৯ম-১০ম শ্রেণীর জন্য ১০০% কমন প্রবন্ধ রচনা সাজেসন
প্রবন্ধ রচনা
প্রবন্ধ কী : ‘প্রবন্ধ’ শব্দের অর্থ প্রকৃষ্ট বন্ধন। প্রকৃতপক্ষে ভাব ও ভাষার বন্ধন। কোনো একটি বিষয়কে ভাব ও চিন্তার মধ্য দিয়ে ভাষায় প্রাণবন্ত করে প্রকাশ করাই হচ্ছে প্রবন্ধ।
প্রবন্ধের প্রকারভেদ : বিষয়ভেদে প্রবন্ধকে প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়।
যথাঃ ১. বর্ণনামূলক; ২. ঘটনামূলক; ও ৩. চিন্তামূলক।
প্রবন্ধের বিভিন্ন অংশ : প্রবন্ধের সাধারণত তিনটি অংশ। যথাঃ ১। ভূমিকা, ২। মূল অংশ ও ৩। উপসংহার।
১। ভূমিকা : প্রবন্ধের প্রারম্ভিক প্রস্তাবনা বা ভূমিকা অংশ প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়ে প্রবেশের দরজা। সূচনা-পর্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ভূমিকা অংশের ওপর মূল বিষয়গত ভাবের প্রতিফলন এমনভাবে হওয়া দরকার যাতে প্রবন্ধের মূল বিষয়ে উত্তরণের দ্বার তো খুলে যাবেই, সেই সঙ্গে বিষয়টি হৃদয়গ্রাহী হয়ে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় হবে। ভূমিকা যাতে অপ্রাসঙ্গিক ও অনাবশ্যক বাগ্বাহুল্য-দোষে দুষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
২। মূল অংশ : ভূমিকার পরে প্রবন্ধের মূল বিষয়ের আলোচনা শুরু হয়। মূল বক্তব্য পরিবেশনের আগে বিষয়টিকে প্রয়োজনীয় সংকেত -এ ভাগ করে নিতে হয়। সংকেত-সূত্রের পরম্পরা রক্ষা করে প্রবন্ধের অবয়বকে সুসংহতভাবে গড়ে তুলতে হয়। প্রতিটি সংকেতের কতখানি বিস্তার হবে তা তার প্রকাশের পূর্ণতার ওপর নির্ভরশীল। কাজেই আয়তনগত পরিমাপ নির্দিষ্ট নেই। প্রতিটি সংকেতের ওপর প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করতে হয়।
৩। উপসংহার : প্রবন্ধের সর্বশেষ অংশ উপসংহার। সূচনার মতো সমাপ্তিরও আছে সমান গুরুত্ব। প্রবন্ধের ভাববস্তু ভূমিকার উৎস থেকে ক্রমাগ্রগতি ও ক্রমবিকাশের ধারা বহন করে উপসংহারে এসে একটি ভাবব্যঞ্জনা সৃষ্টি করে সমাপ্তির ছেদ-রেখা টানে। এখানে লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশের যথেষ্ট অবকাশ থাকে। উপসংহারে লেখক একদিকে যেমন আলোচনার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, অন্যদিকে তেমনি লেখকের নিজস্ব অভিমতের কিংবা আশা-আকাঙ্গখা সার্থক প্রতিফলনও ঘটে।
প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে যা যা মনে রাখা প্রয়োজন : প্রবন্ধ রচনার সময় কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাহলে প্রবন্ধের মান বৃদ্ধি পায় এবং পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে,
১. প্রবন্ধের বিষয় সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।
২. চিন্তাপ্রসূত ভাবগুলো অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে সাজাতে হবে।
৩. প্রতিটি ভাব উপস্থাপন করতে হবে পৃথক অনুচ্ছেদে।
৪. একই ভাব, তথ্য বা বক্তব্য বারবার উল্লেখ করা যাবে না।
৫. রচনার ভাষা হতে হবে সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল।
৬. উপস্থাপিত তথ্যাবলি অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে।
৭. বড় ও জটিল বাক্য যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে।
৮. নির্ভুল বানানে লিখতে হবে।
৯. সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটানো যাবে না।
১০. উপসংহারে সুচিন্তিত নিজস্ব মতামত উপস্থাপন করতে হবে।