HSC 2022-ব্যবসা উদ্যোগ ১ম পত্র অধ্যায়-১: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা

অধ্যায় ভিত্তিক সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ১ জনাব জাকির হোসেন বিবিএ অনার্স পাস করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে বাড়িতে ফিরে নিজেদের তিন বিঘা আয়তনের পুকুরটি সংস্কার করেন। এরপর তাতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে স্তরভিত্তিক মাছ চাষ শুরু করেন। পুকুরে পানির উপরের স্তর, মধ্যম স্তর এবং নিম্ন স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন। বর্তমানে জনাব জাকির হোসেন একজন জনপ্রিয় এবং সফল মাছচাষি। তার এ কার্যক্রম এখন অনেকেই অনুসরণ করছেন।  [ঢা. বো., চ. বো. ১৭]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  বাণিজ্য বলতে কী বোঝায়?  ২

 গ.  জনাব জাকিরের গৃহীত কার্যক্রম কোন ধরনের শিল্প? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  জনাব জাকিরের গৃহীত এমন উদ্যোগ কি দেশে বেকারত্ব হ্রাসে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে? মতামত দাও। ৪

১ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় প্রভৃতি) ব্যবসায় বলে।

 খ উৎপাদিত পণ্য বা সেবার বণ্টন সংক্রান্ত  যাবতীয় (ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ) কাজই হলো বাণিজ্য।

এটি ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা হিসেবে বিবেচিত হয়। উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বা সেবা ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত স্থানগত, ব্যক্তিগত, সময়গত ও ঝুঁকিগত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়াই মূলত বাণিজ্যের কাজ।

 গ উদ্দীপকের জনাব জাকিরের গৃহীত কার্যক্রম প্রজনন শিল্পের অন্তর্গত।

প্রজনন শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ শিল্পের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং লালন-পালন করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে পরিণত করা হয়। যেমন: নার্সারি, পোল্ট্রি ফার্ম, মৎস্য উৎপাদন প্রভৃতি এ শিল্পের উদাহরণ। 

উদ্দীপকের জনাব জাকির হোসেন নিজেদের তিন বিঘা আয়তনের পুকুর সংস্কার করেন। তারপর এতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে স্তরভিত্তিক মাছ চাষ শুরু করেন। পুকুরে পানির উপরের স্তর, মধ্যম স্তর এবং নিম্ন স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন। চাষকৃত মাছ পরিচর্যা করে তিনি মানুষের ভোগের উপযোগী করে তোলেন। এছাড়া পুকুরে মাছ চাষ করে তিনি সেগুলোর বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেন। এসব কাজ প্রজনন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, জনাব জাকিরের কার্যক্রম প্রজনন শিল্পের অন্তর্গত।

 ঘ উদ্দীপকের জনাব জাকিরের গৃহীত উদ্যোগ দেশে বেকারত্ব হ্রাসে অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।

যেকোনো দেশেই অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায় বা শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । শিল্পের উন্নয়ন ছাড়া একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। শিল্পের প্রসার ঘটলেই দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হয়। 

উদ্দীপকের জনাব জাকির বিবিএ অনার্স পাস করে চাকরির জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাই তিনি নিজ উদ্যোগে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে জনাব জাকির একজন জনপ্রিয় ও সফল মাছচাষি। তার এ কার্যক্রম এখন অনেকেই অনুসরণ করছেন।

নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলা ব্যবসায় তথা শিল্প-বাণিজ্যের অগ্রগতির ফলে নিজ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়। দেশের বেকার সমস্যা হ্রাসে এর কোনো বিকল্প নেই।

দেশের বেকার যুবসমাজ যদি চাকরির আশায় বসে না থেকে উদ্দীপকের জনাব জাকিরের মতো নিজ উদ্যোগে এরূপ প্রকল্প গড়ে তোলে তাহলে সেখানে অনেকেরই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে তারা নিজেদের ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারবে। সুতরাং, বেকারত্ব হ্রাসে জনাব জাকিরের উদ্যোগ অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ২ জনাব সামা একজন ব্যবসায়ী। তিনি ভারত থেকে চাল আমদানি করে প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিপণিতে বিক্রয় করেন। গত বছর তিনি যে চাল আমদানি করেছেন, তা দুই মাস পর ইংল্যান্ডে বিক্রয় করলে অনেক বেশি লাভ পেতেন। কিন্তু আমদানিকৃত চালের জন্য জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় লাভের জন্য অপেক্ষা না করে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই তিনি বিক্রয় করতে বাধ্য হলেন।    [রা. বো. ১৭]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  শিল্প বলতে কী বোঝায়?     ২

 গ.  জনাব সামা কোন ধরনের বাণিজ্য করেন? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  জনাব সামা কেন তার পণ্য নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বিক্রয় করতে বাধ্য হলেন? মতামত দাও।   ৪

২ নং প্রশ্নের উত্তর 

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) ব্যবসায় বলে।

 খ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে রূপান্তর করা হয় তাকে শিল্প বলে।

এটি পণ্যদ্রব্য উৎপাদনের সাথে জড়িত। সম্পদের রূপ বা আকার পরিবর্তনের মাধ্যমে শিল্প নতুন উপযোগ সৃষ্টি করে। যেমন: হ্যাচারি, হাঁস-মুরগির খামার, সেতু নির্মাণ প্রভৃতি শিল্পের উদাহরণ।

 গ উদ্দীপকের জনাব সামা পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের সাথে জড়িত।

পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যে বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানি করে তা পুনরায় অন্য কোনো দেশে রপ্তানি করা হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে পণ্য আমদানি করে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুণগত বা আকৃতির পরিবর্তন করা হয়। এরপর তৃতীয় কোনো দেশে তা রপ্তানি করা হয়। পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যে তিনটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম সংঘটিত হয়।

উদ্দীপকের জনাব সামা একজন চাল ব্যবসায়ী। তিনি ভারত থেকে চাল আমদানি করেন। আমদানিকৃত চাল তিনি প্রক্রিয়াজাতকরণ করেন। অতঃপর তিনি চাল ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিপণিতে বিক্রয় করেন। এভাবে আমদানিকৃত চাল তিনি আবার রপ্তানি করেন। এসব বৈশিষ্ট্য পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব সামা পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের সাথে জড়িত।

 ঘ উদ্দীপকের জনাব সামা তার পণ্য গুদামজাতকরণের অভাবে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বিক্রয় করতে বাধ্য হলেন।

উৎপাদন ও ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে বিনষ্ট হওয়া থেকে রক্ষার জন্য ব্যবসায়ীগণ পণ্য সংরক্ষণের জন্য গুদামজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। এটি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সময়গত বাধা দূর করে। 

উদ্দীপকের জনাব সামা গত বছর যে চাল আমদানি করেছেন, তা দুই মাস পর ইংল্যান্ডে বিক্রয় করলে তিনি অনেক বেশি লাভ পেতেন। কিন্তু, আমদানিকৃত চালের জন্য গুদামজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায়, লাভের জন্য তিনি সংরক্ষণ করতে পারেননি ফলে তিনি অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

বড় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মাল সংরক্ষণের জন্য গুদামজাতকরণের ব্যবস্থা করেন। এতে পণ্যের গুণগত মান ভালো রাখা যায়। আর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পণ্য গুদামে রেখে তারপর মৌসুম অনুযায়ী পণ্য বিক্রয়ের ব্যবস্থা করলে ভালো মুনাফাও অর্জন করা যায়। উদ্দীপকের জনাব সামা চাল গুদামজাতকরণ করতে না পারায় পচে যাওয়া বা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন। তাই তিনি নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই চাল বিক্রয় করতে বাধ্য হন।

 প্রশ্নঃ৩ গণি মিয়া একজন কৃষক। তিনি জমি চাষ করার জন্য একজোড়া গরু ক্রয় করলেন। তার স্ত্রী বাজার থেকে কাপড় ক্রয় করে এনে নিজের সন্তানের জন্য জামা তৈরি করলেন এবং কিছু জামা বাজারেও বিক্রি করলেন।  [দি. বো. ১৭]

 ক.  সামাজিক ব্যবসায় কী? ১

 খ.  ‘মুনাফা হলো ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার’ ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.  গণি মিয়ার গরু ক্রয়ের কাজটি ব্যবসায় কিনা? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  গণি মিয়ার স্ত্রীর কার্যক্রমটি ব্যবসায়িক দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করো।   ৪

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রাপ্তির কোনো প্রত্যাশা থাকে না বরং সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

 খ ব্যবসায়ের আয় থেকে ব্যয় বাদ দিলে, যা অবশিষ্ট থাকে তাকে মুনাফা বলে।

ব্যবসায়ের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন। মুনাফা হবে ধরে নিয়েই ব্যবসায়ী ব্যবসায় করলেও পণ্য বিনষ্ট হওয়া, চাহিদা হ্রাস পাওয়া, মূল্য কমে যাওয়া প্রভৃতি কারণে লোকসান হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ঝুঁকি না নিলে ব্যবসায় করা যায় না। সাধারণত ঝুঁকি বেশি হলে মুনাফার পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যেখানে ঝুঁকি নেই সেখানে মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনাও কম হয়। তাই মুনাফাকে ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার বলা হয়।

 গ উদ্দীপকের গণি মিয়ার গরু ক্রয়ের কাজটি ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত নয়।

ব্যবসায়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য উৎপাদন ও বণ্টনসহ যাবতীয় বৈধ অর্থনৈতিক কাজ করা হয়। যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় ইত্যাদি কাজ। কোনো কাজ শুধু অর্থ সংশ্লিষ্ট হলেই তাকে ব্যবসায় বলা যায় না। ঐ কাজ করার পিছনে অবশ্যই মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য থাকতে হয় এবং তা আইনগতভাবে বৈধ হতে হয়। 

উদ্দীপকের গণি মিয়া একজন কৃষক। তিনি তার জমি চাষ করার জন্য একজোড়া গরু ক্রয় করলেন। এখানে গরু ক্রয় করার কাজটি অর্থ সংশ্লিষ্ট হলেও এর মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের কোনো উদ্দেশ্য নেই। কেউ নিজে ভোগের জন্য কিছু ক্রয় বা উৎপাদন করলে তা ব্যবসায় হিসেবে বিবেচিত হয় না। গণি মিয়া শুধু তার পরিবারের প্রয়োজনেই গরু কিনে তা দিয়ে জমি চাষ করেন। এতে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য নেই বলে তার এ কাজটিকে ব্যবসায় বলা যাবে না।

 ঘ উদ্দীপকে গণি মিয়ার স্ত্রীর জামা তৈরি করে বিক্রির কাজটিকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিতে ব্যবসায় বলা যায়।

ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনার পেছনে ব্যবসায়ীর মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশা থাকে। কম দামে পণ্য কিনে বা কম খরচে উৎপাদন করে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জনের প্রচেষ্টা ব্যবসায় হিসেবে গণ্য হবে। 

উদ্দীপকের গণি মিয়ার স্ত্রী বাজার থেকে কাপড় ক্রয় করে নিজের সন্তানের জন্য জামা তৈরি করেন। আবার কিছু জামা বাজারেও বিক্রি করেন। এখানে তার স্ত্রী কাপড় ক্রয় করে যে অংশটুকু দিয়ে সন্তানের জামা বানান তা মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়নি। নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে এ কাজটিকে ব্যবসায় বলা যাবে না।

তবে যে জামাগুলো তিনি বাজরে বিক্রি করেন তা থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা অর্জিত হয়। এখানে কাপড় কম দামে ক্রয় করে জামা তৈরি করে তা মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারে বিক্রি করা হয়। সুতরাং, গণি মিয়ার স্ত্রীর এ জামা বিক্রি করার কাজটিকে ব্যবসায় বলা যায়।   

 প্রশ্নঃ৪ ক, খ, গ তিন বন্ধু। ক তার হ্যাচারিতে আলো, তাপ ও বায়ু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা পেয়ে থাকেন। গ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। তিনি তথ্য লিখন ও প্রক্রিয়াকরণের ব্যবসায়ে নিয়োজিত। খ, ক-এর হ্যাচারি থেকে পণ্য সংগ্রহ করেন। খ উক্ত পণ্যের চাহিদা, মূল্যস্তর, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য গ-এর নিকট থেকে সংগ্রহ করে উক্ত পণ্য সারাদেশে সরবরাহ করে থাকেন।    [সি. বো. ১৭]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  পুনঃরপ্তানি বলতে কী বোঝায়?    ২

 গ.  উদ্দীপকে গ-এর কাজটি ব্যবসায়ের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  উপযোগ সৃষ্টির ভিত্তিতে ক ও খ-এর কাজের ব্যাপারে তুলনামূলক মতামত দাও।     ৪

৪ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) ব্যবসায় বলে।

 খ বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানি করে তা পুনরায় অন্য দেশে রপ্তানি করা হলে তাকে পুনঃরপ্তানি বলে।

পণ্য আমদানি করার পর প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান বা আকার পরিবর্তন করে তা পুনরায় অন্য কোনো দেশে রপ্তানি করা যায়। উৎপাদনকারী দেশের সাথে আমদানিকারক দেশের সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলে সেক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

 গ উদ্দীপকের গ-এর কাজটি ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ সেবা শাখার অন্তর্ভুক্ত।

গ্রাহকদের প্রত্যক্ষভাবে সেবাকর্ম প্রদানের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করা প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্ভুক্ত। চিকিৎসক, আইনজীবী ও প্রকৌশলীর কাজ প্রত্যক্ষ সেবার উদাহরণ।

উদ্দীপকের ক, খ ও গ তিন বন্ধু। তিন বন্ধু জীবনধারণের তাগিদে ভিন্ন ভিন্ন কাজের সাথে জড়িত। এদের মধ্যে ‘গ’ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। তিনি তথ্য লিখন ও প্রক্রিয়াকরণের ব্যবসায়ে নিয়োজিত। তিনি তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গ্রাহকদের বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করে সেবা দেন। এ সেবা পেয়ে গ্রাহক উপকৃত, তৃপ্ত বা সন্তুষ্ট হয়। এ কাজের মাধ্যমে ‘গ’ অর্থ উপার্জন করেন, যা ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ সেবা শাখার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, ‘গ’-এর কাজটি ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্গত।

 ঘ উদ্দীপকের ‘ক’ রূপগত উপযোগ এবং ‘খ’ স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করেন।

শিল্পের মাধ্যমে প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদের আকার পরিবর্তন করে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয় । আর পরিবহনের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়।

উদ্দীপকের ক, খ ও গ তিন বন্ধু বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। এদের মধ্যে ক তার হ্যাচারিতে আলো, তাপ ও বায়ু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ, তিনি পণ্য উৎপাদন কাজের সাথে জড়িত। অপরদিকে, খ, ক -এর হ্যাচারি থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করেন। অর্থাৎ তিনি পরিবহন কাজের সাথে জড়িত।

পণ্য উৎপাদন ও তা ভোক্তার কাছে পৌঁছানো ব্যবসায়ের কাজ। এ উভয় প্রকার কাজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর একপক্ষ উৎপাদন করে এবং অপর পক্ষ তা ভোক্তার কাছে সরবরাহ করে। উদ্দীপকের ‘ক’ উৎপাদন কাজের সাথে জড়িত এবং ‘খ’ পরিবহন কাজের সাথে জড়িত। তাই বিভিন্ন ধরনের উপযোগ সৃষ্টিতে ‘ক’ ও ‘খ’ উভয়ের কাজই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

 প্রশ্নঃ৫ চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স শীত মৌসুমের শুরুতে আমেরিকার ‘রিকার্ড’ ট্রেডার্সের নিকট ৫০ লক্ষ টাকার শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ফরমায়েশ দেয়। যাত্রাপথে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও জাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফরমায়েশকৃত পণ্য ২৩ দিন বিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। শীত মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় ফরমায়েশকৃত পণ্য কম দামে অন্যদেশে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ৫ লক্ষ টাকা লোকসান হয়।   [য. বো. ১৭]

 ক.  আমদানি কী?    ১

 খ.  প্রজনন শিল্প বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.  উদ্দীপকে বর্ণিত আলম ট্রেডার্সের ব্যবসায়টি কোন ধরনের বৈদেশিক বাণিজ্য? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায় সহায়ক কোন কাজটি অবদান রাখতে পারত  বলে তুমি মনে করো? যুক্তি দাও।    ৪

৫ নং প্রশ্নের উত্তর 

 ক বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে নিজ দেশে আনাকে আমদানি বলে।

 খ যে শিল্পে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বংশবিস্তার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদন কাজ করা হয় তাকে প্রজনন শিল্প বলে।

এ শিল্পের মাধ্যমে গাছপালা ও প্রাণীর বংশ বৃদ্ধি করা হয়। এতে প্রাকৃতিক সম্পদ লালন-পালন করে সেগুলোর বংশ বৃদ্ধি বা স্বাভাবিক ফলনের মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করা হয়। যেমন- নার্সারি, পোলট্রি ফার্ম, ডেইরি ফার্ম, মৎস্য উৎপাদন, হ্যাচারি ইত্যাদি।

 গ উদ্দীপকে বর্ণিত আলম ট্রেডার্সের ব্যবসায়টি বৈদেশিক বাণিজ্যের ‘পুনঃরপ্তানি’-এর অন্তর্ভুক্ত।

পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যে বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানি করে তা পুনরায় অন্য দেশে রপ্তানি কর হয়। উৎপাদনকারী দেশের সাথে আমদানিকারক দেশের সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলে সেক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। 

উদ্দীপকের চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স শীত মৌসুমের শুরুতে আমেরিকার ‘রিকার্ড’ ট্রেডার্সের কাছে ৫০ লক্ষ টাকার শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ফরমায়েশ দেয়। ফরমায়েশকৃত পণ্য ২৩ দিন বিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। শীত মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় ফরমায়েশকৃত ঐ পণ্য কম দামে অন্য দেশে বিক্রি করা হয়। এখানে আলম ট্রেডার্স প্রথমে অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে। এরপর ঐ পণ্য অন্য দেশে বিক্রি করে দেয়। এভাবেই আলম ট্রেডার্সের ব্যবসায়টি পুনঃরপ্তানিতে পরিণত হয়।

 ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায় সহায়ক গুদামজাতকরণের কাজটি অবদান রাখতে পারত বলে আমি মনে করি।

গুদামজাতকরণ উৎপাদন ও ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে পণ্যকে বিনষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। ব্যবসায়ীগণ এর মাধ্যমে পণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। এটি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সময়গত বাধা দূর করে। 

উদ্দীপকের আলম ট্রেডার্সের ফরমায়েশকৃত পণ্য দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও জাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ২৩ দিন বিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। শীত মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় পণ্যগুলো কম দামে অন্য দেশে বিক্রি করায় প্রতিষ্ঠানটির ৫ লক্ষ টাকা লোকসান হয়।

আলম ট্রেডার্স আমদানিকৃত পণ্য এ সময় কমদামে বিক্রি না করে গুদামজাতকরণ করে রাখতে পারতো। এতে পরবর্তী শীত মৌসুম পর্যন্ত পণ্যগুলোর মান বজায় থাকত। তাই ঐ সময়ে ন্যায্য দামে পণ্যগুলো বিক্রয় করলে লাভবান হতে পারত। সুতরাং, গুদামজাতকরণ ব্যবস্থাই উক্ত প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারত বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ৬ জনাব মুরাদ রংপুরে একটি রাইস মিল স্থাপন করেছেন। তিনি তার এলাকার বিভিন্ন স্থানে চাল বিক্রি করেন। তিনি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বেশ উন্নতি সাধন করেছেন। তিনি এখন একটি স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল স্থাপন করতে চান। কিন্তু এজন্য তার যথেষ্ট সক্ষমতা নেই।

     [ব. বো. ১৭]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  বিমা কীভাবে প্রতিবন্ধকতা দূর করে?    ২

 গ.  জনাব মুরাদ কী ধরনের শিল্প স্থাপন করেছেন? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  জনাব মুরাদের সমস্যা উত্তরণে তোমার পরামর্শ দাও।     ৪

৬ নং প্রশ্নের উত্তর 

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) ব্যবসায় বলে।

 খ বিমা হলো বিমাগ্রহীতা ও বিমাকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি, যেখানে বিমাকারী বিমাগ্রহীতাকে নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি বা বিপদে ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা দেয়।

ব্যবসায়িক কাজের সাথে জড়িত ঝুঁকি হলো চাহিদা হ্রাস, পণ্য পচন, মূল্যহ্রাস, দুর্ঘটনা, চুরি, ডাকাতি প্রভৃতি। এসব ঝুঁকির কারণে ব্যবসায়ে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। এ আর্থিক ক্ষতি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য উক্ত ঝুঁকির বিপরীতে বিমা করা হয়। বিমা চুক্তি অনুযায়ী বিমাগ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমাকারী ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এভাবে বিমা ঝুঁকিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে।

  গ উদ্দীপকের জনাব মুরাদ উৎপাদন শিল্প স্থাপন করেছেন।

উৎপাদন শিল্পে যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কাঁচামালকে রূপান্তরের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য পণ্যে পরিণত করা হয়। চিনি শিল্প, সিমেন্ট শিল্প, বস্ত্র শিল্প প্রভৃতি এ শিল্পের অন্তর্গত।

উদ্দীপকের জনাব মুরাদ একটি রাইস মিল স্থাপন করেছেন। এ মিলে তিনি উৎপাদনকৃত ধান ভাঙান। যা থেকে প্রাপ্ত চাল তিনি তার এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। এখানে রাইস মিলে যন্ত্রপাতি বা মেশিনের মাধ্যমেই ধানকে চালে রূপান্তর করা হয়। ফলে এটি ব্যবহারযোগ্য পণ্যে পরিণত হয়ে বিক্রয়ের উপযুক্ত হয়। এসব বৈশিষ্ট্য উৎপাদন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, জনাব মুরাদের স্থাপিত রাইস মিলটি উৎপাদন শিল্পের অন্তর্গত। 

 ঘ উদ্দীপকের জনাব মুরাদের সমস্যা উত্তরণে অর্থসংস্থানের মাধ্যমে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

অর্থসংস্থান হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন বুঝে মূলধন সংগ্রহ ও কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা। ব্যবসায় পরিচালনা ও সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ীকে প্রতিনিয়ত অর্থসংস্থানের কাজ চালিয়ে যেতে হয়।

উদ্দীপকের জনাব মুরাদ তার স্থাপিত রাইস মিলের মাধ্যমে বেশ উন্নতি সাধন করেছেন। তিনি এখন একটি স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল স্থাপন করতে চান। কিন্তু এজন্য তার যথেষ্ট আর্থিক সক্ষমতা নেই।

যেকোনো ব্যবসায় পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের প্রয়োজন। ব্যবসায়ী ব্যক্তিগত সঞ্চয়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন। জনাব মুরাদ নিজস্ব তহবিল বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন। এতে তার আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পর্যাপ্ত অর্থ বা মূলধন দিয়ে তিনি স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল স্থাপন করতে পারবেন। সুতরাং, জনাব মুরাদ অর্থসংস্থানের মাধ্যমে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে তার সমস্যা সমাধান করতে পারবেন ।

 প্রশ্নঃ৭ জনাব ‘অ’ আমের মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করেন। গতানুগতিক ব্যবসায়ীগণ ফরমালিনের কথা চিন্তা না করেই রাজশাহীর বাজার থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করে। কিন্তু জনাব ‘অ’ সরাসরি রাজশাহীর আমের বাগান থেকে ফরমালিনমুক্ত আম কিনেন। ফরমালিনমুক্ত আম পচে লাভের পরিবর্তে ক্ষতিও হতে পারে তা জেনেও জনাব ‘অ’ এ কাজ করেন।  [ঢা. বো. ১৬]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  পুনঃরপ্তানি বলতে কী বোঝায়?    ২

 গ.  জনাব ‘অ’ -এর ব্যবসায়ে কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  জনাব ‘অ’ -এর কাজে উদ্যোক্তার কোন গুণটি ফুটে ওঠেছে? বিশ্লেষণ করো।     ৪

৭ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় প্রভৃতি) ব্যবসায় বলে।

 খ বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী নিজ দেশে আমদানি করার পর প্রক্রিয়াজাত করে অথবা না করে তা আবার অন্য কোনো দেশে রপ্তানি করা হলে তাকে পুনঃরপ্তানি বলে।

বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে উক্ত পণ্য বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করা হয়। আবার অনেক সময় দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক না থাকলে তৃতীয় কোনো দেশ উক্ত দুই দেশের এক দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে অপর দেশে তা রপ্তানি করে থাকে, যা পুনঃরপ্তানি সৃষ্টি করে।

 গ উদ্দীপকে জনাব ‘অ’-এর ব্যবসায়ে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি হয়।

পরিবহন পণ্যের স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করে। উৎপাদনকারী ও ভোগকারীর মধ্যে স্থানগত দূরত্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে পরিবহনের মাধ্যমে সহজেই পণ্য চূড়ান্ত ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যায়।

উদ্দীপকের জনাব ‘অ’ আমের মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করেন। তিনি রাজশাহীর আমবাগান থেকে ফরমালিনমুক্ত আম কিনেন। পরবর্তীতে তা উৎপাদনস্থল থেকে ঢাকায় এনে বিক্রি করেন। এতে রাজশাহীতে উৎপাদিত আম পরিবহনের মাধ্যমে ঢাকার ভোক্তারা ভোগ করতে পারে। এটি স্থানগত উপযোগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এভাবে জনাব ‘অ’ ব্যবসায়ে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করেন।

 ঘ উদ্দীপকে জনাব ‘অ’ -এর কাজে উদ্যোক্তার সততা গুণটি ফুটে ওঠেছে।

উদ্যোক্তাকে তার কাজকর্মে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও সততা বজায় রাখতে হয়। কারণ একজন সৎ ব্যবসায়ী তার কাজে অনেক বেশি মনোবল ও একাগ্র হয়ে থাকেন।

উদ্দীপকের জনাব ‘অ’ আমের মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করেন। অন্য ব্যবসায়ীরা ফরমালিনের কথা চিন্তা না করলেও তিনি ফরমালিনমুক্ত আম কিনেন। ফরমালিনমুক্ত আম পচে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি হতে পারে তা জেনেও জনাব ‘অ’ এ কাজ করেন।

জনাব ‘অ’-এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবসায়ে লাভ বা লোকসান যা-ই হোক ভোক্তাদের কাছে তিনি ফরমালিনযুক্ত আম বিক্রি করবেন না। তাই লোকসানের ঝুঁকি সত্ত্বেও ফরমালিনমুক্ত আম বিক্রি করছেন, যা উদ্যোক্তার সততা গুণটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

 প্রশ্নঃ৮ রাসেল স্থানীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে মাত্র ৩০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজেদের পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। তার সংগৃহীত উন্নত জাতের তেলাপিয়া মাছের পোনা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বিক্রয়যোগ্য হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাজারের ক্রেতারা যাতে নিজেদের পছন্দমতো মাছ ক্রয় করতে পারে, এজন্য রাসেল দীর্ঘ সময় জীবন্ত রাখার জন্য কৃত্রিম উপায়ে মাছগুলো সংরক্ষণ করেন। এতে তার মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থ স্বল্পতার কারণে এ বাড়তি চাহিদা মেটানো তার পক্ষে সবসময় সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।   [রা. বো., চ. বো. ১৬]

 ক.  সামাজিক ব্যবসায় কী? ১

 খ.  প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে কী বোঝায়?  ২

 গ.  রাসেল কোন ধরনের শিল্পের সাথে জড়িত? ব্যাখ্যা করো।  ৩

 ঘ.  ক্রেতাদের বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য রাসেলের করণীয় কী বলে তুমি মনে করো? যুক্তি দাও।     ৪

৮ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রাপ্তির কোনো প্রত্যাশা থাকে না বরং সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

 খ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উপাদানের সমন্বিত রূপই হলো প্রযুক্তিগত পরিবেশ।

বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক কলাকৌশল ও পদ্ধতি ইত্যাদি মিলিয়ে প্রযুক্তিগত পরিবেশ গঠিত হয়। যেসব দেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পরিবেশে উন্নত তারা শিল্প-বাণিজ্যেও উন্নত। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

 গ উদ্দীপকের রাসেল প্রজনন শিল্পের সাথে জড়িত।

প্রজনন শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় সৃষ্টি বা উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ শিল্পের মাধ্যমে গাছপালা ও প্রাণীর বংশ বৃদ্ধি করা হয়। যেমন : নার্সারি, হ্যাচারি প্রভৃতি।

উদ্দীপকে রাসেল স্থানীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে মাত্র ৩০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজেদের পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। তার সংগৃহীত উন্নত জাতের তেলাপিয়া মাছের পোনা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বিক্রয়যোগ্য হয়ে ওঠে। অর্থাৎ রাসেল তার পুকুরে প্রথমে মাছের পোনা চাষ করেন। এরপর পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে মাছের এসব পোনা বড় হয়ে উঠলে তা মানুষের খাবার উপযোগী হয়। তাছাড়া এ মাছ থেকেই আবার নতুন বংশবিস্তার ঘটানো যায় এসব বৈশিষ্ট্য প্রজনন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট। তাই বলা যায়, রাসেলের কাজ প্রজনন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

 ঘ আমি মনে করি ক্রেতাদের বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য রাসেলের করণীয় হলো ব্যাংকের সহায়তা নেওয়া।

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এছাড়া আর্থিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু লেনদেনের ওপর ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি নির্ভর করে। ব্যাংক ঋণদানের মাধ্যমে ব্যবসায়ের অর্থসংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করে।

উদ্দীপকে রাসেল একজন মাছ ব্যবসায়ী। তিনি উৎপাদিত তেলাপিয়া মাছ ক্রেতাদের চাহিদা পূরণের জন্য কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করেন। এতে মাছের চাহিদা দিন দিনই বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থ স্বল্পতার কারণে এ বাড়তি চাহিদা মেটানো তার পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না।

এ অবস্থায় রাসেল প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে কৃত্রিম উপায়ে অধিক পরিমাণ মাছ সংরক্ষণ করতে পারবেন। এজন্য ব্যাংকের সহায়তা চাইলে ব্যাংক তাকে প্রয়োজনীয় ঋণ দিতে পারে বলে আমি মনে করি। কারণ ব্যাংক ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে অর্থসংক্রান্ত সমস্যা দূর করে। এতে রাসেলের মতো ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসায় করতে পারবে। তাই ক্রেতার বাড়তি চাহিদা পূরণে রাসেল ব্যাংক ঋণ নিয়ে প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধান করতে পারেন।

 প্রশ্নঃ৯ মি. করিম গাজীপুরের একজন চাল ব্যবসায়ী। তিনি মায়ানমার থেকে চাল আমদানি করে বাছাই করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বস্তা ভরে নিজস্ব গুদামে সংরক্ষণ করেন। তার গুদামে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। কিন্তু বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি গুদামের চাল প্যাকেটজাত করে মধ্যপ্রাচ্যে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেন। [দি. বো. ১৬]

 ক.  বাণিজ্য কী? ১

 খ.  প্রত্যক্ষ সেবা বলতে কী বোঝায়?  ২

 গ.  উদ্দীপকে বর্ণিত মি. করিম চাল বস্তায় ভরার পূর্বে ব্যবসায়ের কোন কাজ করেন? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে উল্লিখিত মূল্যহ্রাসের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে চাল বাজারজাতকরণের মাধ্যমে যে বাণিজ্যের কাজটি সম্পাদন করেছেন তার যথার্থতা মূল্যায়ন করো। ৪

৯ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ভোক্তা কিংবা ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সম্পাদিত যাবতীয় (যেমন : ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন) কাজকে বাণিজ্য বলে।

 খ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ভোক্তা বা গ্রাহকদের সরাসরি কোনো সেবা দেয়াকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।

সেবাকে কেন্দ্র করেই এর আর্থিক কাজ পরিচালিত হয়। এটি দেখা বা স্পর্শ করা যায় না অথচ মানুষের প্রয়োজন পূরণে সমর্থ। যেমন: ডাক্তারি, আইন ব্যবসায়, নার্সিং প্রভৃতি এর অন্তর্গত।

 গ উদ্দীপকের মি. করিম চাল বস্তায় ভরার পূর্বে পর্যায়িতকরণের কাজ করেন।

পর্যায়িতকরণে পণ্যের মান নির্ধারণ করার পর ওজন, আকার ও গুণাগুণ অনুযায়ী ভাগ করা হয়। গ্রাহককে আকৃষ্ট করার জন্য পণ্য পর্যায়িতকরণ করা হয়।

উদ্দীপকে মি. করিম মায়ানমার থেকে চাল আমদানি করে বাছাই করেন। পরবর্তীতে এ চালকে তিনি ওজন, আকার ও গুণাগুণ অনুযায়ী ভাগ করে গুদামে সংরক্ষণ করেন। চাল বস্তায় ভরে গুদামে সংরক্ষণ করার পূর্বে এ বিভাজনের কাজটি হলো পর্যায়িতকরণ। এভাবে চালকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা বা পর্যায়িতকরণের ফলে মি. করিম তার গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহে সক্ষম হবেন।

 ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত মূল্যহ্রাসের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে চাল বাজারজাতকরণের মাধ্যমে মি. করিম বাণিজ্যের পুনঃরপ্তানির কাজটি সম্পাদন করেছেন।

পুনঃরপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তা পুনরায় অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়। উৎপাদনকারী দেশের সাথে আমদানিকারক দেশের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলে এ ধরনের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

মি. করিম মায়ানমার থেকে চাল আমদানি করে সংরক্ষণ করেন। পরবর্তী সময়ে বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় তিনি চাল প্যাকেটজাত করে মধ্যপ্রাচ্যে পুনঃরপ্তানি করেন। এতে তিনি ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া থেকে রক্ষা পান।

মি. করিম মায়ানমার থেকে চাল আমদানি করে প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি অধিক লাভে বিক্রির আশায় তা গুদামে সংরক্ষণ করেন। কিন্তু বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় তিনি তা প্যাকেটজাত করে মধ্যপ্রাচ্যে বাজারজাতকরণের সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ তিনি আমদানিকৃত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ করে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করবেন, যা পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের অন্তর্ভুক্ত।

 প্রশ্নঃ১০ চাকরি থেকে অবসরগ্রহণের পর জনাব তানভীর ব্যবসায় শুরু করেন। দিনাজপুর থেকে ধান সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে সংরক্ষণ করেন। পরে চাল তৈরি করে সারা বছর বাজারে বিক্রয় করেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তার কর্মচারীর সংখ্যা বেড়ে এখন ১০০ জন। সম্প্রতি তিনি চাল রপ্তানি শুরু করেছেন।     [কু. বো. ১৬]

 ক.  ব্যবসায়ের সংজ্ঞা দাও। ১

 খ.  প্রজনন শিল্প বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.  উদ্দীপকে জনাব তানভীর কর্তৃক সম্পাদিত কার্যক্রম হতে কোন কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জনাব তানভীরের অবদান উদ্দীপকের আলোকে বর্ণনা করো।     ৪

১০ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে। যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় ইত্যাদি।

 খ যে শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে প্রজনন শিল্প বলে।

এ শিল্পের মাধ্যমে গাছপালা ও প্রাণীর বংশ বৃদ্ধি করা হয়। এতে প্রাকৃতিক সম্পদ লালন-পালন করে সেগুলোর বংশ বৃদ্ধি বা স্বাভাবিক ফলনের মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করা হয়। যেমন- নার্সারি, পোল্ট্রি ফার্ম, ডেইরি ফার্ম, মৎস্য উৎপাদন, হ্যাচারি ইত্যাদি।

 গ উদ্দীপকের জনাব তানভীর কর্তৃক সম্পাদিত কার্যক্রম হতে যথাক্রমে স্বত্বগত, স্থানগত, রূপগত ও কালগত উপযোগ সৃষ্টি হয়।

উপযোগ বলতে কোনো পণ্য বা সেবার অভাব পূরণের ক্ষমতাকে বোঝায়। ব্যবসায়ের প্রধান শাখা শিল্পের মাধ্যমে কাঁচামাল প্রক্রিয়জাত করে পণ্যের রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়। ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে পণ্য হস্তান্তরের ফলে স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। পরিবহনের মাধ্যমে উৎপাদনস্থল থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য প্রেরণে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। এক মৌসুমে উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ করে অন্য মৌসুমে বিক্রয়ের মাধ্যমে কালগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়।

উদ্দীপকে জনাব তানভীর দিনাজপুর হতে ধান কিনেন। এতে স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। তিনি ধান পরিবহনের মাধ্যমে চট্টগ্রামে নিয়ে আসার ফলে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর তিনি ধান সংরক্ষণ করেন; যা কালগত উপযোগ সৃষ্টি করে। পরে ধান থেকে চাল তৈরি করার মাধ্যমে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি হয়।

 ঘ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জনাব তানভীরের ব্যবসায়িক কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বর্তমান বিশ্বে ব্যবসায়ের গুরুত্ব এত বেশি যে তা বাড়িয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যবসায়ে যেসব অর্থনৈতিক কাজ পরিচালিত হয় তার মাধ্যমে শুধু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারাই নয়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের সমগ্র অর্থনীতিই উপকৃত হয়।

জনাব তানভীর তার ব্যবসায়ে দিনাজপুর থেকে ধান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম নিয়ে আসেন। এতে পরিবহন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। ধান থেকে চাল তৈরি করতে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করতে হয়। প্রতিটি পর্যায়ের কাজের সাথেই লোকজন জড়িত।

বর্তমানে তার ব্যবসায় ১০০ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সম্প্রতি তিনি বিদেশে চাল রপ্তানি শুরু করেছেন; যা দেশকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সাহায্য করবে। জনাব তানভীর তার ব্যবসায়ের মাধ্যমে দেশে নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ তৈরি করেছেন। তিনি বহু লোকের কর্মসংস্থান করেছেন এবং বিদেশে চাল রপ্তানি করে দেশের রপ্তানি খাতে আয় বৃদ্ধি করেছেন। সুতরাং, ব্যবসায়ের সাফল্য অর্জিত হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে, যা জনাব তানভীরের ব্যবসায়ে লক্ষণীয়।

 প্রশ্নঃ১১ দেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ সমাপ্ত করে জনাব শামীম স্বল্প বেতনে একটি ফার্মে চাকরি নেন। প্রাপ্ত বেতন দ্বারা কোনো রকম সংসার চলছে বটে কিন্তু তার দ্বারা জাতির কোনো উপকার হচ্ছে না ভেবে চাকরি ছেড়ে তিনি একটি পোলট্রি ফার্ম স্থাপন করলেন। তিনি ফার্মে উৎপাদিত ডিম ও এক মাসের বাচ্চা বিক্রয় করে যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। চাকরি করে যে বেতন পেতেন তা থেকে ব্যবসায়ের আয় অনেক বেশি। পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদাও কম নয়। তাই তিনি ভাবছেন দেশের কর্মক্ষম যুবদের মধ্যে যদি এ ধারণার বিকাশ ঘটাত, তাহলে হয়তো আমাদের দেশের বেকারত্ব অনেকটা কমে যেত। [সি. বো. ১৬]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  আত্মকর্মসংস্থান বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  জনাব শামীমের ব্যবসায়টি কোন ধরনের শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  জনাব শামীমের উদ্যোগটি কি দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখবে? তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪

১১ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে (যেমন : উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) ব্যবসায় বলে।

 খ আত্মকর্মসংস্থান বলতে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান তৈরি করাকে বোঝায়।

এর মাধ্যমে নিজের দক্ষতা, চেষ্টা ও গুণাবলির দ্বারা নিজেই নিজের কাজের সুযোগ তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে নিজেই স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে ও বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে ঝুঁকি নিয়ে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করা যায়।

 গ উদ্দীপকের জনাব শামীমের ব্যবসায়টি প্রজনন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

প্রজনন শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এতে প্রাকৃতিক সম্পদকে লালন-পালনের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করা হয়। যেমন : নার্সারি, হ্যাচারি, মৌমাছি পালন, পোলট্রি ফার্ম, কুমির চাষ, ডেইরি ফার্ম, মৎস্য চাষ ইত্যাদি এ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

উদ্দীপকে জনাব শামীম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে স্বল্প বেতনে চাকরি নেন। কিন্তু স্বল্প বেতনের চাকরি ছেড়ে দেন। কারণ এ চাকরির মাধ্যমে তিনি জাতির কোনো উপকার করতে পারছেন না। তাই তিনি একটি পোলট্রি ফার্ম স্থাপন করেন। পোলট্রি ফার্মের মাধ্যমে তিনি ডিম ও বাচ্চা উৎপাদন করেন। বাচ্চা উৎপাদনের মাধ্যমে তিনি প্রাণীয় বংশ বৃদ্ধি করেন, যা প্রজনন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

 ঘ উদ্দীপকের জনাব শামীমের উদ্যোগটি দেশের বেকারত্ব দূরীকরণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বেকারত্ব দূরীকরণে ব্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবসায়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। একজন ব্যক্তি অন্যের চাকরির ওপর নির্ভর না করে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করতে পারে; যা বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উদ্দীপকে জনাব শামীম স্বল্প বেতনে চাকরি পেয়েও তা ছেড়ে দেন। তিনি একটি পোলট্রি ফার্ম স্থাপন করেন এবং লাভবান হন। এতে তার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। তার উদ্যোগটি বেকারত্ব দূরীকরণে ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। দেশের বেকার যুবকরা প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। এছাড়া তার উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যরাও ব্যবসায় স্থাপন করবে।

বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে অসংখ্য বেকার লোক রয়েছে। যারা পর্যাপ্ত মেধা থাকা সত্ত্বেও চাকরির আশায় বেকার জীবনযাপন করছে। তারা যদি জনাব শামীমের মতো ব্যবসায় গঠন করে তাহলে দেশে বেকারত্ব হ্রাস পাবে। সুতরাং, জনাব শামীমের উদ্যোগটি দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 প্রশ্নঃ১২ যশোরের মাসুম ভারত থেকে মোটরসাইকেল আমদানি করে নড়াইলে বিক্রয় করেন। এ ব্যবসায় করে তিনি প্রচুর লাভ করেছেন। এ বছর জুন মাসে যে মোটরসাইকেল আমদানি করেছেন সেগুলো ডিসেম্বর মাসে নড়াইলে বিক্রয় করলে বেশি লাভ হতো। কিন্তু তার আমদানিকৃত মোটরসাইকেল রাখার ব্যবস্থা করতে না পারায় আগস্ট মাসেই বিক্রয় করেন দেন।     [য. বো. ১৬]

 ক.  প্রাথমিক শিল্প কী?     ১

 খ.  মুনাফাকে কেন ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান বলা হয়?    ২

 গ.  উদ্দীপকের আলোকে মাসুম কোন ধরনের বাণিজ্যে নিয়োজিত? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  ব্যবসায়ের সার্বিক দিক বিবেচনায় আগস্ট মাসেই তার মোটরসাইকেল বিক্রয়ের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।  ৪

১২ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক প্রকৃতি থেকে সম্পদ সংগ্রহে ও উৎপাদনে সব ধরনের কর্মপ্রক্রিয়া বা প্রচেষ্টাকে প্রাথমিক শিল্প বলে। যেমন: ধান চাষ।

 খ ব্যবসায়ের আয় থেকে ব্যয় বা ক্ষতি বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তা-ই মুনাফা।

ব্যবসায়ের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন। মুনাফা হবে ধরে নিয়ে ব্যবসায়ী ব্যবসায় করলেও পণ্য বিনষ্ট হওয়া, চাহিদা হ্রাস পাওয়া প্রভৃতি কারণে লোকসান হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ঝুঁকি না নিলে ব্যবসায় করা যায় না। সাধারণত ঝুঁকি বেশি হলে মুনাফার পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যেখানে ঝুঁকি নেই সেখানে মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনাও কম। তাই মুনাফাকে ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার বলা হয়।

 গ উদ্দীপকের মাসুম আমদানি বাণিজ্যের সাথে জড়িত।

আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্র বিদেশ থেকে পণ্য ক্রয় করে নিজ দেশে এনে বিক্রয় করা হয়। এটি একটি বৈদেশিক বাণিজ্য।

উদ্দীপকের যশোরের মাসুম ভারত থেকে মোটরসাইকেল আমদানি করেন। আমদানিকৃত মোটরসাইকেল তিনি নড়াইলে বিক্রয় করেন। মাসুম ভারত থেকে পণ্য আনেন এবং নিজ দেশে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করেন। সুতরাং, মাসুম নিঃসন্দেহে আমদানি বাণিজ্যের সাথে জড়িত।

 ঘ ব্যবসায়ের সার্বিক দিক বিবেচনায় আগস্ট মাসেই মাসুমের মোটরসাইকেল বিক্রি করা যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

পণ্য উৎপাদন ও ভোগের মধ্যে একটি সময়গত পার্থক্য বিদ্যমান। গুদামজাতকরণের মাধ্যমে এ সময়গত বাধা দূর করা যায়। আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে গুদামজাতকরণ প্রয়োজন।

উদ্দীপকে মাসুম ভারত থেকে মোটরসাইকেল আমদানি করে নড়াইলে বিক্রি করেন। তিনি জুন মাসে যে মোটরসাইকেল আমদানি করেছেন সেগুলো ডিসেম্বর মাসে বিক্রয় করলে বেশি লাভ করতে পারবেন। কিন্তু গুদামজাতের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তিনি আগস্ট মাসেই মোটরসাইকেল বিক্রি করেন। এতে অধিক মুনাফা অর্জন করতে না পারলেও নিয়মিত মুনাফা অর্জন করেন।

ভাড়া করা গুদামের ব্যবস্থা করতে হলে মাসুমের অতিরিক্ত ব্যয় হতো। তাছাড়া ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মাসুমের বিনিয়োগকৃত অর্থ অলস পড়ে থাকত। তাই নিজস্ব গুদামের ব্যবস্থা না থাকায় এবং মূলধন দ্রুত ফেরত পেতে মাসুমের মোটরসাইকেল বিক্রির সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ১৩ জনাব ইমন মধুপুরের বাসিন্দা। তিনি জীবিকা উপার্জনের লক্ষ্যে বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করেন। তা থেকে কাঠ চেরাই করে আসবাবপত্র তৈরি করেন। তিনি ঐসব আসবাবপত্র ময়মনসিংহ এলাকার বিভিন্ন দোকানে স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করেন। বর্তমানে তার ব্যবসায়টি ভালো চলছে। তার পণ্যের চাহিদা যথেষ্ট থাকায় ব্যবসায় বাড়াতে চান। কিন্তু পুঁজির কারণে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া মধুপুর থেকে ময়মনসিংহের দূরত্ব কিছুটা বেশি হওয়ায় তিনি আসবাবপত্র সঠিক সময়ে দোকানে পৌঁছানোর ব্যাপারে চিন্তিত। কিন্তু তারপরও তিনি এ ব্যবসায়ের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী।     [ব. বো. ১৬]

 ক.  প্রজনন শিল্প কী? ১

 খ.  বাণিজ্যের সামাজিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.  উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব ইমন কী ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করেছেন? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব ইমন ব্যবসায় সফল হতে চাইলে তাকে বাণিজ্যের কোন প্রতিবন্ধকতাকে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেওয়া উচিত? মূল্যায়ন করো। ৪

১৩ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে প্রজনন শিল্প বলে। যেমন: নার্সারি, পোলট্রি ফার্ম ইত্যাদি।

 খ পণ্যের বণ্টনকারী শাখা হলো বাণিজ্য।

বাণিজ্যের মাধ্যমেই শিল্পে উৎপাদিত পণ্য বা সেবা ভোক্তার নিকট পৌঁছায়। এতে সমাজের মানুষের অভাব দূর হয়। বাণিজ্যের মাধ্যমে সমাজের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। বাণিজ্য নিত্য-নতুন পণ্য সরবরাহ করে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা দূর করে। তাই বাণিজ্যের সামাজিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

 গ উদ্দীপকের জনাব ইমন রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করেছেন।

প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদের রূপ বা অবস্থান পরিবর্তন করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে তোলাই হলো রূপগত উপযোগ। যন্ত্রের সাহায্যে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়।

উদ্দীপকে জনাব ইমন একজন আসবাবপত্র প্রস্তুতকারক। তিনি মধুপুর বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত কাঠ চেরাই করে তিনি বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র তৈরি করেন। তিনি কাঠের রূপ পরিবর্তন করেন। অর্থাৎ, কাঠকে তিনি আসবাবপত্রে পরিবর্তন করেন, যা মানুষ চূড়ান্ত পণ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। সুতরাং, বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে সেই কাঠ থেকে আসবাবপত্র তৈরি করার মাধ্যমে জনাব ইমন রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করেছেন।

 ঘ উদ্দীপকের জনাব ইমন ব্যবসায় সফল হতে চাইলে তাকে সর্বপ্রথম বাণিজ্যের অর্থগত প্রতিবন্ধকতাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অর্থসংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য ব্যাংক দায়িত্ব পালন করে। এ বাধা দূর হলে ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ঘটে।

উত্তীপকের জনাব ইমন মধুপুর বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে আসবাবপত্র তৈরি করেন। তিনি তৈরিকৃত আসবাবপত্র ময়মনসিংহ এলাকার বিভিন্ন দোকানে স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করেন। তার পণ্যের চাহিদা যথেষ্ট থাকায় তিনি ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে চান। কিন্তু পুঁজির কারণে তার সমস্যা হচ্ছে এবং ব্যবসায়ের সফলতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

জনাব ইমন যদি পুঁজির সংস্থান করতে পারেন তাহলে ব্যবসায়টির সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। এতে তিনি চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন। ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে জনাব ইমন পুঁজির সমস্যা দূর করতে পারেন। এটি করলে তার ব্যবসায়ও সফল হবে। সুতরাং, জনাব ইমনের অর্থগত প্রতিবন্ধকতাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

 প্রশ্নঃ১৪ জামিল সাহেব মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু ক্রয় করে এনে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে মুনাফা অর্জন করেন। মার্চ এপ্রিল মাসে মুন্সীগঞ্জ জেলায় আলুর ব্যাপক সরবরাহ হয় । কিন্তু সংরক্ষণের স্বল্পতার কারণে জামিল সাহেব পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু ক্রয় করতে পারেন না বলে দেশের প্রতিটি জেলায় তিনি চাহিদা মোতাবেক আলু সরবরাহ করতে পারছেন না। এতে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।     [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]

 ক.  সামাজিক ব্যবসায় কী? ১

 খ.  জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসায়ের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।      ২

 গ.  জামিল সাহেবের কাজ ব্যবসায়ের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে করণীয় বিশ্লেষণ করো।      ৪

১৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে ব্যবসায়ে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা পাওয়ার প্রত্যাশা থাকে না এবং শুধু দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সমাজের কল্যাণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

খ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সব বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে (উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, বিজ্ঞাপন প্রভৃতি) ব্যবসায় বলে।

ব্যবসায়ের মাধ্যমে মানুষ নিজস্ব বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করে। এসব পণ্য সরবরাহ করে মুনাফা অর্জন করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ী নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যের কাজেরও সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। এতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হয়। এভাবে জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গ উদ্দীপকে জামিল সাহেবের কাজ ব্যবসায়ের বাণিজ্য শাখার অন্তর্ভুক্ত।

বাণিজ্য ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা। এর মাধ্যমে শিল্পে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছানো হয়। এ কাজের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা দূর করতে হয়। যেমন: স্বত্বগত, সময়গত, ঝুঁকিগত প্রভৃতি। এসব বাধা ক্রয়-বিক্রয়, গুদামজাতকরণ, বিমা প্রভৃতির মাধ্যমে দূর করা যায়।

উদ্দীপকে উল্লেখ্য জামিল সাহেব একজন আলু ব্যবসায়ী। তিনি মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু ক্রয় করেন। এরপর তিনি ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রথমে আলু ক্রয়ের মাধ্যমে স্বত্বগত বাধা দূর করেন। আর মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ও ঢাকা থেকে বিভিন্ন স্থানে পরিবহনের মাধ্যমে আলু সরবরাহ করেন। এতে স্থানগত বাধা দূর হয়। এসব কাজ বাণিজ্যের কাজের সাথে সম্পর্কিত। তাই বলা যায়, জামিল সাহেবের কাজ ব্যবসায়ের বাণিজ্য শাখার অন্তর্ভুক্ত।

ঘ উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে জামিল সাহেব আলুর গুদামজাত করতে পারেন বলে আমি মনে করি।

উৎপাদন ও ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে পণ্য নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষার জন্য গুদামজাত করা হয়। এতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পণ্যের গুণগত মান রক্ষা হয়। এর ফলে পণ্যের সময়গত উপযোগ সৃষ্টি হয়।

উদ্দীপকের জামিল সাহেব মুন্সীগঞ্জের একজন আলু ব্যবসায়ী। তার ব্যবসায়ে আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এজন্য মুন্সীগঞ্জে যখন আলুর ব্যাপক সরবরাহ হয় তখন তিনি বেশি পরিমাণে আলু কিনতে পারেন না। ফলে প্রতিটি জেলার চাহিদা অনুযায়ী তিনি আলু সরবরাহ করতে পারছেন না। এতে তার ব্যবসায়িক কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।

এ অবস্থায় তিনি গুদামজাতকরণ ব্যবস্থা নিতে পারেন। এতে তিনি বেশি পরিমাণে আলু কিনে এখানে সংরক্ষণ করতে পারবেন। ফলে আলুর গুণগত মান নষ্ট হবে না। এরপর চাহিদা অনুযায়ী সারা বছর আলু সরবরাহ করতে পারবেন। সুতরাং, আলুর গুদামজাতকরণের মাধ্যমেই তিনি উক্ত সমস্যা সমাধান করতে পারেন বলে আমি মনে করি।

প্রশ্নঃ১৫ জনাব শামীম ও তার তিন বন্ধু মিলে কুড়িগ্রামে একটি ব্যবসায় স্থাপন করেন। এলাকার বেশিরভাগ লোকই দারিদ্র্য পীড়িত। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো কোনো বিশেষ সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন করা। চার বন্ধুর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সাফল্য লাভ করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছে। ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা থেকে সদস্যদের বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত দেয়া হয় এবং অবশিষ্ট মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

     [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা; পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.  প্রত্যক্ষ সেবা কী? ১

 খ.  বাণিজ্য কীভাবে ব্যবসায়ের ঝুঁকিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে?    ২

 গ.  জনাব শামীমদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.  তুমি কি মনে করো শামীমদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি দেশের দরিদ্রতা দূরীকরণে অবদান রাখতে সক্ষম? যুক্তসহ বর্ণনা করো। ৪

১৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।

 যেমন: ডাক্তার, উকিল, অডিট ফার্মের কাজ প্রভৃতি।

খ শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রী উৎপাদকের কাছ থেকে প্রকৃত ভোগকারীর কাছে পৌঁছানোর কাজকে বাণিজ্য বলে।

ঝুঁকির কারণে (যেমন: চাহিদা হ্রাস, পণ্য পচন, মূল্য হ্রাস, দুর্ঘটনা, চুরি, ডাকাতি প্রভৃতি) ব্যবসায়ের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঝুঁকির বিপরীতে পণ্যের বিমা করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী বিমাগ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমাকারী ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এভাবে বাণিজ্য বিমার মাধ্যমে ব্যবসায়ের ঝুঁকিগত বাধা দূর করতে পারে।

গ উদ্দীপকে জনাব শামীমদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

এ ব্যবসায়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরকীরণ ও সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা হয়। এখানে উদ্যোক্তারা মূলধন বিনিয়োগ করেন; কিন্তু মুনাফা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন না। বিনিয়োগকারীরা শুধু মূলধন ফেরত নেন। আর মুনাফার অংশটি উক্ত বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানের প্রসার ও উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

উদ্দীপকে শামীম ও তার তিন বন্ধু মিলে কুড়িগ্রামে একটি ব্যবসায় স্থাপন করেন। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন করা। ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা থেকে সদস্যরা বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত নেয়। আর অবশিষ্ট মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করে। এসব কাজ সামাজিক ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব শামীমদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে শামীমদের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসায়টি দেশের দরিদ্রতা দূরীকরণে অবদান রাখতে সক্ষম বলে আমি মনে করি।

সামাজিক ব্যবসায় গঠনে উদ্যোক্তারা মুনাফা প্রাপ্তির উদ্দেশ্য ছাড়াই মূলধন বিনিয়োগ করেন। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণ। এর কাজ হয় বাণিজ্যিক; কিন্তু উদ্দেশ্য হয় সামাজিক।

উদ্দীপকে শামীমদের প্রাতিষ্ঠানটি কুড়িগ্রামে অবস্থিত। সেখানে বেশিরভাগ লোকই দারিদ্র্য পীড়িত। তাই এ প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নে কাজ করছে। অর্থাৎ, এটি সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে প্রচুর মুনাফা অর্জন করছে। মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের পাশাপাশি অত্র এলাকার অসহায় ও বিত্তহীন মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা হয়। ফলে দরিদ্র লোকেরা নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ পায়। এতে দরিদ্র মানুষের উপকার হয়। এভাবে সামাজিক ব্যবসায় দেশের দরিদ্রতা কমাতে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

 প্রশ্নঃ১৬ মি. শওকত রাজশাহীর সাহেব বাজারে একজন মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ী। তিনি রাজশাহী থেকে আম ও লিচু এনে ঢাকায় বিক্রয় করেন। ফলের সাইজ ও মান অনুযায়ী আম ও লিচু বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেন। তিনি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফল সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। ভোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে ফরমালিনমুক্ত ও তাজা ফল কিনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

     [নটর ডেম কলেজ, ঢাকা]

 ক.  বাণিজ্য কাকে বলে?   ১

 খ.  সামাজিক ব্যবসা বলতে কী বোঝ?      ২

 গ.  মি. শওকত ফল বাজারজাতকরণের পূর্বে ব্যবসায়ের কোন কাজটি সম্পাদন করেছেন বলে তুমি মনে করো? বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাজটি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ বলে তুমি মনে করো।      ৩

 ঘ.  ভোক্তাদের সন্তুষ্টি বিধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফলের সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে মি. শওকতের গৃহীত ব্যবস্থা উত্তম- তোমার মতামত দাও।      ৪

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক উৎপাদকের থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানো পর্যন্ত যেসব কাজ (ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন প্রভৃতি) করা হয় তাকে বাণিজ্য বলে।

খ যে ব্যবসায় মুনাফা অর্জনের আশা না করে সমাজের দারিদ্র্য দূরীকরণ ও উন্নয়নের জন্য গঠিত হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

এ ব্যবসায়ে বিনিয়োগকারী শুধু বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত নেয়। মুনাফার অংশ নেয় না। মুনাফার অর্থ দিয়ে ঐ ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের কাজ করা হয়। এটি ব্যবসায়ের পুনঃ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়।

গ উদ্দীপকে মি. শওকত ফল বাজারজাতকরণের পূর্বে ব্যবসায়ের পর্যায়িতকরণ কাজটি সম্পাদন করেছেন। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে আমি মনে করি।

পর্যায়িতকরণের মাধ্যমে পণ্যকে এর আকৃতি, ওজন, মান অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। এতে ক্রেতারা সহজেই তাদের প্রয়োজন মতো পণ্য চিহ্নিত ও সংগ্রহ করতে পারে। এতে ক্রয় ও বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রেই সুবিধা হয়।

উদ্দীপকে মি. শওকত একজন মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ী। তিনি রাজশাহী থেকে আম ও লিচু ঢাকায় এনে বিক্রি করেন। এসব ফলের সাইজ ও মান অনুযায়ী তিনি বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নেন। এর ফলে পরবর্তীতে ফল বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় না। ক্রেতারা সহজেই তাদের চাহিদা অনুযায়ী ফল সংগ্রহ করতে পারে। এজন্য ভোক্তা ও খুচরা ফল ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে ফল কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এসব কাজ পর্যায়িতকরণের সাথে সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ, যা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ঘ ভোক্তাদের সন্তুষ্টি বিধানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফল সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে উদ্দীপকের মি. শওকতের গৃহীত ব্যবস্থাটি উত্তম বলে আমি মনে করি।

পণ্য উৎপাদনের পর তা ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তা সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়। কারণ কিছু পণ্য উৎপাদন হয় এক সময়ে, আর ব্যবহার করা হয় সারা বছর। তাই এর গুণগত মান রক্ষার জন্য গুদামজাত ব্যবস্থা নিতে হয়।

উদ্দীপকের মি. শওকত মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ী। তিনি রাজশাহী থেকে আম ও লিচু ঢাকায় এনে বিক্রি করেন। এজন্য বিভিন্ন ফল তাকে প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়। কারণ সব ফল একই সময়ে বিক্রয় নাও হতে পারে। তাই অবিক্রীত ফল অন্য সময়ে বিক্রির জন্য গুদামজাত করা হয়।

গুদামজাত করার মাধ্যমে ফলের গুণগত মান ভালো থাকে। নষ্ট বা পচে যায় না, যা পরবর্তীতে বিক্রির জন্য বাজারজাত করার যায়। এতে ভোক্তারা ভালো মানের ফল কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। আর তাদের চাহিদা অনুযায়ী ফল সংগ্রহ করেও তারা সন্তুষ্ট হচ্ছে। তাই বলা যায়, উক্ত গুদামজাতকরণ কাজ ভোক্তাদের সন্তুষ্টি বিধানে নিঃসন্দেহে একটি উত্তম ব্যবস্থা।

 প্রশ্নঃ১৭ আকিব ও রাকিব দুই বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে দুজনেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবেন। তাই আকিব অইঈ লি. ও রাকিব ঢণত লি. নামে দুটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। অইঈ কোম্পানিতে বিদেশ থেকে ভেষজ চর্বি আমদানি করে, সেটি প্রক্রিয়াজাত করে ক্ষার ও সুগন্ধি মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাবান তৈরি করে তা বাজারজাত করে। অন্যদিকে ঢণত কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে টেন্ডার নিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণের কাজ করে। বর্তমানে দুই বন্ধুই সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।  [হলি ক্রস কলেজ, ঢাকা]

 ক.  ট্রেড কী?  ১

 খ.  প্রত্যক্ষ সেবা বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  অইঈ লি. কোম্পানির কার্যক্রমকে কোন ধরনের শিল্প বলা যায়? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.  অইঈ লি. ও ঢণত প্রা. লিমিটেড কোম্পানির মধ্যে কোনটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে?      ৪

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের জন্য পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করাকে ট্রেড (পণ্য বিনিময়) বলে।

খ গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করাকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।

এটি দেখা বা স্পর্শ করা যায় না। কিন্তু মানুষের প্রয়োজন পূরণে এটি সক্ষম। এর মাধ্যমে মানুষ সেবা পেয়ে উপকৃত হয়। সেবার বিনিময়ে ফি দিতে হয়। এ সেবা মজুদযোগ্য নয়। যেমন: ডাক্তারি, ওকালতি, প্রকৌশলীর কাজ প্রভৃতি প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্ভুক্ত।

গ উদ্দীপকে অইঈ লি. কোম্পানির কার্যক্রম যৌগিক শিল্পের অন্তর্গত বলা যায়।

 এ শিল্পে কয়েকটি পৃথক শিল্পের পদার্থ বা উপাদানকে একত্রিত করা হয়। এরপর নিজস্ব কারখানা বা শিল্পে এগুলো প্রক্রিয়াজাত করা হয়। প্রক্রিয়াজাতের পর এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও ব্যবহারযোগ্য পণ্যে প্রস্তুত হয়। যেমন : সোডিয়াম ও ক্লোরিন মিশিয়ে লবণ তৈরি এর অন্তর্গত।

উদ্দীপকে অইঈ কোম্পানি বিদেশ থেকে ভেষজ চর্বি আমদানি করে। সেটি প্রক্রিয়াজাত করে ক্ষার ও সুগন্ধি মিশিয়ে সাবান তৈরি করে। এক্ষেত্রে সাবান তৈরির জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন তা একত্রিত করা হয়। এরপর প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সাবান তৈরি করা হয়েছে। এভাবে এটি পূর্ণাঙ্গ পণ্যে প্রস্তুত হয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য যৌগিক শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, অইঈ লি. এর কাজ যৌগিক শিল্পের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকের অইঈ লি. (যৌগিক শিল্প) ও ঢণত লি. (নির্মাণ শিল্প) কোম্পানির মধ্যে ঢণত লি. দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে বলে আমি মনে করি।

 যেকোনো শিল্পের উন্নয়নই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসাধন করে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে গণ্য হয়। এর মাধ্যমেই ব্যক্তি, সমাজ, দেশ ও সমগ্র মানবজাতির উন্নয়ন হয়।

উদ্দীপকে অইঈ কোম্পানি বিদেশ থেকে ভেষজ চর্বি আমদানি করে সেগুলো প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সাবান তৈরি করে বাজারজাত করে। এতে দেশের মানুষের শৌখিন চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এটি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা না রাখলেও এর মাধ্যমে সরকার কর ও রাজস্ব পেয়ে থাকে।

অন্যদিকে, ঢণত কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে টেন্ডার নিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণ করে। অর্থাৎ এটি নির্মাণ শিল্পের অন্তর্গত। এর মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। সমাজের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারছে। ফলে দেশের মানুষ, সরকার ও ব্যবসায়ী সকলেই উপকৃত হচ্ছে। এতে প্রত্যক্ষভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়। তাই বলা যায়, ঢণত লি. নির্মাণ শিল্পই দেশের উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে।

 প্রশ্নঃ১৮ মনোহরদিতে ইদ্রিসের একটি মনিহারি দোকান রয়েছে। সব ধরনের মনিহারি দ্রব্য সুলভমূল্যে পাওয়া যায় বিধায় এলাকার অধিকাংশ লোকজনই তার দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করে। সম্প্রতি ইদ্রিস তার পাশের দুটি উপজেলায় একই ধরনের দুটি দোকান খোলেন। সেখানেও ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় ইদ্রিস পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একই ধরনের দোকান খোলার পরিকল্পনা করছেন।  [ঢাকা কমার্স কলেজ]

 ক.  সামাজিক ব্যবসায়ের প্রবক্তা কে?  ১

 খ.  প্রাথমিক শিল্প বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  ব্যবসায়ের আওতা বিবেচনায় ইদ্রিসের কাজ কোন ধরনের ট্রেড? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  ইদ্রিসের পরিকল্পনা কি দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখবে? মতামত দাও। ৪

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক সামাজিক ব্যবসায়ের প্রবক্তা হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

খ প্রকৃতি থেকে সম্পদ উৎপাদন ও আহরণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যপ্রচেষ্টাই হলো প্রাথমিক শিল্প।

এ শিল্প বহুলাংশেই প্রকৃতি বা অদৃশ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতিগতভাবেই এ শিল্পের প্রসার ঘটে। এ শিল্পে মানবীয় প্রচেষ্টার ভূমিকা খুবই কম। চাষাবাদ, পশু-পাখি লালনপালন, খনিজ সম্পদ উত্তোলন, মৎস্য আহরণ ইত্যাদি প্রাথমিক শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

গ ব্যবসায়ের আওতা বিবেচনায় উদ্দীপকে বর্ণিত ইদ্রিসের কাজ অভ্যন্তরীণ ট্রেডের অন্তর্ভুক্ত।

একটি দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে যে ক্রয়-বিক্রয় কাজ সংঘটিত হয় তাকে অভ্যন্তরীণ ট্রেড বা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে। এক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই একই দেশের অধিবাসী হয়ে থাকে।

উদ্দীপকে বর্ণিত ইদ্রিসের মনোহরদিতে একটি মনিহারি দোকান আছে। সব ধরনের মনিহারি পণ্য সেখানে সুলভমূল্যে পাওয়া যায়। তাই উক্ত এলাকার অধিকাংশ লোকজনই তার দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করে। সম্প্রতি তিনি পাশের দুটি উপজেলাতেও একই ধরনের দুটি দোকান খোলেন। এথেকে বোঝা যায়, ইদ্রিস বাংলাদেশের সীমানার ভেতর থেকে পণ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশেই বিক্রি করছেন। তাই তার কাজটি অভ্যন্তরীণ ট্রেড।

ঘ ইদ্রিসের বিভিন্ন অঞ্চলে দোকান খোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

ব্যবসায় মানুষের আয়ের পথ সৃষ্টি করে। ব্যবসায় যত সম্প্রসারিত হয় তত নতুন নতুন কর্মসংস্থান গড়ে ওঠে। দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ে।

ইদ্রিস মনোহরদিতে একটি মনিহারি দোকান চালু করেন। সুলভমূল্যে সব ধরনের পণ্য পাওয়ায় এলাকাবাসী তার দোকান থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে থাকে। এতে সাফল্য দেখে ইদ্রিস পাশের দুটি উপজেলাতেও একই রকম দোকান খোলেন। সেখানেও ব্যাপক সাফল্য আসতে থাকে। এতে উৎসাহিত হয়ে তিনি পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তার ব্যবসায় সম্প্রসারণের চিন্তা করছেন।

তিনি যদি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেন তাহলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বিভিন্ন স্থানে দোকান পরিচালনার জন্য কর্মীর প্রয়োজন হবে। অপরদিকে তার দেখাদেখি আরও অনেকেই এরূপ ব্যবসায়ে উৎসাহী হবে। এতে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ফলে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। তাই বলা যায়, ইদ্রিসের পরিকল্পনা দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ইতিবাচক অবদান রাখবে।

 প্রশ্নঃ১৯ আমজাদ হোসেন ইন্দোনেশিয়া থেকে উন্নতমানের চাল কিনে যাচাই-বাছাইয়ের পর প্যাকেটজাত করে তুরস্কে বিক্রি করেন। পরিবহন ব্যয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি সমুদ্র পথে পণ্য আনা-নেওয়া করেন। তবে এই পথে বিভিন্ন দুর্যোগের কথা ভেবে তিনি প্রায় সময়ই উদ্বিগ্ন থাকেন।    [আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা]

 ক.  প্রমিতকরণ কী?  ১

 খ.  ‘শিল্প হলো উৎপাদনের বাহন’- ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.  আমজাদ হোসেন কোন ধরনের বাণিজ্যের সাথে জড়িত? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.  উদ্দীপকের বর্ণনা অনুযায়ী আমজাদ হোসেন ব্যবসায়িক দুশ্চিন্তা দূর করতে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন? যুক্তি উপস্থাপন করো।     ৪

১৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক পণ্যকে-এর রং, গুণাগুণ, ওজন প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে মান নির্ধারণ করাকে প্রমিতকরণ বলে।

খ যে প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে প্রস্তুত করা হয় তাকে শিল্প বলে।

এটি কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে চূড়ান্ত পণ্যে রূপান্তর করে। মানুষের প্রয়োজন পূরণের জন্য বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করাই শিল্পের কাজ। অর্থাৎ, এটি পণ্য উৎপাদন সংক্রান্ত কাজের সাথে সংযুক্ত। তাই, শিল্পকে উৎপাদনের বাহন বলা হয়।

গ উদ্দীপকে আমজাদ হোসেন, বৈদেশিক বাণিজ্যের পুনঃরপ্তানি কাজের সাথে জড়িত।

পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক দেশ থেকে পণ্য কিনে তা অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়। এক্ষেত্রে পণ্য রপ্তানিকারক তার রপ্তানিকৃত পণ্য বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেন। এতে কমপক্ষে তিনটি দেশ জড়িত থাকে।

উদ্দীপকে আমজাদ হোসেন ব্যবসায়ের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে উন্নত মানের চাল আমদানি করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এরপর তা যাচাই-বাছাইয়ের পর প্যাকেটজাত করে তুরস্কে বিক্রি করেন। এখানে তিনি এক দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে অন্য দেশে রপ্তানি করেছেন। এ কাজটি পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, আমজাদ হোসেন পুনঃরপ্তানির মাধ্যমেই বৈদেশিক বাণিজ্য করেছেন।

ঘ উদ্দীপকের বর্ণনা অনুযায়ী আমজাদ হোসেন ব্যবসায়িক চিন্তা দূর করতে বিমা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন বলে আমি মনে করি।

সমুদ্রপথে পণ্য বহনের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিপুল অর্থের ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে রপ্তানিকারক বিমা করে। এতে বিমা কোম্পানি পণ্য বা সম্পত্তির ঝুঁকি গ্রহণ করে। ফলে রপ্তানিকারক নিশ্চিন্ত থাকেন।

উদ্দীপকে আমজাদ হোসেন একজন পুনঃরপ্তানিকারক চাল ব্যবসায়ী। তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে চাল এনে তুরস্কে রপ্তানি করেন। তিনি এ কাজের জন্য সমুদ্র পথে পণ্য আনা-নেওয়া করেন। কিন্তু এ পথে বিভিন্ন দুর্যোগের কথা ভেবে তিনি উদ্বিগ্ন থাকেন।

এ অবস্থায় আমজাদ হোসেন সমুদ্রপথে আমদানি-রপ্তানির সময় জাহাজ দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। এ ঝুঁকি কমানোর জন্য তিনি প্রিমিয়ামের বিনিময়ে নৌবিমা চুক্তি করতে পারেন। এতে আমদানি বা রপ্তানি পথে চালের কোনো ক্ষতি হলে বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দিবে। এতে তার ব্যবসায়ের ঝুঁকি কমবে। সুতরাং, এভাবে বিমার মাধ্যমে আমজাদ হোসেন ব্যবসায়িক দুশ্চিন্তা দূর করতে পারেন।

প্রশ্নঃ২০ রাসেল রংপুরের একটি দারিদ্র্য নিপীড়িত অঞ্চলে বাস করে। ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর সে আর তার বন্ধুরা মিলে সেখানে একটি ব্যবসায় স্থাপন করল। ঐ এলাকায় বেশিরভাগ লোক দরিদ্র হওয়ায় তাদের উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন। কিছুদিন পরই তারা সাফল্যের মুখ দেখতে পেল। তাদের ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা থেকে সদস্যদের বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত দিয়ে অবশিষ্ট মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

     [আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা]

 ক.  প্রত্যক্ষ সেবা কী? ১

 খ.  ব্যবসায়ের বন্টনকারী শাখা কোনটি?     ২

 গ.  রাসেলের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি কোন ধরনের? বর্ণনা দাও। ৩

 ঘ.  রাসেলের ব্যবসায়টি কি দেশের দরিদ্রতা দূরীকরণে অবদান রাখতে সক্ষম বলে তুমি মনে করো? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

২০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়াকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে। যেমন: ডাক্তারি, ওকালতি প্রভৃতি প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্গত।

খ ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা হলো বাণিজ্য।

উৎপাদক থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানোর কাজকে বাণিজ্য বলে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক শিল্পে (যেমন: খনিজ সম্পদ উত্তোলন) উৎপাদিত পণ্য মাধ্যমিক শিল্পে (যেমন: চিনি শিল্প) এবং মাধ্যমিক শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোক্তার কাছে সরবরাহ করা হয়। অর্থাৎ এটি মূলত পণ্য বণ্টনের কাজই করে। তাই বাণিজ্যকে ব্যবসায়ের পণ্য বন্টনকারী শাখা বলে।

গ উদ্দীপকে রাসেলের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

এরূপ ব্যবসায় সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। এখানে মুনাফা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কাজ করা হয় না। এ ব্যবসায়ে বিনিয়োগকারীরা শুধু বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত নেয়। আর অর্জিত মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হয়।

উদ্দীপকে রাসেল ও তার বন্ধুরা মিলে রংপুরে একটি ব্যবসায় স্থাপন করল। ঐ এলাকার বেশিরভাগ লোক দরিদ্র হওয়ায় তাদের উদ্দেশ্য ছিল এ দরিদ্রতা দূর করা। এর পাশাপাশি এ ব্যবসায়ের মাধ্যমে তারা সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের কাজও করেন। ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করেন। আর এর সদস্যরা শুধু মূলধনের অংশ ফেরত নেন। এসব বৈশিষ্ট্য সামাজিক ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে রাসেলের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টিও সামাজিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

ঘ উদ্দীপকে রাসেলের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসায় দেশের দরিদ্রতা দূরীকরণে অবদান রাখতে সক্ষম বলে আমি মনে করি।

সামাজিক ব্যবসায় গঠনে কতিপয় ব্যক্তি মুনাফা প্রাপ্তির উদ্দেশ্য ছাড়াই মূলধন বিনিয়োগ করেন। তারা মূলত দরিদ্রতা দূরীকরণ ও সমাজকল্যাণের জন্যই এ ব্যবসায় পরিচালনা করেন। স্বাস্থ্য সেবা, গৃহায়ণ, শিশুদের জন্য খাদ্য সরবরাহ প্রভৃতি ও ব্যবসায়ের কাজের অন্তর্গত।

উদ্দীপকে রাসেলদের ব্যবসায়টি রংপুরে স্থাপিত হয়েছে। সেখানে বেশিরভাগ লোকই দরিদ্র বলে তারা এ অবস্থা মোকাবিলার জন্য কাজ করছেন। এছাড়া তারা সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের উদ্দেশ্যেও কাজ করছেন। অর্থাৎ, এটি সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

তাদের ব্যবসায়টিতে প্রচুর মুনাফা হচ্ছে। এ মুনাফা তারা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ব্যয় করছেন। এর পাশাপাশি এলাকার অসহায় ও বিত্তহীন মানুষের কল্যাণেও ব্যবহার করছেন। এতে দরিদ্র মানুষের উপকার হচ্ছে। ফলে দরিদ্রতা কমছে। সুতরাং, উক্ত সামাজিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি এভাবে দেশের দরিদ্রতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

 প্রশ্নঃ২১ জনাব ইব্রাহিম মুন্সীগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করেছেন। মৌসুমের সময় তিনি মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিধির মাধ্যমে আলু সংগ্রহ ও বছরের বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে তা ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বড় বড় বিক্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আড়তদারদের মাধ্যমে বিক্রয় করেন। আড়তদারদের কাছ থেকে ছোট ব্যবসায়ীরা কিনে তা সাধারণ গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে।

     [রাজবাড়ী সরকারি কলেজ]

 ক.  পুনঃরপ্তানি কী?  ১

 খ.  প্রাথমিক শিল্প বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  জনাব ইব্রাহিম কোন ধরনের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.  জনাব ইব্রাহিমের পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি ব্যবসায়ের গতিকে ত্বরান্বিত করে উদ্দীপকের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।   ৪

২১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক বিদেশ থেকে পণ্য নিজ দেশে আমদানির পর তা আবার অন্য কোনো দেশে রপ্তানি করলে তাকে পুনঃরপ্তানি বলে।

খ প্রকৃতি থেকে সম্পদ উৎপাদন ও সংগ্রহের সব ধরনের কার্যপ্রক্রিয়াকে প্রাথমিক শিল্প বলে।

মানুষের সমস্ত ব্যবহার উপযোগী পণ্যই আসে মূলত প্রাথমিক শিল্প থেকে। এ শিল্প প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এ শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে রূপান্তর করা হয়। যেমন : জমিতে ফসল ফলানো, খনি থেকে সম্পদ উত্তোলন প্রভৃতি এর অন্তর্গত।

গ উদ্দীপকে জনাব ইব্রাহিম অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত।

 কোনো দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের কাজ করা হয়। পাইকারি ব্যবসায় এর অন্তর্গত। এ ব্যবসায়ে উৎপাদকের কাছ থেকে পাইকার অধিক পরিমাণে পণ্য ক্রয় করে তা সংগ্রহ বা গুদামজাত করে রাখেন। এরপর খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রয় করেন।

উদ্দীপকে জনাব ইব্রাহিম মুন্সীগঞ্জে একটি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করেছেন। তিনি একজন মৌসুমি পণ্যের ব্যবসায়ী। তিনি দেশের অভ্যন্তরে মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রতিনিধির মাধ্যমে আলু সংগ্রহ করেন। এরপর নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে তা আড়তদারদের মাধ্যমে বিক্রয় করেন। এখানে তিনি উৎপাদক ও খুচরা ব্যবসায়ীর মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যোগসূত্র স্থাপন করছেন, যা একজন পাইকারের কাজ। সুতরাং, জনাব ইব্রাহিমের কাজ পাইকারি ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে জনাব ইব্রাহিমের পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি ব্যবসায়ের গতিকে ত্বরান্বিত করে উক্তিটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

বাণিজ্যের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে বেশকিছু বাধার সৃষ্টি হয়। যেমন: স্বত্বগত, স্থানগত, সময়গত বাধা প্রভৃতি। এসব বাধা দূর করার জন্য পণ্য বিনিময় সহায়ক কিছু কাজ (যেমন: ক্রয়-ব্রিকয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ প্রভৃতি) করা হয়। এটি ব্যবসায়ের কাজ সচল রাখতে সাহায্য করে।

উদ্দীপকের জনাব ইব্রাহীম মৌসুমের সময় বিভিন্ন আড়তদারের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু সংগ্রহ করেন। তা নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করেন। এভাবে তিনি পণ্যের স্থানগত বাধা দূর করেন। আবার ক্রয়-বিক্রয় কাজের মাধ্যমে তিনি স্বত্বগত বাধা দূর করছেন। এগুলো পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলির অন্তর্গত।

এসব কাজের মাধ্যমে ব্যবসায়ের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় কাজ সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া উৎপাদনকারী ও ভোগকারীর মধ্যে স্থানগত দূরত্ব দূর হচ্ছে। ভোক্তারা সহজেই প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারছে। এসব কাজের মাধ্যমে বিক্রেতারা মুনাফা অর্জন করছে। এতে ব্যবসায়ের পরিধিও বাড়তে থাকে। সুতরাং বলা যায়, জনাব ইব্রাহিমের উক্ত পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি ব্যবসায়ের গতিকে ত্বরান্বিত করে।

 প্রশ্নঃ২২ কবির দীর্ঘদিন একটি চালের আড়তে কাজ করছিল। পরবর্তীতে সঞ্চয়কৃত অর্থ দিয়ে সে নিজেই চালের ব্যবসায় শুরু করল। কাজে সহায়তা করার জন্য ছোট ভাই কাজলকে সঙ্গে নেয়। সে দিনাজপুরের উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সরাসরি অত্যন্ত মানসম্পন্ন চাল ক্রয় করে নিয়ে এসে প্যাকেট করে বগুড়ায় বড় বাজারে বিক্রি করে। ফলে বাজারে দ্রুত চাহিদা বাড়তে থাকে এবং বেশিকিছু সংখ্যক গ্রাহক আগে থেকেই ফরমায়েশ দিয়ে থাকে। কবির এ পর্যায়ে হোম ডেলিভারি দেওয়ার পরিকল্পনা করে। [বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  ব্যবসায় কার্য সম্পাদনে ঝুঁকিগত বাধা কীভাবে দূর করা যায়?   ২

 গ.  কবির ব্যবসায়ের আওতায় কোন পর্যায়ে অবস্থান করছে? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্তটি কবিরের জন্য সঠিক ছিল কি? যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো।    ৪

২২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

খ ব্যবসায়ের কার্য সম্পাদনে ঝুঁকিগত বাধা পণ্যের বিমা করার মাধ্যমে দূর করা যায়।

ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ঝুঁকিগুলো হলো চাহিদা হ্রাস, পণ্য পচন, মূল্যহ্রাস, দুর্ঘটনা প্রভৃতি। এসব ঝুঁকির কারণে ব্যবসায়ে প্রচুর ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য ঝুঁকির বিপরীতে বিমা করা যায়। বিমাচুক্তি অনুযায়ী বিমাগ্রহীতার সম্পদের কোনো ক্ষতি হলে বিমাকারী ক্ষতিপূরণ দেয়। এভাবে বিমা ব্যবসায়ের ঝুঁকিগত বাধা দূর করে।

সহায়ক তথ্য    

বিমা হলো বিমাগ্রহীতা ও বিমাকারীর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি; যেখানে বিমাকারী বিমাগ্রহীতার সম্পদের ঝুঁকি গ্রহণের বিনিময়ে প্রিমিয়াম নিয়ে থাকে।

গ উদ্দীপকের কবির ব্যবসায়ের আওতায় বাণিজ্যে অবস্থান করছে।

বাণিজ্য ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা হিসেবে বিবেচিত। শিল্পে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর কাজটি বাণিজ্যের মাধ্যমে করা হয়। এ কাজে বিভিন্ন বাধা সৃষ্টি হয়। যেমন: স্বত্বগত, স্থানগত, সময়গত বাধা প্রভৃতি। এসব বাধা ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে দূর করা যায়।

উদ্দীপকে কবির একজন চালের ব্যবসায়ী। সে দিনাজপুরের উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সরাসরি মানসম্পন্ন চাল ক্রয় করে। এরপর তা বগুড়ার বড় বাজারে বিক্রি করে। এক্ষেত্রে সে প্রথমে চাল ক্রয়ের মাধ্যমে স্বত্বগত বাধা দূর করেছে। এরপর তা পরিবহনের মাধ্যমে দিনাজপুর থেকে বগুড়ায় নিয়ে বিক্রি করে। এতে পণ্যের স্থানগত বাধা দূর হচ্ছে। এভাবে সে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্য পৌঁছানোর কাজ করছে। এ কাজ বাণিজ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, কবির বাণিজ্যের কাজের সাথেই সম্পৃক্ত।

ঘ উদ্দীপকের কবিরের চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল বলে আমি মনে করি।

ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনার পেছনে ব্যবসায়ীর মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশা বা উদ্দেশ্য থাকে। কম দামে পণ্য কিনে বা উৎপাদন করে বেশি দামে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করা হয়। চাকরির ক্ষেত্রে এ ধরনের সুযোগ নেই। তাই মানুষ চাকরি না করে ব্যবসায় করতে বেশি আগ্রহী হয়।

উদ্দীপকে কবির দীর্ঘদিন একটি চালের আড়তে চাকরি করছিল। পরবর্তীতে সঞ্চয়কৃত অর্থ দিয়ে সে নিজেই চালের ব্যবসায় শুরু করে। কাজে সহায়তার জন্য সে তার ছোট ভাইকে সাথে নেয়।

কবির যখন চাকরি করছিল তখন তার বেতন বা আয় সীমিত ছিল। সেখানে অতিরিক্ত শ্রম বা কৌশল প্রয়োগ করেও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন সম্ভব ছিল না। কারণ চাকরির ক্ষেত্রে বেতন নির্দিষ্ট থাকে। কিন্তু সে পরে নিজের চালের ব্যবসায় চালু করে। সেখানে সে খুব ভালো মানের চাল সরবরাহ করে দ্রুত সুনাম অর্জন করে। এতে বাজারে চাহিদা দ্রুত বেড়ে যায়। সে গ্রাহকদের থেকে অগ্রিম অর্ডার পেতে শুরু করে। এতে তার মুনাফা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। যা তার চাকরির সীমিত আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তাই বলা যায়, চাকরি ছেড়ে কবিরের ব্যবসায় করার সিদ্ধান্তটি যুক্তিযুক্ত ছিল।

 প্রশ্নঃ২৩ তমাল বিভিন্ন গার্মেন্টস শিল্পে সুতা সরবরাহের কাজ করেন। এজন্য দেশের বিখ্যাত কয়েকটি সুতা তৈরির কারখানায় তার বেশ সুনাম আছে। তমাল লক্ষ্য করলেন যে, অধিক পরিমাণে সুতা ক্রয় করলে মূল্য কিছুটা কম পড়ে। তাই তিনি কিছু জমাকৃত অর্থ বিনিয়োগ করে একটি গুদাম ভাড়া করেন এবং অধিক পরিমাণে সুতা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করেন। [কুমিল্লা কমার্স কলেজ]

 ক.  প্রক্রিয়াজাত শিল্প কী?  ১

 খ.  ‘ইঁংরহবংং’-এর সমীকরণটি ব্যাখ্যা করো।      ২

 গ.  তমালের সাম্প্রতিক কার্যক্রমটি কোন ধরনের ট্রেডের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.  “ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে তমালের সাফল্য সুনিশ্চিত” তুমি কি এর সাথে একমত? যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো।   ৪

২৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে শিল্পের কাঁচামাল বিভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিণত পণ্যে রূপান্তরিত হয় তাকে প্রক্রিয়াজাত শিল্প বলে। যেমন: তুলা থেকে কাপড় তৈরি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের অন্তর্গত।

খ ইঁংরহবংং বা ব্যবসায় হলো মুনাফা অর্জনের জন্য বৈধভাবে পরিচালিত সব অর্থনৈতিক কাজের (উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) সমষ্টি। অ

ইঁংরহবংং এর সমীকরণটি হলো ই = ও +  ঞ +  অঞ.

এখানে, ই = ইঁংরহবংং (ব্যবসায়)

ও = ওহফঁংঃৎু (শিল্পের কাজের সমষ্টি)

 ঞ = ঞৎধফব (পণ্য বিনিময় সংক্রান্ত কাজের সমষ্টি)

 অঞ = অীঁরষরধৎরবং ঃড় ঞৎধফব (পণ্য বিনিময় সহায়ক অন্যান্য কাজের সমষ্টি)

গ উদ্দীপকে তমালের সাম্প্রতিক কার্যক্রমটি অভ্যন্তরীণ ট্রেডের অধীনে পাইকারি ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত।

অভ্যন্তরীণ ট্রেডের কাজ হলো নিজ দেশের ভেতরে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা। পাইকারি ব্যবসায় এই ট্রেডেরই অন্তর্গত। এ ব্যবসায়ে পাইকার উৎপাদকের থেকে পণ্য সংগ্রহ করে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করে। অর্থাৎ এদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের কাজ করেন। এ ধরনের ব্যবসায়ীরা মূলত শহরের মূল কেন্দ্রে ব্যবসায় স্থাপন করেন।

উদ্দীপকের তমাল বিভিন্ন গার্মেন্টস শিল্পে সুতা সরবরাহের কাজ করেন। তিনি উৎপাদকের কাছ থেকে প্রথমে অধিক পরিমাণে সুতা ক্রয় করে সংরক্ষণ করেন। এরপর তা শিল্পে বা খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করেন। এক্ষেত্রে তিনি উৎপাদনকারী ও শিল্পমালিকদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। আর তার ব্যবসায়ের কাজগুলো দেশের ভিতরেই সংঘটিত হয়েছে। এটি অভ্যন্তরীণ ট্রেডের পাইকারি ব্যবসায়ের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, তমালের কাজটি অভ্যন্তরীণ ট্রেডের পাইকারি ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

ঘ ‘ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে তমালের সাফল্য সুনিশ্চিত’ আমি এ বক্তব্যের সাথে একমত।

উৎপাদন ও ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে পণ্য নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষার জন্য গুদামজাত করা হয়। এতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পণ্যের গুণগত মান রক্ষা হয়। এর ফলে পণ্যের সময়গত উপযোগ সৃষ্টি হয়।

উদ্দীপকের তমাল পাইকারি ব্যবসায়ের কাজ করেন। তিনি গার্মেন্টস শিল্পে সুতা সরবরাহ করেন। এক্ষেত্রে তার যথেষ্ট সুনাম আছে। তিনি লক্ষ করলেন অধিক পরিমাণে সুতা ক্রয় করলে খরচ কম হয়। তাই তিনি এর সংরক্ষণের জন্য একটি গুদাম ভাড়া করেন। এর মাধ্যমে তিনি ক্রয়কৃত সুতা গুদামজাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

এ ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি কমদামে এক সাথে অধিক পরিমাণে সুতা কিনে এখানে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এরপর সারা বছর ধরে তা সরবরাহ করতে পারবেন। এতে তার খরচ কম হবে ও মুনাফা বেশি হবে। এছাড়া শিল্পের মন্দার সময়ও সুতা সরবরাহ করতে পারবেন। এতে তার ব্যবসায়িক সুনাম বজায় থাকবে। এভাবে তিনি নিশ্চিতভাবে ব্যবসায়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ২৪ কুবের মাঝি জেলেদের নিয়ে পদ্মা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরে চাঁদপুর বাজারে বিক্রি করে। বাজারে মাছের প্রচুর চাহিদা থাকায় সে মাছ ধরার জাল ও আরেকটি নৌকা ক্রয়ের জন্য ঋণ গ্রহণের কথা ভাবছেন। [লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  বাণিজ্য বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  কুবের মাঝির ব্যবসায়টি কোন শিল্পের অন্তর্গত? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  কুবের মাঝি কোন উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে বলে তুমি মনে করো?      ৪

২৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

খ শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারীর কাছে পৌঁছানোর কাজকে বাণিজ্য বলে।

বাণিজ্য মূলত ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনের কাজ করে। এ বণ্টন কাজ করতে নানারকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন: স্বত্বগত, স্থানগত, সময়গত বাধা প্রভৃতি। এসব বাধা ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ প্রভৃতি কাজের মাধ্যমে দূর করা হয়। এসব কাজের সমষ্টিই বাণিজ্য।

গ উদ্দীপকে কুবের মাঝির ব্যবসায়টি নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত।

এ শিল্পের মাধ্যমে প্রাকৃতিক উৎস (ভূগর্ভ, পানি বা বায়ু) থেকে সম্পদ আহরণ করা হয়। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরের জিনিস তাদের ব্যবহারের আওতায় আনা হয়। এ শিল্প প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করে এদের উপযোগিতা বাড়ায়। খনি থেকে কয়লা, নদী থেকে মাছ আহরণ প্রভৃতি এ শিল্পের উদাহরণ।

উদ্দীপকের কুবের মাঝি জেলেদের নিয়ে পদ্মা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরে। এরপর তা চাঁদপুর বাজারে বিক্রি করে। এক্ষেত্রে সে প্রাকৃতিক উৎস থেকে সম্পদ আহরণ করছে। আর তা বিক্রয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে খাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এসব বৈশিষ্ট্য নিষ্কাশন শিল্পের কাজের সাথে সংগতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, কুবের মাঝির ব্যবসায়টি নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকের কুবের মাঝি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে বলে আমি মনে করি।

 যেকোনো ব্যবসায় পরিচালনা করতে অর্থের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে ব্যবসায় সম্প্রসারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থের যোগান দিয়ে ব্যবসায়ের মূলধন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করে থাকে।

উদ্দীপকের কুবের মাঝি পদ্মা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরে চাঁদপুর বাজারে বিক্রি করে। বাজারে ইলিশ মাছের প্রচুর চাহিদা আছে। তাই সে মাছ ধরার জাল ও আরেকটি নৌকা কেনার কথা ভাবছে।

জাল ও নৌকা ক্রয়ের জন্য অর্থের প্রয়োজন। এ অতিরিক্ত অর্থ সে ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নিতে পারে। তার অর্থ সংক্রান্ত বাধাটি এর মাধ্যমে দূর করা যাবে। ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে জাল ও নৌকা কিনে বেশি পরিমাণে মাছ ধরা সম্ভব হবে। ফলে বাজারে মাছের অধিক চাহিদাও পূরণ করা যাবে। সুতরাং বলা যায়, কুবের মাঝি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে আর্থিক সমস্যা দূর করতে পারে।

 প্রশ্নঃ২৫ কমল দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে পাইকারি ব্যবসায় করছেন। সাপ্তাহিক ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার পাঁচজন বন্ধু নিয়ে একজন দরিদ্র কৃষককে তাদের মূলধন দিয়ে একটি মুদি দোকান স্থাপন করে দেন। এতে কৃষকের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ে। কিছুদিন পর কৃষক কমল ও তার বন্ধুদের মূলধন ফেরত দেন। [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]

 ক.  সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায় কী?   ১

 খ.  নাবালক কী অংশীদার হতে পারে?      ২

 গ.  উদ্দীপকে কমল গ্রামে যে কাজটি করেছে তা কী ধরনের? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  কমল ও তার পাঁচজন বন্ধুর এ ধরনের কার্যক্রম অর্থনৈতিক উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখতে পারে? তোমার মতামত দাও।   ৪

২৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোনো অংশীদারি ব্যবসায়ে এক বা একাধিক সদস্যের দায় সীমিত থাকলে তাকে সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

খ নাবালক অংশীদার হতে পারে না।

অংশীদারি আইনে ৩০ (১) ধারা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তি অংশীদার হতে পারবে না। কিন্তু সকল অংশীদার সম্মত হলে কিছু সময়ের জন্য নাবালককে অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে নাবালকের দায় তার মূলধন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে।

গ উদ্দীপকের কমল গ্রামে যে কাজটি করেছেন তা সামাজিক ব্যবসায়ের অন্তর্গত।

মূলত সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূর করার জন্য সামাজিক ব্যবসায়ের কাজ করা হয়। এক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তিবর্গ মূলধন বিনিয়োগ করেন তারা এর থেকে লভাংশ প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন না। এর কাজ হয় বাণিজ্যিক কিন্তু উদ্দেশ্য হবে সামাজিক।

উদ্দীপকে কমল দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে পাইকারি ব্যবসায় করছেন। তিনি তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে একজন দরিদ্র কৃষককে তাদের মূলধন দিয়ে একটি মুদি দোকান স্থাপন করে দেন। কৃষকের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়লে তাদের মূলধন ফেরত দেন। এখানে তারা মূলধন বিনিয়োগ করেন সামাজিক উদ্দেশ্যে। কৃষকের দরিদ্রতা দূর করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। এখান থেকে তারা মুনাফা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন না। এসব বৈশিষ্ট্য সামাজিক ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, কমল গ্রামে সামাজিক ব্যবসায়ের কাজ করেছেন।

ঘ উদ্দীপকের কমল ও তার পাঁচ বন্ধুর সামাজিক ব্যবসায়ের কাজ অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।

সামাজিক ব্যবসায়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়ন করা হয়। এখানে উদ্যোক্তারা মূলধন বিনিয়োগ করেন। কিন্তু মুনাফা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন না। বিনিযোগকারীরা শুধু মূলধন ফেরত নিয়ে থাকেন। আর মুনাফার অংশ উক্ত বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানের প্রসার ও উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

উদ্দীপকে কমল তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের একজন দরিদ্র কৃষককে তাদের মূলধন দিয়ে একটি দোকান দিয়ে দেন। কিছুদিন পর কৃষকের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়লে তাদের মূলধন ফেরত দেন। কিন্তু এর মুনাফা তারা গ্রহণ করেন না। অর্থাৎ এটি সামাজিক ব্যবসায়কে নির্দেশ করছে, যা মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করে।

এ ধরনের ব্যবসায়ের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিজেদের আর্থিক উন্নয়নের সুযোগ পায়। অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে মাথাপিছু আয় বাড়ে। দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হয়। এছাড়া উদ্যোক্তারা বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত নিলেও মুনাফার অংশ নেয় না। এ অর্থের মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা যায়। এতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাজের প্রসার হয়। এভাবে সামাজিক ব্যবসায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

প্রশ্নঃ২৬ দেশ বাংলা বাংলাদেশের একটি অতিপরিচিত শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ত্রিমাত্রিক ভূ-কম্পন জরিপ চালিয়ে কিশোরগঞ্জে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করল। ভূগর্ভ থেকে গ্যাস আহরণ করে প্রতিষ্ঠানটি আরশী গ্যাস কোম্পানিকে সরবরাহ করে। আরশী গ্যাস কোম্পানি সংগৃহীত গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে শিল্প ও গৃহস্থলী কাজে সরবরাহ করে। [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]

 ক.  পরিমেল নিয়মাবলি কী?     ১

 খ.  সামাজিক ব্যবসায় কাকে বলে?    ২

 গ.  দেশ বাংলাকে কোন ধরনের শিল্প বলা হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  আরশী কোম্পানির কার্যক্রম ব্যবসায়ের কোন শাখার অন্তর্গত? যুক্তিসহ মতামত দাও।      ৪

২৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানির অভ্যন্তরীণ পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম-নীতির দলিলকেই পরিমেল নিয়মাবলি বলে।

খ যে ব্যবসায়ে উদ্যোক্তারা মূলধন বিনিয়োগ করেন, কিন্তু মুনাফা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন না তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

এ ব্যবসায়ের মাধ্যমে মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা হয়। এখানে বিনিয়োগকারীরা শুধু তাদের বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত নেন। আর এর মুনাফার অংশ বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানের প্রসার ও উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। এভাবে এ ব্যবসায় অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অবদান রাখে।

গ উদ্দীপকের দেশ বাংলাকে নিষ্কাশন শিল্প বলা হয়।

নিষ্কাশন শিল্পের মাধ্যমে প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ আহরণ বা সংগ্রহ করা হয়। এ শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের কিছু কিছু সরাসরি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এর অধিকাংশই পরবর্তী উৎপাদনের কাজে ব্যবহার হয়। ভূগর্ভ থেকে খনিজ সম্পদ সংগ্রহ, প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ প্রভৃতি এ শিল্পের উদাহরণ।

উদ্দীপকের দেশ বাংলা একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এটি ত্রিমাত্রিক ভূ-কম্পন জরিপ চালিয়ে কিশোরগঞ্জে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। ভূগর্ভ থেকে গ্যাস আহরণ করে তা আরশী গ্যাস কোম্পানিকে সরবরাহ করে। এখানে গ্যাস কোম্পানিটি প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ আহরণ করে তা আবার পরবর্তী উৎপাদনের জন্য অন্য একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করে। এসব কাজ নিষ্কাশন শিল্পের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, দেশ বাংলা প্রতিষ্ঠানটি নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে আরশী গ্যাস কোম্পানির কার্যক্রম ব্যবসায়ের শিল্প শাখার ‘সেবা পরিবেশক শিল্প’-এর অন্তর্গত।

এ শিল্প মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ ও আরামদায়ক করার কাজে নিয়োজিত থাকে। বিভিন্ন প্রকার সেবাকর্ম নিয়ে এ শিল্প কাজ করে। যেমন: গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্য সেবা প্রভৃতি এর অন্তর্গত।

উদ্দীপকের দেশ বাংলা শিল্প ভূগর্ভ থেকে গ্যাস আহরণ করে তা আরশী গ্যাস কোম্পানিকে সরাবরাহ করে। আরশী গ্যাস কোম্পানি এ গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে শিল্প ও গৃহস্থালী কাজে সরবরাহ করে।

আরশী গ্যাস কোম্পানির সরবরাহকৃত গ্যাস গৃহস্থলীর দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজন হয়। ফলে সাধারণ মানষের জীবনযাত্রা এক্ষেত্রে সহজ হচ্ছে। আবার, এটি উৎপাদনমূলক কাজেও বিভিন্ন কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে তারা সহজে উৎপাদন কাজ করতে পারছে। সুতরাং আরশী গ্যাস কোম্পানি এ ধরনের সেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থাকা, একে সেবা শিল্পের অন্তর্গত বলা যায়।

 প্রশ্নঃ২৭ জনাব আরিফের পরিচালনাধীন ‘ইচ্ছা’ নামক প্রতিষ্ঠানটি বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১০০ প্রজাতির চারা উৎপাদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা অর্জনকে গুরুত্ব না দিয়ে সর্বসাধারণের কল্যাণের বিষয়টি মাথায় রেখে উৎপাদিত চারার দাম নির্ধারণ করে। ২০১৬ সালে অর্জিত মুনাফা মালিকদের না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণে অতিরিক্ত বীজ ও জমি ক্রয় করে।

     [কক্সবাজার সরকারি কলেজ]

 ক.  প্রত্যক্ষ সেবা কী? ১

 খ.  পুনঃরপ্তানি বাণিজ্য কীভাবে সম্পাদিত হয়? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।      ২

 গ.  উদ্দীপকে “ইচ্ছা”-এর কর্মকাণ্ড কোন শিল্পের অন্তর্গত? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে বর্ণিত “ইচ্ছা” নামক প্রতিষ্ঠানটিকে কি সামাজিক ব্যবসায় বলা যায়? যুক্তি দাও।      ৪

২৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়াকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে।

সহায়ক তথ্য    

যেমন: ডাক্তারি, ওকালতি প্রভৃতি প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্গত।

খ বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তা আবার অন্য দেশে রপ্তানি করাকে পুনঃরপ্তানি বাণিজ্য বলে।

পুনঃরপ্তানির ক্ষেত্রে প্রথমে পণ্য এক দেশ থেকে আমদানি করে নিজ দেশে আনা হয়। এরপর তা প্রক্রিয়াজাত করে অন্য দেশে পুনরায় রপ্তানি করা হয়। এ ধরনের বাণিজ্যের কার্যক্রম তিনটি দেশের মধ্যে সংঘটিত হয়। যেমন: ভারত থেকে চা আমদানি করে প্যাকিং করে তা মিয়ানমারে রপ্তানি করা হলো।

গ উদ্দীপকে ‘ইচ্ছা’-এর কর্মকাণ্ড প্রজনন শিল্পের অন্তর্গত। 

এ শিল্পে উদ্ভিদ ও প্রাণির বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদন কাজ পরিচালিত হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে গাছপালা ও প্রাণির বংশবৃদ্ধি করা এ শিল্পের প্রধান কাজ। যেমন : নার্সারি, পোলট্রি ফার্ম, হ্যাচারি প্রভৃতি এ শিল্পের অন্তর্গত।

উদ্দীপকে জনাব আরিফ ‘ইচ্ছা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এখনে বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১০০ প্রজাতির চারাগছ উৎপাদন করা হয়। এগুলোকে প্রাকৃতিক উপায়ে পরিচর্যা করে বড় গাছে পরিণত করা যায়। বড় গাছ থেকে আবার বীজ ও চারা উৎপন্ন করা যায়। এভাবে এটি পরবর্তী উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এসব বৈশিষ্ট্য প্রজনন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ‘ইচ্ছা’-এর কর্মকাণ্ড প্রজনন শিল্পের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত ‘ইচ্ছা’ নামক প্রতিষ্ঠানটিকে-এর উদ্দেশ্যের আলোকে সামাজিক ব্যবসায় বলা যায়।

এ ব্যবসায় দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক কল্যাণের জন্য গঠিত হয়, মুনাফা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে নয়। এ ব্যবসায়ে বিনিয়োগকারীরা শুধু তাদের মূলধন ফেরত নেয়। আর মুনাফার অর্থ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজে ব্যয় করা হয়। এটি পুনঃবিনিয়োগ হিসেবে কাজ করে।

উদ্দীপকে জনাব আরিফ ‘ইচ্ছা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এখানে মুনাফা অর্জনের বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। জনসাধারণের কল্যাণের জন্য এতে উৎপাদিত চারার দাম নির্ধারণ করা হয়।

উক্ত প্রতিষ্ঠানে চারাগাছ কমমূল্যে বিক্রয় করা হয়। এতে জনগণের উপকার হয়। এছাড়াও ২০১৬ সালে অর্জিত মুনাফা মালিকদের না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণে অতিরিক্ত বীজ ও জমি ক্রয় করা হয়। এসব কাজ সামাজিক ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য। এ কারণে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিকে সামাজিক ব্যবসায় বলা যায়।

 প্রশ্নঃ২৮ ‘ক’ এবং ‘খ’ একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়ালেখা শেষ করেন। উভয়ই আলাদাভাবে দুটি ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়েন। ‘ক’ দেশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে দেশীয় মোরগ ক্রয় করে সেগুলো উন্নত প্যাকেটজাত করে বিক্রয়ের একটি পয়েন্ট স্থাপন করেন। গ্রাহকদের কাছে চাহিদা ব্যাপক। অন্যদিকে ‘খ’ সরকারের যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে বিদেশ থেকে মাছ ক্রয় করে বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই ‘খ’ লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতায় পড়লো।      [জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]

 ক.  বিশেষায়ণ কী?   ১

 খ.  ব্যবসায় কীভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করে? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.  ‘ক’ কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  ‘খ’-এর কর্মকাণ্ড ব্যবসায় নয় কেন? বিশ্লেষণ করো।      ৪

২৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক বিশেষ কাজে কর্মীর দক্ষতা বা বিশেষ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য কাজ বিভাজন করাকে বিশেষায়ন বলে।

খ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত বৈধ ও অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

ব্যবসায়ের মাধ্যমে মানুষ নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করে। এরপর এগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে স্বাবলম্বী হয়। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ী নিজের পাশাপাশি অন্যেরও কাজের সুযোগ করে দেয়। এতে বেকার সমস্যা কমে। এভাবে ব্যবসায় মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে পারে।

গ উদ্দীপকে ‘ক’ রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করেছেন।

প্রাকৃতিক সম্পদের রূপ বা অবস্থা পরিবর্তন করে এর রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়। পণ্য প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে এ কাজ করা হয়। রূপগত পরিবর্তনের মাধ্যমে তা মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে প্রস্তুত হয়। যেমন: তুলা থেকে সুতা ও সুতা থেকে কাপড় তৈরি-এর অন্তর্গত।

উদ্দীপকের ‘ক’ দেশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে দেশি মোরগ ক্রয় করে। এরপর সেগুলো উন্নত প্যাকেটজাত করে বিক্রয় করে। গ্রাহকদের কাছে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। এখানে ‘ক’ মোরগগুলো সরাসরি সংগ্রহ করে এগুলোর রূপ পরিবর্তন করে। আর, প্যাকেটজাত করার মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে প্রস্তুত করেন। এসব কাজ রূপগত উপযোগ সৃষ্টির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ‘ক’ রূপগত উপযোগ সৃষ্টির কাজই করেছেন।

ঘ উদ্দীপকে ‘খ’ এর কর্মকাণ্ড আইনগত বৈধতার অভাবে ব্যবসায় নয় বলে আমি মনে করি।

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধ অর্থনৈতিক কাজ ব্যবসায় হিসেবে গণ্য হয়। কোনো অবৈধ কাজে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য থাকলেও তাকে ব্যবসায় বলা যাবে না। যেমন : চোরাই পথে পণ্য এনে বিক্রয় করলে তা ব্যবসায় নয়। এটি শুধু অবৈধ কাজ হিসেবেই বিবেচিত হবে।

উদ্দীপকে ‘খ’ সরকারের যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে বিদেশ থেকে মাছ ক্রয় করে। এসব মাছ বিভিন্ন বিক্রয় কেন্দ্রে প্রেরণ করে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই সে লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে।

যেকোনো ব্যবসায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বৈধ হতে হয়। এজন্য ব্যবসায়ীকে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে এর কাজ পরিচালনা করতে হয়। লাইসেন্স ছাড়া বৈআইনিভাবে পণ্যদ্রব্য ও সেবা ক্রয়-বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করলে তাকে ব্যবসায় বলা যাবে না। উদ্দীপকে ‘খ’ সরকারকে না জানিয়ে দেশে মাছ আমদানি করে বলে এটি অবৈধ কাজ হিসেবে গণ্য করা হবে। তাই এ কাজে মুনাফা অর্জন হলেও এটি ব্যবসায় হিসেবে বিবেচিত হবে না।

 প্রশ্নঃ২৯ শারমিন আক্তার একজন বুটিক উৎপাদনকারী। তিনি তার কারখানায় বিভিন্ন ফ্যাশনের পোশাক তৈরি ও বিক্রয় করেন। তিনি তার ব্যবসায়ের প্রয়োজনে একটা আলমারি ক্রয় করেন ও স্থান সংকুলান না হওয়ায় ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হন।

     [পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.  পণ্য বিনিময় কাকে বলে?    ১

 খ.  শিল্প হলো ‘কেন্দ্রীভূত কাজ’ ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.  শারমিন আক্তারের আলমারি ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে ব্যবসায়ের কোন বৈশিষ্ট্যটি অনুপস্থিত? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে উল্লিখিত শারমিন আক্তারের লেনদেনটি ব্যবসায় কি না তা মূল্যায়ন করো।     ৪

২৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের জন্য পণ্য ও সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের কাজকে পণ্য বিনিময় বলে।

খ প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদকে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য প্রস্তুতের কাজকে শিল্প বলে।

কাঁচামালকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজন হয় শ্রমিক, যন্ত্রপতি ও আনুষঙ্গিক উপকরণ। এসব উপকরণের মাধ্যমে কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহারযোগ্য পণ্যে রূপান্তর করা হয়। এসব কাজ সাধারণত কারখানায় করা হয়, যা নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থাকে। তাই শিল্পকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয়।

গ উদ্দীপকে শারমিন আক্তারের আলমারি ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে ব্যবসায়ের ‘লেনদেনের পৌনঃপুনিকতা’ বৈশিষ্ট্যটি অনুপস্থিত।

ব্যবসায়ে পণ্যদ্রব্য বারবার ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বার বার লেনদেন সংঘটিত হয়। ব্যবসায়ের লেনদেনের পৌনঃপুনিকতা বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত। উদাহরণস্বরূপ- একজন আসবাবপত্র বিক্রেতা নিয়মিত ফরমায়েশমাফিক আসবাবপত্র তৈরি ও বিক্রয় করে। ফলে তার কাজটি ব্যবসায় হিসেবে গণ্য হয়।

উদ্দীপকের শারমিন আক্তার একজন বুটিক উৎপাদনকারী। তিনি তার কারখানায় বিভিন্ন ফ্যাশনের পোশাক তৈরি ও বিক্রয় করেন। তিনি তার ব্যবসায়ের প্রয়োজনে একটি আলমারি ক্রয় করেন। স্থান সংকুলান না হওয়ায় এটি বিক্রি করে দেন। এখানে তিনি আলমারিটি ব্যবসায়ে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কিনেছিলেন। তার ব্যবসায়ের মূল কাঁচামাল বা পণ্য হচ্ছে পোশাক, আলমারি নয়। তিনি আলমারিটি একবার ক্রয় ও একবারই বিক্রয় করেছেন। লেনদেন একবারই সংঘটিত হয়েছে। তাই বলা যায়, আলমারি ক্রয়-বিক্রয়ে লেনদেনের পৌনঃপুনিকতা বিষয়টি অনুপস্থিত রয়েছে।

ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত শারমিন আক্তারের লেনদেনটিতে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য ও লেনদেনের পৌনঃপুনিকতা নেই বলে এটি ব্যবসায় নয়।

 কোনো কাজকে ব্যবসায় হতে হলে সেখানে মুনাফা অর্জনের বৈধ উদ্দেশ্য থাকতে হবে। এ মুনাফা অর্জন অবশ্যই ক্রয়-বিক্রয়ের পৌনঃপুনিকতার মাধ্যমে হতে হবে। অর্থাৎ, ব্যবসায়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পণ্যদ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয়ের ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। যেমন: পুরাতন আসবাবপত্র কারও কাছে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করলেও তা ব্যবসায় বলে গণ্য হবে না।

উদ্দীপকে শারমিন আক্তার একজন বুটিক উৎপাদনকারী। তিনি তার কারখানায় বিভিন্ন ফ্যাশনের পোশাক তৈরি ও বিক্রয় করেন। তিনি তার ব্যবসায়ের প্রয়োজনে একটি আলমারি ক্রয় করেন। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হন।

শারমিন আক্তারের ব্যবসায়ের মূল পণ্য হলো পোশাক। তিনি এটি তৈরি ও বিক্রয়ের মাধ্যমেই মুনাফা অর্জন করেন। তিনি আলমারিটি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বিক্রয় করেননি। শুধু জায়গা না থাকায় বিক্রয় করেছিলেন। আবার তিনি পোশাক তৈরি ও বিক্রয়ের কাজটি পৌনঃপুনিক বা ধারাবাহিকভাবে করেন। কিন্তু আলমারিটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে একবার ক্রয় করেন এবং একবারই বিক্রয় করেন। তাই, মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য ও লেনদেনের পৌনঃপুনিকতার অভাবে শারমিন আক্তারের কাজকে ব্যবসায় বলা যায় না।

 প্রশ্নঃ৩০ জনাব এম এ জব্বার একজন অধ্যাপক। তিনি শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের পাঠদানকালে বাংলাদেশের শিল্প খাতের বর্ণনা দেন। এক্ষেত্রে তিনি শিল্পের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ সব সমস্যা দূরীকরণে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।     [পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.  শিল্প কী?   ১

 খ.  নির্মাণ শিল্প বলতে কী বোঝায়?    ২

 গ.  জনাব এম এ জব্বারের ধারণা অনুসারে বাংলাদেশের শিল্প যে সব সমস্যায় জর্জরিত সেগুলো চিহ্নিত করো।   ৩

 ঘ.  বাণিজ্যে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা কীভাবে নিরসন করা সম্ভব বলে তুমি মনে করো? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।   ৪

৩০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে প্রস্তুত করাকে শিল্প বলে।

খ অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা কোনো স্থাপনা তৈরির কাজে নিয়োজিত শিল্পকে নির্মাণ শিল্প বলে।

এ শিল্পে উৎপাদিত বা তৈরিকৃত পণ্য সাধারণত স্থায়ী প্রকৃতির ও অস্থানান্তরযোগ্য হয়ে থাকে। এতে ফরমায়েশের ভিত্তিতে কাজ করা হয়। যেমন- দালানকোঠা, সেতু নির্মাণ, বাঁধ নির্মাণ, রাস্তাঘাট উন্নয়ন প্রভৃতি এ শিল্পের অন্তর্গত।

গ উদ্দীপকে জনাব এম এ জব্বারের ধারণা অনুসারে বাংলাদেশের শিল্প নানা ধরনের সমস্যায় (আধুনিক প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততা, অবকাঠামোগত সমস্যা, অনুকূল শিল্পনীতির অভাব প্রভৃতি) জর্জরিত।

বাংলাদেশ শিল্পক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে জনসংখ্যার বাড়তি চাপ মোকাবিলায় কৃষি খাত অসমর্থ হয়ে পড়ছে বলে শিল্প খাতে উৎপাদন বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু শিল্প খাতগুলো কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থার অভাবে এর উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

উদ্দীপকে জনাব এম এ জব্বার ছাত্রদের কাছে বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তার ধারণা অনুসারে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য সমস্যায় জর্জরিত। শিল্প কারখানাগুলোয় আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়ছে না। এখানে গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানির অপর্যাপ্ততাও আছে। এছাড়া অকাঠামোগত সমস্যার কারণে সুষম শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব সমস্যাই বাংলাদেশের শিল্পগুলোতে বিদ্যমান আছে।

ঘ বাণিজ্যে বিদ্যমান বাধা কর্তৃপক্ষের দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশের বাণিজ্য অগ্রসরমাণ হলেও তা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। শিল্প খাতের দুর্বল অবস্থা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে বৈদেশিক বাণিজ্যের হার কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বাণিজ্য নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে মূলধনের সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত সমস্যা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, প্রতিকূল বাণিজ্য নীতি প্রভৃতি সমস্যা অন্যতম।

এসব সমস্যা দূর ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। যাতে তারা বাণিজ্যে বিনিয়োগে উৎসাহী হয়। বিশেষ করে গার্মেন্টস, ওষুধ ও জাহাজ নির্মাণ ইত্যাদি শিল্পের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা নিয়ে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ বাড়ানো যাবে। এছাড়া বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি আরও বাড়ানো গেলে দেশের সার্বিক বাণিজ্য চিত্রেই পরিবর্তন আসবে। এভাবে বাংলাদেশের বাণিজ্যে বিদ্যমান বাধা নিরসন করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

প্রশ্নঃ৩১ জহির সুন্দরবন থেকে বেত সংগ্রহ করে তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সোফা, মোড়া ইত্যাদি নানা রকমের জিনিসপত্র তৈরি করে। তারপর জনাব কামালের দোকানে সরবরাহ করে। স্থানীয় ব্যবসায়ী জনাব কামাল সেগুলো ঢাকা শহরের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করেন। দেখতে সুন্দর, টেকসই অথচ দামে সস্তা এসব পণ্য সম্পর্কে ক্রেতা সাধারণের তেমন একটা ধারণা নেই। ফলে এসব পণ্যের বিক্রির পরিমাণ খুবই কম।    [বি এ এফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও, ঢাকা]

 ক.  প্রত্যক্ষ সেবা কী? ১

 খ.  বাণিজ্য বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  জহিরের বেত সংগ্রহের কাজটি কোন ধরনের শিল্পের অন্তর্গত ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  জহিরের উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় বাড়ানোর জন্য বাণিজ্যের কোন কাজটি অতি জরুরি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।     ৪

৩১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেয়াকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে। যেমন: ডাক্তারি, ওকালতি।

খ শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারীর কাছে পৌঁছানোর কাজকে বাণিজ্য বলা হয়।

বাণিজ্য মূলত ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনের কাজ করে। এ বণ্টন কাজ করতে নানা রকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন: স্বত্বগত, স্থানগত, সময়গত বাধা প্রভৃতি। এসব বাধা ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ প্রভৃতি কাজের মাধ্যমে দূর করা যায়।

গ উদ্দীপকের জহিরের বেত সংগ্রহের কাজটি নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত।

এ শিল্পের মাধ্যমে প্রকৃতি থেকে সম্পদ সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ ভূগর্ভ, পানি বা বায়ু থেকে সম্পদ আহরণ করা হয়। এরূপ শিল্পের উৎপাদিত পণ্য কিছু কিছু সরাসরি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ অংশই পরবর্তী উৎপাদন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন: বন থেকে কাঠ বা যেকোনো বনজ সম্পদ আহরণ, খনি থেকে কয়লা উত্তোলন প্রভৃতি এ শিল্পের অন্তর্গত।

উদ্দীপকের জহির সুন্দরবন থেকে বেত সংগ্রহ করে। এরপর তা দিয়ে সোফা, মোড়া ইত্যাদি তৈরি করে। এখানে জহির বন থেকে সরাসরি বেত আহরণ করে। এটি প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সম্পদ আহরণ করে সে মানুষের ব্যবহার উপযোগী আসবাবপত্র তৈরি করে। এসব বৈশিষ্ট্য নিষ্কাশন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জহিরের বেত সংগ্রহের কাজটি নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে জহিরের উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় বাড়ানোর জন্য বাণিজ্যের বাজারজাতকরণ প্রসার কাজটি অতি জরুরি বলে আমি মনে করি।

পণ্য উৎপাদন বা সংগ্রহের পরই ভোক্তা বা ক্রেতারা তা জানবে ও ক্রয় করবে এমন নয়। তাই পণ্যের পরিচিত বাড়ানোর জন্য বাজারজাতকরণ প্রসার কাজটি করতে হয়। বিজ্ঞাপন, প্রচার, বিক্রয় প্রসার প্রভৃতি কাজ এর অন্তর্গত। এসব কাজ বাণিজ্যের আওতাধীন।

উদ্দীপকের জহির সুন্দরবন থেকে বেত সংগ্রহ করে তা দিয়ে সোফা, মোড়া ইত্যাদি তৈরি করে। এরপর তা বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করে। দেখতে সুন্দর, টেকসই এবং দামে সস্তা হলেও এসব পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের তেমন ধারণা নেই। ফলে তার বিক্রয়ের পরিমাণ খুবই কম।

এ অবস্থায় জহির তার পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারে। এলাকায় পোস্টারে পণ্যের সব বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে প্রচার করতে পারে। এতে ভোক্তাদের কাছে পণ্যের পরিচিতি বাড়বে। তারা পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী হবে। এভাবে বাজারজাতকরণ প্রসার কাজের মাধ্যমে তার পণ্যের বিক্রয় বাড়ানো যেতে পারে।

 প্রশ্নঃ৩২ রাজশাহীতে জনাব রাশেদের একটি আম বাগান রয়েছে। আম সংগ্রহ করার পর বিভিন্ন জাতের আমকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে কার্টনে ভরা হয়। এরপর ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, যানযট, হরতাল ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন জায়গায় আম সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়।

     [কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  মুনাফাকে ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার বলা হয় কেন?     ২

 গ.  কার্টনে আম ভরার আগে জনাব রাশেদ কোন কাজটি করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  বিভিন্ন জায়গায় আম সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে কোন ধরনের বাধার সৃষ্টি হয়? বাধা দূর করার উপায় কি হতে পারে বলে তুমি মনে করো যুক্তি দাও।     ৪

৩২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য ও সেবা উৎপাদন, বণ্টন ও এর সহায়ক যাবতীয় বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

খ ব্যবসায়ের মোট আয় থেকে খরচ বা ক্ষতি বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে মুনাফা বলে।

ব্যবসায়ের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন। একজন ব্যবসায়ীর আয় মুনাফা অর্জনের সামর্থ্যরে ওপর নির্ভরশীল। মুনাফা হবে ধরে নিয়ে ব্যবসায়ী ব্যবসায় করলেও এতে ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তা থাকে। যেমন: মূল্য কমে যাওয়া, পণ্য নষ্ট হওয়া, চাহিদা কমে যাওয়া প্রভৃতি। এই ঝুঁকি ছাড়া ব্যবসায় করা যায় না। ঝুঁকি বেশি হলে মুনাফার পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মুনাফাকে ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার বলা হয়।

গ উদ্দীপকে কার্টনে আম ভরার আগে জনাব রাশেদ পর্যায়িতকরণ কাজটি করেন।

পর্যায়িতকরণের মাধ্যমে নির্ধারিত মান অনুযায়ী পণ্যকে বিভাজন করা হয়। এক্ষেত্রে পণ্যকে বিভিন্ন আকার অনুযায়ী বিভক্ত করে আলাদা আলাদা ভাগে সাজানো হয়। ফলে পণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। গ্রাহকরাও সহজেই প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারে।

উদ্দীপকের জনাব রাশেদ রাজশাহীর একজন আম ব্যবসায়ী। তিনি তার আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে প্রথমে জাত অনুযায়ী আমগুলো আলাদা করেন। এরপর এর আকার অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেন। এ কাজটি পর্যায়িতকরণ বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, কার্টনে আম ভরার আগে জনাব রাশেদ পর্যায়িতকরণ কাজটি করেন।

ঘ বিভিন্ন জায়গায় আম সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে স্থানগত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, যা পরিবহনের মাধ্যমে দূর করা যায় বলে আমি মনে করি।

উৎপাদক থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানোর জন্য পরিবহন মাধ্যমটি ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে পণ্যের স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। এ ব্যবস্থা ভালো না হলে বাণিজ্যের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।

উদ্দীপকের জনাব রাশেদ একজন আমের ব্যবসায়ী। তিনি রাজশাহী থেকে আম ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাঠান। রাস্তাঘাটের খারাপ অবস্থা, যানজট, হরতাল ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন জায়গায় আম সরবরাহ করতে সমস্যা হচ্ছে। এখানে স্থানগত বাধার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে।

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্থানগত বাধা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। যথাযথ পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে এ বাধা দূর করা যায়। এজন্য রাস্তাঘাট উন্নত করতে হবে, যেন সহজেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য পৌঁছানো যায়। এছাড়া হরতাল, অবরোধের মতো অস্থিতিশীলতা দূর করতে হবে, যাতে পণ্য সরবরাহ বন্ধ না হয়। এভাবে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানগত বাধা দূর করা যাবে।

 প্রশ্নঃ৩৩ মি. মামুন চাকরি শেষে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। এই টাকার যেন ক্ষতি না হয় এ বিষয়ে তিনি সতর্ক। আবার এ থেকে তিনি কিছু আয়েরও প্রত্যাশা করেন। ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ কম। তাই তিনি তার পরিচিত, সৎ ও ভালো ব্যবসায়ী নাজিম সাহেবকে ঐ অর্থ দিলেন। বললেন লাভ কম দেন আপত্তি নেই, তবে ক্ষতির ভাগ তিনি নেবেন না। নাজিম সাহেব ব্যবসায়টি বাড়াবেন বলে তারও টাকার প্রয়োজন ছিল। বর্তমানে মি. মামুন ভালোই লাভ পাচ্ছেন। আবার নাজিম সাহেবের এতে সুবিধা হয়েছে।    [ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা কোনটি? ব্যাখ্যা করো।   ২

 গ.  কোন বৈশিষ্ট্যের অভাবে উদ্দীপকের মি. মামুনকে ব্যবসায়ী বলা যাবে না? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.  নাজিম সাহেবের ব্যবসায়িক কাজটি অর্থসংস্থানের সাথে সম্পর্কযুক্ত উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যের যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।   ৪

৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য ও সেবা উৎপাদন, বণ্টন ও এর সহায়ক যাবতীয় বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

খ ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা হলো বাণিজ্য।

শিল্পে উৎপাদিত পণ্য উৎপাদক থেকে প্রকৃত ভোগকারীর কাছে পৌঁছানোর কাজ বাণিজ্যের মাধ্যমে করা হয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিক শিল্পে উৎপাদিত কাঁচামাল মাধ্যমিক শিল্পে সরবরাহ হয়। আর মাধ্যমিক শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারীর কাছে বণ্টন করা হয়। তাই একে ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা বলা হয়।

গ ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক নয় বলে মি. মামুনকে ব্যবসায়ী বলা যাবে না।

ঝুঁকি হলো আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা। ব্যবসায়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সবকিছু ঘটবে এমন না। পণ্য নষ্ট হওয়া, চাহিদা হ্রাস পাওয়া, মূল্য কমে যাওয়া প্রভৃতি কারণে ব্যবসায়ে লোকসান হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ঝুঁকি না নিলে ব্যবসায় করা যায় না। এজন্য ব্যবসায়ের সাথে ঝুঁকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

উদ্দীপকের মি. মামুন চাকরি শেষে ১০ লাখ টাকা পেনশন পেয়েছেন। এই টাকার যাতে ক্ষতি না হয় এ বিষয়ে তিনি সতর্ক। আবার তিনি প্রাপ্ত ১০ লাখ টাকা থেকে কিছু আয়ও প্রত্যাশা করেন। তাই তিনি পরিচিত, সৎ ও ভালো ব্যবসায়ী নাজিম সাহেবকে টাকাটা দিলেন। এতে শর্ত হলো লাভ কম দিলেও ক্ষতির ভাগ তিনি নিবেন না। এখানে নাজিম সাহেবের ব্যবসায়ে ক্ষতি হলে তার দায় মি. মামুনের ওপর পড়বে না। তিনি ঝুঁকিমুক্ত। আর কোনো কাজে ঝুঁকি না থাকলে তাকে ব্যবসায় বলা যাবে না। তাই বলা যায়, ঝুঁকির অভাবে মি. মামুনকে ব্যবসায়ী বলা যাবে না।

ঘ উদ্দীপকে নাজিম সাহেবের ব্যবসায়িক কাজটি অর্থসংস্থানের সাথে সম্পৃক্ত – বক্তব্যটি যৌক্তিক।

অর্থসংস্থান হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ ও তা কাজে লাগানোর চেষ্টা। যেকোনো ব্যবসায় পরিচালনা করতে অর্থ প্রয়োজন। ব্যবসায়ী ব্যক্তিগত সঞ্চয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন। আবার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার হিসেবেও অর্থ নিতে পারেন।

উদ্দীপকে নাজিম সাহেব একজন ব্যবসায়ী। তিনি ভাবছেন তার ব্যবসায়টা বাড়াবেন। এজন্য অর্থের প্রয়োজন। তাই তিনি মি. মামুনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায় বাড়ানোর কাজ করছেন। তবে এক্ষেত্রে মি. মামুনকে লাভ দিতে হবে।

ব্যবসায় শুরু এবং তা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন মূলধন। প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহ করা গেলে ব্যবসায় বাড়ানো সহজ হয়। উদ্দীপকের নাজিম সাহেব মি. মামুনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে মূলধনের ব্যবস্থা করেছেন। ফলে তার ব্যবসায় বাড়ানোর কাজ সহজ হয়েছে। তার এ কাজটি অর্থসংস্থানের সাথে সম্পৃক্ত।

 প্রশ্নঃ৩৪ ডলফিন লি. এ ইলেকট্রনিকস সামগ্রী উৎপাদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি চীন, জাপান ও কোরিয়া থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে উপকরণগুলোর সাহায্যে নিজস্ব কারখানায় টেলিভিশন, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল উৎপাদন করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরে শোরুম স্থাপনের মাধ্যমে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি তাদের উৎপাদিত পণ্য নেপাল, ভুটান, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।   [ নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.  উপযোগ কী?    ১

 খ.  প্রাথমিক শিল্প বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.  ডলফিন লি. কোন প্রকারের উৎপাদন শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.  ডলফিন লি. যে ধরনের বৈদেশিক বাণিজ্যে যুক্ত হয়েছে তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে কি না? উত্তরের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো। ৪

৩৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোন জিনিসের অভাব পূরণের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে।

খ প্রকৃতি থেকে সম্পদ উৎপাদন ও আহরণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যপ্রচেষ্টাই হলো প্রাথমিক শিল্প।

এ শিল্প বহুলাংশেই প্রকৃতি বা অদৃশ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতিগতভাবেই এ শিল্পের প্রসার ঘটে। এ শিল্পে মানবীয় প্রচেষ্টার ভূমিকা খুবই কম। চাষাবাদ, পশু-পাখি লালনপালন, খনিজ সম্পদ উত্তোলন, মৎস্য আহরণ ইত্যাদি প্রাথমিক শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

গ উদ্দীপকের ডলফিন লি. সংযোজন শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত।

এ শিল্পের মাধ্যমে অন্য শিল্পে উৎপাদিত উপকরণ বা অংশ বিশেষগুলো একত্রিত করা হয়। এরপর একটি সম্পূর্ণ নতুন পণ্য ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। বিমান, জাহাজ, মোটরগাড়ি, টেলিভিশন প্রভৃতি তৈরির কাজ এ শিল্পের অন্তর্গত।

উদ্দীপকের ডলফিন লি. এ ইলেকট্রনিকস সামগ্রী উৎপাদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি চীন, জাপান ও কোরিয়া থেকে এর উপকরণ সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে এগুলো নিজস্ব কারখানায় একত্রিত করে। এভাবে এগুলোর সাহায্যে পূর্ণাঙ্গ পণ্য টেলিভিশন, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল উৎপাদন করে বিক্রয় করে। অর্থাৎ, মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে প্রস্তুত করে। এসব কাজ সংযোজন শিল্পের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ডলফিন লি. সংযোজন শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত।

ঘ উদ্দীপকে ডলফিন লি. বৈদেশিক বাণিজ্যের পুনঃরপ্তানি কাজের সাথে যুক্ত হয়েছে; যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।

পুনঃরপ্তানি বাণিজ্যে বিদেশ থেকে পণ্য নিজ দেশে আমদানির পর প্রক্রিয়াকরণ করে অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়। এ ধরনের বাণিজ্য কমপক্ষে তিনটি দেশের মধ্যে সংঘটিত হয়।

উদ্দীপকে ডলফিন লি. ইলেকট্রনিকস সামগ্রী তৈরির জন্য চীন, জাপান ও কোরিয়া থেকে এর উপকরণ আমদানি করে। এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে টেলিভিশন, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল প্রস্তুত করা হয়। উৎপাদিত এসব নতুন পণ্য নিজ দেশে বিক্রয়ের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশে বিক্রয় করে। এভাবে দেশগুলোর মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য সংঘটিত হয়েছে; যা পুনঃরপ্তানি কাজের সাথে মিলে যায়।

পুনঃরপ্তানির মাধ্যমে অন্য দেশে পণ্য বিক্রয় করা হয়। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ায়। এছাড়া পুনঃ রপ্তানির মাধ্যমে আমদানিকারক দেশের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি হয়। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বাড়ে। সুতরাং, ডলফিন লি. এর উক্ত পুনঃরপ্তানি বাণিজ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ৩৫ মিস নিশাত একজন স্বনামধন্য ডাক্তার। তিনি কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার নিয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপন করে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটি অল্প দিনের মধ্যেই বেশ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যদিও তাদের উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন নয়। এছাড়াও তিনি গরিব অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে ফ্রি চিকিৎসা প্রদানের জন্য একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেছেন।      [সরকারি জিয়া মহিলা কলেজ, ফেনী]

 ক.  নিষ্কাশন শিল্প কী?     ১

 খ.  বাণিজ্যকে পণ্য বণ্টণকারী শাখা বলা হয় কেন?     ২

 গ.  মিস নিশাতের হাসপাতালটি ব্যবসায়ের কোন শাখার অন্তর্গত? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.  দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মিস নিশাত ব্যবসায়ের যে দায়িত্ব পলন করেছেন তার যথার্থতা মূল্যায়ন করো। ৪

৩৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে শিল্পের মাধ্যমে ভূগর্ভ, পানি বা বায়ু থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা হয় তাকে নিষ্কাশন শিল্প বলে। যেমন: নদী থেকে মৎস্য আহরণ।

খ উৎপাদক থেকে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর কাজকে বাণিজ্য বলে।

শিল্পে উৎপাদিত পণ্য বাণিজ্যের বিভিন্ন কাজের (ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, বিজ্ঞাপন) মাধ্যমে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো হয়। এটি পণ্য বণ্টনের সাথেই জড়িত। তাই বাণিজ্যিকে ব্যবসায়ের পণ্য বণ্টনকারী শাখা বলা হয়।

গ উদ্দীপকের মিস নিশাতের হাসপাতালটি ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ সেবা শাখার অন্তর্গত।

প্রত্যক্ষ সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়া হয়। এ সেবা দেখা বা স্পর্শ করা যায় না। কিন্তু তা মানুষের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। এর বিনিময়ে ফি দিতে হয়। যেমন ডাক্তারি, ওকালতি।

উদ্দীপকে মিস নিশাত একজন স্বনামধন্য ডাক্তার। তিনি কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার নিয়ে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে তিনি রোগীদের সেবা দিয়ে এর বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করেন। রোগীরা চিকিৎসা সেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছে। জনগণের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়াই এ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। সেবার পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুনাফাও অর্জন করছে। এসব বৈশিষ্ট্য প্রত্যক্ষ সেবার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, মিস নিশাতের হাসপাতালটির কাজ প্রত্যক্ষ সেবারই অন্তর্ভুক্ত।

ঘ উদ্দীপকের মিস নিশাত দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন বলে আমি মনে করি।

সাধারণত মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসায় পরিচালনা করা হয়। কিন্তু কোনো সেবাকর্ম থেকে মুনাফা অর্জন না করলে তা মানবকল্যাণমূলক বা অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ধরনের ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে দরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করা বা তাদের উন্নয়ন করা।

উদ্দীপকে মিস নিশাত একজন স্বনামধন্য ডাক্তার। তিনি গরিব ও অসহায় রোগীদের কথা চিন্তা করেন। এরপর তাদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। অর্থাৎ তিনি মুনাফা অর্জনের জন্য এটি পরিচালনা করছেন না। মানব কল্যাণই এর মূল উদ্দেশ্য। এটি একটি অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।

মিস নিশাতের দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ অমুনাফাভোগী। প্রতিষ্ঠানটি সেবা দেওয়ার বিনিময়ে কোনো অর্থ নেয় না। এটি মুনাফা অর্জন করে না। বরং সমাজের অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। সুতরাং উক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ৩৬ এল. এল. এম পাস করার পর জনাব মতিন অন্যের অধীনস্থ না হয়ে একটি ‘লিগ্যাল এইড’ ফার্ম গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানটি বেশি পরিচিত না হওয়ায় গ্রাহক সংখ্যা খুবই কম। অল্প দিনেই বিভিন্ন মামলায় গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হলেও স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেই তা অবগত নন। এর ফলে তিনি ব্যবসায়ের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।  [ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, যশোর]

 ক.  ব্যবসায় কী?     ১

 খ.  নিষ্কাশন শিল্প বলতে কী বোঝ?    ২

 গ.  উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘লিগ্যাল এইড’-এর কাজটি ব্যবসায়ের কোন শাখার অন্তর্গত? বর্ণনা করো।     ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির উক্ত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী বলে তুমি মনে করো? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

৩৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য ও সেবা উৎপাদন, বণ্টন ও এর সহায়ক যাবতীয় বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে ব্যবসায় বলে।

খ যে শিল্পের মাধ্যমে প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ আহরণ বা সংগ্রহ করা হয় তাকে নিষ্কাশন শিল্প বলে।

এ শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের কিছু সরাসরি ভোগের জন্য ব্যবহার করা যায়। আর অধিকাংশই পরবর্তী উৎপাদনের কাজে লাগানো হয়। ভূগর্ভ থেকে খনিজ সংগ্রহ, প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ প্রভৃতি এ শিল্পের উদাহরণ।

গ উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘লিগ্যাল এইড’-এর কাজটি ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ সেবা শাখার অন্তর্গত।

প্রত্যক্ষ সেবায় গ্রাহকদের সরাসরি সেবা দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হয়। এটি দেখা যায় না বা স্পর্শও করা যায় না। কিন্তু মানুষের প্রয়োজন মেটাতে এটি সক্ষম। ডাক্তারি, অডিট ফার্ম, ওকালতি প্রভৃতি প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্গত।

উদ্দীপকে জনাব মতিন এল. এল. এম পাস করে একটি ‘লিগ্যাল এইড’ ফার্ম গঠন করেন। তিনি অল্প দিনেই মামলায় গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হন। এ কাজের মাধ্যমে তিনি গ্রাহকদের সরাসরি আইনি সহায়তা দিচ্ছেন। এর বিনিময়ে তিনি সেবা ফি হিসেবে অর্থ উপার্জন করছেন। এসব কাজ প্রত্যক্ষ সেবা ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ‘লিগ্যাল এইড’-এর কাজ প্রত্যক্ষ সেবার অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের উক্ত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় হলো বাজারজাতকরণ প্রসারের ব্যবস্থা করা।

বাজারজাতকরণ প্রসার পণ্য বা সেবার ব্র্যান্ড সম্পর্কে গ্রাহকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করে। ফলে বিক্রয় বাড়ে। এটি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে পণ্যের প্রচারগত বাধা দূর করে। বিজ্ঞাপন, বিক্রয় প্রসার, ব্যক্তিক বিক্রয়, প্রচার ইত্যাদি বাজারজাতকরণ প্রসারের অন্তর্গত।

উদ্দীপকে জনাব মতিন এল.এল. এম পাস করে ‘লিগ্যাল এইড’ নামে একটি ফার্ম গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে তিনি অল্প দিনেই বিভিন্ন মামলায় গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হন। কিন্তু এটি নতুন প্রতিষ্ঠিত বলে এলাকার অনেকেই এর ব্যাপারে জানে না। ফলে তার গ্রাহক সংখ্যাও খুব কম।

এ অবস্থায় জনাব মতিনকে বাজারজাতকরণ প্রসারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য তিনি বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, প্রচার প্রভৃতি কৌশল গ্রহণ করতে পারেন। এতে ফার্মটি মানুষের কাছে অধিক পরিচিতি পাবে। এর সাফল্য ও তার কৃতিত্বের ব্যাপারে সবাই জানতে পারবে। পাশাপাশি সুনামও প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে তার কাছ থেকে আইনি সেবা নিতে ফার্মের গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে। এভাবেই জনাব মতিনের প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্নঃ৩৭ শিক্ষিত যুবক রাতুল পছন্দের চাকরি না পেয়ে অবশেষে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্ত নেন। এ লক্ষ্যে সে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে একটি হাঁস-মুরগির খামার গড়ে তোলেন। খামারের ডিম উপজেলা সদরে বিক্রি করে তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। খামারের পরিধি বাড়ায় তিনজন কর্মচারীও নিয়োগ দেন। আর্থিক ও সামাজিকভাবে রাতুল এখন স্বাবলম্বী এবং একজন সফল ব্যবসায়ী।  [বরগুনা সরকারি কলেজ]

 ক.  ব্যবসায়ী কিসের আশায় ঝুঁকি গ্রহণ করে?     ১

 খ.  ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব বলতে কী বোঝায়?     ২

 গ.  রাতুলের ব্যবসায়টিকে কী শিল্প বলা যায়? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.  উদ্দীপকে রাতুল চাকরি না করে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সপক্ষে তোমার মতামত প্রদান করো। ৪

৩৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক ব্যবসায়ী মুনাফা অর্জনের আশায় ঝুঁকি গ্রহণ করে।

খ সমাজ ও সমাজ সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের প্রতি ব্যবসায়ের কর্তব্য পালনের দায়ই হলো ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব।

উৎপাদক, সরবরাহকারী, ভোক্তা, সরকার, মধ্যস্থ ব্যবসায়ী প্রভৃতি পক্ষের সমষ্টিই হলো সমাজ। এসব পক্ষের প্রতি ব্যবসায়কে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর মাধ্যমে সমাজের মানুষের কাছে পরিচিতি বাড়ে। ফলে ব্যবসায়ের সুনাম বাড়ে।

গ উদ্দীপকের রাতুলের ব্যবসায়টিকে প্রজনন শিল্প বলা যায়।

প্রজনন শিল্পে উদ্ভিদ ও প্রাণির বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদন কাজ পরিচালিত হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে গাছপালা ও প্রাণির বংশবিস্তার করা এ শিল্পের প্রধান কাজ। নার্সারি, পোলট্রি ফার্ম, হ্যাচারি প্রভৃতি এ শিল্পের উদাহরণ।

উদ্দীপকের রাতুল প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়িতে একটি হাঁস-মুরগির খামার গড়ে তোলেন। এখানে তিনি হাঁস-মুরগি লালন-পালনের মাধ্যমে বড় করেন। এগুলো থেকে ডিম ও হাঁস-মুরগির বাচ্চা পাওয়া যায়। খামারের ডিম উপজেলা সদরে বিক্রি করে তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। এভাবে হাঁস ও মুরগির বংশ বৃদ্ধি করিয়ে তা পুনরায় উৎপাদন কাজে তিনি ব্যবহার করছেন। এসব বৈশিষ্ট্য প্রজনন শিল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, উদ্দীপকে রাতুলের ব্যবসায়কে প্রজনন শিল্প বলা যায়।

ঘ উদ্দীপকের রাতুলের চাকরি না করে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্তকে আমি যৌক্তিক মনে করি।

মুনাফা অর্জনের জন্য মানুষ ব্যবসায় পরিচালনা করে। এ কাজে ঝুঁকি নিতে হয়। ঝুঁকির মধ্যেও পরিশ্রম করে ব্যবসায় থেকে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায়। যা চাকরির মাধ্যমে সম্ভব না। এজন্য বর্তমানে চাকরির চেয়ে ব্যবসায়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

উদ্দীপকে রাতুল চাকরি না পেলেও বেকার বসে থাকেননি। তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি খামার প্রতিষ্ঠা করেন। খামার থেকে প্রচুর মুনাফাও অর্জন করেন। খামারের পরিধিও বাড়ান। এভাবে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন।

রাতুল চাকরি না করে ব্যবসায় করার যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার ব্যবসায়ের পরিধি বাড়ানোর সাথে সাথে এখানে কর্মচারী নিয়োগ দেন। ফলে বেকার মানুষের কাজের ব্যবস্থা হয়। তারও মুনাফা বাড়তে থাকে। এভাবে তিনি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন। তিনি চাকরি করলে সমাজে এমন অবদান রাখতে পারতেন না। সুতরাং, উদ্দীপকে রাতুলের চাকরি না করে ব্যবসায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যৌক্তিক হয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *