৯ম-১০ম শ্রেণী বাংলা ১ম পত্র পদ্যঃ পল্লিজননী
পল্লিজননী
লেখক পরিচিতি
নাম জসীমউদ্দীন
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৯০৩ সালের ৩০শে অক্টোবর।
জন্মস্থান : মাতুলালয়, ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রাম ।
কর্মজীবন শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সরকারি তথ্য ও প্রচার বিভাগ উচ্চপদে যোগ দেন।
উল্লেখযোগ্য রচনা কাব্যগ্রন্থÑ নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, বালুচর, মাটির কান্না, এক পয়সার বাঁশি।
সাহিত্য বৈশিষ্ট্য পল্লির মানুষের আশা-স্বপ্ন-আনন্দ বেদনার আবেগঘন চিত্র ফুটিয়ে তোলা। পল্লিকবি নামে খ্যাত।
পুরস্কার ও সম্মাননা একুশে পদক, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি লাভ করেন।
মৃত্যু ১৯৭৬ সালের ১৪ই মার্চ ঢাকায়।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
১. বাদশা বাবর কাঁদিয়া ফিরিছে, নিদ নাহি চোখে তাঁর
পুত্র তাঁহার হুমায়ুন বুঝি বাঁচে না এবার আর।
চারিধারে তাঁর ঘনায়ে আসিছে মরণ অন্ধকার।
ক. ‘পলি−জননী’ কবিতায় ছেলে মাকে কী যতœ করে রাখার কথা বলেছে? ১
খ. ‘আজও রোগে তার পথ্য জোটেনি’ Ñ পথ্য না জোটার কারণ কী? ২
গ. উদ্দীপক কবিতাংশে ‘পলি−জননী’ কবিতার যে দিকটি প্রতিফলিত তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. প্রতিফলিত দিকটিই ‘পলি−জননী’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে ধারণ করে কি ? যুক্তিসহ প্রমাণ করো। ৪
১ নং প্র. উ.
ক. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলে মাকে তার লাটাই যতœ করে রাখার কথা বলেছে।
খ. দারিদ্র্যের কারণে মা তার রুগ্ণ ছেলের পথ্য জোটাতে পারেনি।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় গ্রামের দুরন্ত ছেলেটি অসুস্থ হয়ে বিছানায় ছটফট করছে। তার মা দারিদ্র্যপীড়িত এক গ্রামীণ নারী। সামর্থ্য না থাকায় অসহায় মা আনন্দ আয়োজন দূরে থাক ওষুধ-পথ্য পর্যন্ত জোটাতে পারেনি।
গ. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বর্ণিত মৃত্যুপথযাত্রী সন্তানের জন্য করুণ অভিব্যক্তির দিকটি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।
কবি জসীমউদ্দীনের ‘পল্লিজননী’ কবিতায় এক রুগ্ণ সন্তানের শিয়রে বসা মমতাময়ী মায়ের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে। সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ ও পথ্য জোগাড় করতে না পারার গভীর মনঃকষ্ট কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে। মা পুত্রকে আদর করে আর সান্ত্বনা দিতে থাকে। রোগমুক্তির জন্য মানত করে। মায়ের মনে পুত্র হারানোর শঙ্কা জেগে ওঠে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত বাদশা বাবর তাঁর অসুস্থ পুত্রের জন্য ব্যগ্র ব্যাকুল। সন্তানের জন্য দুশ্চিন্তায় তাঁর চোখে ঘুম নেই। পুত্র হুমায়ুন বুঝি আর বাঁচবে না। মরণ অন্ধকার তাকে ঘিরে ধরেছে। বাদশা বাবর কেঁদে ফিরছেন কীভাবে পুত্রকে ভালো করা যায়। সন্তানের কষ্টে কোনো পিতা-মাতাই স্থির থাকতে পারে না। উদ্দীপকের কবিতাংশে সেই মনঃকষ্টই ব্যক্ত হয়েছে ‘পল্লিজননী’ কবিতায়।
ঘ. অবস্থানগত বৈসাদৃশ্য বিবেচনায় উদ্দীপকটি ‘পল্লিজননী’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে ধারণ করে না।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ শিশুর শিয়রে বসে থাকা এক মায়ের মনঃকষ্ট ও গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ পেয়েছে। দারিদ্র্যের কারণে মমতাময়ী মা তার সন্তানের জন্য ওষুধ-পথ্য জোগাড় করতে পারেনি। সারা রাত জেগে বুকের মানিককে আদর আর প্রবোধ দেন। পুত্র হারানোর শঙ্কায় আতঙ্কিত মা দরগায় মানত করে। আল্লাহ রসুল ও পীরের কাছে সন্তানকে ভালো করে দেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করে। মাটির প্রদীপের মতো তার জীবন প্রদীপও যেন নিভে যাচ্ছে। অসহায় মায়ের হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে রুগ্ণ ছেলের জন্য।
উদ্দীপকে একজন পরাক্রমশালী বাদশাহ বাবর তাঁর ভীষণ অসুস্থ সন্তান হুমায়ুনের জন্য কাতর হয়ে পড়েছেন। মৃত্যুপথযাত্রী সন্তানের করুণ অবস্থা দেখে পিতার অন্তর গুমরে কেঁদে উঠেছে। সন্তানের জীবনে যেন মরণ অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। পুত্র হুমায়ুনকে বুঝি আর বাঁচানো যাচ্ছে না। সন্তানের জীবন বাঁচাতে বাদশা বাবরের মনঃকষ্ট ও তীব্র ব্যাকুলতাই প্রকাশ পেয়েছে। ‘পল্লিজননী’ কবিতায়ও এ বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু উদ্দীপক ও কবিতার মাঝে পারিপার্শ্বিতার ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ শিশুর জীবন বাঁচতে দরিদ্র অসহায় দুঃখিনী মায়ের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকেও মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের জীবন বাঁচাতে এক পিতা ব্যগ্র ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। কিন্তু কবিতার পল্লিজননী আর উদ্দীপকের বাদশাহ বাবরের আর্থিক অবস্থার চিত্র সম্পূর্ণই বিপরীত। পল্লিজননীর পুত্র সুচিকিৎসা পায়নি হতদরিদ্র হওয়ায়। কিন্তু উদ্দীপকের বাদশাহপুত্র হুমায়ুনের ক্ষেত্রে এটি ঘটার সুযোগ নেই। আবার ‘পল্লিজননী’ কবিতার প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে গ্রামীণ পরিবেশে। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের বর্ণনায় কবিতাটি নিবিড়তা লাভ করেছে। উদ্দীপক কবিতাংশটিতে এ বিষয়গুলো পাওয়া যায় না। তাই উদ্দীপকটি কবিতার মূলভাব ধারণে সক্ষম হলেও সমগ্র অংশের ধারক নয়।
২. শহরের এক উন্নতমানের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে রকিবের। ঘণ্টায় ঘণ্টায় ডাক্তার, নার্সের নিশ্চিত উপস্থিতি, পর্যাপ্ত ওষুধ-পথ্য কোনো কিছুই মায়ের মনকে শান্ত করতে পারছে না। রকিবের মাথার পাশে এক মনে তসবি জপছেন মা। তাঁর মনে হাজারো আশা ও আশঙ্কা উঁকি মারছে।
ক. ‘আড়ং’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. মা নামাজের ঘরে মোমবাতি আর দরগায় দান মানেন কেন? ২
গ. উদ্দীপকের রকিবের সাথে ‘পল্লিজননী’ কবিতার অসুস্থ শিশুটির অবস্থার বৈসাদৃশ্য দেখাও। ৩
ঘ. গ্রামীণ ও শহুরে দুই মায়ের আশা ও আশঙ্কা একই অনুভূতিতে গাঁথাÑ মূল্যায়ন করো। ৪
২ নং প্র. উ.
ক. ‘আড়ং’ শব্দের অর্থ মেলা।
খ. সন্তানের আরোগ্য কামনায় মা নামাজের ঘরে মোমবাতি আর দরগায় দান মানেন।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় বর্ণিত জননীর সন্তান অত্যন্ত অসুস্থ। পল্লিজননীর সার্মথ্য নেই ছেলের জন্য ওষুধ-পথ্য জোগাড় করার। অলৌকিকভাবে তার সন্তান রোগমুক্ত হবে এই ভরসায় থাকেন দরিদ্র মাতা। তাই তিনি নামাজের ঘরে মোমবাতি আর দরগায় দান দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।
গ. উদ্দীপকের রাকিব অসুস্থাবস্থায় উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পেলেও ‘পল্লিজননী’ কবিতার অসুস্থ শিশুটির ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি।
কবি জসীমউদ্দীন রচিত ‘পল্লিজননী’ কবিতায় এক দুঃখিনী পল্লিজননী ও তাঁর অসুস্থ সন্তানের মাঝে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছে। ছেলেটি অনেক দিন থেকেই অসুস্থ। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে তার মা তার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পথ্যের ব্যবস্থা করতে পারেনি।
উদ্দীপকে দেখা যায়, অসুস্থ রাকিব চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি। সেখানে তার জন্য সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ-পথ্যেরও ব্যবস্থা রয়েছে। সেই সাথে রাকিবের পাশে তার মমতাময়ী মায়ের উপস্থিতি রয়েছে। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় অসুস্থ শিশুটি একইভাবে মায়ের ভালোবাসা পেলেও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ-পথ্য ও চিকিৎসার সুযোগ থেকে সে বঞ্চিত।
ঘ. ‘পল্লিজননী’ কবিতার গ্রামীণ মা এবং উদ্দীপকের শহরের মা দুজনের মনের আশা একই বিন্দুতে গাঁথা। আর তা হলো প্রাণপ্রিয় পুত্রের আরোগ্য লাভ।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় কবি জসীমউদ্দীন সন্তানের প্রতি মায়ের অনুরাগের নিবিড় এক চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। রুগ্ণ পুত্রের শিয়রে বসে গভীর মনঃকষ্টে মা রাত জাগেন। হতদরিদ্র মা পুত্রকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ-পথ্য জোগাড় করে দিতে পারেননি। তাঁর মনে ক্ষণে ক্ষণে পুত্র হারানোর শঙ্কা জেগে ওঠে। নিজের মমতার আবরণে তিনি পুত্রের সকল অমঙ্গল আশঙ্কা দূর করতে চান।
উদ্দীপকের রাকিব অত্যন্ত অসুস্থ। তার জন্য হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় ডাক্তার, নার্স তার শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। ওষুধ-পথ্যের দিক থেকেও কোনো রকম ত্রুটি করা হয়নি। তবুও তার মায়ের মনে শান্তি নেই। পুত্রের সুস্থতার জন্য মায়ের মনের আকুলতার স্বরূপ ধরা পড়েছে উদ্দীপক ও ‘পল্লিজননী’ কবিতার মায়ের মাঝে।
উদ্দীপক এবং ‘পল্লিজননী’ কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই মায়ের গভীর মমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। উদ্দীপকের শহুরে মা কিংবা কবিতার পল্লিজননী, দুজনেরই মনের আকাক্সক্ষা ও আশঙ্কা একই বিষয়কে কেন্দ্র করে। তা হলো পুত্রের রোগমুক্তি। তাই তো উদ্দীপকের মা ছেলের শিয়রে বসে তসবি জপেন। কবিতার দরিদ্র জননী পুত্রের রোগমুক্তির জন্য মসজিদে ও দরগায় দান করার মানত করেন। উভয় মা-ই সন্তান হারানোর আশঙ্কায় চরম মানসিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। পুত্রস্নেহের অনিবার্য আকর্ষণই উভয় মাকে এক ডোরে বেঁধেছে।
৩. জ্যোতির বয়স এবার বারো পেরোল। বড় দুরন্ত ছেলে। রোজ বিকেলে দূরের মাঠে খেলতে যায় সে। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা। একাকী বাসায় এ সময়টা বড় দুশ্চিন্তায় কাটে তাসমিনা আফরোজের। ছেলেকে নিয়ে নানা আশা ও আশঙ্কায় জায়নামাজে বসে একনাগাড়ে দোয়া পড়তে থাকেন তিনি।
ক. ঘরের চালে কী ডাকে? ১
খ. ‘তারি সাথে সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরাণ দোলে।’Ñ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে ‘পল্লিজননী’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকটির মূলভাব ‘পল্লিজননী’ কবিতার পুরোপুরি প্রতিনিধিত্ব করে না। উক্তিটি মূল্যায়ন করো। ৪
৩ নং প্র. উ.
ক. ঘরের চালে হুতুম ডাকছে।
খ. সন্তানের অসুস্থতায় বিচলিত হয়ে পল্লিজননীর মনে পুত্র হারানোর শঙ্কা জেগে ওঠেÑ এই চিত্র প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য চরণে।
পল্লিজননী সন্তানের প্রতি অত্যন্ত মমতাময়ী। তার মাঝে সন্তানবাৎসল্যের চিরন্তন রূপ লক্ষ করা যায়। তিনি সন্তানের শিয়রে বসে নিদারুণ মনঃকষ্টে ভোগেন। সে সময় তাঁর মাথায় নানা রকম দুশ্চিন্তা খেলা করে। তার মনে পুত্র হারানোর শঙ্কা জেগে ওঠে।
গ. উদ্দীপকে ‘পল্লিজননী’ কবিতার সন্তানের প্রতি অজানা আশঙ্কার দিকটি ফুটে উঠেছে।
প্রত্যেক মায়েরই সন্তানের প্রতি অনিবার্য ভালোবাসা থাকে। সন্তানের সুখে মা খুশি হন, আবার সন্তানের অসুখে মা ব্যথিত হন। অপত্যস্নেহের অনিবার্য আকর্ষণে প্রত্যেক জননীই চান তার সন্তান ভালো থাকুক। সন্তানের কোনো বিপদে মায়ের মন সর্বদাই আতঙ্কিত থাকে। এক মুহূর্ত মায়ের সামনে সন্তানের অনুপস্থিতি মাকে অজানা আশঙ্কায় ভাবিয়ে তোলে।
উদ্দীপকে সন্তানের অনুপস্থিতিতে মায়ের মনের অজানা আশঙ্কা ফুটে উঠেছে। ছেলে দূরের মাঠে খেলতে গিয়ে ফিরতে দেরি হওয়ায় মায়ের মনে নানা দুশ্চিন্তা ভর করে। উদ্দীপকের জননীর এই দিকটি ‘পল্লিজননী’ কবিতায়ও প্রকাশ পেয়েছে। ছেলের প্রতি নিবিড় ভালোবাসাই উদ্দীপকের তাসমিনা আফরোজ এবং কবিতায় বর্ণিত পল্লিজননীর অজানা আশঙ্কার কারণ।
ঘ. মায়ের সন্তানবাৎসল্য প্রকাশ পেলেও অনুভূতির গভীরতা এবং অবস্থানগত পার্থক্যের বিবেচনায় উদ্দীপকটি ‘পল্লিজননী’ কবিতাকে সম্পূর্ণরূপে প্রতিনিধিত্ব করে না।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ পুত্রের শিয়রে বসা এক দরিদ্র পল্লিজননীর অপত্যস্নেহের অনিবার্য আকর্ষণের কথা বর্ণিত হয়েছে। পল্লিজননী পুত্রের চাঞ্চলতা স্মরণ আর দারিদ্র্যের কারণে পুত্রের নানা আবদার মেটাতে না পারার ব্যর্থতায় কাতর। তিনি অসুস্থ পুত্রের সুস্থতার জন্য মানত করেন। এর মাধ্যমে পল্লিজননীর সন্তানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা গভীরভাবে প্রকাশ পায়।
উদ্দীপকেও তাসমিনা আফরোজের সন্তানবাৎসল্য প্রকাশ পেয়েছে। সন্তানের জন্য তাঁর দুশ্চিন্তার শেষ নেই। পুত্রের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনায় রত হন তিনি। কিন্তু ‘পল্লিজননী’ কবিতায় এক দরিদ্র মায়ের সন্তানপ্রীতির চিত্র আঁকতে গিয়ে কবি পল্লি অঞ্চলের এক সার্থক সমাজচিত্রও অঙ্কন করেছেন। উদ্দীপকে কবিতার এ সকল দিক অনুপস্থিত।
‘পল্লিজননী’ কবিতা এবং উদ্দীপক উভয়ের মূলকথা সন্তানবাৎসল্য হলেও এদের উপস্থাপনগত ভিন্নতা রয়েছে। কবিতার পল্লিজননীর পুত্র মৃত্যুমুখে পতিত। দরিদ্র মা তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ-পথ্য জোগাড় করে দিতে পারেননি। তাই সন্তানকে চিরতরে হারানোর শঙ্কা তাঁকে ব্যাকুল করে তোলে। কিন্তু উদ্দীপকের মায়ের ছেলেটি এমন ঘোর বিপদের মুখোমুখি নয়। তাছাড়া কবিতায় পল্লিজননীর সন্তানবাৎসল্যের আড়ালে পল্লিগ্রামের এক নিবিড় সমাজচিত্র অঙ্কিত হলেও উদ্দীপকে শুধু সন্তানের প্রতি ভালোবাসাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। তাই উদ্দীপকটির মূলভাব ‘পল্লিজননী’ কবিতার পুরোপুরি প্রতিনিধিত্ব করে না।
৪. স্বামীহারা রাহেলা বানু নির্মাণশ্রমিক হিসেবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে একমাত্র সন্তান শিপুকে লেখাপড়া শেখান। স্নেহবাৎসল্য থাকলেও তা অন্তরে ধারণ করে তিনি সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
ক. রুগ্ণ ছেলের শিয়রে কে জাগছে? ১
খ. শিয়রের কাছে নিবু নিবু দীপের সাথে বিরহী মায়ের পরাণ দোলে কেন? ২
গ. উদ্দীপকের রাহেলা বানুর মধ্যে পল্লিজননীর যে গুণের আভাস দেওয়া হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে ‘পল্লিজননী’ কবিতার মমতাময়ী মায়ের চেতনার সামগ্রিক দিক ফুটে ওঠেনিÑ মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো। ৪
৪ নং প্র. উ.
ক. রুগ্ণ ছেলের শিয়রে পল্লিজননী জাগছে।
খ. সন্তানের অমঙ্গল আশঙ্কায় তার শিয়রের কাছে বসে পল্লিজননীর পরাণ দোলে।
রুগ্ণ ছেলের শিয়রে বসে আছেন অসহায় মা। সন্তান রোগযন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছে। জননী তাকে দরকারমতো ওষুধ জোগাড় করে দিতে পারেননি। সন্তানের মৃত্যুশঙ্কা মায়ের মনকে আকুল করে। একলা বসে তাই পল্লিজননী বারবার শিউরে ওঠেন।
গ. উদ্দীপকের রাহেলা বানুর মধ্যে পল্লিজননীর সন্তানবাৎসল্য গুণটির আভাস দেওয়া হয়েছে।
মায়ের মতো মমতাময়ী আর কেউ নেই। প্রতিটি মা-ই চান তার সন্তান ভালো থাকুক। সন্তানের কোনো বিপদে মা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান। সন্তানের ভালো করার জন্য প্রত্যেক মা সর্বদা সচেষ্ট থাকেন। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কবি জসীমউদ্দীন এমন মমতাময়ী এক পল্লিমায়ের সুনিপুণ চিত্র অঙ্কন করেছেন।
উদ্দীপকের রাহেলা বানু পল্লিজননীর মতোই একজন স্নেহবৎসল মা। তিনি সন্তানের মঙ্গল কামনায় কঠোর পরিশ্রম করেন। সন্তানের প্রতি গভীর ভালোবাসার কারণে তিনি সন্তানকে লেখাপড়া শেখানোর ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ী। এজন্য তিনি নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেও দ্বিধা করেন না। রাহেলা বানুর স্নেহময়তার এই দিকটি ‘পল্লিজননী’ কবিতার পল্লিমায়ের সন্তানবাৎসল্যকে প্রতিফলিত করেছে।
ঘ. স্নেহময়তাকে ধারণ করলেও ‘পল্লিজননী’র অসহায়ত্বের তীব্রতাকে ধারণ না করায় উদ্দীপকটি ‘পল্লিজননী’ কবিতার সামগ্রিক ভাব তুলে ধরতে পারেনি।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার গভীর মমতাময়ী দিক সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন কবি জসীমউদ্দীন। কবিতায় পল্লিজননী সন্তানের অসুস্থতায় যেমন উদ্বিগ্ন তেমনি দারিদ্র্যের কারণে ওষুধ না কিনতে পেরে অসহায়। ফলে সন্তানবাৎসল্যের পাশাপাশি কবিতায় পল্লিজননীর অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপকের রাহেলা বানু কঠোর পরিশ্রম করে ছেলেকে লেখাপড়া করানোর সংগ্রাম করে চলেছেন। এক্ষেত্রে রাহেলা বানুর সন্তানের আকাক্সক্ষা পূরণের অসহায়ত্ব নেই। কিন্তু ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পল্লিজননীর মাঝে সন্তানের জন্য ভালোবাসা আছে, সন্তান হারানোর শঙ্কা আছে, অসহায়ত্ব আছে।
প্রতিটি মায়ের মনেই অপত্যস্নেহের অনিবার্য আকর্ষণ রয়েছে। সন্তানের সুখে মা হাসেন, আবার সন্তানের দুঃখে মা কাঁদেন। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় অপত্যস্নেহের আকর্ষণে মা অসুস্থ সন্তানের শিয়রে বসে আতঙ্কিত হয়েছেন। উদ্দীপকে এ ধরনের কোনো বিষয় লক্ষ করা যায় না। পল্লিমায়ের মাঝে আবদারমুখো পুত্রের চাহিদা পূরণের ব্যর্থতার কষ্ট রয়েছে। অসুস্থ সন্তানের পথ্য কেনার সামর্থ্য না থাকায় স্নেহবৎসল পুত্রের শিয়রে বসা পল্লিমায়ের অসহায়ত্বের বেদনাও প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু স্নেহবাৎসল্যের দিকটিই প্রস্ফুটিত। সন্তান হারানোর আশঙ্কা কিংবা তার আবদার পূরণের অসামর্থ্যরে যন্ত্রণার বিষয়গুলো এখানে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘পল্লিজননী’ কবিতার মমতাময়ী মায়ের চেতনার সামগ্রিক দিক ফুটে ওঠেনি।
৫. ছেলেটার বয়স হবে বছর দশেক, পরের ঘরে মানুষ
যেমন ভাঙা বেড়ার ধারে আগাছা, মালীর যতœ নেই
ছেলেটা ফুল পাড়তে গিয়ে গাছের থেকে পড়ে
হাড় ভাঙে, বুনো বিষফল খেয়ে ও ভিরমি লাগে
কিছুতেই কিছু হয় না, আধমরা হয়েও বাঁচে
গেরেস্ত ঘরে ঢুকলেই সবাই তাকে দূর দূর করে
কেবল তাকে ডেকে এনে দুধ খাওয়ায় সিধু গোয়ালিনী
তার উপদ্রবে গোয়ালিনীর স্নেহ ওঠে ঢেউ খেলিয়ে
তার হয়ে কেউ শাসন করতে এলে, পক্ষ নেয় ওই ছেলেটারই।
ক. বাঁশবনে ডাকে কে? ১
খ. মায়ের প্রাণ শঙ্কায় ভরে উঠেছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকের ছেলেটার সাথে ‘পল্লিজননী’ কবিতার ছেলেটার পার্থক্য কোথায়?- ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. তুমি কি মনে করো সিধু গোয়ালিনী পল্লিজননীরই প্রতিরূপ? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৫ নং প্র. উ.
ক. বাঁশবনে কানা কুয়ো ডাকে।
খ. সন্তানের অসুস্থতায় মা অত্যন্ত বিচলিত। তাই পুত্র হারানোর শঙ্কায় তার মন ভরে উঠেছে।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় পল্লিজননী একজন মমতাময়ী মা। রুগ্ণ সন্তানের শিয়রে বসে তিনি দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছেন। সামর্থ্যের অভাবে ছেলের জন্য ওষুধ পথ্য জোগাড় করতে পারেননি তিনি। অসহায় মায়ের প্রাণ তাই সন্তানের মৃত্যু শঙ্কায় ভরে উঠেছে।
গ. ‘পল্লিজননী’ কবিতার ছেলেটি মাতৃস্নেহে লালিত। আর উদ্দীপকের ছেলেটি মাতৃস্নেহ বঞ্চিত, বেড়ে উঠেছে অনাদর অবহেলায়।
মাতৃস্নেহের এক অনুপম নিদর্শন ‘পল্লিজননী’ কবিতা। পল্লিজননীর বুকের মানিক ছেলেটি তার মায়ের কোলেই বড় হয়েছে। তার দিন কাটে খেলাধুলা আর ঘুড়ি লাটাই নিয়ে। মায়ের কাছে তার আবদারের শেষ নেই। ঢাঁপের মোয়া, গুড়ের পাটালি আরো কত কী? মায়ের আদরে বড় হওয়া ছেলেটি যখন রোগশয্যায় তখন স্নেহময়ী মা ব্যাকুল হয়ে পড়েন। তার অসুখ সারিয়ে তোলার জন্য তার শিয়রে বসে থাকেন।
উদ্দীপকের ছেলেটি পরের ঘরে মানুষ হয়েছে। যতœহীনভাব আগাছার মতো সে বড় হচ্ছে। সবাই তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। তার অসহায়ত্বের কথা কেউ ভাবে না। কিন্তু ‘পল্লিজননী’ কবিতার ছেলেটি অভাবী হলেও মায়ের স্নেহধন্য।
ঘ. সন্তানবাৎসলের দিক দিয়ে সিধু গোয়ালিনী পল্লিজননীর প্রতিরূপ।
‘পল্লিজননী’ কবিতায় আমরা দেখি একজন স্নেহময়ী মা কীভাবে তাঁর রুগ্ণ শিশুর জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। দারিদ্র্যের কারণে এই মা সন্তানকে ওষুধ পথ্য দিতে পারেননি বলে তাঁর উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ আরো বেড়ে গিয়েছে। তাই মসজিদ ও মাজারে মোমবাতি মানত করেন, আল্লাহ, রাসুল ও পীরকে মনে মনে স্মরণ করে সারা রাত সন্তানের শিয়রে পাশে বসে থাকেন। সন্তানের রোগ সারিয়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা চালান এই মা।
উদ্দীপকে বর্ণিত দুরন্ত ছেলেটিকে সবাই দেখে অবজ্ঞার চোখে। পিতৃ-মাতৃহীন ছেলেটির দিকে কেউই সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয় না। সবাই তাকে আপদ ও উপদ্রপ মনে করে। যে বাড়িতেই যায় সেখানেই তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সিধু গোয়ালিনী তাকে ডেকে আদর করে দুধ খাওয়ায়। তার উপদ্রবে গোয়ালিনীর স্নেহ-মমতা আরো বেশি জেগে ওঠে। ছেলেটির দুরন্তপনায় কেউ তাকে শাসন করতে এলে গোয়ালিনী তার হয়ে প্রতিবাদ করে। তার পক্ষ নেয়। কারণ ছেলেটিকে দেখলে গোয়ালিনীর মাতৃত্ব ও সন্তান বাৎসল্য জেগে ওঠে।
সন্তানবাৎসল্যই একজন মায়ের চিরকালীন বৈশিষ্ট্য। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় আমরা সে সন্তানবাৎসল্যের চরম পরাকাষ্ঠা লক্ষ করি। একজন দরিদ্র অসহায় মায়ের পক্ষে যা করণীয় তাই আমরা প্রত্যক্ষ করি। আবার উদ্দীপকের ছেলেটি গোয়ালিনীর নিজের সন্তান না হলেও তার প্রতি সে যে মমত্ববোধ দেখিয়েছে তা আমাদের মুগ্ধ করে। পিতৃমাতৃহীন এই ছেলেটির দিকে কেউই সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয় না। সবাই তাকে আপদ ও উপদ্রপ মনে করে। যে বাড়িতেই যায় সেখানেই তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। সিধু গোয়ালিনীই তার আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা হিসেবে আর্বিভূত হয়। পল্লিজননীর মতোই ছেলেটির প্রতি সে গভীর মমতা অনুভব করে। সন্তানের মতোই তাকে আপন করে নেয়। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, সিধু গোয়ালিনী পল্লিজননীর সার্থক প্রতিরূপ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘পল্লিজননী’ কবিতার রচয়িতা কে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতার রচয়িতা কবি জসীমউদ্দীন।
২. জসীমউদ্দীন কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : জসীমউদ্দীন ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
৩. জসীমউদ্দীন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : জসীমউদ্দীন ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
৪. জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন মাত্রা পেয়েছে কী?
উত্তর : জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন মাত্রা পেয়েছে পল্লির মাটি ও মানুষের জীবনচিত্র।
৫. জসীমউদ্দীনের উপাধি কী?
উত্তর : জসীমউদ্দীনের উপাধি পল্লিকবি।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন জসীমউদ্দীনের কোন কবিতা প্রবেশিকা বাংলা সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়?
উত্তর : বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন জসীমউদ্দীনের ‘কবর’ কবিতা প্রবেশিকা বাংলা সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়।
৭. জসীমউদ্দীনের কোন কাব্য বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে?
উত্তর : জসীমউদ্দীনের ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ কাব্য বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
৮. জসীমউদ্দীনের ভ্রমণকাহিনির নাম কী?
উত্তর : জসীমউদ্দীনের ভ্রমণকাহিনির নাম ‘চলে মুসাফির’।
৯. কোন বিশ্ববিদ্যালয় জসীমউদ্দীনকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে?
উত্তর : বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় জসীমউদ্দীনকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে।
১০. কবি জসীমউদ্দীন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : কবি জসীমউদ্দীন ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
১১. পল্লিজননী কোথায় বসে আছে?
উত্তর : পল্লিজননী রুগ্ণ ছেলের শিয়রে বসে আছে।
১২. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় নিবু নিবু দীপ কোথায় জ্বলছে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় নিবু নিবু দীপ রুগ্ণ ছেলেটির শিয়রের কাছে জ্বলছে।
১৩. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পচান পাতার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কোথা থেকে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পচান পাতার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এদো ডোবা থেকে।
১৪. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বেড়ার ফাঁক দিয়ে কী আসছে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীতের বায়ু আসছে।
১৫. পল্লিজননী কোথায় মোমবাতি মানত করেন?
উত্তর : পল্লিজননী মসজিদে মোমবাতি মানত করেন।
১৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বাঁশবনে বসে কী ডাকে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বাঁশবনে বসে কানা কুয়ো ডাকে।
১৭. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বাদুড় পাখার বাতাসে কী হেলে পড়ে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বাদুড় পাখার বাতাসে সুপারির বন হেলে পড়ে।
১৮. রুগ্ণ ছেলেটি ভালো হয়ে গেলে কার সাথে খেলতে যেতে চায়?
উত্তর : রুগ্ণ ছেলেটি ভালো হয়ে গেলে করিমের সাথে খেলতে যেতে চায়।
১৯. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ ছেলেটি কাকে লাটাই যতœ করে রাখতে বলেছে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ ছেলেটি মাকে লাটাই যতœ করে রাখতে বলেছে।
২০. পল্লিজননীকে রুগ্ণ ছেলেটি খেজুরের গুড়ের নয়া পাটালিতে কী ভরে রাখতে বলে?
উত্তর : পল্লিজননীকে রুগ্ণ ছেলেটি খেজুরের গুড়ের নয়া পাটালিতে হুড়–মের কোলা ভরে রাখতে বলেছে।
২১. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটি দূর বন থেকে এক কোঁচ ভরা কী এনেছিল?
উত্তর : পল্লিজননী কবিতায় ছেলেটি দূর বন থেকে এক কোঁচ ভরা বেথুল এনেছিল।
২২. পল্লিজননীর আড়ঙের দিনে ছেলের জন্য কী কেনার পয়সা জোটেনি?
উত্তর : পল্লিজননীর আড়ঙের দিনে ছেলের জন্য পুতুল কেনার পয়সা জোটেনি।
২৩. ‘পল্লিজননী’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের ‘রাখালী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
২৪. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পল্লি মায়ের মনে কী শঙ্কা জেগে ওঠে?
উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পল্লিমায়ের মনে পুত্র হারানোর শঙ্কা জেগে ওঠে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. কবি জসীমউদ্দীনকে ‘পল্লিকবি’ বলা হয় কেন?
উত্তর : কবি জসীমউদ্দীন তার কবিতায় পল্লির মানুষের আশা-স্বপ্ন-আনন্দ-বেদনা ও বিরহ-মিলনের এক মধুর চিত্র সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে তাঁকে পল্লিকবি বলা হয়।
পল্লির মাটি ও মানুষের জীবনচিত্র কবি জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন মাত্রা পেয়েছে। তিনি গ্রামবাংলার পল্লি প্রকৃতি এবং মানুষের জীবনচিত্র দক্ষভাবে কবিতার ফ্রেমে আবদ্ধ করেছেন। পল্লির মানুষের সুখ-দুঃখ ও আনন্দ-বেদনার এমন আবেগ-মধুর চিত্র অন্য কোনো কবির কবিতায় পাওয়া যায় না। তাই তাঁকে পল্লিকবি বলা হয়।
২. পল্লিজননী শিয়রে বসে ছেলের আয়ু গুনছেন কেন?
উত্তর : অসুস্থ সন্তানের পাশে বসে অজানা আশঙ্কায় পল্লিজননী ছেলের আয়ু গুনছেন।
প্রতিটি মা তার সন্তানকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। সন্তানের কোনো বিপদ আপদে মা সবচেয়ে বেশি ব্যথিত হন। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বর্ণিত পল্লি মাও সন্তানের অসুস্থতায় বিচলিত হন। অজানা শঙ্কায় তার মান আনচান করে। তাই রুগ্ণ ছেলের শিয়রে বসে মা ছেলের আয়ু গুনছেন।
৩. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বর্ণিত ছেলেটির শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না কেন?
উত্তর : চঞ্চল স্বভাবের হওয়ার কারণে ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বর্ণিত ছেলেটির শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না।
রুগ্ণ ছেলেটি অসুস্থ হওয়ায় তাকে বাধ্য হয়ে শুয়ে থাকতে হয়। কিন্তু তার শিশুসুলভ মানসিকতার কারণে সে শুয়ে থাকতে চায় না। ছেলেটি তার স্বাভাবিক চঞ্চলতায় ঘুরে বেড়াতে চায়। এই চঞ্চলতায় বাদ সেধেছে অসুস্থতা। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই ছেলেটির শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না।
৪. পল্লিজননী নামাজের ঘরে মোমবাতি মানেন কেন?
উত্তর : পল্লিজননী অসুস্থ সন্তানের সুস্থতা কামনা করে নামাজের ঘরে মোমবাতি মানেন।
মায়ের মতো মমতাময়ী আর কেউ নেই। মা সকল সময় তার সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন। কবিতায় বর্ণিত পল্লিজননী তার সন্তানের প্রতি ভালোবাসায় ব্যাকুল। সন্তানের অসুস্থতা তাকে পীড়া দেয়। তিনি যত দ্রুত সম্ভব সন্তানের সুস্থতা কামনা করেন। এজন্য তিনি সন্তানের সুস্থতার আশায় নামাজের ঘরে মোমবাতি মানত করেন।
৫. পল্লিজননীর ছেলে দূর বনে গেলে সন্ধ্যাবেলা তাঁর প্রাণ আই ঢাই করে কেন?
উত্তর : পল্লিজননীর ছেলে দূর বনে গেলে সন্ধ্যাবেলা তাঁর প্রাণ অজানা শঙ্কায় আই ঢাই করে।
পল্লিজননী তাঁর ছেলেকে খুব ভালোবাসেন। তিনি সন্তানের প্রতি চিরন্তন মমতায় ব্যাকুল। ছেলে দূর বনে গেলে মায়ের মন অজানা শঙ্কায় ভরে ওঠে। ছেলের না জানি কী হয় এই ভেবে তিনি আকুল হন। এজন্য সন্ধ্যা হয়ে গেলেও যখন দেখেন ছেলে আসছে না তখন শঙ্কায় তাঁর মাতৃহৃদয় আই ঢাই করে।
৬. পল্লিজননী ছেলের ছোটখাটো আবদার মেটাতে পারেননি কেন?
উত্তর : দরিদ্রতার কারণে পল্লিজননী ছেলের ছোটখাটো আবদার মেটাতে পারেননি।
পল্লিজননী তাঁর ছেলেকে অনেক স্নেহ করেন। ছেলের জন্য তার মনে সর্বদা মঙ্গলচিন্তা কাজ করে। তাই ছেলের কোনো চাওয়া তিনি অপূর্ণ রাখতে চান না। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে তিনি তা করতে পারেন না। সংসারের অভাব-অনটনের কারণে সন্তান কোনো কিছু আবদার করলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
৭. পল্লিজননী ছেলেকে মুসলমানের আড়ং দেখতে নেই বলেছেন কেন?
উত্তর : পল্লিজননী ছেলেকে পুতুল কেনার পয়সা দিতে পারবেন না বলে মুসলমানের আড়ং দেখতে নেই বলেছেন।
পল্লিজননী দরিদ্র নারী। তাঁর কুঁড়েঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীতের বাতাস ঢোকে। অভাবের কারণে তিনি ছেলের আবদার মেটাতে পারেন না। ফলে ছেলেকে আড়ঙের মেলা দেখতে দিতে চান না। কেননা ছেলে আড়ঙের মেলা দেখতে গেলে পুতুল কিনতে পয়সা চাইবে। আর পুতুল কেনার পয়সা দিতে পারবেন না বলেই পল্লিজননী বলেছেন মুসলমানের আড়ং দেখতে নেই।
৮. পল্লিজননী ছেলের জন্য ওষুধ আনেননি কেন?
উত্তর : পল্লিজননী অর্থাভাবে ছেলের জন্য ওষুধ আনেননি।
কবিতায় বর্ণিত পল্লিজননী একজন দারিদ্র্যক্লিষ্ট নারী। সংসারের অভাবের কারণে তিনি ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সন্তানের অনেক আবদার পূরণ করতে পারেন না। ছেলের প্রতি মমতার কোনো কমতি না থাকলেও দরিদ্র মাতার অর্থকষ্ট তাঁর মনঃকষ্টকে গভীর করেছে। অভাবের কারণেই পল্লিজননী তাঁর ছেলের অসুস্থতায় একটু ওষুধ পর্যন্ত জোগাড় করতে পারেননি।
৯. পল্লিজননী দূর দূর করে ঘরের চালে ডাকতে থাকা হুতোম তাড়ান কেন?
উত্তর : পল্লিজননীর মতে ঘরের চালে হুতোমের ডাক অকল্যাণ বয়ে আনে বিধায় তিনি দূর দূর করে হুতোম তাড়ান।
পল্লিবাংলায় নানা কুসংষ্কার প্রচলিত রয়েছে। কবিতায় বর্ণিত পল্লিজননী এরকম একটি সংস্কারে বিশ্বাসী। সন্তানের অসুস্থতায় তিনি ঘরের চালে হুতোমের ডাককে অকল্যাণের সুর মনে করেন। তাই দূর দূর করে এই হুতোম তাড়িয়েছেন।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি
১. ‘পল্লিজননী’ কবিতাটির রচয়িতা কে? জ
ক কাজী নজরুল ইসলাম খ ফররুখ আহমদ
গ জসীমউদ্দীন ঘ সুকান্ত ভট্টাচার্য
২. কবি জসীমউদ্দীন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? জ
ক ১৯০১ সালে খ ১৯০২ সালে
গ ১৯০৩ সালে ঘ ১৯০৪ সালে
৩. কবি জসীমউদ্দীন কোন জেলার জন্মগ্রহণ করেন? জ
ক বরিশাল খ নরসিংদী
গ ফরিদপুর ঘ পাবনা
৪. কবি জসীমউদ্দীনের কবিতায় কোন বিষয়টি বেশি প্রকাশিত হয়েছে? চ
ক পল্লির মাটি ও মানুষের জীবনচিত্র
খ বাংলার সামাজিক বৈষম্যের দিক
গ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনচিত্র
ঘ সরকারের অবিচারের প্রতিবাদ
৫. কবি জসীমউদ্দীনের উপাধি কী? ঝ
ক সাম্যের কবি খ বিদ্রোহী কবি
গ স্বভাবকবি ঘ পল্লিকবি
৬. কবি জসীমউদ্দীন কর্মজীবনের শুরুতে কোথায় অধ্যাপনা করেন? ঝ
ক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে
গ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে
ঘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
৭. কবি জসীমউদ্দীনের কাব্য প্রতিভার বিকাশ ঘটে কখন? ছ
ক শিশু অবস্থায় খ ছাত্র অবস্থায়
গ অধ্যাপনা শুরুর পর ঘ শেষ বয়সে
৮. কবি জসীমউদ্দীনের কোন কবিতাটি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই প্রবেশিকা বাংলা সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়? ঝ
ক পল্লিজননী খ বালুচর
গ আসমানী ঘ কবর
৯. কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যগ্রন্থ বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে? চ
ক নকশী কাঁথার মাঠ খ রাখালী
গ বালুচর ঘ এক পয়সার বাঁশি
১০. কোনটি কবি জসীমউদ্দীনের রচিত ভ্রমণকাহিনী? জ
ক নকশী কাঁথার মাঠ খ রাখালী
গ চলে মুসাফির ঘ হাসু
১১. কবি জসীমউদ্দীনকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে কোন প্রতিষ্ঠান? ঝ
ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
খ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
গ আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়
ঘ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
১২. কবি জসীমউদ্দীন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন? ঝ
ক ১৯৭৩ সালে খ ১৯৭৪ সালে
গ ১৯৭৫ সালে ঘ ১৯৭৬ সালে
১৩. পল্লিজননী অন্ধকার রাতে জেগে রয়েছেন কেন? চ
ক ছেলের অসুস্থতার কারণে খ কাজ করার জন্য
গ প্রার্থনা করার জন্য ঘ কবিরাজের অপেক্ষায়
১৪. পল্লিজননী কোথায় বসে রয়েছেন? জ
ক বারান্দায়
খ দাওয়ায়
গ রুগ্ণ ছেলের শিয়রে
ঘ রুগ্ণ ছেলের পায়ের কাছে
১৫. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কোথায় নিবু নিবু দীপ ঘুরে ঘুরে জ্বলছে? চ
ক রুগ্ণ ছেলের শিয়রে
খ ঘরের চৌকাঠের কাছে
গ চেয়ারের ওপর
ঘ রুগ্ণ ছেলের পায়ের কাছে
১৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় এদো ডোবা থেকে কিসের দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে? ছ
ক পচা কাদার খ পচান পাতার
গ পচা পাটের ঘ পচা মাছের
১৭. পল্লিজননীর ঘর কেমন? ঝ
ক পাকা খ টিনের তৈরি
গ আধাপাকা ঘ কুঁড়েঘর
১৮. পল্লিজননীর ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে কী আসে? জ
ক নেড়ী কুকুর খ বিড়াল
গ শীতের বাতাস ঘ রোদের কিরণ
১৯. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় মা ছেলের শিয়রে বসে কী করছেন? জ
ক পাটি তৈরি করছেন
খ মাথায় জলপট্টি দিচ্ছেন
গ ছেলের নানা ঘটনা ভাবছেন
ঘ হস্তশিল্পের কাজ করছেন
২০. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটির শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না কেন? চ
ক অসুস্থতার কারণে খ মায়ের বকুনির কারণে
গ খেলতে যাবে বলে ঘ পচান পাতার দুর্গন্ধে
২১. পল্লিজননী ছেলের পাণ্ডুর গালে চুমো খায় কেন? ছ
ক খুশি হয়ে
খ মমতায়
গ ছেলে শুয়ে থাকতে না চাওয়ায়
ঘ ছেলে সুস্থ হয়ে যাওয়ায়
২২. পল্লিজননী ছেলের সুস্থতার জন্য কোথায় মোমবাতি মানে? জ
ক মাজারে খ দরগায়
গ মসজিদে ঘ মন্দিরে
২৩. পল্লিজননীর প্রাণ কাঁদে কেন? ছ
ক অভাবের কারণে
খ সন্তানের অসুস্থতার জন্য
গ ছেলের শীত লাগায়
ঘ পুতুল কেনার পয়সা না দিতে পারায়
২৪. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কোথায় কানা কুয়ো ডাকে? জ
ক ঘরের চালে খ সুপারিগাছে
গ বাঁশবনে ঘ শালবনে
২৫. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কিসের বাতাসে সুপারির বন হেলে পড়ে? ঝ
ক ঝড়ের বাতাসে
খ শীতের ঠাণ্ডা হাওয়ায়
গ হুতোমের পাখার বাতাসে
ঘ বাদুড়ের পাখায় বাতাসে
২৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় বুনো পথে কুয়াশার কাফন ধরে কে যায়? ঝ
ক বাদুড়ের দল খ হুতোমের দল
গ কানাকুয়ো ঘ জোনাকি মেয়েরা
২৭. পল্লিজননীর মনে কিসের শঙ্কা জাগে? ছ
ক দীপ নিভে যাওয়ার খ সন্তান হারানোর
গ সুপারির বন হেলে পড়ার
ঘ ছেলের লাটাই হারিয়ে ফেলার
২৮. কোন কথা ভাবতে পল্লিজননীর প্রাণ শিউরে ওঠে? ঝ
ক হুতোমের ডাকের কথা খ অন্ধকার রাতের কথা
গ কানাকুয়োর কথা ঘ ছেলে হারানোর কথা
২৯. পল্লিজননী মনে মনে কিসের জাল বোনে? জ
ক অভাব দূর করার খ ছেলের বায়না পূরণের
গ ছেলের সুস্থতার
ঘ ছেলের লাটাই যতেœ রাখার
৩০. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্ণ ছেলেটি কার ঝাড়ফুঁকের কথা বলেছে? জ
ক করিমের খ আজিজের
গ রহিম চাচার ঘ জালাল কবিরাজের
৩১. রুগ্ণ ছেলেটি পল্লিজননীকে কী যতন করে রাখতে বলেছে? চ
ক লাটাই খ ঘুড়ি
গ বই ঘ খেলনা গাড়ি
৩২. রুগ্ণ ছেলেটি পল্লিজননীকে সাত-নরি সিকা ভরে কী রাখতে বলেছে? ছ
ক খেজুরের গুড় খ ঢ্যাঁপের মোয়া
গ মুড়ি ঘ খই
৩৩. রুগ্ণ ছেলেটি পল্লিজননীকে খেজুরের গুড়ের নয়া পাটালি কিসে রাখতে বলেছে? ছ
ক সাত-নরি সিকায় খ হুড়–মের কোলায়
গ মাটির হাঁড়িতে ঘ পাটের ব্যাগে
৩৪. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটি মাকে না বলে কোথায় গিয়েছিল? চ
ক দূর বনে খ পাহাড়ে
গ বন্ধুর বাড়ি ঘ নৌকা ভ্রমণে
৩৫. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় মায়ের প্রাণ আইঢাই করেছিল কেন? চ
ক সন্ধ্যা হয়ে গেলেও ছেলে ফিরে না আসায়
খ ছেলে পুতুল কিনতে টাকা চাওয়ায়
গ ছেলে আড়ং দেখতে যাওয়ায়
ঘ বাঁকা বনে কানা কুয়ো ডাকায়
৩৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটি দূর বন থেকে এক কোঁচ ভরে কী নিয়ে আসে? জ
ক লটকন ফল খ নাটাফল
গ বেথুল ঘ আমলকী
৩৭. দূর বন থেকে সাঁঝের বেলায় বাড়ি ফেরায় পল্লিজননী ছেলেকে কী বলে গালি দেয়? ছ
ক জানোয়ার খ মুখপোড়া
গ বেয়াদব ঘ হতভাগা
৩৮. পল্লিজননী ছেলের ছোটখাটো বায়না মেটাতে পারেনি কেন? চ
ক অভাবের কারণে খ ব্যস্ততার কারণে
গ স্বামী না থাকায় ঘ রাগ করে থাকায়
৩৯. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটি আড়ঙের দিনে মায়ের কাছে কী কিনতে পয়সা চায়? ছ
ক বাঁশি খ পুতুল
গ ঘুড়ি ঘ বাতাসা
৪০. পল্লিজননীর কাছে ছেলের পুতুল কেনার পয়সা জোটেনি বলে তিনি ছেলেকে কী বলেছেন? চ
ক মোসলমানের আড়ং দেখিতে নাই
খ ওরে মুখপোড়া কোথা গিয়েছিলি এমনি এ কালী সাঁঝে
গ চুপটি করিয়া ঘুমোতো একটিবার
ঘ ভালো করে দাও আলা রসুল ভালো করে দাও পীর
৪১. ছেলের অসুখে পল্লিজননী ওষুধ আনেননি কেন? জ
ক ছেলের ওপর রাগ করে
খ বিনা ওষুধেই ভালো হবে ভেবে
গ ওষুধ কেনার টাকা না থাকায়
ঘ কবিরাজের বাড়ি দূরে হওয়ায়
৪২. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কোনটি অকল্যাণের প্রতীক? ঝ
ক বাঁশবনে কানা কুয়ো ডাকা
খ সুপারিবনে বাদুড় ওড়া
গ বুনো পথে জোনাকি ওড়া
ঘ ঘরের চালে হুতুম ডাকা
৪৩. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কোথায় হুতুম ডাকছে? চ
ক ঘরের চালে খ সুপারিবনে
গ বাঁশবনে ঘ নারকেলগাছে
৪৪. পল্লিজননী দূর-দূর করে ওঠেন কেন? ছ
ক কানাকুয়ো তাড়াতে খ হুতুম তাড়াতে
গ বাদুড় তাড়াতে ঘ জোনাকি তাড়াতে
৪৫. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কোথায় বিরহিনী ডাহুক ডাকে? ছ
ক সুপারি বনে খ পচা ডোবায়
গ দূর বনে ঘ বাঁশবনে
৪৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কৃষাণ ছেলেরা কার বাচ্চা চুরি করেছে? জ
ক কানা কুয়োর খ বাদুড়ের
গ ডাহুকের ঘ হুতুমের
৪৭. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় কার সম্মুখে ঘোর কুজ্ঝটি মহাকাল রাত পাতা? চ
ক মায়ের খ রুগ্ণ ছেলেটির
গ রহিম চাচার ঘ করিমের
৪৮. কিসের সাথে বুঝিয়া মাটির প্রদীপের তেল ফুরিয়ে এসেছে? ছ
ক শীতের সাথে খ আঁধারের সাথে
গ ডোবার পচা গন্ধের সাথে ঘ বাতাসের সাথে
৪৯. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় নামাজের ঘর বলতে কী বোঝানো হয়েছে? জ
ক মাজার খ খানকাহ শরিফ
গ মসজিদ ঘ মায়ের ঘর
৫০. পল্লিজননী নামাজের ঘরে মোমবাতি মানেন কেন? চ
ক ছেলের সুস্থতার জন্য
খ দূর বন থেকে ছেলে ফিরে আসার জন্য
গ হুতুমের ডাক বন্ধ করার জন্য
ঘ অভাব দূর করার জন্য
৫১. ‘পল্লিজননী’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে? জ
ক নকশী কাঁথার মাঠ খ এক পয়সার বাঁশি
গ রাখালী ঘ হাসু
৫২. ‘পল্লিজননী’ কবিতানুযায়ী কার মতো মমতাময়ী আর কেউ নেই? ছ
ক বাবার খ মায়ের
গ ভাইয়ের ঘ বোনের
৫৩. ‘পল্লিজননী’ কবিতার মূল কথা কোনটি? জ
ক গ্রাম্য প্রকৃতির বর্ণনা
খ সমাজের বিভিন্ন সংস্কার বর্ণনা
গ অপত্যস্নেহের অনিবার্য আকর্ষণ
ঘ পল্লিমায়েদের অভাব-অনটন
বহুপদী সমাপ্তিসূচক
৫৪. পল্লিজননী রুগ্ণ ছেলের শিয়রে বসে রয়েছেনÑ
র. সন্তানবাৎসল্যের আকর্ষণে
রর. ছেলের অসুখ ভালো করার জন্য
ররর. সন্তানের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়ায়
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৫. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় মাটির প্রদীপ ঘুরিয়া ঘুরিয়া জ্বলেÑ
র. বাতাসের কারণে
রর. তেল ফুরিয়ে আসার কারণে
ররর. মায়ের পাখার বাতাসে
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৬. পল্লিজননীর ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীতের বায়ু আসেÑ
র. পল্লিজননী দরিদ্র হওয়ায়
রর. কুঁড়েঘরের বেড়া ভাঙা থাকায়
ররর. পল্লিজননী ঘরের বেড়া ফাঁকা করে দেওয়ায়
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৭. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় ছেলেটি শুয়ে থাকতে চায় নাÑ
র. একঘেয়েমি লাগার কারণে
রর. স্বভাবসুলভ চঞ্চলতার কারণে
ররর. আড়ং দেখতে যাওয়ার লোভে
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৮. পল্লিজননী নামাজের ঘরে মোমবাতি মানেÑ
র. সন্তানের সুস্থতা কামনা করে
রর. সংসারের অভাব দূর করার আশায়
ররর. সন্তানের প্রতি অজানা আশঙ্কা করে
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. ‘ভালো করে দাও আলা রসুল ভালো করে দাও পীর’Ñ চরণটিতে প্রকাশ পেয়েছেÑ
র. পল্লিজননীর ধর্মীয় জ্ঞানের গভীরতা
রর. পল্লিজননীর সন্তানের প্রতি ভালোবাসা
ররর. পল্লিজননীর হৃদয়ের আকুতি
নিচের কোনটি সঠিক? জ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬০. পল্লিজননীর পরাণ শিউরে ওঠেÑ
র. ছেলে হারানোর কথা ভাবলে
রর. ছেলের পুতুল কেনার কথা ভাবলে
ররর. ছেলে সন্ধ্যেবেলা ঘরে না ফিরলে
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় মায়ের প্রাণ আইঢাই করেÑ
র. ছেলে আড়ং দেখতে গেলে
রর. সাঁঝ হলেও ছেলে ফিরে না আসায়
ররর. ছেলের প্রতি ভালোবাসার কারণে
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬২. পল্লিজননী গরিব হওয়ার ফল হলোÑ
র. ছেলের জন্য ওষুধ কিনতে না পারা
রর. ছেলেকে আড়ং দেখতে নিষেধ করা
ররর. ছেলের জন্য মসজিদে মোমবাতি মানা
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৩. ‘মোসলমানের আড়ং দেখিতে নাই’Ñ পল্লিজননী ছেলেকে এ কথা বলেছেনÑ
র. ধর্মীয় কুসংস্কারে বিশ্বাস করে
রর. সংসারের অভাবের কারণে
ররর. পুতুল কেনার পয়সা জোটেনি বলে
নিচের কোনটি সঠিক? জ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৪. পল্লিজননী ছেলের জন্য ওষুধ আনেনিÑ
র. পয়সার অভাবে রর. ছেলের ওপর রাগ করে
ররর. সামর্থ্যরে অভাবে
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৫. পল্লিজননী ঘরের চালে হুতুমের ডাক শুনে দূর দূর করে ওঠেনÑ
র. হুতুমের ডাক অকল্যাণের হওয়ায়
রর. ছেলের প্রতি অজানা আশঙ্কা করে
ররর. ছেলে হুতুমের ডাকে ভয় পাবে ভেবে
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৬. ‘পল্লিজননী’ কবিতায় পচা ডোবা থেকে ডাহুক ডাকছেÑ
র. বিরহিনী সুরে
রর. কৃষাণ ছেলেরা তার বাচ্চা চুরি করায়
ররর. অকল্যাণের সুরে
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৭. পল্লিজননী মনঃকষ্টে ভোগেনÑ
র. ছেলেকে গালি দেওয়ায়
রর. ছেলেকে পুতুল কেনার পয়সা না দিতে পারায়
ররর. ছেলের অসুখে ওষুধ কিনতে না পারায়
নিচের কোনটি সঠিক? জ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৬৮ ও ৬৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
রোকন প্রচণ্ড জ্বরে বিছানাগত হয়ে যায়। এ অবস্থা দেখে তার মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। ছেলের অসুখ ভালো হলে মসজিদে মিলাদ দেওয়ার মানত করে।
৬৮. উদ্দীপকের রোকনের সাথে ‘পল্লিজননী’ কবিতার কার মিল বিদ্যমান? চ
ক পল্লিমায়ের ছেলেটির খ মায়ের
গ করিমের ঘ রহিম চাচার
৬৯. উদ্দীপকের রোকনের মায়ের মাঝে পল্লিজননীর যে দিকটির প্রকাশ ঘটেছে তা হলোÑ
র. সন্তানবাৎসল্য
রর. সংসারের অভাব
ররর. সন্তানের সুস্থতার জন্য ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭০ ও ৭১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
নিজাম কবিরাজ পানি পড়া দেয়। এলাকার বিভিন্ন মানুষ রোগের জন্য তার কাছে পানি পড়া নিতে আসে। এর জন্য নিজাম কবিরাজ কোনো টাকা নেয় না। শুধু পানিতে দুই তিন ফুঁ দিয়েই বলে এতে সকল রোগ সেরে যাবে।
৭০. ‘পল্লিজননী’ কবিতার আলোকে বলা যায় উদ্দীপকের নিজাম কবিরাজ ‘পল্লিজননী’ কবিতার কোন চরিত্রের প্রতিভূ? ছ
ক করিম খ রহিম চাচা
গ আজিজ ঘ পল্লিজননী
৭১. উদ্দীপকের নিজাম কবিরাজের মতো লোকেরাÑ
র. পল্লিজননীর মতো অনেকের বিশ্বাস অর্জন করেছে
রর. আমাদের দেশের একটি সংস্কারকে ধারণ করে আছে
ররর. পল্লির মানুষের সরলতার সুযোগ নিচ্ছে
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭২ ও ৭৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
সজীব সারা দিন ছোটাছুটি করে বেড়ায়। এজন্য মা তাকে প্রায়ই বকাবকি করে। একদিন সন্দেশ বিক্রেতাকে দেখে সজীব মায়ের কাছে সন্দেশ খাওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু মা তাকে সন্দেশ না কিনে দিয়ে বলে “এই সন্দেশ ভালো না, বাজার থেকে ভালো সন্দেশ কিনে দেবো।”
৭২. উদ্দীপকে সজীবের মায়ের মাঝে পল্লিজননীর কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ছ
ক সন্তানের প্রতি ভালোবাসার দিক
খ মায়ের দরিদ্রতার দিক
গ মায়ের মনঃকষ্টের দিক
ঘ মায়ের অজানা আশঙ্কার দিক
৭৩. উদ্দীপকের সজীবের মায়ের তুলনায় কবিতায় বর্ণিত পল্লিজননীর অপত্যস্নেহের আকর্ষণ বেশি। কেননাÑ
র. পল্লিজননী নিজের অপারগতায় মনঃকষ্টে ভুগেছে
রর. পল্লিজননী পুত্রের অসুস্থতায় ব্যথিত হয়েছে
ররর. পুত্রের জন্য অজানা আশঙ্কায় পল্লিজননী চিন্তিত হয়েছে
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৪ ও ৭৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
বাড়ির পাশের গাছে একটি হাঁড়িচাচা পাখি ডেকে সারা হচ্ছে। সখিনা এই পাখির ডাক শুনে শিহরিত হয়। সে মায়ের কাছে শুনেছে হাঁড়িচাচা ডাকলে নাকি বাড়িতে কুটুম আসে।
৭৪. উদ্দীপকে ‘পল্লিজননী’ কবিতার কার সাদৃশ্য লক্ষণীয়? চ
ক রুগ্ণ ছেলেটির খ রহিম চাচার
গ করিমের ঘ পল্লিজননীর
৭৫. উদ্দীপকের ঘটনাটি ‘পল্লিজননী’ কবিতার যে দিকটি ধারণ করেÑ
র. পল্লির মানুষের জীবনচিত্র
রর. পল্লির মানুষের প্রকৃতিনির্ভর বিশ্বাস
ররর. পল্লির মানুষের পাখিপ্রীতি
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর