পঞ্চম শ্রেণী বাংলা ৪র্থ অধ্যায় হাতি আর শেয়ালের গল্প

হাতি আর শেয়ালের গল্প

পাঠ্যবই থেকে বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

য়    সঠিক উত্তরটি খাতায় লেখ।

১.   বনের সব প্রাণী কার কাছে এসে জড়ো হলো?

      ১.   বাঘ  ২.   শেয়াল

      ৩.   হাতি ৪.   সিংহ

২.   কার জন্য বনে আবার শান্তি ফিরে আসল?

      ১.   সিংহ ২.   শেয়াল

      ৩.   ভালুক     ৪.   বাঘ

৩.   হাতির অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য কেন শেয়ালকে দায়িত্ব দেয়া হলো?

      ১.   শেয়াল সাঁতার জানে বলে

      ২.   শেয়াল খুব সাহসী বলে

      ৩.   শেয়াল বুদ্ধিমান বলে

      ৪.   শেয়াল হাতির বন্ধু বলে

৪.   হাতির করুণ পরিণতির জন্য দায়ী কোনটি?

      ১.   হাতির অহংকার

      ২.   হাতির লম্বা শুঁড়

      ৩.   হাতির ভারী শরীর

      ৪.   হাতির বোকামি

৫.   হাতিকে বাঁচানোর জন্য কেউ এগিয়ে এলো না কেন?

      ১.   হাতির অত্যাচারের জন্য

      ২.   হাতি খুব বড় বলে

      ৩.   হাতির ভয়ে

৪.   হাতি সাঁতার জানে বলে

৬)   কী নিয়ে হাতিটার খুব অহংকার ছিল?   

      ক   লম্বা শুঁড় নিয়ে           

      খ    বিশাল শরীর ও শক্তি নিয়ে

      গ   লম্বা কান নিয়ে

      ঘ    গায়ের রং নিয়ে

৭)   সবাই হাতিটাকে কী করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল?

      ক   ভয় দেখানোর জন্য   

      খ    কুর্ণিশ করার জন্য    

      গ   আটক করার জন্য   

      ঘ    স্বাগত জানানোর জন্য

৮)   সমস্ত বন থরথর করে কেঁপে উঠল কেন?     

      ক   ভূমিকম্পের কারণে    খ    ঝোড়ো বাতাসে 

      গ   হাতির হুঙ্কারে   ঘ    সিংহের হুঙ্কারে

৯)   ইঁদুর ও গুবরে পোকার দল কোথায় লুকিয়ে ছিল?    

      ক   গাছের ডালে     খ    মাটির তলায়   

      গ    ঝোপের আড়ালে ঘ    পানির নিচে

১০)  বনের পশুপাখিদের শান্তির দিন শেষ হলো কেন?    

      ক   মানুষের আগমনে

      খ    মানুষ সভ্য হতে থাকায়

      গ    অত্যাচারী হাতির আগমনে

      ঘ    সিংহের অত্যাচারের কারণে

১১)  হাতিটা ছিল ভীষণ             

      ক   শান্ত খ    বদমেজাজি

      গ    দুর্বল ঘ    ভালো

১২)  বনের পশুপাখিরা কখন সিংহের গুহায় এলো?

      ক   ভোরে খ    দুপুরে

      গ    সন্ধ্যায়     ঘ    রাতে

১৩) সব পশু নদীর তীরে এসেছিল কেন?    

      ক   হাতিকে রাজা বানাতে 

      খ    হাতিকে বরণ করতে  

      গ    হাতির শাস্তি দেখতে

      ঘ    হাতির শক্তি দেখতে

১৪)  ‘নিরীহ; শব্দের অর্থ কী?

      (ক)  ভালো     (খ)  দুর্বল

      (গ)  ভীতু      (ঘ) শান্ত

১৫)  হাতির পাগুলোকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে?

      (ক) মোটা খাম্বার সাথে     (খ)  বড় পাথরের সাথে

      (গ) মোটা গাছের সাথে    (ঘ)  বড়  পাহাড়ের সাথে

১৬)  বনের সবাই তটস্থ হয়ে রইল কেন?

      (ক)  সিংহ ভীষণ বদমেজাজি ছিল বলে

      (খ)  বাঘ মামার ভীষণ হুঙ্কার শুনে

      (গ)  হাতিটা অত্যাচারী ছিল বলে

      (ঘ)  হাতির সাথে সিংহের যুদ্ধ লাগার ভয়ে

১৭) ‘অমিত’ শব্দের অর্থ?

      (ক)  প্রচুর (খ)  ভারী

      (গ)  অত্যন্ত    (ঘ)  বড়

১৮) কেউ যদি অন্য কারও ওপর বিনা দোষে অত্যাচার চালায় তাহলে সেই ব্যক্তিকে তুলনা করা যায় অনুচ্ছেদের

      (ক)  বাঘের সাথে     (খ)  পিঁপড়ের সাথে

      (গ)  সিংহের সাথে    (ঘ)  হাতির সাথে

১৯)  ‘পুঁচকে’ শব্দের অর্থ কী

      (ক)  শেয়াল    (খ)  অত্যন্ত ছোট

      (গ)  শক্তিধর    (ঘ)  সিংহ

২০) বনের কারো মনে শান্তি নেই কেন?

      (ক)  হাতির অত্যাচারে     

      (খ)  সিংহের নির্যাতনে

      (গ)  বাঘের হুঙ্কারে   

      (ঘ)  বানরের উৎপাতে

২১)  বনের সব প্রাণী সিংহের গুহায় জড়ো হলো কেন?

      (ক)  হাতির তাড়া খেয়ে    

      (খ)  সিংহের আমন্ত্রণে

      (গ)  হাতির অত্যাচার থেকে মুক্তির উপায় বের করতে

      (ঘ)  সিংহকে উচিত শিক্ষা দিতে

২২)  ‘আস্তানা’ শব্দের অর্থ কী?

      (ক)  লড়াই

      (খ)  শায়েস্তা করা

      (গ)  রাজা

      (ঘ)  বসবাসের জায়গা

২৩)  অনুচ্ছেদটি পড়ে আমরা বুঝতে পারি-

      (ক)  অহংকারীকে কেউ ভালোবাসে না

      (খ)  সকলেই শক্তের ভক্ত

      (গ)  বুদ্ধির চেয়ে শক্তি বড়

      (ঘ)  হাতি বনের রাজা

পাঠ্যবই থেকে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর

      ১.   ৪. সিংহ

      ২.   ২.  শেয়াল

      ৩.   ৩. শেয়াল বুদ্ধিমান বলে

      ৪.   ১. হাতির অহংকার

      ৫.   ১.হাতির অত্যাচারের জন্য

      ৬)   খ বিশাল শরীর ও শক্তি নিয়ে

      ৭)   ঘ স্বাগত জানানোর জন্য

      ৮)   গ হাতির হুঙ্কারে

      ৯)   খ মাটির তলায় 

      ১০)  গ অত্যাচারী হাতির আগমনে

      ১১)  খ বদমেজাজি  

      ১২)  গ  সন্ধ্যায়

      ১৩) গ হাতির শাস্তি দেখতে

           ১৪) (ঘ) শান্ত;  

           ১৫) (গ) মোটা গাছের সাথে;

           ১৬)  (গ) হাতিটা অত্যাচারী ছিল বলে;

           ১৭) (ক) প্রচুর       

          ১৮) (ঘ) হাতির সাথে।

           ১৯) (খ) অত্যন্ত ছোট;

           ২০) (ক) হাতির অত্যাচারে; 

২১) (গ) হাতির অত্যাচার থেকে মুক্তির উপায় বের করতে;

২২) (ঘ) বসবাসের জায়গা;

২৩) (ক) অহংকারীকে কেউ ভালোবাসে না।

      পাঠ্যবই থেকে প্রশ্নের উত্তর লিখন

প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।

১)   অমিত শক্তিধর কাকে বলা হয়েছে?

      উত্তর : অমিত শক্তিধর বলা হয়েছে অহংকারী হাতিটাকে।

২)   বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে আসার কারণ কী?

      উত্তর : বনের পশুরা খুব সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছিল। এমন সময় মস্ত এক হাতি তাড়া খেয়ে বনে এসে ঢোকে। অহংকারী সেই হাতিটার অত্যাচারে বনের পশুদের সবসময় শঙ্কিত থাকতে হয়। তাই তাদের মন থেকে শান্তি হারিয়ে যায়।

৩)   গল্পে মুক্ত স্বাধীন বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

      উত্তর : গল্পে মুক্ত স্বাধীন বলতে বোঝানো হয়েছে অত্যাচারী হাতিটার কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার অনুভূতিকে। হাতিটার অত্যাচারে বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে এসেছিল। শেয়ালের বুদ্ধিতে হাতিটা চরম সাজা পায়। পশুরাও হাতির অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়।

৪)   শেয়াল হাতিকে শাস্তি না দিলে বনের পশুপাখিদের কী হতো ব্যাখ্যা কর।

      উত্তর : শেয়াল হাতিটাকে শাস্তি না দিলে বনের পশুপাখিদের মহাবিপদে পড়তে হতো। দিন দিন হাতিটার অহংকার বেড়েই চলত। একে একে সব পশুই তার অত্যাচারের শিকার হতো। অনেকেই জঙ্গল ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতো।

৫)   হাতির এই শাস্তির জন্য তার চরিত্রের কোন বিষয়গুলো দায়ী বলে তুমি মনে কর?

      উত্তর : হাতির এই শাস্তির জন্য দায়ী তার অহংকার ও নিষ্ঠুরতা।

৬)   মানুষ যখন সভ্য হচ্ছে তখন মিলেমিশে থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল কেন?

      উত্তর : মিলেমিশে থাকলে মানুষের মাঝে একতা সৃষ্টি হয়। এতে মানুষের শক্তি বেড়ে যায়। মানুষ একা সব কাজ করতে পারে না। কিন্তু মিলেমিশে করলে অনেক কঠিন কাজও খুব সহজে করা যায়। মানুষ যখন সভ্য হচ্ছিল তখন তারা এ বিষয়টি বুঝতে পারে। তাই তারা মিলেমিশে থাকার নিয়ম শিখতে শুরু করে।

৭)   সবাই মিলে শেয়ালকে দায়িত্ব দিল কেন?

      উত্তর : পশুদের মধ্যে শেয়াল সবচেয়ে বুদ্ধিমান। তাই সবাই মিলে শেয়ালকে দায়িত্ব দিল।

৮)   শেয়াল কীভাবে বনের পশুপাখিকে রক্ষা করলো?

      উত্তর : শেয়াল নানা রকম মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে হাতিটাকে নদীর কিনারে নিয়ে এলো। শেয়ালের কথায় হাতিটা না বুঝেই নদী পার হওয়ার জন্য পানিতে নেমে গেল। কিন্তু সাথে সাথেই তার মস্ত, ভারী শরীরটা পানিতে একটু একটু করে তলিয়ে যেতে লাগল। এভাবেই শেয়াল বুদ্ধি খাটিয়ে বনের পশুপাখিকে হাতির অত্যাচার থেকে রক্ষা করলো।

৯)   অহংকারী ও অত্যাচারীর পরিণাম শেষ পর্যন্ত কী হয়?

উত্তর : অহংকারী ও অত্যাচারীকে শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়। সে যাদের ওপর অত্যাচার চালায় তারা একসময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অহংকারী আর অত্যাচারীরা এভাবে নিজেদের পতন ডেকে আনে।

১০)  হাতির ভাব দেখে কী মনে হলো?

উত্তর : হাতির ভাব দেখে মনে হলো সে-ই বুঝি বনের রাজা।

১১)  হাতিটার অত্যাচারে বনের প্রাণীদের কী অবস্থা হলো?

উত্তর : হাতিটার অত্যাচারে বনের প্রাণীদের মনের শান্তি উধাও হলো। চোখের ঘুম হারিয়ে গেল। সব সময় হাতিটার অত্যাচারের ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত সবাই।

১২)  বনের প্রাণীরা কোথায়, কেন জড়ো হলো?

উত্তর : বনে প্রাণীরা হাতিটার অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শলা-পরামর্শ করতে সিংহের গুহায় জড়ো হলো।

১৩)  হাতিটার শেষ পর্যন্ত কী পরিণতি হলো?

উত্তর : হাতিটা শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতি বরণ করল। নদীতে ডুবে যেতে দেখেও কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে এলো না।

১৪)  হাতিটাকে কেউ বাঁচাতে এলো না কেন?

উত্তর : হাতিটা ছিল খুব অহংকারী আর অত্যাচারী স্বভাবের। বনে আসার পর থেকেই হাতিটা প্রাণীদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাতে লাগল। প্রাণীরা সব সময় তার ভয়ে শঙ্কিত হয়ে থাকত। বনের প্রাণীরাই শেয়ালের মাধ্যমে হাতিটাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। এ কারণেই তার বিপদে কেউ তাকে বাঁচাতে এলো না।

১৫)  বাঘ আর সিংহ হাতিটার কাছে আসতে চায় না কেন?

উত্তর : হাতিটা ছিল বাঘ আর সিংহের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। আর সে ছিল খুব নিষ্ঠুর স্বভাবের। বনের পশুদের ওপর হাতিটা নির্মম অত্যাচার চালাত। এ কারণেই বাঘ আর সিংহ হাতিটার ধারে-কাছে যেতে সাহস পেত না।

১৬)  বনের সবাই সিংহের গুহায় জড়ো হলো কেন?

উত্তর : অহংকারী হাতিটার অত্যাচারে বনের পশুদের মনে শান্তি নেই। তারা এর একটা সমাধান চায়। সে ব্যাপারে শলা-পরামর্শ করতেই সবাই সিংহের গুহায় জড়ো হলো।

১৭)  অনেক দিন আগে মানুষ কী শিখছিল?

      উত্তর : অনেক দিন আগে মানুষ অল্প অল্প করে সভ্য হচ্ছিল। কীভাবে সবার সাথে মিলেমিশে থাকা যায় সেসব নিয়মকানুন শিখছিল তারা।

১৮)  হাতিটা দেখতে কেমন ছিল?

      উত্তর : হাতিটা দেখতে ছিল বিশাল আকৃতির। তার পা-গুলো ছিল বটপাকুড় গাছের মতো মোটা। শুঁড়টা এত লম্বা ছিল, মনে হতো আকাশের গায়ে গিয়ে বুঝি ঠেকবে। তার গায়ে ছিল অসীম শক্তি।

১৯)  হাতিটা বনে ঢুকে কী ধরনের আচরণ করেছিল?

      উত্তর : হাতিটা বনে ঢুকে শুরু করল তুলকালাম কাণ্ড। তার প্রচণ্ড হুঙ্কারে সমস্ত বন থরথর করে কেঁপে উঠল। হাতিটার ভাব দেখে মনে হলো সে-ই  বুঝি বনের রাজা। নিরীহ প্রাণীদের ওপর সে বিনা কারণেই অত্যাচার শুরু করল।

২০)  হাতির আস্তানায় ঢুকে শেয়াল হাতিটাকে কীভাবে, কী বলেছিল?

      উত্তর : হাতির আস্তানায় ঢুকে শেয়াল প্রথমে লেজ গুটিয়ে হাতিকে লম্বা একটা সালাম দিল। তারপর বলল, ‘আপনিই তো বনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। আপনিই আমাদের রাজা। ঐ দেখুন, নদীর ওপারে সবাই উদগ্রীব হয়ে বসে আছে। আপনাকে রাজা হিসেবে বরণ করে নিতে চায় সবাই।’

২১)  হাতিটার শুঁড় কেমন ছিল?

      উত্তর : হাতিটার শুঁড় ছিল বিশাল লম্বা। যা দেখে মনে হতো সেটা বুঝি আকাশে গিয়ে ঠেকবে।

২২)  কার বিশাল শরীর? তার স্বভাব কেমন ছিল?

            উত্তর : বনের হাতিটার বিশাল শরীর।

            হাতিটা ছিল খুব অহংকারী স্বভাবের। আর তার মেজাজও ছিল খুব তিরিক্ষি।

২৩)  হরিণ ও পিঁপড়ের ওপর হাতিটা কীভাবে অত্যাচার করল?

উত্তর : নিরীহ হরিণকে হাতিটা শুঁড়ে জড়িয়ে দূরে ছুড়ে ফেলে দিল। আর নিরপরাধ ক্ষুদ্র পিঁপড়েকে সে পায়ের তলায় পিষে মেরে ফেলল।

২৪)  শেয়াল ভয়ে ভয়ে কোথায় হাজির হলো?

            উত্তর : শেয়াল ভয়ে ভয়ে হাতির আস্তানায় হাজির হলো।

২৫) শেয়াল হাতিকে নদীর ধারে নিয়ে গেল কেন?

            উত্তর : শেয়াল মনে মনে হাতিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। হাতিকে নদীর ধারে নিয়ে যাওয়া ছিল তার একটা কৌশল।

পাঠ্যবই থেকে মূলভাব লিখন

য় অনুচ্ছেদটির মূলভাব লেখ।

উত্তর : বনে এসেছে বদমেজাজি আর অহংকারী এক হাতি। হাতিটা দেখতে যেমন বিশাল তেমনি শক্তিশালী। বনে ঢুকেই সে রাজার মতো ভাব নিয়ে চলতে লাগল। তার অহংকারী মনোভাব আর অত্যাচারের ফলে প্রাণীরা ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগল। অহংকারী আর অত্যাচারী হাতির হাত থেকে বনের সকল প্রাণী রেহাই পেতে চায়। এজন্য সকলে শলা-পরামর্শ করার জন্য সিংহের গুহায় জড়ো হয়ে যায়। শেয়ালকে দায়িত্ব দেওয়া হয় হাতিকে শাস্তি প্রদানের। শেয়াল বুদ্ধি দিয়ে হাতিকে নদীর ধারে আনে এবং উচিত শিক্ষা দেয়।

পাঠ্যবই বহির্ভূত যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।

এক কাক এক টুকরো মাংস চুরি করে উঁচু এক গাছের ডালে গিয়ে বসল। মাংসের টুকরোটা ছিল তার দুই ঠোঁটের মাঝখানে ধরা। এমন সময় এক শেয়াল তাকে দেখতে পেয়ে মাংসের টুকরোটা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি আঁটল। গাছতলায় বসে সে কাককে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগল, ‘কাকের চেহারাটা কী সুন্দর! কী চমৎকার গায়ের রং, কী সুন্দর দেহের গঠন। শুধু গলার স্বরটাই যদি তার চেহারাটার মতো সুন্দর হতো। তাহলে অনায়াসে তাকে পাখিদের রানি বলা যেত।’ শেয়ালের মুখে প্রশংসাবাক্য শুনে কাকের তো দেমাগে বুক ফুলে উঠল। সে তখন ভাবল, তার গলার আওয়াজ নিয়ে যেহেতু এত দুর্নাম, তাই সবাইকে জানিয়ে দেওয়া দরকার যে তার কণ্ঠ কারও চেয়ে মন্দ নয়। তাই সে বিকট আওয়াজে কর্কশভাবে কা কা রবে ডেকে উঠল। যেই না সে মুখ খুলেছে অমনি মাংসের টুকরোটা তার মুখ থেকে খসে টুপ করে নিচে পড়ে গেল। শেয়াল মাংসটা মুখে তুলে নিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেল। কাক বুঝতে পারল শেয়ালের মিষ্টি কথায় ভুলে গিয়ে সে কেমন বোকামিটাই না করেছে।

য়    সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।

১)   কাককে দেখে শেয়ালের মনে কী জাগল?

      (ক)  মাংস নেওয়ার সাধ (খ) কাকটার প্রতি মমতা

      (গ)  গাছে চড়ার সাধ    (ঘ) বন্ধুত্ব করার আগ্রহ

২)   নিচের কোনটি ‘দুর্নাম’ শব্দটির বিপরীত শব্দ?

      (ক)  নাম (খ)  সুনাম

      (গ)  পরিণাম    (ঘ)  সুন্দর নাম

৩)   অনুচ্ছেদটি পড়ে নিচের কোনটি বলা যায়?

      (ক)  কাকটি ছিল খুব সৎ

      (খ)  কাকটি ছিল খুব সুন্দর

      (গ) শেয়ালটি ছিল খুব ধূর্ত

      (ঘ)  শেয়ালটি ছিল খুব বোকা

৪)   ‘কাকের চেহারাটা কী সুন্দর!’ শেয়াল এটি বলেছিল

      (ক)  সত্যবাদী বলে

      (খ)  কাকটাকে ভালোবেসে

      (গ)  খাবার হাতানোর ফন্দি হিসেবে

      (ঘ)  চোখে কম দেখত বলে

৫)   অনুচ্ছেদটির মূল শিক্ষা কী?

      (ক)  বিপদেই বন্ধু চেনা যায়

      (খ)  তোষামোদে ভুলতে নেই

      (গ)  অল্প বিদ্যা ভয়ংকর

      (ঘ)  ধৈর্য মহৎ গুণ

      উত্তর : ১) (ক) মাংস নেওয়ার সাধ;  ২) (খ) সুনাম;  ৩) (গ) শেয়ালটি ছিল খুব ধূর্ত; ৪) (গ) খাবার হাতানোর ফন্দি হিসেবে; ৫) (খ) তোষামোদে ভুলতে নেই।

য়    নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর।

শব্দ  অর্থ

তোষামোদ চাটুকারিতা।

ফন্দি চাতুরি, প্রতারণা।

অনায়াসে  সহজে, বিনা পরিশ্রমে।

দুর্নাম বদনাম, কলঙ্ক।

কর্কশ     অমসৃণ, অসুন্দর।

দেমাগ    অহংকার।

ক)  সৎ মানুষেরা কাউকে  করে না।

খ)   পাপ্পু  সব কাজ করে ফেলল।

গ)   পাকা চোর হিসেবে কাকের  আছে।

ঘ)    দেখানো ভালো নয়।

ঙ)   বিড়ালটা মনে মনে ইঁদুরটাকে ধরার  করছে।

      উত্তর : ক) তোষামোদ;  খ) অনায়াসে;  গ) দুর্নাম;  ঘ) দেমাগ; ঙ) ফন্দি।

য়    নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।

ক)  শেয়ালটি কাকের প্রশংসা করল কেন? পাঁচটি বাক্যে লেখ।

            উত্তর : কাকটি মাংসের টুকরো চুরি করে এনেছিল। সেটি দেখে শেয়ালের তা খাওয়ার লোভ হলো। সে মাংসের টুকরাটি কৌশলে হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি করল। এক্ষেত্রে শেয়ালটি কাকের মুখ খোলার জন্য তাকে কথা বলাতে চাইল। অর্থাৎ কৌশল অনুযায়ী কাককে বোকা বানাতেই শেয়াল তার প্রশংসা করল।

খ)   শেয়াল তার উদ্দেশ্য কীভাবে সফল করেছিল পাঁচটি বাক্যে লেখ।

            উত্তর : শেয়ালের উদ্দেশ্য ছিল কাকের মুখ থেকে মাংসের টুকরাটি কৌশলে বাগিয়ে নেওয়া।  তাই সে কাকের নানা রকম প্রশংসা করল। শেয়ালের তোষামোদ শুনে অহংকারে কাকের বুক ফুলে গেল এবং সে বুঝতে পারল না যে আসলে সবই ছিল শেয়ালের ফন্দি। শেয়ালকে গান শোনাতে গিয়ে তার মুখ থেকে মাংসের টুকরাটি খসে পড়ে গেল। শেয়াল তা পেয়ে যাওয়ার মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য সফল হলো।

গ)   অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ঘটনা থেকে তুমি কী কী শিখতে পারলে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।

            উত্তর : অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ঘটনা থেকে আমি যা শিখলাম :

১)   অহংকার করা ভালো নয়।

২)   তোষামোদে কান দিলে তাতে নিজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩)   নিজেকে সবচেয়ে চালাক মনে করা উচিত নয়।

৪)   নিজের ভালো-মন্দ সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।

৫)   কোনো বিষয়ে অযথা লোভ করতে হয় না।

ঘ)   কাকটি কেন বিকট আওয়াজে ডেকে উঠল তা তিনটি বাক্যে লেখ। কাকটি কী করলে মাংসের টুকরোটি হারাত না?

উত্তর : শেয়াল কাকের কাছে থেকে মাংস হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে কাকের মিথ্যা প্রশংসা করা শুরু করল। তা শুনে অহংকারে কাকের বুক ফুলে গেল। শেয়ালের কথার ভুলেই নিজের গুণ জাহির করার উদ্দেশ্যে সে বিকট আওয়াজে ডেকে উঠল।

কাকটি ছিল খুব বোকা আর অহংকারী। শেয়ালের তোষামোদে না ভুলে অহংকার করা থেকে বিরত থাকলে সে তার মাংসের টুকরাটি হারাত না।

যুক্তবর্ণ বিভাজন ও বাক্যে প্রয়োগ

য়    নিচের যুক্তবর্ণগুলো কোন কোন বর্ণ নিয়ে তৈরি ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে একটি করে শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।

      ন্ত, ঙ্গ, ত্ব, ক্ষ, ঙ্ক, ম্ভ, ক্ক, গ্র।

      উত্তর :

ন্ত   =    ন + ত                 পর্যন্ত

      –     গভীর রাত পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে।

ঙ্গ   =    ঙ + গ                 সঙ্গে

      –     দাদুর সঙ্গে হাটে যাব।

ত্ব   =    ত + ব-ফলা (  ¦ )          ত্বক 

      –     ফলমূল খেলে ত্বক ভালো থাকে।

ক্ষ   =    ক + ষ                 ক্ষতি

      –     সময় অপচয় করলে নিজেরই ক্ষতি হয়।

ঙ্ক   =    ঙ + ক                 অঙ্ক

      –     খোকা অঙ্কে খুব ভালো।

ম্ভ   =    ম + ভ                 অসম্ভব   

      –     অক্সিজেন ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।

ক্ক   =    ক + ক                 মক্কেল   

      –     উকিল সাহেব মক্কেলের সাথে কথা বলছেন।

গ্র   =    গ + র-ফলা (  ্র )      গ্রাম

      –     গ্রামে গাছপালা বেশি থাকে।

য়    নিচের যুক্তবর্ণগুলো কোন কোন বর্ণ নিয়ে তৈরি ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে একটি করে শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।

      ম্ভ, ষ্ট, ম্ব, ত্য, ঙ্ক।

      উত্তর :

      ম্ভ   =    ম +  ভ       সম্ভব

                 পরিশ্রম করলে উন্নতি করা সম্ভব।

      ষ্ট    =    ষ + ট        নষ্ট

                 অযথা সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।

      ম্ব    =    ম + ব        কম্বল

                 কম্বলটি গায়ে দিয়ে আরাম লাগছে।

      ত্য   =    ত + য-ফলা ( ্য )       সত্য

                 সদা সত্য কথা বলব।

      ঙ্ক   =    ঙ + ক        লঙ্কা

                 কাঁচা লঙ্কা খুব ঝাল।

বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদ পুনঃলিখন

য়সঠিক স্থানে বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি আবার লেখ।

      গাছে গাছে পরম নিশ্চিন্তে বসেছিল পাখি তারা ভয়ে ডানা ঝাপটাতে শুরু করল মাটির তলায় লুকিয়ে ছিল যে ইঁদুর গুব্রে পোকার দল তারা বুঝতে চাইল কী এমন ঘটল যে এমন করে কেঁপে উঠল মেদিনী

      উত্তর : গাছে গাছে পরম নিশ্চিন্তে বসেছিল পাখি, তারা ভয়ে ডানা ঝাপটাতে শুরু করল। মাটির তলায় লুকিয়ে ছিল যে ইঁদুর, গুব্রে পোকার দল। তারা বুঝতে চাইল কী এমন ঘটল যে এমন করে কেঁপে উঠল মেদিনী?

এককথায় প্রকাশ/ক্রিয়াপদের চলিতরূপ লিখন

য় ক্রিয়াপদের চলিত রূপ লেখ।

      থাকিত, কাটিতেছিল, ফাটাইয়া, আসিতে, ছাড়িয়া, পিষিয়া, বাঁচাইব, সাঁতরাইয়া, তলাইয়া।

      উত্তর :    সাধু রূপ        চলিত রূপ

      থাকিত        থাকত

      কাটিতেছিল     কাটছিল

      ফাটাইয়া       ফাটিয়ে

      আসিতে       আসতে

      ছাড়িয়া        ছেড়ে

      পিষিয়া        পিষে

      বাঁচাইব        বাঁচাব

      সাঁতরাইয়া      সাঁতরে

                তলাইয়া      তলিয়ে

য়    এককথায় প্রকাশ কর।

ক)   অহংকার করে যে।

খ)   প্রতি মুহূর্ত অপেক্ষা করা।

গ)   শব্দ বাধা পেয়ে যে ধ্বনির সৃষ্টি হয়।

ঘ)   সীমা নেই এমন।

ঙ)   শক্তি আছে যার।

      উত্তর : ক) অহংকারী;   খ) উদগ্রীব; গ) প্রতিধ্বনি;   ঘ) অসীম;   ঙ) শক্তিধর।

বিপরীত/সমার্থক শব্দ লিখন

য় নিচের শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখ।

      বন, অহংকার, অতিথি, শঙ্কা, মাটি, শরীর, মেদিনী, আস্তানা।

      উত্তর :    মূল শব্দ        সমার্থক শব্দ

      বন  Ñ     অরণ্য, জঙ্গল।

      অহংকার  Ñ     অহমিকা, দম্ভ।

      অতিথি    Ñ     মেহমান, কুটুম।

      শঙ্কা Ñ     ভয়, ভীতি।

      মাটি Ñ     মৃত্তিকা, ভূমি।

      শরীর Ñ     দেহ, অঙ্গ।

      মেদিনী    Ñ     ভূপৃষ্ঠ, ভূতল।

           আস্তানা   Ñ    বাসস্থান, ডেরা

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *