SSC-২০২৩ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়- পুর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উথান সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
প্রথম অধ্যায়
পূর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উত্থান (১৯৪৭- ১৯৭০)
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংড়্গেেপ জেনে রাখি
ভাষা আন্দোলন : ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক স্বাধিকার আন্দোলন। পরবর্তীকালে এই আন্দোলন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্ম দেয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশের প্রথম পদক্ষপে ছিল এই আন্দোলন।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব : ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনের পরের বছর থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি বাঙালির শহিদ দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হয়ে আসছে। ২১-এর প্রভাতফেরি ও প্রভাতফেরির গান বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল। বিশ্বের ইতিহাসে অনন্যসাধারণ ঘটনা হিসেবে আমাদের ভাষা ও শহিদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের সংবিধান : সংবিধান একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালিত হয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে দ্রুত সংবিধান রচনার দাবি ওঠে। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর অনিচ্ছায় নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আইন দ্বারা পরিচালিত হতে থাকে। বহু ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সংবিধান প্রণীত হলেও তা মাত্র দুই বছর স্থায়ী ছিল। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে পাকিস্তানে সাংবিধানিক শাসনের অবসান ঘটে।
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের সামরিক শাসন ও আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র : ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা মালিক ফিরোজ খানের সংসদীয় সরকার উৎখাত করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন। এর কিছু দিনের মধ্যে ২৭ অক্টোবর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মির্জাকে অপসারণ করে ক্ষমতা কুক্ষগিত করে এবং শাসন ও রাজনৈতিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেন। তিনি এক অদ্ভুত ও নতুন নির্বাচন কাঠামো প্রবর্তন করেন। তার এই নির্বাচনের মূলভিত্তি ছিল ‘মৌলিক গণতন্ত্র’। মৌলিক গণতন্ত্র হচ্ছে এক ধরনের সীমিত গণতন্ত্র। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশ জারি করা হয়।
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য : ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের লাহোর প্রস্তাব অনুসারে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু লাহোর প্রস্তাবের মূলনীতি অনুযায়ী পূর্ব বাংলা পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়নি। দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্ব বাংলাকে স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়েছে। এ সময় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেপূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক নীতি অনুসরণ করে। এরই প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলায় স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
৬ দফা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ : পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল, ৬ দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করা। মূলত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি সরকারের চরম অবহেলা, পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রেপূর্ব পাকিস্তানের প্রতি সীমাহীন বৈষম্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার হন। ৬ দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চূড়ান্ত প্রকাশ। এটি ছিল বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বা মুক্তির সনদ।
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা : আগরতলা মামলাটি দায়ের করা হয় ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষরে অভিযোগ ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলাতে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের গোপন বৈঠক হয়। সেখানে ভারতের সহায়তায় সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য মামলাটির নাম হয় ‘আগরতলা মামলা’। সরকারি নথিতে মামলার নাম হলো ‘রাষ্ট্র’ বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য।
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণ-অভ্যুত্থানের তাৎপর্য : ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির পর ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন নতুন রূপ লাভ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারির সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু ১১ দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ৬ দফা ও ১১ দফা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ প্রতিশ্রুতি দেন।
ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গ্রাম ও শহরের কৃষক ও শ্রমিকদের মাঝে শ্রেণি চেতনার উন্মেষ ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ পরিপূর্ণতা লাভ করে, যাতে বলীয়ান হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে।
’৭০ এর নির্বাচনের গুরুত্ব : বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে বাঙালি জাতি ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রেযে স্বাতন্ত্র্য দাবি করে আসছিল, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে বাঙালির সে স্বাতন্ত্র্যবাদের বিজয় ঘটে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ভাষা আন্দোলন পূর্ববাংলায় কোন ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দেয়?
> বাঙালি জাতীয়তাবাদ খ অসাম্প্রদায়িক মনোভাব
গ দ্বিজাতিতত্ত্ব ঘ স্ব-জাত্যবোধ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২ ও ৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
রিফাত প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারিতে ঘরে বসে টিভির পর্দায় কার্টুন ছবি দেখে। কিন্তু সে এ বছর ২১ ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে স্কুলে আসে এবং প্রতিজ্ঞা করে যে, সে প্রতিবছর শহিদ মিনারে ফুল দেবে এবং ইংরেজি অক্ষরে আর বাংলা লিখবে না।
২. প্রতিবছর শহিদ মিনারে ফুলদানের প্রতিজ্ঞা, রিফাতের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে-
র. ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা
রর. বাহবা পাবার প্রত্যাশা
ররর. শহিদদের স্মৃতি হৃদয়ে লালন করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩. রিফাতের এই মানসিক পরিবর্তনের মূলে যে মূল্যবোধ প্রতিফলিত হয়েছে, তা হলো-
ক বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা খ অনুকরণ করার মানসিকতা
> নিজ ভাষার প্রতি মমত্ববোধ ঘ ইংরেজি ভাষা লেখার প্রতি অনিহা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্য
সারণি-ক
তুলনার বিষয় | পশ্চিম পাকিস্তান | পূর্ব পাকিস্তান |
সেনা কর্মকর্তা | ৯৫% | ৫% |
সাধারণ সৈনিক | ৯৬% | ৪% |
নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা | ৮১% | ১৯% |
নৌবাহিনীর অন্যান্য পদ | ৯১% | ৯% |
সারণি-খ
সাল | পশ্চিম পাকিস্তান পায় | পূর্ব পাকিস্তান পায় |
১৯৫৫-১৯৬০ সাল পর্যন্ত | ৫০০ কোটি টাকা | ১১৩ কোটি টাকা |
১৯৬০-১৯৬৫ সাল পর্যন্ত | ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা | ৬৪৮০ মিলিয়ন টাকা |
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পাকিস্তানি শাসন আমলে বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলনের নাম কী ছিল?
খ. ছয় দফা আন্দোলনকে কেন বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়?
গ. প্রদত্ত সারণি-ক থেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর যে বৈষম্য ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সারণি-খ এর প্রদর্শিত বৈষম্যের প্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়ন কর।
ক . পাকিস্তানি শাসন আমলে বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলনের নাম ছিল ভাষা আন্দোলন।
খ. ৬ দফা পূর্ববাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে। এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। তাই ৬ দফা আন্দোলনকে পূর্ববাংলা বা বাঙালির মুক্তির সনদ বলা হয়।
গ . প্রদত্ত সারণি ‘ক’-এ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর যে বৈষম্য ফুটে উঠেছে তা হলো প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙালিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করছিল। মোট অফিসারদের মাত্র ৫% সেনা কর্মকর্তা ছিল বাঙালি; যেখানে ৯৫% ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি। আবার, সাধারণ সৈনিকের ক্ষেত্রে ৯৬% ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি আর পূর্ব পাকিস্তানিরা ছিল মাত্র ৪%। নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৮১% ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি, অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানি অর্থাৎ বাঙালিরা ছিল মাত্র ১৯%। আবার নৌবাহিনীর অন্যান্য পদে মাত্র ৯% ছিল পূর্ব পাকিস্তানি যেখানে পশ্চিম পাকিস্তানিরা ছিল ৯১%। এ বিষয়গুলোই প্রদত্ত সারণি ‘ক’-এ উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘ. সারণি ‘খ’-এ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তান অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। যেমন : ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। ফলে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে কয়েক গুণ পিছিয়ে পড়ে।
সুতরাং দেখা যায়, পূর্ব পাকিস্তান ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছিল।
প্রশ্ন- ২ ছয়দফা কর্মসূচি ও অর্থনৈতিক বৈষম্য
ক. কতো সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়?
খ. বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝায়?
গ. ছয় দফার কোন দাবি চিত্র ‘ক’-এ প্রদর্শিত তথ্যের আলোকে উত্থাপিত হয়েছিল তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “চিত্র ‘খ’-এ প্রদর্শিত বৈষম্যের কারণেই ছয় দফা দাবি তোলা হয়েছিল”- তুমি কি এ বক্তব্যের সাথে একমত? তোমার উত্তরের স্বপড়্গে যুক্তি দাও।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।
খ. বাংলা ভাষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিগত পরিচয়ে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়। এই জাতীয় ঐক্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদ। জাতি গঠনের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে ভাষা অন্যতম। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্বাপর ঘটনার মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে যে জাতীয় চেতনার জন্ম হয়, তা-ই মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ মূলত বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক।
গ . ৬ দফার যে দাবি চিত্র ‘ক’ -এ প্রদর্শিত তথ্যের আলোকে উত্থাপিত হয়েছিল তা হলো অঙ্গরাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধাসামরিক বাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া। ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। উদ্দীপকে যদিও দেখা যাচ্ছে পররাষ্ট্র বিষয়ক ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনে বাঙালিদের সুযোগ দেওয়া হতো না কিন্তু একই দেশের কাঠামোতে কেন্দ্রীয় এ দুটি বিষয় পৃথক করা যায় না। তাই বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দাবির প্রথম দফায় দাবি করেন- কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্য সব বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে। আর এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ৬ দফা দাবির শেষ দাবিটি ছিল অঙ্গ রাজ্যগুলোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা। অঙ্গ রাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধাসামরিক বাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙালিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য করা হয়েছিল। মোট অফিসারের মাত্র ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, নৌবাহিনীর উচ্চ পদে ১৯%, নিম্নপদে ৯%, বিমান বাহিনীর পাইলটদের ১১% এবং টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙালি। উদ্দীপকেও দেখা যায়, চিত্র-ক-এ স্থল বাহিনীর ৫%, পাইলটদের ১১% এবং বিমান বাহিনীর ৪% ছিলেন বাঙালি। এছাড়া ১৯৬৫ সালে সংঘটিত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণ অরক্ষিত ছিল। এই বৈষম্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছয়দফা দাবির একটি দাবিতে উল্লেখ করা হয়, আঞ্চলিক সংহতি রক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থায় যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য অঙ্গরাষ্ট্রগুলোকে তাদের নিজস্ব কর্তৃত্বাধীনে আধাসামরিক বাহিনী বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
ঘ . চিত্র ‘খ’-এ প্রদর্শিত তথ্যগুলো পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য তুলে ধরেছে। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবির অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য। পাকিস্তানি শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তানকে অতি ধূর্ততার সাথে শোষণ করা হয়। শাসন সংক্রান্ত, সামরিক সংক্রান্ত, উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে অবজ্ঞা করা হয়। পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি ছিল সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ধাঁচের। পূর্ব পাকিস্তানের সমাজকাঠামো ছিল মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিভিত্তিক, অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের সমাজকাঠামো ছিল ভূস্বামী, পুঁজিপতি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিভিত্তিক। একই পাকিস্তানের এ দুধরনের সমাজকাঠামোর বিপরীতমুখী গতিধারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করে। আইয়ুব শাসনামলে এ বৈষম্য ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হয়। যেমন, ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। ফলে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান হতে কয়েক গুণ পিছিয়ে পড়ে। সুতরাং একথা বলা অমূলক হবে না যে, চিত্রে প্রদর্শিত বৈষম্যের কারণেই ৬ দফা দাবি তোলা হয়েছিল।
সংক্ষপ্তি প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ কীভাবে পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়?
উত্তর : ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়। জন্ম নেয় ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র। পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। পূর্ববাংলার নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কী?
উত্তর : বাঙালি জাতি তার মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য জীবন দিয়ে সংগ্রাম করেছে। এ আন্দোলনে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন রফিক, জব্বার, বরকত, সালাম প্রমুখ। সে জন্য ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে দেশব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর এ দিনে শহিদ মিনারে গিয়ে আমরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ঐতিহাসিক ৬-দফাকে পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ বলার কারণসমূহ চিহ্নিত কর।
উত্তর : ৬ দফা দাবি পেশ করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান। ৬ দফা পূর্ববাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সব অধিকারের কথা তুলে ধরে। এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। এসব কারণে ৬ দফাকে পূর্ববাংলা বা বাঙালির জাতীয় মুক্তির সনদ বলা হয়।
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ কোন প্রেক্ষাপটে ছয় দফার মধ্যে আধাসামরিক বাহিনী গঠনের দাবি তোলা হয়?
উত্তর : ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলসমূহের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। পূর্ববাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। ৬ দফা কর্মসূচির অন্যতম দাবি ছিল অঙ্গরাজ্যগুলোর আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধাসামরিক বাহিনী বা মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দেওয়া। মূলত আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে ছয় দফার মধ্যে আধাসামরিক বাহিনী গঠনের দাবি তোলা হয়।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ ‘পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক বৈষম্যই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ছয় দফা দাবির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য করেছিল’- তোমার বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দাও।
উত্তর : পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতে অগ্রসর ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণ প্রতিষ্ঠার ফলে পূর্ব পাকিস্তান দ্রুত পিছিয়ে যেতে থাকে। বৃদ্ধি পেতে থাকে দুই অঞ্চলের মধ্যকার বৈষম্য। পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার চাইতে পশ্চিম পাকিস্তান অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। যেমন : ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। ফলে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে কয়েক গুণ পিছিয়ে পড়ে। সুতরাং বলা যায়, অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ছয় দফা দাবির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ‘১৯৭০ এর নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাবই মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য কারণ’ – বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম ‘এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (ওয়ালী), মুসলিম লীগ (কাইয়ুম), মুসলিম লীগ (কনভেনশন), পাকিস্তান পিপলস্ পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জামাত-ই-ইসলামি প্রভৃতি দল অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ ৬ দফার পক্ষে নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে অভিহিত করে। নির্বাচনে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ভোটারের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের (এবং কিছু আসনে ১৭ জানুয়ারি, ১৯৭১) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন (৭টি মহিলা আসনসহ) লাভ করে। ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৮৮টি আসন আওয়ামী লীগ পায়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ বিজয় ছিল নজিরবিহীন। আওয়ামী লীগ এককভাবে সরকার গঠন ও ৬ দফার পক্ষে গণরায় লাভ করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় জনগণ মুক্তিযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ ঐতিহাসিক আগরতলা মামলাকে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক ষড়যন্ত্র মামলা বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তার বিশ্বাস ছিল শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সশস্ত্র পন্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সে সময়ে গোপনে গঠিত বিপ্লবী পরিষদের সদস্যদের তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন। বিপ্লবী পরিষদের পরিকল্পনা ছিল একটি নির্দিষ্ট রাতে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাঙালিরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবগুলো ক্যান্টনমেন্টে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানিদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের বন্দী করবে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করবে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হওয়ার পূর্বেই তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে ঐতিহাসিক আগরতলা (‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য’) মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় সশস্ত্র পন্থায় স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় । এ পরিকল্পনা পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ছিল বলে একে তারা ষড়যন্ত্র মামলা বলে আখ্যায়িত করে।
অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কার নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিস গঠিত হয়?
> অধ্যাপক আবুল কাশেম খ ড. মুহাম্মদ এনামুল
গ ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ ঘ চৌধুরী খালেকুজ্জামান
২. নিচের কোনটি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে?
ক ভাষা আন্দোলন খ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন
> ছয়দফা কর্মসূচি ঘ এগার দফা কর্মসূচি
৩. ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কত সালে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান?
ক ১৯৪৭ > ১৯৪৮ গ ১৯৫১ ঘ ১৯৫২
৪. ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শীর্ষক কবিতার প্রেক্ষাপট নিচের কোনটি?
ক গণঅভ্যুত্থান > ভাষা আন্দোলন
গ স্বাধীনতা যুদ্ধ ঘ ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগ
৫. ১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন-
> আইয়ুব খান খ ইস্কান্দার মির্জা গ টিক্কা খান ঘ নিয়াজি
৬. কখন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়?
ক ১৯৪৭ সালের ১৩ আগস্ট > ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট
গ ১৯৪৮ সালের ১৩ আগস্ট ঘ ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট
৭. ‘বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ’কে আইয়ুব সরকার কী নামে আখ্যায়িত করে?
ক অতিরঞ্জিত কর্মসূচি খ বাঙালি জাতীয়তাবাদের কর্মসূচি
> বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি ঘ পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ
৮. মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন কে?
> তাজউদ্দিন আহমেদ খ সৈয়দ নজরুল ইসলাম
গ এম মনসুর আলী ঘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
৯. বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে গঠিত হয়-
> রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ খ রাষ্ট্রভাষা গণপরিষদ
গ স্বাধীন বাংলা পরিষদ ঘ বাংলা ভাষা উন্নয়ন পরিষদ
১০. কোন সাল থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে?
ক ১৯৫২ > ১৯৫৩ গ ১৯৫৪ ঘ ১৯৫৫
১১. ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলে-
ক আওয়ামী লীগের উত্থান ঘটে
> দেশ স্বাধীন হয়
গ ছাত্রলীগের জন্ম হয়
ঘ বাঙালি জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটে
১২. বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি কী ছিল?
ক সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন
> ভাষা আন্দোলন
গ ছয়-দফা আন্দোলন
ঘ ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান
১৩. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?
ক শেখ মুজিবুর রহমান
> শামসুল হক
গ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী
ঘ এম. মনসুর আলী
১৪. কাজী নজরুল ইসলামের গানে পাকিস্তানিরা কীসের অভিযোগ তুলেছিল?
> হিন্দুয়ানির খ হিন্দু সংস্কৃতির
গ অপসংস্কৃতির ঘ পাশ্চাত্য সংস্কৃতির
১৫. ঐতিহাসিক ছয়-দফায় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে কোন দুইটি বিষয় থাকার কথা বঙ্গবন্ধু উলেস্নখ করেছিলেন?
ক শিল্পায়ন ও অর্থনীতি খ প্রতিরক্ষা ও অর্থনীতি
> প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র ঘ সামরিক শাসন ও বাণিজ্য
১৬. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হয় কত সালে?
ক ১৯৪৭ খ ১৯৪৮ > ১৯৪৯ ঘ ১৯৫২
১৭. ১৯৪৮ সালের কত তারিখে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ রেসকোর্স ময়দানে ঘোষণা দেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা?
ক ২০ মার্চ > ২১ মার্চ গ ২২ মার্চ ঘ ২৩ মার্চ
১৮. ৬ দফার উদ্দেশ্য কী ছিল?
> জনগণের অধিকার রক্ষা
খ বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতিদান
গ ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা
ঘ শাসন বিভাগ হতে বিচার বিভাগকে পৃথক করা
১৯. ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কত দিন অব্যাহত ছিল?
ক ২০ খ ১৯ গ ১৮ > ১৭
২০. পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের আসন সংখ্যা কত ছিল?
ক ৩৩০টি খ ৩০৯টি গ ৩৩৩টি > ৩১০টি
২১. পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বেই কোন বিষয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়?
ক প্রস্তাবিত রাষ্ট্রের সংবিধান কেমন হবে
খ প্রস্তাবিত রাষ্ট্রের রাজধানী কোথায় হবে
> প্রস্তাবিত রাষ্ট্রের ভাষা কী হবে
ঘ প্রস্তাবিত রাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি কী হবে
২২. কোন সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৫৪ খ ১৯৬৬ গ ১৯৬৯ > ১৯৭০
২৩. কার নেতৃত্বে ‘তমদ্দুন মজলিশ’ গড়ে ওঠে?
ক ড. মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ খ ড. মুহম্মদ এনামুল হক
> অধ্যাপক আবুল কাসেম ঘ আবদুল হামিদ খান ভাসানী
২৪. কৃষিক্ষেত্রেপূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে কত বৈষম্য ছিল? (১৯৬৬ সালের তথ্য অনুসারে)
ক ৫৬% > ৫৮% গ ৬৫% ঘ ৮১%
২৫. ঢাকায় ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি রচনা করেন কে?
ক মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী > আলাউদ্দিন আল আজাদ
গ আবদুল গাফফার চৌধুরী ঘ ড. মুনির চৌধুরী
২৬. ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের প্রশাসনিক চিত্রে কৃষিখাতে বাঙালি কত শতাংশ ছিল?
ক ১৯% > ২১% গ ২২% ঘ ২৭%
২৭. ‘তমদ্দুন মজলিশ’ সাংস্কৃতিক সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা কে?
ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শহীদুলস্নাহ > অধ্যাপক আবুল কাশেম
গ ড. মুহাম্মদ এনামুল হক ঘ মোঃ শামসুল হক
২৮. “পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ” দলটি গঠিত হয় কত সালে?
ক ১৯৪৭ খ ১৯৪৮ > ১৯৪৯ ঘ ১৯৫২
২৯. প্রথম শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন কে?
> শহীদ শফিউরের পিতা খ আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
গ আলাউদ্দিন আল আজাদ ঘ শহীদ বরকতের পিতা
৩০. কত সালে পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়?
ক ১৯৫৪ > ১৯৫৬ গ ১৯৫৮ ঘ ১৯৬০
৩১. পূর্ববাংলার মুক্তিসনদ কোনটি?
ক ভাষা আন্দোলন খ ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান
> ৬ দফা ঘ ২১ দফা
৩২. কাকে দিয়ে প্রথম শহীদ মিনার উদ্বোধন করা হয়?
> শফিউরের পিতা খ আব্দুর রউফের পিতা
গ সালামের পিতা ঘ আবুল বরকতের পিতা
৩৩. ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কে?
ক নুরুল আমীন খ জুলফিকার আলী ভুট্টো
> খাজা নাজিমুদ্দীন ঘ রাও ফরমান আলী
৩৪. উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা- কে বলেছেন?
ক খাজা নাজিমুউদ্দিন খ এ.কে. ফজলুল হক
> মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘ নুরুল আমিন
৩৫. ‘কবর’ নাটকের পটভূমি কোনটি?
ক গণঅভ্যুত্থান খ মুক্তিযুদ্ধ
গ ৬ দফা আন্দোলন > ভাষা আন্দোলন
৩৬. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার অন্তর্ভুক্ত দফা কোনটি?
ক ক্ষতিপূরণসহ জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ
> বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ
গ মুসলিমদের মধ্যে জমিদারি প্রথা বণ্টন
ঘ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাতিল
৩৭. ছাত্ররা ১১ দফার দাবিতে কত সালে আন্দোলন করেছিল?
ক ১৯৬১ খ ১৯৬২ > ১৯৬৮ ঘ ১৯৬৯
৩৮. ঐতিহাসিক ‘আগরতলা’ মামলা কতজনের বিরুদ্ধে রুজু করা হয়?
ক ৩২ খ ৩৩ গ ৩৪ > ৩৫
৩৯. ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের দ্বারা কয়টি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়?
ক ১ > ২ গ ৩ ঘ ৪
৪০. ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলে পূর্ববাংলা কোন রাষ্ট্রের প্রদেশে পরিণত হয়?
ক ভারত খ নেপাল > পাকিস্তান ঘ মিয়ানমার
৪১. ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে কোনটি ঘটে?
ক ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা
> ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান
গ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিলুপ্তি
ঘ ভাইসরয়ের পদত্যাগ
৪২. ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ পুস্তিকাটির যৌক্তিক বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক উর্দু ভাষার সমর্থন > বাংলা ভাষার সমর্থন
গ আরবি ভাষার সমর্থন ঘ ইংরেজি ভাষার সমর্থন
৪৩. শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে বলেন, ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পল্টনে পাকিস্তানের একজন প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন এবং তিনি ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। শিক্ষকের কথায় কোন প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত পাওয়া যায়?
ক লিয়াকত আলী খান > খাজা নাজিমুদ্দীন
গ জুলফিকার আলী ভুট্টো ঘ ইয়াহিয়া খান
৪৪. কত সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন?
ক ১৯৩২ খ ১৯৩৫
> ১৯৩৭ ঘ ১৯৩৯
৪৫. ভাষা আন্দোলনের সাথে কোন নামটি সম্পর্কযুক্ত?
> আবুল বরকত খ আবুল হাসান
গ আসাদুজ্জামান ঘ হাফিজ
৪৬. ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে কীসের চরিত্রদানে বিশাল ভূমিকা রাখে?
ক বিজয়ের খ প্রতিবাদের
> মুক্তিযুদ্ধের ঘ স্বাধীনতার
৪৭. আইয়ুব খান ইস্কান্দার মীর্জাকে উৎখাত ও দেশ ত্যাগে বাধ্য করেন কেন?
> ক্ষমতা দখল করার জন্য খ নির্বাচন পরিচালনার জন্য
গ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঘ সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য
৪৮. পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল কেন?
ক জনসংখ্যানীতির কারণে > বৈষম্যনীতির কারণে
গ সংখ্যাসাম্যনীতির কারণে ঘ পরিকল্পনানীতির কারণে
৪৯. পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার কোন শ্রেণির বিকাশ মন্থর হয়ে পড়ে?
ক উচ্চবিত্ত > মধ্যবিত্ত
গ নিম্নবিত্ত ঘ উচ্চমধ্যবিত্ত
৫০. ৬ দফা কোন বিষয়টি তুলে ধরে?
ক স্বাধীন বাংলার রূপরেখা > বাঙালির অধিকার
গ জাতীয় পরিচয় ঘ বাঙালির চেতনা
৫১. লাহোরে ৬ দফা পেশকালীন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন?
> সভাপতি খ আহ্বায়ক
গ সাধারণ সম্পাদক ঘ যুগ্ম সম্পাদক
৫২. ৬ দফার শেষ দফাটিতে কোন বিষয়টি স্থান পেয়েছিল?
ক মুদ্রা বিনিময় > আধাসামরিক বাহিনী গঠন
গ বৈদেশিক মুদ্রার মালিকানা ঘ ক্ষমতা বণ্টন
৫৩. গণঅভ্যুত্থানের ফলে পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে কীসের বিকাশ ঘটে?
ক যুদ্ধ করার মানসিকতা > জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চেতনা
গ বাঙালির সাহসিকতা ঘ নতুন দেশ গঠনের চেতনা
৫৪. ‘তমদ্দুন মজলিশ’ কত তারিখে গঠিত হয়?
ক ২ জানুয়ারি খ ১৯ ফেব্রুয়ারি
> ২ সেপ্টেম্বর ঘ ১৯ জুলাই
৫৫. ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস কোনটি?
ক শঙ্খনীল কারাগার খ আগুনের পরশমনি
গ তালপাতার সেপাই > আরেক ফাল্গুন
৫৬. ‘তমদ্দুন মজলিশ’ নামক সংগঠনটি কার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে?
> আবুল কাশেম খ কামরুদ্দিন আহম্মেদ
গ আতাউর রহমান খান ঘ অলি আহাদ
৫৭. কে গণপরিষদে বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানায়?
ক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ খ এ. কে. ফজলুল হক
গ শেখ মুজিবুর রহমান > ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
৫৮. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কখন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন?
ক ২১ মার্চ, ১৯৪৮ > ২৪ মার্চ, ১৯৪৮
গ ২৪ মার্চ, ১৯৫২ ঘ ২১ মার্চ, ১৯৫২
৫৯. ১৯৩৭ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন কে?
ক খাজা নাজিমুদ্দীন > এ. কে. ফজলুল হক
গ লিয়াকত আলী ঘ চৌধুরী খালীকুজ্জামান
৬০. ১৯৪৭ সালে কোন দল মাতৃভাষায় ‘শিক্ষাদান’ এর দাবি জানায়?
ক মুসলিম লীগ > গণ আজাদী লীগ
গ ছাত্রদল ঘ যুক্তফ্রন্ট
৬১. রেসকোর্স ময়দানের বর্তমান নাম কী?
> সোহরাওয়ার্দী উদ্যান খ রমনা পার্ক
গ বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘ জিয়া উদ্যান
৬২. ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি কে রচনা করেন?
> আলাউদ্দিন আল আজাদ খ মাহবুব-উল-আলম
গ কাজী নজরুল ইসলাম ঘ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৬৩. ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কত তারিখে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ব্যবহারের দাবি করেন?
> ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ খ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮
গ ২৩ মার্চ, ১৯৪৮ ঘ ২৩ এপ্রিল, ১৯৪৮
৬৪. কার নেতৃত্বে ‘গণ আজাদী লীগ’ গঠিত হয়?
> কামরুদ্দিন আহমদ খ আজাদ রহমান
গ বদরুদ্দিন আহমেদ ঘ সৈয়দ কামরুজ্জামান
৬৫. ‘তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি’-গানটি কোনটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক গণঅভ্যুত্থান খ স্বাধীনতা আন্দোলন
> ভাষা আন্দোলন ঘ ছয় দফা আন্দোলন
৬৬. এদেশের মানুষের জাতীয়তাবাদের উন্মেষের কারণ কী?
ক লাহোর প্রস্তাব > ভাষা আন্দোলন
গ যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ঘ ৬ দফা দাবি
৬৭. ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয় কবে?
ক ১১ অক্টোবর, ১৯৯৪ > ১৭ নভেম্বর, ১৯৯৯
গ ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭ ঘ ১ মে, ১৯৯৩
৬৮. ১৯৪৭ সালে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে ছিলেন?
ক এ. কে. ফজলুল হক খ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
গ কামরুদ্দিন আহমদ > ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ
৬৯. ‘গণ আজাদী লীগ’ কত সালে গঠিত হয়েছিল?
> ১৯৪৭ খ ১৯৪৮ গ ১৯৪৯ ঘ ১৯৫০
৭০. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয় কত তারিখে?
ক ১মার্চ > ২ মার্চ গ ৩ মার্চ ঘ ৪ মার্চ
৭১. পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন খান ১৯৪৮ সালের কত তারিখে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন?
ক ৫ মার্চ খ ১০ মার্চ > ১৫ মার্চ ঘ ২০ মার্চ
৭২. ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’-এ ঘোষণাটি সর্বপ্রথম কোথায় দেওয়া হয়?
ক গণপরিষদে > রেসকোর্স ময়দানে
গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘ পল্টন ময়দানে
৭৩. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের কী ছিলেন?
ক রাষ্ট্রপতি খ প্রধানমন্ত্রী
গ মুখ্যমন্ত্রী > গভর্নর জেনারেল
৭৪. ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারির পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক কে ছিলেন?
ক অলি আহাদ খ শামসুল হক
> আব্দুল মতিন ঘ কাজী গোলাম মাহবুব
৭৫. ১৯৫২ সালের কত তারিখে রাষ্ট্র ভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়?
> ২১ ফেব্রুয়ারি খ ২২ ফেব্রুয়ারি
গ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘ ২৪ ফেব্রুয়ারি
৭৬. ২২ ফেব্রুয়ারির শোক র্যালিতে পুলিশের হামলায় কোন ভাষা সৈনিক শহিদ হন?
ক আব্দুস সালাম > শফিউর
গ আবুল বরকত ঘ আবদুল জব্বার
৭৭. ভাষা শহিদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহিদ মিনার কে উদ্বোধন করেছিলেন?
> শহিদ শফিউরের পিতা খ শহিদ আবুল বরকতের পিতা
গ শহিদ আবদুল জব্বারের পিতা ঘ শহিদ রফিকউদ্দিনের পিতা
৭৮. ‘আমি কাঁদতে আসিনি, আমি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ কবিতাটি কোন কবি লিখেছিলেন?
ক গাজীউল হক খ আব্দুল গাফফার চৌধুরী
গ আলতাফ মাহমুদ > মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী
৭৯. ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে রচিত ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ গানটির রচয়িতা কে?
> আব্দুল লতিফ খ আব্দুল গাফফার চৌধুরী
গ মাহবুব-উল-আলম ঘ আলাউদ্দিন আল আজাদ
৮০. ১৯৪৭ সালে কোন বিষয়টি প্রথমে ঘটেছিল?
> পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হওয়া খ গণ আজাদী লীগ প্রতিষ্ঠা
গ তমদ্দুন মজলিশ প্রতিষ্ঠা ঘ করাচির শিক্ষা সম্মেলন
৮১. উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাবকারী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন?
ক কলকাতা খ পাঞ্জাব
গ লাহোর > আলিগড়
৮২. করাচিতে শিক্ষা সম্মেলন কখন অনুষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে খ ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে
গ ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে > ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে
৮৩. ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
ক নাজিমুদ্দীন খান খ লিয়াকত আলী খান
> মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘ আইয়ুব খান
৮৪. ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’-ঘোষণাটি কে দেন?
> মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ খ লিয়াকত আলী খান
গ খাজা নাজিমুদ্দীন ঘ আইয়ুব খান
৮৫. বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারির শহিদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে কোন সংস্থা?
ক জাতিসংঘ খ ইউনিসেফ
> ইউনেস্কো ঘ ইউএনডিপি
৮৬. ইউনেস্কো জাতিসংঘের কোন বিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান?
ক রাজনৈতিক > শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি
গ অর্থনৈতিক ঘ আঞ্চলিক
৮৭. পৃথিবীতে কতটি ভাষা রয়েছে?
ক ৫০০০-এর বেশি > ৬০০০-এর বেশি
গ ৭০০০-এর বেশি ঘ ৮০০০-এর বেশি
৮৮. ‘কবর’ নাটকটি মুনীর চৌধুরী কোথায় বসে রচনা করেন?
ক নিজ গৃহে > জেলখানায়
গ পাবলিক লাইব্রেরিতে ঘ হাসপাতালে
৮৯. ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত নাটক ‘কবর’ এর রচয়িতা কে?
ক জহির রায়হান খ শহীদুল্লাহ কায়সার
> মুনীর চৌধুরী ঘ আলাউদ্দিন আল আজাদ
৯০. পাকিস্তানি শাসন পর্বে কোন আন্দোলনটি বাঙালির জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলন?
> ভাষা আন্দোলন খ গণঅভ্যুত্থান
গ সিপাহি আন্দোলন ঘ ছয় দফা
৯১. ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য কোনটি?
ক বাঙালির রক্তদান > জাতীয়তাবাদের উন্মেষ
গ শহিদ মিনার নির্মাণ ঘ দেশপ্রেম
৯২. যুক্তফ্রন্ট কত দিন ক্ষমতায় ছিল?
ক ৪৫ > ৫৬ গ ৬৫ ঘ ৭১
৯৩. ২১ দফা জনগণের কাছে কী হিসেবে গৃহীত হয়?
ক সংবিধান খ রায়
> স্বার্থ রক্ষার সনদ ঘ দলিল
৯৪. প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন কত সালে অনুষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৫২ > ১৯৫৪ গ১৯৫৩ ঘ ১৯৫৫
৯৫. পাকিস্তানের কোন গভর্নর জেনারেল যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করেছিল?
ক মুহম্মদ আলী জিন্নাহ > গোলাম মোহাম্মদ
গ খাজা নাজিমুদ্দীন ঘ ইস্কান্দার মীর্জা
৯৬. যুক্তফ্রন্টের বিজয় কী প্রমাণ করে?
ক যুক্তফ্রন্টের প্রয়োজন আছে খ বাঙালিও নেতৃত্ব দিতে পারে
গ বাংলাদেশের একমাত্র দল > জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস
৯৭. পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের আসন ছিল কতটি?
ক ২৩৬ > ২৩৭ গ ২৩৮ ঘ ২৩৯
৯৮. যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল কয়টি দল নিয়ে?
ক ২ খ ৩ > ৪ ঘ ৬
৯৯. কত সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করা হয়?
ক ১৯৫৬ খ ১৯৫৭ > ১৯৫৮ ঘ ১৯৫৯
১০০. ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্টের সচিবালয়ে বাঙালিদের অবস্থান ছিল কত?
> ১৯% খ ২০% গ ৩০% ঘ ৩২%
১০১. পাকিস্তান নৌবাহিনীর উচ্চ পদে বাঙালি ছিল কত শতাংশ?
ক ১১ খ ১৪ গ ১৬ > ১৯
১০২. কত সালে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীকে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়?
ক ১৯৬১ > ১৯৬২ গ ১৯৬৩ ঘ ১৯৬৪
১০৩. পশ্চিম পাকিস্তানিরা নজরুল ইসলামের গানে কী অভিযোগ তোলে?
ক হিন্দু সংস্কৃতি > হিন্দুয়ানি
গ পাকিস্তান বিরোধী ঘ ইসলাম বিরোধী
১০৪. ‘হিন্দু সংস্কৃতি’ আখ্যা দেওয়া হয় কোনটিকে?
> রবীন্দ্র সংগীত খ নজরুল সংগীত
গ আধুনিক গান ঘ সঙ্গীত চর্চা
১০৫. ৬ দফার প্রথম দফাটিতে কোন প্রসংগটি স্থান পেয়েছিল?
> কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা খ মুদ্রা
গ কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার ঘ কর ধার্যকরণ
১০৬. ৬ দফাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি হিসেবে আখ্যায়িত করেন কে?
ক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ খ ইস্কান্দার মীর্জা
> আইয়ুব খান ঘ ইয়াহিয়া খান
১০৭. ‘আগরতলা’ মামলা কতজনের বিরুদ্ধে রুজু করা হয়?
> ৩৫ খ ৩৬ গ ৩৭ ঘ ৩৮
১০৮. কত তারিখের ঘোষণায় ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন?
ক ২৭ মার্চ > ২৮ মার্চ
গ ২৯ মার্চ ঘ ৩০ মার্চ
১০৯. কত সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন?
ক ১৯৬৮ > ১৯৬৯ গ ১৯৭০ ঘ ১৯৫২
১১০. আইয়ুব খান প্রেসিডেন্টের পদ থেকে কত তারিখে ইস্তফা দেন?
ক ১৯৬৯ সালের ১৫ মার্চ খ ১৯৬৯ সালের ২০ মার্চ
> ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ ঘ ১৯৬৯ সালের ৩০ মার্চ
১১১. পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন কত সালে অনুষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৫৪ খ ১৯৬৫ > ১৯৭০ ঘ ১৯৫২
১১২. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মূল কারণ কী ছিল?
ক ভাষার দাবি আদায় > বাংলার স্বায়ত্তশাসন
গ দেশের স্বাধীনতা অর্জন ঘ যুক্তফ্রন্ট গঠন
১১৩. ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অর্জন কোনটি?
ক মাতৃভাষার স্বীকৃতি খ সংবিধান প্রতিষ্ঠা
গ অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস > জাতীয়তাবাদের বিকাশ
১১৪. কত সালে আমাদের দেশে এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৬৯ > ১৯৭০ গ ১৯৭১ ঘ ১৯৮০
১১৫. সর্বপ্রথম ‘এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় কোন তারিখে?
> ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর খ ১৯৫৪ সালের ৭ ডিসেম্বর
গ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি ঘ ১৯৫৬ সালের ২৮ এপ্রিল
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৬. ছাত্রসমাজের ১৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণার কারণ ছিল-
র. আইয়ুব খানের শাসনতন্ত্রের প্রস্তাব
রর. আইয়ুব খানের শিক্ষানীতি প্রণয়ন
ররর. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেফতার
নিচের কোনটি সঠিক?
> র খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১১৭. এদেশের অগণিত নারী মুক্তিসেনা মুক্তিযুদ্ধে কীভাবে অবদান রেখেছিল?
র. অস্ত্র চালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে
রর. আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাশুশ্রূষা করে
ররর. মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান ও তথ্য সরবরাহ করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১১৮. ১৯৭০ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব হলো-
র. ৬ দফার প্রতি জনগণের সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়
রর. বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে
ররর. পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণের অবস্থান সুদৃঢ় হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১১৯. ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে-
র. আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে
রর. বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে
ররর. জনগণ ৬ দফা ও ১১ দফার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রদান করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর > র, রর ও ররর ঘ র ও ররর
১২০. যুক্তফ্রন্টের দলগুলো-
র. আওয়ামী লীগ
রর. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
ররর. কৃষক শ্রমিক দল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২১. নিম্নের কোন বিষয়গুলো যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা দাবির অন্তর্ভুক্ত ছিল?
র. ক্ষতিপূরণসহ জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ করা হবে
রর. সমবায় কৃষি ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হবে
ররর. বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন করা হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২২. যুক্তফ্রন্টের ঘোষিত বিষয়-
র. পূর্ববাংলার স্বায়ত্তশাসন
রর. ২১শে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি
ররর. বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৩. ১৯৪৭ এর পর রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের মধ্যে যে ধারা লক্ষ করা যায় তা হলো-
র. পাকিস্তানের অনুগত রাজনৈতিক দল
রর. পূর্ব বাংলার স্বার্থ রক্ষার জন্য সোচ্চার রাজনৈতিক দল
ররর. সাম্যবাদী আদর্শের রাজনৈতিক ধারা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর > র, রর ও ররর
১২৪. পূর্ব বাংলার যেসব বিষয় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে-
র. অর্থনীতি রর. সংস্কৃতি
ররর. রাজনীতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১২৫. পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী মুসলিম লীগের কার্যক্রম সহ্য করতে পারেনি। এর যথার্থ কারণ হলো-
র. ক্ষমতা হারানোর ভয়
রর. প্রভাব প্রতিপত্তি হ্রাসের ভয়
ররর. ২১ দফা কর্মসূচি
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৬. পূর্ববাংলার জনগণের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়-
র. আওয়ামী লীগ
রর. কৃষক শ্রমিক পার্টি
ররর. মুসলিম লীগ
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৭. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছিল তাহলো-
র. বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা
রর. অবৈতনিক মাধ্যমিক শিক্ষা
ররর. বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৮. ১৯৫৮ সালে প্রবর্তিত পাকিস্তানের সামরিক শাসন যে ধরনের পরিবর্তন সাধন করে-
র. ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল করে
রর. কেন্দীয় পরিষদ ভেঙে দেয়
ররর. সকল মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১২৯. মৌলিক গণতন্ত্রে আশি হাজার নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্যদের ভোটে-
র. রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান রাখা হয়
রর. জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচনের বিধান রাখা হয়
ররর. প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচনের বিধান রাখা হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৩০. বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলতে বোঝায়-
র. ঐতিহ্যে যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়
রর. সংস্কৃতিতে যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়
ররর. জাতিগত পরিচয়ে যে ঐক্য গঠিত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৩১. প্রতিষ্ঠালগ্নে আওয়ামী মুসলিম লীগের দাবিগুলো ছিল-
র. স্বায়ত্তশাসন
রর. জনগণের সার্বভৌমত্ব
ররর. বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৩২. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় অন্তর্ভুক্ত ছিল-
র. সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন
রর. বন্যা নিয়ন্ত্রণ
ররর. দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৩৩. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের যথার্থ কারণ হলো-
র. মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতাত্ত্বিক ধারণা
রর. বাঙালির প্রগতিশীল রাজনৈতিক চেতনা
ররর. বাঙালির স্বার্থরক্ষা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৩৪. যুক্তফ্রন্টের দলগুলো হলো-
র. আওয়ামী লীগ
রর. জামায়াতে ইসলাম
ররর. কৃষিক শ্রমিক পার্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৩৫. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে-
র. জাতীয় কংগ্রেস
রর. আওয়ামী লীগ
ররর. পিপলস পার্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৩৬ ও ১৩৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
জনাব নূরুল আমীন একজন সমাজসেবী মানুষ। কিন্তু এলাকার চেয়ারম্যান তার অপশাসন দিয়ে এলাকার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছিল। জনাব নূরুল আমীন সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এতে চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
১৩৬. অনুচ্ছেদের সাথে নিচের কোন ঘটনার সাদৃশ্য পাওয়া যায়?
ক তমদ্দুন মজলিস গঠন খ আওয়ামী লীগ গঠন
> যুক্তফ্রন্ট গঠন ঘ গণআজাদি লীগ গঠন
১৩৭. উক্ত সংগঠনটি গড়ে ওঠার যথার্থ কারণ-
র. বাংলায় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা
রর. মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটানো
ররর. পাকিস্তানিদের কর্তৃত্ব থেকে এদেশের জনগণকে মুক্ত করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৩৮ ও ১৩৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মিজান একটি আর্ট গ্যালারি পরিদর্শনে গিয়ে একটি কার্টুন ছবি দেখল। যেখানে পাকিস্তানের মানচিত্র আঁকা। একটি গরু ঘাস খাচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে, তার দুধ দোহন করে নিচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তান।
১৩৮. মিজানের দেখা ছবিটি কী প্রমাণ করে?
ক বাংলাদেশের সমৃদ্ধ কৃষিব্যবস্থা খ দুই পাকিস্তানের মাঝে সুসম্পর্ক
> পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ ঘ দুই পাকিস্তানের নির্বাচন ব্যবস্থা
১৩৯. অনুচ্ছেদে রূপকের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের যে শোষণের চিত্র ফুটে উঠেছে সেটি ছিল মূলত-
র. সামাজিক শোষণ
রর. অর্থনৈতিক শোষণ
ররর. সামরিক শোষণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৪০ ও ১৪১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানি জনগোষ্ঠীর সব ধরনের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
১৪০. বঙ্গবন্ধু এ সম্মেলনে কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন?
> ৬ দফা খ ১২ দফা গ ১১ দফা ঘ ২১ দফা
১৪১. উক্ত কর্মসূচি দেখে আইয়ুব খানের শঙ্কিত হয়ে পড়ার কারণ হলো-
র. বৈদেশিক মুদ্রার ভাগ কমে যাবে
রর. পূর্ব পাকিস্তানে শোষণ বন্ধ হয়ে যাবে
ররর. পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৪২ ও ১৪৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
অগ্রণী ক্লাবের সভাপতির একরোখা মনোভাব ও অসহযোগিতামূলক কার্যক্রমে অসšেত্মাষ প্রকাশ করেন ক্লাবের সাধারণ সদস্যগণ। মোহসীন সাহেবের নেতৃত্বে সদস্যগণ তাদের দাবি-দাওয়া সভাপতির নিকট পেশ করেন। সভাপতি ও তার পক্ষের লোকজন বিষয়টিকে অযৌক্তিক মনে করে প্রত্যাখ্যান করেন। ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মোহসীন সাহেব ও তার অনুসারী সদস্যবৃন্দ সোচ্চার হন।
১৪২. মোহসীন সাহেবের গৃহীত পদক্ষেপে কোন ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিফলন লক্ষ করা যায়?
> ৬ দফা দাবি উত্থাপন
খ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন
গ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন
ঘ ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি গঠন
১৪৩. উক্ত ঐতিহাসিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই –
র. আইয়ুব সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে
রর. বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়
ররর.বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে ধাবিত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
অতিরিক্ত বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ভূমিকা
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৪৪. ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের দ্বারা ভারতের পাশাপাশি অপর কোন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়? (জ্ঞান)
ক নেপাল খ ভুটান গ আফগানিস্তান > পাকিস্তান
১৪৫. ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় কত সালে? (জ্ঞান)
ক ১৯৪৬ > ১৯৪৭ গ ১৯৪৮ ঘ ১৯৪৯
১৪৬. পাকিস্তানের শুরু থেকেই শাসনভার কাদের হাতে কেন্দ্রীভূত হতে থাকে? (জ্ঞান)
ক পূর্ব পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর
> পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর
গ পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের
ঘ পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের
পরিচ্ছেদ-১.১ : বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন
> ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন- মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিস গড়ে ওঠে- ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭।
> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনর্গঠিত হয়- ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ।
> ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ জিন্নাহ এই ঘোষণা দেন- ২১ মার্চ রেসকোর্সে ও ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে।
> ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করার পূর্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায়।
> ছাত্রজনতা কর্তৃক শহিদ মিনার প্রথম নির্মাণ হয়- ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি।
> “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি” এর রচয়িতা- আব্দুল গাফফার চৌধুরী।
> পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়- ১৯৫৬ সালে।
> ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়- ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর।
> পৃথিবীতে ভাষা রয়েছে- ৬০০০ এর বেশি।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৪৭. ১৯৪৭ সালের কোন মাসে পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত হয়? (জ্ঞান)
ক জুন > এপ্রিল গ মে ঘ জানুয়ারি
১৪৮. ১৯৪৭ সালের কত তারিখে চৌধুরী খলীকুজ্জামান উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন? (জ্ঞান)
ক ১৬ মে > ১৭ মে গ ১৮ মে ঘ ১৯ মে
১৪৯. কোন মাসে ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন? (জ্ঞান)
> জুলাই খ মে গ জুন ঘ এপ্রিল
১৫০. ড. মুহাম্মদ এনামূল হক পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে গ্রহণের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন কীভাবে? (অনুধাবন)
ক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে খ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে
> প্রবন্ধ লিখে ঘ কবিতা লিখে
১৫১. ‘তমদ্দুন মজলিস’ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ঢাকা কলেজ খ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘ ইডেন কলেজ
১৫২. ‘তমদ্দুন মজলিস’ কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
> সাংস্কৃতিক . খ সামাজিক
গ রাজনৈতিক ঘ অর্থনৈতিক
১৫৩. ‘বাংলাকে শিক্ষা ও আইন আদালতের বাহন’ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় কত তারিখে? (জ্ঞান)
ক ১-৫ সেপ্টেম্বর খ ৪-৮ সেপ্টেম্বর
> ৬-৭ সেপ্টেম্বর ঘ ৭-৯ সেপ্টেম্বর
১৫৪. ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে পুস্তিকাটি কখন প্রকাশিত হয়? (জ্ঞান)
> ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর খ ১৯৪৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর
গ ১৯৪৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঘ ১৯৪৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর
১৫৫. বাংলা ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য ‘তমদ্দুন মজলিস’ কোনটি গঠন করে? (জ্ঞান)
ক বাংলা ভাষা সংগ্রাম পরিষদ খ মাতৃভাষা সংগ্রাম পরিষদ
> ভাষা সংগ্রাম পরিষদ ঘ বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন পরিষদ
১৫৬. ১৯৪৭ সালে কোন শহরে শিক্ষা সম্মেলন হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক পেশোয়ার খ লাহোর > করাচি ঘ পাঞ্জাব
১৫৭. উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কখন? (জ্ঞান)
ক ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে খ ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে
গ ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে > ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে
১৫৮. ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ কোন মাসে নতুনভাবে গঠিত হয়? (জ্ঞান)
> ডিসেম্বর খ জুলাই গ মে ঘ জুন
১৫৯. ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে কী নামে গঠিত হয়েছিল? (জ্ঞান)
> রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ খ বাংলা ভাষা সংগ্রাম পরিষদ
গ বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন পরিষদ ঘ পূর্ববাংলা সংগ্রাম পরিষদ
১৬০. পাকিস্তান সরকার সভা সমাবেশ নিষিদ্ধের জন্য কত ধারা জারি করে? (জ্ঞান)
ক ১৪০ > ১৪৪ গ ১৪৮ ঘ ১৬০
১৬১. গণপরিষদে বাংলা ব্যবহারের দাবি অগ্রাহ্য হলে কোন মাসে ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়? (জ্ঞান)
> ফেব্রুয়ারি খ মার্চ গ এপ্রিল ঘ জুন
১৬২. রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসের কত তারিখে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়? (জ্ঞান)
ক ২ মার্চ খ ৪ মার্চ > ১১ মার্চ ঘ ২০ মার্চ
১৬৩. পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৪৭ > ১৯৪৮ গ ১৯৪৯ ঘ ১৯৫০
১৬৪. ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সাধারণ ধর্মঘট চলাকালে কতজনকে গ্রেফতার করা হয়? (জ্ঞান)
ক ৪৯ খ ৫৯ > ৬৯ ঘ ৭৯
১৬৫. খাজা নাজিমুদ্দীন সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে কত দফা চুক্তি করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২ খ ৬ > ৮ ঘ ১২
১৬৬. খাজা নাজিমুদ্দীনের সাথে করা চুক্তির কত নম্বর দফায় বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রবর্তনের কথা বলা হয়েছে? (অনুধাবন)
ক ১ খ ২ গ ৩ > ৪
১৬৭. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কত তারিখে রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন? (জ্ঞান)
ক ১৯ মার্চ খ ২০ মার্চ
> ২১ মার্চ ঘ ২২ মার্চ
১৬৮. ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসের কত তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৫ মার্চ খ ১৯ মার্চ গ ২১ মার্চ > ২৪ মার্চ
১৬৯. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছাত্ররা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে কেন? (অনুধাবন)
> উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দেওয়ায়
খ বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দেওয়ায়
গ পূর্ববাংলার হিন্দুদের অবজ্ঞা করায়
ঘ পূর্ববাংলার মুসলমানদের অবজ্ঞা করায়
১৭০. পাকিস্তান সরকার কোন ভাষার হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল? (জ্ঞান)
ক উর্দু > আরবি গহিন্দি ঘ তেলেগু
১৭১. পূর্ব বাংলার জনগণের ভাষাকেন্দ্রিক আন্দোলন কীসের ভিত্তি সৃষ্টি করেছিল? (অনুধাবন)
> বাঙালি জাতীয়তাবাদ খ ছাত্রদের ঐক্য
গ বাঙালিদের দৃঢ়তা ঘ শাসকদের সুদৃষ্টি
১৭২. পূর্ব বাংলার জনগণ জাতীয়ভাবে নিজেদের বিকাশের জন্য কোন পদক্ষপেটি গ্রহণ করেছিল? (অনুধাবন)
ক শাসকদের সঙ্গে আঁতাত খ সামরিক শক্তি অর্জন
> মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা ঘ বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন
১৭৩. ভাষা আন্দোলনের সময় নৃ-গোষ্ঠীগুলো কোন ভাষাকে সমর্থন করেছিল?
(অনুধাবন)
ক চাকমা ভাষা খ উর্দু ভাষা
গ আঞ্চলিক ভাষা > বাংলা ভাষা
১৭৪. ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ পুনরায় ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি কোন নেতা এ ঘোষণা দেন? (জ্ঞান)
> খাজা নাজিমুদ্দীন
খ লিয়াকত আলী খান
গ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
ঘ মওলানা আকরাম খাঁ
১৭৫. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে অনুকরণ করে পাকিস্তানের কোন প্রধানমন্ত্রী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন? (জ্ঞান)
ক মোহাম্মদ আলী খ চৌধুরী মোহাম্মদ আলী
গ লিয়াকত আলী খান > খাজা নাজিমুদ্দীন
১৭৬. প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দীন খানের উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করার প্রতিবাদে কখন ধর্মঘট পালিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৪৮ সালে ১১ মার্চ খ ১৯৪৮ সালের ১৫ মার্চ
গ ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি > ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি
১৭৭. কত তারিখে ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়? (জ্ঞান)
ক ৩ ফেব্রুয়ারি > ৪ ফেব্রুয়ারি
গ ৫ জুন ঘ ৭ মে
১৭৮. রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৯৫২ সালের কত তারিখে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করে? (জ্ঞান)
ক ৩০ জানুয়ারি খ ৪ ফেব্রুয়ারি
> ২১ ফেব্রুয়ারি ঘ ২২ ফেব্রুয়ারি
১৭৯. ১৯৫২ সালের কত তারিখ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়? (জ্ঞান)
> ২১ ফেব্রুয়ারি খ ২২ ফেব্রুয়ারি
গ ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘ ২৪ ফেব্রুয়ারি
১৮০. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সভা অনুষ্ঠিত হয় কখন? (জ্ঞান)
> ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ খ ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২
গ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ ঘ ৫ মে, ১৯৫২
১৮১. ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বই পড়ে তানভীর জানতে পারে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকার একটি জায়গা ছাত্রদের জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। তানভীরের বর্ণনায় তৎকালীন সময়ের কোন জায়গার চিত্র পাওয়া যায়? (প্রয়োগ)
> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা খ ঢাকা মেডিকেল চত্বর
গ রেসকোর্স ময়দান ঘ কুর্মিটোলা বিমানবন্দর
১৮২. ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম ১৯৫২ সালের কত তারিখে মারা যান? (জ্ঞান)
> ২১ ফেব্রুয়ারি খ ২২ ফেব্রুয়ারি
গ ৭ মার্চ ঘ ৭ এপ্রিল
১৮৩. কত তারিখে ঢাকায় বিশাল শোক র্যালি বের হয়? (জ্ঞান)
ক ২০ ফেব্রুয়ারি খ ২১ ফেব্রুয়ারি
> ২২ ফেব্রুয়ারি ঘ ২৪ ফেব্রুয়ারি
১৮৪. ঢাকায় কত তারিখে প্রথম শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়? (জ্ঞান)
ক ২১ ফেব্রুয়ারি > ২২ ফেব্রুয়ারি
গ ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘ ২৪ ফেব্রুয়ারি
১৮৫. ভাষা শহিদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহিদ মিনারটি পুলিশ ১৯৫২ সালের কত তারিখে ভেঙ্গে ফেলে? (জ্ঞান)
> ২৪ ফেব্রুয়ারি খ ২৫ ফেব্রুয়ারি
গ ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘ ২৭ ফেব্রুয়ারি
১৮৬. ভাষা আন্দোলন কত সালে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে পরিণত হয়? (জ্ঞান)
> ১৯৫২ খ ১৯৫৩ গ ১৯৫৪ ঘ ১৯৫৬
১৮৭. পাকিস্তান সংবিধানে কত সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়? (জ্ঞান)
> ১৯৫৬ খ ১৯৬২ গ ১৯৬৬ ঘ ১৯৭০
১৮৮. ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতীয় জীবনে কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাটি পালন করেছে? (জ্ঞান)
> জাতীয়তার উন্মেষ ঘটানো খ অর্থনৈতিক মুক্তি
গ সাংস্কৃতিক ব্যবধান হ্রাস ঘ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন
১৮৯. বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রকাশ ঘটে কীসের মাধ্যমে? (অনুধাবন)
> ভাষার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে
খ ব্রিটিশ শাসনের অবসানের মাধ্যমে
গ বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাধ্যমে
ঘ পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন দানের মাধ্যমে
১৯০. পূর্ব পাকিস্তানকালীন সময়ে সৃষ্ট বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি কী ছিল? (জ্ঞান)
ক ধর্ম খ শিক্ষা > ভাষা ঘ পেশা
১৯১. কত সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে? (জ্ঞান)
ক ১৯৫০ খ ১৯৫২ > ১৯৫৩ ঘ ১৯৫৪
১৯২. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের পূর্বে এ দিনটিকে কী হিসেবে পালন করা হতো? (জ্ঞান)
ক জাতীয় শোক দিবস খ মাতৃভাষা দিবস
> শহিদ দিবস ঘ বিজয় দিবস
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৯৩. ভাষা আন্দোলনের ওপর লেখা সাহিত্য হলো- (অনুধাবন)
র. কবর
রর. মাটির ময়না
ররর. আরেক ফাল্গুন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ রর ও ররর
১৯৪. ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করা হয় যেসব কারণে- (অনুধাবন)
র. সভা-সমাবেশ বন্ধ করতে
রর. মিছিল বন্ধ করতে
ররর. ভাষা আন্দোলন বন্ধ করতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৯৫. প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়- (অনুধাবন)
র. শহিদ দিবস হিসেবে
রর. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে
ররর. স্বাধীনতা দিবস হিসেবে
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৯৬. পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পরও দেশে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর যথার্থ কারণ হিসেবে বলা যায়- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সম্পদের সুষম বণ্টন না করা
রর. স্বায়ত্তশাসনের দাবির প্রতি অবজ্ঞা করা
ররর. সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ভাষাকে মর্যাদা না দেওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
১৯৭. পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা হলো-
(অনুধাবন)
র. উর্দু ভাষায় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা
রর. গণপরিষদে শুধু উর্দু ও ইংরেজি ভাষার ব্যবহার
ররর. করাচির শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৯৮. উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন- (অনুধাবন)
র. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
রর. নাজিমুদ্দীন খান
ররর. লিয়াকত আলী খান
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৯৯. পাকিস্তানের স্বাধীনতার আগেই উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন- (অনুধাবন)
র. ড. মুহাম্মদ এনামুল হক
রর. চৌধুরী খলীকুজ্জামান
ররর. ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২০০. ভাষা আন্দোলনে যেসব সংগঠন ভূমিকা পালন করেছিল সেগুলো হলো-
(অনুধাবন)
র. গণআজাদী লীগ
রর. মাতৃভাষায় শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিষদ
ররর. তমদ্দুন মজলিস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২০১. ভাষা আন্দোলনে সকল রাজনৈতিক দলগুলো একাত্মতা ঘোষণা করে। এর যথার্থ কারণ হলো- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. এটা ছিল সবার দাবি
রর. এটাই ছিল রাজনৈতিক স্বার্থ
ররর. এটাই ছিল জাতীয় স্বার্থ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২০২. ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো- (অনুধাবন)
র. ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল
রর. মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ
ররর. মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২০৩. পুলিশের গুলির মাধ্যমে যে ভাষা আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চাওয়া হয়েছিল তার ফলাফল হলো- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সাধারণ মানুষ ভাষার দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে
রর. সাধারণ মানুষ পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ শুরু করে
ররর. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২০৪. ২১শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে কবিতা লেখেন- (অনুধাবন)
র. জীবনানন্দ দাশ
রর. মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী
ররর. আলাউদ্দিন আল আজাদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২০৫. ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য হলো- (অনুধাবন)
র. বাংলার মানুষ অধিকার সচেতন হয়
রর. বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত হয়
ররর. পরবর্তীকালের সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জোগায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২০৬ ও ২০৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর জনাব মিনার সাহেব প্রতিষ্ঠিত ভাষাটিকে মানতে রাজি নন। অথচ প্রশাসনের প্রতি পরতে পরতে এই ভাষাটির উল্লেখযোগ্য ব্যবহার শুরু হয়।
২০৬. কোন ভাষাটিতে মিনার সাহেবের আপত্তি ছিল? (প্রয়োগ)
ক ইংরেজি > উর্দু গ বাংলা ঘ আরবি
২০৭. অনুচ্ছেদে যে ভাষাটির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে সেটি ব্যবহৃত হতো-
(উচ্চতর দক্ষতা)
র. মানি অর্ডার ফর্মে রর. ডাকটিকিটে
ররর. মুদ্রায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২০৮ ও ২০৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নাঈম মনোযোগ দিয়ে টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানের দৃশ্য দেখছিল। একজন নেতা বলিষ্ঠ কণ্ঠে ছাত্র-শিক্ষকদের সমাবেশে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পক্ষে ঘোষণা দিচ্ছে। ছাত্ররা না, না, না-ধ্বনিতে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
২০৮. অনুচ্ছেদে বর্ণিত নেতার বক্তব্য কোন আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়? (প্রয়োগ)
> ভাষা আন্দোলন খ ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান
গ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ঘ অসহযোগ আন্দোলন
২০৯. উক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকশিত হয়
রর. বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়
ররর. বাঙালিদের মনোবল নষ্ট হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২১০ ও ২১১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
টেলিভিশনে লোকজ গানের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। তন্বী বেশ আগ্রহ নিয়ে অনুষ্ঠানটি দেখছিল। কিন্তু তার ছোট বোন দীপ্তি কেবলই চ্যানেল পরিবর্তন করে ইংরেজি কার্টুন দেখতে চেষ্টা করছিল। দীপ্তির মতে ঐসব গানের শ্রোতা হচ্ছে গ্রামের লোক। তার বোনের এসব গানপ্রীতি বেমানান লাগে।
২১০. তন্বী কোন আন্দোলনের চেতনায় অনুপ্রাণিত? (প্রয়োগ)
ক অসহযোগ আন্দোলন খ খিলাফত আন্দোলন
> ভাষা আন্দোলন ঘ স্বাধিকার আন্দোলন
২১১. উক্ত চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তন্বী হতে পারে- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. দেশপ্রেমিক
রর. জাতীয়তাবাদী
ররর. প্রতিবাদী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
পরিচ্ছেদ-১.২ : বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভূমিকা
>পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে- ১৯৪৭ সালে।
>অসাম্প্রদায়িক বা প্রগতিশীল চেতনায় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হয়- ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন।
>শেখ মুজিবকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়- ১৯৪৯ সালে।
>পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যায় বাঙালি ছিল- ৫৬ শতাংশ।
>যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়- ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর।
>১৯৫৪ সালের নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট পায়- ২৩৩টি।
>১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ইশতেহার ছিল- ২১ দফা।
>শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক যুক্তফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন- ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল।
>পাকিস্তানের সামরিক শাসন জারি হয়- ১৯৫৮ সালে।
>যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পরে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তিত হতে থাকে- কেন্দ্র ও প্রদেশে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২১২. পূর্ববাংলার জনগণ কখন পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো বুঝতে শুরু করে? (জ্ঞান)
ক বঙ্গভঙ্গের পর খ বঙ্গভঙ্গ রদের পর
গ ভাষা আন্দোলনের পর > পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর
২১৩. পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ বাঙালি ছিল? (জ্ঞান)
ক ৫৪ খ ৫৫ > ৫৬ ঘ ৫৭
২১৪. পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের মধ্যে কয়টি ধারা লক্ষ করা যায়? (জ্ঞান)
> ৩ খ ৪ গ ৫ ঘ ৬
২১৫. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ কত সালে গঠিত হয়? (জ্ঞান)
> ১৯৪৯ খ ১৯৫০ গ ১৯৫১ ঘ ১৯৫২
২১৬. ১৯৪৯ সালের কত তারিখে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ২২ জুন > ২৩ জুন
গ ২৪ জুন ঘ ২৫ জুন
২১৭. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন কে? (জ্ঞান)
> মওলানা ভাসানী খ শামসুল হক
গ ফজলুল হক ঘ শেখ মুজিবুর রহমান
২১৮. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের’ প্রথম সাধারণ সম্পাদক হন কে? (জ্ঞান)
> শামসুল হক খ শেখ মুজিবুর রহমান
গ তাজউদ্দিন আহমদ ঘ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
২১৯. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের’ প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হন কে? (জ্ঞান)
ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম > শেখ মুজিবুর রহমান
গ শামসুল হক ঘ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
২২০. শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৯ সাল থেকে একনাগাড়ে ১৯৫২ সালের কত তারিখ পর্যন্ত বন্দি ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২৪ ফেব্রুয়ারি খ ২৫ ফেব্রুয়ারি
গ ২৬ ফেব্রুয়ারি > ২৭ ফেব্রুয়ারি
২২১. কত সালে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করে? (জ্ঞান)
ক ১৯৫৪ > ১৯৫৫ গ ১৯৫৬ ঘ ১৯৫৭
২২২. ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করে। এর কারণ বিশ্লেষণ করলে কোনটি পাওয়া যায়? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক দুর্বল মন্ত্রিসভা খ মন্ত্রীদের অদক্ষতা
> পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ঘ মন্ত্রীদের অর্থলিপ্সা
২২৩. কখন আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে? (জ্ঞান)
ক ১৯৫০ সালের ৮ মে খ ১৯৫৩ সালের ১৫ জুলাই
গ ১৯৫৩ সালের ২০ আগস্ট > ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর
২২৪. যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল কোন রাজনৈতিক দলের? (জ্ঞান)
ক কৃষক প্রজা পার্টির খ জাতীয় কংগ্রেসের
গ গণতান্ত্রিক দলের > আওয়ামী লীগের
২২৫. পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম যে নির্বাচন হয়, সেখানে ‘ক’ রাজনৈতিক দল ২২৩টি আসন পায়। ‘ক’ রাজনৈতিক দলের নাম কী? (প্রয়োগ)
ক গণতন্ত্রী দল খ কৃষক প্রজা পার্টি
গ মুসলিম লীগ > যুক্তফ্রন্ট
২২৬. পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগ কতটি আসন লাভ করে? (জ্ঞান)
> ৯ খ ১০ গ১১ ঘ ১২
২২৭. ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল বা জোট সরকার গঠনের বৈধতা লাভ করে? (জ্ঞান)
ক মুসলিম লীগ খ আওয়ামী মুসলিম লীগ
গ কৃষক প্রজা পার্টি > যুক্তফ্রন্ট
২২৮. যুক্তফ্রন্ট কয় দফা দাবি প্রণয়ন করে? (জ্ঞান)
ক ২০ > ২১ গ ২২ ঘ ২৩
২২৯. ২১ দফা দাবির প্রথম দাবি কী ছিল? (জ্ঞান)
ক সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন
খ বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন
গ পাট ব্যবসায়কে জাতীয়করণ
> বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা
২৩০. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় জমিদারি সম্পর্কে কী কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ক্ষতিপূরণসহ জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ
> বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ
গ মুসলিমদের মধ্যে জমিদারি প্রথা বণ্টন
ঘ হিন্দুদের মধ্যে জমিদারি প্রথা বণ্টন
২৩১. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় কী ধরনের কৃষিব্যবস্থা প্রবর্তনের কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
> সমবায়ভিত্তিক খ প্রযুক্তিভিত্তিক
গ মৌজাভিত্তিক ঘ সমন্বিত
২৩২. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার পঞ্চম দফাটি কী ছিল? (জ্ঞান)
ক কুটির শিল্পের সম্প্রসারণ খ হস্ত শিল্পের সম্প্রসারণ
গ বস্ত্র শিল্পের সম্প্রসারণ > লবণ শিল্পের সম্প্রসারণ
২৩৩. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
> ২ খ ৩ গ ৪ ঘ ৫
২৩৪. বর্তমান সরকার দুর্নীতি নির্মূলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ ধরনের প্রতিজ্ঞার কথা পাকিস্তান আমলে কোথায় উলেস্নখ করা হয়েছিল? (প্রয়োগ)
> যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় খ ৬ দফায়
গ ছাত্রদের ১১ দফায় ঘ ৫৬র সংবিধানে
২৩৫. যুক্তফ্রন্টের কত নম্বর দফায় শহিদ মিনার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে? (অনুধাবন)
ক ১৫ খ ১৬ > ১৭ ঘ ১৮
২৩৬. ২১ দফার মাধ্যমে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা কতটি উপনির্বাচনে পরাজিত হলে পদত্যাগ করবে বলে ঘোষণা দেয়? (জ্ঞান)
ক পরপর ২টি > পরপর ৩টি
গ যেকোনো ৩টি ঘ যেকোনো ৪টি
২৩৭. কত সালে যুক্তফ্রন্টভুক্ত কৃষক-প্রজা পার্টির নেতা এ কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
> ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল খ ১৯৫৪ সালের ৭ এপ্রিল
গ ১৯৫৪ সালের ১০ এপ্রিল ঘ ১৯৫৪ সালের ১৫ আগস্ট
২৩৮. পাকিস্তানের গভর্নর কখন যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে? (জ্ঞান)
> ১৯৫৪ সালের ৩০ মে খ ১৯৫৪ সালের ১০ জুন
গ ১৯৫৪ সালের ৮ জুলাই ঘ ১৯৫৪ সালের ১৫ আগস্ট
২৩৯. যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিল করে কাকে গৃহবন্দি করা হয়? (জ্ঞান)
ক মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে
খ শামসুল হককে
> এ কে ফজলুল হককে
ঘ হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীকে
২৪০. যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে কোন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীকে
> শেখ মুজিবুর রহমানকে
গ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে
ঘ মওলানা ভাসানীকে
২৪১. যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিলের পর শেখ মুজিবসহ কতজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়? (জ্ঞান)
> ৩০০০ খ ২৫০০ গ ২০০০ ঘ ১৫০০
২৪২. কীসের মাধ্যমে পূর্ববাংলার প্রতি পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর চরম বৈরী মনোভাব প্রকাশ পায়? (জ্ঞান)
ক সংবিধান রচনা
খ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে
গ ঘন ঘন সরকার পতন
> শেখ মুজিবসহ তিনহাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৪৩. পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী যেসব ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে বঞ্চিত করে- (অনুধাবন)
র. প্রশাসনিক
রর. রাজনৈতিক
ররর. অর্থনৈতিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২৪৪. আওয়ামী মুসলিম লীগ পূর্ববাংলার জনগণের যে ধরনের স্বার্থরক্ষায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখে- (অনুধাবন)
র. রাজনৈতিক
রর. অর্থনৈতিক
ররর. সামরিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২৪৫. ১৯৫৪ সালে ‘ক’ দল ২১ দফার ভিত্তিতে নির্বাচন করে বিজয় অর্জন করে। উক্ত নির্বাচনে ‘ক’ দল- (প্রয়োগ)
র. ২২৩টি আসন পায়
রর. সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে
ররর. সরকার গঠন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২৪৬. তদানীন্তন পাকিস্তানে ‘ক’ দলটি ছিল দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল। দলটি দেশের অপর অঞ্চলের জনগণকে নানাদিক দিয়ে বঞ্চিত করে। দলটির ক্ষেত্রে সঠিক তথ্যসমূহ হলো- (প্রয়োগ)
র. দলটির নাম মুসলিম লীগ
রর. দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী
ররর. দলটি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৪৭. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ দলটি- (অনুধাবন)
র. ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত
রর. প্রথম সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক
ররর. প্রথম সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৪৮. শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। উক্ত দলটি- (প্রয়োগ)
র. জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা বলে
রর. প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের কথা বলে
ররর. কৃষকদের মধ্যে ভূমি বণ্টনের কথা বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২৪৯. পাকিস্তান সরকার ৩০ মে একটি মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করে। এ মন্ত্রিসভা- (অনুধাবন)
র. ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল
রর. ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন
ররর. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাতিল ঘোষণা করে
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫০. ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববাংলার জনগণ বুঝতে শুরু করে- (অনুধাবন)
র. পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র
রর. ভারত রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র
ররর. দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫১. পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃত্ব শুরু করে- (অনুধাবন)
র. অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে
রর. প্রশাসনিক ক্ষেত্রে
ররর. রাষ্ট্র পরিচালনার ড়্গেেত্র
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
২৫২. পূর্ববাংলার স্বার্থরক্ষার জন্য সোচ্চার রাজনৈতিক দলগুলো ছিল- (অনুধাবন)
র. আওয়ামী লীগ
রর. মুসলিম লীগ
ররর. ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৩. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ- (অনুধাবন)
র. পূর্ববাংলায় দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়
রর. পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আস্থাভাজন হয়
ররর. পাকিস্তানি শাসকদের রোষানলে পড়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৪. আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে এদেশের রাজনীতিতে যে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়- (অনুধাবন)
র. বৈষম্য বৃদ্ধি পায়
রর. জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে
ররর. জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৫. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা দাবির অন্যতম দাবি হলো- (অনুধাবন)
র. বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা
রর. শাসন ও বিচার বিভাগ একত্রীকরণ
ররর. একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস ঘোষণা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৬. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হয়েছিল সেগুলো হলো- (অনুধাবন)
র. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
রর. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ররর. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৭. যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিলের অজুহাত ছিল- (অনুধাবন)
র. কর্ণফুলী কাগজের কলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গা
রর. রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গা
ররর. আদমজী পাটকলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫৮. যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিলের ফলাফল ছিল- (অনুধাবন)
র. কেন্দ্র ও প্রদেশে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন
রর. সামরিক শাসন জারি
ররর. গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২৫৯ ও ২৬০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব বাংলায় একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়। উক্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী।
২৫৯. অনুচ্ছেদে কোন রাজনৈতিক দল গঠনের কথা বলা হয়েছে? (প্রয়োগ)
> আওয়ামী মুসলিম লীগ খ পাকিস্তান মুসলিম লীগ
গ জামায়াত-ই-ইসলামী ঘ নেজাম-ই-ইসলামী
২৬০. উক্ত রাজনৈতিক দল পূর্ববাংলার জনগণের- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় আন্দোলন করে
রর. রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় আন্দোলন করে
ররর. আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রদান করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২৬১ ও ২৬২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শাসকদের ষড়যন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মনে ক্ষোভ দানাবাঁধতে থাকে। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগকে পরাজিত করে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এদেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দ মিলে নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৯৫৪ সালে একটি জোট গঠন করে।
২৬১. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত রাজনৈতিক জোটটির নাম কী ছিল? (প্রয়োগ)
> যুক্তফ্রন্ট খ চারদলীয় জোট
গ মহাজোট ঘ সাতদলীয় জোট
২৬২. এ জোটের অন্যতম নির্বাচনি কর্মসূচি ছিল- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া
রর. ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি ঘোষণা
ররর. পাটশিল্প জাতীয়করণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
পরিচ্ছেদ-১.৩ : সামরিক শাসন ও পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ
>পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য তৎপরতা চালায়- পশ্চিম পাকিস্তান ভিত্তিক সামরিক বেসামরিক গোষ্ঠী।
>জেনারেল আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন- ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর।
>‘মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার’ প্রবর্তক- জেনারেল আইয়ুব খান।
>১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের স্থায়িত্ব ছিল- ১৭ দিন।
>১৯৬৬ সালে উত্থাপিত ছয় দফাকে বলা হয়- পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ।
>আগরতলা মামলায় ৩৫ জন আসামীর মধ্যে প্রধান ছিলেন- বঙ্গবন্ধু।
>বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা মামলা থেকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া হয়- ১৯৬৯ এর ২২ ফেব্রুয়ারি।
>১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৬৯টি আসনের মধ্যে পায়- ১৬৭টি আসন।
>১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পেছনে অপরিসীম গুরুত্ব ছিল- ১৯৭০ সালের নির্বাচন।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৬৩. কত তারিখে ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন? (জ্ঞান)
ক ৫ অক্টোবর > ৭ অক্টোবর গ ৫ নভেম্বর ঘ ৭ ডিসেম্বর
২৬৪. ১৯৫৮ সালে কে সামরিক আইন জারি করেন? (জ্ঞান)
> ইস্কান্দার মীর্জা খ আইয়ুব খান
গ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘ গোলাম মোহাম্মদ
২৬৫. ইস্কান্দার মীর্জাকে জেনারেল আইয়ুব খান কত তারিখে উৎখাত করেন? (জ্ঞান)
ক ২১ অক্টোবর খ ২৩ অক্টোবর গ ২৫ অক্টোবর > ২৭ অক্টোবর
২৬৬. ১৯৫৮ সালের কত তারিখে আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২৫ অক্টোবর খ ২৬ অক্টোবর > ২৭ অক্টোবর ঘ ২৮ অক্টোবর
২৬৭. জনাব ‘ক’ তার দেশের প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করে ক্ষমতা দখল করে এবং নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত করে। জনাব ‘ক’ পাকিস্তানের কোন শাসকের প্রতিনিধি? (প্রয়োগ)
ক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ > আইয়ুব খান
গ ইয়াহিয়া খান ঘ ইস্কান্দার মীর্জা
২৬৮. আইয়ুব খান কাকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক লিয়াকত আলী খান > ইস্কান্দার মীর্জা
গ মোহাম্মদ আলী বগুড়া ঘ ফিরোজ খান নুন
২৬৯. আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে কাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক লিয়াকত আলী খান > ইস্কান্দার মীর্জা
গ মোহাম্মদ আলী বগুড়া ঘ ফিরোজ খান নুন
২৭০. আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেকে কী হিসেবে ঘোষণা করেন? (জ্ঞান)
> প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক খ সামরিক আইন প্রশাসক
গ গভর্নর জেনারেল ঘ কেন্দ্রীয় আইন প্রশাসক
২৭১. আইয়ুব খান ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ ব্যবস্থা চালু করেন কেন? (অনুধাবন)
> সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য
খ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নের জন্য
গ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য
ঘ নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য
২৭২. আইয়ুব খান নিচের কোন ব্যবস্থাটি চালু করেন? (জ্ঞান)
ক সমাজতন্ত্র > মৌলিক গণতন্ত্র
গ সংসদীয় গণতন্ত্র ঘ রাজতন্ত্র
২৭৩. আইয়ুব খানের সময়ে প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোটার বা নির্বাচকমণ্ডলী ছিল কত হাজার? (জ্ঞান)
ক ৭০ খ ৭৫ > ৮০ ঘ ৮৫
২৭৪. আইয়ুব খান প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদ এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোন সদস্যদের দ্বারা নির্বাচকমন্ডলী গঠন করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক পুরুষ ভোটারদের
> ইউনিয়ন কাউন্সিলের সদস্যদের
গ এসএসসি পাস ভোটারদের
ঘ পশ্চিম পাকিস্তানি ভোটারদের
২৭৫. আইয়ুব খান ৮০ হাজার ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্যদের ভোটে কত সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন? (জ্ঞান)
ক ১৯৬২ খ ১৯৬৩ গ ১৯৬৪ > ১৯৬৫
২৭৬. পাকিস্তান রাষ্ট্রটির জন্মের পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে কোন বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়? (জ্ঞান)
ক সাংবিধানিক শাসন > বৈষম্যমূলক আচরণ
গ নিয়মতান্ত্রিক শাসন ঘ গণতান্ত্রিক আচরণ
২৭৭. পাকিস্তান আমলে বাজেটে বরাদ্দের চিত্রটি বিশ্লেষণ করলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে কোন বিষয়টি ফুটে ওঠে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক উদারনীতি খ গণতান্ত্রিকনীতি
> বৈষম্যনীতি ঘ সাম্যনীতি
২৭৮. ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্বপাকিস্তান মোট বাজেট বরাদ্দের কত টাকা লাভ করেছিল? (জ্ঞান)
ক ১১২ কোটি খ ১১২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার
গ১১৩ কোটি > ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার
২৭৯. ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তান মোট বাজেট বরাদ্দের কত টাকা পেয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ৩০০ কোটি খ ৪০০ কোটি
> ৫০০ কোটি ঘ ৬০০ কোটি
২৮০. ১৯৬০-৬১ সাল থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানকে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ৮,৪৮০ মিলিয়ন খ ৭,৪৮০ মিলিয়ন
> ৬,৪৮০ মিলিয়ন ঘ ৫,৪৮০ মিলিয়ন
২৮১. ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানকে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ২১,২৩০ মিলিয়ন > ২২,২৩০ মিলিয়ন
গ ২৩,২৩০ মিলিয়ন ঘ ২৪,২৩০ মিলিয়ন
২৮২. ১৯৬৬ সালে শিল্পে বাঙালিদের অবস্থান কত শতাংশ ছিল? (জ্ঞান)
ক ২৪৪% খ ২৮১% গ ২২৭% > ২৫৭%
২৮৩. ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র খাতে কত ভাগ বাঙালি ছিলেন? (জ্ঞান)
> ২২.৭% খ ২৩.৬৫% গ ২৫.৩ % ঘ ২৭.৮%
২৮৪. পাকিস্তানের শিক্ষাক্ষেত্রেমোট অফিসারের কত শতাংশ বাঙালি ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২১১% > ২৭৩% গ ২২৬% ঘ ২১২%
২৮৫. পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে মোট অফিসারের শতকরা কত ভাগ বাঙালি ছিলেন? (জ্ঞান)
> ৫ খ ১০ গ ১৫ ঘ ২০
২৮৬. পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সাধারণ সৈনিকের কত শতাংশ বাঙালি ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ৩ > ৪ গ ৭ ঘ ১০
২৮৭. পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর পাইলটদের শতকরা কত ভাগ পাইলট বাঙালি ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ১০ > ১১ গ ১৩ ঘ ১৫
২৮৮. পূর্ববাংলায় পাকিস্তান আমলে মধ্যবিত্তের বিকাশ মন্থর হয়ে পড়ে কেন? (অনুধাবন)
ক রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে > বৈষম্যমূলক নীতির কারণে
গ সাংস্কৃতিক বৈষম্যের কারণে ঘ শিক্ষার অভাবে
২৮৯. আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে কত সালে পূর্ববাংলায় আন্দোলন শুরু হয়? (জ্ঞান)
> ১৯৬১ খ ১৯৬২ গ ১৯৬৩ ঘ ১৯৬৪
২৯০. ছাত্রসমাজ কত সালে আইয়ুব খানের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে? (জ্ঞান)
ক ১৯৬০ খ ১৯৬১ > ১৯৬২ ঘ ১৯৬৩
২৯১. ১৯৬২ সালে আইয়ুবের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে কারা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে? (জ্ঞান)
ক সাধারণ জনগণ খ বুদ্ধিজীবী শ্রেণি
গ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ > ছাত্রসমাজ
২৯২. ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। এর যথার্থ কারণ কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধি > পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য
গ পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ঘ প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বৃদ্ধি
২৯৩. ছাত্রসমাজ ১৯৬২ সালে কত দফা ঘোষণা করে? (জ্ঞান)
ক ১১ খ ১২ গ ১৪ > ১৫
২৯৪. ‘এনডিএফ’ এর পূর্ণরূপ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
> ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট খ ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ফ্রন্ট
গ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফান্ড ঘ ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ফান্ড
২৯৫. ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে ভোটার ছিল কত কোটি? (জ্ঞান)
ক ৩.১৫ > ৩.২২ গ ৩.২৫ ঘ ৩.৩৫
২৯৬. কত সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৫২ খ ১৯৬৪ > ১৯৬৫ ঘ ১৯৬৬
২৯৭. ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কত দিন অব্যাহত ছিল? (জ্ঞান)
ক ২১ খ ১৯ > ১৭ ঘ ১৫
২৯৮. ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে পূর্ব পাকিস্তান কীরূপ অবস্থায় ছিল? (জ্ঞান)
ক সুরক্ষিত খ ভারত বিরোধী
> অরক্ষিত ঘ দুর্যোগ কবলিত
২৯৯. স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে বাঙালি কীরূপ রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়? (জ্ঞান)
ক মৌলবাদী খ সহিংস > জাতীয়তাবাদী ঘ অসহিংস
৩০০. কখন ঐতিহাসিক ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৪০ সালে খ ১৯৫৬ সালে
গ ১৯৬৫ সালে > ১৯৬৬ সালে
৩০১. কখন লাহোরে বিরোধী দলসমূহের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৬৬ সালের ২-৩ ফেব্রুয়ারি খ ১৯৬৬ সালের ৩-৪ ফেব্রুয়ারি
গ ১৯৬৬ সালের ৪-৫ ফেব্রুয়ারি > ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি
৩০২. শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কোন শহরে ছয়দফা পেশ করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক করাচি খ রাওয়ালপিন্ডি গ পেশোয়ার > লাহোর
৩০৩. ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে কে যোগদান করেন? (জ্ঞান)
ক শামসুল হক > শেখ মুজিবুর রহমান
গ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ঘ এ কে ফজলুল হক
৩০৪. ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন কে? (জ্ঞান)
> শেখ মুজিবুর রহমান খ শামসুল হক
গ ফজলুল হক ঘ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
৩০৫. ৬ দফা প্রস্তাবে প্রথম দফাটিতে কোন প্রসংগটি স্থান পেয়েছিল? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কর ধার্যকরণ খ মুদ্রা
গ কেন্দ্রীয় সরকার > কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা
৩০৬. ৬ দফা অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে কয়টি বিষয় থাকবে? (জ্ঞান)
ক ৫ খ ৪ গ ৩ > ২
৩০৭. ৬ দফা প্রস্তাবে প্রতিরক্ষার পাশাপাশি অপর কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক স্বরাষ্ট্র > পররাষ্ট্র গ অর্থ ঘ যোগাযোগ
৩০৮. ৬ দফা প্রস্তাবে কর ধার্য করার ক্ষমতা কার কাছে ন্যস্ত করার কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক কেন্দ্রীয় সরকার খ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
> আঞ্চলিক সরকার ঘ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
৩০৯. ৬ দফার প্রস্তাব অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার মালিক হিসেবে কার কথা বলা হয়েছিল? (জ্ঞান)
> অঙ্গরাজ্য খ কেন্দ্রীয় সরকার
গ অর্থ মন্ত্রণালয় ঘ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
৩১০. কোনটিকে পূর্ববাংলার জাতীয় মুক্তির সনদ বলা হতো? (জ্ঞান)
ক ছাত্রদের ১১ দফা খ যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা
> বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ঘ ছাত্রসমাজের ১৫ দফা
৩১১. সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব না। এটি কে বিশ্বাস করতেন? (অনুধাবন)
ক মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
খ শামসুল হক
> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ঘ শাহেদ আলী
৩১২. ‘আগরতলা’ মামলার এক নম্বর আসামি কাকে করা হয়? (জ্ঞান)
ক শামসুল হককে খ এ কে ফজলুল হককে
> শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘ তোফায়েল আহমদকে
৩১৩. কত সালে ‘আগরতলা’ মামলা করা হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৬৭ > ১৯৬৮ গ ১৯৬৯ ঘ ১৯৭০
৩১৪. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার শুনানি কবে শুরু হয়েছিল? (জ্ঞান)
> ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন খ ১৯৬৮ সালের ২০ জুন
গ ১৯৬৮ সালের ২১ জুন ঘ ১৯৬৮ সালের ২২ জুন
৩১৫. ‘আগরতলা’ মামলার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ কয় দফা পেশ করে? (জ্ঞান)
ক ২১ খ ১৫ > ১১ ঘ ৬
৩১৬. কত সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংঘটিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯৫২ খ ১৯৬২ গ ১৯৬৬ > ১৯৬৯
৩১৭. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হওয়া আসাদ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন? (জ্ঞান)
> ঢাকা খ রাজশাহী গ চট্টগ্রাম ঘ ইসলামী
৩১৮. ১৯৭০ সালের কত তারিখে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
> ১৭ ডিসেম্বর খ ২৩ নভেম্বর
গ ১১ ডিসেম্বর ঘ ১৯ ডিসেম্বর
৩১৯. ড. শামসুজ্জোহা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ঢাকা > রাজশাহী
গ চট্টগ্রাম ঘ ইসলামী
৩২০. আইয়ুব খান শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৬৯ সালের কত তারিখে মুক্তি দিতে বাধ্য হন? (জ্ঞান)
ক ১২ জানুয়ারি > ২২ ফেব্রুয়ারি
গ ৭ মার্চ ঘ ১২ মার্চ
৩২১. কত তারিখে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়? (জ্ঞান)
ক ২ মার্চ খ ২৫ ফেব্রুয়ারি
গ ২৬ মার্চ > ২৩ ফেব্রুয়ারি
৩২২. কোথায় শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়? (জ্ঞান)
> রেসকোর্স ময়দানে খ টাঙ্গাইলে
গ পল্টনে ঘ তেজগাঁওয়ে
৩২৩. ১৯৬৯ সালে কাদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে রেসকোর্স ময়দানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়? (জ্ঞান)
> ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
খ তমদ্দুন মজলিস
গ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ
ঘ সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ
৩২৪. আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিলে উক্ত পদে কে আসীন হন? (জ্ঞান)
ক ফাতেমা জিন্নাহ খ জুলফিকার আলী ভুট্টো
> ইয়াহিয়া খান ঘ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
৩২৫. পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চিস্তা-ভাবনার বিকাশ ঘটে কেন? (অনুধাবন)
ক ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করায়
খ ভাষা আন্দোলনের কারণে
গ ১৯৫৬ সালের সংবিধানের কারণে
> গণঅভ্যুত্থানের কারণে
৩২৬. পাকিস্তানের ১৯৭০ সালের নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয় কেন? (অনুধাবন)
> ইতোপূর্বে নির্বাচন না হওয়ায় খ ঘন ঘন সরকার বদল হওয়ায়
গ মন্ত্রিসভার ঘন ঘন পতন হওয়ায় ঘ মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায়
৩২৭. কত তারিখে তদানীন্তন পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
> ৭ ডিসেম্বর খ ৭ মার্চ গ ৭ নভেম্বর ঘ ৭ আগস্ট
৩২৮. ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল কতজন? (জ্ঞান)
> ৫.৬৪ কোটি খ ৫.৭০ কোটি গ ৬.৬৪ কোটি ঘ ৬.৭০ কোটি
৩২৯. ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে কামাল সাহেব ভোট প্রদান করেন। তিনি কোন নীতির ভিত্তিতে ভোট দেন? (প্রয়োগ)
> এক ব্যক্তি এক ভোট নীতি খ অসাম্যনীতি
গ বৈষম্যনীতি ঘ সাম্যনীতি
৩৩০. ৬ দফার পক্ষে নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে অভিহিত করে কোন দল? (জ্ঞান)
ক ন্যাপ খ ডেমোক্রেটিক পার্টি
গ জামায়াত-ই-ইসলামি > আওয়ামী লীগ
৩৩১. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কতটি আসন নির্ধারিত ছিল? (জ্ঞান)
ক ১৬৬ খ ১৬৭ গ ১৬৮ > ১৬৯
৩৩২. ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মোট আসন ছিল কত? (জ্ঞান)
ক ২৫০ খ ২৭০ গ ২৮০ > ৩০০
৩৩৩. ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের দুটি নির্বাচনে ‘ক’ দল নিরঙ্কুশ জয় লাভ করে। ‘ক’ দলটির নাম কী? (প্রয়োগ)
ক গণতন্ত্রী দল খ মুসলিম লীগ
গ পাকিস্তান কংগ্রেস > আওয়ামী লীগ
৩৩৪. বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে কীসের মাধ্যমে? (অনুধাবন)
ক ৬ দফা আন্দোলন > ’৭০-এর নির্বাচনে বিজয়
গ ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন ঘ ১৯৫৬ সালের সংবিধান
৩৩৫. কত সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে? (জ্ঞান)
ক ১৯৬৮ খ ১৯৬৯ গ ১৯৭০ > ১৯৭১
৩৩৬. আইয়ুব খান পূর্ব ঘোষিত কত সালের সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করেন? (জ্ঞান)
ক ১৯৫৮ > ১৯৫৯ গ ১৯৬০ ঘ ১৯৭০
৩৩৭. কত সালে গণঅভ্যুত্থান ঘটে? (জ্ঞান)
ক ১৯৬৬ খ ১৯৬৭ গ ১৯৬৮ > ১৯৬৯
৩৩৮. ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্প ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে কেন? (অনুধাবন)
ক শিক্ষার অভাবে > অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে
গ শিল্পনীতির অভাবে ঘ দুর্যোগের কারণে
৩৩৯. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান কোন ধরনের আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করে? (জ্ঞান)
ক নিয়মতান্ত্রিক খ অহিংস
গ সাংবিধানিক > বিপ্লবাত্মক
৩৪০. ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত একটি প্রদেশে সরকার ১১৩ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রদেশটির নাম কী? (প্রয়োগ)
> পূর্ব পাকিস্তান খ অন্ধ্রপ্রদেশ গ পশ্চিমবঙ্গ ঘ বেলুচিস্তান
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৪১. পাকিস্তানের সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি- (অনুধাবন)
র. পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর জন্য
রর. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য
ররর. সামরিক বাহিনীর ষড়যন্ত্রের কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪২. আইয়ুব খান সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেন- (অনুধাবন)
র. ৮০ হাজার সদস্যের মাধ্যমে নির্বাচন
রর. হ্যাঁ-না ভোটের ব্যবস্থা
ররর. শুধু জাতীয় পরিষদ নির্বাচন
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪৩. পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় যেসব ক্ষেত্রে অগ্রসর ছিল- (অনুধাবন)
র. অর্থনৈতিক
রর. সামাজিক
ররর. শিক্ষা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৪৪. বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় যেসব ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে- (অনুধাবন)
র. অর্থনৈতিক
রর. প্রতিরক্ষা
ররর. প্রশাসনিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৪৫. পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল- (অনুধাবন)
র. প্রাথমিক শিক্ষায়
রর. মাধ্যমিক শিক্ষায়
ররর. উচ্চতর শিক্ষায়
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪৬. ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী যেসব বিষয়ে অভিযোগ তোলে- (অনুধাবন)
র. রবীন্দ্র সংগীত হিন্দু সংস্কৃতি
রর. নজরুল ইসলামের গানে হিন্দুয়ানি
ররর. ইসলাম বিপন্ন হওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৪৭. ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বাঙালি ছিল- (অনুধাবন)
র. দেশরক্ষায় ৮.১%
রর. আইন ক্ষেত্রে ১৯%
ররর. স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ১৯%
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪৮. পাকিস্তানের কেন্দ্র ও প্রদেশে ঘন ঘন সরকার পতনের পিছনে যৌক্তিক কারণ হলো- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্ত
রর. বিমানবাহিনীর ষড়যন্ত্র
ররর. সামরিক বাহিনীর চক্রান্ত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪৯. আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে যে ঘোষণা দেন তাতে যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে- (অনুধাবন)
র. গণতন্ত্রপ্রীতি
রর. নির্বাচন স্থগিত করা
ররর. দুর্নীতি হ্রাসের আশাবাদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫০. ৬ দফা দাবির মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে- (অনুধাবন)
র. স্বায়ত্তশাসনের দাবি
রর. সর্বজনীন ভোটাধিকারের দাবি
ররর. আধাসামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৫১. পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করার জন্য ভূমিকা রেখেছিল- (অনুধাবন)
র. পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী
রর. রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
ররর. সামরিক বাহিনী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫২. ক্ষমতা দখল করে আইয়ুব খান নিজে যে সব পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তা হলো- (অনুধাবন)
র. প্রেসিডেন্ট
রর. প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক
ররর. সেনাপ্রধান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৫৩. পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারির পর- (অনুধাবন)
র. ১৯৫৬ সালে গৃহীত সংবিধান বাতিল করা হয়
রর. কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়
ররর. মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫৪. প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হয়ে আইয়ুব খান – (অনুধাবন)
র. নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা দেন
রর. রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন
ররর. ১৯৫৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫৫. উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে যুক্ত হয়- (অনুধাবন)
র. সকল গণতান্ত্রিক দল
রর. পেশাজীবী সংগঠন
ররর. সকল স্তরের মানুষ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৫৬. গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে যুক্ত হতে গিয়ে শহিদ হন- (অনুধাবন)
র. মওলানা ভাসানী
রর. আসাদ
ররর. ড. শামসুজ্জোহা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫৭. ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের ব্যাপক প্রভাব পড়ে- (অনুধাবন)
র. আগরতলা মামলা প্রত্যাহারে
রর. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে
ররর. ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৫৮. পূর্ববাংলার জনগণ স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে-
(অনুধাবন)
র. নিজেদের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য
রর. নিজেদের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য
ররর. নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৫৯. পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে – (অনুধাবন)
র. পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন দানাবেঁধে ওঠে
রর. বাঙালিরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে
ররর. পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যবিত্তের বিকাশ মন্থর হয়ে পড়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৬০. জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট – (অনুধাবন)
র. সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে
রর. সাংবিধানিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত হয়
ররর. ১২ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
> র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৬১. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার আসামি ছিলেন- (অনুধাবন)
র. সামরিক কর্মকর্তাগণ
রর. বেসামরিক কর্মকর্তাগণ
ররর. প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তাগণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
৩৬২. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে – (অনুধাবন)
র. আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে
রর. পাকিস্তানের স্বার্থান্বেষী মহলের পরাজয় ঘটে
ররর. বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৬৩ ও ৩৬৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩টি সদরদপ্তর ও সমরাস্ত্র কারখানা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। সামরিক বাহিনীর অফিসার পদে মাত্র শতকরা ৫ ভাগ ছিলেন বাঙালি। সেনাবাহিনীর মাত্র ৪ ভাগ লোক বাঙালি ছিলেন। সামরিক বাহিনীর জন্য বাজেটের বেশিরভাগ ব্যয় করা হতো পশ্চিম পাকিস্তানে।
৩৬৩. অনুচ্ছেদে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কোন বৈষম্যের দিকটি ফুটে উঠেছে? (প্রয়োগ)
ক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য > সামরিক ক্ষেত্রে বৈষম্য
গ প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বৈষম্য ঘ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য
৩৬৪. উক্ত বৈষম্যের বাস্তব ফল হলো- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্ত অরক্ষিত থাকত
রর. পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত অরক্ষিত থাকত
ররর. পূর্ব পাকিস্তানিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর > রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৬৫ ও ৩৬৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মুশফিক দশ টাকার কাগুজে নোটে একজন নেতার ছবি দেখে। যিনি ৬ দফা দাবি পাকিস্তানি শাসকদের কাছে তুলে ধরেছিলেন।
৩৬৫. মুশফিক দশ টাকার কাগুজে নোটে কার ছবি দেখতে পেয়েছে? (প্রয়োগ)
ক জিয়াউর রহমান খ মওলানা ভাসানী
> শেখ মুজিবুর রহমান ঘ হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী
৩৬৬. অনুচ্ছেদে যে আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে তার বিষয়বস্তু ছিল-
(উচ্চতর দক্ষতা)
র. বৈষম্যহীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিনির্মাণ
রর. বৈদেশিক সাহায্যে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
ররর. রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর > র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৬৭ ও ৩৬৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রিমির দাদা ছিলেন লে. কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসাইন। তিনি পাকিস্তানি শাসনামলে মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছিলেন। এ মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ সামরিক বাহিনীর অনেক অফিসারও গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে পাকিস্তানি সরকার এ মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়।
৩৬৭. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত মামলাটি ইতিহাসে কী নামে পরিচিত? (প্রয়োগ)
> আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা খ ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা
গ কলকাতা ষড়যন্ত্র মামলা ঘ মেহেরপুর ষড়যন্ত্র মামলা
৩৬৮. উক্ত মামলা দায়েরের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী যা হাসিল করতে চেয়েছিল তা হলো- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যদের অত্যাচার করা
রর. গোপন বিচারে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়া
ররর. ৬ দফা আন্দোলন দমন করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৬৯ ও ৩৭০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মিজান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে একটি ছাত্র সংগঠনের মিছিল দেখতে পায়। মিছিলটিতে অল্পসংখ্যক ছাত্রছাত্রী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল বের করেছে।
৩৬৯. মিজানের দেখা মিছিলটির সাথে বাংলার কোন আন্দোলনের সাদৃশ্য রয়েছে? (প্রয়োগ)
ক ৬ দফা আন্দোলন > ১১ দফা আন্দোলন
গ ভাষা আন্দোলন ঘ গণঅভ্যুত্থান
৩৭০. অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ আন্দোলনটির শিক্ষা সম্পর্কিত দাবি ছিল-
(উচ্চতর দক্ষতা)
র. জাতীয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাতিল
রর. কালাকানুন বাতিল
ররর. শিক্ষা ব্যয় সংকোচন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৭১ ও ৩৭২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মিশরীয় স্বৈরশাসকের নির্যাতন নিষ্পেষণে অতিষ্ঠ হয়ে মিশরীয় জনগণ স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। প্রতিবাদ একসময় রাজতান্ত্রিক স্বৈরশাসকের পতন ঘটায়। ফলে মিশরে নতুন করে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।
৩৭১. অনুচ্ছেদের মিশরীয় ঘটনাটির সাথে বাংলার ইতিহাসের কোন ঘটনাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ? (প্রয়োগ)
> ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান খ ভাষা আন্দোলন
গ ৬ দফা আন্দোলন ঘ ১১ দফা আন্দোলন
৩৭২. মিশরীয় জনগণের প্রতিবাদের সাথে বাংলার ইতিহাসের সংশ্লিষ্ট ঘটনাটিতে বাংলার জনগণের সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিবাদ ছিল- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. গণতন্ত্র বাস্তবায়ন
রর. অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান
ররর. সামরিক চক্রের কর্তৃত্ব বিলুপ্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর > র, রর ও ররর
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ ৬ দফা : পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ
একটি দেশের ‘ক’ নামক প্রদেশের সাথে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাপক বৈষম্যমূলক আচরণ করে। প্রতিবাদে ঐ প্রদেশের একজন জনপ্রিয় নেতা এক সাংবাদিক সম্মেলনে সরকার ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, মুদ্রা, বৈদেশিক মুদ্রার হিস্যা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাহিনীসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে স্বায়ত্তশাসনের দাবি পেশ করেন। শুরু হয় আন্দোলন। ফলে উক্ত নেতার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ মামলা দিয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু করে।
ক. যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিলেন? ১
খ. ভাষা আন্দোলন কীভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটায়? ২
গ. উদ্দীপকের আন্দোলনের সাথে তোমার পাঠ্যপুস্তকের যে ঐতিহাসিক ঘটনার মিল রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত ঘটনা এবং উক্ত ঘটনার পরিণতি কি একই ছিল? মূল্যায়ন কর। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . যুক্তফ্রন্ট সরকার ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিলো।
খ . বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি ভাষা আন্দোলন পূর্ব যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তারা বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গ . উদ্দীপকে উলিস্নখিত আন্দোলনের সাথে আমার পাঠ্যপুস্তকের যে ঐতিহাসিক ঘটনার মিল রয়েছে তা হলো ছয় দফা। ঐতিহাসিক ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চূড়ান্ত প্রকাশ। এটি ছিল বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। বাঙালির মুক্তির সনদ। ফলে এ কর্মসূচির প্রতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। উদ্দীপকের দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই, ‘ক’ প্রদেশের নেতা কেন্দ্রীয় সরকারের সকল প্রকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে কতগুলো দাবি পেশ করেন এবং এ সকল দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু হয়। তদ্রূপভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে উদ্দীপকের ন্যায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি লক্ষ করা যায়। পূর্ব বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পশ্চিম পাকিস্তানের সকল বৈষম্যের হাত থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফা দাবি পাক শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক প্রত্যাখ্যান করা হলে এ দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলন শুরু হয়। উদ্দীপকে উলিস্নখিত নেতার দাবিতে প্রদেশের যেসকল বিষয় উঠে এসেছে তেমনি ছয় দফা দাবিতে ঐসকল বিষয়ই তুলে ধরেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাই একবাক্যে বলা যায়, উদ্দীপকের ঘটনার সাথে ঐতিহাসিক ছয় দফার ঘটনাটির সাদৃশ্যই বিদ্যমান।
ঘ . উদ্দীপকে উলিস্নখিত ঘটনার পরিণতিতে আন্দোলন শুরু হলে ‘ক’ নামক এদেশের জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ মামলা দিয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবিনামার ঘটনার পরিণতিও একই রূপ ছিল। ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে। আইয়ুব সরকার একে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ কর্মসূচি বাঙালির চেতনা-মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির চূড়ান্ত লড়্গ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং তাঁর বিশ্বাস ছিল শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সশস্ত্র পন্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সে সময়ে গোপনে গঠিত বিপস্নবী পরিষদের সদস্যদের তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন। এদিকে ৬ দফা আন্দোলনও তখন তুঙ্গে। এ অবস্থায় বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর আসামি করে রাজনীতিবিদ, বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক ও প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা এবং অন্যান্য বেসামরিক ব্যক্তিবর্গসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি দণ্ডবিধির ১২১-এ ও ১৩১ ধারায় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে সশস্ত্র পন্থায় স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়। বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন তারিখে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবিনামার পরিণতিতে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার ঘটনা পর্যন্ত ইতিহাসের গতিধারার সাথে উদ্দীপকে ‘ক’ নামক প্রদেশের ঘটনার পরিণতির মিল রয়েছে।
প্রশ্ন- ২ ভাষা আন্দোলনের পটভূমি
সুমনের নানা শামসুদ্দিন সাহেব দেশের গল্প শোনাতে গিয়ে সুমনকে একটি আন্দোলনের কথা বললেন যা ৪০ এর দশকে শুরু হয়ে ৫০ এর দশকে শেষ হয়। তিনি পূর্বাপর সকল ঘটনা বর্ণনা করে বললেন, “এতে অনেকে শহিদ হলেও এটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত রচনা করে।”
ক. কাকে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়? ১
খ. ৬ দফাকে পূর্ব বাংলার ‘মুক্তির সনদ’ বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে সুমনের নানা সুমনকে যে আন্দোলনের কথা শুনালেন তার প্রেক্ষাপট বর্ণনা কর। ৩
ঘ. উক্ত আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত রচনা করে- তুমি কি এ উক্তিটির সাথে একমত? বিশেস্নষণ কর। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়।
খ. ৬ দফা পূর্ববাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে। এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। তাই ৬ দফা আন্দোলনকে পূর্ববাংলা বা বাঙালির মুক্তির সনদ বলা হয়।
গ . উদ্দীপকে সুমনের নানা সুমনকে ভাষা আন্দোলনের কথা শোনান।
উদ্দীপকে সুমনের নানা শামসুদ্দিন সাহেব ৪০ এর দশক থেকে ৫০ এর দশকে শেষ হওয়া যে আন্দোলনের কথা বলেন তা ’৪৭ থেকে শুরু হয়ে ’৫২ তে পরিণতি লাভ করা ভাষা আন্দোলনকেই নির্দেশ করে। এ আন্দোলনে অনেকে শহিদ হন।- তথ্যটিও ভাষা আন্দোলনের ইঙ্গিতবাহী। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এ দুটি অংশ নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। তবে শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাষক গোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করতে থাকে। আর সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা না করার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মাতৃভাষা রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা প্রদান করেন। প্রতিবাদে ছাত্রসমাজ ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট এবং রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে গুলি করে। এতে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন, আহত হন। বস্তুত ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ নেয়।
ঘ. উক্ত আন্দোলন অর্থাৎ বাঙালির মাতৃভাষা আন্দোলনই স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত রচনা করে। আমি এ বিষয়ে একমত। পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পূর্ব বাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে। মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপলাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ভাষা আন্দোলন এ দেশের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। অর্থাৎ বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি আগে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক জাতীয় ঐক্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এ বাঙালি জাতীয়তাবাদই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে জনগণকে অনুপ্রাণিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। সর্বোপরি আমি মনে করি, ভাষা আন্দোলনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত রচনা করে।
প্রশ্ন- ৩ ভাষা আন্দোলন
বিরল সম্মান আর শ্রদ্ধার আসনে ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু এ অর্জন সহজ পথে আসেনি। নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য, নিজের ভাষায় শিক্ষা অর্জনের অধিকার রক্ষার জন্য এদেশের ছাত্রজনতা রাজপথে নিজেদের বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করেছিল। এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা বিভিন্ন আন্দোলনের সংগ্রামী চেতনা গ্রহণ করেছিল। যার ফল আজকের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
ক. কত সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ঘটেছিল? ১
খ. ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কারণ কী ছিল? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা কীভাবে জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘আন্দোলনের পথ ধরেই আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ’- পাঠ্যপুস্তকের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা নির্ণয় কর। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ঘটেছিল।
খ . ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কারণ ছিল বন্দিদের মুক্তি ও আগরতলা মামলা প্রত্যাহার। পাক শাসকগোষ্ঠীর চরম অত্যাচার ও নির্যাতনে পূর্ববাংলার জনগণ যখন মনে মনে তুষের আগুনের ন্যায় জ্বলছিল ঠিক সে সময় ছয় দফা দাবি প্রত্যাখ্যান ও শেখ মুজিবসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করায় বাঙালি প্রকাশ্যে প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। যা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। মূলত এ কারণেই ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল।
গ . উদ্দীপকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির স্মৃতিবিজড়িত ভাষা আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ লাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্তও করা হয়। নিজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠী মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস ও আত্মপ্রত্যয় খুঁজে পায়। বাঙালিরা জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়। ফলে দেখা যায়, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর পঞ্চাশের দশক ব্যাপী ছিল বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিকাল। ভাষা আন্দোলন পরবর্তীকালে সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। এ আন্দোলন এ দেশের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। এ আন্দোলন বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তোলে। পাকিস্তানি শাসনপর্বে এটি তাদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলন। আর এভাবে বাঙালিরা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়।
ঘ . ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়। জন্ম নেয় ভারত এবং পাকিস্তান নামে দু’টি স্বাধীন রাষ্ট্র। পাকিস্তানের ছিল দু’টি অংশ। পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ অংশের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান অপর অংশটি পশ্চিম পাকিস্তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রিভূত হওয়ায় পূর্ব বাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে। মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। এর মাধ্যমে পূর্ব বাংলার বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়। মাতৃভাষা রক্ষার চেতনা থেকে পূর্ব বাংলার জনগণ ক্রমান্বয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম ও গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলে। ভাষা আন্দোলন ও ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতা অর্জনের পথে দুটি মাইলফলক। অতঃপর ঐতিহাসিক ছয় দফার ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পড়্গে ভোট প্রদানের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার জনগণ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করে। বাংলা ভাষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিগত পরিচয়ে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়। এই জাতীয় ঐক্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এ বাঙালি জাতীয়তাবাদই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে জনগণকে অনুপ্রাণিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে নয়মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ৪ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্যসমূহ
ঐশীর বাবা একজন সচিব। তার চাচা সামরিক বাহিনীর একজন পদস্থ অফিসার। দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত তাদের অনেক আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং তাদের এলাকার অনেকেই আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রেপ্রতিষ্ঠিত। পক্ষান্তরে ঐশীর দাদা মি. রাকিব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শেষ করেছেন। ১৯৫২ ও ১৯৬৯ এর আন্দোলনের ফলে ঐশীরা আজ বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক।
ক. যুক্তফ্রন্ট কতটি দল নিয়ে গঠিত হয়? ১
খ. মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মি. রাকিবের এই পরিণতির জন্য দায়ী কারণসমূহ সনাক্ত করে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ১৯৫২ ও ১৯৬৯ এর আন্দোলনের ফলে ঐশীরা আজ বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক- উক্তিটির যথার্থতা প্রমাণ কর। ৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . যুক্তফ্রন্ট ৪টি দল নিয়ে গঠিত হয়।
খ . সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লড়্গ্েয আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মোট ৮০ হাজার নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্য নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী গঠন হবে। তাদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রাখা হয়। ফলে এই পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে আইয়ুব খান খুব সহজেই নিজের সামরিক শাসন পাকাপোক্ত করতে পারেন। এ কারণেই মৌলিক গণতন্ত্র নামে তিনি একটি ব্যবস্থা চালু করেন।
গ . মি. রাকিবের এই পরিণতি অর্থাৎ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিম্নবেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শেষ করার পিছনে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রশাসনিক বৈষম্যই দায়ী। উদ্দীপকে মি. রাকিব তার কর্মজীবন পাকিস্তান আমলে শেষ করেন। উদ্দীপকে ১৯৫২ ও ১৯৬৯ সালের আন্দোলনের উলেস্নখ তা নির্দেশ করে। মূলত ১৯৪৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণ প্রতিষ্ঠার ফলে পূর্ব পাকিস্তান সর্বক্ষেত্রেবৈষম্যের শিকার হয়। মূলত প্রশাসনিক ক্ষেত্রেবৈষম্য ছিল ব্যাপক। পাকিস্তানের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের ভূমিকা ছিল অতি নগণ্য। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান প্রশাসনের চিত্র ছিল নিম্নরূপ :
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান প্রশাসনের চিত্র
নং | খাত | বাঙালি পশ্চিম | পাকিস্তানি |
১. | প্রেসিডেন্টের সচিবালয় | ১৯% | ৮১% |
২. | দেশরক্ষা | ৮.১% | ৯১.৯% |
৩. | শিল্প | ২৫.৭% | ৭৪.৩% |
৪. | স্বরাষ্ট্র | ২২.৭% | ৭৭.৩% |
৫. | তথ্য | ২০.১% | ৭৯.৯% |
৬. | শিক্ষা | ২৭.৩% | ৭২.৭% |
৭. | স্বাস্থ্য | ১৯% | ৮১% |
৮. | আইন | ৩৫% | ৬৫% |
৯. | কৃষি | ২১% | ৭৯% |
উপরিউক্ত পদোন্নতির ড়্গেেত্রও পশ্চিম পাকিস্তানিদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। তাই যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও বাঙালি হিসেবে মি. রাকিব সারাজীবন নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে থাকেন।
ঘ . ১৯৫২ ও ১৯৬৯-এর আন্দোলনের ফলে ঐশীরা আজ বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থান দুইটি মাইলফলক। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক ও স্বাধিকার আন্দোলন। পরবর্তীকালে এই আন্দোলন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্ম দেয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশের প্রথম পদক্ষপে ছিল এই আন্দোলন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে এই আন্দোলন ব্যাপক রূপ লাভ করে। সারা দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে ওঠে। পৃথিবীতে ভাষার জন্য প্রথম শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে। এভাবে ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষা দেয়। অতঃপর আন্দোলনের নানা পর্যায় পেরিয়ে ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থানে বাঙালির শক্তি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির পর ঊনসত্তর গণআন্দোলন নতুন রূপ লাভ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারির সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধুর ১১ দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ৬ দফা ও ১১ দফা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ প্রতিশ্রুতি দেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গ্রাম ও শহরের কৃষক ও শ্রমিকদের মাঝে শ্রেণি চেতনার উন্মেষ ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী পরিপূর্ণতা লাভ করে, যাতে বলীয়ান হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি, ১৯৫২ ও ১৯৬৯-এর আন্দোলনের ফলে ঐশীরা আজ বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক-প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন- ৫ ছয়দফা কর্মসূচি
জনাব রহমান একজন জনপ্রিয় আঞ্চলিক নেতা। তিনি জনগণের অধিকার আদায়ে বেশ কিছু পদক্ষপে গ্রহণ করেন। তিনি শাসকগোষ্ঠীর নিকট তার অঞ্চলের জন্য দাবি করেন ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক পরিচালনার ক্ষমতা, প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্ক, সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও আইনসভা গঠন, রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা।
ক. ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কত শতাংশ ছিল? ১
খ. বঙ্গবন্ধুর ‘দ্বিতীয় বিপস্নব কর্মসূচি’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. জনাব রহমান-এর দাবিনামায় বঙ্গবন্ধুর কোন কর্মসূচির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উক্ত দাবিনামা বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের ক্ষত্রে প্রস্তুত করেছিল।”- উক্তিটির মূল্যায়ন কর। ৪
ক . ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ শতাংশ।
খ . বঙ্গবন্ধু শোষণহীন সমাজ গঠনের লড়্গ্েয ‘দ্বিতীয় বিপস্নবের’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ যখন ব্যস্ত তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সংকট, ১৯৭৩-৭৪ সালে বন্যায় দেশে খাদ্যোৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়। ফলে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়। দেশের অভ্যন্তরে মজুদদার, দুর্নীতিবাজ এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী তৎপর হতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর সরকার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণহীন সমাজ গঠনের লড়্গ্েয আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন দল নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেন। দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেতিনি নতুন একটি ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেন। এটিকে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপস্নব’ বলে অভিহিত করেন।
গ . জনাব রহমান-এর দাবিনামায় বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা কর্মসূচির প্রতিফলন ঘটেছে। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যোগদান করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ৬ দফা তুলে ধরেন। দফাগুলো হচ্ছে-
১. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাধীনে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার হবে। সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠান।
২. কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে মাত্র দুটি বিষয় থাকবে, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যান্য সকল বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
৩. সারা দেশে হয় অবাধে বিনিয়োগযোগ্য দু’ধরনের মুদ্রা, না হয় বিশেষ শর্ত সাপেড়্গে একই ধরনের মুদ্রা প্রচলন করা।
৪. সকল প্রকার কর ধার্য করার ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। আঞ্চলিক সরকারের আদায়কৃত রাজস্বের একটা নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
৫. অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মালিক হবে, এর নির্ধারিত অংশ তারা কেন্দ্রকে দেবে।
৬. অঙ্গ রাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধাসামরিক বাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে জনাব রহমান এর দাবিনামা মূলত বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা কর্মসূচির প্রতিফলন।
ঘ . উক্ত দাবিনামা তথা বঙ্গবন্ধুর ‘৬ দফা দাবি’ বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের ক্ষত্রে প্রস্তুত করেছিল। পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে। আইয়ুব সরকার একে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনা-মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬-দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। এটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। পাকিস্তান সরকার এটি গ্রহণ না করে দমন-পীড়ন শুরু করলে আন্দোলন অনিবার্য হয়ে ওঠে। এ আন্দোলন ছিল মূলত স্বাধিকারের আন্দোলন। পরবর্তীতে এ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ও ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশের উদ্ভবও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে ‘৬ দফা দাবি’-ই বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের ক্ষত্রে প্রস্তুত করেছিল।
প্রশ্ন- ৬ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন
নবাবপুর ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে রহমত আলী চেয়ারম্যান হিসাবে আছেন। কোনোভাবেই নির্বাচন হতে দেন না। এবার সব বাধা পার করে এলাকার লোকজন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। নির্বাচনে উক্ত চেয়ারম্যানকে পরাজিত করতে কয়েকটি দল একত্রিত হয়ে একজনকে মনোনয়ন দেয় এবং জনগণের সামনে তারা নির্বাচন-পূর্ব বেশ কয়েকটি দফা উপস্থাপন করেন। নির্বাচনে তাদের মনোনীত ব্যক্তি জিতলেও কিছুদিন পর কর্তৃপক্ষ উক্ত নির্বাচন বাতিল করে।
ক. কার নেতৃত্বে গণআজাদী লীগ গঠিত হয়? ১
খ. পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রেযে বৈষম্য ছিল তার বিবরণ দাও। ২
গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত নির্বাচন তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন নির্বাচনের ইঙ্গিত বহন করছে? তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উলিস্নখিত রহমত আলীর মতো শাসকগোষ্ঠী বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না”-উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালে কামরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে গণআজাদী লীগ গঠিত হয়।
খ . পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ব বাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় এগিয়ে ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণের বেশি লাভ করতে থাকে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
গ . উদ্দীপকে উলিস্নখিত নির্বাচন আমার পাঠ্যবইয়ের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের ইঙ্গিত বহন করছে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর শাসক দল মুসলিম লীগ দীর্ঘদিন নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার গঠনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এছাড়া প্রাদেশিক সরকার নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানা পূর্ব বাংলার জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটানোর লড়্গ্েয ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২১ দফা প্রণয়ন শেষে ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জনগণ যুক্তফ্রন্টের ২১-দফাকে তাদের স্বার্থ রক্ষার সনদ বলে বিবেচনা করে। এই নির্বাচনে পূর্ববাংলার জনগণ পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্ব ও প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার রায় প্রদান করে। কিন্তু যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। আদমজি পাটকল ষড়যন্ত্রের একপর্যায়ে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের নির্বাচন যেন যুদ্ধফ্রন্ট নির্বাচনেরই পুনরাবৃত্তি।
ঘ . উলিস্নখিত রহমত আলীর মতো শাসকগোষ্ঠী বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। বস্তুত গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে যারা ক্ষমতায় থাকতে চায়, তারা টিকতে পারে না। বরং কখনো কখনো দেখা যায় এ ধরনের সরকার অগণতান্ত্রিক উপায়েই ক্ষমতা থেকে বিচ্যুত হয়। যেমন উদ্দীপকে রহমত আলীর মতো পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত নির্বাচনে যায় নি। অতঃপর ’৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলও নষ্ট করে। নির্বাচিত যুক্তফ্রন্টকে বরখাস্ত করে। অথচ এরা ১৯৫৮ সালে সামরিক জাস্তার রোষানলে পড়ে। ইতিহাস সাড়্গী দেয় যে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক সামরিক-বেসামরিক শাসক গোষ্ঠী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকারের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের পরস্পর বিরোধী এমএলএদের মধ্যে মারামারির মতো এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীকালে হাসপাতালে মারা যান। এরই সুযোগ নিয়ে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সারা দেশে সামরিক আইন জারি করেন। পরিশেষে আলোচনার প্রেড়্গেিত আমরা বলতে পারি জনসমর্থনহীন অগণতান্ত্রিক সরকার কোনোভাবেই বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতে পারে না। বরং অনেক ক্ষেত্রেতাদের অপসারণ হয় মর্মন্তুদ।
প্রশ্ন- ৭ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
অমি তার দাদুর সাথে বসে এমন একটি যুদ্ধের তথ্যচিত্র দেখছিল যার ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৭ দিন। এটি ছিল ‘ক’ রাষ্ট্র ও ‘খ’ রাষ্ট্রের মধ্যকার যুদ্ধ। ‘ক’ রাষ্ট্রের একটি অংশ যুদ্ধে লিপ্ত হলেও অপর অংশটি ছিল ভীষণ বিপদের মুখে। এই বিপদের সময় তারা নিজেদের মধ্যে এক ধরনের জাগরণ অনুভব করে এবং অধিকার রক্ষায় সচেতন হয়ে ওঠে।
ক. ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে কী নামে গঠিত হয়? ১
খ. “পাকিস্তানের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের ভূমিকা ছিল নগণ্য।”- উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত যুদ্ধের সাথে পাঠ্যপুস্তকের কোন যুদ্ধের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই ছয়-দফার উৎপত্তি?-যুক্তিসহ তোমার মতামত উপস্থাপন কর। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নামে গঠিত হয়।
খ . পাকিস্তানের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের ভূমিকা ছিল অতি নগণ্য। প্রশাসনিক ক্ষেত্রেবৈষম্য ছিল ব্যাপক। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ে ৮১% পশ্চিম পাকিস্তানি নিয়োজিত ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের ছিল মাত্র ১৯%। তদ্রূপ দেশরক্ষায় ছিল মাত্র ৮.১%, শিল্পখাতে ২৫.৭%, স্বরাষ্ট্র খাতে ২২.৭%, তথ্য খাতে ২০.১%, শিক্ষা খাতে ২৭.৩%, স্বাস্থ্য খাতে ১৯%, আইনে ৩৫% এবং কৃষিতে পূর্ব পাকিস্তানি ছিল মাত্র ২১%। প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের অংশগ্রহণের এ শতকরা হিসাবই প্রমাণ করে পাকিস্তানের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ছিল নগণ্য।
গ . উদ্দীপকে উলিস্নখিত যুদ্ধের সাথে পাঠ্যপুস্তকের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মিল রয়েছে। ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধ ১৭ দিন ধরে অব্যাহত ছিল। উদ্দীপকে উলিস্নখিত যুদ্ধেরও ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৭ দিন। এটি ছিল ‘ক’ রাষ্ট্র ও ‘খ’ রাষ্ট্রের মধ্যকার যুদ্ধ। ‘ক’ রাষ্ট্রের একটি অংশ যুদ্ধে লিপ্ত হলেও অপর অংশটি ছিল ভীষণ বিপদের মুখে। এই বিপদের সময় তারা নিজেদের মধ্যে এক ধরনের জাগরণ অনুভব করে এবং অধিকার রক্ষায় সচেতন হয়ে ওঠে। অনুরূপভাবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণরূপে অরক্ষতি ছিল। বিষয়টি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং বৈষম্যমূলক মনে হয়েছিল।
ঘ . আমি মনে করি উক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তথা ’৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেড়্গেিতই ছয় দফার উৎপত্তি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পূর্ব পাকিস্তান কেবল নিজেদের অরক্ষতিই পায় নি, বরং এ সময় ‘ইসলাম বিপন্ন হওয়া’, রবীন্দ্র সঙ্গীতকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’, নজরুল ইসলামের গানে ‘হিন্দুয়ানি’র অভিযোগ তুলে এসবের চর্চা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে। বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হতে থাকে। অতঃপর পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। এ প্রেড়্গেিত আমি মনে করি, ’৬৫ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই ছয় দফার উৎপত্তি।
প্রশ্ন- ৮ ভাষা আন্দোলনের প্রভাব
আঁখি তার বন্ধু লুসির জন্মদিনের শুভেচ্ছায় বাংলায় ‘শুভ জন্মদিন’ লিখে পাঠিয়ে গর্ববোধ করে। পাশ্চাত্য ভাবধারায় বেড়ে ওঠা লুসি তার কাজটি সমর্থন করতে পারে নি। সে ইংরেজিতে প্রচলিত শব্দ ‘ঐঅচচণ ইওজঞঐ উঅণ’ আশা করেছিল।
ক. কত সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়? ১
খ. জাতীয়তাবোধ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. আঁখির মানসিকতায় ঐতিহাসিক কোন ঘটনার ইংগিত পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর লুসির চিস্তাচেতনা বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশের অন্তরায়? যুক্তিসহ লেখ। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়।
খ . ‘জাতীয়তাবোধ’ এক ঐক্যের অনুভূতি। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে যখন ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক সকলের মধ্যে অনুভূত হয়, যখন নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির গুরুত্ব তারা উপলব্ধি করে তখন যে ঐক্য চেতনা অনুভূত হয় তাই জাতীয়তাবোধ ।
গ . আঁখির মানসিকতায় ভাষা আন্দোলনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। কারণ ভাষা আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই ছিল বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করা, বাঙালির মুখের ও লেখার ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। মূলত ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানিদের ওপর নানা ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করে। পুরো পাকিস্তানের মোট জনগোষ্ঠীর ৫৬ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে এই আন্দোলন ব্যাপক রূপলাভ করে। এই আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিকসহ আরও অনেকে শহিদ হন। অবশেষে শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের দাবি মেনে নেয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, আঁখি তার বন্ধু লুসির জন্মদিনের শুভেচ্ছায় বাংলায় ‘শুভ জন্মদিন’ লিখে পাঠায়। এ বিষয়ের মাধ্যমে আঁখির মানসিকতায় ভাষা আন্দোলনের প্রভাব ফুটে ওঠে।
ঘ . আমি মনে করি লুসির চিস্তা চেতনা বাংলা ভাষা বিকাশের অন্তরায়। ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক স্বাধিকার আন্দোলন। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশের প্রথম পদক্ষেপ ছিল এই ভাষা আন্দোলন। ভাষার জন্য শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং আরও অনেকে। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা। বহু ত্যাগ তিতিক্ষার পর আমরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেয়েছি। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশ্বের ইতিহাসে অনন্যসাধারণ ঘটনা হিসেবে আমাদের ভাষা ও শহিদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে। ভাষা আন্দোলনের এ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আঁখি তার বন্ধু লুসিকে জন্মদিনে বাংলায় ‘শুভ জন্মদিন’ লিখে পাঠায়। পাশ্চাত্য ভাবধারায় বেড়ে ওঠা তার বন্ধু লুসি ইংরেজিতে প্রচলিত শব্দ ‘ঐঅচচণ ইওজঞঐ উঅণ’ আশা করেছিল। বাংলা ভাষা চর্চা না করে বিদেশি ভাষা চর্চা করলে নিজস্ব সংস্কৃতিকে বিসর্জন দেওয়া হয়। বাংলা ভাষার বিকশিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। এতে বাংলা ভাষার সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়। এতে বাঙালি চেতনাবোধ নষ্ট হয়ে যায়। অথচ লুসির চিস্তা চেতনা তেমনই। সুতরাং লুসির চিস্তাচেতনা বাংলা ভাষা বিকাশের অন্তরায়।
প্রশ্ন- ৯ ভাষা আন্দোলন
প্রভাত ফেরি, প্রভাত ফেরি আমায় নিবে সঙ্গে
বাংলা আমার বচন আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।
আগামীকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে রাতুল আবৃত্তি করবে। তার মা কবিতাটি শেখাচ্ছেন। রাতুলের আবৃত্তি শুনে বৃদ্ধ দাদু মোশারফ সাহেবের তার ছাত্রজীবনের একটি আন্দোলনের কথা মনে পড়ে গেল। ফেব্রুয়ারি মাসের সেই দিনে ঢাকা শহরে ছাত্রজনতা বিশাল মিছিল নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। শুরু হয় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ। সেই গোলাগুলিতে অনেকে শহিদ হন।
ক. ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় কবে? ১
খ. ‘তমদ্দুন মজলিস’ সংগঠনটির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের মোশারফ সাহেবের মনে পড়া আন্দোলনটির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে উক্ত আন্দোলন সকলকে ঐক্যবদ্ধ করেছে’- তোমার মতামত বিশেস্নষণ কর। ৪
ক . ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে।
খ . সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠা তমদ্দুন মজলিসের উদ্দেশ্য ছিল মূলত বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিস নামক একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ৬-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত উক্ত সংগঠনের যুবকর্মী সম্মেলনে ‘বাংলাকে শিক্ষা ও আইন আদালতের বাহন’ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর এই সংগঠন ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। এ সময়ে তমদ্দুন মজলিস ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে। অর্থাৎ তমদ্দুন মজলিসের উদ্দেশ্য ছিল মূলত ভাষার দাবি আদায় করা।
গ . উদ্দীপকে মোশারফ সাহেবের মনে পড়া আন্দোলনটি হলো বাঙালির মাতৃভাষা আন্দোলন। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা না করার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও তিনি অনুরূপ ঘোষণা দিলে ছাত্রসমাজ ‘না, না’ বলে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা প্রদান করেন। প্রতিবাদে ছাত্রসমাজ ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট এবং রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে গুলি করে। এতে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন, আহত হন। উদ্দীপকে মোশারফ সাহেবের এ ঘটনাই মনে পড়ে যায়। বস্তুত ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ নেয়। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
ঘ . উক্ত আন্দোলন অর্থাৎ বাঙালির মাতৃভাষা আন্দোলনই বাঙালির মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করে। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এ দুটি অংশ নিয়ে গড়ে ওঠে পাকিস্তান রাষ্ট্র। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পূর্ব বাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে। মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপলাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ভাষা আন্দোলন এ দেশে মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। অর্থাৎ বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি আগে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন- ১০ ভাষা আন্দোলন
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় মোট আসামির সংখ্যা কত ছিল? ১
খ. ভিশন-২০২১ এর লড়্গ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের এগিয়ে যাওয়ার একটি কারণ বর্ণনা কর। ২
গ. উদ্দীপকে প্রদত্ত চিত্রটি আমাদের কোন ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়? আলোচনা কর। ৩
ঘ. উক্ত ঘটনাটি বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে অসামান্য অবদান রাখে- বিশেস্নষণ কর। ৪
ক . ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ছিল ৩৫ ।
খ . ভিশন-২০২১ এর লড়্গ্যমাত্রা অর্জনে সরকার এগিয়ে যাওয়ার একটি কারণ হচ্ছে, উন্নয়নের জন্য নীতিগত ভিত্তি প্রস্তুত করা। যেকোনো জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য একটি নীতিগত ভিত্তি প্রয়োজন হয়। সরকার অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন বা সংশোধন করে একটি উন্নয়ন কাঠামো প্রস্তুতের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা ও প্রকল্প প্রয়োজন হয়। এ আলোকে সরকার “বাংলাদেশ প্রেক্ষতি পরিকল্পনা ২০১০-২০২১” শীর্ষক পরিকল্পনা দলিল প্রস্তুত করেছে। ফলে সরকার ভিশন ২০২১ এর লড়্গ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে গিয়েছে।
গ . উদ্দীপকে প্রদত্ত চিত্র ‘শহিদ মিনার’ আমাদের ভাষা আন্দোলনের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ সভা সমাবেশ, মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা না করা নিয়ে অনেক আলোচনা শেষে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিক থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে। পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষপে করে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি বর্ষণ করলে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন, অনেকে আহত হন। ঢাকায় ছাত্রহত্যার খবর দ্রুত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশাল শোক র্যালি বের হয়। এখানে পুলিশের হামলায় শফিউর নামে একজনের মৃত্যু হয়। শহিদদের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য ঢাকায় ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্রজনতা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি শফিউরের পিতাকে দিয়ে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়। ২৪ তারিখ পুলিশ উক্ত শহিদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে। পরবর্তীতে সেখানেই চিত্রে প্রদত্ত শহিদ মিনারটি নির্মিত হয়। যা চিরকাল আমাদের মনে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।
ঘ . ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে অসামান্য অবদান রাখে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর পঞ্চাশের দশক ব্যাপী ছিল বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিকাল। ভাষা আন্দোলন পরবর্তীকালে সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। এ আন্দোলন এ দেশের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। এ আন্দোলন বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তোলে। পাকিস্তানি শাসনপর্বে এটি তাদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলন। বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি আগে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়বাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন- ১১ যুক্তফ্রন্ট গঠন, নির্বাচন ও সরকার
‘ক’ রাষ্ট্রের একটি প্রদেশের জনগণ পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন করে আসছে। তাই আগামী প্রাদেশিক নির্বাচনে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিপড়্গে কয়েকটি দল জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিতে যাচ্ছে। সংবাদপত্রে এ ধরনের একটি সংবাদ পড়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী নাসরিন তার পাঠ্যবইয়ে পড়া একটি নির্বাচনের সাথে এই নির্বাচনের মিল খুঁজে পেল। সেই সাথে প্রত্যাশা করল এই নির্বাচনের পরিণতি যেন পাঠ্যপুস্তকের সেই নির্বাচনের মতো না হয়।
ক. কোন সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে? ১
খ. আইয়ুব খান প্রবর্তিত মৌলিক গণতন্ত্রের ধারণাটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. নাসরিন তার পড়া কোন নির্বাচনের সাথে দৃশ্যকল্পের নির্বাচনের মিল খুঁজে পেল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উক্ত নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে।”- উক্তিটি বিশেস্নষণ কর। ৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
খ . সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লড়্গ্েয আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেন। আইয়ুব খান প্রবর্তিত মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মোট ৮০ হাজার নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্য নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী গঠন করার ব্যবস্থা রাখা হয়। তাদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রাখা হয়। এটি ছিল পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিমূলক ব্যবস্থা।
গ নাসরিন তার পড়া ১৯৫৪ সালের পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের সাথে দৃশ্যকল্পের নির্বাচনের মিল খুঁজে পেল। ১৯৫৪ সালে পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটানোর লড়্গ্েয ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে। যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। উদ্দীপকে দেখা যায়, নাসরিনের পাঠ্যপুস্তকে পড়া নির্বাচনটি হলো ১৯৫৪ সালের অনুষ্ঠিত পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন।
ঘ ১৯৫৪ সালের পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে। ১৯৫৪ সালের ৮ মার্চের নির্বাচন ছিল পূর্ববাংলায় প্রথম অবাধ ও সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনে শতকরা ৩৭১৯ ভাগ ভোটার ভোট দেয়। মোট ৩০৯টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন লাভ করে। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি আসন। উদ্দীপকে বর্ণিত ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ছিল মুসলিম লীগের অন্যায়, বৈষম্যমূলক, ব্যর্থ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ। বাঙালি জাতি এ নির্বাচনের মাধ্যমে মুসলিম লীগকে বুঝিয়ে দেয় যে, তারা পূর্ববাংলায় মুসলিম লীগকে আর চায় না। যুক্তফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের জনপ্রিয়তা, বিশেষ করে তরুণ নেতৃত্বের জনপ্রিয়তা পূর্ববাংলার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির পথ সুগম করে। কারণ, অনেক তরুণ নেতার কাছে মুসলিম লীগের বড় বড় নেতৃত্বের পরাজয় ঘটে। এছাড়া, যুক্তফ্রন্টের মধ্যে আওয়ামী মুসলিম লীগের সর্বোচ্চ আসন লাভ ভবিষ্যতে তাদের পূর্ববাংলায় বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত বহন করে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ববাংলার রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষ ধারার সৃষ্টি হয়। সর্বোপরি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে মুসলিম লীগ ও অবাঙালি নেতৃত্বের প্রতি বাঙালির মনে ব্যাপক অনাস্থা জন্মায়। তারা বুঝতে পারে পশ্চিম পাকিস্তানি ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা বাঙালির প্রকৃত মুক্তি সম্ভব নয়। ফলে, বাঙালি জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভিত্তিতে বাংলা ভাষাভাষী জনগণ স্বায়ত্তশাসনের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার প্রেড়্গেিত বলা যায় যে, ১৯৫৪ সালের নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে।
প্রশ্ন- ১২ ভাষা আন্দোলন
২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে চলছিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। একটি টিভি রিপোর্টে দেখা গেল দুজন বিদেশি নাগরিকও শহিদ মিনার পরিষ্কার করছেন। তারা কেন এ কাজ করছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বললেন, বাঙালির এমন বীরত্বগাথা কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে তারা নিজেদেরকে ধন্য মনে করছেন। তারা আরও বললেন, বাঙালির একুশ আজ শুধু বাংলাদেশিদের গর্ব নয়, এটি সমগ্র বিশ্বের ভাষার জন্যই গর্বের দিন।
ক. কখন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়? ১
খ. ভাষা আন্দোলনকে কেন বাঙালি মুক্তির প্রথম আন্দোলন বলা হয়? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত টিভি রিপোর্টে বিদেশি নাগরিকরা বাঙালির কোন বীরত্বগাথার কথা বলেছেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিদেশি নাগরিকদের শেষের বক্তব্যটি কি তুমি সমর্থন কর? যুক্তি দেখাও। ৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়।
খ . ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের অধিকার অর্জনের আন্দোলনের সূত্রপাত করে। তাই ভাষা আন্দোলনকে বাঙালি মুক্তির প্রথম আন্দোলন বলা হয়। ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ পথপরিক্রমায় বাঙালিরা তাদের ভাষার দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে এবং উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার চক্রান্ত রুখে দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। এটিই ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্য ও শোষণনীতির বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রথম আন্দোলন।
গ . উদ্দীপকে উল্লিখিত টিভি রিপোর্টে বিদেশি নাগরিকরা বাঙালির বীরত্বগাথা ভাষা আন্দোলনের কথা বলেছেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেককে প্রাণ দিতে হয়েছে। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে কোনো জাতিকে এত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি। তাদের প্রাণের বিনিময়ে বাঙালি ফিরে পেয়েছে মাতৃভাষার অধিকার। বাংলা ভাষা পেয়েছে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। ভাষা শহিদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে শহিদ মিনার। জাতীয় পর্যায়ে ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হলেও বাঙালির ত্যাগ ও আতে¥াৎসর্গ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলার ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য দেশ বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করছে। এটি বাঙালির এক বিরাট অর্জন।
ঘ . উদ্দীপকে উল্লিখিত বিদেশি নাগরিকদের শেষের বক্তব্যটি আমি সমর্থন করি। উদ্দীপকে এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বাঙালির একুশ আজ শুধু বাংলাদেশিদের গর্ব নয়, এটি সমগ্র বিশ্বের ভাষার জন্যই গর্বের দিন। বক্তব্যটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ধরা পড়েছে। ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে দেশব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ মিনারে নগ্নপায়ে হেঁটে ফুল অর্পণ করে আমরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বাঙালি জাতির কাছে দিনটি একটি শোকের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। কানাডাপ্রবাসী কয়েকজন বাঙালির উদ্যোগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারির শহিদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। পৃথিবীতে ৬০০০-এর বেশি ভাষা রয়েছে। এসব ভাষার মানুষ সেই থেকে বাংলাদেশের শহিদ দিবসের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নিজেদের ভাষার মর্ম নতুনভাবে বুঝতে শিখেছে। আর এ প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকের বিদেশি নাগরিকরা বাঙালির একুশকে বিশ্ববাসীর ভাষার জন্য গর্বের মনে করে বক্তব্য প্রদান করে। আমিও গর্বভরে তাদের এ বক্তব্য সমর্থন করি।
প্রশ্ন- ১৩ ১৯৭০ সালের নির্বাচন
সাজিদের পিতা কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে চান না। তিনি মনে করেন নির্বাচন জনগণের কোনো কাজে আসে না। সাজিদ তার পিতাকে ঐতিহাসিক একটি নির্বাচনের কিছু তথ্য একটি বই থেকে পড়ে শোনান। নির্বাচনটি নিয়ে নানা আশঙ্কা ছিল। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে। একটি দল ৬ দফার পক্ষে নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে অভিহিত করেছিল।
ক. ১৯৬৫ সালের কত তারিখে ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল? ১
খ. পূর্ব পাকিস্তানে কীভাবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে? ২
গ. সাজিদের তথ্যে পাঠ্যপুস্তকের যে নির্বাচনের প্রতিফলন ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দাও। ৩
ঘ. পাঠ্যপুস্তকের আলোকে এ ধরনের একটি নির্বাচনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪
১৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
খ . বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি আগে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ববাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গ . সাজিদের বক্তব্যে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রতিফলন ঘটেছে। ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন। ইয়াহিয়া খান উক্ত পদে আসীন হন। তিনি ২৮ মার্চ এক ঘোষণায় পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। তবে পাকিস্তানে ইতোপূর্বে কোনো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এই নির্বাচন নিয়ে নানা আশঙ্কা ছিল, কোনো নিয়মকানুনও ছিল না। উদ্দীপকের নির্বাচন নিয়েও নানা আশঙ্কা ছিল। আবার সাজিদের তথ্যে নির্বাচনটি ছিল এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম ‘এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (ওয়ালী), মুসলিম লীগ (কাইয়ুম), মুসলিম লীগ (কনভেনশন), পাকিস্তান পিপলস্ পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জামাত-ই-ইসলামী প্রভৃতি দল অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ৬ দফার পক্ষে গণভোট হিসেবে অভিহিত করে। উদ্দীপকে এ তথ্যেরও ইঙ্গিত রয়েছে। নির্বাচনে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ভোটারের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন (৭টি মহিলা আসনসহ) লাভ করে। ১৭ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৮৮টি আসন আওয়ামী লীগ পায়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ বিজয় ছিল নজিরবিহীন। আওয়ামী লীগ এককভাবে সরকার গঠন ও ৬ দফার পক্ষে গণরায় লাভ করে। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সাজিদের তথ্যে পাঠ্যপুস্তকের ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রতিফলন ঘটেছে।
ঘ পাঠ্যপুস্তকে উদ্দীপকের মতো একটি নির্বাচন উল্লিখিত হয়েছে যা ১৯৭০ সালের পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ফলে ৬ দফা ও ১১ দফার প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সরকার ও স্বার্থান্বেষী মহলের জন্য এটি ছিল বিরাট পরাজয়। তারা বাঙালির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধিতা এবং ষড়যন্ত্র করতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পেছনে এই নির্বাচনের অপরিসীম গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের গুরুত্ব এদিক থেকেও অনুধাবন করা যায়। এটি ছিল দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন। এ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ সুযোগ পেয়েছিল স্ব- শাসন ও আত্ম প্রতিষ্ঠার দাবি আদায় করতে। নির্বাচন বাঙালিদের রাজনৈতিক ঐক্য জোরদার করে। স্বাধিকারের দাবিতে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে এবং তারা আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে ওঠে। এ নির্বাচনের মাধ্যমেই এ দেশবাসী পাক-শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং সর্বশক্তি দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। সত্তরের নির্বাচনী ঐক্য বাঙালি জাতিকে এ ব্যাপারে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। মোটকথা ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পথ বেয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। নির্যাতিত ও উপেক্ষতি মানবের তীর্থভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল গণতন্ত্রকামী মানুষ ও বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট হতে যে সাহায্য ও সমর্থন পায় তা মূলত ১৯৭০ এর নির্বাচনের বিজয়ের ফসল। স্পষ্টতই ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত ও সহজলভ্য করে।
প্রশ্ন- ১৪ ছয়দফা কর্মসূচি
১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যোগদান করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান একটি কর্মসূচি পেশ করেন। পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচিটি ছিল তীব্র প্রতিবাদ আর বাঙালির অধিকার আদায়ের সনদ।
ক. ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয় কবে? ১
খ. মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থাটি কী ছিল তার ব্যাখ্যা দাও। ২
গ. উদ্দীপকে যে কর্মসূচিটির কথা বলা হয়েছে তার বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. উক্ত কর্মসূচির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪
১৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর।
খ . মৌলিক গণতন্ত্র ছিল পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান প্রবর্তিত এক বিশেষ ব্যবস্থা। সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে তিনি এই ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মোট ৮০ হাজার নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিলর সদস্য নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী গঠন হবে। তাদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রাখা হয়। এটি ছিল পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি।
গ . উদ্দীপকে যে কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে তা হলো পূর্বপাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা কর্মসূচি।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যোগদান করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান একটি কর্মসূচি পেশ করেন। পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচিটি ছিল তীব্র প্রতিবাদ আর বাঙালির অধিকার আদায়ের সনদ, যা পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামাকে নির্দেশ করে। দফাগুলো হচ্ছে :
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাধীনে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার হবে। সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠান।
কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে মাত্র দুটি বিষয় থাকবে, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্য সব বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
সারাদেশে হয় অবাধে বিনিয়োগযোগ্য দু ধরনের মুদ্রা, না হয় বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে একই ধরনের মুদ্রা প্রচলন করা।
সব ধরনের কর ধার্য করার ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। আঞ্চলিক সরকারের আদায়কৃত রাজস্বের একটা নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মালিক হবে, এর নির্ধারিত অংশ তারা কেন্দ্রকে দেবে।
অঙ্গ রাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধাসামরিক বাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া।
ঘ . উক্ত কর্মসূচি অর্থাৎ ছয় দফা কর্মসূচির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সব অধিকারের কথা তুলে ধরে। আইয়ুব সরকার একে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনা-মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। অর্থাৎ ৬ দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চূড়ান্ত প্রকাশ, বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক, বাঙালির মুক্তির সনদ। ফলে এর প্রতি ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে প্রতিটি জনগণের স্বতঃস্ফূত সমর্থন ছিল। ছয় দফা আন্দোলন কঠোরভাবে দমনের ফলে বাঙালি জাতির মধ্যে ঐক্যের চেতনা দৃঢ়ভাবে জাগ্রত হয়। বাঙালি তার স্বাধীনতা আদায়ের জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠে। অর্থাৎ ৬ দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালির বাঁচার দাবি।
প্রশ্ন- ১৫ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্য
বিভাগ | পশ্চিম পাকিস্তান | পূর্ব পাকিস্তান |
মিলিটারি সার্ভিস | ৯৫% | ৫% |
সাধারণ সৈনিক | ৯৬% | ৪% |
পাইলট | ৮৯% | ১১% |
টেকনিশিয়ান | ৯৩.৩% | ১.৭% |
ক. কত সালে পাকিস্তান সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়? ১
খ. ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’ কোন নির্বাচন তা প্রমাণ করে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর কোন বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত বৈষম্যই পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশের প্রতি সবচেয়ে বড় বৈষম্য ছিল? তোমার বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দাও। ৪
১৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
খ . ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন প্রমাণ করে ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। পূর্ববাংলা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি, মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি লাভ করে। বাকি আসন অন্যরা পায়। এই নির্বাচনে পূর্ববাংলার জনগণ পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্ব ও প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার রায় প্রদান করে। ‘জনগণই যে সকল ক্ষমতার উৎস’-এই নির্বাচন তা প্রমাণ করে।
গ . উদ্দীপকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে অগ্রসর ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণ প্রতিষ্ঠার ফলে পূর্ব পাকিস্তান দ্রুত পিছিয়ে যেতে থাকে। বৃদ্ধি পেতে থাকে দুই অঞ্চলের মধ্যকার বৈষম্য। এ বৈষম্য সর্বক্ষেত্রে বি¯ত্মৃত হয়। প্রতিরক্ষা খাতে বৈষম্য পূর্ব পাকিস্তানকে অনিরাপদ করে তুলেছিল। উদ্দীপকের ছকে দেখা যায়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোট অফিসারের মাত্র ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, বিমান বাহিনীর পাইলটদের ১১%, টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙালি। বিপরীতে পশ্চিম পাকিস্তানিদের মধ্য থেকে অফিসার ছিল ৯৫%, সাধারণ সৈনিক ৯৬%, পাইলট ৮৯% ও টেকনিশিয়ান ছিল ৯৩.৩%। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙালিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করছিল। সুতরাং উদ্দীপকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেবৈষম্য ফুটে উঠেছে।
ঘ . না, আমি মনে করি উক্ত বৈষম্য তথা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য বাংলাদেশের প্রতি সবচেয়ে বড় বৈষম্য ছিল না। বরং পাকিস্তানিদের সকল ক্ষেত্রে শোষণের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ছিল ভীষণ প্রকট। পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার চাইতে পাকিস্তান অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। যেমন : ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে কয়েকগুণ পিছিয়ে পড়ে। যেহেতু, অর্থনীতি একটি দেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে এবং এক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে পঙ্গু করার চেষ্টা চলছিল, তাই আমি মনে করি অর্থনৈতিক বৈষম্য ছিল সবচেয়ে বড় বৈষম্য, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য নয়।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১৬ ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কারাবরণ- শেখ মুজিবুর রহমানের
বঙ্গবন্ধু ছাত্রজীবন থেকেই দেশ ও জাতির প্রতি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের। শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে মাথা না নোয়ানোর। পাকিস্তান আমলে তিনি তাই দীর্ঘ সময় কারাবাসে ছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পর ১৯৪৮ সালের মার্চেই তিনি কারাবন্দী হন।
ক. কোন শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়? ১
খ. ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ কে সামনে রেখে শেখ মুজিবুর রহমানকে ফরিদপুর জেলে স্থানান্তর করা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত বঙ্গবন্ধুর কারাবরণের প্রেক্ষাপট বর্ণনা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত ঘটনার ধারাবাহিকতায় পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য হন। দফার উলেস্নখসহ আলোচনা কর। ৪
১৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
খ . ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট এবং ঐদিন রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভাষার দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয়। কারাবন্দি শেখ মুজিব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি পালনে ছাত্র ও আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতাকর্মীদের ডেকে পরামর্শ দেন। ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সহ-বন্দি মহিউদ্দিন আহমেদকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফরিদপুর জেলে স্থানান্তর করা হয়।
গ . বঙ্গবন্ধু দেশ ও জাতির জন্য ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ সংগ্রামী। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ভাষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করলে বঙ্গবন্ধুও বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে থাকেন। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান। তাঁর দাবি অগ্রাহ্য হলে ২৬ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়। ১১ মার্চ ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ঐ দিন সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এ কর্মসূচি পালনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে। পিকেটিং করা অবস্থায় শেখ মুজিব, শামসুল হক, অলি আহাদসহ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে অন্তরীণ করা হয়। উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুর কারাবরণের এ প্রেক্ষাপটটিই নির্দেশিত হয়েছে।
ঘ . উদ্দীপকে ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ নির্দেশিত হয়েছে যে প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনর্গঠিত ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ ১১ মার্চ ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়। ঐ দিন ধর্মঘট পালনকালে শেখ মুজিব, শামসুল হক, অলি আহাদসহ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হলে ঢাকায় ১৩-১৫ মার্চ ধর্মঘট পালিত হয়। বাধ্য হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দফাগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. বাংলা ভাষার প্রশ্নে গ্রেফতারকৃত সকলকে অবিলম্বে মুক্তি দান করা হবে।
২. পুলিশি অত্যাচারের বিষয়ে তদন্ত করে একটি বিবৃতি প্রদান করা হবে।
৩. বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পূর্ববাংলার আইন পরিষদে একটি বিশেষ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
৪. পূর্ববাংলার সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজি উঠে যাওয়ার পর বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রবর্তন করা হবে।
৫. সংবাদপত্রের ওপর হতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।
৬. আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।
৭. ২৯ ফেব্রুয়ারি হতে জারিকৃত ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।
৮. রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন ‘রাষ্ট্রের দুশমনদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় নাই’ এ মর্মে মুখ্যমন্ত্রী ভুল স্বীকার করে বক্তব্য দেবেন।
এভাবে ১৯৪৮ সালে ভাষার প্রশ্নে একটি মীমাংসা দাঁড়ালেও পরবর্র্তীতে তা রক্ষিত হয়নি। তাই বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাঙালিরা পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার দাবিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে।
প্রশ্ন- ১৭ ভাষা আন্দোলন
রূপকথা বহুদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছে। সুদূর লন্ডনে থেকেও বাংলা মাকে সে ভুলতে পারেনি। পদ্মা, মেঘনা, মধুমতি নিয়ে গড়া বাংলার জারি, সারি আর ভাটিয়ালি গান তাকে নিয়ত টানে। আর সেই টানে সাড়া দিয়ে ৮ ফাল্গুন সে বাংলাদেশে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের একি হাল! তার বান্ধবী সুইটির বাসায় গিয়ে সে দেখে সুইটি মাইকেল জ্যাকসন, ব্রিটনি ছাড়া কিছুই শোনে না। প্রতিদিন সে ডিজে পার্টিতে যায়। রূপকথা এসব দেখে ভাবে এজন্যই কি বাংলার দামাল ছেলেরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল অকাতরে।
ক. কয়টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়? ১
খ. যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় টিকে ছিল কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. কোন আন্দোলনের শিক্ষা রূপকথাকে প্রভাবিত করেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রূপকথার এ ধরনের মনোভাবই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল- বিশ্লেষণ কর। ৪
১৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।
খ . ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল যুক্তফ্রন্টভুক্ত কৃষক-শ্রমিক পার্টির নেতা এ কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। আদমজি পাটকল ও কর্ণফুলী কাগজের কলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান সরকারের ইন্ধনে ঐ দাঙ্গা হয়েছিল।
গ . ভাষা আন্দোলনের শিক্ষা রূপকথাকে প্রভাবিত করেছিল। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল এদেশের প্রাণের ভাষা, মায়ের ভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। এ আন্দোলনে বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল। তাদের আত্মত্যাগ বাংলাদেশে বাংলা ভাষা চর্চার দাবি রাখে। সবাই বাংলার মা, মাটি ও ভাষার সাথে মিশে থাকবে তাই ছিল ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের দাবি। রূপকথা এই আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত। তাই সে সুদূর লন্ডনে থেকেও বাংলা মাকে ভুলতে পারেনি। পদ্মা, মেঘনা, মধুমতি নিয়ে গড়া বাংলার জারি, সারি আর ভাটিয়ালি গান তাকে নিয়ত টানে। আর সেই টানে সাড়া দিয়ে ৮ ফাল্গুন শহিদ দিবসে সে বাংলাদেশে আসে। কিন্তু তার বান্ধবী সুইটির বাসায় গিয়ে সে খুবই মর্মাহত হয়। কারণ সুইটি মাইকেল জ্যাকসন আর ব্রিটনির গান ছাড়া কিছুই শোনে না। সে প্রতিদিন ডিজে পার্টিতে যায়। বাংলাদেশের মানুষের এরূপ অবস্থা দেখে অর্থাৎ ইংরেজি সংস্কৃতি ও বিদেশি ভাষাপ্রীতি দেখে রূপকথার খুব দুঃখবোধ হয়।
ঘ . দেশের মাটির প্রতি, মায়ের ভাষা বাংলার প্রতি রূপকথার হৃদয়ের টান। রূপকথার এ ধরনের মনোভাবই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এ অঞ্চলের তথা পূর্ববাংলার মায়ের ভাষা বাংলাকে পদানত করতে চেয়েছিল। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের ভাষা বাংলাকে উপেক্ষা করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিরোধ, হামলা, কাঁদুনে গ্যাস, ১৪৪ ধারা, গুলিবর্ষণ কিছুই বাংলার দামাল ছেলেদের থামাতে পারেনি। তারা জীবন দিয়েছিল তবু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতির প্রথম প্রতিবাদ ও বিদ্রোহ, বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রথম প্রেরণা। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালি জাতি পশ্চিম পাকিস্তানি সরকারের অবহেলা, বঞ্চনা, শোষণের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছিল। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অবমাননা বাঙালির মনকে প্রবল নাড়া দিয়েছিল। তারা বুঝতে পেরেছিল পাকিস্তানিদের হাতে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি কিছুই নিরাপদ নয়। এভাবেই বাঙালির মাঝে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বীজ বপিত হয়। যার ফলে সম্ভব হয় ষাটের দশকের স্বাধিকার আদায়ের জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক আন্দোলন। এর হাত ধরে স্বায়ত্তশাসনের দাবি থেকে স্বাধীনতার দাবি এবং তারই ফলে বীর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়। তাই বলা যায়, ভাষার প্রতি রূপকথার এরূপ আন্তরিক মনোভাবই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল।
প্রশ্ন- ১৮ ভাষা আন্দোলন ও ছাত্র সমাজের ভূমিকা
সাংবাদিক আবু নাছের সাহেব ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে কোনোভাবেই একমত নন। তিনি বলেন, যে ছাত্ররা আন্দোলনের মাধ্যমে মায়ের মুখের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে, সে ছাত্ররাই আজ বড় রাজনীতিবিদ হয়ে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ছাত্রদের বুকের তাজা রক্তের ইতিহাস জাতি আজও ভুলে যায়নি। তিনি মনে করেন, ছাত্রদের অন্যতম কাজ অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করা।
ক. কে ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু? ১
খ. ‘যুক্তফ্রন্ট’ বলতে কী বোঝ? ২
গ. আবু নাছের সাহেবের বক্তব্যে ১৯৫২ সালে ছাত্রদের যে ভূমিকা ধরা পড়েছে তার ব্যাখ্যা দাও। ৩
ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত আন্দোলন বাংলাদেশে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় প্রভাব রেখেছিল- বিশ্লেষণ কর। ৪
১৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।
খ . যুক্তফ্রন্ট ছিল মূলত একটি নির্বাচনি জোট। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে পরাজিত করার জন্য পূর্ববাংলার সদ্য প্রতিষ্ঠিত দলগুলো একত্রিত হয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। যুক্তফ্রন্ট মূলত চারটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল।
গ . আবু নাছের সাহেবের বক্তব্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের আত্মত্যাগের কথা ধরা পড়েছে। সাংবাদিক আবু নাছের সাহেব মনে করেন, ১৯৫২ তে ছাত্ররা আন্দোলনের মাধ্যমে মায়ের মুখের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের বুকের তাজা রক্তের ইতিহাস জাতি আজও ভুলে যায়নি। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন জিন্নাহকে অনুকরণ করে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা প্রদান করেন। এর প্রতিবাদে ছাত্রসমাজ ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। আবদুল মতিনকে আহ্বায়ক করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে গঠিত হয়। নতুনভাবে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোও যুক্ত হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট এবং ঐদিন রাষ্ট্র ভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভাষার দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয়। দেশব্যাপী জনমত গড়ে উঠতে থাকে। ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ সভা সমাবেশ, মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা না করা নিয়ে অনেক আলোচনা শেষে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখ চত্বর) একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১০ জন করে মিছিল শুরু করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিক থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে। পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন, অনেকে আহত হন। ঢাকায় ছাত্রহত্যার খবর দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ছাত্রদের এ আত্মদান ভাষার দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে।
ঘ . উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলন নির্দেশিত হয়েছে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল। ঢাকায় ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শীর্ষক প্রথম কবিতা এবং তরুণ কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি রচনা করেন। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন শহরে ছাত্র, যুবকসহ সাধারণ মানুষ ভাষার দাবিতে আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষণ শুরু করে। এসব হত্যাকাণ্ড পূর্ববাংলার জনগণের মনের ওপর বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আবদুল গাফফার চৌধুরী রচনা করেন, ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো ২১ ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’, সংগীতশিল্পী আবদুল লতিফ রচনা ও সুর করেন, ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’, এছাড়া ‘তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি’র মতো সংগীত। ড. মুনীর চৌধুরী জেলে বসে রচনা করেন ‘কবর’ নাটক, জহির রায়হান রচনা করেন ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসটি। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ববাংলায় শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চায় পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে রচিত শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির সে ধারা বাংলার স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করেছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে আজও তা আমাদের দেশ মাতৃকার প্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।
প্রশ্ন- ১৯ ১৯৫৪ সালের নির্বাচন
সবুজনগর অঞ্চলের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী দলের নেতাকে মোকাবিলা ও পরাজিত করার জন্য ছোট ছোট দলগুলো একতাবদ্ধ হয়। তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এক সুদীর্ঘ নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করে। জনগণ উক্ত জোটের ওপর সার্বিক আস্থা রেখে তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। এর অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে নির্বাচনে জোটের নেতৃবৃন্দ বিপুল ভোটে জয়ী হন এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতা চরমভাবে পরাজিত হন।
ক. আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন? ১
খ. ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গড়ে তোলা হয় কেন? ২
গ. সবুজনগর অঞ্চলের ছোট দলগুলো স্বাধীনতাপূর্ব কোন নির্বাচন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে একতাবদ্ধ হয়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী হলেই নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না’-উদ্দীপক ও পাঠ্যপুস্তকের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর। ৪
১৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী।
খ . দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম লীগের এক অংশ যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ও সংস্কারপন্থি ছিল, তাদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি মদদ পুষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল অংশ নানাভাবে দমন, নিপীড়ন চালাতে থাকে। মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতাত্ত্বিক ধ্যান-ধারণা থেকে বের হয়ে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠন করে।
গ . সবুজনগর অঞ্চলের ছোট দলগুলো স্বাধীনতাপূর্ব ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে একতাবদ্ধ হয়। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন ও যুক্তফ্রন্ট গঠন ছিল বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের শাসনের চরম ব্যর্থতার ফলে পূর্ব বাংলার সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিম লীগকে পরাজিত করার কৌশল হিসেবে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা নেয়। এ লক্ষ্যে তারা যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। মূলত চারটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্ট জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য ২১ দফা নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ৩০৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসন লাভ করে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। আর ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি আসন। অনুরূপভাবে উদ্দীপকেও দেখা যায়, সবুজনগর অঞ্চলের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী দলের নেতাকে মোকাবিলা ও পরাজিত করার জন্য ছোট ছোট দলগুলো একতাবদ্ধ হয়। তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এক সুদীর্ঘ নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করে। জনগণ উক্ত জোটের ওপর সার্বিক আস্থা রেখে তাদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। এর অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে নির্বাচনে জোটের নেতৃবৃন্দ বিপুল ভোটে জয়ী হন এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতা চরমভাবে পরাজিত হন। সবুজনগর অঞ্চলের এই নির্বাচনে ছোট দলগুলোর একতাবদ্ধ হওয়া ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের শিক্ষার প্রতিফলন।
ঘ . সবুজনগর অঞ্চলের নির্বাচন পাঠ্যবইয়ের ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। উদ্দীপকের সবুজনগর অঞ্চলের নির্বাচনের মতো ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের মাধ্যমে এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী হলেই নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মুসলিম লীগ ছিল পুরাতন ও বড় দল। এছাড়া পূর্ববাংলার প্রাদেশিক সরকার পরিচালনা করত মুসলিম লীগ। কিন্তু ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে মোট ৩০৯টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন লাভ করে এবং মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি আসন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ছিল মুসলিম লীগকে বুঝিয়ে দেয়া যে, জনগণ পূর্ববাংলায় মুসলিম লীগকে আর চায় না। তারা যুক্তফ্রন্টের তরুণ নেতৃত্বের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। তারা ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের প্রতি ভোটের মাধ্যমে ধিক্কার জানায়। সর্বোপরি এ নির্বাচনের মাধ্যমে মুসলিম লীগ ও অবাঙালি নেতৃত্বের প্রতি বাঙালির মনে ব্যাপক অনাস্থা জন্মায়। তারা বুঝতে পারে পশ্চিম পাকিস্তানি ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা বাঙালির প্রকৃত মুক্তি সম্ভব নয়। ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভিত্তিতে পূর্ববাংলাবাসী স্বায়ত্তশাসনের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে। মুসলিম লীগ ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল হয়েও ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়। সুতরাং এ কথা প্রমাণিত হয় যে, ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী হলেই নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না।
প্রশ্ন- ২০ অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেবৈষম্য
রিনির বাবা পাকিস্তান আমলে নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। সে সময়ে খুব কম সংখ্যক বাঙালি তার মতো উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। বেশিরভাগ বাঙালি কৃষিকাজে জড়িত ছিল এবং তাদের অর্জিত আয় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে ব্যয় হতো।
ক. কত তারিখে ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়? ১
খ. ‘তমদ্দুন মজলিস’ কেন গঠিত হয়েছিল? ২
গ. উদ্দীপকে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে কোন বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত পরিস্থিতিই বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইন্ধন জুগিয়েছিল- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। ৪
২০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুুরু হয়।
খ . বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য ‘তমদ্দুন মজলিস’ গঠন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিস নামক একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ৬-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত উক্ত সংগঠনের যুবকর্মী সম্মেলনে ‘বাংলাকে শিক্ষা ও আইন আদালতের বাহন’ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর এই সংগঠন ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। এ সময়ে তমদ্দুন মজলিস ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে।
গ . উদ্দীপকে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের এ বৈশিষ্ট্যটি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণ প্রতিষ্ঠার ফলে যে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য চরম রূপ লাভ করেছিল সে বিষয়কেই নির্দেশ করে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙালিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করছিল। মোট অফিসারের মাত্র ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, নৌবাহিনীর উচ্চপদে ১৯%, নিম্নপদে ৯%, বিমান বাহিনীর পাইলটদের ১১%, টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙালি। আর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তান অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। বেশিরভাগ বাঙালি কৃষিকাজে জড়িত থাকলেও ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে কয়েকগুণ পিছিয়ে পড়ে। যেমন : ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। উপরিউক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল ব্যাপক এবং এ বৈষম্যের ফলে বাঙালিরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হতে থাকে।
ঘ . উক্ত পরিস্থিতিই অর্থাৎ প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক নীতিই বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইন্ধন জুগিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান দুটি অংশ নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পূর্ববাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। অর্থাৎ পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি ছিল সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ধাঁচের। পূর্ব পাকিস্তানের সমাজ কাঠামো ছিল মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিভিত্তিক। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের সমাজকাঠামো ছিল ভূস্বামী, পুঁজিপতি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিভিত্তিক। একই পাকিস্তানের এ দু ধরনের সমাজ কাঠামোর বিপরীতমুখী গতিধারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করে। আইয়ুব শাসনামলে এ বৈষম্য ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হয়। এক্ষেত্রেউদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেই নয় প্রশাসনিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও বৈষম্য ছিল ব্যাপক। এ পরিস্থিতিতে ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও ৬ দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল। ৬ দফা আন্দোলন কঠোরভাবে দমনের পন্থা গ্রহণ করা হলে বাঙালি জাতির মধ্যে ঐক্যের চেতনা দৃঢ়ভাবে জাগ্রত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে সামরিক শাসক পদত্যাগে এবং ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন দিতেও বাধ্য হয়। এর মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চিস্তা চেতনার বিকাশ ঘটে এবং ৭০-এর নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাদের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে মুক্তিযুদ্ধের চরিত্রদানে বিশাল ভূমিকা রাখে। উপরিউক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতিই পর্যায়ক্রমে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইন্ধন যুগিয়েছিল।
প্রশ্ন- ২১ আগরতলা মামলা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বাস্তবতার নিরিখে তার বিশ্বাস ছিল শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
ক. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় কতজনকে আসামি করা হয়? ১
খ. আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয় কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ও বিশ্বাস তাকে ষড়যন্ত্রমূলক কোন মামলায় আসামি করেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত মামলার ফলাফল স্পষ্ট করে দিয়েছিল বাংলার মুক্তির দূত ছিলেন বঙ্গবন্ধু- বিশ্লেষণ কর। ৪
২১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
খ . বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন তারিখে আগরতলা মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলা শুরু হওয়ার পর তা প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন শুরু হয় এবং ছাত্রসমাজের ১১ দফার ভিত্তিতে কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ লাভ করে। ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনের ফলে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয় তারই ধারাবাহিকতায় ‘ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা’ বাঙালিদের স্বাধীনতার দিকে ধাবিত করতে অনুপ্রেরণা জোগায়। ফলে আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয়।
গ . উদ্দীপকে উল্লিখিত বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ও বিশ্বাসই তাকে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার আসামি করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং তার বিশ্বাস ছিল শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সশস্ত্র পন্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সে সময়ে গোপনে গঠিত বিপ্লবী পরিষদের সদস্যদের তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন। বিপ্লবী পরিষদের পরিকল্পনা ছিল একটি নির্দিষ্ট রাতে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাঙালিরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবগুলো ক্যান্টনমেন্টে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানিদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের বন্দি করবে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করবে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে ঐতিহাসিক আগরতলা (‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য’) মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর আসামি করা হয়। এছাড়া রাজনীতিবিদ, বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক ও প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা এবং অন্যান্য বেসামরিক ব্যক্তিবর্গসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দণ্ডবিধি ১২১-এ ও ১৩১ ধারায় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে সশস্ত্র পন্থায় স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়।
ঘ . আগরতলা মামলায় ঐতিহাসিক ফলাফল প্রমাণ করে দিয়েছিল বাংলার মুক্তির দূত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মামলা শুরু হওয়ার পর তা প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনে জনতা আগে থেকেই ছিল রাজপথে। ছাত্রসমাজের ১১ দফা আন্দোলন তার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়। ১৯৬৯ সালে আন্দোলন তাই ব্যাপক রূপ লাভ করে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ১৯৬৯ সালে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংঘটিত হয়। সকল গণতান্ত্রিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও মানুষ যার যার অবস্থান থেকে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়। এই আন্দোলনে যুক্ত হতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা শহিদ হন। প্রদেশব্যাপী ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তখন রাস্তায় নেমে আসে। অবশেষে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। অন্যান্য নেতৃবৃন্দকেও মুক্তি দেওয়া হয়। আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। বাঙালি জাতি তার মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বরণ করে নেয় এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে থাকে।
প্রশ্ন- ২২ গণঅভ্যুত্থান
সাল | ঘটনা |
১৯৬৯ | অভ্যুত্থান |
১৯৭০ | জাতীয় নির্বাচন |
১৯৭১ | মুক্তিযুদ্ধ |
ক. কত তারিখে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়? ১
খ. আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় কেন? ২
গ. ছকে উপস্থাপিত ১৯৬৯ সালের ঘটনা কীভাবে বাস্তব রূপ লাভ করেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর, ছকে ১৯৭০ ও ১৯৭১ সালের ঘটনাদ্বয় ১৯৬৯ সালের ঘটনার ঐতিহাসিক প্রভাব? মতামত দাও। ৪
২২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
খ . ১৯৬৯ সালের আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিলে আইয়ুব খানের সামরিক সরকার ভীত হয়ে ওঠে। ফলশ্রুতিতে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। অন্যান্য নেতৃবৃন্দকেও মুক্তি দেওয়া হয়। আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
গ . ছকে ১৯৬৯ সালের ঘটনা হিসেবে গণঅভ্যুত্থানের কথা উল্লিখিত হয়েছে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ১৯৬৯ সালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংঘটিত হয়। প্রথমে এটি সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন থাকলেও পরবর্তীতে ষড়যন্ত্রমূলক আগরতলা মামলা ও ব্যাপক দমন পীড়নের প্রেক্ষাপটে পূর্ব পাকিস্তানে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ইতিহাসে এটি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। এটি বিপ্লবাত্মক রূপ পরিগ্রহ করে। সকল গণতান্ত্রিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও মানুষ যার যার অবস্থান থেকে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়। এই আন্দোলনে যুক্ত হতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা শহিদ হন। প্রদেশব্যাপী ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তখন রাস্তায় নেমে আসে। আর গণআন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের রূপ পরিগ্রহ করে।
ঘ . আমি মনে করি, ছকের ১৯৭০ ও ১৯৭১ সালের ঘটনাদ্বয় তথা ’৭০ সালের জাতীয় নির্বাচন এবং ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রভাব। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর আগে তিনি ‘ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা’ তুলে নেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন দিতে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নতুন সামরিক সরকার বাধ্য হয়। গণঅভ্যুত্থানের ফলে পূর্ববাংলার জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চিস্তা ভাবনার বিকাশ ঘটে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রয়োজনীয়তা তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের ব্যাপক প্রভাব ছিল। মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শে এসব অর্জন সম্ভব হয়।
প্রশ্ন- ২৩ ১৯৭০ সালের নির্বাচন
মিজানের দেশটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু তার রাষ্ট্রের জনগণ ক্ষমতাসীনদের শাসন-শোষণে অস্থির হয়ে ওঠে। ফলে এক সাধারণ নির্বাচনে জনগণ সুযোগ পেয়ে একটি বিশেষ দলকে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে নির্বাচিত করে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করলে উক্ত রাষ্ট্র উত্তাল হয়ে ওঠে।
ক. টঘঊঝঈঙ তাদের কততম সম্মেলনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে? ১
খ. পূর্বপাকিস্তানের শিক্ষার প্রতি বৈষম্য কেমন ছিল? ২
গ. উদ্দীপকে আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব কোন নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে? ৩
ঘ. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জšে§র পেছনে উক্ত নির্বাচনের ভূমিকা কী ছিল? তোমার উত্তরের পড়্গে যুক্তি দাও। ৪
২৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . টঘঊঝঈঙ ৩১তম অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
খ . পশ্চিম পাকিস্তান ব্যাপকভাবে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রেবৈষম্য তৈরি করে। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় এগিয়ে ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণের বেশি লাভ করতে থাকে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার জন্য নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
গ . উদ্দীপকে আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, মিজানের দেশটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব পাকিস্তান রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ছিল। কিন্তু সামরিক শাসকগণ এর গণতন্ত্রকে রোধ করে রাখে। ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর শোষণে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। উদ্দীপকে জনগণ সুযোগ পেয়ে একটি বিশেষ দলকে নির্বাচনে ব্যাপক ভোটে নির্বাচিত করে। আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী করে। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদ নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পেয়ে জয়ী হয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হয়। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের কথা। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মার্চে এক ঘোষণায় ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে। তাই উদ্দীপকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলনই দেখা যায়।
ঘ . স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় উক্ত নির্বাচন তথা ১৯৭০ সালের নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন বাঙালিদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যবহ ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন ছিল তাদের স্বাধিকার ও মুক্তিলাভের আকাক্সক্ষার বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগের অভূতপূর্ব বিজয় প্রমাণ করে ছয় দফার প্রতি ছিল জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন। এ নির্বাচনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল যে, আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এবং পিপলস পার্টি পূর্ব পাকিস্তান থেকে কোনো আসন লাভ করেনি। দু’দলেরই ছিল আঞ্চলিক প্রাধান্য। এ নির্বাচন প্রমাণ করে যে, পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র গড়ে তুলতে আগ্রহী। ১৯৭০ এর নির্বাচনে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি পূর্ববাংলার জনগণের আস্থা শেষ হয়ে যায়, বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। তাই বলা যায়, একটি স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে এ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
প্রশ্ন- ২৪ আওয়ামী লীগ দল গঠনের প্রেক্ষাপট
‘ঢ’ দেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে ‘ণ’ দলটি প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক। ‘ণ’ দলের নেতৃত্বে ‘ঢ’ দেশের পূর্ব অংশ স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে। ‘ণ’ দলের বিপরীতে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ক্ষমতাসীন দলের অনুগত একটি রাজনৈতিক ধারা ছিল।
ক. কখন পূর্ব বাংলার জনগণ দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো বুঝতে পারে? ১
খ. আমরা দেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণে সচেষ্ট হব কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের ‘ণ’ দলটি কোন দলের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত দলটির গঠন ও নামকরণের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ কর। ৪
২৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববাংলার জনগণ পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্র এবং একই সঙ্গে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুলগুলো বুঝতে পারে।
খ . আমরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। আজ ২১ ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। পৃথিবীতে ৬০০০-এর বেশি ভাষা আছে। এসব ভাষার মানুষ বাংলাদেশের শহিদ দিবসের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নিজেদের ভাষার মর্ম নতুনভাবে বুঝতে শিখেছে। আমাদের দেশেও বাংলা ভাষার পাশাপাশি বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। সুতরাং আমরা আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তথা ভাষা শহিদদের রক্তের মর্যাদা রাখতে ঐসব নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও উন্নয়নে সচেষ্ট হব।
গ . উদ্দীপকের ‘ণ’ দলটি ‘আওয়ামী লীগ’ দল এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর, পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ বাঙালি হওয়ার পরও রাষ্ট্র পরিচালনা, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগসহ সর্বক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক শুরু করে। বাঙালি তথা পূর্ববাংলার সাধারণ মানুষ সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে থাকে। তখন রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের মধ্যে তিনটি ধারা লক্ষ করা যায়। এগুলো হচ্ছে :
১. পাকিস্তানের প্রতি অনুগত রাজনৈতিক দল যেমন, মুসলিম লীগ ও ইসলাম নামধারী দলসমূহ জামায়াতে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম।
২. পূর্ববাংলার স্বার্থ রক্ষার জন্য সোচ্চার রাজনৈতিক দল। যেমন : আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, ৩. সাম্যবাদী আদর্শের রাজনৈতিক ধারা। এ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উদ্দীপকের ‘ণ’ এর মতো আওয়ামী লীগ হচ্ছে সে দল যারা প্রগতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে পূর্ববাংলার জনগণকে মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দেয়। সুতরাং ‘ণ’ দলটির সাথে আওয়ামী লীগের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ . উক্ত দলটি তথা আওয়ামী লীগ দলের গঠন ও নামকরণের প্রেক্ষাপট বেশ বৈশিষ্ট্যময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতাত্ত্বিক ধ্যান ধারণা থেকে বের হয়ে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ গঠন করে। এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ। শুরুতেই দলটি বাঙালিদের স্বার্থে একটি বি¯ত্মৃত কর্মসূচি গ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, জনগণের সার্বভৌমত্ব, বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান, পাট ও চা শিল্প জাতীয়করণ, বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ, কৃষকদের মধ্যে ভূমি বণ্টন, সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব দাবি উত্থাপনের কারণে দলটি দ্রুত পূর্ববাংলার জনগণের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। মওলানা ভাসানী, শামসুল হক এবং শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকের রোষানলে পড়েন। শেখ মুজিবকে ১৯৪৯ সালে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তিনি ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্দি জীবন কাটান। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করে দলের নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। ফলে ধর্ম পরিচয় নির্বিশেষে সকল বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ জাতীয়তাবাদের ধারায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এই সময়ে দলটি পূর্ববাংলার জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সকল স্বার্থ রক্ষায় এক দিকে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখে, অন্যদিকে সংসদ ও প্রাদেশিক সরকারের সদস্যগণ সর্বত্র সোচ্চার হতে থাকেন।
প্রশ্ন- ২৫ যুক্তফ্রন্ট
‘ঢ’ দেশের পূর্ব অংশের প্রদেশটি ছিল সব সময়ই শোষণ-বঞ্চনার শিকার। কেন্দ্রীয় সরকারে ছিল পশ্চিম অংশের শাসকেরা। তাই যখন প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের ঘোষণা হয় তখন পূর্ব অংশে একটি নির্বাচনি জোট গড়ে ওঠে। তারা পূর্ব অংশের মানুষের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ক. ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করত কোন ঘটনা ঘটলে? ১
খ. পাট শিল্পকে রক্ষায় যুক্তফ্রন্টের দফাটি বর্ণনা কর। ২
গ. উদ্দীপকের নির্বাচনি জোটের সাথে পাকিস্তান শাসনামলের কোন নির্বাচনি জোটের মিল খুঁজে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত জোটের ভাষা সংক্রান্ত নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি কি শুধু উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল? বিশ্লেষণ কর। ৪
ক . পরপর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হলে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করত।
খ . পাট শিল্প আবহমানকাল ধরেই বাংলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। পাকিস্তানিদের শোষণের কবলে এ শিল্পও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। তাই ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সন্নিবেশিত হয়। যুক্তফ্রন্টের তৃতীয় দফায় বলা হয়, পাট ব্যবসায়কে জাতীয়করণ, পাটের ন্যায্যমূল্য প্রদান এবং পাট কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
গ . উদ্দীপকের নির্বাচনি জোটের সাথে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে গঠিত পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচনি জোট যুক্তফ্রন্টের মিল রয়েছে। উদ্দীপকে ‘ী’ দেশের মতো পাকিস্তান রাষ্ট্রে পূর্ব পাকিস্তান ছিল সর্বদাই শোষণ-বঞ্চনার শিকার। পূর্ব পাকিস্তানের শোষণ মুক্তির আন্দোলনে অবশেষে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের ঘোষণা হয়। পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটানোর লক্ষ্যে ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২১ দফা প্রণয়ন শেষে ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল ৪টি হলো : আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম এবং গণতন্ত্র দল। যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার প্রথম দফাই ছিল, বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে। উদ্দীপকের ‘ী’ দেশের পূর্ব অংশের মানুষের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিশ্রুতির সাথে বিষয়টি সাদৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলা যায়, উদ্দীপকের নির্বাচনি জোটের সাথে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের মিল রয়েছে।
ঘ উক্ত জোট তথা যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল মূলত তাদের ঘোষিত ২১ দফা। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২১ দফার প্রথম দফাই ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে। উদ্দীপকে ‘ী’ দেশের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে এরূপ ঘোষণার উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট তার ২১ দফায় মাতৃভাষার ব্যাপারে আপসহীন মনোভাব নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি দফা যুক্ত করেছিল। যথা :
১. বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
২. ‘বর্ধমান হাউস’কে আপাতত ছাত্রাবাস এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাগার করা হবে।
৩. বাংলা ভাষার শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
৪. একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হবে।
এভাবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা ভাষার মর্যাদা যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিল।
প্রশ্ন- ২৬ পাকিস্তান শাসনামল
আলেয়া তার দাদুর কাছে ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশ রাজশক্তির বিতাড়নের গল্প শুনছিল। গল্পের শেষ পর্যায়ে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন। তিনি বলতে থাকেন ‘এক অদ্ভুত বিভাজন ব্যবস্থা করে ব্রিটিশ সরকার; হাজার মাইলের ব্যবধানে দুটি অংশ নিয়ে পাকিস্তান গঠিত হয়। ভঙ্গুর এ রাষ্ট্রে শুরু থেকেই ছিল গণতন্ত্রকে হত্যার প্রক্রিয়া। পাকিস্তান রাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য পূর্ব বাংলার প্রতি শোষণ-বঞ্চনার অবসান না ঘটিয়ে জারি করা হয় সামরিক শাসন। আমরা সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন শুরু করি।’ বলতে বলতে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। আর বলতে পারেন না।
ক. ১৯৬৫ সালে কত হাজার মেম্বারের ভোটে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন? ১
খ. পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ব পাকিস্তান দ্রুত পিছিয়ে যেতে থাকে কেন? ২
গ. আলেয়ার দাদুরা কীভাবে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মেতে ওঠেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. পাকিস্তান রাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য দাদুর উল্লিখিত পদক্ষেপটিই ছিল সর্বশেষ প্রচেষ্টা- বিশ্লেষণ কর। ৪
২৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৬৫ সালে ৮০ হাজার মেম্বারের ভোটে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
খ . পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বেশ অগ্রসর ছিল। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ক্ষমতা চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। তারা পূর্ববাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি ঔপনিবেশিক মনোভাব নিয়ে শাসন, নির্যাতন চালাতে থাকে। বৃদ্ধি পেতে থাকে দুই অঞ্চলের মধ্যকার বৈষম্য। এভাবে ১৯৪৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণ প্রতিষ্ঠার ফলে পূর্ব পাকিস্তান দ্রুত পিছিয়ে যেতে থাকে।
গ . উদ্দীপকে আলেয়ার দাদুরা ষাটের দশকে পাকিস্তানে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে মেতে উঠেছিলেন। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬১ সালেই পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাসে বাঙালিদের প্রিয় নেতা ও পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হলে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুবের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। ঐ সময় ছাত্রসমাজ ১৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। শিক্ষানীতিবিষয়ক আন্দোলনে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও অংশগ্রহণ করে। এই সঙ্গে সাংবিধানিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠিত হয়। এই সংগঠন আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৬৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক শাসন বিরোধী বক্তব্য নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ পায়। এভাবেই আলেয়ার দাদুরা নানাভাবে সেদিন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মেতে উঠেছিলেন।
ঘ . উদ্দীপকে দাদু পাকিস্তান রাষ্ট্র রক্ষার শেষ চেষ্টা হিসেবে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রের গঠন ছিল ধর্মভিত্তিক। ফলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের দুই অংশের অধিবাসীরা ভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির হওয়ায় এমনিতেই রাষ্ট্রটি ছিল ভঙ্গুর। উপরন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ববাংলার মানুষকে শাসন ও শোষণের পথ বেছে নেয়। এ প্রেক্ষাপটে পূর্ববাংলার মানুষ পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। নিজেদের দাবি আদায়ে তারা ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টকে অকুণ্ঠ সমর্থন প্রদান করে। ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল যুক্তফ্রন্টভুক্ত কৃষক-শ্রমিক পার্টির নেতা এ কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান সরকার পূর্ববাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। আদমজি পাটকল ও কর্ণফুলী কাগজের কলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান সরকারের ইন্ধনে ঐ দাঙ্গা হয়েছিল। শেরে বাংলাকে গৃহবন্দী করা হয়, শেখ মুজিবসহ তিন হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এর মাধ্যমে পূর্ববাংলার প্রতি পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর চরম বৈরী মনোভাব প্রকাশ পায়। পূর্ববাংলায় পাকিস্তানের অরাজক শাসনের পর্ব শুরু হয়। কেন্দ্র এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন হতে থাকে। অবশেষে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করে সংকট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গণতন্ত্র থেকে বিচ্যুত হয়ে সামরিক শাসন জারি করে পাকিস্তান রক্ষার শেষ চেষ্টা করা হয়।
প্রশ্ন- ২৭ সামরিক আইন জারি ও আইয়ুব খানের ক্ষমতা দখল
দৃশ্যপট-১ : ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর : এক প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন জারি করেন।
দৃশ্যপট-২ : ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর : এক সামরিক জাস্তা ক্ষমতা দখল করে।
ক. কোন সরকারের পতনে পূর্ববাংলায় পাকিস্তানের অরাজক শাসনের পর্ব শুরু হয়? ১
খ. প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা দায়িত্ব নিয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন? উল্লেখ কর। ২
গ. কোন ঘটনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানে দৃশ্যপট-১ এর উদ্ভব ঘটেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দৃশ্যপট-২ এর সামরিক জাস্তার ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ কর। ৪
২৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . যুক্তফ্রন্ট সরকারের পতনে পূর্ববাংলায় পাকিস্তানের অরাজক শাসনের পর্ব শুরু হয়।
খ . প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা দায়িত্ব নিয়ে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তা হচ্ছে : ১. ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল, ২. কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া, ৩. রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা, ৪. শেখ মুজিবসহ বেশ ক’জন নেতাকে জেলে প্রেরণ ও ৫. সকল মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া।
গ . দৃশ্যপট-১ এ ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জার সামরিক আইন জারি করার কথা উল্লিখিত হয়েছে। পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলীর মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষাপটে দৃশ্যপট-১ এর উদ্ভব ঘটেছিল। পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক সামরিক-বেসামরিক শাসকগোষ্ঠী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকারের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের পরস্পর বিরোধী এমএলএদের মধ্যে মারামারির মতো এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীকালে হাসপাতালে মারা যান। এরই সুযোগ নিয়ে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন। উদ্দীপকে দৃশ্যপট-১ এ তাই উল্লিখিত হয়েছে।
ঘ . দৃশ্যপট-২-এ ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলকারী আইয়ুব খানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মীর্জাকে উৎখাত ও দেশত্যাগে বাধ্য করে ক্ষমতা দখল এবং নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত করেন এবং ক্ষমতা কুক্ষগিতকরণে নানা পদক্ষপে নেন। তিনি উক্ত পদে বসে যেসব পদক্ষেপ নেন তা হলো :
১. নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা,
২. পূর্ব ঘোষিত ১৯৫৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করা,
৩. দুর্নীতি ও চোরাচালানি দূর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত ও
৪. রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা।
সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মোট ৮০ হাজার নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্য নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী গঠন করা হয়। তাদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রাখা হয়। এটি ছিল পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি। ১৯৬৫ সালে ৮০ হাজার মেম্বারের ভোটে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সামরিক শাসনের ফলে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের হাতে।
প্রশ্ন- ২৮ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী
জনাব ‘ঢ’ রবীন্দ্র সংগীতকে হিন্দু সংস্কৃতি মনে করেন। তিনি নজরুল ইসলামের গানকেও মনে করেন হিন্দুয়ানি চর্চা। তাই তিনি পরিবারের সবাইকে এসব থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করেন।
ক. কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৬ দফার পক্ষে গণরায় লাভ করে? ১
খ. ’৭০ সালের নির্বাচন নিয়ে জনমনে আশঙ্কা ছিল কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. জনাব ‘ঢ’ এর মনোভাবে কোন সরকারের মনোভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত মনোভাবই বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল? মতামত দাও। ৪
২৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৬ দফার পক্ষে গণরায় লাভ করে।
খ . ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন। আরেক সামরিক জাস্তা ইয়াহিয়া খান উক্ত পদে আসীন হন। তিনি ২৮ মার্চ তারিখ এক ঘোষণায় পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। তবে পাকিস্তানে ইতোপূর্বে কোনো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এই নির্বাচন নিয়েও নানা আশঙ্কা ছিল, কোনো নিয়মকানুনও ছিল না। অর্থাৎ পরিস্থিতির পরিপ্রেড়্গেিত স্বাভাবিকভাবেই জনমনে সামরিক জাস্তার অধীনে নির্বাচন নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা।
গ . জনাব ‘ঢ’ এর মনোভাবে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার তথা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯৬৫ সালে আইয়ুব খানের সামরিক সরকারের শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য চরম রূপ ধারণ করে। এ সময় ‘ইসলাম বিপন্ন হওয়া’, রবীন্দ্র সংগীতকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’, নজরুল ইসলামের গানে ‘হিন্দুয়ানি’র অভিযোগ তুলে এসবের চর্চা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। উদ্দীপকেও দেখা যায়, জনাব ‘ঢ’ রবীন্দ্র সংগীতকে হিন্দু সংস্কৃতি মনে করেন। তিনি নজরুল ইসলামের গানকেও মনে করেন হিন্দুয়ানি চর্চা। তাই তিনি পরিবারের সবাইকে এসব থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করেন। সুতরাং জনাব ‘ঢ’ এর মনোভাবে পাকিস্তান আমলের আইয়ুব সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন দেখা যায়।
ঘ . আমি মনে করি উক্ত মনোভাব তথা পাকিস্তান সরকারের বাঙালি ও বাংলার সংস্কৃতির প্রতি বিরূপ মনোভাবই বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ভিত্তি স্থাপন করে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়। জন্ম নেয় ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র। পাকিস্তানে ছিল দুটি অংশ। পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ অংশের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান অপর অংশটি পশ্চিম পাকিস্তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভুত হওয়ায় পূর্ববাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে। মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্যে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। এর মাধ্যমে পূর্ববাংলার বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়। ভাষার দাবিকে মেনে নিলেও পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী ষাটের দশকে ‘ইসলাম বিপন্ন হওয়া’, রবীন্দ্রসংগীতকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’, নজরুল ইসলামের গানে ‘হিন্দুয়ানি’র অভিযোগ তুলে এসবের চর্চা বন্ধ করার চেষ্টা করে। ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধ ১৭ দিন ধরে অব্যাহত ছিল। তখন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণরূপে অরক্ষিত ছিল। বিষয়টি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং বৈষম্যমূলক মনে হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে। বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হতে থাকে।
অনুশীলনমূলক কাজের আলোকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ২৯ ভাষা আন্দোলন
তিথি ও তার বন্ধুরা ফুলের তোড়া ও পুষ্পস্তবক নিয়ে সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সকলে গাইছে, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো……গানটি। এ দিনটি তারা প্রতিবছর এভাবেই পালন করে।
ক. ২১ দফার প্রথম দফাটি লেখ। ১
খ. ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের কারণ কী ছিল? ২
গ. উদ্দীপকে যে আন্দোলনের ইঙ্গিত রয়েছে তার পটভূমি বর্ণনা কর। ৩
ঘ. “উক্ত ঘটনা বাঙালির মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করে’’-বিশ্লেষণ কর। ৪
২৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ২১ দফার প্রথম দফাটি হলো বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।
খ . ১৯৬৯ সালের ঘটনাবলিই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি রচনা করেছে। আর এ গণঅভ্যুত্থানের কারণ ছিল সামরিক স্বৈরশাসন, পাকিস্তানের দু অংশের অর্থনৈতিক বৈষম্য, স্বার্থান্ধদের ক্ষমতার অপব্যবহার, আমলা ব্যবস্থার অত্যধিক ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষমতাসীনদের চরম অবহেলা, বাঙালিদের স্বকীয়তা ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা, উন্নয়ন দশক উদযাপন প্রভৃতি। মূলত এ সকল কারণেই ১৯৬৯ সালের আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
গ . উদ্দীপকে যে আন্দোলনের ইঙ্গিত রয়েছে তা হলো বাঙালির মাতৃভাষা আন্দোলন। উদ্দীপকে তিথি ও তার বন্ধুরা ফুলের তোড়া ও পুষ্পস্তবক নিয়ে সারিবদ্ধভাবে শহিদ মিনারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং শহিদদের স্মৃতি স্মরণ করে সবাই গাইছে, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি; যা ’৫২ এর ভাষা আন্দোলনকে ইঙ্গিত করে। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এ দুটি অংশ নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পূর্ববাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলে। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা না করার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষাপ্রেমী জনতা বিশেষ করে ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে নামে। এসময় পুলিশের গুলিতে অনেকে শহিদ হন। বীর বাঙালি রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠা করে।
ঘ . উক্ত ঘটনা অর্থাৎ বাঙালির মাতৃভাষা আন্দোলনই বাঙালির মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করে। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এ দুটি অংশ নিয়ে গড়ে ওঠে পাকিস্তান রাষ্ট্র। তবে শুরু থেকেই পাকিস্তানের শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের ধনিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় পূর্ব বাংলার সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে। মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালে প্রতিবাদ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে রূপ লাভ করে। ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ভাষা আন্দোলন এদেশের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। অর্থাৎ বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি আগে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব পূর্ববাংলার মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন- ৩০ পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য
ক. পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ বাঙালি ছিল? ১
খ. আইয়ুব খান শাসন ক্ষমতা হস্তগত করে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন? ২
গ. চিত্রে উল্লিখিত বৈষম্য ছাড়া আর যেসব বৈষম্য পরিলক্ষিত হয় তা ছক আকারে দেখাও। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রটি দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের যে বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়- তা ব্যাখ্যা কর। ৪
৩০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ বাঙালি ছিল।
খ . আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর শাসন ক্ষমতা দখল করে নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত করেন। তিনি উক্ত পদে বসে যেসব পদক্ষেপ নেন তাহলো : ১. নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা, ২. পূর্ব ঘোষিত ১৯৫৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করা, ৩. দুর্নীতি ও চোরাচালানি দূর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত ও ৪. রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা।
গ . চিত্রে উল্লিখিত বৈষম্য হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্য। অর্থনৈতিক বৈষম্য ছাড়াও প্রশাসনিক, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। বৈষম্যগুলো ছক আকারে দেখানো হলো :
প্রশাসনিক বৈষম্য | ||
প্রেসিডেন্টের সচিবালয়, দেশ রক্ষা, শিল্প, স্বরাষ্ট্র, তথ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, কৃষি প্রভৃতি প্রশাসনিক খাত | বাঙালি চাকরিজীবী ছিল ২১.৯% | পশ্চিম পাকিস্তানি চাকরিজীবী ছিল ৭৮.০১%। |
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য | ||
প্রতিরক্ষা বাহিনীর ধরন | বাঙালি | পশ্চিম পাকিস্তানি |
স্থলবাহিনী | ৪.৫% | ৯৫.৫% |
নৌবাহিনী | ১৪% | ৮৬% |
বিমানবাহিনী পাইলট ও টেকনিশিয়ানসহ | ৬.৩৫% | ৯৩.৬৫% |
শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য | ||
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন ও বাজেটে | বাঙালি | পশ্চিম পাকিস্তানি |
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান | তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি | ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠে |
শিক্ষা বাজেট | শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট তিন ভাগের এক ভাগেরও কম পেত। | শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণেরও বেশি পেত। |
ছকে উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানিরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিল।
ঘ . চিত্রটি দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। তার কারণ, চিত্রটিতে দেখা যায়, একটি গরু ঘাস খাচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানের অংশে আর একজন ব্যক্তি তার দুধ দোয়াচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তান অংশে বসে। এ চিত্রটি দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানিদের অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি প্রকাশ পায়। পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে পূর্ববাংলার চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তান অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। যেমন ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ১৯৫৯-৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান লাভ করেছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১১৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান তখন পেয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে ১৯৬০-৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬,৪৮০ মিলিয়ন টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ২২,২৩০ মিলিয়ন টাকা। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, কৃষিসহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তান এগিয়ে যায়, অপরদিকে পূর্ব পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে। উপরিউক্ত চিত্র এবং ব্যাখ্যা হতে সুস্পষ্টভাবে বলা যায় যে, পূর্ব পাকিস্তান ছিল কাঁচামাল তৈরির কারখানা, যে কারখানার কাঁচামাল পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্প কারখানায় চলে যেত। ফলে উন্নয়ন ঘটত শুধুই পশ্চিম পাকিস্তানে।
অনুশীলনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক (উত্তরসংকেতসহ)
প্রশ্ন- ৩১ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন
২১ ফেব্রুয়ারি নিশাত শহিদ মিনারে ফুল দিতে যায়। সেখানে তার অনেক শহিদের কথা মনে পড়ে, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।
ক. ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে মুসলিম লীগ কয়টি আসন লাভ করে? ১
খ. যুক্তফ্রন্টের যে কোনো পাঁচ দফা উলেস্নখ কর। ২
গ. শহিদ মিনারে নিশাতের ফুল দেওয়ার পেছনে কোন আন্দোলনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত আন্দোলনের সফলতার প্রেরণায় বাঙালি স্বাধীনতা লাভ করে-বিশ্লেষণ কর। ৪
৩১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ ৯টি আসন লাভ করে।
খ . যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার মধ্যে ৫ দফা নিচে উলেস্নখ করা হলো-
১. বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।
২. বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
৩. বাংলা ভাষার শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
৪. ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ব বাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হবে।
৫. পরপর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হলে মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর
না থাকতে হবে-
গ ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যাখ্যা কর।
ঘ . ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য বিশেস্নষণ কর।
প্রশ্ন- ৩২ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন
সৌমিকের বাবা একজন সুশিক্ষিত ও আধুনিক মানুষ। তিনি ছেলেকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করেন। কিন্তু সৌমিকের মা এতে নাখোশ। তিনি চান ছেলেকে অক্সফোর্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করতে। কারণ তার বান্ধবীরা যারা গুলশানে বসবাস করছেন তাদের ছেলেমেয়েরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে পড়ালেখা করছে। কিন্তু সৌমিকের বাবা তাকে বুঝিয়ে বললেন, বাংলা মিডিয়ামে পড়ালেখা করে এদের চেয়েও মেধাবী হওয়া সম্ভব।
ক. যুক্তফ্রন্ট মূলত কতটি দল নিয়ে গঠিত হয়েছিল? ১
খ. শেখ মুজিবকে ‘ফরিদপুর জেলে’ পাঠানো হয় কেন? ২
গ. কোন আন্দোলনের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সৌমিকের বাবা সৌমিককে বাংলা মিডিয়ামে ভর্তি করিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জাতীয় জীবনে উক্ত আন্দোলনের প্রভাব ছিল তাৎপর্যপূর্ণ- বিশ্লেষণ কর। ৪
৩২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . যুক্তফ্রন্ট মূলত ৪টি দল নিয়ে গঠিত হয়েছিল।
খ . ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধুকে বিনা বিচারে কারাগারে আটক রাখা হলে কারাগারের ভিতর থেকেও তিনি নেতৃবৃন্দকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিতেন। ঢাকা মেডিকেলে বন্দী হিসেবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আন্দোলনের পথনির্দেশনা দিতেন। তাই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ভীত হয়ে বঙ্গবন্ধু ও মহিউদ্দিন আহম্মদকে ফরিদপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ . ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ . ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য বিশেস্নষণ কর।
প্রশ্ন- ৩৩ ভাষা আন্দোলনের এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভূমিকা
বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ সম্পর্কে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতি সাহেব পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিমাতাসুলভ আচরণকেই দায়ী করলেন। তিনি তার আলোচনায় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নানা বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন এবং বলেন, এসব বৈষম্যের শিকার হয়ে বাঙালি প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে এবং প্রতিবাদের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে একটি জাতীয় আন্দোলনের জন্ম দেয়। এ আন্দোলন সাংস্কৃতিক বিষয়জনিত কারণে সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে তা রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ নেয়।
ক. যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কত সালে? ১
খ. ‘আওয়ামী মুসলিম লীগের’ গঠন সম্পর্কে সংড়্গেেপ লেখ। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত আন্দোলন কীভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভূমিকা রেখেছিল- বিশ্লেষণ কর। ৪
৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খ . মুসলিম লীগের দ্বিজাতি তাত্ত্বিক ধ্যান-ধারণা থেকে বের হয়ে প্রগতিশীল বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠন করে। এতে প্রথম সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ . ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ব্যাখ্যা কর।
ঘ . বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভূমিকা বিশেস্নষণ কর।
প্রশ্ন- ৩৪ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন
ইফতি ও তার বন্ধুরা ফুলের তোড়া ও পুষ্পস্তবক নিয়ে সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য হচ্ছে, শহিদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য স্মৃতিস্তম্ভে তা অর্পণ করা। সকলে গাইছে, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো—-’ গানটি। স্মৃতিস্তম্ভের অদূরে একটি আলোচনা সভা চলছিল। সেখানে একজন বক্তার কণ্ঠ থেকে ভেসে আসছে, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি নিছক একটি গান নয়, এটি একটি চেতনা, আন্দোলনের প্রতীক। এ চেতনাই জন্ম দিয়েছে ছেষট্টির ৬ দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।
ক. তমদ্দুন মজলিস কবে গঠিত হয়? ১
খ. যুক্তফ্রন্টের গঠন কেমন ছিল? ২
গ. অনুচ্ছেদে বর্ণিত স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পটভূমি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. স্মৃতিস্তম্ভের কাছে যিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তার বক্তব্যের যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪
৩৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিস গঠিত হয়।
খ . প্রাদেশিক পরিষদে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটানোর লড়্গ্েয ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। শেখ মুজিবুর রহমান বৃহত্তর ঐক্য গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ৪টি সংগঠন ২১ দফা প্রণয়ন শেষে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। দল ৪টি হলো আওয়ামী লীগ, কৃষক প্রজা পার্টি, নেজামে ইসলাম এবং গণতন্ত্রী দল।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ . ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ . ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য বিশেস্নষণ কর।
১৯৭০ সালের নির্বাচন
প্রশ্ন-৩৫ ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও এককভাবেই তারা সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগের এই জনসমর্থন দেখে ঝন্টুর বাবা বললেন, পাকিস্তান আমলেও আমাদের এ দলটি একটি নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে ষড়যন্ত্রকারীদের বিশ্বাসঘাতকতায় আমরা তখন সরকার গঠন করতে পারিনি। তবে এ নির্বাচন আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনায় অনুপ্রেরণা দেয়।
ক. কোন নির্বাচন ৬ দফার পড়্গে গণরায় দেয়? ১
খ. রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কীভাবে গঠিত হয়? ২
গ. ঝন্টুর বাবা অতীতের কোন নির্বাচনের কথা মনে করলেন? উক্ত নির্বাচনের জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদের আসন বণ্টন ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত নির্বাচনে একাধিক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে? উত্তরের পড়্গে যুক্তি দাও। ৪
৩৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক . ১৯৭০ সালের নির্বাচন ৬ দফার পড়্গে গণরায় দেয়।
খ . ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে ভাষা আন্দোলনকে সাংগঠনিক রূপদানের উদ্দেশ্যে তমদ্দুন মজলিস প্রথম ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে। তারপর ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় নতুন করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ . ১৯৭০ সালের নির্বাচন সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ . ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল বিশেস্নষণ কর।
অনুশীলনীর দক্ষতাস্তরের প্রশ্নোত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় কত সালে?
উত্তর : ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় ।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ কার নেতৃত্বে ‘তমদ্দুন মজলিস’ গঠিত হয়?
উত্তর : আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ‘তমদ্দুন মজলিস’ গঠিত হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ তমদ্দুন মজলিস কবে গঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিস গঠিত হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় কবে?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ কত তারিখে পূর্ববাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ পূর্ববাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ কত সালে বাংলা ভাষা পাকিস্তানের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়?
উত্তর : ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষা পাকিস্তানের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ ইউনেস্কো কত সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা দেয়?
উত্তর : ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা
য় ।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন কে?
উত্তর : ॥ প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন শফিউরের পিতা ।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার এক নম্বর আসামি কে ছিলেন?
উত্তর : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ কত দিন অব্যাহত ছিল?
উত্তর : ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ ১৭ দিন অব্যাহত ছিল ।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ পৃথিবীতে কত হাজার ভাষা রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীতে ৬০০০ -এর বেশি ভাষা রয়েছে।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের ফলে কয়টি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়?
উত্তর : ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের ফলে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ ভারতবর্ষ বিভক্তিতে কোন তত্ত্বের ব্যাপক প্রভাব ছিল?
উত্তর : ভারতবর্ষের বিভক্তিতে দ্বিজাতিতত্ত্বের ব্যাপক প্রভাব ছিল।
প্রশ্ন ॥ ১৪॥ কোন আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দেয়?
উত্তর : ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দেয়।
প্রশ্ন ॥ ১৫॥ পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই কী নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়?
উত্তর : পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই এর রাষ্ট্রভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ কে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন?
উত্তর : মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন কে?
উত্তর : মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল
ক।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ চৌধুরী খলীকুজ্জামান কত তারিখে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন?
উত্তর : চৌধুরী খলীকুজ্জামান ১৯৪৭ সালের ১৭ মে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ পুস্তিকাটি কোন সংগঠন প্রকাশ করে?
উত্তর : ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ পুস্তিকাটি তমদ্দুন মজলিস প্রকাশ করে।
প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত কোথায় গৃহীত হয়?
উত্তর : করাচিতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রশ্ন ॥ ২১ ॥ ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদ’ কবে নতুনভাবে গঠিত হয়?
উত্তর : ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদ’ ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে নতুনভাবে গঠিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ২২ ॥ কখন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা
বহারের দাবি জানান?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির
শাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান।
প্রশ্ন ॥ ২৩ ॥ কখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ২৪ ॥ ১৯৪৮ সালের কত তারিখে পূর্ববাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ পূর্ববাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ২৫ ॥ পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দীন খান কবে সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তি
ক্ষর করেন?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দীন খান ১৯৪৮ সালে ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা
ক্তি স্বাক্ষর করেন।
প্রশ্ন ॥ ২৬ ॥ কবে মুহম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ মুহম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন।
প্রশ্ন ॥ ২৭ ॥ কখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দীন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা
রেন?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দীন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা
রার ঘোষণা করেন।
প্রশ্ন ॥ ২৮ ॥ কাকে আহ্বায়ক করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে গঠিত হয়?
উত্তর : আব্দুল মতিনকে আহ্বায়ক করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে গঠিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ২৯ ॥ ১৯৫২ সালের কত তারিখে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩০ ॥ ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শোক র্যালিতে পুলিশের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন কে?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শোক র্যালিতে পুলিশের হামলায় শফিউর মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন ॥ ৩১ ॥ কত তারিখে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়?
উত্তর : ১৯৬২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩২ ॥ কত তারিখে পুলিশ প্রথম শহিদ মিনারটি ভেঙে ফেলে?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ প্রথম শহিদ মিনারটি ভেঙে ফেলে।
প্রশ্ন ॥ ৩৩ ॥ ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি’ গানটি কে রচনা করেন।
উত্তর : ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি’ গানটি রচনা করেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।
প্রশ্ন ॥ ৩৪ ॥ ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ গানটি কে লিখেছেন?
উত্তর : ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ গানটি আব্দুল লতিফ লিখেছেন।
প্রশ্ন ॥ ৩৫ ॥ কোন সংস্থা শহিদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়?
উত্তর : জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো শহিদ দিবসকে
ন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।
প্রশ্ন ॥ ৩৬ ॥ কত সালে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৪৯ সালে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩৭ ॥ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান
সানী।
প্রশ্ন ॥ ৩৮ ॥ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সামসুল হক।
প্রশ্ন ॥ ৩৯ ॥ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হন কে?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন ॥ ৪০ ॥ প্রাদেশিক যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল?
উত্তর : প্রাদেশিক যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল।
প্রশ্ন ॥ ৪১ ॥ কত সালে পাকিস্তানে নতুন শাসনতন্ত্র গৃহীত হয়?
উত্তর : ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে নতুন শাসনতন্ত্র গৃহীত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৪২ ॥ আওয়ামী লীগ কত সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে?
উত্তর : আওয়ামী লীগ ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
প্রশ্ন ॥ ৪৩ ॥ কত সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৫৪ সালের ৮ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৪৪ ॥ প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে জনগণ ২১ দফাকে কী বলে বিবেচনা করে?
উত্তর : প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে জনগণ ২১ দফাকে স্বার্থ রক্ষার সনদ বলে বিবেচনা করে।
প্রশ্ন ॥ ৪৫ ॥ পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আসন সংখ্যা ছিল কতটি?
উত্তর : পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আসন সংখ্যা ছিল ২৩৭টি।
প্রশ্ন ॥ ৪৬ ॥ পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট কতটি আসন লাভ করে?
উত্তর : পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন লাভ করে।
প্রশ্ন ॥ ৪৭ ॥ পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগ কতটি আসন লাভ করে?
উত্তর : পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগ ৯টি আসন লাভ করে।
প্রশ্ন ॥ ৪৮ ॥ যুক্তফ্রন্টের কোন নেতা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন?
উত্তর : যুক্তফ্রন্টের কৃষক-প্রজা পার্টির নেতা এ. কে. ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন ॥ ৪৯ ॥ পাকিস্তানের গভর্নর কবে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে?
উত্তর : পাকিস্তানের গভর্নর ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে।
প্রশ্ন ॥ ৫০ ॥ কত সালে পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করা হয়?
উত্তর : ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৫১ ॥ সামরিক শাসনের ফলে পাকিস্তানে কত সালের সংবিধান বাতিল করা হয়?
উত্তর : সামরিক শাসনের ফলে পাকিস্তানে ১৯৫৬ সালে গৃহীত সংবিধান বাতিল করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৫২ ॥ আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর কাকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসেন?
উত্তর : আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর ইস্কান্দার মীর্জাকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসেন।
প্রশ্ন ॥ ৫৩ ॥ সামরিক শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য আইয়ুব খান কোন ব্যবস্থা চালু করেছিলেন?
উত্তর : সামরিক শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন।
প্রশ্ন ॥ ৫৪ ॥ আইয়ুব খান কত সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন?
উত্তর : আইয়ুব খান ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রশ্ন ॥ ৫৫ ॥ ১৯৬৫ সালের কত তারিখে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল?
উত্তর : ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
প্রশ্ন ॥ ৫৬ ॥ ৬ দফায় কোন ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল?
উত্তর: ৬ দফায় সংসদীয় পদ্ধতির সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছিল।
অনুধাবনমূলকপ্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন কী ভূমিকা রাখে?
উত্তর : বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে। পাকিস্তানের প্রতি
গে যে মোহ ছিল তা দ্রুত কেটে যেতে থাকে। নিজস্ব জাতিসত্তা সৃষ্টিতে ভাষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক ও গুরুত্ব পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের কাছে অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে। ভাষাকেন্দ্রিক এই ঐক্যই জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি রচনা করে, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ আওয়ামী মুসলিম লীগের গঠন সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতাত্ত্বিক ধ্যানধারণা থেকে বের হয়ে প্রগতিশীল বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠন করে। দলটির প্রথম সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে কী বৈষম্য ছিল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রেবৈষম্য ছিল ব্যাপক। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ববাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় এগিয়ে ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণের বেশি লাভ করতে থাকে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার ৫টি দফা উল্লেখ কর।
উত্তর : ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার মধ্যে ৫ দফা উলেস্নখ করা হলো :
১. বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।
২. বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
৩. বাংলা ভাষার শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
৪. ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ববাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হবে।
৫. পরপর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হলে মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ সম্পর্কে কী জান? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধ ১৭ দিন ধরে অব্যাহত ছিল। তখন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণরূপে অরক্ষিত ছিল। বিষয়টি পূর্ববাংলার জনগণের কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও বৈষম্যমূলক মনে হয়েছিল। ‘ইসলাম বিপন্ন হওয়া’, রবীন্দ্র সংগীতকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’, নজরুল ইসলামের গানে ‘হিন্দুয়ানি’র অভিযোগ তুলে এসব বাদ দেওয়ার যুগপৎ চেষ্টা করা হয়। ফলে পূর্ববাংলার জনগণ নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে। বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হতে থাকে।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার উর্দুকে কেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল?
উত্তর : পশ্চিম পাকিস্তানিরা জানত কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে হলে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করাই যথেষ্ট। উর্দু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হলে সব ক্ষেত্রে উর্দু ভাষাভাষী লোকরাই বেশি প্রাধান্য পাবে। এসব সাত-পাঁচ ভেবে এবং নিজেদের লোভী চিস্তা সফল করার জন্য পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ ৬ দফা দাবির প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ৬ দফা উপস্থাপনের পর শেখ মুজিবকে নানা মামলায় জড়ানো হতে থাকে। তিনি ৬ দফা প্রচারের জন্য পূর্ববাংলার বিভিন্ন জায়গায় জনসভায় যোগদান করেন। তাকে প্রায় সব স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তিনি তাতে মোটেও বিচলিত বোধ করেননি। নির্ভীক শেখ মুজিবকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালে ‘আগরতলা’ মামলার এক নম্বর আসামি করে। শেখ মুজিবসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহী এই মামলার বিরুদ্ধে প্রথমে ছাত্রসমাজ ১১ দফা দাবিনামা দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। অবশেষে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান ঘটে।