৯ম-১০ম শ্রেণী পদার্থ বিজ্ঞান চতূর্থ অধ্যায়ঃ কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
- কাজ : কোনো বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফল দ্বারা কাজ পরিমাপ করা হয়। একে ড দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
- কাজ একটি স্কেলার বা অদিক রাশি। কাজের একক হলো জুল (j) এবং এর মাত্রা = [ML2 T–2]।
- জুল : কোনো বস্তুর ওপর এক নিউটন (N) বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের দিকে বলের প্রয়োগবিন্দু থেকে বস্তুর এক মিটার (m) সরণ হয় তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে এক জুল (J) বলে।
\ 1J = 1N ´ 1m = 1Nm - বলের দ্বারা কাজ বা ধনাত্মক কাজ : যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে ধনাত্মক কাজ বা বলের দ্বারা কাজ বলে।
- ব্যাখ্যা : একটি ডাস্টার টেবিলের ওপর থেকে মাটিতে ফেলে দিলে ডাস্টারটি অভিকর্ষ বলের প্রভাবে নিচের দিকে পড়বে। এক্ষেত্রে অভিকর্ষ বলের দ্বারা কাজ হয়েছে বোঝায়।
- বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ : যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের বিপরীত দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে ঋণাত্মক কাজ বা বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে।
- ব্যাখ্যা : একটি ডাস্টার যদি মেঝে থেকে টেবিলের ওপর ওঠানো হয়, তাহলে অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ হবে বা অভিকর্ষ বলের জন্য ঋণাত্মক কাজ হবে। কেননা এক্ষেত্রে অভিকর্ষ বল যে দিকে ক্রিয়া করে সরণ তার বিপরীত দিকে হয়।
- শক্তি : কোনো ব্যক্তি বা উৎসের কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তি হলো স্কেলার বা অদিক রাশি। শক্তির একক হলো জুল। একে E দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর মাত্রা [E] = [ML2 T–2]| শক্তি ও কাজের একক ও মাত্রা অভিন্ন। অতএব, কৃতকাজ = ব্যয়িত শক্তি।
- গতিশক্তি : কোনো গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে তাকে গতিশক্তি বলে। চলন্ত পাখা, চলন্ত গাড়ি ইত্যাদি গতিশক্তির উদাহরণ।
- বিভব শক্তি : স্বাভাবিক অবস্থান বা অবস্থা থেকে পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য কোনো অবস্থান বা অবস্থায় আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে।
- অভিকর্ষজ বিভব শক্তি : অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করে কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন করলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে তাকে অভিকর্ষজ বিভব শক্তি বলে। বিভব শক্তিকে Ep দ্বারা প্রকাশ করা হয়। গাণিতিকভাবে, Ep = mgh
- কিলোওয়াট–ঘণ্টা: সাধারণত বিদ্যুৎ শক্তির হিসাবনিকাশের সময় কিলোওয়াট-ঘণ্টা (কডয) এককটি ব্যবহৃত হয়।
- এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো যন্ত্র এক ঘণ্টা কাজ করলে যে শক্তি ব্যয় হয় তাকে এক কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা ১কডয বলে।
আমরা জানি, 1 KWh = 1000 Wh
- এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো যন্ত্র এক ঘণ্টা কাজ করলে যে শক্তি ব্যয় হয় তাকে এক কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা ১কডয বলে।
= 1000 Js–1 ´ 3600 s
= 1000 Js–1 ´ (60 ´ 60) s
= 3.6 ´ 106 J
- শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি: শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শক্তি কেবল একরূপ থেকে অপর এক বা একাধিক রূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।
- ক্ষমতা : কাজ সম্পাদনকারী কোনো ব্যক্তি বা উৎসের কাজ করার হারকে ক্ষমতা বলে। অর্থাৎ, একক সময়ে ব্যক্তি বা উৎস দ্বারা সম্পাদিত কাজের পরিমাণই হলো ক্ষমতা।
- ওয়াট : এক সেকেন্ডে এক জুল কাজ করা বা শক্তি রূপান্তরের হারকে এক ওয়াট বলে।
- কর্মদক্ষতা : কোনো যন্ত্রে যতটুকু শক্তি পাওয়া যায় তাকে কার্যকর শক্তি বলে। আর যন্ত্রের কর্মদক্ষতা বলতে যন্ত্র থেকে মোট যে কার্যকর শক্তি পাওয়া যায় এবং মোট যে শক্তি দেয়া হয়েছে তার অনুপাতকে বোঝায়। কর্মদক্ষতাকে সাধারণত h (গ্রিক শব্দ-ইটা) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।