পঞ্চম শ্রেণী বাংলা গল্প শিক্ষাগুরুর মর্যাদা

শিক্ষাগুরুর মর্যাদা
কাজী কাদের নওয়াজ       

শিখনফল :

 এ পাঠ থেকে আমরা যা জানবো ক্স   মহান সম্রাট আলমগীরের শিক্ষকের প্রতি মর্যাদাবোধ

1.   মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব মর্যাদা রয়েছে। এ মর্যাদা প্রাণের চেয়ে অনেক সময় বড়

2.   একজন শিক্ষকের মর্যাদা অন্য সবার উপরে

3.   সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকলে কোনো রাজা-বাদশাহকে ভয় করার কারণ নেই

4.   মানুষের মর্যাদা তার প্রাণের চেয়ে অনেক বড় 

5. কবি পরিচিতি

নাম  কাজী কাদের নওয়াজ।

জন্ম পরিচয়     ১৯০৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি।

জন্মস্থান : পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে।

পিতৃভূমি : বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট।

শিক্ষাজীবন তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও বিটি পাশ করেন।

ভাষা জ্ঞান তিনি বাংলা, ইংরেজি, ফারাসি, হিন্দি, উর্দু ইত্যাদি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।

পেশা/

কর্মজীবন  চাকরি জীবনের প্রথমে ছিলেন সাব ইন্সপেক্টর, পরে বিভিন্ন স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

সাহিত্য সাধন    নীতিকথা ও কাহিনিমূলক শিশুতোষ কবিতার জন্য খ্যাতি লাভ করেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা    ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং প্রেসিডেন্ট পুরস্কার লাভ করেন।

জীবননাবসান   ১৯৮৩ সালের ৩রা জানুয়ারি তিনি জীবননাবসান করেন।

মূলভাব/সারসংক্ষেপ :

      ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষকের মর্যাদার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কতিায় শিক্ষক একজন সাধারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও বাদশাহ আলমগীরের ছেলের দ্বারা পায়ে পানি ঢেলে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাদশাহ আলমগীর এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। বাদশাহ আলমগীর প্রত্যাশা করেছিলেন তাঁর সন্তান পানি ঢেলে নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুয়ে দেবেন। তবেই না তাঁর সন্তান নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে দেশের একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। বাদশাহ আলমগীর উপলব্ধি করেছিলেন, যে ছাত্র শিক্ষকের সেবা করতে জানে না, সে কখনো পরিবার, সমাজ ও দেশের উপযোগী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না।

      ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতার মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে পারি, শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষক হলেন কাণ্ডারি। প্রতিটি সমাজ ও দেশের জন্য শিক্ষকের অবদান অপরিসীম। তাই সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে।

পাঠের উদ্দেশ্য :

      শিক্ষকের মর্যাদা যে অপরাপর সবার উপরে তা মূলমতি শিশুদের কাছে তুলে ধরা।

এ অধ্যায়ের প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি :

           মৌলবি গৃহশিক্ষকের পদযুগলে পানি ঢালছিল বাদশাহ আলমগীরের পুত্র।

           বাদশাহ্ পুত্রের শিক্ষকের পায়ে পানি ঢালার দৃশ্য দেখে মনঃক্ষুণœ হন।

           শিক্ষক প্রথমে ভয় পেলেও পরবর্তীতে আত্মমর্যাদায় উদ্বেলিত হন।

           বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে দরবারে ডেকে নিয়ে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

           বাদশাহ আলমগীর বোঝাতে চান, তার ছেলের উচিত ছিল নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুইয়ে দেওয়া।

           বাদশাহর বক্তব্যে শিক্ষাগুরুর মর্যাদ বৃদ্ধি পায়।

বানান সতর্কতা :

¬সতর্কতার সাথে নিচের শব্দগুলোর সঠিক বানান জেনে নিই

      শিক্ষা, গুরু, কাণ্ডারি, শিশু, স্কুল, দায়িত্ব, সাহিত্যে, অনার্স, স্থান, দেশপ্রেম, উপলব্ধি, মেরুদণ্ড, মূল্যবোধ, প্রত্যাশা, সন্তান।

১.   পাঠের মূলভাব লেখ।

      উত্তর : উপরে পাঠের মূল অংশ দেখ।

২.   শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।

      কুমার, শাহজাদা, বারি, চরণ, শির, শাহানশাহ, প্রক্ষালন, কুর্ণিশ

      উত্তর :

প্রদত্ত শব্দ  অর্থ

কুমার     পুত্র, ছেলে।

শাহজাদা       রাজার ছেলে।

বারি      পানি।

চরণ      পা।

শির       মাথা।

শাহানশাহ      বাদশাহ, রাজা।

প্রক্ষালন        ধৌত করা।

কুর্নিশ     মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানানো।

৩.   ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।

কুমার বারি চরণ

শির  শাহানশাহ  কুর্নিশ

      ক. পিতার …… হাত রেখে পুত্র দোয়া চাইল।

      খ.   বর্ষাকালে প্রবল …… বর্ষণ হয়।

      গ.   আগের দিন হাতি-ঘোড়া চড়ে …… শিকারে যেতেন।

      ঘ.   উজির বাদশাহকে …… করলেন।

      ঙ.   …… আলমগীর ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ শাসক।

      চ.   অন্যায়ের কাছে কখনো …… নত করব না।

      উত্তর :

      ক.   পিতার চরণে হাত রেখে পুত্র দোয়া চাইল।

      খ.   বর্ষাকালে প্রবল বারি বর্ষণ হয়।

      গ.   আগের দিনে হাতি-ঘোড়া চড়ে কুমার শিকারে যেতেন।

      ঘ.   উজির বাদশাহকে কুর্নিশ করলেন।

      ঙ.   শাহানশাহ আলমগীর ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ শাসক।

      চ.   অন্যায়ের কাছে কখনো শির নত করব না।

৪.   প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।

প্রশ্ন-ক. বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে কে পড়াতেন?

উত্তর : বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে পড়াতেন এক মৌলবি।

প্রশ্ন-খ. একদিন সকালে বাদশাহ কী দেখতে পেলেন?

উত্তর : একদিন সকালে বাদশাহ আলমগীর দেখতে পেলেন, রাজকুমার তার মৌলবি শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে আর শিক্ষক নিজে হাত দিয়ে পা ধৌত করছেন।

প্রশ্ন-গ. বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে কী ভাবলেন?

উত্তর : বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে খানিকটা ভয় পেয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন দিল্লির শাহানশাহের পুত্রকে দিয়ে নিজ পায়ে পানি ঢালিয়েছেন এটা খুবই স্পর্ধার কাজ। এ জন্য হয়তো তিনি শাস্তিও পেতে পারেন।

প্রশ্ন-ঘ. ‘প্রাণের চেয়েও মান বড়’- শিক্ষক এ কথা বললেন কেন?

উত্তর : মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব মর্যাদা রয়েছে। এ মর্যাদা প্রাণের চেয়ে অনেক সময় বড় হয়ে দাঁড়ায়। আলোচ্য কবিতায় আমরা দেখি, এক শিক্ষক দিল্লির শাহানশাহের পুত্রকে দিয়ে নিজ পায়ে পানি ঢালিয়েছেন; এটা খুবই স্পর্ধার কাজ। এজন্য হয়তো তিনি শাস্তিও পেতে পারেন। কিন্তু একটু পরেই তার মাথায় অন্য ভাবনা আসলো। তিনি চিন্তা করলেন, শিক্ষক হিসেবে তাঁর মর্যাদা সবার উপরে, তাই বাদশাহকে ভয় করার কোনো কারণ নেই। বাদশাহ অন্যায়ভাবে প্রাণদণ্ড দিতে চাইলেও তিনি ভীত হবেন না। কারণ প্রাণের চেয়েও সম্মান অনেক বড়।

প্রশ্ন-ঙ. বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে প্রথমে কী বললেন?

উত্তর : বাদশাহ আলমগীর মৌলবিকে রাজদরবারে ডেকে নিয়ে বললেন, জনাব আমার পুত্র আপনার কাছ থেকে ভদ্রতা বা সৌজন্য কিছুই শিখে নাই। বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনদের প্রতি অবহেলা। তিনি বোঝাতে চাইলেন যে, রাজকুমার নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুইয়ে না দিয়ে বেয়াদবি করেছে। আর এজন্য দায়ী হচ্ছেন স্বয়ং শিক্ষক।

প্রশ্ন-চ. শিক্ষক কী বলে বাদশাহর সুনাম করলেন?

উত্তর : শিক্ষক বাদশাহকে কুর্নিশ করে বলে উঠলেন, বাদশাহ আপনি অনেক মহৎ, অনেক উদার। আজ থেকে আপনি শিক্ষাগুরুর মর্যাদাকে চির উন্নত করলেন। কবির ভাষায়,

      ‘আজ হতে চির উন্নত হলো শিক্ষাগুরুর শির

      সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।’ 

৫.   নিচের বাক্যগুলো বুঝে নিই।

      শিক্ষকে ডাকি বাদশাহ কহেন, ‘শুনুন জনাব তবে,

            পুত্র আমার আপনার কাছে

            সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?

      বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,

      নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা।’

৬.   ক্ষ, স্ব, স্ম, স্ত্র- প্রত্যেকটি যুক্তবর্ণ ব্যবহার করে তিনটি করে শব্দ লিখি। যেমন-

      ক্ষ = ক্ + ষ    —   ক্ষয়, শিক্ষ, সক্ষম।

      স্ব = স্ + ব     —  

      স্ম = স্ + ম    —  

      স্ত্র = স্ + ত্ + র —  

      উত্তর :

      স্ব = স্ + ব     —   স্বদেশ, স্বপ্ন, স্বরাজ।

      স্ম = স্ + ম    —   স্মরণ, বিস্ময়, সুস্ময়।

      স্ত্র = স্ + ত্ + র —   অস্ত্র, স্ত্রী, বস্ত্র।

৭.   বিপরীত শব্দগুলো ঠিকমতো সাজাই।

বড়  অপযশ    বিষাদ অপমান

মান  অবনত    উন্নত ছোট

যশ  বিকাল    সকাল     হর্ষ

      উত্তর :

প্রদত্ত শব্দ  বিপরীত শব্দ    প্রদত্ত শব্দ  বিপরীত শব্দ

বড়  ছোট বিষাদ হর্ষ

মান  অপমান   উন্নত অবনত

যশ  অপযশ    সকাল     বিকাল

  কবি পরিচিতি :

      উত্তর : অত্র পাঠের শুরুতে দেখ।

 প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা কী জান? প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে দু’ধরনের প্রশ্ন থাকে। একটি হলো যোগ্যতাভিত্তিক (পাঠ্যবই বহির্ভূত) অপরটি হলো সাধারণ প্রশ্ন (পাঠ্যবই ভিত্তিক)। নিচে তোমাদের জন্য ঘঅচঊ (নেপ) কর্তৃক সর্বশেষ সংশোধিত প্রশ্নের ধারা অনুসরণে অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী ও বিশেষজ্ঞমণ্ডলীর পরামর্শক্রমে গুরুত্বপূর্ণ কিছু যোগ্যতাভিত্তিক ও সাধারণ প্রশ্ন প্রদত্ত হলো। আশা করি এগুলো অনুশীলনে তোমাদের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল আশানুরূপ হবে।  

পাঠ-১ : পাঠ্যবইয়ের অনুচ্ছেদ

নিচের কবিতাংশটি পড় ১, ২, ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর লেখ :

বাদশাহ আলমগীর-

কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলবি দিল্লির ।

একদা প্রভাতে গিয়া

দেখেন বাদশাহ-শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া

ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে

পুলকিত হৃদে আনত-নয়নে,

শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধূলি

ধুয়ে-মুছে সব করিছেন সাফ সঞ্চারি অঙ্গুলি।

শিক্ষক মৌলবি

ভাবিলেন, আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তাঁর সবি।

দিল্লিপতির পুত্রের করে

লইয়াছে পানি চরণের পরে,

স্পর্ধার কাজ, হেন অপরাধ কে করেছে – কোন কালে!

ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তাঁর ভালে।

১.   সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ :  

      i.   কবিতাটির সারমর্ম কী?

            ক শিক্ষকের মর্যাদা    খ ছাত্রের মর্যাদা

            গ বাদশাহের মর্যাদা    ঘ ছাত্র ও শিক্ষকের মর্যাদা

      ii.  বাদশাহ আলমগীর কার কর্মে সন্তুষ্ঠ হতে পারেননি?

            ক শিক্ষকের     খ সাধারণ জনগণের

            গ শাহজাদার    ঘ দিল্লিবাসির

      iii. শাহজাদার শিক্ষাগুরু কোন শহরের অধিবাসী ছিলেন?

            ক সৌদির খ মক্কার   গ মদিনার ঘ দিল্লির

      iv.   ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় ‘প্রাণের চেয়ে মান বড়’ একথা উচ্চারণ করেছিলেন

            ক বাদশাহ খ শাহজাদা গ শিক্ষক  ঘ দিল্লিবাসি

      v.   বাদশাহ কোন দেশের অধিপতি ছিলেন?

            ক দিল্লির  খ রিয়াদের

            গ মক্কার   ঘ ইসলামাবাদের

উত্তর: (i) ক শিক্ষকের মর্যাদা; (ii) গ শাহজাদার; (iii) ঘ দিল্লির; (iv) গ শিক্ষক; (v) ক দিল্লির।

২.   নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর লেখ :

(ক)  দিল্লির মৌলবি কার পুত্রকে পড়াতেন?

      উত্তর : দিল্লির মৌলবি সাহেব বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে পড়াতেন।

(খ)  বাদশাহ আলমগীর কিসের অধিপতি ছিলেন?

      উত্তর : বাদশাহ আলমগীর দিল্লির অধিপতি ছিলেন।

(গ)  শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কেমন ৩টি বাক্যে বুঝিয়ে বলো।

      উত্তর : শিক্ষক সবার উপরে। তাঁর মর্যাদা সৃষ্টি কর্তার পরেই। শিক্ষা হলো জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষক হলেন জাতির কাণ্ডারি।

৩.   প্রদত্ত শব্দগুলোর অর্থ লেখ :

চরণ, কুর্নিশ, বারি, শাহজাদা, শাহানশাহ       

উত্তর :   

প্রদত্ত শব্দ  অর্থ

চরণ      পা, পাও

কুর্নিশ     মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানানো

বারি      পানি, জল

শাহজাদা       রাজার ছেলে বা কুমার

শাহানশাহ      বাদশাহ, রাজা

৪.   প্রদত্ত অনুচ্ছেদটির মূলভাব লেখ :

      উত্তর : ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষক একজন সাধারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও বাদশাহ আলমগীরের ছেলের দ্বারা পায়ে পানি ঢেলে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাদশাহ আলমগীর এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। বাদশাহ আলমগীর প্রত্যাশা করেছিলেন তাঁর সন্তান পানি ঢেলে নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুয়ে দেবেন। বাদশাহের মতে এ শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা। কিন্তু শিক্ষক শাহজাদার হাতে পানি ঢালিয়ে প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও শেষে তিনি এও ভাবলেন যে, শিক্ষকই সবার উপরে, শিক্ষকই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মর্যাদা অপরিসীম। 

পাঠ-২ : পাঠ্যবই বহির্ভূত অনুচ্ছেদ

নিচের কবিতাংশটি পড় এবং ৫, ৬ ও ৭নং ক্রমিকের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : 

আমাদের ছোটো গ্রাম মায়ের সমান,

আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ

মাঠ ভরা ধান আর জল ভরা দিঘি,

চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।

আমগাছ জামগাছ বাঁশঝাড় যেন,

মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।

সকালে সোনার রবি পূর্ব দিকে ওঠে

পাখি ডাকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফোটে।

৫.   সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ:

(i)  গ্রামটি কেমন?

      ক  সুন্দর  খ চমৎকার গ বড়     ঘ ছোটো

(ii) গ্রামটি কার সমান?

      ক  ভাইয়ের     খ বোনের  গ মায়ের       ঘ আত্মীয়ের

(iii) জলভরা কী?

      ক  ঘড়া   খ ডোবা   গ নদী    ঘ দিঘি

(iv)  কিসের কিরণ লাগে?

      ক চাঁদের  খ সূর্যের   গ রবির   ঘ বাতির

(v)  রবি কোন দিকে ওঠে?

      ক  পশ্চিম খ পূর্ব     গ দক্ষিণ   ঘ উত্তর

উত্তর: (i) ঘ ছোটো; (ii) গ মায়ের; (iii) ঘ দিঘি; (iv) ক চাঁদের; (v) খ পূর্ব।

৬.   নিচে কয়েকটি শব্দ এবং শব্দার্থ দেয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর:  

শব্দ  শব্দার্থ

মা   গর্ভধারিণী

ধান  এক প্রকার শস্য

প্রাণ  জীবন

মিলেমিশে একসাথে

বায়ু  বাতাস

ক.   নিজের গ্রাম জ্জ সমান।

খ.   মাঠভরা থাকে জ্জজ্জ।

গ.   আলো ও বায়ু নিয়ে আমাদের জ্জ বাঁচে।

ঘ.   গ্রামে আমগাছ, জামগাছ ও বাঁশঝাড়জ্জ থাকে।

ঙ.   সকালে সূর্য ওঠে, পাখি ডাকে জ্জ বয় নানা ফুল ফোটে।

      উত্তর: ক. মায়ের; খ. ধান; গ. প্রাণ; ঘ. মিলেমিশে; ঙ. বায়ু।

৭.   নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক.   তোমাদের গ্রাম সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখ।

      উত্তর : আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ৫টি বাক্য নিচে দেয়া হলো :

      ১. আমাদের গ্রামটি খুবই ছোট।

      ২. এখানের মানুষগুলো আত্মীয়ের মতো।

      ৩. গ্রামটির আলো, বাতাস ও ছায়া যেন মায়ের মতো।

      ৪. আমি আমার গ্রামকে খুবই ভালোবাসি।

      ৫. আমাদের গ্রামের মানুষ বেশ শিক্ষিত।

খ.   অনুচ্ছেদের আলোকে বাংলাদেশের একটি ছোটো গ্রামের বর্ণনা দাও।

      উত্তর: গ্রাম মানবসভ্যতার সৃষ্টিগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে এদেশের গ্রামগুলোর অবস্থান। নির্মল বায়ু এবং প্রাণদায়িনী আলোর অবাধ চলাচলে এদেশের গ্রামগুলো মায়ের মতো প্রেমময়ী, সেবাদাত্রী ও নিরাপদ আশ্রয়দাত্রী। এখানে মাঠভরা ধান আর জলভরা দিঘি দেখা যায়। আমগাছ, জামগাছ, বাঁশঝাড় এমনই নানা গাছ একে অপরের গায়ের আত্মীয়ের মতো মিলেমিশে থাকে। এখানে পাখি ডাকে, আর নানা ফুল ফোটে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ছোটো গ্রামগুলো যেন এক একটি স্বর্গপুরী।

গ.   আমাদের ছোটো গ্রাম মায়ের সমান বলা হয়েছে কেন?

      উত্তর: গ্রামের কাছ থেকে মায়ের মতো স্নেহ ভালোবাসা, আশ্রয় ও সেবা পাওয়া যায় বলে আমাদের ছোটো গ্রামকে মায়ের সমান বলা হয়েছে। এ জগতে মায়ের মতো আপন আশ্রয়, স্নেহ-ভালোবাসার উৎস এবং সেবার অতুলনীয় ঝরনাধারা দ্বিতীয়টি নেই। মা যেমন সন্তানকে খাইয়ে-পরিয়ে, আদর যতœ ও ভালোবাসা দিয়ে, আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন, বড় করে তোলেন, নিজ গ্রামও একজন মানুষের জন্য তেমনটি করে থাকে। তাই কবি আমাদের ছোটো গ্রামকে মায়ের সমান বলেছেন।

.পাঠ-৩ : ব্যাকরণ ও নির্মিতি অংশ.

৮.   নিচের যুক্তবর্ণগুলো কোন কোন বর্ণ দিয়ে তৈরি তা লেখ এবং প্রদত্ত যুক্তবর্ণ দিয়ে একটি করে শব্দ লেখ :

      গ্র, প্র, ত্ম, স্ব, ষ্ম

      উত্তর :

যুক্তবর্ণ    বিভাজন   শব্দগঠন

গ্র   গ + র-ফলা     গ্রহণ

প্র   প + র-ফলা    প্রিয়

ত্ম   ত + ম    আত্মা

স্ব    স + ব    স্বদেশ

ষ্ম   ষ + ম    গ্রীষ্ম

      বাক্যে প্রয়োগ :

      (ক)  ১লা জানুয়ারিতে ছাত্ররা বই গ্রহণ করলো।

      (খ)  কবিতা আমার খুব প্রিয়।

      (গ)  শফিক সাহেব আমাদের আত্মার আত্মীয়।

      (ঘ)  স্বদেশকে সবাই ভালোবাসে।

      (ঙ)  গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম পড়ে।

৯.   নিচের শব্দগুলোর কোনটি কোন পদ তা সারিতে সাজাও।

      গুরুজন, হাট, প্রার্থনা, নদীমাতৃক, হায়!

      উত্তর :

শব্দ  পদ

গুরুজন   বিশেষণ

হাঁট  বিশেষ

প্রার্থনা     বিশেষণ

নদীমাতৃক  বিশেষ্য

হায়! অব্যয়

১০.  নিচের ক্রিয়াপদগুলোর চলিত রূপ লেখ :

(ক) পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা এ জগৎ সৃষ্টি করিয়াছেন।

(খ) পাখিরা অসীম আকাশে উড়িয়া বেড়ায়।

(গ) ভেবে কাজ করিলে পরিতপ করিতে হয় না।

(ঘ) সৃষ্টিকর্তাকে প্রেমময় বলা হইয়াছে।

(ঙ) আমরা তাঁর প্রার্থনা করি সঠিক ও পুণ্য পথে চলিবার দিশা।

উত্তর :

(ক) পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা এ জগৎ সৃষ্টি করেছেন।

(খ) পাখিরা অসীম আকাশে উড়ে বেড়ায়।

(গ) ভেবে কাজ করলে পরিতাপ করতে হয় না।

(ঘ) সৃষ্টিকর্তাকে প্রেমময় বলা হয়েছে।

(ঙ) আমরা তাঁর প্রার্থনা করি সঠিক ও পুণ্য পথে চলবার দিশা।

অথবা, এক কথায় প্রকাশ কর :

(ক) যার অন্ত বা শেষ নেই জ্জ অনন্ত।

(খ) যার সীমা নেই জ্জ অসীম।

(গ) অন্যের অনিষ্ট কামনা জ্জ অভিশাপ।

(ঘ) যিনি মনের কথা জানেন জ্জ অন্তর্যামী।

(ঙ) যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন  সৃষ্টিকর্তা।

(চ) যিনি সব কথা জানেন  সর্বজান্তা।

(ছ) যিনি দয়া কামনা করেন  করুণাকামী।

১১. বিপরীত শব্দ লেখ :

      দিন, পুণ্য, জীবন, সরল, সম্মান

      উত্তর :

প্রদত্ত শব্দ      বিপরীত শব্দ    প্রদত্ত শব্দ      বিপরীত শব্দ

দিন রাত  পুণ্য পাপ

জীবন     মরণ সরল বক্র

সম্মান     অসম্মান       

অথবা, নিচের শব্দগুলোর দুটি করে সমার্থক বা প্রতি শব্দ গঠন কর:

      চরণ, পরিতাপ, প্রার্থনা, ভূলোক, মহান

      উত্তর :

শব্দ  –    সমার্থক শব্দ

চরণ –    পদ, পা।

পরিতাপ   –    দুঃখ, খেদ।

প্রার্থনা     –    মোনাজাত, আবেদন।

ভূলোক    –    পৃথিবী, মর্ত্য।

মহান –    শ্রেষ্ঠ, মহৎ।

১২.  নিচের কবিতার চরণগুলো লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

      ক.   কবিতার লাইনগুলো সাজিয়ে লেখ।

তোমারি চরণে পড়ি লুটাইয়া

তোমারি করুণাকামী।

সরল সঠিক পুণ্য পন্থা

দ্যুলোকে-ভূলোকে সবারে ছাড়িয়া

মোদের দাও গো বলি।

তোমার সকাশে যাচি হে শকতি

খ.   কবিতার অংশটুকু কোন কবিতার অংশ তা লেখ।   

গ.   কবিতাটির কবির নাম কী?  

ঘ.   সৃষ্টিকর্তার কাছে কোন পথে চলার প্রার্থনা করা হয়েছে?    

উত্তর :

ক.   নিচে কবিতার লাইনগুলো সাজিয়ে লেখা হলো :

      দ্যুলোকে-ভূলোকে সবারে ছাড়িয়া

 তোমারি চরণে পড়ি লুটাইয়া

 তোমারি সকাশে যাচি হে শকতি

 তোমারি করুণাকামী।

সরল সঠিক পুণ্য পন্থা

 মোদের দাও গো বলি।

খ.   কবিতার অংশটুকু ‘প্রার্থনা’ কবিতার অংশ।

গ.   কবিতাটির কবির নাম গোলাম মোস্তফা।

ঘ.   পরম পরুণাময় সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই পথে চলার প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে তাঁর প্রিয় নবি-রাসুলগণ চলেছেন। আর যে পথে তাঁর চির অভিশাপ ভ্রান্তি সে পথে পথগামী না করে বরং সরল সঠিক ও পুণ্য পথে চলার প্রার্থনা করা হয়েছে।

      অথবা, বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি পুনরায়  লেখ।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে আমরা পথভ্রষ্ট হবো না বিপথগামী হবো না কারণ তিনিই আমাদের আলোর পথ দেখান আমাদের জীবনকে সহজ সরল পথে পরিচালিত করেন

উত্তর : আল্ল¬াহর কাছে প্রার্থনা করলে আমরা পথভ্রষ্ট হবো না, বিপথগামী হবো না। কারণ, তিনিই আমাদের আলোর পথ দেখান। আমাদের জীবনকে সহজ-সরল পথে পরিচালিত করেন।

১৩.  ট্রেনে হাফ টিকিট পাওয়ার জন্য নিচের ফরমটি পূরণ কর। ৫

তারিখ: ০৮/০৩/২০১৭                    স্মারক নং- ২২/১২০

নাম :   

মাতার নাম      :   

পিতার/অভিভাবকের নাম:    :   

হাফ টিকিটের কারণ   :   

জন্ম তারিখ :   

বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম     :   

বর্তমান ঠিকানা :   

স্থায়ী ঠিকানা     :   

…………………

শ্রেণিশিক্ষকের স্বাক্ষর  ……..

স্বাক্ষর

উত্তর : ফরম পূরণ অংশ দেখ।

১৪. দরখাস্ত বা চিঠি লেখ (১টি)  :    

মনে করো, তুমি হাফিজ। বিদ্যালয় হতে একটি ছাড়পত্র পাওয়ার দরকার। এখন বিদ্যালয় হতে ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট একখানা আবেদন পত্র লেখ।

      অথবা, মনে করো, তুমি সমাপনী পরীক্ষার্থী। সমাপনী পরীক্ষা কেমন দিয়েছ জানিয়ে পিতার নিকট পত্র লেখ।

উত্তর : পত্রলিখন অংশ দেখ।

১৫.  যেকোনো একটি বিষয়ে রচনা লেখ  :  

ক.   পাখির জগৎ/ বাংলাদেশের পাখি।

[সংকেত : ভূমিকা, কাক, চড়–ই, কোকিল, টিয়া, ময়না, ঘুঘু, দোয়েল, চিল ও বাজ পাখি, অতিথি পাখি, উপসংহার।]

খ.   শহিদ তিতুমীর 

      [সংকেত : ভূমিকা, জন্ম, তাঁর শৈশখ জীবন, শিক্ষাজীবন, রাজনৈতিক জীবন, যেভাবে শহিদ হলেন,  উপসংহার।]

গ.   ১৬ ডিসেম্বর/ স্বাধীনতা দিবস.:

      [সংকেত : সূচনা, ঐতিহাসিক পটভূমি, স্বাধীনতা দিবস, জাতীয় চেতনায় স্বাধীনতা দিবস, উপসংহার।]

ঘ.   আমার প্রিয় শিক্ষক,

[সংকেত : ভূমিকা; আমার প্রিয় শিক্ষক; কেন আমি তাঁকে পছন্দ করি; পড়ানোর নিয়ম; যোগ্যতা; চরিত্র; উপসংহার।]

.সমাপনী প্রস্তুতির জন্য আরো কিছু শিখে রাখি.

     সমার্থক শব্দ লেখ :

      স্বামী, মহান, দ্যুলোক, ভ্রান্তি, বাদশা

      উত্তর :

স্বামী –    পতি, অধিপতি

মহান –    শ্রেষ্ঠ, মহৎ, উদার

দ্যুলোক   –    স্বর্গ, বেহেশ্ত

ভ্রান্তি –    ভ্রম, ভুল

বাদশা     রাজা, দেশপতি, দেশপ্রধান

     সাধু ভাষাকে চলিত ভাষায় লেখ :

বাদশাহ দেখিয়া ভাবিলেন।

শিক্ষক ভাবিতে ভাবিতে ক্লান্ত হইলেন।

শাহজাদা চিন্তিত হইয়া গেলেন।

বাদশাহ শুধাইলে শাস্ত্রের কথা শুনাইব অনর্গল।

উত্তর :

বাদশাহ দেখে ভাবলেন।

শিক্ষক ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হলেন।

শাহজাদা চিন্তত হয়ে গেলেন।

বাদশাহ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।

     নিচের শব্দগুলো কোন পদ তা লেখ :  

উয়ারী, শহর, রাজধানী, ব্যবহার

      উত্তর :

প্রদত্ত শব্দ  পদ

উয়ারী বিশেষ্য

শহর বিশেষ্য

রাজধানী   বিশেষ্য

ব্যবহার    বিশেষণ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *