HSC 2022-ব্যবসা উদ্যোগ ১ম পত্র অধ্যায়-৫: যৌথ মূলধনী ব্যবসায়

 প্রশ্ন ১ জনাব আরিফ ও তার ছয় বন্ধু একত্রিত হয়ে ৯০ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে আনন্দ ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসায় গঠন করেন। আরিফ ও তার বন্ধু রিপন পরিচালক নিযুক্ত হন। তাদের সঠিক পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটি অল্প সময়েই সফলতার মুখ দেখে। পরবর্তীতে তারা পরিচালকের সংখ্যা ও মূলধন বৃদ্ধিসহ ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে তারা জনগণের মাঝে উচ্চহার সুদের ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নেন।     [ঢা. বো. ১৭]

 ক.   পরিমেল নিয়মাবলি কী?   ১

 খ.   কোম্পানির চিরন্তন অস্তিত্ব বলতে কী বোঝ?   ২

 গ.   উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়টি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে ১ম ও ২য় পর্যায়ের ব্যবসায়ের মধ্যে কোনটি অর্থনীতিতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।   ৪

১ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে দলিলে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ও দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি লিপিবদ্ধ থাকে এবং যা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সম্পর্কের দিকনির্দেশনা প্রদান করে তাকে পরিমেল নিয়মাবলি  বলে।

 খ চিরন্তন অস্তিত্ব বলতে সহজে বিলুপ্ত হয় না এমন অস্তিত্বকে বোঝায়।

কোম্পানি সংগঠন অন্যান্য ব্যবসায়ের মতো সহজে বিলুপ্ত হয় না। আইনানুযায়ী এ ব্যবসায় চিরন্তন অস্তিত্বের মর্যাদা লাভ করে। পৃথক ও স্বাধীন সত্তার কারণে শেয়ারহোল্ডারদের মৃত্যু, দেউলিয়াত্ব ও শেয়ার হস্তান্তর এ ব্যবসায়ের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে না। তাই কোম্পানি হলো চিরন্তন অস্তিত্বসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান।

 গ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়টি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন হয়ে থাকে। এর পরিচালক সংখ্যা ২ জন। এ কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয়। এছাড়া এটি জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারে না।

উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। ব্যবসায়টিতে আরিফ ও তার বন্ধু রিপন এ দু’জন পরিচালক নিযুক্ত হন। তারা কোম্পানি পরিচালনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখেন। এসব বৈশিষ্ট্য প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সাথে মিল রয়েছে। সুতরাং, পরিচালক ও সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায়টি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন।   

 ঘ উদ্দীপকের ২য় পর্যায়ের ব্যবসায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিই অর্থনীতিতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ৭ জন এবং সর্বোচ্চ এর শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ। এর ন্যূনতম পরিচালক সংখ্যা ৩ জন। এর শেয়ার জনসাধারণের নিকট অবাধে হস্তান্তরযোগ্য। তাই অর্থসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকে। 

উদ্দীপকের ১ম পর্যায়ের ব্যবসায়টি ছিল একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। পরবর্তীতে তারা পরিচালকের সংখ্যা ও মূলধন বৃদ্ধিসহ ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। এ লক্ষ্যে তারা জনগণের মাঝে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। ফলে ২য় পর্যায়ের ব্যবসায়টি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা বেশি বলে এখানে অধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। তাছাড়া পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি শেয়ার ও ঋণপত্র অবাধে হস্তান্তর করতে পারে । ফলে অর্থনীতিতে মূলধন গঠনে অধিক ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা কম থাকায়, বেশি মূলধন গঠনের সুযোগ থাকে না। অতএব, সুযোগ-সুবিধা বেচনায় ২য় পর্যায়ের পাবলিক লি. কোম্পানিটি অর্থনীতিতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 প্রশ্ন ২ “রাইট কোং লি.” অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হওয়ায় তা সংগ্রহ করার জন্য পুরাতন শেয়ারহোল্ডারদের অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ব্যবসায়ে লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ৫ কোটি টাকা দেনা হয়ে যায় যা কোম্পানিটি পরিশোধে অক্ষম। এ অবস্থা নিরসনে তারা উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।     [দি. বো. ১৭]

 ক.   ন্যূনতম চাঁদা কী?   ১

 খ.   শেয়ার ও ঋণপত্রের মধ্যে পার্থক্য কী? ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.   উদ্দীপকের কোম্পানিটি কোন ধরনের শেয়ার ইস্যু করতে চায়? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.   অতিরিক্ত দেনার দায়ে কোম্পানিটি পরিচালনা সম্ভব না হলে সেটি কোন ধরনের অবসানে পড়বে? বিশ্লেষণ করো।   ৪

২ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পরিমেল নিয়মাবলিতে কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক খরচ নির্ধারণের জন্য যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের প্রতিশ্রুতি উল্লেখ থাকে তাকে ন্যূনতম চাঁদা বলে।

 খ নিচে শেয়ার ও ঋণপত্রের মৌলিক পার্থক্যসমূহ উল্লেখ করা হলো

শেয়ারঋণপত্র
১. শেয়ার কোম্পানির মূলধনের অংশ।১.ঋণপত্র কোম্পানির ঋণ গ্রহণের দলিল।
২. মূলধন সংগ্রহ শেয়ার বিক্রয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য।২. ঋণ সংগ্রহ ঋণপত্র বিক্রয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য।
৩. শেয়ার গ্রহীতাগণ কোম্পানির মালিক।৩.ঋণপত্র গ্রহীতাগণ কোম্পানির পাওনাদার।
৪.শেয়ার বিক্রয়লব্ধ অর্থ কোম্পানির নিজস্ব মূলধন।    ৪.ঋণপত্র বিক্রয়লব্ধ অর্থ কোম্পানির ঋণকৃত মূলধন।  
৫.শেয়ারমালিকগণ ব্যবসায় হতে লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন।৫.ঋণপত্রের মালিকগণ ব্যবসায় হতে সুদ পেয়ে থাকেন।

 গ উদ্দীপকের কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চায়।

কোম্পানি অধিকতর মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নতুন শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। এ সময় তারা  পুরাতন শেয়ারহোল্ডারদের অগ্রাধিকার প্রদান করে। এ ধরনের শেয়ার রাইট শেয়ার নামে পরিচিত। 

উদ্দীপকের ‘রাইট কোং লি.’ অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হওয়ায় তা সংগ্রহ করার জন্য পুরাতন শেয়ারহোল্ডারদের অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কোম্পানিতে অধিক মূলধনের প্রয়োজন হলেই এ ধরনের শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া ভালো অবস্থায় থাকলে শেয়ার বাজারে তার শেয়ারের দামও বেশি থাকে। সে অবস্থায় নতুন ইস্যুকৃত শেয়ারে পুরাতন শেয়ার মালিকগণ তাদের স্বার্থ দাবি করতে পারেন। এরূপ দাবি পূরণের জন্যই কার্যত এ ধরনের শেয়ার বণ্টন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চায়। 

 ঘ অতিরিক্ত দেনার দায়ে কোম্পানি পরিচালনা সম্ভব না হলে আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক অবসান ঘটাতে পারে।

শেয়ার মালিক, পাওনাদার বা কোম্পানির নিবন্ধকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বা অন্য কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণে আদালত কোম্পানি বিলোপসাধনের নির্দেশ দিতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে নির্দেশপ্রাপ্ত কোম্পানির আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক অবসান হয়ে থাকে। 

উদ্দীপকের ‘রাইট কোং লি.’ ব্যবসায়ের লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ৫ কোটি টাকা দেনা হয়ে যায় যা কোম্পানিটি পরিশোধে অক্ষম। এ অবস্থা নিরসনে কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কোম্পানি আইনের ২৪২ ধারার বিধান অনুযায়ী, পাঁচ হাজার টাকা বা এর বেশি পরিমাণ কোনো ঋণ পরিশোধে অক্ষম হলে ঐ কোম্পানির আদালতের নির্দেশানুযায়ী বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন হয়। উদ্দীপকের কোম্পনিটির দেনা হয়েছে ৫ কোটি টাকা এবং তা পরিশোধেও কোম্পানিটি অক্ষম। সুতরাং, এখন আদালতের নির্দেশে কোম্পানিটি বাধ্যতামূলকভাবে অবসান ঘটাতে পারে ।

 প্রশ্ন ৩ রতন তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে টাঙ্গাইলে ‘বিডি ফার্নিচার’ নামে একটি কারখানা গড়ে তোলেন। তাদের প্রাথমিক মূলধন ১০ কোটি টাকা। সবার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতার মুখ দেখে। পরবর্তীতে তারা প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তারা ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে জনগণের মাঝে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে চান।    [কু. বো. ১৭]

 ক.   বাণিজ্য কী?  ১

 খ.   বিবরণপত্র বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।  ২

 গ.   উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   তুমি কি মনে করো প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে? মতামত দাও।      ৪

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ভোক্তা কিংবা ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছানোর জন্য সম্পাদিত যাবতীয় (ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন) কাজকে বাণিজ্য বলে।

 খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে শেয়ার বিক্রয়ের জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে তাকে বিবরণপত্র বলে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহকালেই বিবরণপত্র নিবন্ধকের নিকট জমা দিতে হয়। বিবরণপত্রে কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব তথ্যের উল্লেখ করার প্রয়োজন হয়, ফলে কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে জনসাধারণ উদ্বুদ্ধ হয়।

 গ উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন। এটি গঠনে আইনের আনুষ্ঠানিকতা কম পালন করতে হয়। কমপক্ষে দু’জন পরিচালক নিয়েই এ কোম্পানি পরিচালনা করা যায়। 

উদ্দীপকের রতন তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে টাঙ্গাইলে ‘বিডি ফার্নিচার’ নামে একটি কারখানা গড়ে তোলেন। তাদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতা লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটিতে সদস্য সংখ্যা ছিল মোট ৬ জন। তাই উক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে সদস্য সংখ্যা বিচারে প্রাইভেট লিমিটেড বলা যায়।

 ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি আইনানুযায়ী জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারে না। এর শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয়। 

উদ্দীপকের রতন ও তার পাঁচ বন্ধু মিলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতা অর্জন করায় তারা এটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তারা ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে জনগণের মাঝে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে চান।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় জনসাধারণের কাছে শেয়ার ক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারবে না।  শেয়ার বিক্রয় করতে হলে এর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে কমপক্ষে ৭ জন করতে হবে। যাতে এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। এরপর তারা কোম্পানির আইনানুযায়ী অবাধে শেয়ার ও ঋণপত্র জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে। সুতরাং, বিডি ফার্নিচার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না।

 প্রশ্ন ৪ মি. সাত্তার একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। তিনি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেন। তিনি তিস্তা ব্যাংক লিমিটেডের কিছু শেয়ার ক্রয় করলেন। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাংকটির সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা লাভ করেন। সব সুযোগ-সুবিধা ঠিক থাকলেও তিনি লভ্যাংশ প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তায় ভোগেন। [চ. বো. ১৭]

 ক.   সমবায় সমিতি কী? ১

 খ.   ঋণপত্র বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.   মি. সাত্তার কোন ধরনের শেয়ার ক্রয় করেছেন? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি মি. সাত্তারের যেসব সুবিধা নিশ্চিত করবে তা বিশ্লেষণ করো।      ৪

৪ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক পারস্পরিক অর্থনৈতিক কল্যাণের লক্ষ্যে সমান শ্রেণিভুক্ত ব্যক্তিবর্গ মিলিত হয়ে যে সংগঠন গড়ে তোলে তাকে সমবায় সমিতি বলে।

 খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যে দলিলের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাকে ঋণপত্র বলে।

কোম্পানির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হলে ঋণপত্র বিক্রির মাধ্যমে তা সংগ্রহ করে। এটি প্রতিষ্ঠানের মূলধন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এজন্য নির্দিষ্ট হারে সুদও দিতে হয়। ঋণপত্রে এ ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, ঋণের মেয়াদ ইত্যাদি বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

 গ উদ্দীপকের মি. সাত্তার সাধারণ শেয়ার ক্রয় করেছেন।

আইনানুযায়ী সাধারণ শেয়ারের মালিকগণ অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিভিন্ন দিক বিচারে অধিক সুবিধা ও মর্যাদা লাভ করেন। তবে তারা লভ্যাংশ বণ্টনে ও কোম্পানি অবসানের সময় মূলধন ফেরতে অগ্রাধিকার পান না। 

উদ্দীপকের মি. সাত্তার তিস্তা ব্যাংক লিমিটেডের কিছু শেয়ার ক্রয় করলেন। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাংকটির সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা লাভ করেন। সব সুযোগ-সুবিধা ঠিক থাকলেও তিনি লভ্যাংশ প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তায় ভোগেন। এসব বৈশিষ্ট্য সাধারণ শেয়ারের সাথে মিল রয়েছে। তাই বলা যায়, মি. সাত্তার সাধারণ শেয়ার ক্রয় করেছেন।

 ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি মি. সাত্তারকে সাধারণ শেয়ারের সব সুবিধা নিশ্চিত করবে।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিক হলেন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারগণ । এরূপ শেয়ারহোল্ডারগণ অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিভিন্ন দিক বিচারে অধিক সুবিধা ও মর্যাদা লাভ করেন। এ ধরনের শেয়ার মালিকের দায় বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। 

উদ্দীপকের মি. সাত্তার তিস্তা ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে সাধারণ শেয়ারের মালিক হন। ফলে তিনি ব্যাংকটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মতামত প্রকাশের সুযোগ পান। আবার ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতাও লাভ করেন। এ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে কোম্পানির পরিচালক পর্ষদ নির্বাচিত করা হয়।

এছাড়া যত দিন কোম্পানির অস্তিত্ব থাকবে শেয়ার হস্তান্তর না করলে, মি. সাত্তার তত দিন ঐ কোম্পানির মালিক থাকবেন। শেয়ারহোল্ডার হিসেবে তিনি কোম্পানির যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারবেন। এছাড়া তাকে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বেশি দায় বহন করতে হবে না। এসব সুবিধা উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে মি. সাত্তার নিশ্চিতভাবে ভোগ করবেন।

 প্রশ্ন ৫ জনাব আরেফিন, ক ও খ নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে জড়িত। ক প্রতিষ্ঠানটি ট্রেড লাইসেন্স এবং খ প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনপত্র নিয়ে কাজ শুরু করেন। দুটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেছিল। মেয়াদ শেষে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য ক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যাংক জনাব আরেফিনকে নোটিশ প্রদান করে। খ-এর ক্ষেত্রে মালিক আরেফিনের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেয়। দুটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে সচ্ছল।      [সি. বো. ১৭]

 ক.   শিল্প কী?    ১

 খ.   ‘ব্যবসায় বেকার সমস্যা দূর করে’ ব্যাখ্যা করো।  ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত খ প্রতিষ্ঠানটি মালিকানাভিত্তিক কোন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে জনাব আরেফিনকে ক প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে ঋণদায় পরিশোধের নোটিশ প্রদানের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।    ৪

৫ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে পরিণত করা হয় তাকে শিল্প বলে।

 খ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে পরিচালিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যবসায় বলে।

ব্যবসায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। ব্যবসায়িক কাজ বৃদ্ধি পেলে দেশে অধিক শিল্প কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ব্যবসায় স্বকর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এভাবে ব্যবসায় বেকার সমস্যা দূর করে।

 গ উদ্দীপকে বর্ণিত খ প্রতিষ্ঠানটি মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।

কোম্পানি সংগঠন হলো কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত ও পরিচালিত সীমিত দায়বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর এ সংগঠন ব্যবসায় কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

উদ্দীপকের জনাব আরেফিন ক ও খ নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে জড়িত। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে খ প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করে দেয়। এটি কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী হওয়ায় নিজ নামে পরিচালিত হয়। এর সত্তা মালিক থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। এসব বৈশিষ্ট্য কোম্পানি সংগঠনের সাথে মিল রয়েছে। তাই বলা যায়, খ প্রতিষ্ঠানটি মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।

 ঘ উদ্দীপকের ক প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায় হওয়ায় জনাব আরেফিনকে ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান যুক্তিসঙ্গত হয়েছে।

একমালিকানা ব্যবসায় হলো একক মালিকানায় গঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়। যে কেউ ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে এ ব্যবসায় গঠন করতে পারেন। এ ব্যবসায় মালিকের নামেই পরিচালিত হয়। এজন্য ব্যবসায়ের দায় মালিককেই বহন করতে হয়।

উদ্দীপকের জনাব আরেফিন ক নামক প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত। এটি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে। মেয়াদ শেষে ব্যাংকটি জনাব আরেফিনকে ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান করে। অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায়।

এ ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় অসীম। এজন্য বিনিয়োগকৃত মূলধন দিয়ে দায় পরিশোধ করা সম্ভব না হলে, সদস্যদের  ব্যক্তিগত সম্পদ দিয়ে দায় পরিশোধ করতে হয়। তাই উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায় হওয়ায় ব্যাংক জনাব আরেফিনকে ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান  করেছে তিনি এ ঋণ পরিশোধে বাধ্য থাকবেন। সুতরাং বলা যায়, ব্যাংক কর্তৃক জনাব আরেফিনকে ঋণ পরিশোধের নোটিশ প্রদান করা যৌক্তিক হয়েছে।

 প্রশ্ন ৬ মাশরাফি ও তার ৬ বন্ধু মিলে এমন একটি ব্যবসায় সংগঠন গঠন করার জন্য পরিকল্পনা করেন, যাতে জনগণ থেকেও মূলধন সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। তাই তারা প্রয়োজনীয় দলিলপত্রসহ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে একটি সনদ ইস্যু করেন। কিন্তু ব্যবসায় শুরু করার জন্য আরও দলিলপত্রসহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করত হবে। [সি. বো. ১৭]

 ক.   যোগ্যতাসূচক শেয়ার কী? ১

 খ.   তফসিল বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।    ২

 গ.   মাশরাফির ব্যবসায় সংগঠনের মালিকানাভিত্তিক ধরন ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে উল্লিখিত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য মাশরাফিদের করণীয় লেখো।     ৪

৬ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে নির্ধারিত সংখ্যক সাধারণ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানির পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যায়, তাকে পরিচালকের যোগ্যতাসূচক শেয়ার বলে।

 খ কোম্পানির বিধিমালা বা ধারাসমূহের বর্ণনার তালিকাকে তফসিল বলে।

নির্দিষ্ট ধারা বা বিধিমালা অনুযায়ী একটি কোম্পানি গঠিত ও পরিচালিত হয়। তফসিল অ-তে এ ধারাসমূহের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা ও আলোচনা করা হয়। এতে কোম্পানির পরিচালনাসংক্রান্ত যাবতীয় নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ থাকে।

 গ মাশরাফিদের ব্যবসায় সংগঠন মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।

কোম্পানি সংগঠন হলো কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত, পরিচালিত সীমিত ও দায়বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের সংগঠন জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। নিবন্ধনপত্র ও কার্যারম্ভের অনুমিত পত্র গ্রহণের মাধ্যমে এ সংগঠন চালু করা যায়।

উদ্দীপকের মাশরাফি ও তার ৬ বন্ধু মিলে একটি ব্যবসায় সংগঠন গঠন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তারা এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে চায়। এজন্য তারা নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করেন। আবার কার্যারম্ভের জন্য অনুমিতপত্রও গ্রহণ করবেন। এসব কর্মকাণ্ড কোম্পানি সংগঠনের সাথে জড়িত। তাই বলা যায়, মাশরাফিদের ব্যবসায়টি মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।   

 ঘ উদ্দীপকের সংগঠনটির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য মাশরাফিদের কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

নিবন্ধনপত্র সংগ্রহের পর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কাজ শুরুর জন্য অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। এজন্য বিবরণপত্র, যোগ্যতাসূচক শেয়ার ক্রয় ও ন্যূনতম চাঁদা সংগ্রহের ঘোষণা পত্র নিবন্ধকের অফিসে জমা দিতে হয়।

উদ্দীপকের মাশরাফি ও তার ৬ বন্ধু মিলে একটি কোম্পানি সংগঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে তারা প্রয়োজনীয় দলিলপত্রসহ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে একটি সনদ (নিবন্ধনপত্র) ইস্যু করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ব্যবসায় শুরু করার জন্য আরও দলিলপত্রসহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে বলেন।

 উদ্দীপকের মাশরাফিরা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে চান। তাই তাদেরকে নিবন্ধনপত্র সংগ্রহের পাশাপাশি কার্যারম্ভের অনুমিতপত্রও গ্রহণ করতে হবে। আর কার্যারম্ভের অনুমিতপত্র সংগ্রহের জন্য তাদেরকে বিবরণপত্র, যোগ্যতাসূচক শেয়ার ক্রয় ও ন্যূনতম চাঁদা সংগ্রহের ঘোষণাপত্র নিবন্ধকের অফিসে জমা দিতে হবে। এসব আনুষ্ঠানিকতা মাশরাফিদের প্রতিষ্ঠানের জন্য সম্পন্ন করতে হবে।

 প্রশ্ন ৭ জনাব জাকির তার ১০ (দশ) বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা শহরে ‘রনি এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে অনুমতিপত্র গ্রহণের মাধ্যমে তারা ব্যবসায় গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তাদের মূলধনের পরিমাণ ৪৮ কোটি টাকা। দক্ষতা ও সুনামের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে ১৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে। সম্প্রতি তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণের চিন্তা করেন, যার জন্য অতিরিক্ত ২৩ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন, যা শেয়ার বিক্রি অথবা ব্যাংক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন।   [য. বো. ১৭]

 ক.   স্মারকলিপি কী?    ১

 খ.   ইক্যুইটি শেয়ার বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।    ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবসায় সংগঠনটি কোন প্রকৃতির? ব্যাখ্যা করো।  ৩

 ঘ.   উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির কোন উৎস হতে মূলধন সংগ্রহ করা শ্রেয় বলে তুমি মনে করো? যুক্তিসহ মতামত দাও।    ৪

৭ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে মূল দলিলে কোম্পানির মৌলিক বিষয়াবলি (নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, দায়, মূলধন) সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে স্মারকলিপি বা পরিমেলবন্ধ বলে।

 খ যে শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানির মালিক বা অংশীদার হওয়া যায় তাকে ইক্যুইটি শেয়ার বলে।

ইক্যুইটি শেয়ার সাধারণ শেয়ার হিসেবে পরিচিত। এ শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানির পরিচালনার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। কোম্পানির সমস্ত ঝুঁকি তারাই বহন করে। অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করার পর তারা কোম্পানির লভ্যাংশ পায়।

 গ উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবসায় সংগঠনটি হলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন ও সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ। এর শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য। শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ের জন্য এ সংগঠন জনগণকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে। ফলে এর মূলধনের পরিমাণও অধিক হয়। 

উদ্দীপকের জনাব জাকির তার ১০ বন্ধুকে নিয়ে ‘রনি এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ হতে অনুমতিপত্র গ্রহণের মাধ্যমে তারা ব্যবসায় গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এক্ষেত্রে তারা কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র নিয়ে ব্যবসায় শুরু করেন। শুধু পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রেই এটি গ্রহণ করতে হয়। সুতরাং বলা যায়, বৈশিষ্ট্যানুযায়ী উক্ত ব্যবসায় সংগঠনটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

 ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করা শ্রেয় হবে বলে আমি মনে করি।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানির মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এরূপ সংগৃহীত অর্থ ব্যবসায় বিলোপের আগে ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। 

উদ্দীপকের জনাব জাকির তার বন্ধুদের নিয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পনি গঠন করেছেন। দক্ষতা ও সুনামের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে ১৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে। সম্প্রতি তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণের চিন্তা করেন। ফলে তাদের অতিরিক্ত ২৩ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন, যা শেয়ার বিক্রি বা ব্যাংক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করলে ব্যবসায় অবসানের আগে অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি  যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় তাহলে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুদসহ ফেরত দিতে হবে। এটি অধিক ব্যয়বহুল ও ঝামেলাপূর্ণ। তাই ব্যাংক ঋণ না নিয়ে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করাই শ্রেয় হবে।

 প্রশ্ন ৮ জনাব সিফাত ও তার ১০ বন্ধু মিলে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করার উদ্যোগ নেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই করে সন্তুষ্ট হয়ে একটি পত্র ইস্যু করেন। পত্রটি পাওয়ার পর তারা ব্যবসায় আরম্ভ করেন। ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য তারা জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন।  [য. বো. ১৭]

 ক.   হোল্ডিং কোম্পানি কাকে বলে?   ১

 খ.   কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.   উদ্দীপকে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত পত্রটির ধরন ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   মূলধন সংগ্রহের জন্য উদ্দীপকে উল্লিখিত সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।  ৪

৮ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির সব শেয়ার অথবা ৫০%-এর বেশি শেয়ার ক্রয় করার মাধ্যমে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করে তাকে হোল্ডিং কোম্পানি বলে।

 খ যে সত্তা বা অস্তিত্ব বলে কোম্পানি নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলে।

কোম্পানিকে তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা হিসেবে দেখা হয়। এটি ব্যক্তি না হয়েও নিজ নামে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন ও প্রয়োজনে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। এজন্যই কোম্পানিকে কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী বলা হয়।

 গ উদ্দীপকের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত পত্রটি হলো নিবন্ধনপত্র।

 উদ্যোক্তাগণ কোম্পানি আইনের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করে নিবন্ধকের নিকট হতে নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করেন। এরূপ দলিলকে কোম্পানির জš§সনদ বলা হয়। 

উদ্দীপকের জনাব সিফাত ও তার ১০ বন্ধু মিলে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করার উদ্যোগ নেন। প্রয়োজনীয় কাগজসহ তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই করে সন্তুষ্ট হয়ে একটি পত্র ইস্যু করেন। পত্রটি পাওয়ার পর তারা ব্যবসায় আরম্ভ করেন। প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় এ পত্র পাওয়ার পরই ব্যবসায় আরম্ভ করতে পেরেছে। বৈশিষ্ট্যানুযায়ী এ পত্রটি নিবন্ধনপত্রের আওতায় পড়ে। সুতরাং বলা যায়, কর্তৃপক্ষ নিবন্ধনপত্র ইস্যু করেছিল।

 ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া অযৌক্তিক।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি জনসাধারণের নিকট অবাধে শেয়ার ও ঋণপত্রে ক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারে না। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা নিজেরাই মূলধনের ব্যবস্থা করেন। 

উদ্দীপকে উল্লিখিত সিফাত ও তার বন্ধুরা নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই ব্যবসায়ের কাজ শুরু করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় কাজ শুরু করতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। সম্প্রতি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য তারা জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রে তারা শেয়ার বা ঋণপত্র বিক্রয় করতে চান।

প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড  কোম্পানি হওয়ায় তারা জনগণের কাছে অবাধে শেয়ার বা ঋণপত্র বিক্রয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে না। এজন্য তাদের কোম্পানিকে পাবলিক লিমিটেডে পরিণত করতে হবে। কারণ শুধু পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিই জনগণের কাছে অবাধে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয় করতে পারে। সুতরাং উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ার কারণেই জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া কোম্পানি আইনানুযায়ী অযৌক্তিক।

 প্রশ্ন ৯ আধুনিক বিশ্বে কোনো দেশই নিজে একাই ব্যবসায় কাজ করার জন্য যথেষ্ট নয়। কোনো দেশের আছে দক্ষ জনশক্তি আবার কোনো দেশের আছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এজন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে জনশক্তি ও আইসিটি সেবা ভাড়া নেয়।     [ব. বো. ১৭]

 ক.   শেয়ার কী?  ১

 খ.   ন্যূনতম মূলধন বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.   উদ্দীপকে কোন ধরনের সাম্প্রতিককালের ব্যবসায়ের বর্ণনা আছে? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবসায় বেকার সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করতে পারে তুমি কি একমত? মতামত দাও।   ৪

৯ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক কোম্পানির মোট  মূলধনকে সমমূল্যের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করা হয়, যার প্রত্যেক একককে শেয়ার বলে।

 খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পরিমেল নিয়মাবলিতে কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক খরচ নির্ধারণের জন্য যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের প্রতিশ্রুতির উল্লেখ থাকে তাকে ন্যূনতম মূলধন বলে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ ও শেয়ার বিলির পূর্বে ন্যূনতম মূলধন সংগ্রহের কাজ করে। এ মূলধনের অর্থ দিয়ে কোম্পানির প্রাথমিক ব্যয় ও গঠন সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এরূপ মূলধন সংগ্রহ ব্যতীত পাবলিক কোম্পানি কার্যারম্ভের অনুমতি পায় না।

 গ উদ্দীপকে সাম্প্রতিককালের আউটসোর্সিং ব্যবসায়ের বর্ণনা আছে।

চুক্তির মাধ্যমে নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানো হলো আউটসোর্সিং। বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাজ বর্তমানে আউটসোর্সিং- এর মাধ্যমে করা হয়। 

উদ্দীপকে উল্লেখ্য, আধুনিক বিশ্বে কোনো দেশই নিজে একা ব্যবসায় কাজ করার জন্য যথেষ্ট নয়। কোনো দেশের পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তি আছে আবার কোনো দেশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আছে। এজন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে জনশক্তি ও আইসিটি সেবা ভাড়া নেয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে এরূপ কাজ করানো হয়। নির্ধারিত সময়ে ও যথানিয়মে কাজ শেষ হলে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এর বিল পরিশোধ করা হয়। বৈশিষ্ট্যানুযায়ী এরূপ কার্যক্রম আউটসোর্সিং ব্যবসায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে সাম্প্রতিককালের আউটসোর্সিং ব্যবসায়ের বর্ণনা করা হয়েছে।

 ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত ‘আউটসোর্সিং ব্যবসায় দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করতে পারে’- আমি এর সাথে একমত।

একটা প্রতিষ্ঠান সব কাজ নিজে না করে বা সব কাজে নিয়মিত কর্মী নিয়োগ না দিয়ে বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে লোক নিয়ে চুক্তির মাধ্যমে কাজ করিয়ে নিতে পারে। এটি আউটসোর্সিং ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত। 

উদ্দীপকে উল্লেখ্য বর্তমান সময়ে কোনো দেশই নিজে একা ব্যবসায় কাজ করার জন্য যথেষ্ট নয়। অন্য দেশ থেকে জনবল নিয়ে নিজের দেশের আধুনিক যন্ত্রপাতির সহায়তায় ব্যবসায়ের কাজ করানো হচ্ছে। এতে ঐ দেশ আরও উন্নত হচ্ছে।

এ ধরনের আউটসোর্সিং ব্যবসায় চালু হওয়ার ফলে দক্ষ ও বেকার জনশক্তি এখন ভালো কাজের সুযোগ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে ও যথানিয়মে কাজ শেষ হলে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা সহজেই বিল পেয়ে যায়। স্বল্প খরচে ও সহজেই আউটসোর্সিং-এর কাজ নিয়ে বেকার সমাজ খুব দ্রুত নিজেদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে। এদের দেখে অন্য যুবসমাজও ঘরে বসে না থেকে আউটসোর্সিং-এর কাজে নিজেদের দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় এটি বেকার সমস্যা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্ন ১০ মাহী সাত জন উদ্যোক্তা নিয়ে পদ্মা লি. নামে একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করে। কোম্পানির স্মারকলিপিতে ২০ কোটি টাকা মূলধনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা ১,০০০ টাকা মূল্যের সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত। কোম্পানি গঠনের পাঁচ বছর পর মেঘনা লি. কোম্পানি পদ্মা লি. কোম্পানির ৫৫% শেয়ার কিনে নেয়। ফলে মেঘনা লি. পদ্মা লি. কোম্পানির অধিকাংশ পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা লাভ করে।    [ঢা. বো. ১৬]

 ক.   পাবলিক লি. কোম্পানির ন্যূনতম পরিচালক সংখ্যা কত?    ১

 খ.   কোম্পানি সংগঠন কীভাবে মূলধন গঠনে ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.   সূত্রের সাহায্যে পদ্মা লি. কোম্পানির বর্তমান শেয়ার সংখ্যা নির্ণয় করো।  ৩

 ঘ.   পদ্মা লি. কোম্পানি ও মেঘনা লি. কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করো।      ৪

১০ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ন্যূনতম পরিচালক সংখ্যা তিনজন।

 খ কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত ও পরিচালিত কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী সীমিত দায়বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি সংগঠন বলে।

কোম্পানি সংগঠনে সদস্য সংখ্যা অধিক থাকে। এতে অধিক মূলধন সংগ্রহ হয়। আবার প্রয়োজনে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বাজারে শেয়ার ছাড়তে পারে। কোম্পানি আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান বলে ব্যাংকও ঋণ দিতে উৎসাহী হয়। এভাবেই কোম্পানি সংগঠন মূলধন গঠনে ভূমিকা রাখে।

 গ আইন অনুযায়ী কোম্পানি সংগঠনের মোট মূলধনকে নির্দিষ্ট সমমূল্যের ক্ষুদ্র ও সমান এককে ভাগ করা হয়। এর প্রত্যেকটি ক্ষুদ্রতম ভাগই হলো একেকটি শেয়ার।

পদ্মা লি. কোম্পানির স্মারকলিপিতে ২০ কোটি টাকা মূলধনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা ১,০০০ টাকা মূল্যের সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত। অর্থাৎ কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা হলো ২,০০,০০০। কোম্পানির ৫৫% শেয়ার মেঘনা লি. কিনে নেয়। পদ্মা লি. কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৪৫% বা ২,০০,০০০ এর ৪৫১০০  বা ৯০,০০০ সংখ্যক শেয়ার। অর্থাৎ, পদ্মা লি.-এর বর্তমান শেয়ার ৯০,০০০।

 ঘ পদ্মা লি. সাবসিডিয়ার কোম্পানি এবং মেঘনা লি. কোম্পানি হোল্ডিং কোম্পানি হওয়ায় এদের মধ্যে বহুবিধ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

যদি কোনো কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির ৫০ ভাগের বেশি শেয়ারের মালিক হয় তাকে হোল্ডিং কোম্পানি বলে। আর কোম্পানি আইনের ২(২) ধারা অনুযায়ী কোনো কোম্পানির ৫০ ভাগের বেশি শেয়ার অন্য কোম্পানির অধীনে থাকলে তাকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বলে।

মাহী সাতজন উদ্যোক্তা নিয়ে পদ্মা লি. নামে কোম্পানি গঠন করে। কোম্পানি গঠনের ৫ বছর পর মেঘনা লি. পদ্মা লি. কোম্পানির ৫৫% শেয়ার কিনে নেয়। ফলে মেঘনা লি. কোম্পানি পদ্মা লি. কোং-এর অধিকাংশ পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা লাভ করে।

বর্তমান শর্ত অনুযায়ী ৫৫% শেয়ার ক্রয় করায় মেঘনা লি. হলো হোল্ডিং কোম্পানি। আইনানুযায়ী মেঘনা লি. কোম্পানি মোট ভোট দান ক্ষমতা বেশি পাবে। আবার সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হওয়ায় পদ্মা লি. প্রতিষ্ঠানটিতে ভোট দান ক্ষমতা হ্রাস পাবে। এতে পরিচালকও নিয়োগ হবে মেঘনা লি.-এর মাধ্যমে। তাই বলা যায়, মেঘনা লি. ও পদ্মা লি.-এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

 প্রশ্ন ১১ ABC একটি সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি সংগঠন। তারা সম্প্রতি ১০০টি সফটওয়্যার তৈরির অর্ডার পায়। তাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ লোকবল নেই। তাই তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পাদনের জন্য মুন কোম্পানিকে চুক্তির ভিত্তিতে ৩০টি সফটওয়্যার তৈরির দায়িত্ব দেয়। দক্ষ লোকবলের অভাবে পরবর্তীতে ABC কোম্পানি নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। তাই তারা বিকল্প সমাধান না পেয়ে কোম্পানি বিলোপসাধনের সিদ্ধান্ত নেয়।

 [ঢা. বো. ১৬]

 ক.   কোম্পানির বিলোপসাধন কী?    ১

 খ.   ব্যবসায়ের সহায়ক সেবা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।  ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত ABC কোম্পানি কর্তৃক মুন কোম্পানি দ্বারা কাজ করিয়ে নেওয়া কোন ধরনের ব্যবসায়? ব্যাখ্যা করো।  ৩

 ঘ.   ABC কোম্পানি বিলোপসাধনের পদ্ধতি বিশ্লেষণ করো।     ৪

১১ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক কোম্পানির সব সম্পত্তির আর্থিক মূল্য নির্ধারণ, বিক্রয়, ঋণ, পরিশোধ, শেয়ারহোল্ডারদের দাবি পরিশোধ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানির আইনানুগ সত্তার সমাপ্তি করাকে কোম্পানির বিলোপসাধন বলা হয়।

 খ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে গঠন ও পরিচালনায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যে সেবার প্রয়োজন পড়ে তাকে ব্যবসায়ের সহায়ক সেবা বলে।

ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় সফলভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এজন্য শুধু নিজের বুদ্ধিমত্তা বা সামর্থ্য দিয়ে সব কাজ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। এক্ষেত্রে অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য-সহযোগিতা নিতে হয়। আর অন্যের সাহায্য-সহযোগিতাই হলো ব্যবসায়ের সহায়ক সেবা।

 গ ABC কোম্পানি কর্তৃক মুন কোম্পানি দ্বারা কাজ করিয়ে নেওয়া  হলো আউটসোর্সিং ব্যবসায়।

চুক্তির মাধ্যমে কোনো কাজ করে দেওয়া বা করিয়ে নেওয়া কিংবা কাজ করতে সহায়তা নেওয়াকে আউটসোর্সিং ব্যবসায় বলে। এতে একটা প্রতিষ্ঠান সব কাজ নিজেরা না করে অন্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়। যারা আউটসোর্সিং-এর কাজ করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বলে।

ABC একটি সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি সংগঠন। তারা সম্প্রতি ১০০টি সফটওয়্যার তৈরির অর্ডার পায় কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত জনবল নেই। তাই তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে করার জন্য মুন কোম্পানিকে চুক্তির ভিত্তিতে ৩০টি সফটওয়্যার তৈরির দায়িত্ব দেয়। ABC কোম্পানি থেকে চুক্তি মোতাবেক মুন কোম্পানি এ ৩০টি সফটওয়্যার তৈরির বিনিময়ে অর্থ পাবে। ফলে ABC কোম্পানি যেমন সময়মতো কাজ সম্পাদন করতে পারবে, তেমনি প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনে সমর্থ হবে। অর্থাৎ, ABC কোম্পানির প্রতিষ্ঠানের বাইরে হতে কাজ করিয়ে নেওয়ার কর্মপ্রক্রিয়া হলো আউটসোর্সিং।

  ফ্রিল্যান্সার অর্থ হলো মুক্ত বা স্বাধীন।

 ঘ ABC কোম্পানির আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন হবে।

শেয়ার মালিক বা পাওনাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে বা অন্য কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণে আদালত কোম্পানির বিলোপসাধনের নির্দেশ দিলে তাকে আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন বলে। পরিচালনায় অচলাবস্থা, মূল উদ্দেশ্য অর্জনে অক্ষম। এ কারণে কোম্পানির বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন হয়।

ABC কোম্পানি ১০০টি সফটওয়্যার তৈরির অর্ডার পায় যা জনবলের অভাবে আউটসোর্সিং দ্বারা অর্ডার সম্পন্ন করে। দক্ষ লোকবলের অভাবে পরবর্তীতে ABC কোম্পানির নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। তাই তারা বিকল্প সমাধান না পেয়ে কোম্পানি বিলোপের সিদ্ধান্ত নেয়।

কোম্পানিটি এ অবস্থায় আদালতের আশ্রয় নিলে আদালত কর্তৃক বিলোপসাধান ঘটবে। আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক বিলোপ নানান কারণে (কাজের শুরু, ব্যর্থতা, ঋণ পরিশোধে অক্ষমতা, পরিচালনায় অচলাবস্থা) হয়ে থাকে। ABC প্রতিষ্ঠানটির জনবলের অভাবে পরিচালনায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি আদালতের আশ্রয় নিলে আদালত কর্তৃক বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন ঘটবে।

 প্রশ্ন ১২ মি. আজাদ ২০ জন বন্ধু নিয়ে ২০১৩ সালে একটি কম্পোজিট টেক্সটাইল ‘জাইটেক্স লি’. স্থাপন করেন। ভোক্তাদের রুচি ও প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে আসছে। তাদের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে ২৫% স্টক ও ১০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ২০১৭ সালে তারা কারখানা সম্প্রসারণের চিন্তা-ভাবনা করছেন। বিভিন্ন কারণে বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক বেশি।     [রা. বো.; চ. বো. ১৬]

 ক.   অবলেখক কী?     ১

 খ.   আউটসোর্সিং ব্যবসায়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।   ২

 গ.   উদ্দীপকের ব্যবসায় সংগঠনটি কোন প্রকৃতির? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রতিষ্ঠানটির কোন উৎস হতে অর্থসংস্থান করা যুক্তিযুক্ত বলে তুমি মনে করো?   ৪

১২ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের জন্য যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন বা চুক্তিবদ্ধ হন তাদের কাজকে অবলেখক বলে।

 খ চুক্তির মাধ্যমে নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে।

কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সব কাজ নিজের ব্যবস্থাপনার আওতায় লোক দিয়ে করানো সম্ভব হয় না। আবার অতিরিক্ত চাহিদা বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত পণ্য উৎপাদনের জন্য স্বল্প সময়ে লোক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না। কেননা এতে খরচ ও প্রশাসনিক জটিলতা বাড়ে। তখন অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি করিয়ে নিজ কাজ আদায় অনেক সহজ হয়। তাই স্বল্প খরচে ও সহজে কাজ পেতে আউটসোর্সিং ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ।

গ উদ্দীপকে ব্যবসায় সংগঠনটি কোম্পানি সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। এ ধরনের কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ। এ কোম্পানি শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এ কোম্পানির মুনাফা অর্জিত হলে শেয়ারহোল্ডার ও স্টক হোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করে।

মি. আজাদ ২০ জন বন্ধু নিয়ে ২০১৩ সালে ‘জাইটেক্স লি.’ স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটি দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করছে। যার ফলে ভোক্তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে তাদের অর্জিত মুনাফা থেকে ২৫% স্টক ও ১০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। তাই বলা যায়, এটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার বিক্রি করে অর্থসংস্থান করা যুক্তিযুক্ত বলে আমি মনে করি।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি মূলধন সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রয় করতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে মূলধন সংগ্রহের অন্যতম উৎস। এরূপ সংগৃহীত অর্থ ব্যবসায় বিলোপসাধন না হওয়া পর্যন্ত ফেরত দিতে হয় না।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে মুনাফা অর্জন করে। তাই তারা ২০১৭ সালে তাদের কারখানা সম্প্রসারণের চিন্তা-ভাবনা করে। তারা শেয়ার বিক্রয় ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে। তবে তাদের জন্য শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করা উপযুক্ত হবে।

বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক বেশি। তারা যদি ব্যাংক ঋণ নিয়ে অর্থসংস্থান করে তাহলে মূলধন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। আর মূলধন ব্যয় বৃদ্ধি পেলে মুনাফার পরিমাণ কমে যাবে। তারা যদি শেয়ার বিক্রি করে তাহলে মূলধন ব্যয় অপেক্ষকৃত কম হবে। এটি মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এসব দিক বিবেচনায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা যৌক্তিক হবে।

 প্রশ্ন ১৩ এবিসি ফ্যাশন চিরন্তন অস্তিত্ববিশিষ্ট একটি গার্মেন্টস শিল্প। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। তাই দেশের স্বনামধন্য পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আনন্দ ফ্যাশন লি. এবিসি ফ্যাশনের ৫০%-এর অধিক শেয়ার ক্রয় করে নেয় এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এবিসি ফ্যাশনসের নীতিনির্ধারণের ক্ষমতা আনন্দ ফ্যাশনসের কাছে চলে আসে। [দি. বো. ১৬]

 ক.   স্মারকলিপি কী?    ১

 খ.   কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.   এবিসি ফ্যাশনসের শেয়ার ক্রয় করে আনন্দ ফ্যাশনস্ নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে যে সংগঠন গঠন করে তার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করো।  ৩

 ঘ.   অধিকাংশ শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে এবিসি কোম্পানির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন করো।    ৪

১৩ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে মূল দলিলে কোম্পানির মৌলিক বিষয়াবলি (নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, দায়, মূলধন, সম্মতি) সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে স্মারকলিপি বা পরিমেলবন্ধ বলে।

 খ যে সত্তা বা অস্তিত্ব বলে কোম্পানি নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলে।

কোম্পানিকে তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডারদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা হিসেবে দেখা হয়। এটি সংগঠন ব্যক্তি না হয়েও নিজ নামে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন ও প্রয়োজনে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। এছাড়া এটি নিজস্ব নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় এবং নিজস্ব সীলমোহর ব্যবহার করে।

 গ এবিসি ফ্যাশনসের শেয়ার ক্রয় করে আনন্দ ফ্যাশনস নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে যে সংগঠন গঠন করে তা একটি হোল্ডিং কোম্পানি।

যদি কোনো কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির ৫০%-এর অধিক শেয়ারের মালিক বা ভোট দানের ক্ষমতা অধিকার করে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অধিকাংশ পরিচালক নিয়োগ করে, তবে ঐ কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণকারী বা হোল্ডিং কোম্পানি বলে।

এবিসি ফ্যাশন একটি চিরন্তন অস্তিত্ববিশিষ্ট কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে প্রতিষ্ঠানে টিকে থাকতে পারছে না। তাই দেশের স্বনামধন্য পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আনন্দ ফ্যাশন লি. উক্ত কোম্পানির ৫০%-এর অধিক শেয়ার ক্রয় করে এবং পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেয়।  সুতরাং, আনন্দ ফ্যাশন একটি হোল্ডিং কোম্পানি।

 ঘ অধিকাংশ শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে এবিসি কোম্পানি বর্তমানে একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়েছে।

কোনো কোম্পানির ৫০%-এর বেশি শেয়ার বা ভোট দান ক্ষমতা অন্য কোনো কোম্পানির অধীনে থাকলে তাকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বলে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ কোম্পানি নিয়োগ করে।

এবিসি ফ্যাশন চিরন্তন অস্তিত্ববিশিষ্ট একটি গার্মেন্টস শিল্প। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। তাই আনন্দ ফ্যাশন লি. নামের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ৫০% অধিক শেয়ার ক্রয় করে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আনন্দ ফ্যাশন লি.-এর কাছে চলে যায়।

এবিসি ফ্যাশনসের ৫০%-এর অধিক শেয়ার আনন্দ ফ্যাশনস ক্রয় করে নেওয়ায় এবিসি ফ্যাশনসের নীতিনির্ধারণ ক্ষমতাও আনন্দ ফ্যাশনসের কাছে চলে গেছে। তাই এবিসি ফ্যাশনস সাংগঠনিকভাবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 প্রশ্ন ১৪ জনাব রায়হান তার আরও ৬ বন্ধুকে নিয়ে ‘বন্ধন’ নামের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তাবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রতিষ্ঠানটি স্মারকলিপি তৈরি করলেও কোম্পানি আইনে বর্ণিত তফসিল-১-কে পরিমেল নিয়মাবলি হিসেবে গ্রহণ করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি একটি নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য শেয়ার ছাড়ার কথা চিন্তা করছেন যাতে মালিকানাস্বত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।    [কু. বো. ১৬]

 ক.   শেয়ার কী? ১

 খ.   ঋণপত্র বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।     ২

 গ.   উদ্দীপকে উল্লিখিত কোম্পানিটির ধরন ব্যাখ্যা করো।  ৩

 ঘ.   প্রতিষ্ঠানটির করণীয় বিশ্লেষণ করো।    ৪

১৪ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক কোম্পানি সংগঠনের অনুমোদিত মোট শেয়ার মূলধনের সমান ও ক্ষুদ্র অংশের একককেই শেয়ার বলে।

 খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যে দলিলের মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাকে ঋণপত্র বলে।

কোম্পানির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হলে ঋণপত্র বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে। এটি মূলধন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এজন্য নির্দিষ্ট হারে সুদও দিতে হয়। ঋণপত্রে এ ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, ঋণের মেয়াদ প্রভৃতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

 গ উদ্দীপকে উল্লিখিত কোম্পানিটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন ও সর্বোচ্চ শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রি করতে পারে তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে। বৃহৎ আকারের মূলধন সংগ্রহের জন্য পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠন করা হয়।

জনাব রায়হান তার আরও ৬ বন্ধুকে নিয়ে ‘বন্ধন’ নামের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তাবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তারা মোট সাতজন অর্থাৎ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠনের সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যার যে শর্ত তা পূরণ হয়েছে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে নাম ঠিক করে স্মারকলিপি ও পরিমেল নিয়মাবলিসহ নিবন্ধক বরাবর আবেদন করতে হয়। জনাব রায়হান ও তার ৬ বন্ধু কোম্পানির নাম ‘বন্ধন’ ঠিক করে এবং নিবন্ধক সন্তুষ্ট হয়ে আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটি কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা লাভ করেছে। এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

 ঘ উদ্দীপকের ‘বন্ধন’ নামের প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় হলো রাইট শেয়ার ইস্যু করা।

কোনো কোম্পানি অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নতুন শেয়ার বাজারে ছাড়ার সময় পুরাতন শেয়ার মালিকদের অগ্রাধিকার দিয়ে যে নতুন শেয়ার ইস্যু করে তাকে রাইট শেয়ার বা অধিকারযোগ্য শেয়ার বলে। শেয়ারের দাম বেশি হলে নতুন ইস্যুকৃত শেয়ারে পুরাতন মালিকগণ তাদের স্বার্থ দাবি করতে পারে।

উদ্দীপকে ৭ জন সদস্য ‘বন্ধন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য শেয়ার ছাড়ার চিন্তা করছে। কিন্তু শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে মালিকানাস্বত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার চিন্তা করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে পুরাতন শেয়ার মালিকদের অগ্রাধিকার প্রদানের চিন্তা করছে। এ পুরাতন শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যু করলে নতুন মালিকানাস্বত্ব সৃষ্টি হবে না। আবার মূলধনও সংগৃহীত হবে। উক্ত পরিস্থিতিতে এ ধরনের শেয়ার ঝামেলামুক্ত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি অধিকারযোগ্য শেয়ার ইস্যু করতে পারে।

 প্রশ্ন ১৫ জনাব হাফিজ ৪০ জন সদস্য নিয়ে একটি কোম্পানি গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উক্ত কোম্পানি গঠনের জন্য একটি মুখ্য দলিল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আরেকটি দলিলের পরিবর্তে কোম্পানি আইনের তফসিল-১-কে তারা কোম্পানির জন্য গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে তারা নিবন্ধন পেলেও কাজকর্ম শুরু করতে পারছেন না।

 [সি. বো. ১৬]

 ক.   স্মারকলিপি কী?    ১

 খ.   কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।   ২

 গ.   উদ্দীপকে কোন দলিলটি পৃথকভাবে প্রয়োজন পড়েনি? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   জনাব হাফিজের প্রতিষ্ঠানটি কি আদৌ বাণিজ্যিক কাজ শুরু করতে পারবে? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪

১৫ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে মূল দলিলে কোম্পানির মৌলিক বিষয়াবলি (নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, দায়, মূলধন, সম্মতি) সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে স্মারকলিপি বা পরিমেলবন্ধ বলে।

 খ কোম্পানির নিবন্ধক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে এর স্বাভাবিক ব্যবসায় কাজ আরম্ভ করার অনুমতি দিয়ে যে সনদ প্রদান করে তাকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র বা ছাড়পত্র বলে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন পাওয়ার পরপরই তার কার্য আরম্ভ করতে পারে না। এ কোম্পানিকে কাজ শুরু করার জন্য অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার সাথে সাথেই কাজ শুরু করতে পারে। অর্থাৎ কার্যারম্ভের অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে না।

 গ উদ্দীপকে পরিমেল নিয়মাবলি দলিলটি আলাদাভাবে প্রয়োজন পড়েনি।

কোম্পানির অভ্যন্তরীণ পরিচালনা ও যাবতীয় বিষয়াদি ও নিয়মাবলি যে দলিলে অন্তর্ভুক্ত থাকে তাকে সংঘবদ্ধ বা পরিমেল নিয়মাবলি বলে। ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী এটি কোম্পানির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

জনাব হাফিজ ৪০ জন সদস্য নিয়ে একটি কোম্পানি গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উক্ত কোম্পানি গঠনের জন্য মুখ্য দলিল অর্থাৎ স্মারকলিপি তৈরি করেছেন। কিন্তু কোম্পানির আরেকটি দলিলের পরিবর্তে কোম্পানি আইনের তফসিল-১ গ্রহণ করেছেন। কোম্পানি আইনের তফসিল-১-এ কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কার্যাবলির পূর্ণ বিবরণ দেওয়া থাকে। ফলে তফসিল-১ ব্যবহার করলে পরিমেল নিয়মাবলির প্রয়োজন পড়ে না। তাই জনাব হাফিজের কোম্পানিতে পরিমেল নিয়মাবলি দলিলটি আলাদাভাবে তৈরির প্রয়োজন পড়েনি। 

 ঘ জনাব হাফিজের প্রতিষ্ঠানটি কার্যারম্ভের অনুমতিপত্রের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরম্ভ করতে পারবে।

কোম্পানির নিবন্ধক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে এর স্বাভাবিক ব্যবসায় কাজ শুরু করার জন্য অনুমতি দিয়ে যে সনদ প্রদান করে তাকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র বলে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন পাওয়ার সাথে সাথে কাজ শুরু করতে পারে না। তাকে কার্যারম্ভের অনুমতি পত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

জনাব হাফিজ ৪০ জন সদস্য নিয়ে কোম্পানি গঠন করেছেন। কোম্পানিটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। যার ফলে তারা নিবন্ধন পেলেও কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র না থাকার কারণে বাণিজ্যিক কাজ শুরু করতে পারছে না।

কোম্পানি আইনের ৫০ ধারা অনুযায়ী কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র লাভের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিবন্ধকের অফিসে জমা দিতে হবে। নিবন্ধক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে সন্তুষ্ট হলে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র প্রদান করবেন। আর কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র পেলেই জনাব হাফিজের প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিক কাজ শুরু করতে পারবে।

 প্রশ্ন ১৬ আর সি লি. একটি স্বনামধন্য কোম্পানি। জয় ও বিজয় ঐ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। জয়ের কাছে ২,০০,০০০ টাকার শেয়ার আছে। তিনি নির্দিষ্ট হারে কোম্পানি হতে লভ্যাংশ পান। অন্যদিকে বিজয়ের নিকট ১,০০,০০০ টাকার শেয়ার আছে। তিনি জয়ের পরে লভ্যাংশ পান এবং লভ্যাংশের হার প্রতিবছর সমান থাকে না। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য একটি সভা আহ্বান করে।

 [ব. বো. ১৬]

 ক.   স্মারকলিপি কী?    ১

 খ.   বিবরণপত্র কেন তৈরি করা হয়? ব্যাখ্যা করো। ২

 গ.   আর সি লি.-এ জয় কোন ধরনের শেয়ারহোল্ডার? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.   আর সি লি.-এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জয় ও বিজয়ের মধ্যে কার অগ্রাধিকার বেশি? মতামত দাও।      ৪

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর

 ক যে মূল দলিলে কোম্পানির মৌলিক বিষয়াবলি (নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, দায়, মূলধন, সম্মতি) সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে স্মারকলিপি বা পরিমেলবন্ধ বলে।

 খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের জন্য কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করে যে বিজ্ঞপ্তি বা প্রচারপত্র পত্রিকায় প্রকাশ করে তাকে বিবরণপত্র বলে।

শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ে জনগণকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বিবরণপত্র তৈরি করা হয়। মূলত মূলধন গঠনের জন্যই বিবরণপত্র তৈরি ও প্রকাশ করা হয়।

 গ আর সি লি.-এ জয় একজন অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডার।

যে শেয়ারের মালিকগণ লাভ ও মূলধন ফেরতের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বা সবার আগে সুযোগ পান সেই শেয়ারকে অগ্রাধিকার শেয়ার বলে।

জয় আর সি লি. কোম্পানির ২,০০,০০০ টাকার শেয়ার ক্রয় করেন। তিনি নির্দিষ্ট হারে কোম্পানি থেকে লভ্যাংশ পান। জয়ের লভ্যাংশের হার প্রতিবছর সমান থাকে। অর্থাৎ জয় যে বিনিয়োগ করেছেন তার ফলে কোম্পানিটি প্রতিবছর নির্দিষ্ট হারে মুনাফা প্রদান করে। অগ্রাধিকার শেয়ারের বৈশিষ্ট্যের সাথে এর মিল আছে। সুতরাং জয় একজন অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডার যিনি লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং মূলধন ফেরতে অগ্রাধিকার পান।

 ঘ আর সি লি.-এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জয় ও বিজয়ের মধ্যে বিজয়ের অগ্রাধিকার বেশি।

অগ্রাধিকার শেয়ারমালিকদের লভ্যাংশ প্রদানের পর যাদের লভ্যাংশ প্রদান করা হয় তারাই সাধারণ শেয়ারহোল্ডার। সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররাই কোম্পানি পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং ভোটের অধিকার পেয়ে থাকে।

জয় একজন অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডার এবং বিজয় একজন সাধারণ শেয়ারহোল্ডার। জয় প্রতিবছর নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পাবেন কিন্তু বিজয়ের লভ্যাংশের হার নির্দিষ্ট নয়। একজন অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডার হিসেবে জয় আগে মুনাফা ভোগে সুবিধা পেলেও তার ভোটাধিকার নেই। অর্থাৎ কোম্পানির সভায় তিনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

একজন সাধারণ শেয়ারহোল্ডার হিসেবে বিজয় কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি সেখানে ভোটের মাধ্যমে পরিচালক নির্বাচন করেন এবং কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখেন। সুতরাং শেয়ারের ধরন বিবেচনায় আইনগতভাবে জয় এবং বিজয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিজয়ের অগ্রাধিকার বেশি।

 প্রশ্ন ১৭ মি. কালাম ও তার উনিশজন বন্ধু মিলে নীলাচল টেক্সটাইল নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি ভোক্তার রুচি ও প্রত্যাশা অনুসারে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে আসছে। তাদের দক্ষ-ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়ায় ২০১৭ সালে ৩০% নগদ লভ্যাংশ ও ২০% স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করে। আগামী বছর তারা কারখানা সম্প্রসারণের চিন্তাভাবনা করছে। তাই মূলধনের প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ ব্যবসা সম্প্রসারণ করেও তাদের ভোটের শতকরা হার হারাতে চায় না।  [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]

 ক.   আউটসোর্সিং কী?   ১

 খ.   নিজস্ব সিলমোহর কেন ব্যবহার করা হয়? ব্যাখ্যা করো।    ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত “নীলাচল টেক্সটাইল” কোন ধরনের সংগঠন? বর্ণনা করো।  ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য কোনো অপ্রাতিষ্ঠানিক দীর্ঘমেয়াদী উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করা যুক্তিযুক্ত বলে তুমি মনে করো। তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।      ৪

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক চুক্তির মাধ্যমে নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে।

খ কোম্পানির প্রতিনিধির বৈধতা কোম্পানির সাধারণ সিলমোহর দ্বারা নির্বাচিত হয় বিধায় কোম্পানি নিজস্ব সিলমোহর ব্যবহার করে।  

কোম্পানি কৃত্রিম ব্যক্তি হওয়ার কারণে সব কাজেই তাকে প্রতিনিধির ওপর নির্ভর করতে হয়। উক্ত প্রতিনিধির বৈধতা কোম্পানির সাধারণ সিলমোহর দ্বারা নির্বাচিত হয়ে থাকে। কোম্পানির সব কাগজপত্র এরূপ সিলের ব্যবহার আবশ্যক। কোম্পানির নিজস্ব সিল ছাড়া এরূপ কাগজপত্র আইনগতভাবে  বৈধ হয় না। তাই কোম্পানির সব কাগজপত্র কোম্পানির নিজস্ব সিলমোহর ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।

গ উদ্দীপকে বর্ণিত “নীলাচল টেক্সটাইল” পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সংগঠনের অন্তর্গত।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সম্পর্কে ৭ জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়। এ কোম্পানির মূলধনের প্রয়োজন হলে বাজারে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করে। এক্ষেত্রে কোম্পানির সপক্ষে ৩ জন পরিচালক থাকতে হয়।

উদ্দীপকে মি. কামাল ও তার উনিশজন বন্ধু মিলে “নীলাচল টেক্সটাইল” নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ভোক্তাদের রুচি ও প্রত্যাশা অনুসারে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে। তাদের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়ে ওঠে। এরই ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালে ৩০% নগদ লভ্যাংশ ও ২০% স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করে। উক্ত লভ্যাংশ ঘোষণা একমাত্র পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পক্ষেই সম্ভব। তাই বলা যায়, “নীলাচল টেক্সটাইল” একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকের বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য অপ্রতিষ্ঠানিক দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে সঞ্চিত তহবিল থেকে অর্থ সংগ্রহ করা অধিক যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমি মনে করি।

কোম্পানি তার অর্জিত মুনাফার সবটুকু অংশ লভ্যাংশ হিসেবে প্রতিবছর বণ্টন করে না। এক্ষেত্রে তারা কিছু অংশ সঞ্চিতি হিসেবে জমা রাখে। উক্ত সঞ্চিতি অর্থ কোম্পানি যখন মূলধন সংকটে পড়ে তখন ব্যবহার করে।

উদ্দীপকে মি. কালাম তার উনিশজন বন্ধু নিয়ে “নীলাচল টেক্সটাইল” নামক একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটির দক্ষ ব্যবস্থাপনায় অল্প সময়ের মধ্যেই একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালে ৩০% নগদ ও ২০% স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী বছরে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণেরও চিন্তাভাবনা করছে। এমতাবস্থায় তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণ করলেও তাদের ভোটের শতকরা হার হারাতে চায় না।

বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির উচিত তাদের সঞ্চিতি তহবিল ব্যবহার করা। কারণ শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানি মূলধন সংগ্রহ করলে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এছাড়াও উক্ত শেয়ার মালিকরাই কোম্পানির ভোটদানের অধিকার অর্জন করবে। কিন্তু কোম্পানি এদের ভোটের শতকরা হার কমাতে চায় না। তাই আমি মনে করি, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির উচিত শেয়ার বিক্রয় না করে সঞ্চিতি তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা।

 প্রশ্ন ১৮ সম্প্রতি দিকদর্শন লি.-এর শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ে একটি সভা কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় পরিচালনা পর্ষদ গঠন, ২৫% নগদ লভ্যাংশ প্রদান এবং কোম্পানির একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য কিছু নতুন শেয়ার ইস্যু অথবা ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা হবে।

      [নটর ডেম কলেজ, ঢাকা]

 ক.   রাইট শেয়ার কী?  ১

 খ.   কোম্পানি সংগঠন অনেকের নিকট পছন্দের কারণ কী?     ২

 গ.   কক্সবাজারে দিকদর্শন লি.-এর কোন ধরনের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তুমি মনে করো? এ ধরনের সভা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ বলে তুমি মনে করো?     ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে উল্লেখ দিকদর্শন লিঃ কোম্পানিকে কোন পদ্ধতিতে নতুন প্রকল্পে অর্থায়ন করা উচিত বলে তুমি মনে করো? তোমার সপক্ষে যুক্তি দেখাও।       ৪

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক নতুন শেয়ার ইস্যু করার ক্ষেত্রে বর্তমান শেয়ারমালিকদের অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের আগের ক্রয়ক্রত শেয়ারের অনুপাতে যে শেয়ার ইস্যু করা হয় তাকে রাইট শেয়ার বলে। ই

খ কোম্পানি সংগঠনের অস্তিত্বের কারণে অনেকের কাছে এটি পছন্দের।

কোম্পানি একটি আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। আইনের মাধ্যমে এটি গঠিত ও পরিচালিত হয় বলে এটি পৃথক সত্তা বিশিষ্ট চিরন্তন অস্তিত্বের অধিকারী। এর সকল শেয়ারহোল্ডার মারা গেলেও এর অস্তিত্বের কোনো সমস্যা হয় না। এজন্য বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে, পাওনাদার, ব্যাংকার, সরবরাহকারীসহ সকলের নিকট কোম্পানি সংগঠন পছন্দনীয়।

গ উদ্দীপকে কক্সবাজারে দিকদর্শন লি.-এর বাৎসরিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে এরূপ সভা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

যৌথমূলধনী ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে বছরে একবার শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ে সাধারণ সভা আহ্বান করতে হয়। এ সভায় নতুন পরিচালক নির্বাচন, লভ্যাংশ বণ্টনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ব্যবসায় সম্প্রসারণ বা বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র অনুমোদন ইত্যাদি বিষয়ে শেয়ার হোল্ডারদের মতামত নেওয়া হয়। তাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য এরূপ সভা আহ্বান করা জরুরি।

উদ্দীপকের দিকদর্শন লি.-এর শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ে একটি সভা কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় পরিচালনা পর্ষদ গঠন, ২৫% নগদ লভ্যাংশ প্রদান এবং কোম্পানির একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি একটি বাৎসরিক সাধারণ সভা আহ্বান করেছে। প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এরূপ সভায় গ্রহণ করা হয়। শেয়ারহোল্ডারগণ তাদের মতামত প্রকাশ বা ভোটাধিকার এরূপ সভায় প্রয়োগ করতে পারে। তাই এটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের নতুন প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য ঋণপত্র বিক্রয় করা অধিক যুক্তিসঙ্গত হবে।

পাবলিক লি. কোম্পানি ঋণের স্বীকৃতি হিেেসব ঋণপত্র ইস্যু করে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান স্বল্প মেয়াদে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থের সংস্থান করে থাকে।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। উদ্দীপকের বর্ণনায় প্রতীয়মান হয় যে, এটি একটি প্রতিষ্ঠিত ও প্রসিদ্ধ কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি ২৫% নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে।

প্রতিষ্ঠানটি যদি নতুন শেয়ার ইস্যু করে তাহলে পরবর্তীতে তাদের শেয়ারপ্রতি লভ্যাংশের পরিমাণ কমে যেতে পারে। অপরদিকে ঋণপত্র ইস্যু করলে ঋণপত্রের সুদের পরিমাণ কম থাকায় শেয়ার প্রতি লভ্যাংশের পরিমাণের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। আবার ঋণপত্রের সুদ এক ধরনের খরচ বিধায় এটি আয়-ব্যয় হিসাবে প্রদর্শনের মাধ্যমে নিট মুনাফা কম প্রদর্শিত হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের পরিমাণ অনেক কমে আসে। এছাড়া প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এর ঋণপত্র বিক্রয় করাও সহজ হবে। তাই প্রতিষ্ঠানটির নতুন শেয়ার ইস্যু  না করে ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে নতুন প্রকল্পের অর্থের যোগান দেয়া উচিত।

 প্রশ্ন ১৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮  শিক্ষার্বষের মার্কেটিং বিভাগের ৩০ জন বন্ধু একত্রিত হয়ে ‘অনিমা নকশি কাঁথা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানের বিবরণসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোং থেকে নিবন্ধন পাওয়ার সাথে সাথেই কোম্পানিটি উৎপাদনে যায় এবং উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে। ব্যাপক সুনামের সাথে তারা তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করছিলেন। প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও তাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে চাহিদামতো পণ্য রপ্তানি করতে পারছিলেন না। এজন্য তারা বর্তমানে অধিক মূলধন সংগ্রহ, শেয়ার হস্তান্তর সুবিধা সম্বলিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিলেন।      [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]

ক.    শেয়ার কী?  ১

খ.    বিবরণ পত্র বলতে কী বোঝায়?  ২

গ.    প্রথম পর্যায়ের ‘অনিমা নকশি কাঁথা লি.’ এর সাংগঠিনক ধরন ব্যাখ্যা করো।    ৩

ঘ.    অনিমা নকশি কাঁথা লি. প্রতিষ্ঠানটির পরিবর্তন প্রয়োজন কিনা? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।   ৪

১৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানির শেয়ার মূলধনের ক্ষুদ্র ও সমান একককে শেয়ার বলে।

খ পাবলিক লি. কোম্পানি ব্যবসায়ের মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যে পত্রের মাধ্যমে জনগণকে শেয়ার ক্রয়ের আহ্বান জানায় তাকে বিবরণপত্র বলে।

কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব বিষয় এতে (নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, পরিচালক সংখ্যা ইত্যাদি) উল্লেখ করে জনগণকে শেয়ার করে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এটি সাধারণত বিজ্ঞপ্তির আকারে সংবাদপত্রে প্রকাশ করতে হয়। বিবরণপত্রের প্রকাশিত তথ্যের জন্য সব দায়-দায়িত্ব পরিচালকদের নিতে হয়।

গ প্রথম পর্যায়ে ‘আনিমা নকশি কাঁথা’ লি.-এর সাংগঠনিক ধরন ছিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’ সংগঠন

কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ এবং সর্বোচ্চ ৫০। এটি গঠনের জন্য যাবতীয় কাজগজপত্র জমা দিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে নিবন্ধনপত্র নিতে হয়। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার জন্য সাথে সাথেই কোম্পানি কাজ শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্রের দরকার হয় না।

উদ্দীপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৩০ জন বন্ধু একত্রিত হয়ে ‘অনিমা নকশি কাঁথা লি.’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানের বিবরণসহ যাবতীয় কাজগজপত্র জমা দিয়ে। ‘রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট কোম্পানি’ থেকে নিবন্ধন করে। নিবন্ধন করে সাথে সাথে উৎপাদন কাজ শুরু করে, যা প্রাইভেট লি. কোম্পানির গঠন এবং বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পূর্ণ মিলে যায়। সুতরাং, অনিমা নকশি কাঁথা লি. এর সাংগঠিনক ধরন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন।

ঘ অনিমা নকশি কাঁথা লি. প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লি. থেকে পাবলিক লি. কোম্পানিতে পরিবর্তন প্রয়োজন।

পাবলিক লি. কোম্পানির সদস্য সর্বনিম্ন ৭ এবং সর্বোচ্চ সীমা শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ। এটি শেয়ারবাজারে ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এর শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য।

উদ্দীপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৩০ জন বন্ধু মিলে ‘অনিমা নকশি কাঁথা লি.’ নামে একটি প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করে। প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করে তারা সাথে সাথেই উৎপাদন কাজ শুরু করে। উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে সুনাম অর্জন করে। কিন্তু তারা মূলধন স্বল্পতার কারণে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে রপ্তানিও করতে পারছে না। ‘অনিমা নকশি কাঁথা লি.’ প্রাইভেট লি. কোম্পানি হওয়ায় এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।

উক্ত সমস্যা দূর করতে প্রতিষ্ঠানটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করতে পারে। কারণ, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা অনেক হওযায় মূলধনের সমস্যা হয় না। তাছাড়া এতে বাজারে শেয়ার বিক্রয় করে অধিক মূলধন সংগ্রহ করা যায়। এতে তাদের উৎপাদন কাজে ব্যাঘাত ঘটবে না। উৎপাদন বাড়বে এবং চাহিদামতো পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন। তাই বলা যায়, ‘অনিমা নকশি কাঁথা লি.’ প্রতিষ্ঠানটির পাবলিক লি. কোম্পানিতে পরিবর্তন প্রয়োজন।

 প্রশ্ন ২০ নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই মি. শুভ্র তার চার ভাইকে নিয়ে ‘ভাই ভাই টেক্সাটাইল লি.’ নামে একটি ব্যবসায় সংগঠন করে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। বিদেশে তাদের পণ্যের প্রচুর চাহিদা থাকায় তারা তাদের ব্যবসায়ে প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে থাকে। ব্যবসায় সম্প্রসারণ করার জন্য তারা বাজারে শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যথাযথ আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধকের কার্যালয়ে আবেদন পেশ করে। [ঢাকা কলেজ]

ক.    অধিকারযোগ্য শেয়ার কাকে বলে?      ১

খ.    ন্যূনতম মূলধন প্রতিষ্ঠানের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?     ২

গ.    উদ্দীপকে মি. শুভ্র কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান গঠন করেছেন? ব্যাখ্যা করো।  ৩

ঘ.    তুমি কি মনে করো উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি বাজারে শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পাবে? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।     ৪

২০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানি নতুন শেয়ার বাজারে ছাড়ার সময় বর্তমান শেয়ার মালিকদের অগ্রাধিকার দিয়ে যে শেয়ার ইস্যু করে তাকে অধিকারযোগ্য শেয়ার বলে।

খ কোম্পানির পরিমেল নিয়মাবলিতে প্রাথমিক খরচের উদ্দেশ্যে ন্যূনতম পরিমাণ মূলধন সংগ্রহের যে প্রতিশ্রুতি উল্লেখ থাকে তাকে ন্যুনতম মূলধন বলে।

পাবলিক লি. কোম্পানি কার্যারাম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ ও শেয়ার বিলির পূর্বে এটি সংগ্রহ করে। কোম্পানির প্রাথমিক খরচ মেটানোর জন্য এ মূলধন সংগ্রহ করা হয়। এটি সংগ্রহ না করলে পাবলিক লি. কোম্পানি কার্যারম্ভের অনুমতি পায় না।

গ মি. শুভ্র ‘প্রাইভেট লি.’ কোম্পানি গঠন করেছেন।

সর্বনিম্ন ২ জন ও সর্বোচ্চ ৫০ জন সদস্য নিয়ে প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির মূলধন সদস্যরা সরবরাহ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানের দায় দেনার জন্য সদস্যরা দায়ী থাকে। সদস্যেদের মাঝে ছাড়া অন্য কারো কাছে শেয়ার বিক্রয় করতে পারে না।

উদ্দীপকে মি. শুভ্র তার চার ভাইকে নিয়ে ‘ভাই ভাই টেক্সটাইল লি.’ নামে একটি ব্যবসায় সংগঠন খোলেন। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। এ জন্য কার্যারম্ভের অনুমতিপত্রের প্রয়োজন হয়নি। বিদেশি বাজারে তাদের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। এতে তারা প্রচুর মুনাফা অর্জন করছে। ব্যবসায় সম্প্রসারণে জন্য তারা বাজারে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তারা শেয়ার বিক্রয় করতে পারেননি, যা প্রাইভেট লি. কোম্পনির সাথে মিল রয়েছে। সুতরাং মি. শুভ্র এর কোম্পানি প্রাইভেট লি. কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক  লি. কোম্পানিতে নিবন্ধন করলে বাজারে শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পাবে।

প্রাইভেট লি. কোম্পানি মূলধন সংগ্রহের জন্যে বাজারে শেয়ার ছাড়তে পারে না। কোম্পানির সদস্যদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে হয়। অন্যদিকে পাবলিক লি. কোম্পানি বাজারে শেয়ার বিক্রি করতে পারে। এটি প্রয়োজন অনুযায়ী শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে।

উদ্দীপকের মি. শুভ্র তার চার চাইকে নিয়ে ‘ভাই ভাই টেক্সটাইল লি.’ গঠন করে নিবন্ধনের পরপরই তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। তাদের পণ্যের চাহিদা বাড়ায় অনেক মুনাফা লাভ করছে। চাহিদা বাড়ায় তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে চাচ্ছে। তাই বাজারে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদের কোম্পানিটি প্রাইভেট লি. হওয়ায় তা করতে পারেনি। তারা শেয়ার বিক্রয়ের জন্য সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে চায়। তাই নিবন্ধকের কাছে তার ব্যবসায় সংগঠন পরিবর্তনের জন্য আবেদন করে।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করার জন্য পাবলিক লি. কোম্পানি হতে হয়। প্রাইভেট লি. কোম্পানি শেয়ার বিক্রয়ের সুবিধাটি পায় না। ভাই ভাই টেক্সাটাইল একটি প্রাইভেট লি. কোম্পানি সংগঠন। তাই তারা শেয়ার বিক্রয় করতে পারছে না। এতে তাদের মূলধনের সংকটে ব্যবসায় সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটি তাই নিবন্ধকের মাধ্যমে শেয়ার ছাড়ার জন্যে সব আন্ষ্ঠুানিকতা পালন করবে। এরপর কোম্পানিটি পাবলিক লি. এ রূপান্তর হবে। ফলে ভাই ভাই টেক্সাটাইল  বাজারে শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পাবে। এতে কোম্পানি ব্যবসায়  সম্প্রসারণের জন্য শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে।

 প্রশ্ন ২১ মি. প্রদীপ একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদক ব্যবস্থাপক। সে মাঝে মাঝে প্রাথমিক শেয়ার ক্রয়ের জন্য আবেদন করে আবার কখনো সে শেয়ার ক্রয় করে। মি. প্রদীপ বছরের শেষে কোম্পানিটির কাছ থেকে বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণের জন্য ডাক পায়। মি. প্রদীপ অনুভব করে যে সে একটি বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক। সে এই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকও হতে পারে যদি সে প্রয়োজনীয় ভোট পায়।    [ঢাকা কলেজ]

ক.    বোনাস শেয়ার কী? ১

খ.    কোন একটি প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা কখন সৃষ্টি হয়?   ২

গ.    মি. প্রদীপ কোন ধরনের কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে? ব্যাখ্যা করো।    ৩

ঘ.    মি. প্রদীপ কোন ধরনের শেয়ার ক্রয় করে? এ ধরনের শেয়ার ক্রয়ের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো। ৪

২১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক শেয়ার হোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে নগদ অর্থ না দিয়ে যে শেয়ার ইস্যু করে, তাকে বোনাস শেয়ার বলে।

খ আইনের অধীনে কোনো প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হলেই প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্ত্বা সৃষ্টি হয়।

এটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তির ন্যায় অধিকার দিয়ে থাকে। যার ফলে প্রতিষ্ঠান নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হয়। এছাড়া অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। তাই প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা সৃষ্টির জন্য প্রতিষ্ঠানকে আইনের অধীনে নিবন্ধন করতে হবে।

গ মি. প্রদীপ পাবলিক লি. কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে।

কোম্পানি সংগঠনগুলোর মধ্যে শুধু পাবলিক লি. কোম্পানি শেয়ার ইস্যু ও বিক্রয় করতে পারে। এক্ষেত্রে পাবলিক লি. কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে শেয়ার ইস্যু করে। কোম্পানি তার প্রাথমিক ও অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রয় করে থাকে।

উদ্দীপকের মি. প্রদীপ একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদক ব্যবস্থাপক। সে মাঝে মাঝে প্রাথমিক শেয়ার ক্রয়ের জন্য আবেদন করে আবার শেয়ারও ক্রয় করে। মি. প্রদীপ কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করায় তিনি কোম্পানি থেকে সাধারণ সভায় অংশগ্রহণের ডাক পায়। তাছাড়া শেয়ারহোল্ডার হিসেবে তার ভোটাধিকার রয়েছে। তিনি কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণে মতামতও প্রদান করতে পারেন, যা সাধারণ শেয়ার মালিকরা পেয়ে থাকেন। আর সাধারণ শেয়ার পাবলিক লি. কোম্পানি ইস্যু করে থাকে। তাই বলা যায় মি. প্রদীপ যে শেয়ার ক্রয় করেছে তা পাবলিক লি. কোম্পানির শেয়ার।

ঘ মি. প্রদীপ সাধারণ শেয়ার ক্রয় করেন।

সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির দায়িত্ব, কর্তব্য ও অধিকার অনেক বেশি ভোগ করে থাকেন। এই শেয়ারহোল্ডারগণ কোম্পানির দায়ে শেয়ার অনুপাতে দায়ী থাকেন। কোম্পানির পরিচালক নির্বাচনে ভোটাধিকার পেয়ে থাকেন।

উদ্দীপকের মি. প্রদীপ একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদক ব্যবস্থাপক। সে কোম্পানি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন করে শেয়ার ক্রয় করেন। শেয়ার ক্রয় করায় কোম্পানি থেকে বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণের ডাক পায়। সে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকও হতে পারে যদি প্রয়োজনীয় ভোট পায়, যা সাধারণ শেয়ারমালিকরা পেয়ে থাকেন।

মি. প্রদীপ সাধারণ শেয়ার ক্রয় করায় কোম্পানির বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। কোম্পানির সিদ্ধান্ত নিতে মতামত ব্যক্ত করতে পারেন। সে প্রতিষ্ঠানে ভোটাধিকার পেয়ে থাকেন। তার ইচ্ছে সে এই প্রতিষ্ঠানের বড় পরিচালক হবেন, যা সাধারণ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে সম্ভব হবে। কেননা সাধারণ শেয়ারমালিকগণ চাইলে পরিচালক নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। অন্যান্য শেয়ারমালিকগণ প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচন করবেন। তাই বলা যায় মি. প্রদীপের সাধারণ শেয়ার ক্রয় যৌক্তিক।

 প্রশ্ন ২২ মনোরোভা কোম্পানিতে প্রথম দিকে তেমন মুনাফা না হলেও এখন মুনাফা হার বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে ২০ কোটি টাকা মুনাফা করে। কোম্পানির সাধারণ সভায় ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও ১০% স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়। মি. জাকির ২০ টাকা মূল্যের ১০ হাজার শেয়ারের মালিক। তাকে ১০ হাজার টাকার শেয়ার দেওয়া হয়। অন্যদিকে মি. সাহেদ সানমুন কোম্পানি থেকে ৫ বছর মেয়াদি প্রতিটি ২০০ টাকা করে ৫,০০০ অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করে। মেয়াদ শেষে কোম্পানি ১০% অধিহারে তাকে মূল্য পরিশোধ করে।

      [হলি ক্রস কলেজ, ঢাকা]

 ক.   ঋণপত্র কী? ১

 খ.   বিবরণপত্র বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.   মি. জাকিরের প্রাপ্ত ১০ হাজার টাকার শেয়ারকে কোন ধরনের শেয়ার বলে? ব্যাখ্যা করো।        ৩

 ঘ.   মি. সাহেদ কোন ধরনের অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করছেন? এই শেয়ার ক্রয়ের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।     ৪

২২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ঋণ গ্রহণের স্বীকৃতি হিসেবে যে দলিল ইস্যু করে তাকে ঋণপত্র হলো।

খ পাবলিক লি. কোম্পানি জনগণের প্রতি শেয়ার ক্রয়ের আহ্বান জানিয়ে যে প্রচারপত্র ইস্যু করে তাকে বিবরণপত্র বলে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন প্রাপ্তির মাধ্যমে আইনগত পৃথক সত্তা অর্জন করে। তবে এর পরই এটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে পারে না এজন্য জনগণের উদ্দেশ্যে বিবরণপত্র ইস্যু করতে হয়। এতে কোম্পানির বিস্তারিত তথ্যসহ শেয়ার ক্রয়ে আহ্বান জানানো হয়। এর মাধ্যমে জনগণ কোম্পানিটি সম্পর্কে জানতে পারে। 

গ উদ্দীপকে মি. জাকিরের প্রাপ্ত ১০ হাজার টাকার শেয়ারকে বোনাস শেয়ার বলে। শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে নগদ অর্থ পরিশোধ না করে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা হয়। অনেক সময় কোম্পানির অর্জিত মুনাফা বণ্টন করা হয় না। শেয়ার হোল্ডারদেরকে মুনাফা বা লভ্যাংশ না দিয়ে উক্ত অর্থকে মূলধনে রূপান্তর করা হয় এবং এর বিপরীতে শেয়ার হোল্ডারদেরকে নতুন শেয়ার দেয়া হয়। এরূপ শেয়ারকে বোনাস শেয়ার বলে।

উদ্দীপকের মনোরোভা কোম্পানি ২০১৪ সালে প্রচুর মুনাফা করে। কোম্পানিটি ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও ১০% স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। মি. জাকির ২০ টাকা মূল্যের ১০ হাজার শেয়ারের মালিক। তাকে ১০ হাজার টাকার শেয়ার দেয়া হয়। অর্থাৎ সে আংশিক মুনাফা নগদে পেয়েছে এবং বাকি অংশের বিপরীতে শেয়ার পেয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি মুনাফা বা লভ্যাংশ নগদে না পেয়ে শেয়ার পেয়েছেন। এজন্য তার প্রাপ্ত শেয়ার বোনাস শেয়ার।

ঘ উদ্দীপকে মি. সাহেদ পরিশোধ্য অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করেছেন। তার এরূপ শেয়ার ক্রয়ের যৌক্তিকতা রয়েছে।

নির্দিষ্ট সময়ের পরে পরিশোধ্য অগ্রাধিকার শেয়ারের মূল্য ফেরত দেওয়া হয়। এরূপ শেয়ার অনন্তকাল বহাল থাকে না। কোম্পানি ঘোষিত সময় পর এরূপ শেয়ারের অর্থ ফেরত দেয়া হয়।

উদ্দীপকে মি. সাহেদ সানমুন কোম্পানির ৫ বছর মেয়াদি শেয়ার ক্রয় করে। অর্থাৎ তার ক্রয়কৃত শেয়ারের মেয়াদ ৫ বছর। ৫ বছর পর উক্ত শেয়ারের অর্থ ১০% অধিহারে পরিশোধ করা হয়। তাই তার ক্রয়কৃত শেয়ার হলো পরিশোধ্য অগ্রাধিকার শেয়ার।

যারা ঝুঁকি নিতে চান না, আবার কিছু নির্দিষ্ট মুনাফাও আশা করেন, তাদের জন্য অগ্রাধিকার শেয়ারে বিনিয়োগ করা উত্তম। আর অল্প বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনিয়োজিত অর্থ ফেরত পেতে চাইলে পরিশোধ্য অগ্রাধিকার শেয়ার একটি উত্তম বিকল্প। আর মেয়াদ শেষে ১০% অধিহারে অর্থ ফেরত দেয়ায় মি. সাহেদের জন্য আর্থিকভাবে উপকৃত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তাই বলা যায়, তার এরূপ শেয়ার ক্রয় করা যথেষ্ট যৌক্তিক হয়েছে।

 প্রশ্ন ২৩ সামান্থা একটি কোম্পানির ব্রান্ড নেইম। কোম্পানিটির আইনগতভাবে তফসিল-১ গ্রহণের সুযোগ ছিল না। ফলে প্রতিষ্ঠানটি একটি দলিল প্রস্তুত করে এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে এটি দেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিকে আছে।

       [ঢাকা কমার্স কলেজ]

ক.    বিকাশ কোন ধরনের কোম্পানি? ১

খ.    কোম্পানি আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান বলার কারণ ব্যাখ্যা করো।    ২

গ.    সামান্থা কোন ধরনের কোম্পানি? ব্যাখ্যা করো।     ৩

ঘ.    প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতকৃত দলিলই কি এর পরিচালনায় সহায়ক উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

২৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক বিকাশ ব্যাংক ব্যাংক লি. এর একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি।

 যে কোম্পানির অধিকাংশ শেয়ারের মালিকানা, ভোটদান ক্ষমতা, কোম্পানির পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অন্য কোনো কোম্পানির অধীনে থাকে, তাকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বলে।

খ আইনের স্বীকৃতির মাধ্যমে কোম্পানি গঠিত হয় বলে কোম্পানিকে আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান বলা হয়।

কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান হলো কোম্পানি সংগঠন। গঠন সংক্রান্ত যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের পরেই নিবন্ধনের মাধ্যমে আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে কৃত্রিম ব্যক্তিস্বত্তার অধিকারী হয়। যেহেতু আইনের স্বীকৃতির মাধ্যমে কোম্পানির সৃষ্টি। তাই একে আইন সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান বলা হয়।

গ ‘সামান্থা’ একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

কমপক্ষে ২ হতে সর্বোচ্চ ৫০ জন সদস্য মিলে কোম্পানি আইন অনুযায়ী যে সংগঠন গঠিত হয় তাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে। এরূপ কোম্পানিকে নিজস্ব পরিমেল নিয়মাবলি তৈরি করতে হয়। কোম্পানি আইনে বর্ণিত তফসিল-১ কে পরিমেল নিয়মাবলি হিসেবে গ্রহণ করার এরূপ কোম্পানির থাকে না।

উদ্দীপকে বর্ণিত কোম্পানিটির আইনগতভাগে তফসিল-১ গ্রহণের সুযোগ ছিল না। তাই প্রতিষ্ঠানটি একটি দলিল প্রস্তুত করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অর্থাৎ, এটি বাধ্যতামূলকভাবে পরিমেল নিয়মাবলি বা সংখ্যাবিধি প্রস্তুত করে সে অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি হলো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত দলিলটি হলো পরিমেল নিয়মাবলি বা সংঘবিধি, যা উক্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সহায়ক হবে।

কোম্পানি সংগঠনের দ্বিতীয় প্রধান দলিল হলো পরিমেল নিয়মাবলি বা সংঘবিধি। এতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনাগত যাবতীয় বিষয় বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়। এ অনুযায়ীই কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।

উদ্দীপকের ‘সামান্থা’ একটি কোম্পানির ব্র্যান্ড নেইম। কোম্পানির আইনগত ভাবে তাফসিল-১ গ্রহণের সুযোগ ছিল না। তাই একটি দলিল করে তার প্রেক্ষিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে এটি দেশের স্বনামধন্য কোম্পানি হিসেবে টিকে আছে।

উদ্দীপকের সামান্থা নামক কোম্পানিটি যে দলিল প্রণয়ন করেছে বলে বলা হয়েছে, তা হলো পরিমেল নিয়মাবলি। এটি প্রণয়ন করা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য বাধ্যতামুলক। আর এতে যেহেতু কোম্পানি পরিচালনাগত যাবতীয় বিষয় উল্লেখ থাকে সেহেতু এই দলিলই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় সহায়ক হবে।

 প্রশ্ন ২৪ জনাব মাসুম ইসলামপুরের বড় কাপড় আমদানিকারক। সারা দেশের পাইকার ও ডিলারদের তিনি মালামাল সরবরাহ করেন। সজল নামক ব্যবসায়ীর সাথে দীর্ঘদিন লেনদেন করায় অনেক টাকা বকেয়া পড়েছে। হঠাৎ জনাব সজল মারা যাওয়ায় সজলের ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যায়। জনাব মাসুস অনেক চেষ্টা করেও টাকা তুলতে পারেননি। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইনগত সত্তা দুর্বল এমন প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি ধারে ব্যবসায় করবেন না।       [ঢাকা কমার্স কলেজ]

ক.    শিল্প কী?    ১

খ.    বাণিজ্য বলতে কী বুঝায়? ২

গ.    জনাব মাসুমের সংগঠনটি কোন ধরনের ব্যবসায় ব্যাখ্যা করো।   ৩

ঘ.    জনাব মাসুমের পরবর্তীতে গৃহীত পদক্ষেপের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো। ৪

২৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহ ও তার রূপগত উপযোগ সৃষ্টি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমকে শিল্প বলে। অ

 কোনো বস্তুর অভাব পূরণের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে।

খ উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ভোক্তা বা ব্যবহারকারীর নিকট পোঁছানোর যাবতীয় কাজকে (ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন ইত্যাদি) বাণিজ্য বলে।

শিল্পের মাধ্যমে পণ্য তৈরি করা হয় বা প্রকৃতি হতে সম্পদ অহরণ করা হয়। অতঃপর উক্ত পণ্য বা সম্পদকে ভোক্তা বা ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। আর এক্ষেত্রে ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, ব্যাংকিং, বিমা, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করতে হয়। এ সকল কাজের সমষ্টিই হলো বাণিজ্য।

গ জনাব মাসুমের সংগঠনটি হলো একমালিকানা ব্যবসায়।

একজনমাত্র ব্যক্তির মালিকানায় গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। এরূপ ব্যবসায়ে সংগঠক, পরিচালক ও মূলধনদাতা একজন ব্যক্তিই হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সকল সিদ্ধান্ত মালিক একাই গ্রহণ করে থাকেন।

উদ্দীপকের জনাব মাসুম ইসলামপুরের প্রতিষ্ঠিত কাপড়ের ব্যবসায়ী। তিনি কাপড় আমদানি করে সমগ্র দেশের পাইকার ও ডিলারদের নিকট সরবরাহ করেন। একজন ব্যবসায়ীর নিকট পাওনা টাকা আদায় করতেও তিনি একাই চেষ্টা করেন। তাই দেখা যায়, জনাব মাসুম একাই ব্যবসায়ের মালিক ও পরিচালক। পরিচালনাগত যাবতীয় সিদ্ধান্ত তিনি একাই গ্রহণ করে থাকেন। অর্থাৎ তার প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়টি এক মালিকানা ব্যবসায়।

ঘ জনাব মাসুম আইনগত সত্তা দুর্বল এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে ধারে পণ্য বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তার গৃহীত এই পদক্ষেপ যথেষ্ট যৌক্তক। অ

জনাব মাসুম একজন কাপড় আমদানিকারক। সারা দেশের পাইকার ও ডিলারদের নিকট তিনি কাপড় সরবরাহ করেন। সজল নামে একজন ব্যবসায়ীর নিকট তার অনেক টাকা পাওনা হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ সজল মারা যায়। এতে সজলের ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য জনাব মাসুম অনেক চেষ্টা করেও সজলের নিকট পাওনা অর্থ আদায় করতে পারেনি।

জনাব মাসুম যদি কোনো কোম্পানি সংগঠনের নিকট বাকিতে পণ্য বিক্রয় করতেন তাহলে তার পাওনা অর্থ আদায় করা সহজ হতো। কিন্তু সজল ছিল এক মালিকানা ব্যবসায়ী। তার মৃত্যুতে তার ব্যবসায়ের বিলোপ ঘটে। তাই পাওনাদার জনাব মাসুম অনেক চেষ্টা করেও পাওনা অর্থ আদায় করতে পারছেন না। এজন্য তিনি একমালিকানা বা অংশীদারী ব্যবসায়ীর নিকট বাকিতে পণ্য বিক্রয় না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই বলা যায়, তার এই পদক্ষেপটি অবশ্যই যৌক্তিক।

 প্রশ্ন ২৫ শোভন ‘জননী’ ও ‘জনতা’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে জড়িত। জননী প্রতিষ্ঠানটি ট্রেড লাইসেন্স এবং জনতা প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর কাজ শুরু করে। দুটি প্রতিষ্ঠানই ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য ব্যাংক ঋণ নেয়। মেয়াদ শেষে ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংক জননী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শোভনকে এবং ‘জনতা’ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেয়।        [আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা]

 ক.   রাইট শেয়ার কী?  ১

 খ.   বিবরণপত্র বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.   উদ্দীপকের জনতা প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরনের সংগঠন? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   ঋণ পরিশোধের জন্য জননী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শোভনকে নোটিশ প্রদানের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।    ৪

২৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানির অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নতুন শেয়ার বাজারে ছাড়ার সময় বর্তমান শেয়ার মালিকদের অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের পূর্বের ক্রয়কৃত শেয়ারের অনুপাতে যে নতুন শেয়ার ইস্যু করে তাকে রাইট শেয়ার বলে।

খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে শেয়ার বিক্রয়ের জন্য জনসাধারণরে উদ্দেশ্যে কোম্পানির সব বিষয় উল্লেখপূর্বক যে বিজ্ঞাপন প্রচার করে তাকে বিবরণপত্র বলে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহকালেই বিবরণপত্র নিবন্ধকের নিকট জমা দিতে হয়। বিবরণপত্রে কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব বিষয় উল্লেখ করে জনসাধারণকে কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয।

গ উদ্দীপকে বর্ণিত জনতা প্রতিষ্ঠানটি মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।  

কোম্পানি সংগঠন হলো কোম্পানির আইনের অধীনে গঠিত ও পরিচালিত সীমিত দায়বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর এ সংগঠন ব্যবসায় কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

উদ্দীপকে জনাব শোভন সাহেব জননী ও জনতা নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জনতা প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করে দেয়। এটি কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী হওয়ায় নিজ নামে পরিচালিত হয়। এর সত্তা মালিক থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। এটি নিজ নামে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন ও প্রয়োজনে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারবে। এসব বৈশিষ্ট্য কোম্পানি সংগঠনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনতা প্রতিষ্ঠানটি মালিকানার ভিত্তিতে কোম্পানি সংগঠন।

ঘ উদ্দীপকে জননী প্রতিষ্ঠানটি এক মালিকানা ব্যবসায় হওয়ায় জনাব শোভনকে ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান যুক্তিসঙ্গত হয়েছে।

এক মালিকানা ব্যবসায় হলো একক মালিকানায় গঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়। যে কেউ ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে এ ব্যবসায় গঠন করতে পারেন। এ ব্যবসায় মালিকের নামেই পরিচালিত হয়। এ জন্য ব্যবসায়ের দায় মালিককেই বহন করতে হয়।

উদ্দীপকের জনাব শোভন জননী নামক প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত। প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায়। এটি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে। মেয়াদ শেষে ব্যাংকটি জনাব শোভন ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান করে।

এক মালিকানা ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় অসীম। এ জন্য বিনিয়োগকৃত মূলধন দিয়ে দায় পরিশোধ করা সম্ভব না হলে, সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পদ দিয়ে দায় পরিশোধ করতে হয়। তাই উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায় হওয়ায় ব্যাংক শোভনকে ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান করেছে। এক্ষেত্রে তিনি এই ঋণ পরিশোধে বাধ্য থাকবেন। সুতরাং বলা যায়, ব্যাংক কর্তৃক জনাব শোভনকে ঋণ পরিশোধের নোটিশ প্রদান করা যৌক্তিক হয়েছে।

 প্রশ্ন ২৬ সাত্তার ও সজিব দুই বন্ধু তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পরিকল্পনায় নিজ নিজ নামে বিও (ই/ঙ) একাউন্ট খোলে। দুজনেই ৫ লক্ষ টাকা করে আর পি লিঃ এর শেয়ার ক্রয় করে। সাত্তার প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পায়। কিন্তু সজিবের লভ্যাংশের হার প্রতিবছর পরিবর্তন হয়। আর পি লিঃ তাদের ব্যবসায় সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে একটি সভা আহ্বান করে এবং সব শেয়ার মালিকদের অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়।

      [আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা]

 ক.   এ জি এম কাকে বলে?   ১

 খ.   বিবরণপত্র বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.   উদ্দীপকে উল্লিখিত কোম্পানিটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   আর পি লি.-এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সাত্তার ও সজিবের মধ্যে কার অধিকার বেশি? মতামত বিশ্লেষণ করো।   ৪

২৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক প্রত্যেক কোম্পানিকে প্রতিবছর যে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করতে হয় তাকে এ জি এম বলে। অ

  অএগ এর পূর্ণরূপ হলো অহহঁধষ এবহবৎধষ গববঃরহম (বার্ষিক সাধারণ সভা)

খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তার শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের জন্য জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে যে প্রচারপত্র প্রকাশ করে তাকে বিবরণপত্র বলে।  

কোম্পানির কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহকালেই এরূপ পত্র নিবন্ধকের নিকট জমা দিতে হয়। এরূপ পত্রের মধ্যে কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব তথ্য উল্লেখ করা থাকে, যাতে শেয়ার ক্রয়ে ইচ্ছুক ব্যক্তিবর্গ এ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে শেয়ার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। তবে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারগণ নিজেরাই মূলধন সংগ্রহ করতে পারলে এরূপ পত্র প্রচারের প্রয়োজন হয় না।

গ উদ্দীপকে উল্লিখিত কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অন্তর্গত।  

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ৭ জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। এ ধরনের কোম্পানি বাজারে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয় করে। মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এ ধরনের কোম্পানির কমপক্ষে ৩ জন পরিচালক থাকতে হয়।

উদ্দীপকে সাত্তার ও সজিব দুই বন্ধু। তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে নিজ নিজ নামে ব্যাংকে একটি বিও (ই/ঙ) একাউন্ট খোলে। তারা দুজনেই আর পি লিঃ কোম্পানি থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে শেয়ার ক্রয় করে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি হলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। কারণ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বাজারে শেয়ার বিক্রয় করতে পারলেও প্রইভেট লি. কোম্পানি বাজারে শেয়ার বিক্রয় করতে পারে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকের সাত্তারের শেয়ারটি হলো অগ্রাধিকার শেয়ার এবং সজিবের শেয়ারটি হলো সাধারণ শেয়ার। এক্ষেত্রে আর পি লি.-এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সজিবের অধিকার বেশি।

সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। ভোট দিতে পারে, ভোটে প্রার্থী হতে পারে, সভায় অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু অগ্রাধিকার শেয়াহোল্ডাররা কোম্পানির পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে না, ভোট দিতে পারে না, ভোট প্রার্থী হতে পারে না এবং সভায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।

উদ্দীপকে সাত্তার ও সজিব দুই বন্ধু। তারা শেয়ারবাজার থেকে যথাক্রমে অগ্রাধিকার শেয়ার ও সাধারণ শেয়ার ক্রয় করে। এক্ষেত্রে সাত্তার প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পেলেও সজিবের লভ্যাংশের হার প্রতিবছর পরিবর্তন হয়। আর পি লি. তাদের ব্যবসায় সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে একটি সভা আহ্বান করে এবং সেখান অংশগ্রহনের জন্য সব শেয়ার মালিককে আমন্ত্রণ জানায়।

আর পি লি.-এর সভায় সজিব অংশগ্রহণ করতে পারলেও সাত্তার অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কারণ অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। ফলে এ ধরনের শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির কোনো বিষয়ের ওপর সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। কিন্তু সাধারণ শেয়ার হোল্ডাররা কোম্পানির সভায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং কোম্পানির যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাই শেয়ারের ধরন বিবেচনায় আর পি লি. এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সজিবের অগ্রাধিকার বেশি।

 প্রশ্ন ২৭ রিয়াদ ও তার বন্ধু মিলে ‘বন্ধন’ নামে একটি সুতার মিল স্থাপন করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানে রিয়াদ ও এক বন্ধু পরিচালনা হিসেবে ব্যবসায়টি পরিচালনা করে থাকেন। তাদের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা। সুদক্ষ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ফলে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়ার প্রেক্ষিতে তারা তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন। ব্যাংক ঋণের জটিলতার কথা চিন্তা করে তারা জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিলেন।  [নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.   শেয়ার কী?  ১

 খ.   কোম্পানি সংগঠনের “কৃত্রিম সত্তা” বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরনের কোম্পানি? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদের কোনো পরিবর্তন আবশ্যকীয় কি? তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪

২৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানি সংগঠনের অনুমোদিত মোট মূলধনের সমান ও ক্ষুদ্র অংশের প্রতিটি একককে শেয়ার বলে।  

খ যে সত্তা বা অস্তিত্বের মাধ্যমে কোম্পানি নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে কোম্পানির কৃত্রিম সত্তা বলে।

কোম্পানিকে তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোম্পানি সংগঠন ব্যক্তি না হয়েও ব্যক্তির মতো নিজ নামে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন ও প্রয়োজনে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। কোম্পানি নিজস্ব নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় এবং নিজস্ব সিলমোহর ব্যবহার করে। এসব কারণে কোম্পানির সংগঠনকে কৃত্রিম সত্তা বলা হয়।

গ উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অন্তর্গত।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে দুইজন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন হয়। এ ধরনের কোম্পানিতে কমপক্ষে ২ জন পরিচালক থাকতে হবে। তবে এ কোম্পানি জনগণের কাছে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয় করতে পারে না।

উদ্দীপকে রিয়াদ ও তার ৫ বন্ধু মিলে ‘বন্ধন’ নামে একটি সুতার মিল স্থাপন করেন। অর্থাৎ তাদের প্রতিষ্ঠানে মোট সদস্যসংখ্যা ৬ জন। এছাড়াও রিয়াদ ও তার এক বন্ধু পরিচালক হিসেবে ব্যবসায়টি পরিচালনা করছেন। এক্ষেত্রে তাদের প্রতিষ্ঠানে পরিচালক সংখ্যা ২ জন। তারা সমঝোতার ভিত্তিতে এ ব্যবসায়টি স্থাপন করেছেন। এসব বৈশিষ্ট্য প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আবশ্যকীয় বলে আমি মনে করি।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ৭ জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়। এ ধরনের কোম্পানির নূন্যতম ৩ জন পরিচালক থাকতে হয়। এ ধরনের কোম্পানি জনগণের কাছে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয় করে মুলধন সংগ্রহ করতে পারে।

উদ্দীপকের রিয়াদ ও তার বন্ধুরা তাদের গঠিত ‘বন্ধন’ নামক প্রতিষ্ঠানটির সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ছিল  ২০ কোটি টাকা। বর্তমানে তা সম্প্রসারণের জন্য আরো ১০ কোটি টাকা মূলধনের প্রয়োজন। তারা জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রয় করে এ মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে তাদের প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান পরিচালক ২ জন হতে ৩ জনে পরিণত করতে হবে। পরিচালক ৩ জন না হলে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠন করা যাবে না। আর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা না গেলে বাজারে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করা যাবে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন আবশ্যকীয় বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্ন ২৮ কেয়া ও চৈতি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে দীঘীদন ধরে একটি ফ্যাশন শপ পরিচালনা করছেন। ব্যবসায়ের ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হওয়ায় তারা সদস্য সংখ্যা না বাড়িয়ে অসীম দায়ের সীমাবব্ধতা দূর করে একটি বৃহদায়তন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহী। এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একজন আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণ করেছেন।  [রাজবাড়ী সরকারি কলেজ]

 ক.   সংঘবিধি কী?      ১

 খ.   কোম্পানিকে কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তার অধিকারী বলা হয় কেন?   ২

 গ.   প্রাথমিক পর্যায় কেয়া ও চৈতি কর্তৃক স্থাপিত ব্যবসায়-এর স্বরূপ কী ছিল? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   কেয়া ও চৈতি কীভাবে বৃহদায়তন ব্যবসায় গঠন করতে পারে? পরামর্শ দাও।   ৪

২৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে দলিলে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম-নীতি উল্লেখ থাকে, তাকে সংঘবিধি বলে।

খ কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলতে ব্যক্তি না হয়েও ব্যক্তির ন্যায় আইনগত মর্যাদা ও অধিকার লাভ করাকে বোঝায়। অ

এর মাধ্যমে কোম্পানি নিবন্ধন হওয়ার পর ব্যক্তির ন্যায় নিজ নামে পরিচালিত হয়। এটি তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে সম্পূূর্ণ আলাদা সত্তা লাভ  করে। নিজ নামে লেনদেন, চুক্তিসম্পাদন এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবসায় নিতে পারে। তাই কোম্পানিকে কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী বলা হয়।

গ প্রাথমিক পর্যায়ে কেয়া ও চৈতি কর্তৃক সম্পাদিত ব্যবসায় অংশীদারি ব্যবসায় ছিল। অ

দুই বা ততোধিক ব্যক্তি পারস্পরিক চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় মূলধন সরবরাহ করে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করে। এ ধরনের ব্যবসায় সদস্য সংখ্যা ২ জন হতে সবোর্চ্চ ২০ জন। সদস্যদের মধ্যে চুক্তিবব্ধ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে। চুক্তি অনুযায়ী তারা মূলধন সরবরাহ করে থাকে। এ ব্যবসায়ে অংশীদারদের দায় অসীম থাকে।                                                           

উদ্দীপকে কেয়া ও চৈতি পরস্পর সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি ফ্যাশন শপ পরিচালনা করে আসছেন। এই ব্যবসায়ের সব দায়-দায়িত্ব তারা সমঝোতার মাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের মূলধনের যোগান ও দায়ের ভার তাদের ওপর থাকে। প্রতিষ্ঠানের মুনাফা হলে চুক্তি অনুযায়ী ভোগ করে থাকেন। তাদের এই কার্যক্রম অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়। সুতরাং কেয়া ও চৈতি কর্তৃক সম্পাদিত ব্যবসায় একটি অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

ঘ কেয়া ও চৈতি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের মাধ্যমে কোম্পানি সংগঠন গঠন করতে পারে। অ

কোম্পানি সংগঠন বলতে আইন দ্বারা সৃষ্ট ও স্বীকৃত বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়। এটি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। কোম্পানি সংগঠন দু‘ধরনের হতে পারে। পাবলিক লি. ও প্রাইভেট লি. কোম্পানি সংগঠন।               

উদ্দীপকের চৈতি ও কেয়া দীর্ঘদিন ধরে একটা ফ্যাশন শপ পরিচালনা করছেন। ব্যবসায়ের ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হওয়ায় তারা ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে আগ্রহী। এক্ষেত্রে তারা সদস্য না বাড়িয়ে বৃহদায়তন ব্যবসায় স্থাপন করতে চায়। তাই তারা প্রয়োজনীয় ব্যবসা গ্রহণের জন্য আইনজীবীর পরমার্র্শ গ্রহণ করছেন।                            

চৈতি ও কেয়া প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে পারেন। প্রাইভেট লি. কোম্পানিতে সদস্য সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন। চৈতি ও কেয়া সদস্য বাড়াতে চায় না। তাই তারা ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের  মাধ্যমে প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে পারেন। তারা এক্ষেত্রে নিবন্ধকের নিকট আবেদনপত্রের সাথে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে কোম্পানি নিবন্ধন করতে পারেন। নিবন্ধক তাদের ব্যবসায়ের ধরন, উদ্দেশ্য, মূলধন, শেয়ার ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করবেন। বিবেচনা করে সন্তুষ্ট  হলে তিনি নিবন্ধন বইতে কোম্পানির নাম তালিকাভুক্ত করবেন এরপর তারা নিবন্ধনপত্র নিয়ে ব্যবসায় আরম্ভ করতে পারবেন। উপরোক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে কেয়া ও চৈতি প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে পারবেন।

 প্রশ্ন ২৯ আসিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশে একটি স্বনামধন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় মূলধন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কোম্পানিটি এমন শেয়ার বাজারে ইস্যু করলেন, যার দ্বারা মূলধন সংগ্রহ করা হলেও পরিচালনায় কোনো সমস্যা হয়নি এবং পুরাতন শেয়ারহোল্ডারদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। অতিরিক্ত মূলধনের জন্য বিকল্প পদ্ধতির কথা কোম্পানিটি ভাবছে, যা দ্বারা জনগণের নিকট থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে।

      [বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]

 ক.   অংশীদারি চুক্তিপত্র কী?   ১

 খ.   ঐচ্ছিক অংশীদারি ব্যবসায় বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.   আসিয়ান কোম্পানি কোন ধরনের শেয়ার ইস্যু করেছেন? ব্যাখ্যা করো।  ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে বিকল্প উৎস থেকে মূলধন সংগ্রহের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।       ৪

২৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক দুই বা ততোধিক ব্যক্তি যে পত্রের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করেন তাকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।

খ কোনো অংশীদারি চুক্তিপত্রে অংশীদারগণ ব্যবসায়ের স্থায়িত্বকাল বা মেয়াদের সীমা নির্ধারণ না করলে তাকে ঐচ্ছিক অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

এক্ষেত্রে কোনো অংশীদারি ব্যবসায় নির্দিষ্ট কাজের জন্য ব্যবসায় গঠন করে এবং কাজ সম্পাদনের পরও চলতে পারে। এই ব্যবসায়ে কোনো অংশীদার অন্য অংশীদারের কাছে ব্যবসায়ের বিলোপ সাধনের জন্য লিখিত বিজ্ঞপ্তি দিলে ব্যবসায়ের বিলোপ ঘটে।

গ উদ্দীপকে আসিয়ান কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করেছেন।

রাইট শেয়ার হলো কোনো কোম্পানি অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নতুন শেয়ার বাজারে ছাড়ার সময় শেয়ার মালিকদের অগ্রাধিকার যুক্ত শেয়ার। এক্ষেত্রে মালিকদের পূর্বের শেয়ার ক্রয় অনুপাতে নতুন শেয়ার প্রদানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

উদ্দীপকে আসিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি মূলধন বাড়ানোর জন্য নতুন করে বাজারে শেয়ার ইস্যু করে। এই শেয়ার ইস্যুর ফলে মূলধন সংগ্রহ হয়। এতে মালিকানা বা পরিচালনায় কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে পুরাতন শেয়ার হোল্ডারদেরকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শেয়ার ক্রয় অনুপাতে নতুন শেয়ার প্রদান করা হয়, যা রাইট শেয়ার হিসেবে বিবেচিত। তাই বলা যায়, আসিয়ান কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করেছে।

ঘ উদ্দীপকে বিকল্প উৎস হিসেবে ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করা যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। অ

ঋণপত্র হলো কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত একটি দলিল। এটি ইস্যুর মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধভাবে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। এটি ঋণ গ্রহণের স্বীকৃতিস্বরূপ। কোম্পানির ঋণপত্রে সুদের পরিমাণ, ঋণের পরিমাণ ও ফেরত দানের প্রতিশ্রুতি থাকে।

উদ্দীপকে আসিয়ান কোম্পানির পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় মূলধন বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে শেয়ার ইস্যুর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে জনগণের কাছ থেক মূলধন সংগ্রহের চিন্তা করে।

ঋণপত্রের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করলে জনগণের কাছ থেকে কোম্পানিটি পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ঋণপত্রের মালিককে নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করে। কিন্তু ঋণপত্রের মালিকগণ কোম্পানির কোনো মালিকানা গ্রহণ করতে পারবেন না। এছাড়াও তাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো পরিচালনা ক্ষমতা থাকে না এবং কোনো ভোটাধিকার ক্ষমতা পান না। প্রতিষ্ঠানে মুনাফা হলে ঋণপত্রের মালিক এক্ষেত্রে কোনো মুনাফা ও পান না। তবে তারা নির্দিষ্ট হারে সুদ গ্রহণ করে এবং প্রতিষ্ঠানে তাদের পূঞ্জীভূত অর্থ দিয়ে মূলধন সংকট নিরসন করে। তাই বলা যায়, বিকল্প উৎস হিসেবে ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত।

 প্রশ্ন ৩০ সদ্য গইঅ পাস করা সাত বন্ধু কোম্পানি গঠনের জন্য আইন উপদেষ্টার নিকট কোম্পানি গঠনের আগ্রহ জানালেন ও করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চাইলে উপদেষ্টা জানালেন, তারা যে কোম্পানি গঠন করতে যাচ্ছে তার জন্য কার্যারম্ভের অনুমতি সংগ্রহ করতে হবে না। তবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল তৈরি করতে হবে এবং কিছুটা সময় লাগবে। বন্ধুরা সব শুনে সমঝোতার ভিত্তিতে আইনের আনুষ্ঠানিকতার বাইরেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়লেন। [কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর]

 ক.   পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কী? ১

 খ.   ঋণপত্র বলতে কী বোঝায়?     ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত সাত বন্ধু মিলে কোন ধরনের কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন? ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   উদ্দীপকে বর্ণিত সাত বন্ধুর প্রতিষ্ঠান গড়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।      ৪

৩০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা ন্যূনতম সাত এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ, শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য এবং জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার বিক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারে তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে।  

খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যে দলিলের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাকে ঋণপত্র বলে।

কোম্পানির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হলে ঋণপত্র বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে। এটি মূলধন বাড়াতে সাহায্য করে। এজন্য নির্দিষ্ট হারে সুদও দিতে হয়। ঋণপত্রে এ ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, ঋণের মেয়াদ ইত্যাদি বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

গ উদ্দীপকে বর্ণিত সাত বন্ধু মিলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন। ই

ন্যূনতম ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন সদস্যের সমন্বয়ে সীমিত দায়ের ভিত্তিতে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গড়ে ওঠে। এটি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর কাজ শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে না।

উদ্দীপকে সদ্য গইঅ পাস করে সাত বন্ধু আইন উপদেষ্টার কোম্পানি গঠনের আগ্রহ জানান। তারা যে কোম্পানি গঠন করতে যাচ্ছেন তার জন্য কার্যারম্ভের অনুমতি সংগ্রহ করতে হয় না। তবে কোম্পানিকে নিবন্ধন করতে হয় এবং স্মারকলিপিও পরিমেল নিয়মাবলির দলিল তৈরি করতে হয়। যা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায় সাত বন্ধু মিলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন।

ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত সাত বন্ধুর নতুন প্রতিষ্ঠান অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

অংশীদারি ব্যবসায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তির চুক্তি এবং পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে অংশীদারদের দায় অসীম হয় এবং পারস্পরিক সদ্বিশ্বাস ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

উদ্দীপকে সাত বন্ধু গইঅ পাস করে ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে তারা প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে চাইলেও পরবর্তীতে নতুন সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তারা পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে আইনের আনুষ্ঠানিকতার বাইরে অংশীদার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

তাদের এই নতুন ব্যবসায় সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে আইনের কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় না। তারা সহজে স্বল্প মূলধন নিয়ে এই ব্যবসায়টি গঠন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সদ্বিশ্বাস এবং সমঝোতার ভিত্তিতে তারা যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাদের ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন, যা অংশীদারি ব্যবসায় বলে বিবেচিত। তাই বলা যায়, সাত বন্ধুর এই নতুন অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।

 প্রশ্ন ৩১ ‘কিং এন্ড কোং’ একটি পাবলিক লি. কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি গত তিন বছর যাবৎ সফলতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন দেখা দেয়ায় এ বছর সঞ্চিতি তহবিলের অর্থ মূলধনে পরিণত করেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় ‘কুইন এবং কোং’ নামে অন্য একটি কোম্পানি উক্ত প্রতিষ্ঠানের ৬০% শেয়ার ক্রয় করে নেয়।    [কুমিল্লা কমার্স কলেজ]

 ক.   অবলেখক কী?     ১

 খ.   কোম্পানিতে যোগ্যতা সূচক শেয়ার কারা ক্রয় করে এবং কেন?   ২

 গ.   ‘কিং এন্ড কোং’ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সঞ্চিতি তহবিলের অর্থ মূলধনে পরিণত করেছে? ব্যাখ্যা করো।    ৩

 ঘ.   ‘কিং এন্ড কোং’-এর বর্তমান অবস্থান মূল্যায়ন করো।     ৪

৩১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের জন্য যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন বা চুক্তিবদ্ধ হন তাদের কাজকে অবলেখক বলে।

খ কোম্পানির পরিচালকগণ যোগ্যতাসূচক শেয়ার ক্রয় করেন।

আইনের বিধান অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালক হতে হলে প্রত্যেক পরিচালককে নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করতে হয়। স্মারকলিপিতে এই শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে পরিচালক পদে নির্বাচন করার যোগ্যতা অর্জন করা যায়।

গ ‘কিং এন্ড কোং’ অভ্যন্তরীণ অর্থায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সঞ্চিতি তহবিলের অর্থ মূলধনে পরিণত করেছে।

কোম্পানি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ মূলধন সংগ্রহের অন্যতম উৎস সঞ্চিতি তহবিল। কোম্পানি অর্জিত মুনাফার সম্পূর্ণ অর্থ লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান না করে কিছু অংশ সঞ্চিতি হিসেবে জমা রাখে। প্রয়োজনে এটি ব্যবহার করে অর্থ সংকট দূর করে।

উদ্দীপকে ‘কিং এন্ড কোং’ একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি গত তিন বছর যাবৎ সফলতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন। তাই এই বছর সঞ্চিতি তহবিলের অর্থ মূলধনে পরিণত করছে। এক্ষেত্রে কোম্পানি মুনাফার অংশবিশেষ লভ্যাংশ হিসেবে বিলি না করে সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে এটি মূলধন হিসেবে ব্যবহার করে। সুতরাং কোম্পানিটি অভ্যন্তরীণ অর্থায়নের পদক্ষেপ হিসেবে এই তহবিল ব্যবহার করে।

ঘ ‘কিং এন্ড কোং’ এর বর্তমানে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে (ঝঁনংরফরধৎু পড়সঢ়ধহু) রূপান্তরিত হয়েছে। অ

সাবসিডিয়ারি কোম্পানির শেয়ার অধিকাংশ মালিকানা, ভোট দান ক্ষমতা, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অন্য কোম্পানির হাতে থাকে। এই কোম্পানি হোল্ডিং কোম্পানির আওতায় নিয়ন্ত্রিত হয়।

উদ্দীপকে ‘কিং এন্ড কোং’ প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মূলধনের চাহিদা হলে সঞ্চিতি তহবিল থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার মূল্য কমে যায়। ফলে কুইন এন্ড কোং নামে অন্য একটি কোম্পানি উক্ত প্রতিষ্ঠানের ৬০% শেয়ার ক্রয় করে নেয়।

এমন পরিস্থিতিতে ‘কিং এন্ড কোং’ সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হিসেবে তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারায়। কারণ সাবসিডিয়ারি কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৫০% এর কম থাকে। এক্ষেত্রে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির ভোটাধিকার ক্ষমতা হারায়। ঊর্ধ্বতন কোম্পানি বা হোল্ডিং কোম্পানি অধীনস্থ কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই বলা যায় ‘কিং এন্ড কোং’ এর শেয়ারের হার কম হওয়ায় এটি অধীনস্থ বা সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।

 প্রশ্ন ৩২ কামাল ও তার বন্ধু সোহাগ একটি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে। সোহাগ ব্যবসায়ের মুনাফা হোক বা না হোক নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পায়। কিন্তু নিজের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে মতামত দিতে পারে না। অপর পক্ষে কামাল ব্যবসায়ের মুনাফা হলেই কেবলমাত্র মুনাফার ভাগ পায়। সব বিষয়ে নিজের মতামত দিতে পারে এবং ব্যবসায় বিলোপ হলে সবার শেষে মূলধন ফেরত পাওয়ার শর্তে শেয়ার ক্রয় করলো।  [লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ]

 ক.   স্মারকলিপি কাকে বলে?   ১

 খ.   কোম্পানির স্বতন্ত্রধর্মী ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২

 গ.   সোহাগ কোন ধরনের শেয়ার ক্রয় করেছে? ব্যাখ্যা করো।   ৩

 ঘ.   কামাল ও সোহাগের শেয়ারের মধ্যে কোন ধরনের শেয়ারটি তোমার বিচারে উত্তম? বিশ্লেষণ করো।      ৪

৩২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে মূল দলিলে কোম্পানির মৌলিক বিষয়াবলি (কোম্পানির নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, দায়, মূলধন ও সম্মতি) সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে স্মারকলিপি বলে।  

খ কোম্পানির স্বতন্ত্রধর্মী ব্যবস্থাপনা হলো কোম্পানি নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হওয়া এবং মালিক থেকে পৃথক করে দেখানো।

এক্ষেত্রে কোম্পানি ব্যক্তি না হয়েও ব্যক্তির ন্যায় আইনগত মর্যাদা ও অধিকার লাভ করে। এটি কৃত্রিম সত্তা বলে নিজ নামে অন্যের সাথে লেনদেন করতে পারে। আবার কারো বিরুদ্ধে মামলাও করতে পারে। এ স্বতন্ত্রতা বলে কোম্পানি থেকে মালিকানাকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দেখানো হয়।

গ সোহাগ সঞ্চয়ী অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করেছেন।  

সঞ্চয়ী অগ্রাধিকার শেয়ারের ক্ষেত্রে কোম্পানি কোনো বছর লাভ না হলেও শেয়ার মালিকরা একটি নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কোনো বছর মুনাফা না হলে তা কোম্পানির কাছে পুঞ্জীভূত থাকে। পরবর্তীতে মুনাফা অর্জিত হলে এক সাথে শেয়ার মালিককে প্রদান করা হয়।

উদ্দীপকে কামাল ও সোহাগ দুই বন্ধু মিলে শেয়ার ক্রয় করেন। সোহাগ ব্যবসায়ের মুনাফা হোক বা না হোক নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পান। কিন্তু তিনি প্রতিষ্ঠানের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা প্রদান করতে পারেন না। এছাড়াও তিনি ভোটাধিকার ক্ষমতা পান না। কোনো বছর কোম্পানির মুনাফা না অর্জিত হলে পরবর্তী বছর তিনি পূর্বের মুনাফাসহ লভ্যাংশ গ্রহণ করেন। যা সঞ্চয়ী অগ্রাধিকার শেয়ারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, সোহাগ সঞ্চয়ী অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করেছেন।

ঘ কামালের শেয়ারটি হলো সাধারণ শেয়ার এবং সোহাগের শেয়ারটি হলো অগ্রাধিকার শেয়ার। এর মধ্যে কামালের শেয়ারটি উত্তম বলে আমি মনে করি।  

সাধারণ শেয়ার মালিকগণ প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। এরা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ভোটাধিকার ক্ষমতার অধিকারী। অন্যদিকে অগ্রাধিকার শেয়ারের মালিকগণ শুধু মুনাফায় অগ্রাধিকার পায়। কিন্তু পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

উদ্দীপকে সোহাগ ব্যবসায়ের মুনাফা হোক বা না হোক নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পান। কিন্তু পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না।  অর্থাৎ তার শেয়ারটি অগ্রাধিকার শেয়ার। কামাল ব্যবসায়ের মুনাফা হলেই কেবল মুনাফা পান। তিনি পরিচালনায় মতামত দিতে পারেন, যা সাধারণ শেয়ার মালিকের বৈশিষ্ট্য।

সোহাগ শুধু ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করেন এবং মুনাফা পান। অন্যান্য কাজ যেমন পরিচালনায় নি®িক্রয় থাকেন। কামাল সাধারণ শেয়ারের মালিক। এক্ষেত্রে তিনি অধিক ক্ষমতা এবং ব্যবসায় পরিচালনার সাথে জড়িত। তিনি ব্যবসায়ের যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন এবং পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। তাই বলা যায়, অগ্রাধিকার শেয়ার থেকে সাধারণ শেয়ার উত্তম।

 প্রশ্ন ৩৩ জনাব রহমান ও তার ১০ জন বন্ধু দেশে ও বিদেশে ব্যাপক চাহিদা ও পর্যাপ্ত শ্রম সুবিধার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদে ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১টি জুতার ফ্যাক্টরি দিয়ে ১ম বছর শেষে কোনো মুনাফা করতে না পারলেও পরবর্তী বছর বেশ মুনাফা অর্জন করেন। পরে উক্ত জুতার কারখানাটিকে ‘স্টার সুজ কোম্পানি’ নাম দিয়ে নিবন্ধন করিয়ে নেন এবং বাজারে শেয়ার বিক্রয় করেন। তখন তারা একটি উৎপাদন ইউনিট খুলে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

       [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]

 ক.   প্রযুক্তিগত পরিবেশ কী?  ১

 খ.   ই-কমার্স কী? ২

 গ.   স্টার সুজ কোম্পানি কোন ধরনের ব্যবসায়  সংগঠন ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   উক্ত কোম্পানির বিদেশে পণ্য রপ্তানির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো। ৪

৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রভৃতির সমন্বয়ে সৃষ্ট পরিবেশকে প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলে।

খ ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে পণ্য বা সেবাকর্ম ক্রয়-বিক্রয় করাকে ই-কমার্স বলে।                                                     

এক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবার বাণিজ্য হয়ে থাকে। কোনো নির্দিষ্ট অফিসের দরকার হয় না। এ পদ্ধতিতে গ্রাহকরে সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা যায়। তাদের পছন্দমতো পণ্য ও সেবা সরবরাহ করা যায়। তাছাড়া বর্তমানে ব্যাংকিং ও বিলিং, ভ্যালু চেইন ট্রেডিং, কর্পোরেট পারচেজ ইত্যাদি কাজও ই-কমার্সের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

গ স্টার সুজ কোম্পানিটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন।                                                    

সর্বনিম্ন সাত জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমিত যেকোনো সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত ব্যবসায় হলো পালিক লি. কোম্পানি। এখানে সদস্যদের দায় শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমিত। মূলধনের প্রয়োজন হলে কোম্পানি শেয়ার বিক্রয় করে সংগ্রহ করে। এর শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য।                                                  

উদ্দীপকের রহমান ও তার ১০ জন বন্ধু দেশে ও বিদেশে জুতার ব্যাপক চাহিদা ও পর্যাপ্ত শ্রম সুবিধা লক্ষ করেন। তাই তারা চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদে ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি জুতার ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। তাদের জুতার কারখানার নাম দেয় ‘স্টার সুজ কোম্পানি’। তারা তাদের কোম্পানির শেয়ার বাজারে বিক্রয় করেন। তাদের এই কাজ পাবলিক লি. কোম্পানির বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পৃক্ত। তাই বলা যায়, ‘স্টার সুজ কোম্পানি’ একটি পাবলিক লি. কোম্পানি সংগঠন।

ঘ স্টার সবুজ কোম্পানির বিদেশে পণ্য রপ্তানির সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। অ

কোনো কোম্পানিকে বিদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অনেক মূলধন প্রয়োজন হয়। পাবলিক লি. কোম্পানি চাইলেই এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারে। এক্ষেত্রে  মূলধনের জন্য তারা বাজারে শেয়ার বিক্রয় করতে পারে। তাছাড়া উৎপাদন খরচ কমিয়ে ও বৈদেশিক বাজারে চাহিদা বাড়াতে পারে।                              

উদ্দীপকের জনাব রহমান ও তার ১০ জন বন্ধু দেশে ও বিদেশে ব্যাপক চাহিদা ও পর্যাপ্ত শ্রম সুবিধা লক্ষ করে। এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শহরে ১১ লক্ষ টাকা ব্যয় করে জুতার ফ্যাক্টরি স্থাপন করে। ব্যবসায় মুনাফা হওয়ায় তারা একটি উৎপাদন ইউনিট খুলে পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে চায়। এজন্য  তারা তাদের কোম্পানিকে পাবলিক লি. কোম্পানিতে নিবন্ধন করেন। কোম্পানির শেয়ার বাজারে বিক্রয় করেন। স্টার সুজ কোম্পানি শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এতে প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন ও সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। তাছাড়া উৎপাদন ইউনিট খুলে পণ্য উৎপাদন করে বিদেশে চাহিদামতো পণ্য রপ্তানি করতে পারবে। এতে করে স্টার সুজ কোম্পানি বৈদেশিক মুনাফা অর্জন করতে পারে। এটি ব্যবসায় সম্প্রসারণের ফলে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বেকারত্ব কমবে। বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে তার প্রতিষ্ঠান ও দেশের সুনাম বাড়বে। ইত্যাদি কারণে বলা যায় যে, স্টার সুজ কোম্পানির পণ্য রপ্তানির সিদ্ধান্ত যৌক্তিক।

 প্রশ্ন ৩৪ ঢ কোম্পানি তিন বছর পূর্বে গঠিত হয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। পরিচালনা পর্ষদ তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কোম্পানিটির ৫১% শেয়ার বিক্রয় করে দিবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ণ কোম্পানির নিকট শেয়ার বিক্রয় করে দেয় এবং পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ভার  ণ কোম্পানির ওপর ন্যস্ত হয়। [কক্সবাজার সরকারি কলেজ]

 ক.   পণ্য বিনিময় কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করে?     ১

 খ.   কখন বিবরণপত্র প্রচারের প্রয়োজন হয় না? ব্যাখ্যা করো।  ২

 গ.   ণ কোম্পানিটিকে কোন ধরনের কোম্পানি বলা হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩

 ঘ.   ঢ কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক হয়েছে? মতামত দাও।       ৪

৩৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক পণ্য বিনিময় (ক্রয়-বিক্রয়) স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টি করে।  

খ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারগণ নিজেদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহে সমর্থ হলে বিবরণপত্র প্রচারের প্রয়োজন হয় না।  

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তার শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের জন্য জনগণ বরাবর আহ্বান জানিয়ে যে প্রচারপত্র প্রকাশ করে তাকে বিবরণপত্র বলে। কোম্পানির কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহকালেই এরূপ পত্র নিবন্ধনের নিকট জমা দিতে হয়। এরূপ পত্রের মধ্য কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব তথ্যের উল্লেখ করা থাকে, যাতে শেয়ার ক্রয়ে ইচ্ছুক ব্যক্তিবর্গ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারে। তবে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারা নিজেরাই মূলধন সংগ্রহ করতে পারলে এরূপ পত্র প্রচারের প্রয়োজন হয় না।

গ উদ্দীপকে ণ কোম্পানিকে হোল্ডিং কোম্পানি বলা হয়।  

হোল্ডিং কোম্পানি অন্য এক বা একাধিক কোম্পানির সব অথবা অধিকাংশ (৫০% এর বেশি) শেয়ার ক্রয় করে এর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করে। এরূপ কোম্পানি তার অধীন কোম্পানিগুলোর সহযোগে এক ধরনের জোটের সৃষ্টি করে।

উদ্দীপকে ঢ কোম্পানি তিন বছর ধরে তাদের ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। এমতবাবস্থায় কোম্পানি পরিচালক পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কোম্পানির ৫১% শেয়ার বিক্রয় করে দিবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা ণ কোম্পানির কাছে শেয়ার বিক্রয় করে দেয়। এরপর কোম্পানির পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ণ কোম্পানির ওপর ন্যস্ত করে। এক্ষেত্রে ণ কোম্পানি হোল্ডিং কোম্পানির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ণ কোম্পানি হোল্ডিং কোম্পানির অন্তর্গত।

ঘ উদ্দীপকে ঢ কোম্পানি হলো সাবসিডিয়ারি কোম্পানি, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোম্পানির শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক।

সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হলো সেই কোম্পানি যে কোম্পানির অধিকাংশ শেয়ারের মালিকানা, ভোট দান ক্ষমতা, কোম্পানির পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অন্য কোম্পানির অধীনে থাকে। এক্ষেত্রে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে অধীনস্থ কোম্পানিও বলা হয়।

উদ্দীপকে ঢ কোম্পানি তিন বছর পূর্বে গঠিত হয়ে তাদের ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত কোনো মুনাফা অর্জন করতে না পারায় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির ৫১% শেয়ার বিক্রয় করে দিবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ণ কোম্পানির কাছে শেয়ার বিক্রয় করে দেয় এবং কোম্পানির পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ভার ণ কোম্পানির উপর ন্যস্ত করে।

কোম্পানি যখন অনবরত লোকসান করতে থাকে তখন কোম্পানিকে টিকিয়ে রাখার জন্য যেকোনো একটি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে। উদ্দীপকে ঢ কোম্পানিটিও তাই তাদের ব্যবসায়কে টিকিয়ে রাখার জন্য ণ কোম্পানির কাছে অধিকাংশ শেয়ার বিক্রয় করে দেয়। এর ফলে কোম্পানিট বিলোপসাধনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। তাই বলা যায়, ঢ কোম্পানির শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক।

 প্রশ্ন ৩৫ জনাব ওসমান ও ১০ জন ব্যক্তি মিলে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র নিয়ে যথাযথভাবে একটি কোম্পানি ব্যবসায় শুরু করেন। জনাব ওসমান কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিচালক নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান যেখানে নির্দিষ্ট হারে সর্বাগ্রে লভ্যাংশ পাওয়া যাবে এবং কোনো ধরনের লোকসানও বহন করতে হবে না।     

[জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]

 ক.   সনদপ্রাপ্ত কোম্পানি কী?   ১

 খ.   কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তা বলতে কী বোঝায়?    ২

 গ.   জনাব ওসমান কোন ধরনের শেয়ার ক্রয় করেছেন? ব্যাখ্যা করো।       ৩

 ঘ.   পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মি. ওসমান গৃহীত সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো।       ৪

৩৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক দেশের আইনসভা, সংসদ বা প্রেসিডেন্টের বিশেষ অধ্যাদেশ বলে গঠিত ও নিয়ন্ত্রিত কোম্পানিকে সনদপ্রাপ্ত কোম্পানি বলে।

খ ব্যক্তি না হয়েও কোনো কিছু ব্যক্তির ন্যায় মর্যাদা ও অধিকার লাভ করাকে কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলে।  

কোম্পানিকে তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা হিসেবে দেখা যায়। যার ফলে এরূপ সংগঠন ব্যক্তি না হয়েও নিজ নামে অন্যের সাথে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন এবং প্রয়োজনে মামলা মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। একইভাবে অন্যরাও কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। এমনকি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররাও কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এজন্যই কোম্পানি কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী বলা হয়ে থাকে।

গ জনাব ওসমান সাধারণ শেয়ার ক্রয় করেছেন।

সাধারণ শেয়ারের মালিকগণ অধিকাংশ দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিক বিচারে সঠিক সুবিধা ও মর্যাদা ভোগ করেন। তবে এ ধরনের শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ বণ্টনে এবং বিলোপসাধনকালে মূলধন শেয়ার অগ্রাধিকার পান না।

উদ্দীপকে জনাব ওসমান ও ১০ জন ব্যক্তি মিলে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র নিয়ে যথাযথভাবে একটি কোম্পানি ব্যবসায় শুরু করেন। এদের মধ্যে জনাব ওসমান কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সবার পরিচালক নিযুক্ত হয়েছেন। তার নেতৃত্বের মাধ্যমেই কোম্পানিতে বিভিন্ন ধরনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররাই কোম্পানির সভায় অংশগ্রহণ করার এবং পরিচালনা করতে পারবেন। তাই বলা যায়, জনাব ওসমান সাধারণ শেয়ার ক্রয় করেছেন।

ঘ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মি. ওসমান অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ যৌক্তিক।  

অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকগণ ব্যবসায়ের লভ্যাংশ বণ্টনের ক্ষেত্রে এবং ব্যবসায়ের বিলোপসাধনের সময় তাদের মূলধন ফেরত পাবার ক্ষেত্রে সবার আগে অগ্রাধিকার লাভ করে। এরা মূলত কোম্পানির বিনিয়োগকারী বা পাওনাদার।

উদ্দীপকে জনাব ওসমান ও ১০ জন ব্যক্তি মিলে একটি কোম্পানি ব্যবসায় শুরু করেন। এদের মধ্যে জনাব ওসমান কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভার পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় এমন শেয়ার বিনিয়োগ করতে চান যেখানে তিনি নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পাবেন। আর তাকে কোনো লোকসানও বহন করতে হবে না।

যে সকল শেয়ারহোল্ডার নির্দিষ্ট হারে এবং সব শেয়ারহোল্ডারদের পূর্বে লভ্যাংশ পেতে চায় তাদের জন্য অগ্রাধিকার শেয়ার উত্তম। কারণ সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা অগ্রাধিকার শেয়ার হোল্ডারদের পরে লভ্যাংশ পায় এবং কোম্পানির লোকসানের জন্য তাদেরকেও লোকসানের দায় বহন করতে হয়, যা অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডারদের করতে হয় না। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে জনাব ওসমান যে অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সম্পূর্ণ যৌক্তিক।

 প্রশ্ন ৩৬ মি. হাসান ও তার পাঁচ বন্ধু মিলে একটি টেক্সটাইল মিল স্থাপন করেন। তাদের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা তাদের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়ায় তারা তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ব্যাংক ঋণ গ্রহণের অসুবিধার কথা চিন্তা করে তারা জনসাধারণের নিকট শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।       [সিলেট সরকারি কলেজ]

 ক.   শেয়ার কী?  ১

 খ.   কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তা বলতে কী বোঝায়?    ২

 গ.   উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরনের কোম্পানি? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির জনসাধারণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ে করণীয় কী সুপারিশ করো।      ৪

৩৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানি সংগঠনের অনুমোদিত মোট শেয়ার মূলধনের সমান ও ক্ষুদ্র অংশের প্রত্যেকটি অংশকেই শেয়ার বলে।

  উদাহরণ: কোনা কোম্পানির ১,০০,০০০ টাকার মূলধনকে ১০,০০০ ভাগে ভাগ করলে এক কোটি ভাগের মূল্য দাঁড়াবে ১০ টাকা। মূলধনের এ অংশই শেয়ার।

খ ব্যক্তি না হয়েও কোনো ব্যক্তির ন্যায় মর্যাদা ও অধিকার লাভ করাকে কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তা বলে।

কোম্পানিকে তার মালিক বা শেয়ারহোল্ডার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা হিসেবে দেখা হয়। যার ফলে এরূপ সাধারণ ব্যক্তি না হয়েও নিজ নামে অন্যের সাথে চুক্তি সম্পাদন, লেনদেন এবং প্রয়োজনে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। একইভাবে অন্যরাও কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। এমনকি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারও কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এজন্যই কোম্পানিকে কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী বলা হয়।

গ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি হলো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অন্তর্গত।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ থাকে। এ কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তান্তরেযোগ্য নয়। শুধু কোম্পানির সদস্যরাই এ কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করতে পারে। সদস্য সংখ্যা ও মূলধন সীমিত থাকার কারণে এই কোম্পানি তুলনামূলক ক্ষুদ্র আয়তনের হয়ে থাকে।

উদ্দীপকে মি হাসান ও তার পাঁচ বন্ধু মিলে কৃত্রিম সত্তাবিশিষ্ট একটি টেক্সটাইল মিল স্থাপন করেন। তাদের ব্যাবসায়ের একটি অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ছিল ২০ কোটি টাকা। তারা ইচ্ছা করলেই জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে না। ফলে তাদের ব্যবসায়ের মূলধনের পরিমাণ কম হয়। এছাড়াও উদ্দীপকের কোম্পানির মোট সদস্য সংখ্যা ৬ জন হওয়ায় কোম্পানিটির সাথে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির মিল পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের কোম্পানিটি হলো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সরবরাহের জন্য কোম্পানির গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করতে পারে। কিন্তু এ ধরনের কোম্পানি জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রয় করে সনদপত্র সংগ্রহ করতে পারে না। অপরদিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে নিবন্ধনপত্র সংগ্রহের পর কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। এ কোম্পানির মূলধনের প্রয়োজন হলে জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রয় করে তা সংগ্রহ করতে পারে।

উদ্দীপকে মি. হাসান ও তাঁর পাঁচজন বন্ধু মিলে একটি টেক্সটাইল মিল স্থাপন করেন। তাদের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়ে ওঠে। ফলে তারা তাদের ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে তাদের অর্থের প্রয়োজন হলে তারা জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রয় করতে পারে না। অথচ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি জনগণের নিকট অবাধে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রয় করতে হলে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইভেট থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করতে হবে।

 প্রশ্ন ৩৭ প্রবীর তার ৫ জন বন্ধু মিলে দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠা করলো। কিছুদিন পর তাঁরা দেখলেন যে, বিদেশ থেকে যদি দুধ প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র আমদানি করা যায় তবে মুনাফার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়বে। কিন্তু এজন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা তাদের কাছে নেই, ব্যাংকও নতুন করে দিতে রাজি হচ্ছে না। প্রবীররা ভেবে দেখলেন দেশের জনগণের কাছ থেকে পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব। এজন্য অবশ্য তাদের নতুন করে কিছু দলিলপত্রাদি প্রস্তুত করতে হবে।

      [সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ, খুলনা]

 ক.   পণ্য কাকে বলে?   ১

 খ.   ব্যবসায় পরিবেশ বলতে কী বোঝ?     ২

 গ.   উপরের উদ্দীপকে প্রবীর ও তার বন্ধুরা কোন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন করেছেন? বুঝিয়ে লেখ।       ৩

 ঘ.   প্রবীর ও তার বন্ধুরা মিলে কীভাবে অর্থ সংগ্রহের কথা ভাবছেন? এজন্য তাদের করণীয় কী কী?   ৪

৩৭ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যেসব দৃশ্যমান বস্তু মানুষের অভাব পূরণ করতে পারে তাকে পণ্য বলে।

খ ব্যবসায়ের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানের সমন্বয় হলো ব্যবসায় পরিবেশ।

ব্যবসায়ের পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে যেমন অনেক বিষয় আছে যা ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় সরাসরি বা পরোক্ষভাবে অনুকূল বলে বিবেচিত হয়। আবার এমন অনেক বিষয় আছে যা ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় বাধার সৃষ্টি করে। এসব অনুকূল ও প্রতিকূল উপাদানের সমন্বয় হলো ব্যবসায় পরিবেশ।

গ উদ্দীপকে প্রবীর ও তার বন্ধুরা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করেছেন।  

কোম্পানি আইন অনুযায়ী যৌথমূলধনী কোম্পানি গঠিত ও পরিচালিত হয়। এ সংগঠনের ২টি ধরন আছে। প্রাইভেট ও পাবলিক লিমিটেড। কমপক্ষে ২ জন ও সর্বোচ্চ ৫০ জনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। অপরদিকে কমপক্ষে ৭ জন ও সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত হয় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

উদ্দীপকে বর্ণিত সংগঠন জনগণের নিকট হতে মূলধন সংগ্রহ করতে চাচ্ছে। তাই এটি অবশ্যই কোম্পানি সংগঠন। আবার এতে বর্তমান সদস্য সংখ্যা হলো মাত্র ৬ জন। আর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হলে কমপক্ষে ৭ জন সদস্য হতে হবে। তাই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হতে পারে না। প্রাইভেট লিমিটেডের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ জন সদস্য প্রয়োজন হয়। তাই এটিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অন্তর্গত বলা যায়।

ঘ উদ্দীপকে প্রবীর ও তার বন্ধুরা মিলে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কথা ভাবছেন।

যৌথমূলধনী কোম্পানি তাদের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য বা নতুন প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রি করতে পারে। শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদে বা স্থায়ী ভিত্তিতে অর্থের বা মূলধনের যোগান দিতে পারে।

উদ্দীপকে প্রবীর ও তার বন্ধুরা একটি দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠা করে। নতুন যন্ত্র ক্রয়ের জন্য তাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।  এই অর্থ তাদের কাছেও নেই, ব্যাংকও দিতে রাজি নয়। তবে তারা ভাবছে জনগণের নিকট হতেই তারা এই অর্থ সংগ্রহ করবে। অর্থাৎ তারা শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থসংস্থান করতে চাচ্ছে।

যেহেতু তাদের প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি তাই তাদেরকে প্রথমে একে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য তাদের স্মারকলিপি ও পরিমেল  নিয়মাবলি পরিবর্তন করে প্রয়োজনীয় ফিসহ নিবন্ধকের কাছে আবেদন করতে হবে। নতুন করে এটি পাবলিক লি. হিসেবে নিবন্ধনের পর পত্রিকায় বিবরণপত্র প্রচার করতে হবে। অতঃপর নিবন্ধনের অনুমোদন সাপেক্ষে নতুন শেয়ার জনগণের কাছে বিক্রয় করে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দিতে পারবে।

 প্রশ্ন ৩৮ মারুফ চাকরি ও ব্যবসায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এসময় সে তার বড় ভাইয়ের পরামর্শ মোতাবেক কম্পিউটারের বেশ কয়েকটি কোর্স সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করে এবং সেগুলোর ওপর সে বেশ দক্ষ হয়ে উঠে। এখন মারুফ কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে বাড়িতে বসেই অনেক উপার্জন করে।    [সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ, খুলনা]

 ক.   পেটেন্ট কাকে বলে?      ১

 খ.   সামাজিক ব্যবসায় বলতে কী বোঝ?    ২

 গ.   উদ্দীপকের মারুফ কী উপায়ে উপার্জন করেছে? বোঝিয়ে লেখ।   ৩

 ঘ.   মারুফ কীভাবে বেকার যুব সমাজের অনুকরণীয় হতে পারে? ব্যাখ্যা করো।     ৪

৩৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক নতুন আবিষ্কৃত কোনো পণ্যের ওপর এর আবিষ্কারকের একক অধিকার দেয়ার জন্য আবিষ্কারক ও সরকারের সাথে সম্পাদিত চুক্তিকে পেটেন্ট বলে।  

খ দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক কল্যাণের জন্য যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

এরূপ ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা হতে এর উদ্যোক্তাগণ কোনো লভ্যাংশ নেন না। তারা শুধু তাদের বিনিয়োজিত অর্থ ফেরত নেন। আর বাকি মুনাফা অর্থ ব্যবসায় সম্প্রসারণের কাজে লাগানো হয়। নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ব্যবসায়ের প্রবক্তা।

গ উদ্দীপকে মারুফ আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে উপার্জন করছে।

চুক্তি করে নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানো হয় এর মাধ্যমে। কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সব কাজ নিজের ব্যবস্থাপনার আওতায় লোক দিয়ে করানো সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই প্রতিষ্ঠানের বাইরের কাউকে দিয়ে কিছু কাজ করানোর প্রয়োজন হতে পারে। এই পদ্ধতিই আউটসোর্সিং নামে পরিচিত।

উদ্দীপকের মারুফ চাকরি ও ব্যবসায়ে ব্যর্থ হয়। অতঃপর কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে বাড়িতে বসেই অনেক উপার্জন করছে। তাই দেখা যায়, মারুফ কোনো প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী নয়। সে চুক্তির ভিত্তিতে অন্য প্রতিষ্ঠানের কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে। এসব বৈশিষ্ট্য আউটসোর্সিং-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই তার উপার্জনের পন্থাকে আউটসোর্সিং বলে গণ্য করা যায়।

ঘ উদ্দীপকে মারুফ তার ব্যক্তিগত সাফল্যের মাধ্যমে বেকার যুব সমাজের অনুকরণীয় হতে পারে। অ

বর্তমান যুগে আউটসোর্সিং-এর সাহায্যে ঘরে বসেই অনেক অর্থ উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আর কোনো ধরাবাধা অফিস টাইম মেনে চলারও প্রয়োজন পরে না। এটি অনেকটাই স্বাধীন প্রকৃতির পেশা।

উদ্দীপকের মারুফ চাকরি ও ব্যবসায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এক সময় সে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে ওঠে। বর্তমানে সে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে বাড়িতে বসেই অনেক অর্থ উপার্জন করছে। তার অর্থ উপার্জনের এ পদ্ধতিকে আউটসোর্সিং বলা যায়।

এক্ষেত্রে মারুফ বেকার যুবসমাজের অনুকরণীয় হতে পারে। তার প্রথম সময়ের মতো লক্ষ লক্ষ যুবক চাকরির জন্য হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকে আবার ব্যবসারে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে। তারা যদি মারুফের মতো কোনো টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে, তাহলে অতি সহজেই উপার্জনের পথ পেতে পারে। এতে সহজেই তাদের সচ্ছলতা আসতে পারে।

 প্রশ্ন ৩৯ মনা, বুলু, টুকু ও জয় মিলে একটি সিমেন্ট তৈরির কারখানা স্থাপনের কথা ভাবছে। এই ব্যবসায়ে যে পরিমাণ মূলধনের প্রয়োজন, তা মেটানোর জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা তারা করছে। এজন্য তাদের অনেক আইনি পদক্ষেপ ও অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে হচ্ছে।      [সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ, খুলনা]

 ক.   অগ্রাধিকার শেয়ার কাকে বলে?  ১

 খ.   পরিমেল নিয়মাবলি কী?   ২

 গ.   উপরের উদ্দীপকটিতে মনা, বুলু, টুকু ও জয় কোন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে তুলতে চাচ্ছেন? বুঝিয়ে লেখো।  ৩

 ঘ.   মনা, বুলু, টুকু ও জয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তাদের নতুন পরিচয় কী হবে? বর্তমান সময়ে ঐ পরিচয়ধারীদের গুরুত্ব তুলে ধরো। ৪

৩৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে শেয়ারের মালিকগণ কোম্পানির লভাংশ বণ্টন এবং মূলধন ফেরত পাবার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পায় তাকে অগ্রাধিকার শেয়ার বলে।  

খ কোম্পানি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কাজ পরিচালনাগত যাবতীয় নিয়মাবলি বিস্তারিতভাবে যে দলিলে উল্লেখ থাকে তাকে পরিমেল নিয়মাবলি বলে।  

পরিমেল নিয়মাবলি হলো যৌথমূলধনী কোম্পানির একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এতে কোম্পানি পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ের উল্লেখ থাকে। অর্থাৎ এতে কোম্পানির দৈনন্দিন কার্য পরিচালনার পদ্ধতি বা নিয়মনীতির উল্লেখ থাকে। এটি অনুসরণ করে কোম্পানি তার কার্য পরিচালনা করে।

গ উদ্দীপকটিতে মনা, বুলু, টুকু ও জয় একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠনের কথা ভাবছে।

কমপক্ষে ৭ জন ও সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা পরিমাণ সদস্য নিয়ে কোম্পানির আইন অনুযায়ী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠন করা হয়। এরূপ কোম্পানি কেবলমাত্র জনগণের নিকট হতে মূলধন বা অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।

উদ্দীপকে বর্ণিত মনা, বুলু, টুকু ও জয় মিলে একটি সিমেন্ট তৈরির কারখানা স্থাপন করতে চাচ্ছে। এর মূলধনের যোগান দিতে জনগণের নিকট হতে অর্থ সংগ্রহের কথা ভাবছে। এজন্য তাদের অনেক আইনগত আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হবে। তাই তারা জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রি করার কথা ভাবছে। আর তারা আইনগত পন্থায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাচ্ছে। তাই বলা যায়, তাদের গঠিত প্রতিষ্ঠানটি হলো একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ উদ্দীপকের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তাদের নতুন পরিচয় হবে কোম্পানির উদ্যোক্তা।

কোম্পানির উদ্যোক্তা বা উদ্যোক্তা পরিচালক কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং কোম্পানি প্রতিষ্ঠাকালীন যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেন। তারা কোম্পানি গঠনকালীন যাবতীয় কাগজপত্র প্রণয়ন করেন এবং যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করে থাকেন।

উদ্দীপকের মনা, বুলু, টুকু ও জয় মিলে একটি কারখানা স্থাপন করার কথা ভাবছে। জনগণের নিকট হতে অর্থ সংগ্রহ করে এর মূলধনের যোগান দেওয়ার চিন্তা তারা করছে। এজন্য তারা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যেহেতু কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক সব কাজ তারা সম্পন্ন করছে, এজন্য তাদেরকে উদ্যোক্তা বা উদ্যোক্তা পরিচালক বলা হয়।

তাদের এ পরিচয়ের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। পরিচালক হিসেবে তারাই কোম্পানির স্মারকলিপি ও সংঘবিধি প্রণয়ন করবেন। প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বা উদ্যোক্তা হিসেবে তারা বিভিন্ন দলিলপত্রে স্বাক্ষর করবেন। আইনি সব প্রক্রিয়াও তারাই সম্পাদন করবেন। এজন্য বর্তমানে তাদের মতো উদ্যোক্তা ব্যতীত কোম্পানি গঠনই সম্ভব নয়।

 প্রশ্ন ৪০ মি. হাবিব একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিন একটি নতুন ব্যবসায়ের মডেল সরকারের কাছে উপস্থাপন করেন। এতে স্বল্প ব্যয়ে ও সহজ উপায়ে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের নিমিত্তে সরকারি মালিকানায় ও নিয়ন্ত্রণে একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব থাকে। কোম্পানির স্বাধীন আইনগত মর্যাদা ও চিরন্তন অস্তিত্ব থাকবে। জনকল্যাণ ও একচেটিয়া ব্যবসায় রোধ করাই এ কোম্পানির মূল লক্ষ্য হবে।       [গাজীপুর সিটি কলেজ]

 ক.   চচচ এর পূর্ণ রূপ কী?   ১

 খ.   ওয়াসা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।      ২

 গ.   উদ্দীপকে বর্ণিত মি, হাবিব কর্তৃক প্রস্তাবিত কোম্পানিটি কোন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন? কেন?       ৩

 ঘ.   সাধারণ কোম্পানি ব্যবসায়ের সাথে প্রস্তাবিত কোম্পানি ব্যবসায়ের মৌলিক পার্থক্য নির্ণয় করো।      ৪

৪০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক চচচ এর পূর্ণরূপ হলো- চঁনষরপ চৎরাধঃব চধৎঃহবৎংযরঢ়.

 এর অর্থ সরকারি বেসরকারি অংশীদারিভিত্তিক ব্যবসায়। সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থায়নে জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে এ ব্যবসায় গঠিত ও পরিচালিত।

খ বাংলাদেশের মেট্রোপলিটন শহর এলাকায় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা দেওয়ার জন্য যে প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তা হলো ওয়াসা (ডধঃবৎ ঝঁঢ়ষু ধহফ ঝববিৎধমব অঁঃযড়ৎরঃু)।

১৯৬৩ সালে রাষ্ট্রীয় এক অধ্যাদেশ বলে এই প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪টি ওয়াসা পানি সরবরাহের কাজ করছে। জনগণের স্বাভাবিক জীবনধারণের জন্য এ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গ উদ্দীপকে বর্ণিত মি. হাবিব কর্তৃক প্রস্তাবিত কোম্পানিটি সরকারি কোম্পানি সংগঠনের অন্তর্গত।

এ ধরনের কোম্পানির সব শেয়ার বা কমপক্ষে ৫১% শেয়ার সরকারি মালিকানায় থাকে। এর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সরকারে কাছেই থাকে। দেশের প্রচলিত কোম্পানি আইন অনুযায়ী এটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সব সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এর অন্তর্ভুক্ত।

উদ্দীপকের জনাব হাবিব একটি নতুন ব্যবসায়ের মডেল সরকারের কাছে উপস্থাপন করেন। এক্ষেত্রে তিনি সরকারি মালিকানায় ও নিয়ন্ত্রণে একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব করেন। উল্লেখ্য, এর স্বাধীন আইনগত মর্যাদা ও চিরন্তন অস্তিত্ব থাকবে। আর এর মূল লক্ষ্য হবে জনকল্যাণ ও একচেটিয়া ব্যবসায় রোধ করা। এসব বৈশিষ্ট্য সরকারি কোম্পানির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, মি. হাবিব এ কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবই করেছেন।

ঘ সাধারণ কোম্পানি ব্যবসায়ের সাথে প্রস্তাবিত সরকারি কোম্পানি ব্যবসায়ের মালিকানাগত ও উদ্দেশ্যগত মূল পার্থক্য বিদ্যমান।

কোম্পানি সংগঠন আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। এটি কোম্পানির মালিক কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। সাধারণ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে যে কেউ কোম্পানির মালিক হতে পারে। আর সরকারি কোম্পানির বেশির ভাগ শেয়ার সরকারের হাতে থাকে। তাই এর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও সরকারের কাছে থাকে।

উদ্দীপকে, মি. হাবিব সরকারে কাছে একটি নতুন ব্যবসায়ের মডেল উপস্থাপন করেন। এখানে স্বল্প ব্যয়ে ও সহজে ইন্টারনেট সুবিধার জন্য একটি সরকারি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব দেন।

সাধারণ কোম্পানি পরিচালনা করে কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডাররা। এর মূল উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন। আর সরকারি কোম্পানি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। যেখানে এ কোম্পানি জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করে। এছাড়া একচেটিয়া ব্যবসায়ও রোধ করে। সুতরাং সাধারণ কোম্পানির সাথে উদ্দীপকে প্রস্তাবিত কোম্পানিটির এসব পার্থক্য লক্ষণীয়।

 প্রশ্ন ৪১ জনাব শাহ আলম প্রায় ১০ বছর চাকরি করার পর ব্যাংকে ৫ লক্ষ টাকা জমা করেছেন। তিনি এ অর্থ দিয়ে একটি কোম্পানির এমন শেয়ার ক্রয় করেন যার জন্য অন্য শেয়ারহোল্ডারদের চেয়ে আগেই লভ্যাংশ পান এবং কোম্পানি বিলুপ্তির পরও শেয়ার মূল্য ফেরত পাবেন। তবে তিনি কোম্পানিতে কোনো ভোটাধিকার প্রয়োগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন না।  [সরকারি ইয়াসিন কলেজ, ফরিদপুর]

 ক.   সাধারণ শেয়ার কী? ১

 খ.   বিবরণপত্র বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা করো।   ২

 গ.   জনাব শাহ আলম কোন ধরনের শেয়ার ক্রয় করছেন? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   কোন শেয়ারহোল্ডার কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন? বিশ্লেষণ করো।  ৪

৪১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে শেয়ারের মালিকগণ অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিচারে অধিক সুবিধা পেলেও লভ্যাংশ বণ্টন ও মূলধন প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পায় না তাকে সাধারণ শেয়ার বলে।

খ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয়ের আহ্বান জানিয়ে কোম্পানির বিস্তারিত বর্ণনা সম্বলিত যে পত্র প্রচার করে তাকে বিবরণপত্র বলে।

এ পত্রে কোম্পানি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেওয়া থাকে এবং শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণাও থাকে। এর থেকে কোম্পানি সম্পর্কে জনগণ জানতে পারে এবং উক্ত কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হয়। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির জন্য এরূপ পত্র ইস্যু করা বাধ্যতামূলক। এটি ইস্যু না করলে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ব্যবসায়ের কাজ শুরু করতে পারবে না।

গ উদ্দীপকে জনাব শাহ আলম অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করেছেন।

শেয়ারের মালিকগণ ব্যবসায়ের লভ্যাংশ বণ্টনের এবং ব্যবসার বিলোপসাধনের সময় তাদের মূলধন ফেরত পাবার ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের চেয়ে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। শেয়ারের মালিকগণ কোম্পানির সাধারণ বিষয়সমূহের ব্যাপারে ভোট দিতে পারেন না।

উদ্দীপকের জনাব শাহ আলম তার জমানো অর্থ দিয়ে একটি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করেন। তার ক্রয়কৃত শেয়ারের মালিকগণ অন্য শেয়ারহোল্ডারদের আগেই লভ্যাংশ পান। কোম্পানি বিলুপ্তির ক্ষেত্রে এরা অন্যদের আগেই মূলধন ফেরত পাবেন। তবে তারা কোম্পানিতে ভোট দিতে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। এসব বৈশিষ্ট্য অগ্রাধিকার শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই বলা যায়, তিনি অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করছেন।

ঘ সাধারণ শেয়ারহোল্ডার কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।  

কোম্পানির লভ্যাংশ বণ্টনের ক্ষেত্রে এ শেয়ারের মালিকগণ অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের পরে লভ্যাংশ পাবার অধিকারী হন। কোম্পানির বিলোপের ক্ষেত্রেও তাদের পরই তারা মূলধন ফেরত পাবেন। সাধারণ শেয়ারহোল্ডার বলতে এরূপ শেয়ার মালিকদেরকেই বোঝায়। এরা কোম্পানির সাধারণ সভায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

তাই বলা যায়, কোম্পানির কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন কেবল সাধারণ শেয়ারহোল্ডারগণই। আর তারা সাধারণ সভায় কোম্পানি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতামত প্রদান এমনকি পরিচালক পদে প্রার্থীও হতে পারেন।

 প্রশ্ন ৪২ জনাব তৌসিফ গ্রিন এগ্রো কোম্পানির পরিচালক। প্রথম কয়েক বছর মুনাফা করলেও বর্তমানে গ্রিন এগ্রো লি. লোকসান দিয়ে আসছে। অনেক চেষ্টা করেও তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের ৬০% শেয়ার ডেল্টা কোম্পানির কাছে ছেড়ে দিয়েছেন। সাথে সাথে গ্রিন এগ্রো কোম্পানির ভোটদানের ক্ষমতা এবং পরিচালনা ক্ষমতাও ডেল্টা কোম্পানিকে দিয়েছেন।    [কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজ, নাটোর]

 ক.   স্মারকলিপি কী?    ১

 খ.   ‘বিধিবদ্ধ কোম্পানির উদ্দেশ্য জনকল্যাণকর’ব্যাখ্যা করো।      ২

 গ.   উদ্দীপকের বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রিন এগ্রো কোম্পানির ধরন ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   গ্রিন এগ্রো কোম্পানীর ৬০% শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরো।    ৪

৪২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক যে দলিলে কোম্পানির নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, মূলধন, শেয়ারহোল্ডারদের দায়, সম্মতি ইত্যাদি বিষয় লিপিবব্ধ থাকে তাকে স্মরকলিপি বলে।

খ দেশের আইনসভায় বিল পাস বা রাষ্ট্রপতির বিশেষ অধ্যাদেশ বলে গঠিত ও নিয়ন্ত্রিত কোম্পানিকে বিধিবদ্ধ কোম্পানি বলে।

বিধিবদ্ধ কোম্পানির উদ্দেশ্য জনকল্যাণকর। এই সব কোম্পানির মাধ্যমে দেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণমূলক কাজ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, ওয়াসা, বাংলাদেশ বিমান বিধিবদ্ধ কোম্পানির উদাহরণ।

গ জনাব তৌসিফ এর গ্রিন এগ্রো কোম্পানিটি একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি।                                              

এরূপ কোম্পানির ৫০% এর বেশি শেয়ার ও ভোটদান ক্ষমতা অন্য কোনো কোম্পানির অধীনে থাকে। সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতাও অন্য কোম্পানির অধীনে থাকে।                              

উদ্দীপকের গ্রিন এগ্রো কোম্পানিটি প্রথম কয়েক বছর মুনাফা করে। এরপর থেকে কোম্পানিটির ক্ষতি হচ্ছে। অনেক চেষ্টার পরও জনাব তৌসিফ তার প্রতিষ্ঠানটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। তাই ডেল্টা কোম্পানির কাছে ৬০% শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। ভোট দানের ক্ষমতা এবং পরিচালনা ক্ষমতাও দিয়ে দিয়েছেন। উপরিউক্ত কাজগুলোর ধরন সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়। তাই গ্রিন এগ্রোর বর্তমান অবস্থা সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকেই নির্দেশ করে।

ঘ গ্রিন এগ্রো কোম্পানির বছরের পর বছর লোকসানের ভার বহন করার চেয়ে ৬০% শেয়ার ছেড়ে দেওয়া যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

কোনো কোম্পানি যখন তার অর্ধেকের বেশি শেয়ার বা ভোট দেওয়ার ক্ষমতা অন্য কোনো কোম্পানিকে দিয়ে দিয়ে তা সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হয়ে যায়। নিয়ন্ত্রক কোম্পানিকে হোল্ডিং কোম্পানি বলে।

উদ্দীপকে গ্রিন এগ্রো কোম্পানিটির পরিচালক জনাব তৌসিফ। তিনি প্রথমে তার কোম্পানিটিতে মুনাফার মুখ দেখলেও বর্তমানে এটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন ক্ষতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য। কিন্তু, ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে ৬০% শেয়ার ডেল্টা কোম্পানির কাছে ছেড়ে দেবেন। এক্ষেত্রে ডেল্টা কোম্পানি গ্রিন এগ্রো কোম্পানির হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে মালিক বা পরিচালকগণ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এতে কোম্পানিটি লোকসানের মুখোমুখি হয়। এই অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে কোম্পানিটি টিকতে পারে না। তাই তখন অন্য কোনো কোম্পানির কাছে এটির অধিকাংশ শেয়ারের মালিকানা, ভোটদান ক্ষমতা এবং পরিচালনা ও নিন্ত্রণের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে সেই কোম্পানিটি পুরোপুরি বিলোপ বা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। জনাব তৌসিফ তার গ্রিন এগ্রো কোম্পানির জন্য এই সিদ্ধান্তটিই গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে ডেল্টা কোম্পানিকে তিনি বাছাই করেন। এটি হোল্ডিং কোম্পানির দায়িত্বে আছে। এর মাধ্যমে জনাব তৌসিফ-এর কোম্পানিটি চলমান ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। তাই গ্রিন এগ্রো কোম্পানির ৬০% শেয়ার ছেড়ে দেওয়া সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত।

 প্রশ্ন ৪৩ জনাব শাকিল আহমেদ ও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে একটি কোম্পানি গঠন করেন। কোম্পানি নিবন্ধিত করার পরপরই তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করেন। অপরদিকে জনাব নোমান চৌধুরী ও কামাল আহমেদসহ আরও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে আর একটি কোম্পানি গঠন করেন। কিন্তু তারা যথারীতি নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করলেও কোম্পানির কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

       [আহম্মদ্ উদ্দিন শাহ্ শিশু নিকেতন স্কুল ও কলেজ, গাইবান্ধা ]

 ক.   কোম্পানি সংগঠন কী?    ১

 খ.   কোম্পানি সংগঠনের কৃত্রিম সত্তা বলতে কী বুঝায়? ২

 গ.   উদ্দীপকের জনাব নোমান চৌধুরী তাদের কোম্পানি যথারীতি নিবন্ধন করার পরও কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি কেন? ব্যাখ্যা করো।     ৩

 ঘ.   উদ্দীপকের জনাব শাকিল আহম্মেদের কোম্পানির সাথে জনাব নোমান চৌধুরীর কোম্পানির গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে-বিশ্লেষণ করো।      ৪

৪৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক কোম্পানি আইন দ্বারা সৃষ্ট, পরিচালিত, চিরন্তন অস্তিত্বসম্পন্ন ও কৃত্রিম ব্যক্তিসত্ত্বার অধিকারী সংগঠনকে কোম্পানি সংগঠন বলে।

খ যে সত্তা বা অস্তিত্ব বলে কোম্পানি নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে কোম্পানির কৃত্রিম সত্তা বলে।          

কৃত্রিম সত্তার জন্যে কোম্পানিকে মালিক হতে আলাদা বিবেচনা করা হয়। কোম্পানি নিজ নামে চুক্তি, লেনদেন ও আইনের সহায়তা নিতে পারে। কোম্পানি ব্যক্তি না হয়েও নিজ নামে গঠিত ও পরিচালিত হতে পারে বলে একে কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তার অধিকারী বলা হয়।

গ উদ্দীপকের জনাব নোমান চৌধুরী কার্যারাম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ না করায় কার্যক্রম শুরু করতে পারেন নি।

কার্যারাম্ভের অনুমতিপত্র বলতে যে পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধক কোম্পানিকে কাজ শুরুর অনুমতি দিয়ে থাকে, তাকে বোঝায়। কোম্পানি নিবন্ধন হওয়ার পর পরই কাজ শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে পাবলিক লি. কোম্পানিকে কাজ শুরুর জন্য নিবন্ধক হতে অনুমতি নিতে হয়। তাছাড়া কাজ শুরু করতে পারে না।                

উদ্দীপকের জনাব নোমান চৌধুরী ও কামাল আহমেদসহ আরও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে একটি কোম্পানি গঠন করেন। তারা নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করেন। কিন্তু কার্যক্রম শুরু করতে পারেন না। কারণ, তারা কার্যারাম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করেন নি। পাবলিক লি. কোম্পানির ক্ষেত্রে নিবন্ধনের কাজ শুরুর জন্যে অনুমতি নিতে হয়। জনাব নোমান চৌধুরী ও কামাল আহমেদের কোম্পানিটি পাবলিক লি. হওয়ায় কাজ শুরুর জন্যে অনুমতি প্রয়োজন। এটি না নেওয়ায় তারা কাজ শুরু করতে পারেন নি।

ঘ জনাব শাকিল আহম্মেদের কোম্পানি হলো প্রাইভেট লি. কোম্পানি এবং জনাব নোমান চৌধুরীর কোম্পানি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তাদের উভয়ের কোম্পানির গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে। অ

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ হতে সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবব্ধ। এ কোম্পানি শেয়ার ইস্যু ও হস্তান্তর করতে পারে। অন্যদিকে প্রাইভেট লি. কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ হতে সর্বোচ্চ ৫০ জন। কোম্পানি শেয়ার ইস্যু ও হস্তান্তর করতে পারে না।                                             

উদ্দীপকের জনাব শাকিল আহম্মেদ ও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে কোম্পানি গঠন করেন। কোম্পানি নিবন্ধন করেন। নিবন্ধনের পর পরই কাজ শুরু করেন। অপর দিকে জনাব নোমান চৌধুরী ও কামালসহ আরও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে অন্য একটি কোম্পানি গঠন করেন। তারাও নিবন্ধন করেন। কিন্তু নিবন্ধনের পরপরই শাকিল আহম্মেদের কোম্পানির মতো কাজ শুরু করতে পারেন নি। কারণ তাদের উভয়ের কোম্পানির গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে।

প্রাইভেট লি. কোম্পানি নিবন্ধনের পরপরই কাজ শুরু করতে পারে। কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না, যা জনাব শাকিলের কোম্পানির কাজের সাথে মিলে পায়। অন্যদিকে, পাবলিক লি. কোম্পানির ক্ষেত্রে কোম্পানি নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধন করে কাজ শুরুর জন্য অনুমতি নিতে হয়। তাছাড়া কাজ শুরু করতে পারে না। এটি জনাব নোমান চৌধুরীর কোম্পানির অবস্থার সাথে মিলে যায়।                 

সুতরাং, জনাব শাকিল আহম্মেদের কোম্পানিটি একটি প্রাইভেট লি. কোম্পানি। অন্যদিকে জনাব নোমান চৌধুরীর কোম্পানিটি একটি পাবলিক লি. কোম্পানি। তাদের উভয়ের কোম্পানি ভিন্ন হওয়ায় উক্ত  পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই বলা যায় যে, জনাব শাকিল ও জনাব নোমান চৌধুরীর কোম্পানির গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে।

 প্রশ্ন ৪৪ নীলক্ষেতের ৭ জন উদ্যোক্তা মিলে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তারা কোম্পানিটির নাম দিলেন নীলক্ষেত স্কয়ার। নীলক্ষেত স্কয়ার মূলধন সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিল। কোম্পানির বিবরণপত্র প্রকাশিত হলে জনগণ শেয়ার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ হলো। বৃহৎ মূলধন গঠন করে প্রতিষ্ঠানটি বিস্তৃত কার্যক্রম শুরু করলো।

      [ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজ]

 ক.   পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কত প্রকার?     ১

 খ.   হোল্ডিং কোম্পানি বলতে কী বোঝায়?   ২

 গ.   নীলক্ষেত স্কয়ার কোন ধরনের কোম্পানি? বর্ণনা করো।     ৩

 ঘ.   নীলক্ষেত স্কয়ারের শেয়ার বিক্রয় সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক বলে তুমি মনে করো? ৪

৪৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি চার প্রকার।

 চার প্রকার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হলো ১. সরকারি কোম্পানি ২. বেসরকারি কোম্পানি ৩. হোল্ডিং কোম্পানি ৪. সাবসিডিয়ারি কোম্পানি।

খ যে কোম্পানি অন্য এক বা একাধিক কোনো কোম্পানির সব অথবা ৫০% এর বেশি শেয়ার ক্রয় করে তার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করে, তাকে হোল্ডিং কোম্পানি বলে।  

এরূপ কোম্পানি অপর কোম্পানিসমূহের শেয়ার মূলধনের অর্ধেকের বেশি ধারণ করে। এটি অর্ধেকের বেশি ভোটদান ক্ষমতা ভোগ করে। এ ধরনের কোম্পানি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অধিকাংশ পরিচালক নিয়োগ করার ক্ষমতার অধিকারী হয়। বাংলাদেশের স্কয়ার গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ এদের মূল কোম্পানি এ ধরনের কোম্পানি হিসেবে কর্মরত।

গ নীলক্ষেত স্কয়ার একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

কমপক্ষে সাত জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমিত যেকোনো সংখ্যক সদস্য নিয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠিত হয়। এরূপ কোম্পানি জনগণের কাছে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের আমন্ত্রণ জানাতে পারে। এর শেয়ারগুলো অবাধে হস্তান্তরযোগ্য।

উদ্দীপকে নীলক্ষেতের কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে নীলক্ষেত স্কয়ার নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা সাত জন। এদের সবার দায় শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমিত। উদ্যোগ গ্রহণের পর তারা দলিলপত্র প্রণয়ন ও নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করে।

পরবর্তীতে কোম্পানিটির কার্যারম্ভের অনুমতি সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে। তাই এই শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে জনগণকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বিবরণপত্র তৈরি করেন। উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, নীলক্ষেত স্কয়ার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ নীলক্ষেত স্কয়ারের শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি মূলত মূলধন গঠনের জন্যই শেয়ার বিক্রয় করে থাকে। এজন্য তারা বিবরণপত্র তৈরি ও প্রকাশ করে। এতে জনগণ শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহী হয়।

উদ্দীপকে নীলক্ষেত স্কয়ার একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। সর্বনিম্ন সাত জন উদ্যোক্তা মিলে এটি গঠন করে। পরবর্তীতে তারা শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে করে তারা অধিক মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে কোম্পানির প্রসার ঘটবে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের মূল উৎসই হলো শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়। বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে বিনিয়োজিত মূলধনে পরিণত করে। এজন্য কোম্পানিগুলো শেয়ার বিক্রয়ের জন্য জনসাধারণকে আমন্ত্রণ জানান। এর শেয়ারগুলো অবাধে হস্তান্তর করা যায়। নীলক্ষেত স্কয়ার কোম্পানিটিও তাদের মূলধন সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য তারা বিবরণপত্র প্রকাশ করে। জনগণ শেয়ার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ হলে এতে করে কোম্পানিটি বৃহৎ মূলধন গঠন করতে পারবে। তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত হবে। তাই এ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত যৌক্তক বলে আমি মনে করি।

 প্রশ্ন ৪৫ নাফিস ইকবাল একটি স্বনামধন্য কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। তিনি যে শেয়ার ক্রয় করেছেন তাতে উল্লেখ করা আছে যে, আগামি তিন অর্থবছরে তার শেয়ারগুলো পরিবর্তিত হয়ে সাধরণ শেয়ারে রূপান্তরিত হবে। তার ইচ্ছা ৪-৫ বছর পর তিনি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে আসীন হবেন। এজন্য কোম্পানি পরিচালনার বিধিবিধান সম্পর্কে তিনি নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন।         [জালালাবাদ কলেজ, সিলেট]

 ক.   বায়িং হাউস কী?   ১

 খ.   পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার বিক্রয়ের নিয়মটি ব্যাখ্যা করো।    ২

 গ.   নাফিস ইকবালের শেয়ারের ধরন ব্যাখ্যা করো।      ৩

 ঘ.   নাফিস ইকবালের প্রচেষ্টাটি সফল হবে? তোমার মতামত ব্যক্ত করো।    ৪

৪৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীর মাঝে পণ্য সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত মধ্যস্থকারী ও কমিশন ভোগী প্রতিষ্ঠান হলো বায়িং হাউস।

খ পাবলিক লি. কোম্পানি শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত হয়ে শেয়ার বিক্রয় করতে পারে।

এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি আইনের অধীনে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের পর মূলধন সংগ্রহের জন্য বিবরণপত্র প্রচার করতে হয়। কোম্পানি শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত হয়ে বিবরণপত্র প্রচার করে। এতে বিবরণপত্রে শেয়ারের ব্যাখ্যা ও মূল্য উল্লেখ করতে হয়। এভাবে পাবলিক লি. কোম্পানি শেয়ার বিক্রয় করে থাকে।

গ নাফিস ইকবালের শেয়ারগুলো ‘পরিবর্তনযোগ্য অগ্রধিকার শেয়ার।’

এই শেয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অগ্রাধিকার শেয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সময় শেষে এগুলো সাধারণ শেয়ারে পরিবর্তন করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারে রুপান্তরের পর আর অগ্রাধিকার শেয়ারের সুবিধা ভোগ করা যায় না।               

উদ্দীপকে নাফিস ইকবাল একটি স্বনামধন্য কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। তিনি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করেছেন। শেয়ারের গায়ে উল্লেখ আছে যে, তিন অর্থবছরে শেয়ারগুলো সাধারণ শেয়ারে রুপান্তরিত হবে। নাফিস ইকবালের শেয়ারের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনযোগ্য অগ্রাধিকার শেয়ারের সাথে মিলে যায়। তাই বলা যায়, নাফিস ইকবালের শেয়ারগুলো পরিবর্তনযোগ্য অগ্রাধিকার শেয়ার।

ঘ শেয়ারগুলো সাধারণ শেয়ারে রুপান্তরিত হওয়ায় নাফিস ইকবালের প্রচেষ্টাটি সফল হবে। অ

সাধারণ শেয়ারের মালিকের দায়িত্ব, অধিকার ও কর্তব্য অনেক বেশি থাকে। এই শেয়ারের মালিকগণ অধিক সুবিধা ও মর্যাদা ভোগ করেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের দায় বহন করেন সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারেন।              

উদ্দীপকে নাফিস ইকবাল একটি স্বনামধন্য কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। তিনি কোম্পানির পরিবর্তনযোগ্য অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করেন। শেয়ারগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পরে সাধারণ শেয়ারে পরিবর্তিত হবে। তার ইচ্ছা চার-পাঁচ বছর পর তিনি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হবেন। এজন্যে কোম্পানি পরিচালনার বিধি-বিধান সম্পর্কে তিনি নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন।            

নাফিস ইকবালের শেয়ার সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত হলে তার ইচ্ছা পূরণ হতে পারে। সাধারণ শেয়ারমালিকগণ কোম্পানির দায়িত্ব অধিকার ও কর্তৃত্ব ভোগ করে থাকেন। এদের কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণে মতামত দেওয়ার অধিকার থাকে, সাধারণ শেয়ারহোল্ডার ভোট দিয়ে পরিচালক নির্বাচন করতে পারেন। নাফিস ইকবাল চাইলে পরিচালক হতে পারেন। এতে অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারগণ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করবে। নির্বাচিত হলে কোম্পানির পরিচালনায় তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন । এতে তার ইচ্ছা পূরণ হবে। সুতরাং বলা যায় যে, নাফিস ইকবালের শেয়ার সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর হলে তার ইচ্ছা পূরণ হতে পারে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *