HSC ব্যবসা উদ্যোগ ১ম পত্রঃ ব্যবসায় পরিবেশ
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ ব্যবসায় পরিবেশ
প্রশ্ন:১ গণি মিয়া কৃষক পরিবারের কর্মঠ ছেলে। নদী বিধৌত পদ্মার পাড়ে তারা বাস করতো। জমিতে পলি থাকায় সেখানে প্রচুর ফসল উৎপন্ন হতো। ফলে তারা সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতো। বন্যায় নদীভাঙনের ফলে গত বছর গণি মিয়াদের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার ব্যবসায় করার ইচ্ছা ছিল। ব্যাংক ঋণ না পেয়ে তিনি ইটের ভাটায় কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে নদীভাঙন এলাকায় সরকার ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে গণি মিয়াদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। [ঢা. বো. ১৭]
ক. প্রযুক্তিগত পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝ? ২
গ. গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর কোন পরিবেশের প্রভাব ছিল? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের কারণে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন কি সম্ভব? মতামত দাও। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগÑ এসব নিয়ে একটি দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্ট পরিবেশকে প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলে।
খ সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি, যা জীবনধারণে প্রভাব বিস্তার করে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।
সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ পরিবেশ ব্যবসায়ের আয় ও লাভ-লোকসানকে প্রভাবিত করে।
গ উদ্দীপকের গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব ছিল।
কোনো দেশের প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান নিয়ে তার প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত হয়। সাধারণত দেশভেদে প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর এসবের সমন্বয়ে এ পরিবেশ গঠিত। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপ ও মানুষের জীবনধারণও ভিন্নতর হতে পারে।
উদ্দীপকের গণি মিয়ারা নদী বিধৌত পদ্মার পাড়ে বাস করতেন। জমিতে পলি থাকায় তারা সেখানে প্রচুর ফসল উৎপাদন করতে পারতেন। এর ফলে তারা সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতেন। বন্যায় নদীভাঙনের ফলে গত বছর তাদের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মানুষ এরূপ প্রতিকূল পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। প্রকৃতিগত কারণেই এরূপ নদীভাঙন হয়েছে। পরিবেশের এরূপ প্রতিকূল ভূ-প্রকৃতিগত অবস্থা প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান। সুতরাং গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশেরই প্রভাব ছিল।
ঘ রাজনৈতিক পরিবেশের আওতায় সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।
দেশের রাজনৈতিক উপাদান নিয়ে এ পরিবেশ গঠিত হয়। সরকারের স্থিতিশীলতা, নীতিমালা, দেশের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এ পরিবেশের উপাদান। উন্নত ও সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায়ের জন্য সহায়ক।
উদ্দীপকে গণি মিয়াদের অঞ্চলে নদীভাঙনে তাদের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তারপর ব্যবসায় করার ইচ্ছা থাকলেও ব্যাংক ঋণ না পেয়ে তিনি ইটভাটায় কাজ নেন। পরবর্তী সময়ে সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে নদীভাঙন এলাকায় সরকার ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে। এ সরকারি নীতিমালা রাজনৈতিক পরিবেশের উপাদান।
গণি মিয়াদের মতো এদেশে অসংখ্য যুবক আছেন যারা সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের অভাবে ব্যবসায় করতে পারেন না। সরকার যদি ব্যবসায়-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করে তাহলে এ যুবকরা সহজভাবে ব্যবসায় শুরু করতে পারবেন। এতে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এভাবে তারা নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করতে পারবেন। তাদের মাধ্যমে বেকার যুবকদেরও কর্মের ব্যবস্থা হবে। এর ফলে তারা পারিবারিক আয়ের উৎস বাড়াতে পারবেন। সুতরাং বলা যায়, সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব।
প্রশ্ন:২ বাংলাদেশে রয়েছে প্রচুর জনশক্তি। এ জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠেছে পোশাক শিল্প। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিদেশে যথেষ্ট সুনাম আছে। তবে পোশাক শিল্পে অনেক সমস্যাও আছে। এসব সমস্যার কারণে এ শিল্পের উন্নয়ন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। [রা. বো. ১৭]
ক. অর্থনৈতিক পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে কোন পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে পোশাক শিল্পের উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত? মতামত দাও। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, মূলধন, জনসম্পদ এসব উপাদানের ওপর ভিত্তি করে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে।
খ সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি এসব উপাদান নিয়ে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।
সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের সৃষ্টি এবং মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি ব্যবসায়ের আয়, লাভ-লোকসানকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।
গ বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে অর্থনৈতিক পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে।
অর্থনৈতিক উপাদান নিয়ে যে পরিবেশ গঠিত হয় তাই হলো অর্থনৈতিক পরিবেশ। জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন, জনসম্পদ এ পরিবেশের উপাদান। যে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ যত ভালো, সে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তত অগ্রগতি লাভ করতে পারে।
উদ্দীপকে উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রচুর জনশক্তি রয়েছে। এখানে জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে পোশাক শিল্প গড়ে ওঠেছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিদেশে যথেষ্ট সুনাম আছে। এ জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিক হলো দেশের ‘মানবসম্পদ’। এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশের পোশাক শিল্পের সব কাজ করানো হচ্ছে। এদেশে তৈরি পোশাক বর্তমানে বাইরের দেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে। এ মানবসম্পদ অর্থনৈতিক পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুতরাং বলা যায়, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে মূলত অথনৈতিক পরিবেশই অবদান রাখছে।
ঘ বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে এখানকার অর্থনৈতিক পরিবেশকে আরও উন্নত করা উচিত বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিবেশের কিছু উপাদান যেমন: মূলধন স্বল্পতা, সুদের উচ্চহার, শ্রমিকদের কম আয় পোশাক শিল্পের উন্নয়নের পথে বড় ধরনের বাধা হয়ে আছে। এসব সমস্যা দূর করা গেলে এ শিল্পের দ্রুত উন্নয়ন আশা করা যায়।
উদ্দীপকে উল্লেখ্য, জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে এদেশে পোশাক শিল্প গড়ে ওঠেছে। এ শিল্প বিদেশে বেশ সুনামও অর্জন করেছে। তবে নানা সমস্যার কারণে এ শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণের মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে তাদের সঞ্চয় ও মূলধন গঠনের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারকে গতিশীল করা গেলে তা মূলধন সংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারে। ব্যাংকগুলোতে সুদের উচ্চহার কমাতে হবে, যাতে ঋণ নিতে দক্ষ ব্যবসায়ী বা শিল্প উদ্যোক্তাগণ উৎসাহিত হন। এভাবে অর্থনৈতিক উপাদানসমূহের উন্নয়নের মাধ্যমে পোশাক শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব।
প্রশ্ন:৩ খুলনার বাসিন্দা রাজিব একজন কৃষক। তার জমিতে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হতো। এসব ফসল বিক্রি করে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে তার জমিতে কয়েক বছর যাবত উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে রাজিব কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। [রা. বো., কু. বো. ১৭]
ক. ইঝঞও-এর পূর্ণরূপ কী? ১
খ. শিল্প বলতে কী বোঝায়? ২
গ. রাজিবের পেশা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন পরিবেশের উপাদান প্রভাব ফেলেছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বাংলাদেশে রাজিবের মতো অনেক ব্যক্তির পেশা পরিবর্তনের কারণ বিশ্লেষণ করো। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ইঝঞও-এর পূর্ণরূপ হলো ইধহমষধফবংয ঝঃধহফধৎফং ্ ঞবংঃরহম ওহংঃরঃঁঃরড়হ।
খ যে কার্যপ্রচেষ্টা বা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য প্রস্তুত করা হয় তাকে শিল্প বলে।
প্রকৃতি প্রদত্ত উপকরণ বা কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও চূড়ান্ত পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করা হয়। অর্থাৎ ব্যবসায়ের উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ শিল্পের দ্বারা সংঘটিত হয়। এজন্য শিল্পকে উৎপাদনের বাহন বলা হয়।
গ উদ্দীপকের রাজিবের পেশা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান প্রভাব ফেলেছে।
প্রকৃতির উপাদানসমূহ নিয়ে মূলত প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত। কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর ও আয়তন এ পরিবেশের উপাদান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিভিন্ন ধরনের হয়। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।
উদ্দীপকের কৃষক রাজিবের জমিতে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হতো। এসব ফসল বিক্রি করে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু কয়েক বছর যাবত তার জমিতে লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। এতে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েন। জমির এ লবণাক্ততা সাগরের অবস্থানের কারণে হয়েছে, যা পরিবেশে প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। তাই রাজিব বর্তমানে কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিকূল অবস্থার কারণে তিনি এ কাজে যোগ দেন। সুতরাং বলা যায়, তার পেশা পরিবর্তনে এ প্রাকৃতিক পরিবেশই প্রভাব ফেলেছে।
ঘ প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবে বাংলাদেশে রাজিবের মতো অনেক ব্যক্তিকে পেশা পরিবর্তন করতে হয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। পরিবেশের উপাদানের পার্থক্যের কারণে দেশের মানুষের ব্যবসায় কার্যকলাপেও ভিন্নতা দেখা যায়।
উদ্দীপকে রাজিব খুলনায় কৃষিকাজ করতেন। উর্বর জমিতে জলবায়ুর কারণে তিনি ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারতেন। কিন্তু সেখানে সাগরের প্রভাবে জমিতে লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। তাই তিনি কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কাজ শুরু করেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিকূল প্রভাবে তিনি তার পেশা পরিবর্তন করেছেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকেই উদ্দীপকের রাজিবের মতো জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবে তাদের জীবিকার ধরন বিভিন্ন রকমের হয়। আবার এ পরিবেশের প্রভাবেই তারা তাদের জীবিকা পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। সাধারণত পরিবেশের যে উপাদান যে অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত তার ওপর ভিত্তি করে মানুষ জীবিকা নির্বাচন করে থাকেন। কিন্তু পরিবেশের উপাদান যেকোনো সময় পরিবর্তনযোগ্য। এ পরিবর্তনশীলতার সাথে তাল মিলিয়েই মানুষ নিজের পেশা পরিবর্তন করেন। সুতরাং বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবেই এদেশে রাজিবের মতো অনেক মানুষকে পেশা পরিবর্তন করতে হয়।
প্রশ্ন:৪ বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও শিল্পের ক্ষেত্রে এদেশ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। তবে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদত্ত কোটা সুবিধা বাতিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এমন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশের সর্বাÍক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। [দি. বো. ১৭]
ক. পরিবেশ কাকে বলে? ১
খ. অর্থনৈতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ কেন? ২
গ. উদ্দীপকে যুক্তরাষ্ট্রের কোটা বাতিলের বিষয়টি কোন পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে রানা প্লাজার ঘটনা উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক মানুষ যে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে বসবাস করে এবং যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার জীবনধারাকে প্রভাবিত করে তাকেই পরিবেশ বলে।
খ অর্থনৈতিক বিভিন্ন উপাদান যেমন সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, মূলধন ও অর্থবাজার নিয়ে যে পরিবেশ গঠিত হয় তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে।
অর্থনৈতিক পরিবেশ এমন কতগুলো উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যা ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যয়ের ধরনকে প্রভাবিত করে। যে দেশ বা অঞ্চলে অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদানগুলো ব্যবসায়ের অনুকূলে, সেখানে অতি দ্রুত ব্যবসায়ের প্রসার ঘটে। এজন্য অর্থনৈতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ।
গ উদ্দীপকে যুক্তরাষ্ট্রের কোটা বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত।
একটি দেশের রাজনীতির পারিপার্শ্বিকতা বা উপাদানসমূহ নিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশ গঠিত হয়। দেশের সার্বভৌমত্ব, সরকারি নীতিমালা, রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব, আইন-শৃঙ্খলা এ পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। অনুন্নত ও অসহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে।
উদ্দীপকে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। তবে সম্প্রতি রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদত্ত কোটা সুবিধা বাতিল করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাণিজ্য নীতি রাজনৈতিক পরিবেশেরই উপাদান, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। সুতরাং বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোটা বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে রানা প্লাজার ঘটনা উত্তরণে সুষম কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
ব্যবসায়-বান্ধব শিল্প ও বাণিজ্য নীতির মাধ্যমে কর্মপরিবেশ উন্নত করা যায়। রাজনৈতিক পরিবেশের এসব উপাদানের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো যদি ব্যবসায়-বান্ধব হয় এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে, তবে এ অবস্থার থেকে উত্তরণ সম্ভব।
উদ্দীপকে উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়। এটি পোশাক শিল্পের একটি নেতিবাচক ঘটনা। এ রকম দুর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিকের মৃত্যু হয়ে তাদের পরিবারে অসহায়ত্ব নেমে আসে। এতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতি বাইরের দেশের ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরূপ ধারণা জšে§। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুবই জরুরি।
এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য মৃত শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের নতুন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি শ্রমিকদেরকে একটি সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। কারখানা গঠনের সময় সরকারকে নজর দিতে হবে যেন এটি সঠিক নিয়ম ও অবকাঠমো অনুযায়ী স্থাপিত হয়। এসব বিষয় নিশ্চিত হলে একটি সুষম কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হবে। এর ফলে কর্মীরাও কাজে মনোযোগী ও আগ্রহী হতে পারবে। এভাবে বাইরের দেশের কাছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি সুদৃঢ় করা যাবে। এভাবে রানা প্লাজার ঘটনা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে।
প্রশ্ন:৫ শেরপুরের হাবিব স্থানীয় তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছের ওপর ভিত্তি করে ‘রূপসী বাংলা’ নামে একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তার উৎপাদিত পাখা, টুপি, পাট ও খেলনা সামগ্রী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মূলধন সংকটের কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। [চ. বো. ১৭]
ক. একমালিকানা ব্যবসায় কী? ১
খ. নামমাত্র অংশীদার বলতে কী বোঝায়? ২
গ. হাবিব কোন পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে তার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. হাবিবের ব্যবসায়ের সমস্যা উত্তরণের উপায় সম্পর্কে যুক্তি উপস্থাপন করো। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক কোনো ব্যক্তি এককভাবে ব্যবসায় গঠন ও নিয়ন্ত্রণ, মূলধন সরবরাহ, ঝুঁকি বহন, পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ এবং মুনাফা বা ক্ষতি একাই ভোগ করলে সেই ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে।
খ যিনি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার না হয়েও ব্যবসায়ে নিজের নাম ব্যবহারের অনুমতি দেন (কিন্তু মূলধন বিনিয়োগ করেন না) তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে।
নামমাত্র অংশীদার ব্যবসায়ের স্বার্থে নিজের সুনাম ব্যবহারের সুযোগ দেন। তিনি ব্যবসায়ের অংশীদার নন। তবে তিনি ব্যবসায় হতে আর্থিক সুবিধা বা কমিশন গ্রহণ করতে পারেন। এ ধরনের অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম, দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করেন না।
গ উদ্দীপকে হাবিব প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে তার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন।
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, সাগর, নদ-নদী ও মৃত্তিকার সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাই হলো প্রাকৃতিক পরিবেশ। বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।
উদ্দীপকের হাবিব শেরপুরে তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছের ওপর ভিত্তি করে “রূপসী বাংলা” নামে একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তার প্রতিষ্ঠানে পাখা, টুপি, পাটি ও খেলনা সামগ্রী উৎপাদিত হয়। এ অঞ্চলে মৃত্তিকার অনুকূল প্রভাবে তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছ ভালো উৎপন্ন হয়। তাই হাবিব সেখানে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। এতে তার পণ্যের উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল সমসময় পর্যাপ্ত থাকে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্যও তিনি তৈরি করতে পারেন। সুতরাং প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণেই হাবিব সেখানে কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছেন।
ঘ হাবিবের ব্যবসায়ের সমস্যা উত্তরণের জন্য তার আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে আমি মনে করি।
ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা ও সম্প্রসারণের জন্য সর্বক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত পুঁজি বা মূলধনের প্রয়োজন। মূলধনের সহজ সুযোগ, অর্থ-ঋণ ব্যবস্থা উন্নত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত অগ্রগতি লাভ করতে পারে।
উদ্দীপকের হাবিবের উৎপাদিত পণ্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। তার উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু মূলধন সংকটের কারণে তিনি সেটি সম্প্রসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।
একটা দেশের ব্যবসায় উন্নয়ন প্রয়োজনীয় উপকরণাদির সহজ প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। উদ্দীপকে অনুকূল অবস্থার কারণে হাবিবের শিল্পের দ্রুত উন্নতি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মূলধন সংকট হওয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। এ সমস্যা সমাধানে তিনি ব্যাংক বা এরূপ আর্থিক উৎস হতে সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারেন। নিজস্ব পুঁজির সাথে এরূপ ঋণের অর্থ মিলিয়ে তিনি ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত পুঁজি একত্র করতে পারবেন। এতে তার আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে বর্তমানে এরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা দিয়ে থাকে। সুতরাং এভাবেই হাবিব তার প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করে ব্যবসায়টি সম্প্রসারণ করতে পারবেন।
প্রশ্ন:৬ বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আশির দশকের শুরুতে জনাব আওলাদ বাংলাদেশের জনসম্পদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন, যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানো। ঐ দশকের মাঝামাঝি জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার তৈরি পোশাক বিক্রি করেন। ক্রমান্বয়ে তার তৈরি পোশাক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে বসে তার কারখানায় নিয়োজিত জনাব সেজাদকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পোশাক উৎপাদনের নির্দেশ দেন। জনাব সেজাদ কারখানার কর্মীদেরকে দিয়ে পোশাক উৎপাদন করে জনাব আওলাদের কাছে পাঠান। জনাব আওলাদ তৈরি পোশাকের একের পর এক নতুন বাজারের দ্বার উš§ুক্ত করেন।
[সি. বো. ১৭]
ক. খুচরা ব্যবসায় কী? ১
খ. প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জনাব আওলাদ পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকে জনাব আওলাদ ও জনাব সেজাদ উভয়ের কাজকে কি উদ্যোগ’ বলা যায়? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক পাইকার, বিক্রয় প্রতিনিধি বা আমদানিকারকদের থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে চূড়ান্ত ভোক্তাদের নিকট বিক্রয় করা হলে তাকে খুচরা ব্যবসায় বলে।
খ কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, আয়তন ও অবস্থানের সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।
প্রকৃতির পরিবেশের উপাদানের ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবিকার পরিবর্তন হয়। যেসব দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ যত বেশি, সেসব দেশে কৃষিনির্ভর জীবন-জীবিকা তত বেশি হয়ে থাকে। এ পরিবেশের উপাদানগুলো ব্যবসায়েও নানাভাবে প্রভাব ফেলে।
গ উদ্দীপকে জনাব আওলাদ অর্থনৈতিক পরিবেশের কারণে ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন।
কোনো স্থানে বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান সেখানকার অবস্থিত ব্যবসায়ের সাফল্য বা ব্যর্থতার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন ও জনসম্পদ ঐ স্থানের ব্যবসায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
উদ্দীপকে জনাব আওলাদ আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশের জনসম্পদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন। যার লক্ষ্য ছিল দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানো। যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হলো জনসম্পদ। এ সম্পদকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই এ জনসম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রয়োজন আছে। তাই বলা যায়, জনাব আওলাদ দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদানকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন।
ঘ কোনো নতুন চিন্তা মাথায় রেখে যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন তখন তার কার্যাবলিকে উদ্যোগ বলে।
উদ্যোগ ছাড়া কোনো ব্যবসায় বা শিল্প স্থাপন করা যায় না। দেশে উদ্যোক্তা সৃষ্টির হার যত বেশি হবে শিল্পায়নের পরিমাণও তত বেশি হবে।
উদ্দীপকে জনাব আওলাদ দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি বাড়ি বাড়ি পোশাক বিক্রয় শুরু করেন। তাই তার এ কাজকে উদ্যোগ বলা যায়। অন্যদিকে জনাব সেজাদ জনাব আওলাদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী পোশাক উৎপাদন করেন। অর্থাৎ তিনি জনাব আওলাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাই তার এ কাজকে উদ্যোগ বলা যায় না।
নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে উদ্যোক্তগণ দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেন। জনাব আওলাদও এমন একজন ব্যক্তি যিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। যেখানে দেশের অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর জনাব সেজাদের মতো মানুষ জনাব আওলাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাই উভয়ের কাজের মধ্যে জনাব আওলাদের কাজকে উদ্যোগ বলা গেলেও জনাব সেজাদের কাজকে উদ্যোগ বলা যায় না।
প্রশ্ন:৭ জনাব ইকবাল ঢাকায় থাকেন। তিনি সন্দ্বীপেও একটি বাড়ি কিনেছেন। সেখানে গিয়ে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরেন। উক্ত মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। বাজারে তার পণ্যের ব্যাপক সুনাম আছে। তবে পণ্যগুলোর ওজন ও আকার সুনির্দিষ্ট না থাকায় ক্রেতারা মাঝে মধ্যে তার পণ্য ক্রয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। [য. বো. ১৭]
ক. সামাজিক ব্যবসায় কী? ১
খ. শিল্পকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ক্রেতাদের সমস্যা সমাধানে জনাব ইকবালের করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যে ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রাপ্তির কোনো প্রত্যাশা থাকে না বরং সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।
খ প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে ভোগ বা ব্যবহারযোগ্য পণ্যে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে শিল্প বলে।
সাধারণত ব্যবসায়ের বিভিন্ন কাজ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় সংঘটিত হয়। কিন্তু শিল্পের কাজটি ব্যতিক্রম, যা এক জায়গায় করতে হয়। অর্থাৎ কারখানাতে প্রক্রিয়াজাতকরণের সব কাজ সম্পাদিত হয়। তাই শিল্পকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয়।
গ উদ্দীপকে জনাব ইকবাল প্রাকৃতিক পরিবেশের সাগর ও নদ-নদী উপাদান বিবেচনা করে সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন।
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর, আয়তন ও অবস্থানের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এসব উপাদানের পার্থক্যজনিত কারণে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।
ঢাকায় বসবাসকারী জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে বাড়ি কিনেন। সন্দ্বীপে গিয়ে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরেন। উক্ত মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। সন্দ্বীপে সমুদ্র থাকায় সেখানে সহজেই প্রচুর সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই তিনি সন্দ্বীপে মাছের ব্যবসায় শুরু করেন। এর ফলে অল্প সময়েই তিনি বাজারে সুনাম অর্জন এবং প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। সুতরাং বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের সাগর ও নদ-নদী উপাদানটির অনুকূল অবস্থা বিবেচনায় জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন।
ঘ ক্রেতাদের সমস্যা সমাধানে জনাব ইকবাল প্রমিতকরণের মাধ্যমে পণ্যের মান বজায় রাখার চেষ্টা করতে পারেন।
পণ্যের ওজন, আকার, রং ও গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে পণ্য মানের সীমা নির্ধারণ করার কাজই হলো প্রমিতকরণ। এর মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করা যায়।
উদ্দীপকের জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে মাছের ব্যবসায় করে সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু তার পণ্যগুলোর ওজন ও আকার সুনির্দিষ্ট নয়। ফলে ক্রেতারা মাঝে-মধ্যে তার পণ্য ক্রয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। প্রমিতকরণের অভাবে এ সমস্যা হচ্ছে। জনাব ইকবাল প্রমিতকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ওজনের ও বিভিন্ন আকারের মাছ আলাদা করে সাজাতে পারেন। এর মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ ক্রয় করতে পারবেন। এতে বিক্রেতা হিসেবেও ইকবালের মাছ সরবরাহ কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে। সুতরাং প্রমিতকরণ কাজটি উক্ত সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:৮ জনাব রিফাত গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এখানে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। এতে বিনিয়োগ কম করেও মুনাফার পরিমাণ বেশি হয়। তিনি দেখলেন তার কারখানার পার্শ্ববর্তী ‘রংধনু’ নামক একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় ও কর্মপরিবেশ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ চলছে। মালিকপক্ষ ‘রংধনু’ নামক পোশাক কারখানাটি তালাবদ্ধ ঘোষণা দেয়। [দি. বো. ১৬]
ক. পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনা করে জনাব রিফাত পোশাক কারখানা স্থাপন করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘রংধনু’ পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের যে উপাদানের অন্তর্গত উদ্দীপকের আলোকে তা বিশ্লেষণ করো। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক মানুষ যে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে বসবাস ও জীবনধারণ করে এবং যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবনধারাকে প্রভাবিত করে তাকেই পরিবেশ বলে।
খ সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি ইত্যাদি, যা জীবনধারণে প্রভাব বিস্তার করে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।
সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের সৃষ্টি এবং মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি ব্যবসায়ের আয়, লাভ-লোকসানকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।
মগ জনাব রিফাত পরিবেশের অর্থনৈতিক উপাদান বিবেচনা করে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন।
অর্থনৈতিক পরিবেশ কোনো দেশের জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, দক্ষ উদ্যোক্তা ও মানবসম্পদ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। এ পরিবেশ উন্নত হলে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করা সহজ হয়।
জনাব রিফাত গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করলেন। কেননা গাজীপুরে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। জমির মূল্য কম হওয়ায় তার স্থায়ী ব্যয়ও কম। আর সস্তায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া গেলে দক্ষতার সাথে স্বল্প ব্যয়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এর ফলে তিনি কম বিনিয়োগ করেও বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। এ থেকে বোঝা যায়, তিনি অর্থনৈতিক পরিবেশকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
মঘ রংধনু পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের রাজনৈতিক উপাদানের অন্তর্গত।
রাজনৈতিক পরিবেশ কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ও শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক প্রভৃতি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়। অনুন্নত ও অসহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিবেশকে মারাÍক বাধাগ্রস্ত করে।
জনাব রিফাতের কারখানার পাশে ‘রংধুন’ নামক একটি পোশাক কারখানা আছে। এ কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় ও কর্মপরিবেশ উন্নত নয়। তাই শ্রমিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। মালিকপক্ষ তাদের কারখানাটি তালাবদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। এতে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের অবনতি হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব লক্ষ করা যায়।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট হওয়ায় তাদের দাবি আদায়ের জন্য তারা মালিকদের বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। মালিকপক্ষ তাদের দাবি পূরণ না করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এর ফলস্বরূপ ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রশ্ন:৯ মাহমুদ কাপড়ের ব্যবসায় করেন। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানে তার দোকান। ঈদ সামনে রেখে তিনি তার দোকানের জন্য নরসিংদী থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করে আনার সময় পথে কতিপয় দুর্বৃত্ত তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অপারগ হলে দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়। [য. বো. ১৬]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়ের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব কীরূপ? ২
গ. মাহমুদ ব্যবসায়ে কোন পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনেক টাকার কাপড় ক্রয় করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. কোন পরিবেশের অভাবে তিনি ব্যাপক ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হন? বিশ্লেষণ করো। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের গঠন, পরিচালন ও নিয়ন্ত্রণে যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান বা শক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় সেগুলোর সমষ্টিকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, আয়তন, অবস্থান ইত্যাদি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট উপাদানের সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।
প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবসায়ে নানাভাবে প্রভাব ফেলে। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবিকার পরিবর্তন হয়। যেসব দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ যত বেশি সেসব দেশে কৃষি নির্ভর জীবন-জীবিকা তত বেশি হয়ে থাকে।
গ মাহমুদ ব্যবসায়ে সামাজিক পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনেক টাকার কাপড় ক্রয় করেন।
সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ বাস করে। এসব মানুষের রীতি-নীতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, শিক্ষা সবকিছুর সমষ্টিই হলো সামাজিক পরিবেশ।
মাহমুদ কাপড়ের ব্যবসায় করেন। ঢাকার গুলিস্তানে তার দোকান আছে। ঈদ উপলক্ষে তিনি ৫ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করেন। ঈদ মুসলিম ধর্মের অনুসারীদের জন্য একটি পবিত্র এবং আনন্দের অনুষ্ঠান। ঈদ উপলক্ষে মুসলমানরা নতুন কাপড়-চোপড় ক্রয় করে। এতে মাহমুদের দোকানের বিক্রিও ঈদ উপলক্ষে বাড়ে। এ ঈদ সামাজিক পরিবেশের একটি উপাদান। সুতরাং সামাজিক পরিবেশ বিবেচনা করেই মাহমুদ বেশি পরিমাণ কাপড় ক্রয় করেছেন।
ঘ সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবে মাহমুদ ব্যবসায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হন।
সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান, স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা ইত্যাদি উপাদানের সমন্বয়ই হলো রাজনৈতিক পরিবেশ। রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হলে দেশের ব্যবসায় সম্প্রসারণ ঘটে।
মাহমুদ একজন ব্যবসায়ী। তিনি ঈদ উপলক্ষে ৫ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করেন। কাপড় ক্রয় করে নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসার পথে কতিপয় দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে। দুর্বৃত্তরা তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার ক্রয়কৃত সমস্ত কাপড় পুড়ে যায়।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকার কারণে মাহমুদের কাছে দুর্বৃত্তরা চাঁদা দাবি করতে পেরেছে। স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা রাজনৈতিক পরিবেশের উপাদান। আইন-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল না থাকায় মাহমুদ দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। সুতরাং রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হন।
প্রশ্ন:১০ মিসেস পাখি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বাসিন্দা। সেখানকার আমের উৎপাদন সচরাচর বেশি হয়। তাই তিনি নতুন ধরনের ব্যবসায় শুরু করলেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি রাখেন। অল্পদিনের মধ্যে তার ব্যবসায়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাই তিনি দেশব্যাপী তার পণ্যগুলোর প্রচার করতে চান। তিনি বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ী ও অন্য প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সহযোগিতা নেওয়ার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারের কথাও ভাবছেন। তবে পদ্ধতিগুলোর দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে তিনি চিন্তিত। [ব. বো. ১৬]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বিবেচনার কারণ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মিসেস পাখি ব্যবসায় পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় এনে ব্যবসায় শুরু করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মিসেস পাখির ব্যবসায়টির দ্রুত প্রচারের জন্য বাহ্যিক পরিবেশের কোন উপাদানকে অধিক বিবেচনা করা উচিত? মতামত দাও। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের গঠন, পরিচালন ও নিয়ন্ত্রণে যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান বা শক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় সেগুলোর সমষ্টিকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিরাজমান যেসব উপাদান বা শক্তি ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে তাকে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বলে।
এরূপ পরিবেশের উপাদানের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক-কর্মী ব্যবসায়ের আর্থিক ও কারিগরি সমর্থ, সুনাম, নিজস্ব সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এরূপ পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই ব্যবসায়ে এরূপ পরিবেশ বিবেচনার প্রয়োজন পড়ে।
গ মিসেস পাখি ব্যবসায় পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান বিবেচনায় এনে ব্যবসায় শুরু করেন।
প্রকৃতি প্রদত্ত উপাদান যেগুলো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না সেগুলোর সমষ্টিই প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর মধ্যে মাটি, জলবায়ু, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি অন্যতম।
মিসেস পাখি চাঁপাইনবাবগঞ্জে আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন মিষ্টির ব্যবসায় শুরু করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচুর আম উৎপাদিত হয়। এখানকার আবহাওয়া এবং মাটি আম চাষের জন্য অনুকূল। প্রচুর আম উৎপাদিত হওয়ায় মিসেস পাখি এ অঞ্চলের আম থেকে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের ব্যবসায় শুরু করেছেন। তার এ ব্যবসায়ের মৌলিক উপাদান হলো আম, যেটি প্রকৃতির দান। সুতরাং মিস পাখির ব্যবসায় শুরু করার প্রধান কারণ পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান।
ঘ মিসেস পাখির ব্যবসায়টির দ্রুত প্রচারের জন্য বাহ্যিক পরিবেশের প্রযুক্তিগত উপাদানকে অধিক বিবেচনা করা উচিত।
প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ ইত্যাদি মিলিয়ে সৃষ্ট পরিবেশকে বোঝায়। এ পরিবেশের প্রভাবে নতুন নতুন ব্যবসায় ও পণ্য উদ্ভাবন সম্ভব হয়।
মিসেস পাখি আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। অল্প দিনের মধ্যেই তার ব্যবসায়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাই মিসেস পাখি দেশব্যাপী তার পণ্যগুলোর প্রচার করতে চান। তিনি পণ্যের প্রচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কথা ভাবছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদিকে বোঝায়, যেগুলো প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান। এসব যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মিসেস পাখি অল্প সময়ে কম খরচে দেশব্যাপী পণ্যের প্রচার করতে পারবেন। দেশের বাইরেও সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়। অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যমগুলো প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান। মিসেস পাখির পণ্যের প্রচারে এ প্রযুক্তিগত পরিবেশ বিবেচনা করা উচিত বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:১১ পলি বিধৌত পদ্মাপাড়ের ছেলে ফজলু ও তপন। উর্বর মাটিতে প্রচুর ফসল ফলার কারণে তাদের পরিবারগুলো বেশ সচ্ছল ছিল। হঠাৎ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিগত তিন বছরে গ্রামগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় জীবিকার তাগিদে ফজলু এখন ইটের ভাটায় কাজ করে। অন্যদিকে, তপন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে নদীতে মাছ চাষ করে আজ সফল। [নটর ডেম কলেজ, ঢাকা]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কাকে বলে? ১
খ. অর্থনৈতিক পরিবেশ বলতে কী বোঝ? ২
গ. তপনের সফলতার পেছনে কোন ধরনের পরিবেশের অবদান বেশি ছিল বলে তুমি মনে করো? তোমার সপক্ষে মতামত দাও। ৩
ঘ. পরিবেশগত সুবিধা সঠিকভাবে গ্রহণ ও ব্যবহার করার ওপরই মানুষের উন্নয়ন ও সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে। উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্য করো। ৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে দিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ আয়, সঞ্চয়, মূলধন, বিনিয়োগ, অর্থ, ঋণ এদের সমন্বয় যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে।
অর্থ হচ্ছে ব্যবসায়ের চালিকাশক্তি। দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। কোনো দেশের উন্নতির পেছনে ঐ দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গ তপনের সফলতার পেছনে অর্থনৈতিক পরিবেশের অবদান বেশি ছিল। অ
আয়, সঞ্চয়, মূলধন, বিনিয়োগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সুনাম এদের সমন্বয় অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। দক্ষ জনশক্তি, মানব সম্পদও অর্থনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের উপাদান দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
উদ্দীপকে পলি বিধৌত পদ্মাপাড়ের ছেলে তপন। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গ্রামগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তপন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে নদীতে মাছ চাষ করে। ব্যাংক তপনকে আর্থিক সহায়তা করেছে। ফলে তপন ব্যবসায় করে আর্থিকভাবে সচ্ছল। এ আর্থিক উপাদানগুলো অর্থনৈতিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য। সুতরাং অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদানের কারণে তপন ব্যবসায় সফলতা পেয়েছে।
ঘ উদ্দীপকে পরিবেশগত সুবিধা সঠিকভাবে গ্রহণ ও ব্যবহার করার ওপরই মানুষের উন্নয়নও সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে। আমি এ মন্তব্যের সাথে একমত। অ
যে কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সফলতা পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। এসব উপাদানের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও আইনগত ইত্যাদি উপাদান ব্যবসায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।
উদ্দীপকে পলি বিধৌত উর্বর মাটিতে প্রচুর ফসল ফলার কারণে তাদের পরিবার সচ্ছল ছিল। নদী ভাঙনের ফলে গ্রামগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যায়। জীবিকার জন্য ফজলু ইটের ভাটায় আর তপন ব্যাংক ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে। প্রথমে প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। আবার প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণেই তা অসচ্ছল হয়ে পড়ে। পরে অর্থনৈতিক পরিবেশের কারণে তপন ব্যবসায় সফলতা পায়।
পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। যেসব দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ বেশি সেসব দেশে কৃষিনির্ভর জীবন-জীবিকা তত বেশি। অর্থনৈতিক পরিবেশের ব্যাংক ব্যবস্থা, দক্ষ জনশক্তি ও মানব সম্পদের কারণে শিল্প ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ ব্যবসায়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ব্যবসায় পরিবেশের উপাদানগুলোর সদ্ব্যবহারের ওপর মানুষের উন্নয়ন ও সফলতার অনেকাংশ নির্ভর করে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:১২ টাঙ্গাইলের মিসেস তাসলিমা একজন উচ্চ শিক্ষিত মহিলা হয়েও চাকরির পেছনে না ঘুরে তার বৃদ্ধ পিতার দীর্ঘদিনের সফল খ্যাতিসম্পন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বিতান’ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। আগে এ প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ভোক্তার রুচি অনুযায়ী আধুনিক মানের পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার জন্য তিনি কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে আধুনিকরণের জন্য কর্মীদের পরামর্শ দেন। [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক. ট্রেড কী? ১
খ. ব্যবসায় পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. পরিবেশের কোন উপাদানের প্রভাবে মিসেস তাসলিমা চাকরি না করে ব্যবসায়কে বেছে নিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সমস্যা উত্তরণে কী করণীয় বলে তুমি মনে করো? যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো। ৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পণ্য বিনিময় তথা ক্রয়-বিক্রয়ের কাজকে ট্রেড বলে।
খ ব্যবসায়ের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানের সমষ্টি হলো ব্যবসায় পরিবেশ।
কিছু উপাদান ব্যবসায় গঠনে অনুকূল প্রভাব ফেলে। এগুলো ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় সহায়তা করে থাকে। আবার আমাদের পারিপার্শিক অবস্থার মধ্যে কিছু উপাদান আছে, যা ব্যবসায়ের ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। এগুলো ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় বাধার সৃষ্টি করে। এই সহায়তাকারী ও বাধাদানকারী উপাদানের সমন্বয়ই হলো ব্যবসায় পরিবেশ।
গ উদ্দীপকের মিসেস তাসলিমা ব্যবসায়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশের ঐতিহ্যগত উপাদানের প্রভাবে চাকরি না করে ব্যবসায়কে বেছে নিলেন। অ
মানুষের মাঝে দীর্ঘদিনে গড়ে ওঠা কিছু ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস, আচরণ, রীতি, প্রথা, ঐতিহ্য ইত্যাদির সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। যেমন: সুনাম, সুখ্যাতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি এ পরিবেশের উপাদান।
উদ্দীপকে টাঙ্গাইলের মিসেস তাসলিমা একজন উচ্চ শিক্ষিত মহিলা। তবে তিনি চাকরির পেছনে না ঘুরে তার বৃদ্ধ পিতার দীর্ঘদিনের সফল খ্যাতি সম্পন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বিতান’ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। আগে এ প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তাই মিসেস তাসলিমা তার বাবার ব্যবসায়ের সুনামের কারণে চাকরির পরিবর্তে ব্যবসায়ের প্রতি মনোনিবেশ করেন। আর, এ সুনাম-খ্যাতি-ঐতিহ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশের উপাদান। সুতরাং, তার ব্যবসায়ের পিছনে সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাব রয়েছে।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সমস্যা উত্তরণে আধুনিক কলা-কৌশল ও প্রযুক্তির ব্যবহার তথ্যপ্রযুক্তিগত পরিবেশের দিকে নজর দিতে হবে। অ
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি মিলিয়ে একটি দেশের অভ্যন্তরে প্রযুক্তিগত পরিবেশ তৈরি হয়। এ পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলে গবেষণা ও উন্নয়ন।
উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে বর্তমানে ভোক্তার রুচি অনুযায়ী আধুনিক মানের পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ থেকে উত্তরণের জন্য কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে গবেষণার মাধ্যমে তা আধুনিকায়নের পরামর্শ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করতে হবে। এজন্য উন্নত কলাকৌশল ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর এ বিষয়টি ব্যবসায়ের প্রযুক্তিগত পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, মিসেস তাসলিমাকে প্রযুক্তিগত পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রশ্ন:১৩ সবুজ একজন কৃষক। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে তার বাড়ি। প্রচুর ফসল ফলায় তার পরিবার আগে সচ্ছল ছিল। কিন্তু খরার কারণে ফসল উৎপাদন না হওয়ায় তার সংসারে অভাব দেখা দেয়। তাই সবুজ ব্যবসায় করার চিন্তা করে ‘সবুজ ছায়া’ নামক ঘএঙ থেকে ঋণ নেয়। এ ঋণকৃত অর্থে সে একটি মুদি দোকান দেয়। কয়েক বছরের মধ্যে সে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। [ঢাকা কমার্স কলেজ]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনায় রাজনৈতিক পরিবেশের ভূমিকা লেখো। ২
গ. জনাব সবুজের পরিবারে সচ্ছলতার পেছনে কোন ধরনের পরিবেশের অবদান বেশি ছিল? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. জনাব সবুজের সফল ব্যবসায়ী হবার পেছনে ব্যবসায় পরিবেশের ভূমিকা রয়েছে মতামত দাও। ৪
১৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায়ের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানের সমষ্টিই হলো ব্যবসায় পরিবেশ।
খ সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনায় অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
রাজনৈতিক পরিবেশ মূলত কোনো দেশের রাজনীতির চর্চার ধরন ও চিন্তাধারার সাথে জড়িত। অনুন্নত ও অসহনীয় রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিচালনাকে বাধাগ্রস্ত করে। অপরদিকে, সু®ু¤ রাজনীতির চর্চা কোনো দেশের ব্যবসায়কে উন্নতির উচ্চ স্তরে পৌঁছে দিতে পারে। তাই, একটি দেশের রাজনৈতিক অবস্থার ওপর সে দেশের ব্যবসায়ের গতি-প্রকৃতি নির্ভর করে।
গ উদ্দীপকের জনাব সবুজের পারিবারিক সচ্ছলতার পেছনে প্রাকৃতিক পরিবেশের অবদান বেশি ছিল।
কোনো অঞ্চলের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, নদ-নদী প্রভৃতি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট উপাদানের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এ পরিবেশের কোনো উপাদানকে মানুষ বা ব্যবসায়ী তৈরি করতে এমনকি প্রভাবিতও করতে পারে না। মানুষকে এ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হয়।
উদ্দীপকে বর্ণিত সবুজ একজন কৃষক। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে তার বাড়ি। প্রচুর ফসল ফলায় তার পরিবার আগে সচ্ছল ছিল। তাই দেখা যায়, তার পারিবারিক সচ্ছলতার ক্ষেত্রে মূল অবদান ছিল এলাকার জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতি। নদী অনুষিত এলাকায় ফসল ফলানো সহজ হয়। নদীর পাড়ে তার বাড়ি হওয়ায় তিনি প্রচুর ফসল ফলাতে পারতেন। এরূপ এলাকার জমি উর্বর থাকে ও নদীর পানি ব্যবহার করার সুযোগ থাকায় কৃষি কাজ করা সহজ হয়। এতে কৃষকদের অবস্থার উন্নতি হয়। তাই বলা যায়, জনাব সবুজের পারিবারিক সচ্ছলতার পেছনে প্রাকৃতিক পরিবেশের অবদান বেশি ছিল।
ঘ উদ্দীপকের জনাব সবুজের সফল ব্যবসায়ী হবার পেছনে ব্যবসায়ের অর্থনৈতিক পরিবেশের ভূমিকা রয়েছে।
ব্যবসায়ের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানের সমন্বয় হলো ব্যবসায় পরিবেশ। কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, মানব সম্পদ ইত্যাদির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক পরিবেশ গঠিত হয়। এ পরিবেশের উপাদানসমূহের অনুকূল উপস্থিতি ব্যবসায়ের উন্নতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে বর্ণিত সবুজ সাংসারিক অভাব দূর করার জন্য ব্যবসায় করার চিন্তা করে। এজন্য সে সবুজ ছায়া নামক ঘএঙ থেকে ঋণ নেয়। এ ঋণকৃত অর্থে সে একটি মুদি দোকান দেয়। এক পর্যায়ে সে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, সবুজের ব্যবসায় শুরু করা সম্ভব হয়েছে সহজে মূলধন জোগাড় করতে পারায়।
মূলধন সংগ্রহ বা ঋণ প্রাপ্তির সহজলভ্যতা হলো অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান। আর এ অর্থনৈতিক উপাদানের অনুকূল উপস্থিতির কারণেই সবুজ কৃষিকাজের পরিবর্তে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে। তাই বলা যায়, জনাব সবুজের সফল ব্যবসায়ী হবার পেছনে ব্যবসায় পরিবেশের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।
প্রশ্ন:১৪ আনোয়ার হাসান কৃষক পরিবারের সন্তান। নিজেদের জমি চাষ করে সে সচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নদী ভাঙনের ফলে সব কিছু হারিয়ে সে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। ব্যবসায় করার ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক সহায়তার অভাবে সে এখন ইটভাটায় কাজ নেয়। বর্তমানে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করে নদী ভাঙন এলাকায় ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা চালু করে। [আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা]
ক. ব্যবসায়িক মূল্যবোধ কী? ১
খ. প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. আনোয়ার হাসানের জীবনযাত্রার পট পরিবর্তনে কোন পরিবেশের প্রভাব সবচেয়ে বেশি? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. সরকার নীতিমালা প্রণয়নের ফলে কী আনোয়ার হাসানের মতো অসহায় লোকদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হবে? মতামত দাও। ৪
১৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায় পরিচালনায় ভালো-মন্দ দিক সম্পর্কে স্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, মতামত প্রভৃতি বিষয়কে ব্যবসায়িক মূল্যবোধ বলে।
খ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উপাদানের সমন্বিত রূপই হলো প্রযুক্তিগত পরিবেশ।
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার আধুনিক কলাকৌশল ও পদ্ধতি ইত্যাদি মিলিয়ে প্রযুক্তিগত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পরিবেশে উন্নত তারা শিল্প বাণিজ্যেও উন্নত হয়। বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি ও দেশি কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে যত্নবান।
গ উদ্দীপকের আনোয়ার হাসানের জীবনযাত্রার পটপরিবর্তনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, আয়তন, অবস্থান ইত্যাদির সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এ পরিবেশ মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। আবার এ পরিবেশের ওপর মানুষ কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সফলতা বা বিফলতায় এ পরিবেশ প্রভাব ফেলে।
উদ্দীপকের আনোয়ার হাসান কৃষক পরিবারের সন্তান। তিনি নিজেদের জমি চাষ করে সচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নদী ভাঙনের ফলে সব কিছু হারিয়ে তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নদী ভাঙন একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এ বিপর্যয় তার জীবনে প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। এ নদী ভাঙন তাকে তার জীবিকা পরিবর্তন করতে বাধ্য করে। এসব বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত। তাই বলা যায়, আনোয়ার হাসানের জীবনযাত্রার পটপরিবর্তনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
ঘ সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের ফলে উদ্দীপকের আনোয়ার হাসানের মতো অসহায় লোকদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হবে। অ
জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্য সরকার বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করেন। পরিবেশের প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করতে এসব নীতিমালা সাহায্য করে। তাই সরকার বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করেন।
উদ্দীপকের আনোয়ার হাসান কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নদী ভাঙনের ফলে সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ব্যবসায় করার ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক সহায়তার অভাবে তিনি তখন ইটভাটায় কাজ নেন। বর্তমানে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করে নদী ভাঙন এলাকায় ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা চালু করে।
নদী ভাঙনের ফলে আনোয়ার হাসানের মতো অনেকেই অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই তাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। অসহায় জনগণের প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলায় সরকার এগিয়ে আসে। সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে। এতে জনগণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। এতে তাদের আর্থিক উন্নতি হবে। তাই বলা যায়, সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের ফলে আনোয়ার হাসানের মতো অসহায় লোকদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।
প্রশ্ন:১৫ জনাব রফিক গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এখানে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। ফলে বিনিয়োগ কম করেও মুনাফার পরিমাণ বেশি হয়। তিনি দেখলেন তার কারখানার পার্শ্ববর্তী ‘রংধনু’ নামক একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কাজের সময় ও কার্য পরিবেশ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ চলছে। মালিক পক্ষ ‘রংধনু’ নামক পোশাক কারখানাটি তালাবদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। [রাজবাড়ী সরকারি কলেজ]
ক. পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনা করে উদ্দীপকের জনাব রফিক পোশাক কারখানা স্থাপন করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘রংধনু’ পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের যে উপাদানের অন্তর্গত উদ্দীপকের আলেকে তা বিশ্লেষণ করো। ৪
১৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যে বিষয়গুলো জীবনধারণ বা কর্মকাণ্ডের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে সেগুলোর সমষ্টিকে পরিবেশ বলে।
খ সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, জাতীয়তা, চিন্তাধারা, রীতি-নীতি প্রভৃতি উপাদানের সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।
ব্যবসায় সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সমাজের সব উপকরণ ব্যবহার করেই ব্যবসায় পরিচালিত হয়। সমাজের যে উপাদানগুলো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে তা নিয়েই গঠিত হয় ব্যবসায়ের সামাজিক পরিবেশ।
গ পরিবেশের অর্থনৈতিক উপাদান বিবেচনা করে উদ্দীপকের জনাব রফিক পোশাক কারখানা স্থাপন করেন।
কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, জনসম্পদ ইত্যাদি অর্থনৈতিক উপাদানের সমন্বয়ে অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ব্যবসায় শুরুর আগে এ বিষয়গুলোকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উদ্দীপকের জনাব রফিক গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এখানে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। ফলে কম বিনিয়োগ করেও মুনাফা বেশি পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি উৎপাদনের অর্থনৈতিক উপকরণকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আর তা হলো সহজলভ্য জমি ও সস্তায় দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ। এগুলো অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান। তাই বলা যায়, জনাব রফিক পোশাক কারখানা স্থাপনে অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান বিবেচনা করেছেন।
ঘ উদ্দীপকে ‘রংধনু’ পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্গত। অ
রাজনৈতিক পরিবেশে মূলত কোনো দেশের রাজনীতির চর্চার ধরন ও চিন্তাধারার সাথে জড়িত। এর অন্তর্ভুক্ত হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক ইত্যাদি।
উদ্দীপকের জনাব রফিকের কারখানার পাশে রংধনু নামে একটি পোশাক শিল্প রয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের কাজের সময় ও কাজের পরিবেশ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ চলছে। এর প্রেক্ষিতে মালিকপক্ষ রংধনু নামক পোশাক কারখানাটি তালাবদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। আর এটি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্গত। এই রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো না হয়ে অস্থিতিশীল হয়ে গেলে ব্যবসায়ের পরিবেশেও অস্থিরতা দেখা দেয়। যার প্রমাণ আমরা উদ্দীপকে দেখতে পাই। অর্থাৎ অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে প্রতিষ্ঠানে তালাবদ্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রশ্ন:১৬ জনাব কামাল একজন কাপড় উৎপাদনকারী। সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে তিনি কাপড় উৎপাদনের জন্য একটি ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। ঈদকে সামনে রেখে তিনি প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাপড় উৎপাদন করে সারা দেশে সরবরাহ করেন। ব্যবসায়ে অনেক লাভ হওয়ায় তিনি এখন বিদেশে কাপড় রপ্তানি করার চিন্তা ভাবনা করছেন। কিন্তু বিদেশে কাপড় রপ্তানির কিছু সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় তিনি অপারগ হন। [বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক. ব্যবসায় কোন ধরনের কাজ? ১
খ. প্রত্যক্ষ সেবা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব কামাল কোন ধরনের ব্যবসায় পরিবেশের সুবিধার কারণে অনেক কাপড় উৎপাদন করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. কোন পরিবেশের কারণে জনাব কামাল বিদেশে কাপড় রপ্তানি করতে অপারগ হন? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায় এক ধরনের বৈধ অর্থনৈতিক কাজ।
খ গ্রাহকদের প্রত্যক্ষভাবে সেবা দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করাকে প্রত্যেক্ষ সেবা বলে।
এটি দেখা বা স্পর্শ করা যায় না। এ ছাড়া এর মালিকানাও হস্তান্তর করা যায় না। নির্দিষ্ট ফি-এর বিনিময়ে এ সেবা পাওয়া যায়। যেমন: ডাক্তারি, ওকালতি, অডিট ফার্ম প্রভৃতি এ সেবার উদাহরণ।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব কামাল সামাজিক পরিবেশের সুবিধার কারণে অনেক কাপড় উৎপাদন করেন।
সমাজের মানুষের রীতি-নীতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, শিক্ষা প্রভৃতি উপাদান নিয়ে সামাজিক পরিবেশ গঠিত হয়। এক্ষেত্রে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণা ব্যবসায়ের উন্নয়নে খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখে।
উদ্দীপকের জনাব কামাল একজন কাপড় উৎপাদনকারী। তিনি কাপড় উৎপাদনের জন্য একটি ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। ঈদকে সামনে রেখে তিনি প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাপড় উৎপাদন করে সারা দেশে সরবরাহ করেন। স্বাভাবিকভাবেই ঈদ উপলক্ষে মুসলমানরা নতুন কাপড় ক্রয় করে। তাই ব্যবসায়ীরা মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে অধিক কাপড় উৎপাদন করে থাকেন। এ ঈদ সামাজিক পরিবেশের একটি উপাদান। তাই বলা যায়, সামাজিক পরিবেশের সুবিধার কারণে জনাব কামাল অনেক কাপড় উৎপাদন করেন।
ঘ রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে জনাব কামাল বিদেশে কাপড় রপ্তানি করতে অপারগ হন।
দেশের সার্বভৌমত্ব, সরকারের স্থিতিশীলতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালা প্রভৃতি মিলে রাজনৈতিক পরিবেশে গঠিত হয়। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পথে বড় বাধা এ পরিবেশ। সরকারি নীতিমালা ব্যবসায় কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।
উদ্দীপকে তিনি জনাব কামাল ঈদকে সামনে রেখে অনেক কাপড় উৎপাদন করেন। ব্যবসায়ের লাভ হওয়ায় তিনি এখন বিদেশে কাপড় রপ্তানি করার চিন্তাভাবনা করছেন। কিন্তু, কিছু সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় বিদেশে কাপড় রপ্তানি করতে তিনি অপরাগ হন।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগ। এ যুগে কোনো দেশই ব্যবসায় বান্ধব নীতিমালা ছাড়া উন্নয়ন করতে পারে না। সরকারি নীতিমালাগুলো ব্যবসায় বান্ধব না হলে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়। এছাড়া ব্যবসায় সম্প্রসারণেও তারা বাধার সম্মুখীন হন। সরকারি নীতিমালা রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায়, রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে জনাব কামাল কাপড় রপ্তানি করতে অপারগ হন।
প্রশ্ন:১৭ মি. সুমন হাবীব বিদেশ থেকে ফিরে ব্যবসায় করবে ভাবলেন। প্রথমে ভাবলেন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ওপর কিছু একটা করবেন। কিন্তু দক্ষ জনশক্তি, বাজার, মূলধন ইত্যাদি বিষয়ে অনিশ্চয়তা ভেবে পরবর্তীতে দেশের মানুষের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিলিয়ে কোনো একটা ব্যবসায় দাঁড় করানোর চিন্তা করলেন। তিনি একটা ফ্যাশন হাউজ গড়ে তুললেন। যেখানে পুরনো ঐতিহ্যের সাথে নতুন চিন্তার সমন্বয় ঘটিয়ে নিত্য-নতুন ডিজাইনের পোশাক বাজারে নিয়ে আসলেন। সবাই তার এ কাজের সমাদর করছে।
[কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুুর]
ক. পরিবেশ কী? ১
খ. প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মি. সুমন কোন ধরনের পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাব দেখে পিছিয়ে এসেছিলেন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মি. সুমনের পরবর্তী চিন্তায় যে পরিবেশ প্রভাব রেখেছে তার যথার্থতা বিশ্লেষণ করো। ৪
১৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক মানুষ যে পারিপার্শ্বিককতার মধ্যে বসবাস ও জীবনধারণ করে এবং যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবনধারাকে প্রভাবিত করে তাকেই পরিবেশ বলে।
খ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উপাদানের সমন্বিত রূপই হলো প্রযুক্তিগত পরিবেশ।
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক কলাকৌশল ও পদ্ধতি ইত্যাদি মিলিয়ে প্রযুক্তিগত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যে সব দেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পরিবেশে উন্নত তারা শিল্প বাণিজ্যেও উন্নত হয়। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
গ উদ্দীপকের মি. সুমন অর্থনৈতিক পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাব দেখে ব্যবসায় থেকে পিছিয়ে এসেছিলেন।
অর্থনৈতিক পরিবেশ দেশের জনগণের আয়, সঞ্চয়, অর্থ, ঋণ, মূলধন ও জনসম্পদ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। যে দেশে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ ভালো, জনশক্তি আশাব্যঞ্জক এবং মূলধনের পরিমাণ পর্যাপ্ত সেই দেশ তত অগ্রগতি লাভ করে।
উদ্দীপকে মি. সুমন হাবীব বিদেশ থেকে ফিরে ব্যবসায় করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর ওপর কিছু একটা করবে বলে ভাবছেন। কিন্তু দক্ষ জনশক্তি, বাজার, মূলধন ইত্যাদি বিষয়ে অনিশ্চিত হওয়ায় ব্যবসায় থেকে পিছিয়ে আসেন। কারণ, দক্ষ জনশক্তি ছাড়া প্রযুক্তিগত কাজ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, ব্যবসায় শুরু করতে পর্যাপ্ত মূলধন ও যথাযথ বাজার ব্যবস্থা থাকতে হয়, যা অর্থনৈতিক পরিবেশের অন্তর্গত। তাই বলা যায়, মি. সুমন অর্থনৈতিক পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ব্যবসায় থেকে পিছিয়ে এসেছিলেন।
ঘ উদ্দীপকের মি. সুমনের পরবর্তী চিন্তায় সামাজিক পরিবেশের প্রভাব আছে বলে আমি মনে করি।
কোনো জাতির মানুষের সংখ্যা, ধর্ম, বিশ্বাস, চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, শিক্ষা, রীতি-নীতি, দেশি ঐতিহ্য ইত্যাদি নিয়ে সামাজিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এরূপ পরিবেশ ব্যবসায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।
উদ্দীপকে মি. সুমন হাবীব পরবর্তীতে দেশের মানুষের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিলিয়ে কোনো একটি ব্যবসায় দাঁড় করানোর চিন্তা করেন। তিনি একটি ফ্যাশন হাউজ গড়ে তোলেন; যা পুরাতন ঐতিহ্যের সাথে নতুন ডিজাইনের সমন্বয় ঘটিয়ে পোশাক তৈরির কাজে নিয়োজিত।
পরবর্তী পরিস্থিতিতে মি. সুমন দেশের ধ্যান-ধারণা ও চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি এক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা ও ঐতিহ্যের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। তিনি তার ফ্যাশন হাউজে দেশের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে নতুন ডিজাইনের রুচিসম্পন্ন পণ্য তৈরি করেন। যা সামাজিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে। তাই বলা যায়, মি. সুমনের পরবর্তী চিন্তায় ব্যবসায়ের সামাজিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন:১৮ মি. চৌধুরী উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। লেখাপড়া শেষ করে তিনি একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করলেন। শ্রমিকদের সহজ প্রাপ্যতা, স্বল্প মজুরি, সহজ অর্ডার প্রাপ্তি, শ্রমিকদের নিখুঁত কাজ সব মিলিয়ে অল্প দিনের মধ্যে তিনি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে আবির্ভূত হলেন। তিনি শ্রমিকদের জন্য গার্মেন্টস কারখানা, ডে-কেয়ার সেন্টার, সহজ নির্গমন পথ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু পার্শ্ববর্তী একটি কারখানা যেখানে পর্যাপ্ত পানি, নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই সেখানে হঠাৎ একদিন আগুন লেগে অনেক শ্রমিক মারা যায়। এতে তিনি ভীষণ মর্মাহত হন। [কুমিল্লা কমার্স কলেজ]
ক. ভৌগোলিক পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়িক মূল্যবোধ কোন পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত? বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. ব্যবসায়িক কোন অনুকূল পরিবেশের কারণে মি. চৌধুরী সফল ব্যবসায়ী? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যবসায়ের কোন পরিবেশের যথার্থ প্রয়োগ করলে পার্শ্ববর্তী গার্মেন্টসটিতে দুর্ঘটনা ঘটত না বলে তুমি মনে করো? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
১৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক প্রকৃতি প্রদত্ত উপাদানগুলোর সমন্বয়ে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয়, তাকে ভৌগোলিক পরিবেশ বলে। অ
সহায়ক তথ্য
কোনো দেশের জলবায়ু, নদ-নদী, ভূপ্রকৃতি, মৃত্তিকা, আয়তন, অবস্থান প্রভৃতি ভৌগোলিক পরিবেশের উপাদান।
খ ব্যবসায়িক মূল্যবোধ সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। অ
কোনো সমাজের মানুষের সংখ্যা, ধর্ম, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও আচরণ প্রভৃতি সামাজিক পরিবেশের উপাদান। আবার কোনো সমাজে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দীর্ঘদিনে গড়ে ওঠা দৃষ্টিভঙ্গি বা বিশ্বাস হলো ব্যবসায়িক মূল্যবোধ। কোনো সমাজে ব্যবসায় পরিচালনায় সঠিক ব্যবসায়িক মূল্যবোধ থাকা প্রয়োজন।
গ অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশের কারণে উদ্দীপকের মি. চৌধুরী সফল ব্যবসায়ী। অ
জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন ও জনসম্পদ প্রভৃতির সমন্বয়ে অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এ পরিবেশের জনসম্পদ উপাদানটি ব্যবসায়ে সফলতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ জাপান জনসম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের কারণে ব্যবসায়ে উন্নতি লাভ করেছে।
উদ্দীপকের মি. চৌধুরী উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। লেখাপড়া শেষ করে তিনি একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করলেন। শ্রমিকদের সহজ প্রাপ্যতা, স্বল্প মজুরি, সহজ অর্ডার প্রাপ্তি, শ্রমিকদের নিখুঁত কাজ সব মিলিয়ে অল্পদিনের মধ্যে তিনি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে আবির্ভূত হলেন। শ্রমিকদের সহজলভ্যতা এবং তাদের দক্ষতা অর্থনৈতিক পরিবেশের মানব সম্পদ উপাদানের অন্তর্ভুক্ত। আবার মি. চৌধুরী শ্রমিকদের জন্য গার্মেন্টস কারখানা, ডে কেয়ার সেন্টার, সহজ নির্গমন পথ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন, যা মি. চৌধুরীকে অনুকূল পরিবেশ পেতে এবং ব্যবসায়ে সফল হতে সাহায্য করেছে।
ঘ আইনগত পরিবেশের যথার্থ প্রয়োগ করলে উদ্দীপকের পার্শ্ববর্তী গার্মেন্টসটিতে দুর্ঘটনা ঘটত না বলে আমি মনে করি। ই
দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাস করা বিভিন্ন আইনের সমন্বয়ে একটা দেশে আইনগত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এসব আইনের যথাযথ প্রয়োগের কারণে ব্যবসায়ী তার ইচ্ছামতো ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারে না। এ আইনসমূহের যথাযথ প্রয়োগ করলে প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।
উদ্দীপকের মি. চৌধুরী শ্রমিকদের জন্য গার্মেন্টস কারখানা, ডে কেয়ার সেন্টার, সহজ নির্গমন পথ, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু পার্শ্ববর্তী একটি কারখানায় পর্যাপ্ত পানি নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। সেখানে হঠাৎ একদিন আগুন লেগে অনেক শ্রমিক মারা যায়। এতে তিনি ভীষণ মর্মাহত হন।
দেশের প্রচলিত শ্রম ও কারখানা আইন অনুযায়ী তার কর্মচারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তিনি যদি আইন অনুসারে পর্যাপ্ত পানি নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা করতেন তাহলে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটত না। সুতরাং, পার্শ্ববর্তী গার্মেন্টসটিতে আইনগত পরিবেশের যথার্থ প্রয়োগ করলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
প্রশ্ন:১৯ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সালামত উল্লাহ পর্যটন খাতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য পারকি সমুদ্র সৈকতকে বেছে নেন। কারণ সেখানে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সুবিধা সহ পাশাপাশি অনেক কল কারখানা গড়ে ওঠেছে। কিন্তু পর্যটকদের পারকি বীচে নিরাপত্তা জনিত সমস্যার কারণে তার ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের বিষয়টি তিনি পুনঃবিবেচনা করছেন। [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক. ব্যবসায় সামাজিক দায়বব্ধতা কী? ১
খ. একমালিকানা ব্যবসায়ের উপযুক্ত পাঁচটি ক্ষেত্র লেখো। ২
গ. সালামত উল্লাহকে কোন পরিবেশের উপাদান পর্যটন ব্যবসায় উদ্যোগ নিতে সাহায্য করছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. পারকি বীচে কী কী ধরনের নেতিবাচক দিক ব্যবসায় পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে তুমি মনে করো? ৪
১৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ক্রেতা, শ্রমিক, বিনিয়োগকারী, সরকার সাধারণ সম্প্রদায় প্রভৃতি পক্ষসমূহের প্রতি ব্যবসায়ীদের যে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাকে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বব্ধতা বলে।
খ একজন ব্যক্তি কর্তৃক গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে।
এ ব্যবসায়ের উপযুক্ত পাঁচটি ক্ষেত্র হলো (১) স্বল্প পুঁজি তথা চা পান-বিড়ির ব্যবসায়, (২) সীমিত চাহিদার পণ্য তথা হোটেল, রেস্টুরেন্ট, (৩) খুচরা পণ্য তথা মুদির দোকান, (৪) পচনশীল পণ্য তথা ফলমূল, শাকসবজি ব্যবসায়, (৫) সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তথা সেলুন, লন্ড্রি ইত্যাদির ব্যবসায়।
গ উদ্দীপকের সালামত উল্লাহকে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান পর্যটন ব্যবসায় উদ্যোগ নিতে সাহায্য করছে।
একটি দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর, আয়তন অবস্থান ইত্যাদির সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ভিন্ন ধরনের। এসব উপাদানের ভিন্নতার ফলে ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্ন হয়ে থাকে।
উদ্দীপকের সালামত উল্লাহ পর্যটন খাতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য পারকি সমুদ্রে সৈকতকে বেছে নেন। সমুদ্রে একটি দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ। সমুদ্রের সৌন্দর্য মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। সালামত উল্লাহ সমুদ্রে সৈকতকেন্দ্রিক বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান সালামত উল্লাহকে বিনিয়োগের উদ্যোগ নিতে সাহায্য করছে।
ঘ উদ্দীপকের পারকি বীচে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পরিবেশ দূষণ প্রভৃতি নেতিবাচক দিক ব্যবসায় পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। অ
সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য নিরাপদ স্থানে ব্যবসায় স্থাপন করতে হয়। ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সুরক্ষার জন্য নিরাপদ স্থান নির্বাচন করা জরুরি। ব্যবসায়ের সাফল্যের জন্য ব্যবসায়ীদের স্থান নির্বাচনে সচেতন হতে হয়।
উদ্দীপকের সালামত উল্লাহ পর্যটন খাতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য পারকি সমুদ্র সৈকত বেছে নেন। কারণ সেখানে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সুবিধা আছে। কিন্তু এ বীচে পর্যটকদের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে। অর্থাৎ সেখানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই প্রভৃতি ঘটতে পারে।
এছাড়া উক্ত স্থানে অনেক কলকারখানা গড়ে ওঠেছে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি সমুদ্রে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করবে। তাই এ সমস্যাসমূহ পারকি বীচের ব্যবসায় পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:২০ কক্সবাজারের বাসিন্দা আহসান একজন মৎস্য ব্যবসায়ী। তার কয়েকটি চিংড়ি ঘের ছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’-এর আঘাতে তার সবকটি চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। ফলে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব আহসান। এখন চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টেস-এ চাকরি করেন। তিনি মনে মনে স্বপ্ন দেখেন একদিন তিনি বাড়ি ফিরে আবার মৎস্য খামার গড়ে তুলবেন। [কক্সবাজার সরকারি কলেজ]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বিবেচনার কারণ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব আহসানের নিঃস্ব হওয়ার পেছনে ব্যবসায়ের কোন পরিবেশের উপাদান প্রভাব বিস্তার করেছে? মতামত দাও। ৩
ঘ. বাংলাদেশে আহসানের মতো অসংখ্য ব্যবসায়ী নিঃস্ব হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের যেসব সমস্যা পরিলক্ষিত হয় সেগুলোর উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে লেখো। ৪
২০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিরাজমান যেসব উপাদান বা শক্তি ব্যবসায় কার্যক্রম, পরিচালনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে তাকে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বলে।
এ পরিবেশের উপাদানের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক কর্মী, সুনাম, নিজস্ব সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এরূপ পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে এ পরিবেশ বিবেচনার প্রয়োজন পড়ে।
গ উদ্দীপকের জনাব আহসানের নিঃস্ব হওয়ার পেছনে ব্যবসায়ের প্রাকৃতিক উপাদান প্রভাব বিস্তার করেছে।
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, সাগর, নদ-নদী, আয়তন, অবস্থান ইত্যাদির সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এ পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবন-ধারা পরিচালিত হয়। ব্যবসায়ের সফলতা বা ব্যর্থতায় এ পরিবেশের ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
উদ্দীপকের জনাব আহসান একজন মৎস্য ব্যবসায়ী। তার কয়েকটি চিংড়ির ঘের ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে তার সবকটি চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। এ দুর্যোগ প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান, যা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে একটি অপ্রতিরোধ্য বাধা। তাই বলা যায় জনাব আহসানের নিঃস্ব হওয়ার পেছনে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান প্রভাব বিস্তার করেছে।
ঘ বাংলাদেশে আহসানের মতো অসংখ্য ব্যবসায়ী নিঃস্ব হওয়ার মতো সমস্যার উন্নয়নে অর্থনৈতিক পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন, জনসম্পদ ইত্যাদির সমন্বয়ে অর্থনৈতিক পরিবেশ গঠিত হয়। যে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যত উন্নত সে দেশ তত বেশি উন্নতি লাভ করতে পারে। ব্যবসায়ের ওপর এ পরিবেশ সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে।
উদ্দীপকের জনাব আহসানের কয়েকটি চিংড়ির ঘের ছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’-এর আঘাতে তার সবকটি ঘের তলিয়ে যায়। ফলে সবকিছু হারিয়ে সে এখন নিঃস্ব। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ দেশ হওয়ায় তার মতো অনেক মৎস্য ব্যবসায়ী ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগে নিঃস্ব হয়ে যায়।
জনাব আহসানসহ এমন নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সরকার ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকসহ ঋণদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজ শর্তে তাদের ঋণ প্রদান করতে হবে। যথাযথ মূলধন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলে ব্যবসায়ীরা পুনরায় তাদের কাজ শুরু করতে পারবে। আর এ মূলধন ও ঋণ অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান। তাই অর্থনৈতিক পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে জনাব আহসানের মতো নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে বলে আমি মনে করে।
প্রশ্ন:২১ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি বিক্রয় করে ইতোমধ্যে সিলেটের বাজারে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে ফেমাস সুইটস্ হোম এর স্বত্বাধিকারী শাহীন মিয়া। তিনি সরাসরি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মিষ্টি সংগ্রহ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিলেটের বিভিন্ন ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করেন। ফলে খাঁটি মানের মিষ্টি যেমন: কুমিল্লার রসমালাই, বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, চাঁপাই নবাবগঞ্জের রসকদম, টাঙ্গাইলের চমচম প্রভৃতি বাজারে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে শাহীনের প্রতিষ্ঠানের পরিধি। তাই পণ্যের নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করতে তিনি ইতোমধ্যে আঞ্চলিক প্রতিনিধি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। [সিলেট সরকারি কলেজ]
ক. পণ্য বিনিময় কী? ১
খ. একমালিকানা ব্যবসায়ের জনপ্রিয়তার কারণ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. ব্যবসায় পরিবেশের কোন উপাদান দ্বারা ‘ফেমাস সুইটস হোম’ প্রভাবিত হচ্ছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. শাহীন নিজে পণ্য উৎপাদন না করে সংগৃহীত পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত কতোটা যৌক্তিক বলে তুমি মনে করো? যুক্তিসহ তোমার মতামত দাও। ৪
২১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের কাজকে পণ্য বিনিময় (ঞৎধফব) বলে।
খ একক মালিকানায় গঠিত পরিচালিক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়ই হলো একমালিকানা ব্যবসায়।
এ ব্যবসায় গঠনে কোনো আইনগত ঝামেলা নেই। স্বল্প পুঁজিতে এরূপ ব্যবসায় গঠন করা যায়। মালিক একাই ব্যবসায়ের মুনাফা ভোগ করে। এছাড়াও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ঝুঁকির স্বল্পতা, গোপনীয়তা রক্ষা, স্বাধীনতা প্রভৃতি কারণে এ ব্যবসায় জনপ্রিয়।
গ ব্যবসায়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশের ‘ঐতিহ্য’ উপাদানটি দ্বারা ‘ফেমাস সুইটস হোম’ প্রভাবিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞতা বা কারিগরি দক্ষতার কারণে কোনো কোনো অঞ্চলের লোকজন বিশেষ ধরনের পেশাকে জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবে গ্রহণ করে। তারা বংশ পরম্পরায় সেই পেশাকেই আঁকড়ে ধরে থাকে। টাঙ্গাইলের চমচম ও তাঁতের শাড়ি, মিরপুরের বেনারসি, বগুড়ার দই, সাতক্ষীরার সন্দেশ ইত্যাদির ব্যবসায় পুরনো ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও প্রসিদ্ধ।
উদ্দীপকের ‘ফেমাস সুইটস হোম’ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি বিক্রি করে। প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহীন মিয়া সরাসরি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মিষ্টি সংগ্রহ করে সিলেটের বিভিন্ন ক্রেতার কাছে সরবরাহ করে। এর ফলে তার ব্যবসায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এছাড়া ব্যবসায়ের পরিধিও বেড়েছে। তার এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিক্রয়। তাই বলা যায়, তার প্রতিষ্ঠানটি সাংস্কৃতিক পরিবেশের ‘ঐতিহ্য’ উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।
ঘ শাহীন মিয়া নিজের পণ্য উৎপাদন না করে সংগৃহীত পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।
বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এরূপ পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রয়ের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ মুনাফা অর্জন করা যায়। এতে পণ্য উৎপাদনের মতো ঝামেলায় পড়তে হয় না।
উদ্দীপকের শাহীন মিয়া ঐতিহ্যগত পণ্য নিজে উৎপাদন না করে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। কেননা ঐতিহ্যবাহী পণ্য একটি নির্দিষ্ট এলাকায় উৎপন্ন হয়। নিজে পণ্য উৎপাদন করলে তা হয়তো ভালো মানের হবে কিন্তু ঐতিহ্যবাহী হবে না।
ঐতিহ্যবাহী পণ্যের ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে পণ্য নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সংগ্রহ করতে হয়। উদ্দীপকের শাহীন মিয়াও এরূপ পণ্যের ব্যবসায় করেন। এজন্য তাকে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এরূপ পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি বেড়ে যায়। তাই পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:২২ জনাব রাজীব ভারতে তার বন্ধু কুন্ডু পালের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখতে পেলেন ভারতের নারীদের কাছে ঢাকাই জামদানি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা। জনাব রাজীব চিন্তা করলেন জামদানি শাড়ির ব্যবসায় করলে ব্যবসায়ের সাথে সাথে বাঙালি ঐতিহ্যও বিশ্বে পরিচিত করা যাবে। পরবর্তীতে পুঁজির অভাব থাকলেও পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় ব্যবসায়ের কার্যক্রম সম্প্রসাতি করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তিনি জানেন অর্থের প্রয়োজন হলে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাকে সহায়তা করবে। [ মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ঢাকা]
ক. প্রযুক্তিগত পরিবেশ কী? ১
খ. একমালিকানা ব্যবসায়ে মালিকের অসীম দায় বলতে কী বোঝায়? ২
গ. জনাব রাজিবের ব্যবসায় শুরুর চিন্তায় কোন পরিবেশ প্রভাব ফেলেছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. জনাব রাজীবের পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় ব্যবসায় সম্প্রসারণে উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো কী ধরনের ভূমিকা রাখবে? ব্যাখ্যা করো। ৪
২২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক একটি দেশের অভ্যন্তরে প্রযুক্তিগত উপাদানসমূহের প্রভাবে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলে।
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান।
খ মালিকের অসীম দায় বলতে ব্যবসায়ে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বাইরেও দায় সৃষ্টি হওয়াকে বোঝায়।
একমালিকানা ব্যবসায়ে মালিক একাই ব্যবসায় পরিচালনা করেন। তাই মুনাফা নিজেই ভোগ করেন। আবার মালিককেই সম্পূর্ণ দায় বহন করতে হয়। এক্ষেত্রে মালিকের দায় দায়িত্বের সীমা নির্দিষ্ট থাকে না। ব্যবসায়ে বিনিয়োগকৃত মূলধনের বাইরেও দায় সৃষ্টি হতে পারে। দেনার জন্য মালিকের ব্যক্তিগত সম্পত্তিও এক্ষেত্রে দায়বদ্ধ থাকে। এটিই একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিকের অসীম দায়।
গ জনাব রাজীবের ব্যবসায় শুরুর চিন্তায় সামাজিক পরিবেশ প্রভাব ফেলেছে।
কোনো সমাজের জনসংখ্যা, তাদের ধর্ম, বিশ্বাস, শিক্ষা-সংস্কৃতি, রীতি-নীতি ও দেশি ঐতিহ্য প্রভৃতি সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। কোনো নতুন ব্যবসায় শুরু করার আগে এই উপাদানগুলো বিবেচনা করতে হয়।
উদ্দীপকের জনাব রাজীব ভারতে তার বন্ধু কুন্ডু পালের বাড়িতে বেড়াতে যান। ভারতের নারীদের কাছে ঢাকাই জামদানি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা আছে। তাই তিনি জামদানি শাড়ির ব্যবসায় করার চিন্তা করলেন। জামদানি শাড়ি বাঙালির অতীত ঐতিহ্যকে প্রকাশ করে। এই শাড়ি বাংলাদেশের মানুষের শিল্পীয় গুণেরও প্রকাশ ঘটায়। জনাব রাজীব দেশি ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করানোর জন্য এ ব্যবসায় শুরুর চিন্তা করেন। এটি দেশের ঐতিহ্য, যা সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায়, জনাব রাজীবের ব্যবসায় শুরুর চিন্তায় সামাজিক পরিবেশ প্রভাব ফেলেছে।
ঘ জনাব রাজীবের পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় ব্যবসায় সম্প্রসারণে উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান হিসেবে মূলধন প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখবে।
ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা ও সম্প্রসারণে পুঁজি বা মূলধন প্রয়োজন। মূলধন বা অর্থ হলো ব্যবসায়ের প্রাণ। দেশের বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়ের মূলধন গঠনে আর্থিক সহায়তা করে।
জনাব রাজীব ভারতে বেড়াতে গিয়ে ঢাকাই জামদানি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা দেখতে পেলেন। তাই তিনি জামদানি শাড়ির ব্যবসায় শুরুর চিন্তা করলেন। পরবর্তীতে পুঁজির অভাব থাকলেও পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় ব্যবসায় কার্যক্রম সম্প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তিনি জানেন প্রয়োজনে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাকে আর্থিক সহায়তা করবে।
জনাব রাজীবের ব্যবসায়টি সম্প্রসারিত করতে অবশ্যই পুঁজির দরকার হবে। তিনি বিভিন্ন ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারেন। এটি তার ব্যবসায়ের পুঁজির অভাব দূর করবে। অর্থাৎ, তিনি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বা মূলধন এ উৎস থেকেই নিতে পারেন। তাই বলা যায়, জনাব রাজীবের পাকিস্তান ও শ্রীংকায় ব্যবসায় সম্প্রসারণে উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো এভাবে মূলধন প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখবে।
প্রশ্ন:২৩ সম্প্রতি দেশে বিভিন্ন জেলায় আগাম বন্যা ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে দেশে খাদ্যমূল্য বিশেষ করে চালের মূল্য ব্যাপক বেড়েছে। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করে এ সংকট সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করে সরকারের অদূরদর্শিতার কারণে সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। [এম ই এইচ আরিফ কলেজ, গাজীপুর]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. মানব সম্পদ কোন পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. ফসল উৎপাদনে কোন পরিবেশ প্রভাব ফেলেছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ই ঘ. সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সমস্যা সমাধানে কেমন অবদান রাখবে? মতামত দাও। ৪
২৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যবসায়ের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাববিস্তারকারী উপাদানের (প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক প্রভৃতি) সমষ্টিকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ মানব সম্পদ অর্থনৈতিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, জনসম্পদ বা মানব সম্পদ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে অর্থনৈতিক পরিবেশ। এ পরিবেশের একটি উপাদান হলো মানবসম্পদ। কোনো দেশের মানব সম্পদ উন্নত হলে সেখানে ব্যবসায়িক অগ্রগতি সাবলীল ধারায় চলতে থাকে। তাই এটি অর্থনৈতিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত অবস্থায় ফসল উৎপাদনে প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রভাব ফেলেছে।
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, নদ-নদী ইত্যাদি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট উপাদানের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সম্প্রতি দেশে বিভিন্ন জেলায় আগাম বন্যা ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, ফসলের ক্ষতির কারণ হলো বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এগুলো হলো আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান। এগুলো প্রকৃতিপ্রদত্ত। মানুষ এগুলো সৃষ্টি করতে পারে না, পরিবর্তনও করতে পারে না। এসব বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশ উদ্দীপকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
ঘ উদ্দীপকে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
সম্প্রতি দেশে আগাম বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে দেশে খাদ্যমূল্য বিশেষ করে চালের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছে।
এভাবে বিদেশ থেকে চাল আমদানির ফলে দেশের চালের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। এতে চালের মূল্য কিছুটা কমে আসবে। চালের সরবরাহ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে এলে বাজারে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করবে। এর ফলে সংকট কাটিয়ে ওঠা কিছুটা হলেও সম্ভব হবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবে দেশে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ থেকে বাঁচার কোনো উপায়ই মানুষের ছিল না। তবে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছে। এতে ফসলের ক্ষতিজনিত চালের ঘাটতি নিরসন সম্ভব হবে।
প্রশ্ন:২৪ হারুন পড়ালেখা শেষ করে ভালো চাকরি পাচ্ছে না। সে খুবই চিন্তিত। হারুনের কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো দক্ষতা ছিল। তাই সে নিজ উদ্যোগে প্রথমে একটি কম্পিউটার কিনে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার তৈরি করে। ঐ এলাকায় কোনো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার না থাকায় হারুনের প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতা পেতে থাকে। এখন তার প্রতিষ্ঠানে ২০ টি কম্পিউটার রয়েছে। এলাকার অনেক বেকার যুবককে হারুন তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে লাগাতার হরতালের কারণে হারুন প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো চালাতে পারছে না।
[পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ]
ক. ব্যবসায়িক পরিবেশ কী? ১
খ. প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. হারুনের ভাগ্য পরিবর্তনে কোন পরিবেশের প্রভাব দেখা যায়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. কোন ব্যবসায় পরিবেশগত বাধার কারণে হারুনের প্রতিষ্ঠানটি বাধা পাচ্ছে? এর থেকে সমাধানের উপায় কী? ৪
২৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান দ্বারা ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ বিজ্ঞান, প্রযুক্তিগত কলাকৌশল, গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষার সমন্বিত রূপই হলো প্রযুক্তিগত পরিবেশ।
প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান হলো বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ ইত্যাদি। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সহজ করে। ফলে শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়ন ঘটে।
গ হারুনের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত পরিবেশের প্রভাব দেখা যায়।
প্রযুক্তিগত পরিবেশ হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উপাদানের সমন্বিত রূপ। বর্তমানে এ পরিবেশ ব্যবসায়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এতে ভোক্তারা নতুন নতুন পণ্য পেয়ে থাকে।
উদ্দীপকের হারুন পড়ালেখা শেষ করে ভালো চাকরি পায় না। কম্পিউটার সম্পর্কে তার ভালো দক্ষতা ছিল। তাই সে একটি কম্পিউটার কিনে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার তৈরি করে। ঐ এলাকায় কোনো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার না থাকায় তার প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতা পেতে থাকে। কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকায় এটি সম্ভব হয়। আর কম্পিউটার আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম উপাদান। তাই বলা যায়, হারুনের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত পরিবেশের প্রভাব রয়েছে।
ঘ রাজনৈতিক পরিবেশগত বাধার কারণে হারুণের প্রতিষ্ঠানটি বাধা পাচ্ছে। এটি সমাধানের জন্য সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। অ
রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের রাজনীতির চর্চার ধরন ও চিন্তাধারার সাথে জড়িত। এর উপাদান হলো সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃঙ্খলা ইত্যাদি। এ পরিবেশ স্থিতিশীল হলে দেশের ব্যবাসায় সম্প্রসারণ ঘটে।
উদ্দীপকের হারুনের কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো দক্ষতা রয়েছে। তাই সে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার তৈরি করে। এলাকায় অন্য কোনো সমজাতীয় প্রতিষ্ঠান না থাকায় তার প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতা পেতে থাকে। এখন তার প্রতিষ্ঠানে ২০ টি কম্পিউটার রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে লাগাতার হরতালের কারণে সে প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো চালাতে পারছে না। হরতাল, ধর্মঘট ইত্যাদি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। এর ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
উদ্দীপকের হারুনের ব্যবসায়টি লাগাতার হরতালের কারণে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এটি সমাধানের জন্য সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। হরতালের মতো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড পরিহার করার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে হারুনের ব্যবসায় চালানোর সমস্যা সমাধান হবে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:২৫ জনাব তৌসিফ বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে ব্যবসায়ের সুযোগ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সুগন্ধি সাবান উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশ মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় তিনি সাবান তৈরিতে শুকরের চর্বি ব্যবহার না করে ভেজিটেবল চর্বি ব্যবহার করেন। তিনি সাবানটিকে হালাল বলে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করেন। জনাব তৌসিফ জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করে সাবানের মূল্য তুলনামূলক কম নির্ধারণ করেন। ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে এবং হালাল হওয়ায় জনগণ উক্ত সুগন্ধি সাবান স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করে। জনাব তৌসিফ ব্যবসায়ে উত্তরোত্তর উন্নতি করলেন। [কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজ, নাটোর]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব তৌসিফ পণ্য উৎপাদনে ব্যবসায় পরিবেশের কোন দিকটি গুরুত্ব দিয়েছেন? বর্ণনা করো। ৩
ঘ. সাবানের মূল্য তুলনামূলক কম নির্ধারণ করার যুক্তিকতা তুলে ধরো। ৪
২৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান দ্বারা ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।
খ সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃঙ্খলা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ইত্যাদির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা পরিবেশকে রাজনৈতিক পরিবেশ বলে।
উন্নত দেশের ব্যাপক সাফল্যের পিছনে রাজনৈতিক পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজমান থাকলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল থাকে, যা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।
গ জনাব তৌসিফ পণ্য উৎপাদনে সামাজিক পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
একটি দেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের সমন্বয়ে সামাজিক পরিবেশ গঠিত হয়। এর উপাদানসমূহ হলো জনসংখ্যা, ধর্ম-বিশ্বাস, চিন্তাধারা, শিক্ষা-সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও দেশীয় ঐতিহ্য ইত্যাদি। এ পরিবেশ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকের জনাব তৌসিফ বাংলাদেশে সুগন্ধি সাবান উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় সাবান তৈরিতে তিনি শুকরের চর্বি ব্যবহার করেন না। এক্ষেত্রে তিনি ভেজিটেবল চর্বি ব্যবহার করেন। তিনি সাবানটিকে হালাল বলে বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেন। তার এমন কাজের পিছনে দেশের ধর্মীয় অবস্থার প্রভাব রয়েছে। ধর্ম সামাজিক পরিবেশের অন্যতম উপাদান। তাই বলা যায়, জনাব তৌসিফ পণ্য উৎপাদনে সামাজিক পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
ঘ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় সাবানের মূল্য তুলনামূলক কম নির্ধারণ করা যৌক্তিক।
উৎপাদন ব্যয়ের সাথে মুনাফা যোগ করে পণ্যের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পণ্যের মূল্য ক্রেতাদের সামর্থ্যরে মধ্যে থাকলে অধিক পরিমাণ বিক্রয় করা সম্ভব হয়। এটি ব্যবসায়ের মুনাফা বাড়াতে সহায়তা করে।
উদ্দীপকের জনাব তৌসিফ সুগন্ধি সাবান উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করে সাবানের মূল্য তুলনামূলক কম নির্ধারণ করেন। পণ্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় জনগণ উক্ত সুগন্ধি সাবান স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করে। এতে তার ব্যবসায়ে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা মুনাফা বৃদ্ধি করে। ফলে তিনি ব্যবাসয়ে দ্রুত উন্নতি করেছেন।
জনাব তৌসিফের ব্যবসায়ের উন্নয়নের পিছনে পণ্যের মূল্য কম নির্ধারণের প্রভাব রয়েছে। এতে তার একক প্রতি বিক্রয়ে মুনাফা কম হচ্ছে কিন্তু অধিক পরিমাণ বিক্রির ফলে মোট মুনাফা বেড়েছে। তাই সাবানের মূল্য তুলনামূলক কম নির্ধারণ করা অধিক যুক্তিযুক্ত বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:২৬ সোহান এমবিএ শেষ করে রংপুর শহরের পাশে তার গ্রামের প্রায় তিন একর জমিতে কাজি পেয়ারা চাষ শুরু করেন। পেয়ারা সম্পর্কে পূর্ব ধারণা ও কোনো শিক্ষা না থাকায় শুরুতে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ও ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় ব্যাপকভাবে সফল হন। তিনি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে পেয়ারা রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। [পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর]
ক. ভূ-প্রকৃতি কী? ১
খ. ধর্মীয় পরিবেশ বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকে সোহানের ব্যবসায়ে ব্যর্থতার জন্য কোন পরিবেশের প্রভাব সর্বাধিক? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মধ্যপাচ্যে পেয়ারা রপ্তানিতে কোন উপাদান সহায়তা করতে পারে উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
২৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক কোনা এলাকার মাটি বা ভূমির গুণাগুণ, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সমন্বয়কে ভূ-প্রকৃতি বলা হয়। অ
খ ধর্মীয় বিশ্বাস, চর্চা, অনুভূতি, দ্বন্দ্ব, অনুশাসন ও আচার-আচরণের মাধ্যমে যে পারিপার্শ্বিকতার সৃষ্টি হয় তাকে ধর্মীয় পরিবেশ বলে। অ
সব সমাজেই মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেখানকার ব্যবসায়িক আচার-আচরণের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যে দেশে কোনো নির্দিষ্ট এক ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা বেশি সেখানে এক ধরনের ব্যবসায়ের প্রসার ঘটে। আবার যে দেশে বহু ধর্মের অনুসারী বসবাস করে সেখানে বিভিন্ন ধারার ব্যবসায়ের প্রচলন লক্ষ করা যায়।
গ উদ্দীপকে সোহানের ব্যবসায় ব্যর্থতার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রভাব সর্বাধিক। অ
কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, জনসম্পদ, দক্ষ উদ্যোক্তা ইত্যাদির সমন্বয়ে অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়।
উদ্দীপকের সোহান এমবিএ শেষ করে রংপুর শহরের পাশে তার গ্রামের প্রায় তিন একর জমিতে কাজি পেয়ার চাষ শুরু করেন। পেয়ারা সম্পর্কে পূর্ব ধারণা ও কোনো শিক্ষা না থাকায় শুরুতে তিনি বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হন। এর মাধ্যমে তার মধ্যে দক্ষ উদ্যোক্তাসুলভ গুণের অভাব ফুটে ওঠে। আর এজন্যই তিনি সফলতা পাননি। এসব বৈশিষ্ট্য অর্থনৈতিক পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সোহান এর ব্যবসায়ে ব্যর্থতার জন্য অর্থনৈতিক পরিবেশের দক্ষ উদ্যোক্তা নামক উপাদানের প্রভাব সর্বাধিক।
ঘ মধ্যপ্রাচ্যে পেয়ারা রপ্তানিতে রাজনৈতিক পরিবেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়টি সহায়তা করতে পারে।
কোনো দেশের সরকার, সরকারি নীতিমালা, রাজনৈতিক অবস্থা প্রভৃতি নিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশ গঠিত হয়। ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ে।
উদ্দীপকের সোহান রংপুরে পেয়ারার চাষ শুরু করেন। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাবে শুরুতে তার বেশ ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ও ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সাফল্য অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে পেয়ারা রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন।
এর মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ে প্রবেশের চিন্তা করছেন। এক্ষেত্রে সহায়তাকারী মুখ্য বিষয় হলো আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে যদি বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো থাকে তবে সেখানে পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে। আর প্রতিকূল সম্পর্ক বহাল থাকলে সেক্ষেত্রে রপ্তানি করা সম্ভব হবে না। তাই সোহানের মধ্যপ্রাচ্যে পেয়ারা রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাজনৈতিক পরিবেশের একটি উপাদান। তাই তার রপ্তানির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিবেশের ভূমিকা মুখ্য।
প্রশ্ন:২৭ পহেলা বৈশাখ মানেই বৈশাখী মেলা, সাদা আর লালের ছড়াছড়ি, ইলিশ আর পান্তাভাতের আয়োজন, বাঁশি ও ঢোলের আওয়াজ যেন এক চিরন্তন প্রথা। এ উৎসবকে রাঙাতে ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন পণ্যের পসরা নিয়ে বাজারে আসেন। সাথে থাকে নতুন হালখাতা। বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় এ সময় কিছু কিছু পণ্যের বিক্রয় ও সেবার বিনিময় অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যায়। এ দিনকে উপলক্ষ্য করে প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে উৎসব ছুটি ও উৎসব বোনাস ঘোষণা করা হয়। এমনকি ধর্মীয় উৎসবগুলোর মতো এ সময়ও ব্যবসায়ীদের অনেক রাত পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা যায়। সব মিলিয়ে পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। [জালালাবাদ কলেজ, সিলেট]
ক. প্রমিতকরণ কী?
খ. ‘শিল্প উপযোগ সৃষ্টি করে’ ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে পহেলা বৈশাখে পণ্যের বিক্রয় বাড়াতে কোন পরিবেশের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে বলে তুমি মনে করো? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. পহেলা বৈশাখকে ঘিরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
২৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক পণ্যের আকার, ওজন ও রং বিবেচনায় পণ্যের মান নির্ধারণ করাকে প্রমিতকরণ (ঝঃধহফধৎফরুরহম) বলে।
খ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহ করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য তৈরি করা হয়, তাকে শিল্প বলে।
এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তর করা হয়। ফলে এগুলোর ব্যবহার উপযোগিতা সৃষ্টি হয়। (যেমন: কাঠ থেকে আসবাবপত্র তৈরি করা)। তাই বলা হয়, শিল্প উপযোগ সৃষ্টি করে।
গ উদ্দীপকে পহেলা বৈশাখে পণ্যের বিক্রয় বাড়াতে সামাজিক পরিবেশের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে। অ
কোনো জাতির মানুষের সংখ্যা, তাদের বিশ্বাস, চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, রীতি-নীতি ও দেশীয় ঐতিহ্য মিলে যে পারিপার্শিকতা গড়ে ওঠে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে। এ পরিবেশ ব্যবসায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।
পহেলা বৈশাখ মানেই বৈশাখী মেলা। ইলিশ আর পান্তাভাতের আয়োজন। বাঁশি ও ঢোলের আওয়াজ যেন এক চিরায়ত প্রথা। ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন। এ উৎসবকে রাঙ্গাতে উৎসব মুখর পরিবেশে ছোট-বড় সব মানুষ এসব পণ্য ক্রয় করে। ফলে বিক্রয় বাড়ে। এখানে পহেলা বৈশাখ হলো বাঙ্গালির ঐতিহ্য। আর বৈশাখি মেলা হলো সংস্কৃতি। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উভয়ই হচ্ছে সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে পহেলা বৈশাখে পণ্যের বিক্রয় বাড়াতে সামাজিক পরিবেশের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে।
ঘ পহেলা বৈশাখকে ঘিরে দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে।
উৎসবপ্রেমী বাঙ্গালি দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পালন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। দেশের ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে অধিক লাভবান হয়। পহেলা বৈশাখ হলো বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব। এ উৎসবকে আকর্ষর্ণীয় করে তোলার জন্য ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের পণ্য নিয়ে বাজারে আসেন। খোলা হয় নতুন হালখাতা। বছরের এ সময় ব্যবসায়ীরা অনেক রাত পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখে। ফলে অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় কিছু কিছু পণ্যের বিক্রয় বেড়ে যায়।
বৈশাখকে ঘিরে দেশের সব মানুষ উৎসবমুখর থাকে। এ সময় ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসে। উৎসবপ্রেমী মানুষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাজসজ্জার জন্য এ সময় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ পণ্য ক্রয় করে। ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় অনেক বেড়ে যায়। সুতরাং বলা যায়, পহেলা বৈশাখকে ঘিরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে।