া হয়। বায়ু যখন ঐ ঠা-া গ্লাসের সংস্পর্শ আসে তখন বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প ঘণীভূত হয়ে বিন্দু বিন্দু পানিতে পরিণত হয়। ফলে গ্লাসের বাইরের অংশ ভিজে যায়। এ প্রক্রিয়াকে নিচের সমীকরণের সাহায্যে সংক্ষেপে প্রকাশ করা যায় :

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ পানি চক্র ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাই পানি চক্র। এই চক্রের মাধ্যমে সর্বদাই পানির অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠা-া ও ঘনীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে। এই মেঘের পানি কণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। শীত প্রধান দেশে তুষারও মেঘ থেকেই পৃথিবীতে পড়ে। বৃষ্টির পানি সাধারণত মাটিতে শোষিত হয় অথবা নদীতে গড়িয়ে পড়ে। মাটিতে শোষিত পানি ভূগর্ভস্থ পানি হিসেবে জমা থাকে। নদীতে গড়িয়ে পড়া পানি সমুদ্রে প্রবাহিত হয় এবং বাষ্পীভূত হয়ে আবার বায়ুতে ফিরে যায়।

পানি চক্রের পুরো প্রক্রিয়াটিকে নিচের রেখা চিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় :

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ জীবের কেন পানি প্রয়োজন?

      উত্তর : পানি ছাড়া জীব বাঁচতে পারে না। উদ্ভিদের দেহের প্রায় ৯০ ভাগ পানি। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরিতেও পানি ব্যবহার করে। মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ ও বিভিন্ন অংশে পরিবহনের জন্য উদ্ভিদের  পানি প্রয়োজন।

      বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীদেরও পানি প্রয়োজন। মানবদেহের ৬০-৭০ ভাগ পানি। অধিকাংশ প্রাণী পানি পান না করে অল্প কিছু দিন বেঁচে থাকতে পারে। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি তখন সেই পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। পুষ্টি উপাদান শোষণ ও দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গে পরিবহনের জন্য পানি প্রয়োজন। পানি আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ বাতাসে পানি আছে তা আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি?

উত্তর : বায়ুতে যে সবসময় কিছু পানি জলীয় বাষ্প অবস্থায় থাকে তা নিচের পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করা যায় :

একটি কাচের গ্লাসে কয়েক টুকরা বরফ নিই। কিছুক্ষণ রেখে দেখা গেল গ্লাসের বাইরের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে। গ্লাসের ভেতর থেকে পানি অবশ্যই বাইরে আসতে পারে না। তাই গ্লাসের বাইরের ফোঁটা ফোঁটা পানি গ্লাসের বরফ থেকে আসেনি।

[চিত্র : গ্লাসের বাইরে ফোঁটা ফোঁটা পানি]

বরফের ঠা-ার কারণে গ্লাসটি ঠা-া হয়েছে। আর সে ঠা-ার সংস্পর্শে বায়ুর জলীয় বাষ্প পানিকণায় পরিণত হয়ে গ্লাসের বাইরের গায়ে জমা হয়েছে। এ পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বায়ুতে সবসময়ই জলীয় বাষ্প তথা পানি থাকে।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ পুকুরের পানি থেকে আমরা কীভাবে নিরাপদ পানি পেতে পারি?

উত্তর : পুকুরের পানিকে ফুটিয়ে অথবা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ পানিতে পরিণত করা যায়। প্রথমে এ পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে নিতে হয়। নিচে প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করা হলো :

ছাঁকন : পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি পরিষ্কার করার প্রক্রিয়াই হলো ছাঁকন।

থিতানো : একটি কলসি বা পাত্রে পুকুরের পানি নিয়ে রেখে দিলে। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে পাত্রের তলায় তলানি জমেছে। উপরের অংশের পানি পরিষ্কার হয়েছে। পানিতে থাকা ময়লা যেমন বালি, কাদা ইত্যাদি সরানোর এই প্রক্রিয়াই হলো থিতানো।

ফুটানো : পানি জীবাণুমুক্ত করার একটি ভালো উপায় হলো ফুটানো। জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানির জন্য ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পানি ফুটাতে হবে।

রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ : এ ক্ষেত্রে ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে আমরা পানি নিরাপদ করতে পারি।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ঠা-া পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির কেন একই রকম?

উত্তর : রাতে ঘাস, গাছপালা ইত্যাদির উপর যে বিন্দু বিন্দু পানি জমে তাকে শিশির বলে। বায়ু যখন ঠা-া কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠা-া হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। কাচের গ্লাসে বরফের টুকরা রাখলে গ্লাসটি ঠা-া হয়ে যায়। বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠা-া গ্লাসের সংস্পর্শে এসে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পানির কণায় পরিণত হয় এবং গ্লাসের বাইরের গায়ে তা বিন্দু বিন্দু পানি হিসেবে জমা হয়। গ্লাসের বাইরের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম। কারণ উভয়ের মূল গঠন উপাদান পানি। বাতাসের জলীয় বাষ্প, গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানি ও শিশির- পানির বিভিন্ন রূপ ছাড়া কিছুই নয়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :

প্রাকৃতিক কারণে পানির কোন দূষণটি হয়ে থাকে?

      ক.   আর্সেনিক দ্বারা দূষণ   খ.   কীটনাশক দ্বারা দূষণ

      গ.   কলকারখানার বর্জ্য দ্বারা দূষণ

      ঘ.   জীবাণু দ্বারা দূষণ

      উত্তরঃ আর্সেনিক দ্বারা দূষণ

২.   উদ্ভিদ মাটি থেকে কিসের সাহায্যে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে?

      ক.   মাটি খ.   পানি

      গ.   বায়ু  ঘ.   আলো

      উত্তরঃ পানি

৩.   উঁচু পর্বতের চূড়ায় পানি কী রূপে থাকে?

      ক.   পানি খ.   জলীয় বাষ্প

      গ.   শিশির     ঘ.   বরফ

      উত্তরঃ বরফ

৪.   যে নলকূপের পানিতে আর্সেনিক থাকে তাকে কোন রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়?

      ক.   নীল  খ.   লাল

      গ.   নবুজ ঘ.   আকাশী

      উত্তরঃ লাল

৫.   জীবনের জন্য কোনটি অবশ্য প্রয়োজনীয়?

      ক.   গ্যাস খ.   পানি

      গ.   মাটি ঘ.   আলো

      উত্তরঃ পানি

৬.   পৃথিবীতে পানির এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরাকে কী বলে?

      ক.   পানিচক্র   খ.   পানি গূর্ণন

      গ.   পানি দূষণ ঘ.   পানি শোধন

৭.   বায়ুতে সব সময় কিছু পরিমাণ কী থাকে?

      ক.   ধূলিকণা   খ.   বালিকণা

      গ.   বাষ্প ঘ.   গ্যাস

      উত্তরঃ বাষ্প

৮.   পানি ফুটতে শুরু করার পর আরও কত মিনিট পানিতে তাপ দিতে হয়?

      ক.   ২০ মিনিট খ.   ২৫ মিনিট

      গ.   ৩৫ মিনিট ঘ.   ৩৮ মিনিট

      উত্তরঃ২০ মিনিট

৯.   কোনটি সমুদ্রের পানিকে জলীয় বাষ্পে পরিণত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে?

      ক.   বায়ু. খ. সূর্য

      গ.   পানি ঘ.   আর্দ্রতা

      উত্তরঃ সূর্য

১০.  কোনটি মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে?

      ক.   পানি খ.   তাপ

      গ.   আলো     ঘ.   বাতাস

      উত্তরঃ পানি

১১.  পানি জলীয় বাষ্প হয়ে কোথায় চলে যায়?

      ক.   পুকুরে    খ.   নদীতে

      গ.   সাগরে    ঘ.   বায়ুম-লে

      উত্তরঃ বায়ুম-লে

১২.  নলকূপের মুখে কোন রং দেওয়া থাকলে তার পানি পান করা নিরাপদ?

      ক.   লাল  খ.   সবুজ

      গ.   হলুদ ঘ.   কালো

      উত্তরঃ     সবুজ

১৩.  দূষিত পানি পানে নিচের কোনটি হতে পারে?

      ক.   পেটের পীড়া    খ.   হাত ও পায়ে ব্যথা

      গ.   মাথা ব্যথা ঘ.   বুকে ব্যথা

      উত্তরঃ পেটের পীড়া

১৪.  উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি ছাড়াও শোষণ করে

      ক.   প্রোটিন    খ.   খনিজ

      গ.   ভিটামিন   ঘ.   খাদ্যসার

      উত্তরঃ খনিজ

১৫.  বায়ুম-লে পানি কী অবস্থায় থাকে?

      ক.   জলীয় বাষ্প অবস্থায়   খ.   তরল অবস্থায়

      গ.   কঠিন অবস্থায়   ঘ.   গ্যাসীয় অবস্থায়

      উত্তরঃ জলীয় বাষ্প অবস্থায়

১৬. পানিকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ করতে হলে কী করতে হবে?

      ক. ফিটকিরি মেশাতে হবে

      খ. ব্লিচিং পাউডার মেশাতে হবে

      গ. হ্যালোজেন ট্যাবলেট মেশাতে হবে

      ঘ. ফুটাতে হবে

      উত্তরঃ ফুটাতে হবে

১৭. নিচের কোনটি পানিতে মেশালে পানি কিছুটা জীবাণুমুক্ত হয়?

      ক. ফরমালিন   খ. স্যাকারিন

      গ. ফিটকিরি    ঘ. ক্যালসিয়াম কার্বাইড

      উত্তরঃ ফিটকিরি

১৮. পানিকে বেশিরভাগ জীবাণু থেকে কীভাবে মুক্ত করা যায়?

      ক. ফুটিয়ে খ. থিতিয়ে

      গ. ছেঁকে  ঘ. ঠা-া করে

      উত্তরঃ ফুটিয়ে

১৯. দূষিত পানি পান করলে মানুষ কোন রোগে আক্রান্ত্র হয়?

      ক. গুটি বসন্ত   খ. আর্সেনিকোসিস

      গ. কলেরা ঘ. হাম

      উত্তরঃ কলেরা

২০. ডায়রিয়া কোন ধরনের রোগ?

      ক. বায়ুবাহিত    খ. পানিবাহিত

      গ. পতঙ্গবাহিত  ঘ. ছোঁয়াচে

      উত্তরঃ পানিবাহিত

২১. কোন পানিতে ক্ষতিকর কিছু মিশে থাকে?

      ক. পাতিত পানি খ. বিশুদ্ধ পানি

      গ. নিরাপদ পানি ঘ. দূষিত পানি

      উত্তরঃদূষিত পানি

২২. জীবনের জন্য কোনটি অবশ্য প্রয়োজনীয়?

      ক. পানি   খ. বস্ত

      গ. মাটি   ঘ. শিক্ষা

      উত্তরঃ শিক্ষা

২৩. নলকূপের পানিতে কোন বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গিয়েছে?

      ক. পারদ  খ. আয়রন

      গ. আর্সেনিক    ঘ. কার্বন

      উত্তরঃ আর্সেনিক

২৪. কোনটি পানিবাহিত রোগ?    

      ক. যক্ষ¥া খ. কলেরা

      গ. জলবসন্ত    ঘ. ইনফ্লুয়েঞ্জা

      উত্তরঃ জলবসন্ত

২৫.তোমার বোন ডায়রিয়াতে ভুগছে। তার জন্য খাবার     স্যালাইন তৈরির জন্য তুমি কোন পানি ব্যবহার করবে? 

      ক. নদীর পানি       খ. কূপের পানি

            গ. ফুটানো পানি ঘ. পুকুরের পানি

      উত্তরঃ ফুটানো পানি

২৬.সুপ্তি জানালা দিয়ে দেখল আকাশে ঘণ মেঘ করেছে। এই    মেঘের সৃষ্টি কোনটি থেকে?

ক.   নাইট্রোজেন     খ. জলীয় বাষ্প

গ.   অক্সিজেন      ঘ. হাইড্রোজেন

উত্তরঃ জলীয় বাষ্প

২৭। পানিতে মিশে থাকা বালি কাদা ইত্যাদি সরানো প্রক্রিয়াকে কী ব?ে

ক. ছাকন           খ. থিতানো

গ.   ফুটানো            ঘ. ঘনীভবন

উত্তরঃ থিতানো

২৮. উদ্ভিদের পুষ্টি শোষনের জন্য কোনটি প্রয়োজন

ক.   পানি           খ. মাটি

গ.   আলোক             ঘ. বায়ু

উত্তরঃ পানি

২৯। কোনটি পানি দুষনে ফলে হয়?

ক.   পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি   খ. ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি

গ.   ডায়রিয়া             ঘ. মাটির উর্বরতা হ্রাস

উত্তরঃ ডায়রিয়া 

৩০. আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে   নিচের কোন্ উপাদানটি সাহায্য করে?

ক.   ভাত           খ. পানি

গ.   বায়ু            ঘ. মাটি.

উত্তরঃ পানি

৩১. কোনটি ছাড়া আমরা বাচতে পারি না?

ক.   শিক্ষা          খ. বস্ত্র

গ.   চিকিৎসা            ঘ. পানি

উত্তরঃ পানি

৩২. ছাকনি দিয়ে ছেকে পানি পরিষ্কারের প্রক্রিয়াকে কী বলে?

ক.   ফুটানো             খ. থিতানো

গ.   ছাকন     ঘ. রাসায়নিক প্রক্রিয়া

উত্তরঃ ছাকন   

৩৩. উচু পর্বতের চুড়ায় পানি কিরুপে থাকে?

ক.   পানি     খ. জলীয় বাষ্প

গ.   শিশির         ঘ. বরফ

উত্তরঃ বরফ

৩৪। পুকুর বা নদীর পানি পানের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ হয়।

ক. থিতালে         

খ. ফুটিয়ে নিলে

গ.   অল্প ফিটকিরি মিশালে

      ঘ. ফুটানোর পর ছেকে নিলে

উত্তরঃ ফুটানোর পর ছেকে নিলে

৩৫। পানিকে শীতল করলে কোনটি পাওয়া যায়?

ক. ঠান্ডা পানি        খ. বরফ

গ. মেঘ             ঘ. শিশির

উত্তরঃ বরফ

৩৬। নিচের কোনটি পানির প্রাকৃতিক উৎস?

ক. পুকুর            খ. টিউবওয়েল

গ.   বৃষ্টি            ঘ. দীঘি

উত্তরঃ বৃষ্টি

৩৭. রাতেঘাস গাছপালা ইত্যঅদির উপর যে বিন্দু বিন্দু    পানিজমে তাকে কী বলা হয়?

ক.   কুয়াশা              খ. শিশির

গ.   তুষার          ঘ. বরফ

উত্তরঃ শিশির

৩৮. পানিতে ভাসমান বস্তুকণা এবং বালি নিচের কোন    প্রক্রিয়ায় পৃথক করা যায?

ক. ফুটানো          খ. থিতানো

গ.   ছাকন          ঘ. ক ওখ

উত্তরঃ থিতানো

৩৯. পানি ভূপৃষ্ঠে কীভাবে ফিরে আসে

ক.   জলীয় বাষ্পরুপে      খ. মেঘ হিসেবে

গ. বৃষ্টি হিসেবে       ঘ. ফিরে আসেনা

উত্তরঃ বৃষ্টি হিসেবে

৪০. আকাশেযে মেঘ ভেসে থাকে তা কীভাবে তৈরি হয়?

ক.   ক্ষুদ্র পানিকণা একত্র হয়ে   খ. বরফ গলে

গ.   বালিকনা মিশে       ঘ. ধোয়া থেকে

উত্তরঃ ক্ষুদ্র পানিকণা একত্র হয়ে 

৪১. বন্যাকবলিত এলাকার জনগণকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে     কী ব্যবহার করবে?

ক. ফিটকিরি             

খ. বরিক পাউডার

গ. হ্যালোজেন পাউডার

ঘ. ডিডিটি পাউডার

উত্তরঃ ফিটকিরি

৪২. মেঘ পর্বতের চুড়ায় পৌছে কেন?

ক.   সাগড় পর্বতের নিকটবর্তী হলে

খ. মহাকর্ষ বলের প্রভাবে

গ.   বায়ুপ্রবাহের কারণে

ঘ. তরল অবস্থা থাকে বলে

উত্তরঃ বায়ুপ্রবাহের কারণে

৪৩. জলীয় বাষ্প উপরের দিকে উঠলে কী হয়?

ক.   গরমহয়             খ. জমে যায়

গ.   বাষ্পহয়             ঘ. অপরিবতির্ত থাকে

উত্তরঃ জমে যায়

৪৪. পানি  আমাদের খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করা ছাড়াও আর কী কাজে প্রয়োজন হয়।

ক. পুষ্টি উপাদান পরিবহনে  খ. শ্বসন ক্রিয়ায়

গ.   শ্বাস প্রশ্বাসে         ঘ.চলনে

উত্তরঃ পুষ্টি উপাদান পরিবহনে   

৪৫. মেঘ কী?

ক. উত্তপ্ত জলীয় বাষ্প      খ. ঘনীভূত পানিকণা

গ.শীতল পানি        ঘ. গরম পানি

উত্তরঃ ঘনীভূত পানিকণা

৪৬. জলীয় বাষ্প ঠান্ড াহয়ে পানিতে পরিণত হওয়া কোন      ধরনের প্রক্রিয়া?

ক. বাষ্পীভবন        খ. ঘনীভবন

গ. তরলী করণ       ঘ. ঊধ্বপাতন

উত্তরঃ ঘনীভবন

৪৭. পানি ফুটতে শুরু করারপর আরও কতক্ষন তাপ দিলে     পানিতে থাকা জীবানু মারা যায়?

ক. ১৫মিনিট              খ.২০ মিনিট

গ.৩০ মিনিট              ঘ. ৪০ মিনিট

উত্তরঃ২০ মিনিট

৪৮. নলকুপের পানি সাধারণত কেমন?

ক. দুষিত            খ. নিরাপদ

গ.খোলা             ঘ. ময়লা

উত্তরঃ নিরাপদ

৪৯. ডায়রিয়া কোন ধরনের রোগ?

      ক.বায়ুবাহিত              খ. পানিবাহিত

      গ.পতঙ্গবাহিত        ঘ. ছোয়াচে

উত্তরঃ পানিবাহিত

৫০. ঘুণিঝড়েরর সময় পানি শোধন করার সর্বোত্তম ্উপায কোনটি?

ক. থিতানোর মাধ্যমে      

খ. ছাকন প্রক্রিয়ায়

গ.ফুটানোর মাধ্যমে       

ঘ. রাসায়নি পদার্থ মিশিয়ে

উত্তরঃ রাসায়নি পদার্থ মিশিয়ে

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ॥ ১ ॥ পানি দূষণের দুইটি কারণ লেখ।
উত্তর : পানি দূষণের দুইটি কারণ নিম্নরূপ :

i. রাসায়নিক সারের প্রয়োগ; ii. কীটনাশকের ব্যবহার

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ পরিবেশে পানি দূষণের দুইটি প্রভাব লেখ।
উত্তর : পরিবেশে পানি দূষণের দুইটি প্রভাব হলো-

১.   দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে মানুষ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

২.   পানি দূষণের ফলে জলজ প্রাণী ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ পানি শোধণের দুইটি উপায় লেখ।
উত্তর : পানি শোধনের দুইটি উপায় হলো-

১. ছাঁকন ও ২. ফোটানো।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ পানির দুটি উৎসের নাম লেখ।
উত্তর : পানির দুটি উৎস হলো-

১. বৃষ্টি ও ২. নদী-নালা।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ পানি বিশুদ্ধকরণের দুটি রাসায়নিক পদার্থের নাম লেখ।
উত্তর : পানি বিশুদ্ধকরণের দুটি রাসায়নিক পদার্থ হলো-

১. ফিটকিরি ও ২. ব্লিচিং পাউডার।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ নিরাপদ পানির প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর : আমাদের দেহের খাদ্য পরিপাকে এবং সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে নিরাপদ পানির প্রয়োজন।

প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ খাদ্য পরিপাকে পানি কী হিসেবে কাজ করে? 
উত্তর : খাদ্য পরিপাকে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন যাবৎ পান করলে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে?
উত্তর : আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন পান করলে হাতে-পায়ে এক ধরনের ক্ষত বা ঘা তৈরি হয়।

প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ দুটি পানিবাহিত রোগের নাম লেখ।
উত্তর : দুটি পানিবাহিত রোগ হলো-

১. কলেরা ও ২. টাইফয়েড।

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ প্রাকৃতিক কারণে পানি দূষণকে কী বলে?
উত্তর : প্রাকৃতিক কারণে পানি দূষণকে আর্সেনিক দূষণ বলে।

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ পানি দূষণের ৩টি কারণ লেখ।
উত্তর : পানি দূষণের ৩টি কারণ হলো : ১. কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, ২. কলকারখানার রাসায়নিক দ্রব্য, ৩. গৃহস্থালি বর্জ্য।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ ছাঁকন কী?
উত্তর : ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি পরিষ্কার করার প্রক্রিয়াই হলো ছাঁকন।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ ঘনীভবন কী?
উত্তর : বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়াকে ঘনীভবন বলে।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ বাষ্পীভবন কী?
উত্তর : তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে বাষ্পীভবন।

প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ নিরাপদ পানির জন্য কতক্ষণ পানি ফুটাতে হবে?
উত্তর : জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানির জন্য ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পানি ফুটাতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আমরা কীভাবে পানিকে নিরাপদ করতে পারি?
উত্তর : রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আমরা ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে পানি নিরাপদ করতে পারি।

প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কী প্রয়োজন?
উত্তর : জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন।

প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ খাদ্য পরিপাকে পানি কী হিসেবে কাজ করে?
উত্তর : খাদ্য পরিপাকে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ মানুষের তৈরি পানির দুটি উৎসের নাম লেখ।
উত্তর : মানুষের তৈরি পানির দুটি উৎস হলো পুকুর ও নলকূপ।

প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ নিরাপদ পানি কী?
উত্তর : মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন পানিই নিরাপদ পানি।

কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :

প্রশ্ন ॥ ১ ॥ বরফ কীভাবে পানিতে পরিণত হয়? দুধ কেন তরল পদার্থ? তিনটি কারণ লেখ। কোনো কিছু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি দূর করার ১টি উপায় লেখ ?

উত্তর :  বরফকে তাপ দেওয়ার কারণে অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে তা পানিতে পরিণত হয়।

     দুধ তরল পদার্থ কারণ :

i.   দুধের তরল অবস্থায় আকার ঠিক থাকে না কিন্তু আয়তন ঠিক থাকে।

ii.  দুধ তরল পদার্থ কারণ তাপ দিলে এমন অবস্থায় আনা যায় যাতে অণুগুলোর মধ্যে কোনো বন্ধন থাকে না।

iii. এরা জায়গা দখল করে কিন্তু তা নির্দিষ্ট থাকে না।

     কোনো কিছু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি তাপ দিয়ে দূর করা যায়।

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ পানি দূষণ বলতে কী বুঝায়? পানি দূষণের দু’টি কারণ লেখ। খাবার পানি কীভাবে বিশুদ্ধ করবে সে সম্পর্কে দু’টি বাক্য লেখ।

উত্তর : পানি দূষণ : যেসব কারণে পানি পান করা ও অন্যান্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়, তাকে পানি দূষণ বলে।

     পানি দূষণের দু’টি কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো :

১.   পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন মাজা, গোসল করা, ময়লা কাপড় কাচা, গরু-মহিষ গোসল করানো, পাট পচানো, পায়খানা-প্রসাব করা, প্রাণীর মৃতদেহ ফেলা প্রভৃতি কারণে নদী-নালা, খান-বিল ও পুকুরের পানি দূষিত হয়।

২.   কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, পানিতে ফেললে পানি দূষিত হয়। কারণ এই বজ্য পদার্থে ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকে।

     খাবার পানি যেভাবে বিশুদ্ধ করব তা নিচে উল্লেখ করা হলো :

১.   ময়লাযুক্ত পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করব।

২.   বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের সময় ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করব।

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ পানি দূষণ রোধে তোমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উল্লেখ কর।

উত্তর : পানিদূষণ রোধে আমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উল্লেখ করা হলো :

১.   গৃহস্থালী ও খাদ্যের আবর্জনা, বর্জ্য পদার্থ পানিকে দূষিত করে। তাই এসব ময়লা আবর্জনা রান্না ঘরের নিষ্কাশন নালায় না ফেলে ডাস্টবিনে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

২.   পানিতে সাবান, ডিটারজেন্ট বা অন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে পানিদূষণ ঘটে। এগুলো ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।

৩.   রোগীর জামা কাপড় ও মলমূত্র পানি দূষিত করে এবং পানিবাহিত রোগ ছড়ায়। জলাশয়ের পানিতে এসব ধোয়া থেকে বিরত থাকতে বলব।

৪.   পানিতে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী, বিভিন্ন ধাতব পদার্থ, টিনের কৌটা ইত্যাদি ফেলা যাবে না।

৫.   পয়ঃপ্রণালির আবর্জনা, ড্রেনের পানি, কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পানি দূষিত করে। এগুলো যেন জলাশয়ের পানিতে মিশতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ পানি চক্র কাকে বলে? চিত্রসহ পানিচক্রের উপায় তিনটি বাক্যে লেখ।

উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাকে পানি চক্র বলে।

     চিত্রসহ পানিচক্রের তিনটি উপায় নিম্নরূপ :

i.  জলীয় বাষ্প :সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।

ii. পানির বিন্দু : বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠা-া ও ঘণীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়।

iii. বৃষ্টিপাত : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে এবং এই মেঘের পানি কণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে পুনরায় ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ পানি দূষণের দুইটি কারণ এবং তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখ।

উত্তর : পানি দূষণের দুইটি কারণ নিম্নরূপ :

i.   মানুষের কর্মকা- : কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার করলে তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল বিল ও নদীর পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে।

ii. প্রাকৃতিক কারণ : মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানি স্তরের সংস্পর্শে এসে পানি দূষিত করে।

     পানি দূষণের তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব নিম্নরূপ :

i.   পানি দূষণের ফলে জলজ প্রাণী মারা যায়।

ii.  জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।

iii. দূষিত পানি পান করে মানুষ ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ পানি দূষণ কী? পানি দূষণের চারটি কারণ লিখ।

উত্তর : প্রাকৃতিক পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশে যখন আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাকে পানি দূষণ বলে।

     পানি দূষণের চারটি কারণ নিম্নরূপ :

i.  কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, কলকারখানার রাসায়নিক দ্রব্য, গৃহস্থালির বর্জ্যরে মাধ্যমে পানি দূষিত হয়।

ii.  নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়ার কারণে পানি দূষিত হয়।

iii. কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র, বিছানাপত্র ও জামা পুকুর, নদী ও খাল-বিলে ধুলে রোগ জীবাণু মিশে পানি দূষিত হয়।

iv.   মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানির সংস্পর্শে এসে পানিকে দূষিত করে।

প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ মিতুদের পুকুরের পানি দূষিত হওয়ার পরও তারা এ পানি পান করে। এতে তাদের কী ধরনের রোগ হতে পারে? পুকুরের পানি দূষণ রোধে মিতুদের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? চারটি বাক্যে লেখ।

উত্তর ॥ দূষিত পানি পান করার ফলে মিতুদের ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগ হতে পারে।

     পুকুরের পানি দূষণরোধে মিতুদের যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা হলো

১. রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় গৃহস্থালি আবর্জনা না ফেলা।

২. পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো থেকে বিরত থাকা।

৩. পুকুরে কাপড়-চোপড় না ধোয়া।

৪. পানিতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে পানি পরিষ্কার রাখা।

প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ রবিনদের বাড়ির কয়েকজন সদস্য হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। এটি কী ধরনের রোগ? এর সাথে সংশ্লিষ্ট দূষণের মানবসৃষ্ট ২টি কারণ ও ২টি ফলাফল উল্লেখ কর।

উত্তর ॥ ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ।

     পানি দূষণের মানবসৃষ্ট ২টি কারণ হলো

১.   কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার।

২.   নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়া।

পানি দূষণের ২টি ফলাফল হলো

১. জলজ প্রাণী মারা যায়।

২. জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।

প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ লাবন্য ভোরে ঘুম থেকে জেগে গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু পানি দেখতে পেল। সেগুলো কী? কীভাবে তৈরি হয়?

উত্তর ॥ লাবন্য ভোরে গাছের পাতায় যে পানি বিন্দু দেখতে পায় তার নাম শিশির। বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের ঘণীভবনের মাধ্যমে শিশির তৈরি হয়।

বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠা-া হয়ে পানিতে পরিণত হয়। বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে ঘণীভবন বলে। রাতের বেলা তাপ বিকিরণের কারণে পৃথিবী শীতল হয়। তার ফলে গাছের পাতা ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানও ঠা-া হয়। তখন বাতাস ঠা-া কোনো বায়ুর সংস্পর্শে এলে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘণীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি বিন্দুতে পরিণত হয়। গাছের পাতায় জমা এই পানি-ই হলো শিশির।

প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে কী বলে? বেঁচে থাকার জন্য পানি কেন প্রয়োজন ৪টি বাক্যে লেখ।

উত্তর ॥ পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে পানিচক্র বলে।

বেঁচে থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা ৪টি বাক্যে লেখা হলো :

১.   পানি আমাদের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে।

২.  আমরা যে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করি তা পানির সাথে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

৩.   স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

৪.   পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ নন্দিনী চুলায় বসানো হাড়ি থেকে পানিকে গ্যাসের মতো উড়ে যেতে দেখল। এই প্রক্রিয়াকে কী বলে? এরূপ পানির কয়েকটি অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর ॥ নন্দিনী চুলায় বসানো হাড়িতে তাপ দিয়ে পানি জলীয় বাষ্পের পরিণত হয়। এভাবে তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে।

তাপ প্রয়োগ ও ঠা-া করার মাধ্যমে পানি এক অবস্থা থেকে অন্য অন্য অবস্থায় পরিবর্তি হয়। যেমন-

১.   বরফে তাপ দিলে তা পানিতে পরিণত হয়।

২.   পানিকে তাপ দিলে তা জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।

৩.   জলীঅয় বাষ্পকে ঠা-া করা হলে তা ঘণীভূত হয়ে পানিতে পরিণত হয়।

৪.   পানিকে শীতল করা হলে তা কঠিন বরফে পরিণত হয়।

প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ পানি দূষণের প্রধান কারণ কোনটি বলে তুমি মনে কর? পানি দূষণের পাঁচটি প্রভাব উল্লেখ কর।

উত্তর ॥ মানুষের কর্মকা-ই হলো পানি দূষণের প্রধান কারণ।

     পানি দূষণের পাঁচটি প্রভাব হলো

১.   জলজ প্রাণী মারা যায়।

২.   জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।

৩.   মানুষ ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।

৪.   আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে হাতে পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

৫.   দূষিত পানিতে বসবাসকারী মাছের মাধ্যমে মানুষের দেহে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ অমিতদের বাগানের গাছটিতে কত ভাগ পানি রয়েছে? এই পানি গাছটিতে কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তার চারটি বাক্যে লেখ।

উত্তর ॥ অমিতদের বাগানের গাছটির দেহে প্রায় ৯০ ভাগ পানি রয়েছে। এই পানি গাছটি যেসব কাজে ব্যবহার করে তা হলো-

i.   সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরিতে গাছটি পানি ব্যবহার করে।

ii.  গাছটি মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে পানির সাহায্যে।

iii. পানি গাছটির দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে।

iv.   প্রচ- গরমে পানি উদ্ভিদটির দেহ শীতল করতে সাহায্য করে।

সাধারণ প্রশ্ন :

প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ পানি দূষণ কাকে বলে? পানি দূষণ প্রতিরোধের উপায়গুলো লেখ।

উত্তর ॥ যেসব কারণে পানি পান করা ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয় তাকে পানি দূষণ বলে।

     পানি দূষণ প্রতিরোধের উপায়গুলো হলো :

১.   কৃষিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো;

২.   রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় ও টয়লেটে রাসায়নিক বর্জ্য এবং তেল না ফেলা;

৩.   পুকুর, নদী, হ্রদ কিংবা সাগরে ময়লা আবর্জনা না ফেলা;

৪.   সমুদ্র সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা এবং হ্রদ কিংবা নদীতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে পানি দূষণ রোধ কর।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *