নবম-দশম শ্রেনী-২০২৩ বাংলা ১ম পত্র পদ্যঃ কপোতাক্ষ নদ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
কপোতাক্ষ নদ
লেখক পরিচিতি :
নাম | মাইকেল মধুসূদন দত্ত |
জন্ম পরিচয় | জন্ম তারিখ: ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জানুয়ারি। জন্মস্থান: যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রাম। |
ব্যক্তিজীবন | হিন্দু কলেজে অধ্যয়নকালে ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ সৃষ্টি হয়। ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষতি হন। তখন তাঁর নামের প্রথমে ‘মাইকেল’ শব্দটি যোগ হয়। পাশ্চাত্য জীবনযাপনের প্রতি প্রবল ইচ্ছা এবং ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যসাধনার তীব্র আবেগ তাঁকে ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় উদ্বুদ্ধ করে। |
উল্লেখযোগ্য রচনা | মহাকাব্য : মেঘনাদবধ কাব্য। কাব্য : তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলি। নাটক : শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, কৃষ্ণকুমারী। প্রহসন : একেই কি বলে সভ্যতা, বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ। |
বিশেষ অবদান | বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ও বাংলা সনেটের প্রবর্তক। বাংলা ভাষার একমাত্র সার্থক মহাকব্য ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ রচয়িতা। |
মৃত্যু | ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে জুন। |
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
১ নং. ছোটকালে ছিলাম বাঙালিদের বালুচরে,
সাঁতরায়ে নদী পাড়ি দিতাম বারবার এপার হতে ওপারে,
ডিভি লটারি সুযোগ করে দিলে ছুটে চলে যাই আমেরিকায়
কিন্তু আজ মন শুধু ছটফটায় আর শয়নে স্বপনে বাড়ি দিয়ে যায়,
মধুময় স্মৃতিগুলো আমাকে কাঁদায়, তবু দেশে আর নাহি ফেরা হয়।
ক. সনেটের ষষ্টকে কী থাকে? ১
খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আলোকে তুলে ধরো। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতির অন্তরালে যে ভাবটি প্রকাশ পেয়েছে তাই ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব’Ñ কথাটির সত্যতা বিচার করো। ৪
১ এর ক নং প্র. উ.
সনেটের ষষ্টকে থাকে ভাবের পরিণতি।
১ এর খ নং প্র. উ.
জন্মভূমির প্রতি গভীর মমতায় মাতৃদুগ্ধরূপী কপোতাক্ষ নদের জলে তৃষ্ণা নিবারণের আকাঙ্ক্ষাকে স্নেহের তৃষ্ণা বলা হয়েছে।
প্রবাসে থাকাকালীন কবি জন্মভূমির প্রতি গভীর স্মৃতিকাতরতা অনুভব করেছেন। শৈশবের মধুর স্মৃতি কবিকে আচ্ছন্ন করেছিল। তাই প্রবাসে বসেও তিনি কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। কবি বহু দেশ ঘুরে বহু নদ-নদী দেখেছেন কিন্তু কারো জলেই যেন তাঁর তৃষ্ণা নিবারণ হয় না। তিনি কপোতাক্ষরে জলেই শুধু স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতে চান।
১ এর গ নং প্র. উ.
উদ্দীপকে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মতোই জন্মভূমির প্রতি মমত্ববোধ ও স্মৃতিকাতরতা প্রকাশ পেয়েছে।
প্রিয় কপোতাক্ষ নদের তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের শৈশব কেটেছে।
বাসজীবনে শৈশবের সেসব স্মৃতি তাঁকে কাতর করে তুলেছে। তিনি দূর থেকেও যেন কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কোনও নদ-নদীই যেন কপোতাক্ষরে সাথে তুলনীয় নয়। এই নদের সাথে জীবনে কোনোদিন দেখা হবে কি না তা নিয়েও কবি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় সংশয় প্রকাশ করেছেন।
উদ্দীপকে এক আমেরিকাপ্রবাসী জন্মভূমির প্রতি গভীর মমতা ও স্মৃতিকাতরতা প্রকাশ করেছেন। জন্মভূমির মধুময় স্মৃতিগুলো তাঁকে কাঁদায়। ডাঙায় তোলা জলের মাছের মতো তিনি ছটফট করেন। ছোটবেলায় সেই বালুচর অথবা সাঁতরিয়ে নদী পার হওয়ার সেই আনন্দময় স্মৃতি তিনি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা সত্ত্বেও তাঁর আর দেশে ফেরা হয় না। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়ও প্রবাসী কবির মনে একই অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অনুভূতি দেশপ্রেম থেকে উৎসারিত।
১ এর ঘ নং প্র. উ.
উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে গভীর দেশপ্রেম, যা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলকথা।
‘কপোতাক্ষ নদ’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের এক অসামান্য সৃষ্টি। তিনি জন্মভূমির প্রতি মানুষের চিরন্তন অনুভূতি ও হৃদয়ের টান চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন এই কবিতায়। প্রবাসজীবনে তার শুধু স্বদেশের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে হয়েছে। এই নদের দেখা তিনি আর পাবেন কি না তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কপোতাক্ষ নদের প্রতি কবির আর সংযোগ এতটাই যে, তিনি এই নদের জলরাশিকে মাতৃদুগ্ধের সাথে তুলনা করেছেন।
উদ্দীপকে আমেরিকাপ্রবাসীও দেশের প্রতি স্মৃতিকাতরতা প্রকাশ করেছেন। সারা দিনমান যেন শুধু জন্মভূমির কথাই তাঁর মনে পড়ে। সাঁতরিয়ে নদী পার হওয়ার কথা, বালুচরে ঘুরে বেড়ানোসহ তাঁর কত কথাই মনে পড়ছে। জন্মভূমির জন্য তাঁর মন ছটফট করছে। ছুটে আসতে ইচ্ছে করে জন্মভূমির কাছে। মধুময় স্মৃতিগুলো তাঁকে কাঁদালেও তাঁর আর ফিরে আসা হয় না।
উদ্দীপকে প্রবাসীর জন্মভূমির প্রতি যে গভীর মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে তা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির গভীর ভাবাবেগকে ধারণ করে। কবি এবং উদ্দীপকের প্রবাসী উভয়ই বিদেশ বিভূঁইয়ে জন্মভূমির প্রতি গভীর টান অনুভব করেন। স্বদেশের প্রাকৃতিক অনুষঙ্গকে মনে করে দুজনেই হয়েছেন স্মৃতিকাতর। ফলে একই অনুভূতি ব্যক্ত হয়েছে উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতায়। উদ্দীপকে প্রতিফলিত ভাব এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব তাই একই সূত্রে গাঁথা।
গুরম্নত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
২ নং. বাংলার নদী কি শোভাশালিনী
কি মধুর তার কুল কুল ধ্বনি
দু’ধারে তাহার বিটপীর শ্রেণি
হেরিলে জুড়ায় হিয়া।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি কোন কাব্যটি? ১
খ. ‘দুগ্ধ স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে’Ñ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাবের সাথে উদ্দীপকের মূলভাবের সাদৃশ্য বর্ণনা করো। ৩
ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার পরিণতির দিকটি উদ্দীপকে অনুপস্থিত- বিশেস্নষণ করো। ৪
২ নং প্র. উ.
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যটি।
খ. স্বদেশ ও শৈশবÑকৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য চরণে।
প্রবাসে বসবাস করলেও স্বদেশকে গভীরভাবে ভালোবাসেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। বিশেষভাবে তাঁকে আলোড়িত করে তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিঘেরা কপোতাক্ষ নদ। এই নদীর সাথে কবির যেন নাড়ির সম্পর্ক বিদ্যমান। কবিতায় জন্মভূমিকে তিনি মা হিসেবে কল্পনা করেছেন। আর কপোতাক্ষ নদকে কল্পনা করেছেন সেই মায়ের স্তনের অমূল্য দুগ্ধ হিসেবে। এর মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদের প্রতি কবির অত্যন্ত গভীর অনুরাগের প্রমাণ পাওয়া যায়।
গ. স্বদেশের নদীর প্রতি মুগ্ধতার অনুভূতি প্রকাশের দিক থেকে উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মাঝে সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মদুসূদন দত্ত স্বদেশের প্রতি তাঁর প্রাণের গভীর আবেগ প্রকাশ করেছেন কপোতাক্ষ নদকে ঘিরে। এই নদীর তীরে তাঁর মধুময় শৈশব-কৈশোর কেটেছে। প্রবাসজীবনের একাকিত্বের মাঝে বারবার তাঁর মন সেই নদের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ে। কপোতাক্ষ নদের কথা স্মরণ করে তিনি গভীর মানসিক প্রশান্তি লাভ করেন।
উদ্দীপক কবিতাংশে স্বদেশের নদীর প্রতি কবিমনের ভালোলাগার প্রকাশ ঘটেছে। কবির চোখে বাংলার নদীর সৌন্দর্য অনন্য। নদীর কুল কুল ধ্বনি তাঁর প্রাণ জুড়ায়। দুইপাশের বৃক্ষরে সারির শ্যামল ছায়া তাঁকে মুগ্ধ করে। নদীকে ঘিরে জন্মভূমির প্রতি আবেগ প্রকাশের এমন প্রমাণ মেলে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাতেও।
ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় স্বদেশের হৃদয়ে ঠাঁই পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে ভাবের পূর্ণতাপ্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু উদ্দীপক কবিতাংশে এমন পরিণতি লক্ষ করা যায় না।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘কপোতাক্ষ নদ’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা। এ কবিতায় চৌদ্দ চরণের সমন্বয়ে একটি সুসংহত ভাবের প্রকাশ ঘটেছে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম আট চরণের স্তবক অর্থাৎ অষ্টকে রয়েছে ভাবের সূচনা। পরের ছয় চরণের স্তবক অর্থাৎ ষষ্টকে এটি পরিণতি লাভ করেছে।
উদ্দীপক কবিতাংশের কবি স্বদেশের নদীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ। নদীর স্রোতধারা, তীরের বৃক্ষরাজির মায়া ইত্যাদি তাঁর মন কেড়ে নেয়। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদের কথা ভেবে আবেগাপস্নুত হয়ে পড়েন। নদীকে ঘিরে স্বদেশের প্রতি মমত্ববোধ প্রকাশের এ দিকটি উদ্দীপক কবিতাংশেও রয়েছে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম স্তবকের সাথে উদ্দীপক কবিতাংশের এড়্গেেত্র সাদৃশ্য লক্ষ করা গেলেও শেষ স্তবকের পরিণতির দিকটি উদ্দীপক কবিতাংশে অনুপস্থিত।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার ষষ্টকে কবির মনের ভাব পরিণতি লাভ করেছে। কবি স্বদেশের মানুষের মনে অমর হতে চান। তাই তিনি কপোতাক্ষ নদের কথা তাঁর কবিতায়, গানে ব্যক্ত করেন। কবির বিশ্বাস এর মাধ্যমেই স্বদেশের জন্য তাঁর প্রাণের আকুলতা স্বদেশবাসীর কাছে পৌঁছে যাবে। উদ্দীপক কবিতাংশে ভাবের এমন সুসংহত পরিণতি লক্ষ করা যায় না। উদ্দীপকে স্বদেশকে ঘিরে ভালোলাগার যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তাকে কবিতার প্রাথমিক প্রস্তাবনা বা ভাবের প্রবর্তনা বলেই ধরে নেওয়া যায়।
৩ নং. লন্ডনে আসার মাস তিনেক হলো, পড়াশোনার চাপে এদিকটায় আসাই হয়নি তানজিমের। আজ বিকেলে এই প্রথম সে টেমস্ নদীর পাড়ে এলো। নদীর গতিশীল স্রোতের দিকে চোখ পড়তেই দুরন্ত শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত পদ্মাপাড়ের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। হঠাৎ লন্ডনের মতো অত্যাধুনিক শহর তার কাছে কেমন যেন বিষাদময় মনে হতে লাগল।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত সালে পরলোকগমন করেন? ১
খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকের তানজিমের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির কোন দিকটির সাদৃশ্য আছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো। ৪
৩ নং প্র. উ.
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮৭৩ সালে পরলোক গমন করেন।
খ. ১নং সৃজনশীল প্রশ্নের খ নং উত্তর দেখো।
গ. উদ্দীপকের তানজিমের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির স্মৃতিকাতরতার দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত নদের কথা ব্যক্ত করেছেন। দূর পরবাসে কবির মনে এই নদের স্মৃতি সৃষ্টি করেছে কাতরতা। দূর পরবাসে বসে কবি নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কবি শৈশবে যে নদের তীরে বেড়ে উঠেছেন, যে নদের জলে অবগাহন করেছেন দূর পরবাসে তার কথা কবিকে ব্যাকুল করে তোলে।
উদ্দীপকে তানজিমের মাঝেও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় বর্ণিত কবির সেই ব্যাকুলতা পরিলক্ষতি হয়। কবিতায় কবি যেমন শৈশবের নদের কথা মনে করে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তেমনি তানজিমও তার শৈশবের স্মৃতি মনে করে কাতর হয়ে পড়ে। তানজিম শৈশবে পদ্মাপাড়ের যে দূরন্ত স্মৃতি নিয়ে বড় হয়েছে তা সুদূর লন্ডনেও তাকে আবেগপস্নুত করে। এড়্গেেত্র কবি এবং উদ্দীপকের তানজিমের প্রবাসজীবন এক সুতোয় গাঁথা। কবিতায় সুদূর ফ্রান্সে বসে ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণের দিকটি উদ্দীপকের তানজিমের সাথে কবিকে সাদৃশ্যময় করে তুলেছে।
ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির স্মৃতিকাতরতার আবরণে অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেম প্রকাশিত হলেও উদ্দীপকে শুধু স্মৃতিকাতরতার দিকটিই প্রকাশিত হয়েছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির গভীর দেশপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়। দূর-পরবাসে কবির জন্মভূমির শৈশব-কৈশোরের বেদনা-বিধূুর স্মৃতি তাঁর মনে জাগিয়েছে কাতরতা। দূরে বসেও তিনি কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। এই নদের কাছে কবি মিনতি করেন স্বদেশের জন্য তাঁর হৃদয়ের কাতরতা কপোতাক্ষ নদ যেন বঙ্গবাসীর নিকট ব্যক্ত করে।
উদ্দীপকে শুধু তানজিমের স্মৃতিকাতরতার দিকটিই প্রকাশ পেয়েছে। তানজিম টেমস নদীর ধারে গেলে তার শৈশবের নদীতীরের ঘটনা মনে পড়ে। এতে সে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। আলো ঝলমলে অত্যাধুনিক শহরে থেকেও তার মনে অশান্তির উদ্রেক ঘটে। শৈশবের পদ্মপাড়ের স্মৃতি তার শহুরে আধুনিক জীবনকে বিষাদময় করে তুলেছে। দূর পরবাসে বসে এই স্মৃতিকাতরতাই উদ্দীপকটির মূলকথা।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা ভুলতে না পেরে তাঁর গানে, কবিতায় শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত নদীর কথা লিখেছেন। জন্মভূমির প্রতি তাঁর ব্যাকুলতা তিনি বঙ্গবাসীর কাছে তুলে করার জন্য নদের কাছে মিনতি করেছেন। এতে কবির যে গভীর দেশপ্রেম প্রকাশ পেয়েছে উদ্দীপকের তানজিমের মাঝে তা পায়নি। কবিকে তাঁর শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদ মায়ের স্নেহডোরে বেঁধেছে। এই নদের মাধ্যমেই কবি জন্মভূমির প্রতি তাঁর গভীর ব্যাকুলতা ফুটিয়ে তুলেছেন। কিন্তু উদ্দীপকে তানজিমের মাঝে শুধু স্মৃতিকাতরতাই দৃশ্যমান। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।
৪ নং. সৌহার্দ্য ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য কানাডা গেলেও মন পড়ে থাকে কর্ণফুলীর তীরের সেই ছায়াঘেরা গ্রাম নন্দীপুরে। নদীর দুতীরের প্রাকৃতিক শোভা ও শৈশবের স্মৃতি মনে করতেই সে আবেগতাড়িত হয়। তার ধারণা, বাংলা সাহিত্যসম্ভারের অনেক অংশ জুড়ে রয়েছে নদীর অবস্থিতি।
ক. বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তন করেন কে? ১
খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকে সৌহার্দ্যরে অনুভূতি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে যে ভাবটি প্রতিফলিত হয়েছে তা যেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব”Ñ উক্তিটি মূল্যায়ন করো। ৪
৪ নং প্র. উ.
ক. বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তন করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
খ. ১নং সৃজনশীল প্রশ্নের খ নং উত্তর দেখ।
গ. গ ন্মভূমির প্রতি স্মৃতিকাতরতায় উদ্দীপকের সৌহার্দ্য এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি একই ধারায় প্রবাহিত।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির অনুভূতি জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা গভীরভাবে ব্যক্ত করেছে। সে দূর পরবাসে বসে শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি মনে করে কাতর হয়ে পড়ে। দূরে বসেও তিনি কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের হৃদয়ের কাতরতা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মধ্যে ব্যক্ত হয়েছে।
উদ্দীপকের সৌহার্দ্য ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মতোই অনুভূতি ব্যক্ত করেছে। সে সুদূর কানাডায় বসে কর্ণফুলীর স্মৃতি মনে করে কাতর হয়ে পড়ে। তার এই প্রাণের আকুতি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতাক্ষ নদের প্রতি ভালোবাসার সাথে সাদৃশ্যময় হয়ে উঠেছে। দূর পরবাসে বসে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি স্নেহভরে জন্মভূমিকে স্মরণ করেছেন। উদ্দীপকের সৌহার্দ্যরে ড়্গেেত্রও একই ঘটনার অবতারণা লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, প্রেড়্গাপট ভিন্ন হলেও জন্মভূমির প্রতি উদ্দীপকের সৌহার্দ্য এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির অনুভূতি এক।
ঘ. উদ্দীপকে প্রকাশিত জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসার ভাব ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাবকে প্রতিফলিত করেছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত নদীর কথা লিখেছেন। তিনি দূর পরবাসে বসে জন্মভূমির টানে হয়েছেন আবেগাপস্নুত। তাঁর এই জন্মভূমিপ্রীতি প্রকাশিত হয়েছে কবিতার মাধ্যমে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মধ্যে কবি দেশপ্রেম প্রকাশ করেছেন সরলভাবে।
উদ্দীপকে দেশের জন্য প্রবাসী সৌহার্দ্যরে হৃদয়ের আকুতি প্রকাশিত হয়েছে। দূর দেশে বসেও যে সে জন্মভূমিকে ভোলেনি তা উদ্দীপকটির মূলভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সুদূর কানাডাতে বসেও শৈশবের স্মৃতিময় কর্ণফুলীর তীরের কথা তার মনে পড়েছে। ছায়াঘেরা নন্দীপুর তাকে আবেগতাড়িত করেছে। মূলত দূর পরবাসে বসেও জন্মভূমিকে মনে করে উদ্দীপকের সৌহার্দ্যরে মাঝে গভীর দেশপ্রেমেরই প্রকাশ ঘটেছে।
জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি যেমন আবেগাপস্নুত হয়েছেন উদ্দীপকের সৌহার্দ্যও তাই। তাছাড়া কবির মনে হয়েছে ‘কপোতাক্ষ নদ’ যেন তাকে মায়ের স্নেহডোরে বেঁধেছে। তাই তিনি কোনোমতেই তাকে ভুলতে পারছেন না। উদ্দীপক এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা উভয়ই জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে। কবিতায় কবির দেশপ্রেমই হলো মূলকথা। অন্যদিকে উদ্দীপকেও দেশপ্রেমের দিকই বর্ণিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে যে ভাবটি প্রতিফলিত হয়েছে তা যেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব।
৫ নং. মুস্তাফিজ দীর্ঘ প্রবাসজীবনে প্রচুর অর্থ-সম্পদ লাভ করলেও মনে শান্তি ছিল না। দামি গাড়ি-বাড়ি তার মনে সুখ দিতে পারেনি। তাঁর মনের মধ্যে ছিল কেবলই বাংলাদেশের ছোট্ট শান্ত একটি গ্রাম। বাল্য-শৈশব-কৈশোরের সেই গ্রামÑ শানবাঁধানো পুকুরঘাট, আম-জাম-কাঁঠালের বাগান, মেঠোপথ, আরও কত কী! এ জন্য মুস্তাফিজ সিদ্ধান্ত নিলেন দেশে ফেরার।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি কোনটি? ১
খ. ‘আর কি হে হবে দেখা?’- কবির এই আড়্গেেপর কারণ কী? ২
গ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তুর সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “দেশপ্রেমই কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং মুস্তাফিজকে এক সুতোয় গেঁথেছে।”Ñ মন্তব্যটি বিশেস্নষণ করো। ৪
৫ নং প্র. উ.
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’।
খ. দূর পরবাসে থাকার কারণে কবির মনে শঙ্কা জেগেছে তাঁর প্রিয় নদের সান্নিধ্য লাভ নিয়ে।
কবি সুদূর ফ্রান্সে বসে কপোতাক্ষ নদকে স্মরণ করে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি দূরে বসেও কপোতাক্ষ নদের কুলকুল ধ্বনি শুনতে পান। তিনি আবার তাঁর ছোটবেলার স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের সাড়্গাৎ পেতে চান। কিন্তু দূরে থাকায় তাঁর সংশয় হয় আর কখনও কপোতাক্ষ নদের কাছে ফিরে যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে। তাই কবি প্রশ্নোক্ত আশঙ্কা করেছেন।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মুস্তাফিজ স্বদেশকে ঘিরে যেভাবে স্মৃতিকাতরতায় আচ্ছন্ন হয়েছে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবিও তেমনি স্বদেশের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সাগরদাঁড়ি গ্রামে। কপোতাক্ষ নদের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে তিনি বেড়ে উঠেছেন। সুদূর ফ্রান্সে পাড়ি জমালেও কবি এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারেননি তাঁর জন্মস্থানের কথা। কপোতাক্ষ নদের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ সেই কথাই বুঝিয়ে দেয়।
উদ্দীপকে বর্ণিত মুস্তাফিজ প্রবাসে গিয়ে প্রচুর ধন-সম্পদ অর্জন করেছেন। কিন্তু তাঁর মনে শান্তি নেই। প্রিয় গ্রামটির কথা বারবারই মনে পড়ে তাঁর। এ গ্রামের সাথে তাঁর আত্মার সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। এ কারণেই তিনি দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উদ্দীপকের মুস্তাফিজ স্বদেশের গ্রামের কথা ভেবে যেভাবে আবেগাপস্নুত হয়েছেন, তেমনিভাবেই গ্রামের নদের কথা ভেবে আবেগাপস্নুত হয়েছেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি।
ঘ. মনের ভেতর প্রবল দেশপ্রেম থাকার কারণেই মুস্তাফিজ দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়ও কপোতাক্ষ নদের স্মৃতিচারণার আড়ালে কবির গভীর দেশপ্রেমের অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ফ্রান্সপ্রবাসী। প্রবাসে বসবাসের সময় জন্মভূমির শৈশব-কৈশোরের মধুময় স্মৃতিগুলো তাঁর মনকে আকুল করে। যে কপোতাক্ষ নদকে ঘিরে তাঁর আনন্দময় ছেলেবেলা কেটেছে প্রবাসে বসেও তিনি যেন তার কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কবি কপোতাক্ষ নদকে ঘিরে কবিতা, সংগীত ইত্যাদি রচনা করে বঙ্গবাসীর মনে ঠাঁই পেতে চান।
উদ্দীপকের মুস্তাফিজ মনে-প্রাণে ভালোবাসেন তাঁর স্বদেশভূমিকে। প্রবাসজীবনে অর্থ-বিত্তের মাঝে থাকা সত্ত্বেও তাঁর মন বারবার ফিরে আসতে চায় জন্মভূমির বুকে। গ্রামের আনন্দঘন জীবন কেবলই তাঁকে পিছু ডাকে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়ও একইভাবে কবিকে স্বদেশের বুকে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে কপোতাক্ষ নদের স্মৃতি।
উদ্দীপকের মুস্তাফিজ তাঁর গ্রামের কথা ভেবে আবেগাপস্নুত হয়েছেন। অন্যদিকে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মধুসূদন স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিঘেরা কপোতাক্ষ নদের কথা ভেবে। প্রকৃতপড়্গে দুজনেই প্রবাসজীবনে জন্মভূমিকে অনুভব করেছেন গভীরভাবে। কবিতায় কবি চান বঙ্গবাসীর মনে স্থায়ী আসন গড়ে নিতে। স্বদেশের সাথে তাঁর যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রচিত হয়েছে তার প্রমাণ মেলে কবির এই প্রত্যাশায়। উদ্দীপকের মুস্তাফিজ প্রবাসজীবনের বিত্ত-বৈভব ফেলে ছুটে আসতে চান বাংলা মায়ের কোলে। তাই বলা যায়, দেশপ্রেমই কবি মাইকেল এবং মুস্তাফিজকে এক সুতোয় গেঁথেছেÑ উক্তিটি যথার্থ।
৬ নং. কানাডাপ্রবাসী জনাব রাশেদ সাহেব প্রতিবছর একবার আত্মার টানে জন্মভূমি বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। দেশে এসেই প্রথমে তিনি চলে যান নিজ গ্রাম রোজনায়। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তেঁতুলিয়া নদীর কূলে বসে তিনি শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিগুলো খুঁজতে থাকেন। শৈশবে এ নদীতে সাঁতার কাটার স্মৃতি প্রবাসজীবনে তাকে ব্যাকুল করে তোলে।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি কী? ১
খ. “ভ্রান্তির ছলনে” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকের রাশেদ সাহেবের সাথে “কপোতাক্ষ নদ” কবিতার কবির অনুভূতির সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার সমগ্র ভাব প্রতিফলিত হয়েছে”।Ñ বিচার করো।
৬ নং প্র. উ.
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’।
খ. কপোতাক্ষ নদের স্রোতধারার কথা কল্পনা করে কবির মানসিক প্রশান্তি লাভের কথা উঠে এসেছে চরণটির মাধ্যমে।
সুদূর ফ্রান্সে বসবাস করলেও মাইকেল মধুসূদন দত্ত ভুলতে পারেননি তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদের কথা। প্রতিনিয়তই তিনি নিভৃতে কল্পনা করেন সেই নদীর কলকল ধ্বনির কথা। কল্পনায় মানুষ যা ভাবে তার বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই। একইভাবে কবির কল্পনাও আশাবাদে ঘেরা মিথ্যা এক মায়া মাত্র। কবি এ বিষয়টি জানেন। তবুও মনকে শান্ত করার জন্য বারবার কপোতাক্ষ নদের কথা ভাবেন তিনি।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত রাশেদ সাহেবের মাঝে স্বদেশপ্রেমের যে অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে তা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মধুসূদন দত্ত তাঁর প্রিয় স্বদেশের কপোতাক্ষ নদের কথা ভেবে আবেগে আপস্নুত হয়েছেন। এই নদের সাথে তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িত। কপোতাক্ষ নদই তাঁকে মাতৃভূমির কথা মনে করিয়ে দেয়। জন্মভূমিতে ফিরে আসার জন্য কবির মন তাই হাহাকার করে ওঠে।
উদ্দীপকের রাশেদ সাহেব কানাডাপ্রবাসী। স্বদেশের সাথে তাঁর যে নাড়ির টান তা তিনি গভীরভাবে অনুভব করেন। তাই প্রতিবছরই আপন দেশের নিভৃত কোণে ছুটে আসেন। প্রিয় গ্রাম ও নদীর সান্নিধ্যে মনকে শান্ত করেন। মাতৃভূমির প্রতি অনুরাগ প্রকাশের দিক থেকেই উদ্দীপকের রাশেদ সাহেব ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় বর্ণিত স্বদেশে ফিরতে না পারার আড়্গেেপর বিষয়টি উদ্দীপকে প্রকাশ না পাওয়ায় উদ্দীপকটিকে কবিতার সমগ্র ভাবের ধারক বলা যায় না।
মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে। শৈশবে কবি এই নদের প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। সুদূর ফ্রান্সে বসবাস করলেও এই নদের কথা তিনি ভুলতে পারেননি। দূরে বসেও তিনি যেন কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় বর্ণিত এই নদের প্রতি কবির টানের অন্তরালে লুকিয়ে আছে গভীর স্বদেশপ্রীতি ও স্বদেশে ফিরতে না পারার বেদনার কথা।
উদ্দীপকে বর্ণিত কানাডাপ্রবাসী রাশেদ সাহেব জন্মভূমির প্রতি অত্যন্ত টান অনুভব করেন। স্বদেশের গ্রাম, নদীর স্মৃতি বারবার তাঁকে পিছু ডাকে। তাই প্রতিবছরই সে ডাকে সাড়া দিতে তিনি দেশে ছুটে আসেন। স্বদেশের স্মৃতি রোমন্থন করে জন্মভূমির প্রতি গভীর মমতা অনুভব করেছেন উদ্দীপকের রাশেদ সাহেব এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি। কিন্তু কবিতার কবি জন্মভূমির কোলে ফিরে আসতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে সন্দিহান।
উদ্দীপকের রাশেদ সাহেব প্রবাসজীবনে জন্মভূমির গ্রাম ও নদীর কথা মনে করে আবেগাপস্নুত হন। এসবই তার শৈশবে-কৈশোরের স্মৃতি ধারণ করে আছে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কপোতাক্ষ নদের প্রতি স্মৃতিকাতরতার আবরণে কবির মনের অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেমের অনুভূতির পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর মনে সংশয় রয়েছে তিনি দেশে কখনো ফিরতে পারবেন কি না। তাই কপোতাক্ষ নদের কাছে তাঁর মিনতি কপোতাক্ষ নদও যেন তাকে একইভাবে মনে রাখে, তাঁর হৃদয়ের আকুতি বঙ্গবাসীর কাছে পৌঁছে দেয়। কিন্তু উদ্দীপকের রাশেদ সাহেব প্রতিবছরই দেশে আসেন। কবির মতো আড়্গেেপর তীব্রতা তাঁর মাঝে থাকার কথা নয়। জন্মভূমির দেখা পাওয়ার জন্য প্রবল হাহাকার কবিতায় থাকলেও উদ্দীপকে তা সেভাবে ধরা পড়েনি।
৭ নং. তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে
আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায়
উদাসী বনের বায়,
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
র দেহখানি রহিয়াছে ভরি।
ক. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? ১
খ. কবি সর্বদা কপোতাক্ষ নদের কথা মনে করেন কেন? ২
গ. উদ্দীপকটিতে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন ভাবের প্রকাশ ঘটেছে ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব পুরোপুরি এক নয়” বিশেস্নষণ করো। ৪
৭ নং প্র. উ.
ক. কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি ‘চতুর্দশপদী কবিতা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
খ. কপোতাক্ষ নদের প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকায় কবি সর্বদা এই নদের কথা মনে করেন।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে। শৈশবে মধুসূদন এই নদের তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। তাই নদটি যেন তার আত্মার সাথে মিশে গেছে। সুদূর ফ্রান্সে অবস্থান করেও তিনি যেন নদের কলকল শব্দ শুনতে পান। জন্মভূমির এই নদ যেন কবিকে মায়ের স্নেহভারে বেঁধেছে। তাই তিনি কপোতাক্ষ নদের কথা ভুলতে পারেন না।
গ. উদ্দীপকটিতে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় প্রকাশিত দেশপ্রেমের দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রবাসজীবনের স্মৃতিচারণামূলক কবিতা। মধুসূদন তাঁর ছেলেবেলায় এই নদের প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন। তিনি যখন ফ্রান্সে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছিলেন তখন শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। বহুদেশে তিনি বহু নদ-নদী দেখেছেন কিন্তু কপোতাক্ষ নদের কথা কিছুতেই ভুলতে পারেননি। কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি যেন তাঁর কানে বাজছিল। শুধু তাই নয়, কপোতাক্ষরে জলকে তিনি মাতৃদুগ্ধের সাথে তুলনা করেছেন। তাঁর এই স্মৃতিকাতরতা দেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে।
উদ্দীপকে ছায়া সুনিবিড় পলিস্নর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের বর্ণনা ও গ্রামে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উদ্দীপকটি পড়লে গাঁয়ের রূপটাকে একেবারে ছবির মতো মনে হয়। উদ্দীপকের কবি পলিস্নগাঁয়ের সৌন্দর্যকে হৃদয় দিয়ে অবলোকন করেছেন। পলিস্নর সৌন্দর্যে মুগ্ধ কবি তাই সকলকে তাঁর মায়ামমতায় ঘেরা নিজ গ্রামে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বন্ধুদের কবি আহ্বান জানিয়েছেন গাঁয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে এসে কিছু সময় অতিবাহিত করতে। গ্রামবাংলার প্রতি কবির হৃদয়ের এই গভীর টান তাঁর দেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়ও তেমনি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর প্রিয় নদ সম্পর্কে গভীর ভালোবাসা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব পুরোপুরি এক নয়। কারণ উদ্দীপকের মূলভাব প্রবাসজীবনের স্মৃতিকাতরতা নয়, এটি বন্ধুকে গ্রামে যাওয়ার নিমন্ত্রণ।
দেশের প্রতি ভালোবাসা ও হৃদয়ের গভীর আবেগ মানুষের সহজাত। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তও এর ব্যতিক্রম নন। ফ্রান্সে বসবাসকালে প্রিয় নদ কপোতাক্ষরে কথা মনে করে তাঁর হৃদয় বিচলিত হয়েছে। তিনি বারবার ভেবেছেন এই নদীর সাথে তাঁর আর দেখা হবে কি না। কপোতাক্ষ নদ তাঁর এতটাই আপন মনে হয়েছিল যে এর জল তাঁর কাছে মাতৃদুগ্ধের মতো মনে হয়েছে। কপোতাক্ষকে নিয়ে কবির সকল আবেগ ও উপমা তাঁর প্রবাসজীবনের স্মৃতিকাতরতাপ্রসূত।
উদ্দীপকে গ্রামের নৈসর্গিক দৃশ্য ও মায়া-মমতার পরিবেশ অবলোকনের জন্য কবি তাঁর বন্ধুকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গভীর আন্তরিকতায় তিনি তাঁর বন্ধুকে সাথে করে নিয়ে যেতে চেয়েছেন। গ্রামবাংলার সাথে কবির অন্তরের যোগ ভালোবাসার ও আবেগের। পলিস্ন প্রকৃতি ও আতিথেয়তায় মুগ্ধ কবি পলিস্নর জয়গান গেয়েছেন অকপটে। কারণ পলিস্ন প্রকৃতিতে কোনো কৃত্রিমতা নেই। সবকিছুই নির্মল ও প্রাণবন্ত। সবকিছুর মধ্যেই রয়েছে প্রাণের ছোঁয়া।
উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা পর্যালোচনা করলে আমরা পাই, উভয় ড়্গেেত্র দেশপ্রেম প্রকাশিত হলেও উভয়ের মূলভাব পুরোপুরি এক নয়। কারণ উদ্দীপকে বন্ধুকে পলিস্নর স্নিগ্ধ পরিবেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির প্রবাসজীবনের বেদনাবিধুর অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে যে আবেদন প্রকাশ পেয়েছে সেটি কবি-হৃদয়ের সুখানুভূতি থেকে ব্যক্ত। আর ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় রয়েছে বেদনাময় স্মৃতিকাতরতার অভিব্যক্তি। কাজেই মূলভাবের দিক থেকে দুটো বিষয় পুরোপুরি এক নয়।
৮ নং. গ্রামের দুরন্ত বালক ফটিক শিড়্গালাভের উদ্দেশ্যে মামার সাথে শহরে আসে। মামির অনাদর অবহেলায় এই স্বাধীনচেতা বালকের জীবনটা যেন প্রভুহীন কুকুরের মতো হয়ে গেল। দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়ে কেবলই তার গ্রামের কথা মনে পড়ত। প্রকাণ্ড একটা ধাউস ঘুড়ি নিয়ে বোঁ বোঁ শব্দে উড়িয়ে বেড়াবার সে মাঠ, ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটার সেই নদী তার চিত্তকে আকর্ষণ করত।
ক. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কিসের আবরণে কবির গভীর দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে? ১
খ. ‘কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. উদ্দীপকের সাথে কপোতাক্ষ নদ কবিতার কোন দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর” উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আলোকে এ কথার যৌক্তিকতা তুলে ধরো। ৪
৮ নং প্র. উ.
ক. কপোতাক্ষ নদ কবিতায় স্মৃতিকাতরতার আবরণে কবির গভীর দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে।
খ. কপোতাক্ষ নদের সান্নিধ্যে থেকে কবি যে স্নেহ-মমতার স্বাদ পেয়েছেন তা অনন্যÑ এ কথাটিই উঠে এসেছে আলোচ্য উক্তিটিতে।
কপোতাক্ষ নদের পাড়ে মধুসূদন দত্তের আনন্দমুখর শৈশব-কৈশোর কেটেছে। নদের প্রাকৃতিক পরিবেশ কবিকে যেন মায়ের মমতায় বেঁধেছে। প্রবাসে গিয়ে কবি অনেক নদ-নদীর সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু তার কোনোটিকেই কপোতাক্ষ নদের মতো প্রশান্তিময় বলে মনে হয়নি তাঁর। তাই তিনি কবিতায় আলোচ্য প্রশ্নটি করেছেন।
গ. উদ্দীপকে গ্রামের প্রতি ফটিকের আকর্ষণ আর কবিতায় কপোতাক্ষ নদের প্রতি কবির আকর্ষণের মাঝে সাদৃশ্য বিদ্যমান।
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত পাশ্চাত্য জীবনের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার পর প্রবাস জীবন যাপন করেন। প্রবাসে থাকাকালে দেশের কথা, কপোতাক্ষ নদের কথা তাঁর খুব মনে পড়ে। তিনি যেন কোনোভাবেই তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদের কথা ভুলতে পারছিলেন না। কারণ এই নদের পাশেই তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে। এই নদীর জল তাঁর কাছে যেন মাতৃদুগ্ধের মতোই প্রিয়। তাঁর বেদনা-বিধুর স্মৃতিকাতরতা আমরা লক্ষ করি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়। কবি তাঁর এই নদের দেখা পাবেন কি না তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, গ্রামের বালক ফটিক লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে শহরে আসে মামার বাড়িতে। ঘুড়ি ওড়ানো, সাঁতার কাটাসহ নানা দস্যিপনার মধ্য দিয়ে তার দিন কাটত। শহরে আসার পর বৈরী পরিবেশে, চার দেয়ালে বন্দি এই কিশোরের জীবন বায়ুহীন বেলুনের মতো চুপসে গেল। অনাদর অবহেলায় তার সেই মুক্ত জীবনের কথা মনে হলো। তার দুরন্তপনার সাড়্গী সেই গ্রাম, ঘুড়ি, নাটাই, নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া, সবকিছুই যেন চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতে লাগল। শহরের আবদ্ধ পরিবেশে সে হাঁপিয়ে উঠেছিল বলে সেই চিরচেনা গ্রামটি তাকে গভীরভাবে টানত। একইভাবে প্রবাস-জীবনে কবি মধুসূদন দত্ত তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতেন। কবির এই স্মৃতি-কাতরতার সাথে উদ্দীপকের ফটিকের স্মৃতিকাতরতায় যথেষ্ট সাদৃশ্য বিদ্যমান।
ঘ. ‘দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য লও এ নগর’ এ উক্তির মধ্য দিয়ে নগর জীবনের বাঁধাধরা গণ্ডি পেরিয়ে গাছপালা ঘেরা সবুজ প্রকৃতি অর্থাৎ গ্রামে প্রত্যাবর্তনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। উদ্দীপকের ফটিক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষা এটিই।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রবাসে বসে তাঁর সাগরদাঁড়ি গ্রাম, কপোতাক্ষ নদ ইত্যাদির কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। বিদেশ বিভূঁইয়ে বসেও তিনি যেন কপোতাক্ষ নদের বয়ে চলা কল কল ধ্বনি শুনতে পান। যে স্মৃতিময় পরিবেশে তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে সেই স্মৃতি আজ তাঁকে আবেগতাড়িত করছে। তাঁর প্রিয় জন্মভূমির নদ তাঁকে মাতৃস্নেহ ডোরে বেঁধেছে। তিনি আবার সেই মায়াময় পরিবেশে ফিরে যেতে চান। আবার সেই কপোতাক্ষ নদের জলে অবগাহন করতে চান।
উদ্দীপকের দুরন্ত বালক ফটিক নিতান্তই কৌতূহলবশত মামার সাথে শহরে চলে এসেছে। সে ভাবতে পারেনি গ্রামের মুক্ত স্বাধীন জীবন থেকে সে এভাবে শহরের চার দেয়ালে আটকা পড়ে যাবে। তাই সে ডাঙায় তোলা মাছের মতো ছটফট করেছে। গভীর হতাশার মধ্য দিয়ে সে আবার মায়ের কোলে, গ্রামের চিরচেনা পরিবেশে ফিরে যাওয়ার আকুতি প্রকাশ করেছে।
আসলে গ্রামের প্রকৃতিকে ভালো না বেসে উপায় নেই। শহরের যান্ত্রিক জীবনে মানুষের হাঁসফাস সৃষ্টি হয়। এখানে বুকভরে স্নিগ্ধ বাতাস নেওয়া যায় না। চাঁদের আলো, পাল তোলা নৌকা, পাখিদের গুঞ্জন কোনোটিই চোখে পড়ে না। উদ্দীপকের ফটিক যেমন বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভের আশায় গ্রামের ফিরে যাওয়ার কথা ভেবেছে, ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়ও কবি কপোতাক্ষ নদের পাশে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। সেদিক থেকে ‘দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর’ উক্তিটি যুক্তিযুক্ত। কারণ উভয়েরই চাওয়া পাওয়ার গন্তব্য নদীবিধৌত সবুজ গ্রাম, গাছপালা, বনবনানীর কোমল ছায়া।
অনুশীলনীর দক্ষতাস্তরের প্রশ্নোত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার রচয়িতা কে?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ কবিতার রচয়িতা মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
২. মধুসূদন দত্ত কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
৩. মধুসূদন দত্ত কত সালে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষতি হন?
উত্তর : মধুসূদন দত্ত ১৮৪২ সালে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষতি হন?
৪. খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষতি হওয়ার পর মধুসূদন দত্তের নামের আগে কী যুক্ত হয়?
উত্তর : খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষতি হওয়ার পর মধুসূদন দত্তের নামের আগে মাইকেল যুক্ত হয়।
৫. ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ মধুসূদন দত্তের কী ধরনের রচনা?
উত্তর : ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত একটি প্রহসন।
৬. কপোতাক্ষ নদের কলকল শব্দে কবির কী জুড়ায়?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদের কলকল শব্দে কবির কান জুড়ায়।
৭. মধুসূদন দত্ত জন্মভূমি-স্তনে দুগ্ধস্রোতরূপী হিসেবে কাকে কল্পনা করেছেন?
উত্তর : মধুসূদন দত্ত জন্মভূমি-স্তনে দুগ্ধস্রোতরূপী হিসেবে কপোতাক্ষ নদকে কল্পনা করেছেন।
৮. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি কাকে প্রজা বলেছেন?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কবি কপোতাক্ষ নদকে প্রজা বলেছেন।
৯. কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কর হিসেবে কী দেয়?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কর হিসেবে বারি বা জল দেয়।
১০. ‘বিরলে’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : বিরলে শব্দের অর্থ একান্ত নিরিবিলিতে।
১১. ‘নিশা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : নিশা শব্দের অর্থ রাত্রি।
১২. ‘সতত’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : সতত শব্দের অর্থ সর্বদা।
১৩. ‘ঝড়হহবঃ’ শব্দটিকে বাংলায় কী বলা হয়?
উত্তর : ‘ঝড়হহবঃ’ শব্দটিকে বাংলায় বলা হয় চতুর্দশপদী কবিতা।
১৪. ‘ঝড়হহবঃ’- এ মোট কতটি চরণ থাকে?
উত্তর : ‘ঝড়হহবঃ’- এ মোট চৌদ্দটি চরণ থাকে।
১৫. ‘ঝড়হহবঃ’- এর প্রথম আট চরণকে কী বলে?
উত্তর : ‘ঝড়হহবঃ’- এর প্রথম আট চরণকে অষ্টক বলে।
১৬. ‘ঝড়হহবঃ’- এর শেষ ছয় চরণকে কী বলে?
উত্তর : ‘ঝড়হহবঃ’- এর শেষ ছয় চরণকে ষষ্টক বলে।
১৭. অষ্টকে ভাবের কী থাকে?
উত্তর : অষ্টকে ভাবের প্রবর্তনা থাকে।
১৮. ক তুর্দশপদী কবিতার কোন অংশে ভাবের পরিণতি থাকে?
উত্তর : চতুর্দশপদী কবিতার ষষ্টক অংশে ভাবের পরিণতি থাকে।
১৯. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার চরণ সংখ্যা কত?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ কবিতার চরণ সংখ্যা চৌদ্দ।
২০. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার ষষ্টক অংশের মিলবিন্যাস কীরূপ?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ কবিতার ষষ্টক অংশের মিলবিন্যাস গঘগঘগঘ।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. কবি কপোতাক্ষ নদকে প্রজা হিসেবে জ্ঞান করেছেন কেন?
উত্তর : কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কর হিসেবে পানি দেয়Ñএই বিবেচনায় কবি কপোতাক্ষ নদকে প্রজা
বেচনা করেছেন।
প্রজাদের কাজ থেকে রাজা কর বা রাজস্ব আদায় করে থাকেন। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সাগরকে চিত্রিত করেছেন রাজা হিসেবে। সব নদীর পানি এসে একসময় সাগরে মেশে। কপোতাক্ষ নদের পানিও তেমনি প্রতিনিয়ত সাগরের সাথে মিশে যায়। এই পানি যেন সে সাগরকে কর বা রাজস্ব হিসেবেই দেয়। এ কারণেই কবি কপোতাক্ষ নদকে প্রজা বলে অভিহিত করেছেন।
২. কবি কপোতাক্ষ নদের কাছে মিনতি করেছেন কেন?
উত্তর : স্বদেশের জন্য কবির কাতরতাকে স্বদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কবি
পোতাক্ষ নদের কাছে মিনতি করেছেন।
স্বদেশকে গভীরভাবে ভালোবাসেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। কবিতায় স্মৃতিকাতরতার আড়ালে লুকিয়ে আছে তাঁর স্বদেশপ্রেমের প্রবল অনুরাগ। প্রবাসে থাকলেও স্বদেশের জন্য তাঁর মন প্রতিনিয়ত কাঁদে। স্বদেশের মানুষের মনে তিনি তাঁর স্মৃতিকে অক্ষয় করে রাখতে চান। এ কারণেই কপোতাক্ষ নদের কাছে তাঁর কাতর মিনতি তাঁর হৃদয়ের এই ভাবোচ্ছ্বাস কপোতাক্ষ নদ যেন দেশের মানুষের কাছে ব্যক্ত করে।
৩. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটিকে একটি সার্থক সনেট বলা যায় কেন?
উত্তর : গঠন বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় কপোতাক্ষ নদ কবিতাটিকে একটি সার্থক সনেট বলা যায়।
‘সনেট’ হলো চৌদ্দ চরণবিশিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট ভাবসংবলিত কবিতা। এটি অষ্টক ও ষষ্টক এই দুই অংশে
ভক্ত থাকে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার চরণ সংখ্যা চৌদ্দ। কবিতাটি অষ্টক ও ষষ্টক অংশে বিভাজিত। সনেটের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী অষ্টকে ভাবের প্রবর্তনা এবং ষষ্টকে ভাবের পরিণতি থাকে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাতে এই বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। চরণগুলোতে সনেটের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিশেষ মিলবিন্যাসও বিদ্যমান। কবিতাটির ভাবও সুসংহত। এ সমস্ত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটিকে একটি সার্থক সনেট বলা চলে।
অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি
১. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটির রচয়িতা কে? গ
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
গ মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘ জীবনানন্দ দাশ
২. মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মতারিখ কোনটি? খ
ক ২২শে মার্চ ১৮১৯
খ ২৫শে জানুয়ারি ১৮২৪
গ ২৬শে জুন ১৮৪২
ঘ ২৮শে নভেম্বর ১৮৪৪
৩. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন? ঘ
ক পাবনা খ বরিশাল
গ রাজশাহী ঘ যশোর
৪. মাইকেল মধুসূদন দত্তের গ্রামের নাম কী? ঘ
ক নিমতা খ পেঁড়ো
গ কাঞ্চনপুর ঘ সাগরদাঁড়ি
৫. স্কুলজীবন শেষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোথায় ভর্তি হন? গ
ক প্রেসিডেন্সি কলেজে খ সংস্কৃত কলেজে
গ হিন্দু কলেজে ঘ কলকাতা কলেজে
৬. হিন্দু কলেজে অধ্যয়নকালে কোন বিষয়ের প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্তের তীব্র আবেগ জন্ম নেয়? খ
ক বাংলা সাহিত্য খ ইংরেজি সাহিত্য
গ সংস্কৃত সাহিত্য ঘ ফরাসি সাহিত্য
৭. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত সালে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষতি হন? গ
ক ১৮২৪ খ ১৮৩২
গ ১৮৪২ ঘ ১৮৪৮
৮. কখন মধুসূদন দত্তের নামের আগে মাইকেল যুক্ত হয়? ক
ক খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের পর খ ফ্রান্সে যাওয়ার পর
গ ইংরেজি কবিতা লেখার পর
ঘ ইংরেজ নারীকে বিয়ের পর
৯. পাশ্চাত্যের জীবনযাপনের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা মাইকেল মধুসূদন দত্তকে কোন ভাষায় সাহিত্য রচনায় উদ্বুদ্ধ করে? ক
ক ইংরেজি ভাষায় খ ফরাসি ভাষায়
গ পর্তুগিজ ভাষায় ঘ গ্রিক ভাষায়
১০. কোন ভাষায় কাব্য রচনার মধ্য দিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রতিভার যথার্থ বিকাশ ঘটে? খ
ক ইংরেজি খ বাংলা
গ সংস্কৃত ঘ ফরাসি
১১. কোনটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি? খ
ক দিবারাত্রির কাব্য খ মেঘনাদবধ কাব্য
গ দুঃখী জননীর কাব্য ঘ ত্রয়োদশপদী কাব্য
১২. ‘কৃষ্ণকুমারী’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের কী ধরনের রচনা? ঘ
ক কাব্য খ উপন্যাস
গ প্রহসন ঘ নাটক
১৩. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নাটক কোনটি? খ
ক ব্রজাঙ্গনা খ পদ্মাবতী
গ বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ ঘ তিলোত্তমাসম্ভব
১৪. কোনটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা প্রহসন? খ
ক তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য
খ একেই কি বলে সভ্যতা
গ কৃষ্ণকুমারী ঘ শর্মিষ্ঠা
১৫. বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক কে? ক
ক মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ জীবনানন্দ দাশ ঘ ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
১৬. বাংলা কাব্যে ‘সনেট’ প্রবর্তন করেন কে? গ
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ জীবনানন্দ দাশ
গ মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
১৭. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন? ঘ
ক ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে
গ ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে
১৮. মাইকেল মধুসূদন দত্তের সর্বদা কার কথা মনে পড়ে? খ
ক মায়ের কথা খ কপোতাক্ষ নদের কথা
গ সšত্মানের কথা ঘ পিতার কথা
১৯. মাইকেল মধুসূদন দত্ত সর্বদা কিসের কলকল ধ্বনি শুনতে পান? ক
ক স্বদেশের নদের স্রোতধারার
খ স্বদেশের দিঘির স্রোতধারার
গ বিদেশের নদীর স্রোতধারার
ঘ বিদেশের সমুদ্রের স্রোতধারার
২০. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কপোতাক্ষকে কী বলা হয়েছে? গ
ক গরল স্রোতোরূপী খ অমৃত স্রোতোরূপী
গ দুগ্ধ স্রোতোরূপী ঘ মধুস্রোতোরূপী
২১. কোনটি মধুসূদন দত্ত ভ্রান্তির ছলনে শোনেন? খ
ক ছুটে যাওয়া ট্রেনের ধ্বনি
খ কপোতাক্ষরে স্রোতধ্বনি
গ শিশুদের আনন্দধ্বনি ঘ ঢোলের বাদ্যধ্বনি
২২. কপোতাক্ষ নদ মধুসূদন দত্তের কী মেটায়? ঘ
ক অর্থের চাহিদা খ গ লের তৃষ্ণা
গ পুষ্টির চাহিদা ঘ স্নেহের তৃষ্ণা
২৩. কপোতাক্ষরে কলকল শব্দ কিসের মতো? খ
ক নিশার স্বপনের মতো খ মায়া-মন্ত্রধ্বনির মতো
গ অমিত্রাক্ষর ছন্দের মতো ঘ ভ্রান্তির ছলনের মতো
২৪. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ‘প্রজা’ বলা হয়েছে কাকে? ঘ
ক কবিকে খ সাগরকে
গ বাংলার মানুষকে ঘ কপোতাক্ষ নদকে
২৫. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কপোতাক্ষ নদ প্রজারূপে কাকে বারিরূপ কর দিতে যায়? গ
ক কবিকে খ বাংলার মানুষকে
গ সাগরকে ঘ হ্রদকে
২৬. কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কর হিসেবে কী দেয়? ক
ক জল খ দুগ্ধ
গ মধু ঘ গরল
২৭. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির কেমন মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে? খ
ক হতাশার মনোভাব খ স্বদেশপ্রেমের অনুভূতি
গ তীব্র অভিমান ঘ প্রবল প্রতিবাদ
২৮. কপোতাক্ষ নদের কাছে মধুসূদন দত্তের মিনতি কী? ক
ক তাঁকে যেন মনে রাখে খ সাগরে যেন না মেশে
গ তাঁকে যেন ভুলে যায় ঘ স্বপ্নে যেন দেখা দেয়
২৯. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির সংশয় প্রকাশিত হয়েছে কোন বিষয়ে? গ
ক বেঁচে থাকার বিষয়ে খ সাহিত্যচর্চার বিষয়ে
গ স্বদেশে ফেরার বিষয়ে ঘ দেশপ্রেমের বিষয়ে
৩০. মধুসূদন দত্ত বঙ্গের সংগীতে কার নাম স্মরণ করেন? গ
ক সাগরদাঁড়ির নাম খ মায়ের নাম
গ কপোতাক্ষ নদের নাম ঘ গুরম্নর নাম
৩১. মধুসূদন দত্ত কপোতাক্ষ নদের নাম কেমন করে স্মরণ করেন? ক
ক গভীর আবেগময়তায় খ প্রবল বিতৃষ্ণায়
গ ভ্রান্তির ছলনায় ঘ প্রচণ্ড উদাসীনতায়
৩২. মধুসূদন দত্ত মাতৃদুগ্ধের সাথে কোনটিকে তুলনা করেছেন? খ
ক প্রবাসজীবনকে খ কপোতাক্ষরে জলকে
গ স্বদেশের স্মৃতিকে ঘ নিশার স্বপনকে
৩৩. ‘সতত’ শব্দের অর্থ কী? খ
ক নিষ্ঠার সাথে খ সর্বদা
গ সত্যবাদিতা ঘ সুন্দরের ভাব
৩৪. ‘একান্ত নিরিবিলিতে’ বোঝাতে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কোন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে? খ
ক সতত খ বিরলে
গ সখে ঘ বঙ্গজ
৩৫. মধুসূদন দত্তের চোখে সাগর ও কপোতাক্ষ নদের মধ্যকার সম্পর্ক কীরূপ? ক
ক রাজা-প্রজা খ ভাই-বোন
গ মা-সšত্মান ঘ স্বামী-স্ত্রী
৩৬. মধুসূদন দত্ত একান্ত নিরিবিলিতে কার কথা স্মরণ করেন? গ
ক মৃত স্ত্রীর কথা খ সাগরদাঁড়ির কথা
গ কপোতাক্ষ নদের কথা ঘ ভার্সাই নগরীর কথা
৩৭. মধুসূদন দত্ত কীভাবে তাঁর কান জুড়ান? ক
ক কপোতাক্ষ নদের স্রোতধ্বনি কল্পনা করে
খ কপোতাক্ষ নদের গান শুনে
গ বিভিন্ন নদ-নদীর স্রোতধ্বনি শুনে
ঘ নিজের রচিত গান অন্যের কণ্ঠে শুনে
৩৮. মধুসূদন দত্ত কপোতাক্ষ নদকে তাঁর কথা কাদের কাছে পৌঁছে দিতে বলেছেন? খ
ক তাঁর পরিজনদের কাছে খ বঙ্গজ জনদের কাছে
গ প্রবাসী বন্ধুদের কাছে ঘ রাজরূপ সাগরের কাছে
৩৯. মধুসূদন দত্ত কোন ভাষায় কপোতাক্ষ নদের বন্দনা করেন? ক
ক বাংলা ভাষায় খ ইংরেজি ভাষায়
গ সংস্কৃত ভাষায় ঘ ফরাসি ভাষায়
৪০. ‘ঝড়হহবঃ’ অর্থ কী? গ
ক অমিত্রাক্ষর ছন্দ খ গদ্যছন্দ
গ চতুর্দশপদী কবিতা ঘ মহাকাব্য
৪১. ‘ঝড়হহবঃ’-কয়টি চরণের সমন্বয়ে রচিত হয়? ঘ
ক ছয়টি খ আটটি
গ দশটি ঘ চৌদ্দটি
৪২. ক তুদর্শপদী কবিতার প্রথম আট চরণকে কী বলে? ক
ক ঙপঃধাব খ ঙপঃধপড়ৎব
গ ঙপঃধ ঘ ঙপঃরঃ
৪৩. ‘ঝবংঃবঃ’্ল-এ কয় চরণের একটি স্তবক থাকে? খ
ক চার খ খ য়
গ আট ঘ দশ
৪৪. ক তুর্দশপদী কবিতার অষ্টকে কী থাকে? খ
ক ভাবের পরিণতি খ ভাবের প্রবর্তনা
গ ভাবের সংগতি ঘ ভাবের অসংগতি
৪৫. ক তুর্দশপদী কবিতার ষষ্টকে কী থাকে? ঘ
ক ভাবের প্রবর্তনা খ ভাবের প্রবাহ
গ ভাবের বিস্তার ঘ ভাবের পরিণতি
৪৬. ‘কপোতক্ষ নদ’ কী ধরনের কবিতা? খ
ক মহাকাব্য খ ক তুর্দশপদী
গ রম্য ঘ গদ্যধর্মী
৪৭. আঙ্গিক বিবেচনায় ‘কপোতাক্ষ নদ’- কে কী বলা যায়? ক
ক ঞৎধমবফু খ ঘ ড়হহবঃ
গ ঋড়ৎপব ঘ ঊঢ়রপ
৪৮. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম আট চরণের অšত্ম্যমিল কীরূপ? খ
ক কখখক কখখক খ কখকখ কখখক
গ কখখগ কখখগ ঘ কখগক কখগক
৪৯. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার ষষ্টকের অšত্ম্যমিল কীরূপ? গ
ক ঘঙচ ঘঙচ খ ঘঙ ঘঙ চচ
গ গঘগঘগঘ ঘ গঘঙ গঘঙ
৫০. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? গ
ক শর্মিষ্ঠা খ বীরাঙ্গনা কাব্য
গ চতুর্দশপদী কবিতাবলি ঘ ব্রজাঙ্গনা কাব্য
৫১. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির কী প্রকাশিত হয়েছে? খ
ক প্রকৃতিপ্রেম খ স্মৃতিকাতরতা
গ উদাসীনতা ঘ ভ্রমণপ্রিয়তা
৫২. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় স্মৃতিকাতরতার আবরণে কী লুকিয়ে রয়েছে? ক
ক দেশপ্রেম খ প্রকৃতিপ্রেম
গ সাহিত্যপ্রীতি ঘ মাতৃপ্রেম
৫৩. সাগরদাঁড়ি গ্রামটি কোনটির তীরে অবস্থিত? খ
ক ব্রহ্মপুত্র নদ খ কপোতাক্ষ নদ
গ যমুনা নদী ঘ মধুমতি নদী
৫৪. কোন স্মৃতিকে অবলম্বন করে মধুসূদন দত্ত ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি রচনা করেছেন? ক
ক শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি
খ প্রবাসজীবনের স্মৃতি
গ যৌবনের স্মৃতি
ঘ কারারম্নদ্ধ জীবনের স্মৃতি
৫৫. কপোতাক্ষ নদ মধুসূদন দত্তের কাছে কার মতো? ক
ক মায়ের মতো খ বাবার মতো
গ শিক্ষকের মতো ঘ রানির মতো
৫৬. কোন অনুভূতি স্বদেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কপোতাক্ষ নদের কাছে আবেদন করেছেন মধুসূদন দত্ত? ক
ক স্বদেশের জন্য হৃদয়ের কাতরতা
খ মায়ের জন্য হৃদয়ের হাহাকার
গ সšত্মানের জন্য প্রচণ্ড ব্যাকুলতা
ঘ প্রবাসজীবনের সীমাহীন হতাশা
৫৭. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার চরণসংখ্যা কত? ঘ
ক ৬ খ ৮
গ ১২ ঘ ১৪
বহুপদী সমাপ্তিসূচক
৫৮. বাংলা কাব্যে মধুসূদন দত্তের অনন্য অবদান-
র. অমিত্রাক্ষর ছন্দ রর. গদ্যছন্দ
ররর. ক তুর্দশপদী কবিতা
নিচের কোনটি সঠিক? খ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. মধুসূদন দত্ত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় উদ্বুদ্ধ হন-
র. খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী হওয়ায়
রর. পাশ্চ্যত্যের জীবনযাপনের প্রতি প্রবল আকর্ষণ থাকায়
ররর. ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি প্রবল অনুরাগ থাকায়
নিচের কোনটি সঠিক? গ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬০. কপোতাক্ষ নদের কথা কবি ভাবেন-
র. নিরালায় বসে থেকে
রর. গভীর আবেগ নিয়ে
ররর. সবসময়ই
নিচের কোনটি সঠিক? ঘ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. কপোতাক্ষ নদকে মধুসূদন দত্ত জ্ঞান করেছেন-
র. মাতৃরূপে
রর. সখী হিসেবে
ররর. রাজা হিসেবে
নিচের কোনটি সঠিক? খ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬২. কপোতাক্ষ নদ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে কবির-
র. স্মৃতিকাতরতা
রর. প্রতিবাদী মনোভাব
ররর. স্বদেশপ্রীতি
নিচের কোনটি সঠিক? খ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৩. কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত স্থান হলো-
র. কপোতাক্ষ নদ
রর. সাগরদাঁড়ি গ্রাম
ররর. ফ্রান্স নগরী
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৪. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় রয়েছে কবি মনের-
র. সংশয়
রর. আক্ষপে
ররর. হতাশা
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৫. কপোতাক্ষ নদের কাছে মধুকবির প্রার্থনা-
র. তাঁকে যেন দেশে ফিরিয়ে নেয়
রর. তাঁকে যেন মনে রাখে
ররর. তাঁর হৃদয়ের অনুভূতি যেন স্বদেশবাসীর কাছে ব্যক্ত করে
নিচের কোনটি সঠিক? গ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৬. কপোতাক্ষ নদকে কবি ভুলতে পারেন না-
র. মায়ের মতো স্নেহডোরে বেঁধেছে বলে
রর. শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত বলে
ররর. স্বদেশকে প্রবলভাবে ভালোবাসেন বলে
নিচের কোনটি সঠিক? ঘ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৭. ‘ঝড়হহবঃ’-এ –
র. ভাব সুসংহত থাকে
রর. চৌদ্দটি চরণ থাকে
ররর. ভাব অনির্দিষ্ট থাকে
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৬৮-৭০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
আমার দেশের মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন,
শ্যামল, কোমল পরশ ছাড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন।
৬৮. উদ্দীপক কবিতাংশটির সাথে নিচে কোন কবিতার সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়? গ
ক বৃষ্টি খ প্রাণ
গ কপোতাক্ষ নদ ঘ আমার সšত্মান
৬৯. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে চরণটি উদ্দীপকের ভাব ধারণে সক্ষম? খ
ক জুড়াই এ কোন আমি ভ্রান্তির ছলনে
খ কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে
গ লইছে যে তব নাম বঙ্গের সংগীতে
ঘ বঙ্গজ জনের কানে, সখে, সখা-রীতে
৭০. উক্ত সাদৃশ্য-
র. স্মৃতিকাতরতায়
রর. অনুভূতির গভীরতায়
ররর. স্বদেশপ্রেমে
নিচের কোনটি সঠিক? গ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭১ ও ৭২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেয়ে সেখানে পড়তে যায় সৌরভ। আমেরিকার জীবনযাপন পদ্ধতিতে মুগ্ধ হয়ে একসময় সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়ে সে। মা-বাবার কথা মাঝে মাঝে মনে হলেও দেশে ফেরার কোনো আগ্রহ নেই তার।
৭১. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন মূল বিষয়টি উদ্দীপকে অনুপস্থিত? ক
ক স্বদেশপ্রেম খ প্রকৃতিপ্রেম
গ স্মৃতিকাতরতা ঘ মানবিকতা
৭২. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির সাথে সৌরভের মিল-
র. পাশ্চাত্যের জীবনযাপনের প্রতি আকর্ষণে
রর. প্রবাস জীবনযাপনে
ররর. স্মৃতিকাতরতায়
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৩ ও ৭৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে-এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
৭৩. উদ্দীপক কবিতাংশের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মিল কিসে? গ
ক চিত্রকল্পে খ প্রকৃতিপ্রীতিতে
গ স্বদেশপ্রেমে ঘ স্মৃতিকাতরতায়
৭৪. উদ্দীপক কবিতাংশের কবি ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মাঝে মিল-
র. অনুভূতির গাঢ়তায়
রর. অমরত্বের আকাঙ্ক্ষায়
ররর. সংশয় প্রকাশে
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে
সাধিতে মনের সাধ
ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।
৭৫. উদ্দীপক কবিতাংশের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মিল-
র. কাতর প্রার্থনায়
রর. মাতৃরূপ প্রকাশে
ররর. স্মৃতিকাতরতা প্রকাশে
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৬-৭৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
জীবিকার কারণে নিতান্তই অনিচ্ছায় দেশের বাইরে থাকতে হয় সাগর সাহেবকে। ছেলেবেলার স্মৃতিবিজড়িত মধুমতি নদীর স্মৃতি তাঁকে এলোমেলো করে। বাড়ি থেকে সামান্য দূরের একটি নদীর তীরে বসে সব কষ্ট ভুলে যান তিনি। এই নদীটিই যেন হয়ে ওঠে তাঁর আজন্ম প্রিয় মধুমতি।
৭৬. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় উলিস্নখিত কোন বিষয়টি উদ্দীপকে অনুপস্থিত? খ
ক স্মৃতিময়তা খ সংশয়
গ মনের কষ্ট ঘ স্বদেশপ্রেম
৭৭. উদ্দীপকের সাগর সাহেবের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মিল-
র. স্মৃতি রোমন্থনে
রর. প্রবাস জীবনযাপনে
ররর. উচ্চাকাঙ্ক্ষায়
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৮. উদ্দীপকের সাগর সাহেবের অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে যে চর-
র. সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে!
রর. সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে;
ররর. কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?
নিচের কোনটি সঠিক? ক
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর